#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_2
#ফারজানা
তিতি রাগে কষ্টে কান্না করে দিলো আর ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো…..
“আপনার ওই মুখে আমার নাম ধরে ডাকবেন না। আপনাকে আমি রিলেশনের আগেই একটা কথা বলেছিলাম, আমার জীবনে এমন অনেক কিছু জিনিস বা মুহূর্ত আছে যা আমার সবার থেকে প্রিয়। কিন্তু গতকাল আপনি শুধু শাড়ী না আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মূল্যবান দুটি জিনিস ধ্বংস করে ফেলেছেন। তাই আজ আমি…..আমি আমি আর এই রিলেশন এইখানেই শেষ করে দিতে এসেছি।”
অর্ণব তিতির হাত ধরে বললো…
“তুমি কি পাগল হয়ে গেছো তিতি। সামান্য শাড়ির জন্য তুমি এইসব বলছো। আমি তোমাকে বেশি দামী আর অনেক শাড়ি কিনে দিবো প্লিজ তিতির পাখি শান্ত হও তুমি”
“ডোন্ট টাচ্ মী মিস্টার অর্ণব। ”
ঝটকা মেরে অর্ণবের হাত সরিয়ে নিলো তিতি….
“প্লিজ তিতি বুঝার চেষ্টা করো আমাকে”
“আমি কোনো কথা শুনতে চাই না আপনার। আর আপনি যদি আমার পিছনে আবার পড়ে থাকেন কিন্তু আপনার অবস্থা খুব খারাপ হবে”
“ওহ রিয়্যালি, তুমি এই অর্ণব চৌধুরীকে ভয় দেখাচ্ছো । তুমি জানো আমি কি কি করতে পারি তোমার সাথে?”
“ভয় দেখাবো কেনো আমি তো সত্য কথাই বলছি। তুমি একদম আমার আশে পাশে থাকবে না। যদি থাকো, এর ফল ভালো হবে না”
“ফল ভালো না হওয়ার কি আছে তিতির পাখি (তিতিরের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে মুখের কাছে হাত এনে) আমি যে আমার মতই চলি তা তো তুমি খুব ভালোই জানো। এই জন্য তো তোমাকে পটানোর আগে তোমার আব্বু আম্মু কে আগে হাত করেছি পরে তোমাকে তিতির পাখি”
“অর্ণব তোমাকে কতো বলবো টাচ্ করবে না আমাকে আমি আর তোমাকে ভালোবাসি না”
“কিন্তু আমি তো ভালোবাসি।তাইতো আমার যা মন চাইবে তাই করবো আমি তিতির পাখি”(তিতি কে জড়িয়ে ধরে চুলে নাক ডুবিয়ে)
“অর্ণব ছাড়ো বলছি আমায় ছাড়ো। তোমাকে কতো বলেছি আমি এইসব পছন্দ করি না ছাড়ো”
তিতি অর্ণবের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো…..
অর্ণব তিতির কথা কানেই নিচ্ছে না । তিতি ও কোনো উপায় না পেয়ে সজোরে থাপ্পড় মারে অর্ণবকে । অর্ণব থাপ্পড় খেয়ে কিছুটা দূরে চলে যায় পরে অগ্নি দৃষ্টিতে তিতির দিকে তাকিয়ে ও সজোরে থাপ্পড় মারে তিতিরকে। তিতির অর্ণবের থাপ্পড় খেয়ে হুমরি খেয়ে নিচে পরে যায় আর গালে হাত বুলায়।
“তুমি কি ভেবে ছিলে থাপ্পড় শুধু তুমিই মারতে পারো আমি পারি না তাই না! তুমি এখনও এই অর্ণব চৌধুরীকে চিনতে পারলে না। এই অর্ণব ভালো হতেও সময় লাগে না আবার খারাপ হতেও সময় লাগে না। এতদিন অনেক রেখেছি তোমার কথা আর না। আজকেই আমাদের বিয়ে হবে এইটাই ফাইনাল বুঝতে পারছো তুমি আমার কথা”
“আমি কোনোদিন বিয়ে করবো না তোমাকে। তোমার মতো সাইকো কে আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না। আমি তোমার আসল পরিচয় পেয়ে গেছি তুমি একটা ভিলেন সাইকো তোমাকে বিয়ে করার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো”
“আচ্ছা তাই নাকি তিতির পাখি? আমাকে বিয়ে করবে না তাই না । তোমাকে সাহস দিতে গিয়ে অনেক সাহস দিয়ে ফেলেছি তাই আজকেই তোমার বাড়তি পালক গুলো কেটে ফেলবো তিতির পাখি”
“কি কি বলছো অর্ণব। আমাকে যেতে দাও প্লিজ আমি বাসায় যাবো”
“হাহাহা ভয় পেয়ে গেছো নাকি তিতির পাখি। আমি তো ভেবেছিলাম তুমি খুব স্ট্রং কিন্তু তুমি যে এতটা ভীতু আমি তো জানতামেই না। আচ্ছা ওইসব কথা বাদ তুমি এখন বাসায় যাও আমি আসছি একটু পর সব কিছু বেবস্থা না করে তো আর আসতে পারি না তাই না?”
“কি কি বেবস্থা করবে তুমি?”
“ওইটা তোমার না ভাবলেও চলবে এখন যাও বাহিরে আমার গাড়ি আছে ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি”
“আমি তোমার কথা শুনতে বাধ্য নই”
“তিতির পাখি তুমি এতদিন আমার ভালো রূপ দেখেছো খারাপ রূপ দেখো নাই তাই বলছি ভালো চাইলে চলে যাও । তুমি জানো না তোমার ভালোবাসা হলো আমার কাছে ড্রাগের নেশার চেয়েও বেশি প্রভাবশালী তো বুঝতে পারছো আমি কি বুঝাতে চেয়েছি”
তিতির নাক চেপে ধরে বললো অর্ণব। তিতি অর্ণবের থাপ্পড় খেয়ে বুঝতে পেরেছে অর্ণব কি রকম ছেলে। আর গতকাল রাতে অর্ণব তিতির শাড়ি কেটে ফেলার পর তিতিরের পছন্দের দুইটা পাখি ছিলো তুতুলি আর তিতলি ওই দুই পাখিকে ও মেরে ফেলেছিলো তাই তিতির রাগে অর্ণবের সাথে এইরকম বিহেভ করেছে। আর এইটাও বুঝতে পেরেছে অর্ণব যে সাইকো টাইপের ছেলে। তাই এসেছিলো সম্পর্ক শেষ করতে বাট এখন নিজেই ফেঁসে গেছে ।
“ওই তিতির পাখি কি ভাবছো তুমি? তোমার পাখি গুলোর কথা নাকি? আসলে ওদের মারতে চাইনি বাট আমি অনেকবার খেয়াল করেছি তুমি আমার থেকে ওদের প্রায়োরিটি দেও বেশি তাই ওদের মারতে হলো। আমি চাই না আমার থেকেও কেউ তোমার কাছে দামী হোক।তাই ওদের মেরে তোমাকে একটা ওয়্যার্নিং দিলাম আর এই ওয়্যার্নিং হলো আমার ভালোবাসার ওয়্যার্নিং।”
“একটা লোকের যদি ভালোবাসার ওয়্যার্নিং এতটা খারাপ ভয়ংকর হয় তাহলে খারাপ ওয়্যার্নিং যে কেমন হবে তা বুঝতে পারলাম। তুমি এতটা খারাপ ছিঃ ”
“হাহাহা বুঝতে পেরেছো তাহলে। আচ্ছা এখন বাসায় যাও আমার কিছু কাজ আছে”
অর্ণব তিতিকে গাড়িতে উঠিয়ে ও ওর কাজে চলে গেলো….
তিতি বাসায় এসে ওর আব্বু আম্মু কে অর্ণবের ব্যাপারে সব কিছু বললো …. তখন তিতির আব্বু বললো….
“আমরা জানি এইসব। তাও আমরা কিছু করতে পারবো না। আমাদের হাত পা বাঁধা”
“শুন মা যা হবার হয়ে গেছে। তুই এই বিয়েতে রাজি হয়ে পড়। অর্ণব তোর বাবার কাছ থেকে অনেক টাকা পায় আর আমাদের এত টাকা পরিশোধ করার কোনো ক্ষমতা নেই তাই আমাদের কথা ভেবে মা রাজি হয়ে যা”
“তাছাড়া অর্ণব অনেক ভালো ছেলে যদিও বা মাথা খুব গরম। ওকে বিয়ে করলে তুই মা অসুখী হবি না। ও তোকে খুব সত্যই ভালোবাসে”
তিতিরের আব্বু আম্মু তিতির মাথায় হাত রেখে এইসব কথাগুলো বললো আর চলে গেলো। তিতি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ওর আব্বু আম্মুর যাওয়ার দিকে। যে বাবা মা কোনোদিন তাকে কষ্ট কি বুঝতে দেই নি সেই বাবা মা নাকি আজ এইসব বলছে । সত্যিই টাকা পয়সা আজকাল সম্পর্ক ও নষ্ট করে দেয়।
কিছুক্ষণ পর তিতির আম্মু লেহেঙ্গা গয়না কসমেটিকস নিয়ে তিতিরের রুমে ঢুকে। তিতি রুমে বসে ভাবছিলো কিভাবে অর্ণবের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তখন ওর রুমের দরজার শব্দ পেয়ে তাকিয়ে দেখে ওর আম্মু এইসব নিয়ে এসেছে…..
“আম্মু এইসব কি?”
“আজ তোর আর অর্ণবের বিয়ে। অর্ণব নিয়ে এসেছে এইসব তোর জন্য। পরে রেডি হয়ে আয়”
“হোয়াট, কি বলছো কি তোমরা এইসব আমি কিছুতেই ওই সাইকো কে বিয়ে করবো না। মরে গেলেও না”
“তিতির পাখি তুমি মরতে চাও তাই না। ওকে যাও তোমার ইচ্ছা পূরণ করবো তোমাকে আমি মারবো বাট সেইটা আমার ভালোবাসা দিয়ে”
তিতি আর ওর আম্মু দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে অর্ণব দাড়িয়ে আছে।
অর্ণব আজ বর সেজে এসেছে দেখতে মাশাআল্লাহ ভালোই লাগছে। তখন তিতির আম্মুর বললো…
“মাশাআল্লাহ অর্ণব তোমাকে তো খুব সুন্দর লাগছে।”
“ধন্যবাদ আন্টি। বাট আপনার মেয়ের হয়তো আমাকে ঠিক পছন্দ হয় নি”
“নাহ বাবা ওরো তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে। আচ্ছা আমি আসি তোমরা কথা বলো”
তিতিরের আম্মু চলে যায় তখন অর্ণব বলে….
“তিতির পাখি লেহেঙ্গা কি নিজে থেকে পড়বে নাকি আমি অন্য বেবস্থা করবো”
“নিশ্চুপ”
“কি হলো কথা বলছো না কেনো? ”
“আমার কিছু কথা ছিলো তোমার সাথে অর্ণব?”
“হুম বলো”
অর্ণব খাটের উপর এসে বসলো….
“আমি…..
চলবে….
ভুল হলে ক্ষমা করবেন।