♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 39
writer-Jubaida Sobti♥
দরজা খোলার টুকটাক শব্দ হলো, চোখ মুছে ধীরেধীরে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল,
চোখ-নাক-মুখ সবই লাল হয়ে আছে রাহুলের, নিশ্চয় কেদেছে,
রাহুল : সরি! [ কাদো ভাবে ] আ..আমি চাইনি.. এসব আবার খেতে! তো..তোমাকে মনে পড়ছিলো অনেক, আ..আমি স্নেহা! চেষ্টা ও করিনি তোমাকে ভুলতে…এ..এটা ভাবলেও মনে হয় যেন এটাই জীবনের শেষ মুহূর্ত!
[ ধীরেধীরে হেটে ফার্ষ্ট এইড বক্সটা কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার কাছে এসে বসলো, আহ্লাদী চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহা,দুজনের চোখ দিয়ে ঝড়ে যাচ্ছে অজস্র অশ্রু! ]
রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] ব্যাব..ব্যান্ডেজ!
স্নেহা চোখ মুছে মাথা নাড়িয়ে রাহুলের হাত এগিয়ে নিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিতে লাগলো, হঠাৎ রাহুল ব্যাথায় আহহ বলে চেচিয়ে উঠলো,
স্নেহা : ওহ! সরি সরি,
রাহুল : [ বুকে হাত রেখে ] ব্যাথা তো এইখানে আরো বেশি করছে, এইদিকের ব্যান্ডেজটাও করে দাওনা স্নেহা! [ স্নেহা রাহুলের বুকের দিক তাকিয়ে আবার মাথা নুয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করতে ব্যস্ত ]
রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] করে দিবা তো স্নেহা?..
স্নেহা : ভেব…ভেবেনিন আমাদের কখনো দেখায় হয়নি! ওখানের বেন্ডেজ ও হয়ে যাবে,
রাহুল : তুমি পেরেছো এটা ভেবেনিতে?…
স্নেহা : চেষ্টা করলে নাকি সবই পারা যায়!
রাহুল : তাহলে কাদছো কেনো?..
স্নেহা : [ চোখ মুছে ] হয়তো চোখে কিছু পড়েছে,
রাহুল : [ হেসে ] লোকে বলে, যখন কোনো সুন্দরী মেয়ে নাকি মিথ্যে বলে তখন ওকে আরো বেশি সুন্দর দেখায়!
– ফেটে যাওয়া ভয়েসটাও আরো মিষ্টি লাগছে তোমার!
স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি,
রাহুল : [ স্নেহার মুখে হাত দিয়ে ] শিসস! স্নেহা! মিথ্যে বলার ট্রাই করো সবসময়, কিন্তু তোমার মিথ্যে হার মেনে যায় এই দু-চোখের কাছে, কিছু বলার প্রয়োজন নেই তোমার চোখই সব বলে দিচ্ছে,
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] তো আ..আজ কি বলছে আমার চোখ?…
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] এ..এটাই যে তুমি এখন আমার বুকে ঠাই নিতে চাচ্ছো! [ চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে কিন্তু তাও হেসে উঠলো স্নেহা ]
[ রাহুল তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক স্নেহা ও তাকিয়ে আছে চুপটি করে, কেউই কিছু বলছে না দুজনের চোখই কথা বলে যাচ্ছে, ধীরেধীরে উঠে দাড়ালো রাহুল ]
রাহুল : [ পকেটে হাত রেখে দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে দাড়ালো ] তুমি আমাকে এখনো অনেক ভালোবাসো স্নেহা! কিন্তু বলছো না, কষ্ট পাচ্ছো কিন্তু দেখাচ্ছো না, আ..আমার কাছে আসতে চাইছো, আমার বুকে মাথা রেখে কাদতে চাইছো, কিক..কিন্তু করছো না
– [ চেচিয়ে ] বাট আই এম নট লাইক ইউ স্নেহা! আই কান্ট লিভ উইদাউট সেয়িং দ্যাট, আই লাভ ইউ! [ বলেই বাচ্চা ছেলের মতো কেদে উঠলো ]
– ইউ নোও না স্নেহা?..হাউ মাচ..আই লাভ ইউ…!
– য..যখনি চোখ বন্ধ করি তোমাকে কাছে ফিল করি..আ..আর চোখ খুললেই তোমার কাছে ছুটে যেতে মন চাই…
– মন শুধু তোমাকেই খুজে, প্রত্যেক ঘন্টা, প্রত্যেক মিনিট, প্রত্যেক সেকেন্ড, আর প্রত্যেক নিশ্বাসে,
– এ..এটাকে তুমি বেকার বলো, পাগলামো বলো, অ..অথবা আমার ভালোবাসা,.. [ একটু হেসে ] আমার জন্য সব একই!
– ভালো তো অনেকজন বাসে স্নেহা! কিন্তু আমার মতো ভালো আর কেউ বাসতে পারবে না কারণ [ কাদো কণ্ঠে ] কারণ কারো কাছে তুমি যে নেই!
– আ..আমি তোমাকে ভুলতে পারবো না স্নেহা, আমি তোমাকে ভু..ভুলতেই চাই না.. তুত..তুমি আমার স্নেহা! শুধু আ..আমার… আমি তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসবো, মৃত্যুর শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত.. এবং… এ..এর পরেও!
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আজ অনেক খেয়ে ফেলেছেন…
রাহুল : অ..অনেক খেয়ে ও কি হলো, তোমার নেশাকে তো হার মানাতে পারেনি! [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]
– স্নেহা!
– আ..আমি তোমার ভালোবাসার বদলে ভালোবাসা দিতে চাই, তোমার কষ্টে হাসির কারণ হতে চাই, তোত..তোমার বলা কথার প্রতিটা শব্দ হতে চাই,
– বলো দিবে তো হতে?… [ কাদো ভাবে ] নেক্সট টাইম তোমাকে ভুলতে বলার আগে আমার জানটাই চেয়ে নিও কিক…কিন্তু তোমাকে ভুলতে বলো না স্নেহা!
[ আর সইছিলো না স্নেহার রাহুলের এভাবে বাচ্চা ছেলেদের মতো কেদে যাওয়া, বুকটা দুমড়ে যাচ্ছিলো, দৌড়ে উঠে এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো স্নেহা, রাহুল ও ফুফিয়ে কেদে শক্ত করে আগলে ধরলো ]
স্নেহা : আই লাভ ইউ রাহুল! [ মাথা তুলে তাকিয়ে, কেদে কেদে] আই কেন লিভ এ ফিউ মোমেন্ট উইদাউট ব্রেথিং, বাট নট উইদাউট ইউ!
রাহুল : [ হেসে ] আই লাভ ইউ টু, [ বলেই আলতো করে স্নেহার ঠোটে চুমু খেলো, স্নেহা ও একটু হেসে আবার জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে, দুজনেই নিস্থব্ধ হয়ে আছে, রাহুল এই মুহূর্তেই তার বুকের মাঝে ক্ষত দূর করার বেন্ডেজ খুজে পেলো, চোখ দিয়ে এখনো সেই বন্যা বয়ে যাচ্ছে, তবে তা আর দুঃখ্যের নয়, মাঝে মাঝে হেসে ও চলছে,স্নেহার ঘাড়ের সেই ঘ্রাণটাও ভেসে আসছে নাকে, চোখ বুজে স্নেহার পিঠে স্লাইড করে চলছে,]
হঠাৎ কিছুক্ষণ পরই লক্ষ্য করলো রাহুল, স্নেহার শরীরটা অনেক গরম হয়ে আছে, হাত দুটো এতোক্ষণ রাহুলের ঘাড়ে শক্ত করে চেপে ধরা ছিলো কিন্তু এখন হাত গুলো ও ঢলে আছে, নিজের কাছ থেকে সরিয়ে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহার মাথাটাও ঢলে পড়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি বুকে টেনে নিলো আবার, কপালে হাত দিয়ে বুঝতে পারলো স্নেহার জ্বর এসেছে,মনে মনে অবাক হতে লাগলো কিন্তু স্নেহা বেহুশ কেনো হলো!
আর না ভেবে,আস্তে করে কোলে তুলে নিয়ে নিজের বেডরুমেই শুয়ে দিলো, কম্বলটা গায়ে টেনে দিয়ে স্নেহার পাশে এসে বসলো, তাকিয়ে আছে স্নেহার চেহেরার দিক, মুখের উপর চলে আসা চুল গুলো নিজ হাতে সরিয়ে দিলো, স্নেহার কান্ড ভেবে কাদছে আর হাসছে,
– [ মনেমনে ] পারছিলো না নিজে থাকতে আবার আমাকে বলছিলো ভুলে যেতে,
এতো সহজ?.. আমার ভালোবাসা এতোটাও লুজার না স্নেহা!
– আই ফরগেটিং ইউ ইস্ নেভার গোয়িং টু হ্যাপেন স্নেহা! এ..এন্ড ইউ ফরগেটিং মি আ..আই ওন্ট লেট দ্যাট হ্যাপেন!
_______________________________________
সন্ধ্যা ৭টা বেজে ২০ মিনিট, তাকিয়ে আছে এখনো রাহুল সেই অপলক দৃষ্টিতে, ধীরেধীরে চোখ খুলছে স্নেহা! কিছুটা ঝাপসা দেখছে, পুরো খুলতেই চোখের সামনে রাহুলকে দেখে একটু অবাক হলো,
রাহুল : [ স্নেহার মুখে স্লাইড করে দিয়ে ] গুড ইভিনিং! [ স্নেহা কিছু বললো না মাথা ঘুড়িয়ে চারদিক একবার দেখে আবার রাহুলের দিক তাকালো ]
– জানো স্নেহা! আজ বুঝতে পারলাম আকাশের চাঁদনী থেকে আমার চাঁদনী কতোটা বেশী সুন্দর, [ বলেই স্নেহার কাছে এসে কপালে একটি চুমু খেলো ]
– এখন কেমন লাগছে?…
স্নেহা : কে..কেমন লাগছে মানে! আ..আমার আবার কি হয়েছে?…
রাহুল : [ উঠে বসে ] ফেভার, প্লাস সেন্সলেস্ হয়ে গিয়েছিলে,
স্নেহা : আচ্ছা? [ বলেই উঠে বসার চেষ্টা করে হঠাৎ হাতে ব্যাথা অনুভব করায় আবার শুয়ে পড়লো ]
রাহুল : কামঅন স্নেহা! কি করছো?..শুয়ে থাকো!
স্নেহা : [ তার হাতের দিক তাকিয়ে অবাক হয়ে ] আমার হাতে…?
রাহুল : ডক্টর এসেছে, তখন ইনজেকশন মেরেছিলো!
স্নেহা : ড..ডক্টর এসেছিলো, ইনজেকশন! কিক..কিন্তু এসব কেনো!
রাহুল : তোমার জ্বর উঠেছিলো স্নেহা, [ দাত কিলিয়ে ] তার মাঝে এতোটাই স্ট্রেস নিচ্ছিলে যে…তোমার শরীর.. [ স্নেহা ভীতু হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]
রাহুল : এখন কেমন লাগছে?…
স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম ভা..ভালো!
রাহুল : তুমি শুয়ে থাকো আমি খাবার আনছি! মেডিসিন নিতে হবে!
[ স্নেহা কিছু বললো না শুয়েই রইলো, রাহুল রুম থেকে বেড়িয়ে পড়লো, এবার ধীরেধীরে উঠে বসলো স্নেহা, মনে মনে ভাবছে, ডক্টর এসেছে, ইনজেকশন ও মেরেছে অথচ সে একটু ও ঠের পাইনি, ঘড়ির দিক তাকাতেই শকড হয়ে গেছে, ৭টা বাজতে চলছে তারমানে সে এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলো, মাথাটা এখনো প্রচন্ডরকম ভারী হয়ে আছে, উঠে ধীরেধীরে ওয়াসরুমে এগিয়ে গিয়ে মুখটা ঝাপটে ধুয়ে নিলো, রুমে এসে পর্দা সরিয়ে জানালার ধারে এসে দাড়ালো, গ্লাসটা হালকা একটু খুলতেই শীতল বাতাস বেগে আসছে, গা ছুয়ে যাচ্ছে স্নেহার, হঠাৎ কিছুক্ষণ পর, কোমোড়ে কারো স্পর্শ পেতেই শরীরটা শিউরে উঠলো, পেছনে আর তাকালো না বুঝতেই পারলো রাহুলই এসেছে ]
রাহুল : [ স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ঘাড়ে মাথা রেখে ] ডক্টর বলেছে তোমাকে বেশী স্ট্রেস না নিতে, আর আমি যাওয়ার সময় বলেগিয়েছিলাম শুয়ে থাকতে, তোমার ফেভার ও এখনো পুরোপুরি কমেনি আর তুমি কিনা এইখানে দাঁড়িয়ে বাতাস উপভোগ করছো!
স্নেহা : চারদিক বেধে রেখেছেন তাই ভাবলাম…
রাহুল : কিভাবে না রাখতাম বেধে, নাহলে ঐ আকাশের চাঁদ যদি হিংসে করে আমার চাঁদনীকে নজর দিয়ে দেই!
স্নেহা : [ হেসে ] আরে! চাঁদ আমাকে হিংসে করবে কেনো, চাঁদের সৌন্দর্য তো আনমোল!
রাহুল : কেনো করবেনা হিংসে, ওর আনমোল সৌন্দর্যে যে দাগ আছে, কিন্তু আমার চাঁদের তো কোনো দাগ নেই!
স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] আপনি বোরিং হননি এতোক্ষণ একা একা ?..
রাহুল : কেউ বলেছিলো আমাদের এতো সুন্দর সুন্দর মোমেন্ট থাকতে বোরিং কিভাবে হই!
স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ঘাড়ে হাত রেখে দাঁড়িয়ে ] তাই?…
রাহুল কিছু বলতে যাবে তখনি স্নেহার ভেজা ঠোটের দিক চোখ পড়লো, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে একটু হেসে আংগুল দিয়ে ঠোটের উপর স্লাইড করে দিলো, চোখ বন্ধ করে কেপে উঠলো স্নেহা! তবে ভালোই লাগছিলো রাহুলের স্পর্শে, চোখ খুলে চোখাচোখি হতেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে রাহুলের বুকে মাথা রাখলো,
রাহুল : ইউ নোও স্নেহা এতোদিন বেচে ছিলাম ঠিকই! কিন্তু লাইফে তুমি আসার পরেই উপভোগ করতে শিখেছি!
স্নেহা : [ মাথা তুলে ] রাহুল! আমি বাবাকে কথা দিয়েছি! [ বলতেই চোখের কোণে পানি এসে জমে গেলো ]
রাহুল : ভালোবাসায় কোনো কন্ডিশন থাকে না স্নেহা! হেন্স দেয়ার শুড বি নো রিপেন্টিং!
– [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তুলে ধরে ] স্নেহা! আমার উপর ভরসা আছে?…
স্নেহা : নিজের চেয়েও বেশি!
রাহুল : [ স্নেহার কপালে চুমু খেয়ে ] সো্ নো টেনশন! শুধু তোমার ভালোবাসা সাথে থাকলে হবে সব ঠিক হয়ে যাবে! [ স্নেহা ও চোখ বন্ধ করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো ]
রাহুল : আচ্ছা হ্যা! চলো নাশতা করতে! তোমার মেডিসিন নিতে হবে, [ বলেই হাত টেনে ধরে নিতে স্নেহা আহহ বলে চেচিয়ে উঠলো ]
রাহুল : ওহ! শিট! সরি সরি! ইউ ওকে!
স্নেহা : [ হেসে মাথা নাড়িয়ে ] হুম ওকে!
রাহুল : হোয়াই আর ইউ লাফিং?..
স্নেহা : আপনার চেহেরা দেখে! সামান্য একটুতেই এতো…সিরিয়াস হয়ে যান!
রাহুল : লাইফে পাওয়া সবচেয়ে দামী জিনিষটায় যদি একটু ও আচঁ লাগে না [ বুকে হাত রেখে ] তাহলে সোজা এইখানে লাগে! [ স্নেহা চুপ হয়ে গেলো ]
[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে সোফার দিক এগুতে লাগলো ]
স্নেহা : নাশতা আপনি বানিয়েছেন?..
রাহুল : [ হেসে ] আরে না! আমি বানালে আর খাওয়া লাগবে না!
স্নেহা : তাহলে?..
রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ] দাদী নিজ হাতে বানিয়ে পাঠিয়েছে!
স্নেহা : দাদী..কিভাবে জানলো আমি..
রাহুল : এসেছিলো! একসাথে তোমাকে দেখে গেছে! আর আমাকে বকছিলো আমিই নাকি তোমাকে স্ট্রেস দিচ্ছিলাম!
স্নেহা : কিক…কিন্তু রাহুল আপনি আমাকে ডেকেদিলেন না কেনো?..
রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] তুমি সেন্সলেস্ ছিলে স্নেহা!
স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] ওহ!
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] সো্ এবার চুপচাপ এগুলো খেয়ে নাও! [ বলেই চামচ কেটে সুপ তুলে স্নেহার মুখের দিক এগিয়ে দিলো ]
স্নেহা : আপনি খাবেন না?..
রাহুল : তুমি খেলেই পেট ভরে যাবে!
স্নেহা : কিন্তু রাহুল…
রাহুল : কিছুক্ষণ এর জন্য সাইলেন্ট থাকবে?.. প্লিজজ! [ বলেই চোখ দিয়ে ইশারা করলো খেতে স্নেহার ও কি আর করার বাধ্য মেয়ের মতো খেতে লাগলো আর ব্লাশিং হতে লাগলো, খাওয়া শেষে স্নেহা অবাক হলো রাহুল সব গুছিয়ে একাপাশ করে সরিয়ে রেখে দিলো ]
স্নেহা : আরে! আপনি খাবেন না?…
রাহুল : আগে বলো তোমার পেট ভরেছে?…
স্নেহা : হ্যা!
রাহুল : তাহলে ভেবে নাও আমার ও ভরে গিয়েছে! [ বলেই স্নেহার মেডিসিন ঠিক করতে লাগলো ]
স্নেহা : আরে এটা কেমন কথা!
রাহুল : [ মেডিসিন এগিয়ে দিয়ে ] কিছুটা এমনই দুটো হার্টের একই স্পন্দন! [ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে ]
[ রাহুল স্নেহার মুখে উপর ফু দিতেই স্নেহা চমকে উঠলো ]
রাহুল : মেডিসিন! [ স্নেহা এগিয়ে নিয়ে খেয়ে নিলো, রাহুলের দিক আবার তাকাতেই দেখে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, লজ্জা লেগে উঠায় স্নেহা দাঁড়িয়ে যেতে চাইলো হঠাৎ মাথাটা ঘুড়িয়ে উঠায় মাথা চেপে ধরে আবার বসে পড়লো ]
রাহুল : স্নেহা কি হয়েছে মাথায়?..ব্যথা করছে?..
স্নেহা : না..নাহ এমনিতেই!
রাহুল : ডক্টর বলেছিলো তোমার বেড রেষ্ট দরকার! আর আমিও কিনা তোমার বোকামিতে রেস্পন্স দিচ্ছিলাম! [ বলেই স্নেহাকে দাড় করিয়ে কোলে তুলে খাটের দিক এগুতে লাগলো ]
স্নেহা : রাহুল আমি ঠিকাছি! জাষ্ট একটু মাথা ঘুড়িয়ে উঠলো ব্যাস!
– আর এমনিতেও কতোক্ষণ শুয়ে থাকতে পারবো এইখানে, আমার তো যেতে হবে তাই না!
রাহুল : [ স্নেহাকে খাটে শুয়ে দিয়ে ] তো না যাও! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ]
– এইখানেই থেকে যাও আমার কাছে!
স্নেহা : এমনটা সম্ভব না রাহুল!
রাহুল : [ উঠে বসে ] হুমম! এটাই রিজন তাই না লোকে কি বলবে, সমাজ কি বলবে!
– স্নেহা! ওরা কি বলবে কি ভাববে ওটাও যদি আমরা ভাবি! তাহলে আমাদের আর ওদের মাঝে তফাৎ কি?…
স্নেহা : [ ধীরেধীরে উঠে বসে রাহুলের মুখে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] তো এতো টেনশন করছেন কেনো?.. এক্কেবারে বিয়ে করেই নিয়ে আসুন, তাহলে লোক সমাজ কি বলবে এসবে কিছু যায় আসবে না!
রাহুল : [ স্নেহার কপালে কপাল লাগিয়ে ] সত্যি বলছো? করবা তো আমাকে বিয়ে?..
স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] এনি ডাউট?…
রাহুল : [ ধীরেধীরে স্নেহার কাছে এসে আলতো করে ঠোটে চুমু খেয়ে ] নেভার! [ বলেই সরে যাচ্ছিলো তখনি স্নেহা রাহুলের শার্ট মুচড়ে ধরে আটকে ফেললো ]
দুজনেই তাদের ভালোবাসার চাহনীতে চেয়ে আছে একে অপরের দিক, যেনো চোখে চোখেই কথা বলে যাচ্ছে, কিছুক্ষণ পর, ধীরে ধীরে রাহুল মুখ কাছে এনে নিজের ঠোট মিশিয়ে দিলো স্নেহার ঠোটে, স্নেহা বাধা দিলো না রাহুলকে, সে চাইছিলো রাহুল তাকে ভালোবাসুক, সে তো চাইছিলো রাহুলের ভালোবাসায় হারিয়ে যেতে, রাহুলের গালে স্লাইড করতে করতে স্নেহা ও তাল মিলিয়ে যাচ্ছে আজ, ভুলিয়ে দিতে চাইছে রাহুলের কষ্ট সব, বিলিয়ে দিতে চাইছে আজ তার ভালোবাসাগুলো ও সব,
জানালা দিয়ে বয়ে আসছে শীতল বাতাস, সাদা পর্দা গুলো ও উড়ে চলছে,
কিছুক্ষণ পরই রাহুল ছুটে এসে স্নেহার চোখের দিক তাকালো, স্নেহা ও পলক তুলে তাকিয়ে ধীরে ধীরে পিছিয়ে, গা হেলিয়ে বালিশে মাথা রাখলো, রাহুল তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে, হাত বাড়িয়ে রাহুলের শার্ট মুচড়ে ধরে ধীরেধীরে টেনে নিলো নিজের উপর,
স্নেহা রাহুলের ঘাড়ে স্লাইড করে হাত রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো,
ভালোবাসার নেশায় জমে যাচ্ছে দু-জন, চেয়ে আছে একে-অপরকে তাদের মায়াবী চাহনিতে,
রাহুল ও স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে ধীরেধীরে আবার স্নেহার ঠোট নিজের ঠোটের দখলে নিয়ে নিলো! গলার চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে গভীরভাবে চুমু দিতে লাগলো রাহুল,নিজের ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছিলো স্নেহাকে,
শিউরে উঠছে স্নেহা, একহাতে রাহুলের চুল মুচড়ে ধরে আছে, রাহুলের কপালে চুমু দিতেই, অন্যহাতে রাহুলের হাতের স্পর্শ পেলো…
ধীরেধীরে দু-জনের হাত এক করে মুঠো বেধে ধরলো,
স্নেহার কপালে চুমু খেলো রাহুল,চোখের কোণ বেয়ে পানি পড়ছিলো স্নেহার, নিজের ঠোট দিয়ে মুছে দিলো পানিগুলো, চুমু খেলো স্নেহার চোখে, গালে, ঠোটে, গলায় চুমু দিয়ে ধীরেধীরে বুকের ধারে আসতেই রাহুল থেমে মাথা উঠিয়ে স্নেহার চোখের দিক তাকালো,
চুপ করে চেয়ে আছে স্নেহা, রাহুলের মুখ কাছে টেনে নিজের গালের সাথে আলতো করে ঘষে স্লাইড করে নিলো,
জোড়ে একটি শাস ফেলে হুট করেই উঠে বসলো রাহুল! কলার টেনে শার্ট ঠিক করে কি কি যেনো চিন্তা করতে লাগলো,
স্নেহা ও অবাক হয়ে উঠে বসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রেখে মুচকি হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,রাহুল ও সোজা তাকিয়ে চুপ করেই আছে কিছু বলছে না,
স্নেহা : রাহুল! কি হয়েছে?
রাহুল : সরি স্নেহা!
স্নেহা : সরি কেনো!
রাহুল : যেটা করছিলাম আমি! জানিনা মাথায় কি হয়েছে,
স্নেহা : কি হয়েছে মাথায়?..
রাহুল : ভুল করছিলাম আমি, তুমি ও বাধা দিচ্ছিলে না…
স্নেহা : [ রাহুলের হাত সরিয়ে তার বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখে ] ভালোই তো লাগছিলো বাধা কেনো দেবো!
রাহুল : এখন বলছো, পরে কাদতে চলতে, [ স্নেহা অবাক হয়ে মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল স্নেহার হাত ছুটিয়ে উঠে জানালার ধারে গিয়ে দাড়ালো, স্নেহা ও মুচকি হেসে ধীরেধীরে এগিয়ে রাহুলের পেছনে গিয়ে জড়িয়ে ধরে দাড়ালো ]
রাহুল : স্নেহা! এসব এখন…
স্নেহা : শিসস! আমার পুরো ভরসা আছে রাহুল! আপনার উপর,
রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে হাত ধরে তার সামনে এনে দাড় করিয়ে ] এতোটা ভরসা ঠিক নয় স্নেহা!
স্নেহা : তো আপনি কি ভেবেছেন?.. আমায় ছেড়ে চলে যাবেন!
রাহুল : [ হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে জড়িয়ে ] যেদিন চলে গেছি শুনবে, ভেবেনিবে আমি আর এই দুনিয়াতেই নেই! [ কেদে দিলো স্নেহা ]
রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে চোখ মুছে দিলো ] আবার কাদছো কেনো?..
স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে একটু হেসে ] কিছুনা!
– [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] রাহুল!
রাহুল : হুমম!
স্নেহা : এখন আমার যাওয়া উচিৎ!
রাহুল : কিন্তু তোমার…
স্নেহা : আমি ঠিকাছি! একদম ঠিক! [ মুচকি হেসে ] ব্যাস প্রমিস করেন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবেন!
রাহুল : আজ সিকিউরিটিকে লজ্জা লাগবে না?..[ With tedi smile ]
স্নেহা : [ রাহুলের কাধে জড়িয়ে ] ডোন্ট কেয়ার!
[ রাহুল হেসে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে, কোলে তুলে নিলো স্নেহাকে, স্নেহা রাহুলের ঘাড় জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা হেলিয়ে দিলো, বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গাড়ীতে বসিয়ে দিয়ে সেও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো, গাড়ী চলছে রাহুল ড্রাইভ করছে, স্নেহা পা তুলে গুটি মেরে পাশ মুড়ে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে, আর এক পলকে রাহুলের দিক চেয়ে আছে, রাহুল বুঝতে পেরে ও তাকালো না স্নেহার দিক, নাহয় আবারো সেই চোখের মায়ায় পড়ে যাবে, মোটে ও ইচ্ছে হচ্ছিলো না স্নেহাকে দিয়ে আসতে, ইচ্ছে হচ্ছিলো বুকের মাঝে জড়িয়ে রেখে দিতে, কিন্তু কি আর করার অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে ]
বাড়ী এসে পৌছালো, রাহুল স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা এখনো ঐভাবেই তাকিয়ে আছে!
রাহুল : কি দেখছো এভাবে?..
স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] এটাই! যে আপনি অনেক..হ্যান্ডসাম!
রাহুল : কিডিং?..
স্নেহা : নো! আই এম সো্ সিরিয়াস!
– কতো মেয়েরই আশা আপনাকে পাওয়ার! আর আমি কতোটা লাকি দেখেছেন,
রাহুল : আই থিং আই এম লাকি! বিকজ! আমি তো চাইলেই যে কোনো মেয়ে পেয়ে যেতাম! কিন্তু তোমার মতো মেয়ে তো অনলি লাকি পার্সনরাই পাই! [ চোখ টিপ মেরে ]
স্নেহা : রাহুল!
রাহুল : হ্যা বলো?..
স্নেহা : আমি কিন্তু হেটে নামছিনা!
রাহুল : তারমানে আজকে, আশেপাশের লোকজন কি বলবে এতে ও তোমার কিছু আসে যায় না!
স্নেহা : ইয়েস! আই ডোন্ট কেয়ার!
রাহুল : ওকেই! [ With tedi smile ]
[ রাহুল গাড়ী থেকে নেমে স্নেহার কাছে এসে দরজা খুলে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো ]
রাহুল : [ হেসে ] তাকিয়ে আছে কিন্তু অনেকজন!
স্নেহা : থাকুক!
রাহুল : থাকুক! হু কেয়ার!.. [ বলেই হেসে গেইট দিয়ে ঢুকে পড়লো, স্নেহা রাহুলের কাধে মাথা নুয়ে রাখলো ]
উপরে উঠে বেল বাজাতেই, মার্জান এসে দরজা খুললো, অবাক হলো মার্জান! তাও মনে শান্তি আসলো স্নেহাকে রাহুলের সাথে দেখে!
জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেচিয়ে ] আরে ওয়াহ কি রোমান্টিক সি্ন চলছে! এ..এক মিনিট ওয়েট ওয়েট! [ বলেই মোবাইলের ভিডিও অন করে ] ওকে নাও কাম কাম!
রাহুল হেসে উঠলো জারিফার কান্ডে, স্নেহা ও মুচকি হাসলো, ভেতরে ঢুকে রাহুল স্নেহাকে খাটে বসিয়ে দিলো, মার্জান, জারিফা,শায়লা সবাই এগিয়ে এলো তাদের দিক,
মার্জান : সবাই স্টপ প্লিজ! আমার মন মানছে না এটা না জেনে, রাহুল! সব ঠিকঠাক?. আ..আই মিন আপনার আর স্নেহার! কানেকশন.. আহা..মানে বুঝতে পারছেন তো কি বলছি?…
রাহুল : [ হেসে ] অলরাইট!
জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] আলহামদুলিল্লাহ! জিজু এখন শুধু একটা বিয়ের তারিখ ফিক্সড করে তাড়াতাড়ি বিয়েটা করে নিন…উফফফ আমার তো সইছে না কখন যে হবে বিয়েটা!
শায়লা : বিয়ে তোর না স্নেহার হবে! তুই এতো লাফাচ্ছিস কেনো?..
জারিফা : আরে ফার্ষ্ট টাইম স্নেহার বিয়ে খাচ্ছি তাই অনেক এক্সাইটেড! [ সবাই শকড হয়ে তাকালো জারিফার দিক ]
জারিফা : [ নিজের মাথায় নিজে বাড়ি মেরে ] উফফ! আই মিন ফার্ষ্ট টাইম কোনো ফ্রেন্ড এর বিয়ে খাবো তাই!
– আচ্ছা জিজু! স্নেহা ঠিকাছে তো?.. না মানে আপনি হঠাৎ কোলে তুলে আনলেন তাই বললাম!
রাহুল : ব্যাস! কখনো, কখনো বাচ্চা হয়ে যায়! [ With tedi smile ] তখন এভাবে নিতে হয়!
জারিফা : [ হেসে ] আচ্ছা?..[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে চুপ করে রইলো ]
রাহুল : ওকে গাইস্ নাও বাই! কাল দেখা হচ্ছে! [ স্নেহার দিক তাকিয়ে একটু হেসে স্নেহার মাথা টেনে কপালে চুমু খেয়ে ] বাই! গুড নাইট!
স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] গুড নাইট!
জারিফা : [ চেচিয়ে ] ওয়াও জিজু! ওয়ান্স মোর প্লিজ! আমি কাপচার করবো! [ বাকিরা হেসে উঠে ]
রাহুল : সিরিয়াসলি?..
জারিফা : ইয়াহহ!
রাহুল : ওকে! ফরহেড ইয়া লিপ্স্ [ স্নেহা শকড হয়ে তাকালো রাহুলের দিক ]
জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] যেকোনো একটাই চলবে জিজু! বাট সেকেন্ডটা হলে তো আরো জোস্ হবে! [ বাকিরা ও হেসে উঠে জারিফার কথায় ]
রাহুল : ওকেই! [ বলে স্নেহার ঠোটের দিক এগুতে গেলেই স্নেহা হুট করে পিছিয়ে যায়, রাহুল হেসে স্নেহার মাথা কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু দিয়ে রাখে, আর জারিফা হুটহাট ছবি কাপচার করতে থাকে ]
রাহুল : [ পিছিয়ে গিয়ে ] টেক কেয়ার! [ উঠে দাঁড়িয়ে ] থেংক ইউ গাইস!
জারিফা : ইয়া..ইয়াহ! এন্ড থেংক্স টু ইউ জিজাজি! আমাদের এতো সুন্দর একটা রোমান্টিক এন্টারটেইমেন্ট দেখানোর জন্য!
রাহুল : [ জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] দিস ইজ নট এন্টারটেইনমেন্ট ওকে! ইটস রিয়েলিটি!
জারিফা : [ চিন্তিত হয়ে ] আচ্ছা?.. [ রাহুল আর কিছু বললো না তেডি স্মাইল দিয়ে বেড়িয়ে গেলো ]
মার্জান : [ একলাফে উঠে স্নেহার পাশে বাসে ] স্নেহা! আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দই আসছে না খুশিতে! মানে তুই আর রাহুল আবার.. ওয়াও!
শায়লা : [ হেসে ] ভালোবাসা যদি সত্যিকারের হয় তাহলে, যতো বাধাই আসুক না কেনো এক তো হওয়ারি ছিলো!
মার্জান : [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] ইয়াহহ! দ্যাটস রাইট!
_______________________________________
পরদিন সকালে,
সবাই তৈরী হচ্ছে ভার্সেটি যাওয়ার জন্য, হঠাৎ স্নেহার ফোনটা বেজে উঠলো, স্নেহা ফোন হাতে নিতেই দেখলো তার মায়ের ফোন!
স্নেহা : বলো মা…
মা : কোথায় তুই স্নেহা?…
স্নেহা : রেডি হচ্ছি ভার্সেটির জন্য!
মা : আজ ভার্সেটি না গেলে হয় না?..
স্নেহা : কেনো কি হয়েছে?..
মা : নাহ যদি একটু আসতি বাসায় ?…তোর বাবা বলছিলো!
স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চিন্তা করে ] ঠিকাছে আমি আসছি! এমনিতেও তোমাদের আমার কিছু বলার ছিলো!
মা : আচ্ছা ঠিকাছে আয়! [ ফোন কেটে টেবিলে রেখে স্নেহা খাটে বসে রইলো ]
মার্জান : কি হয়েছে স্নেহা?..সব ঠিকাছে তো!
স্নেহা : হ্যা ঠিকাছে! ব্যাস আমি ভার্সেটি যাচ্ছি না!
জারিফা : [ অবাক হয়ে ] তা কেনো?..
স্নেহা : মা ডেকেছে! আর এমনিতেও ওদের সব সত্যি বলে দেওয়া উচিৎ! সব জানার পরও যদি বাবা আমাকে শাস্তি দেই তাহলে আমি মাথা পেতে নিবো, কিন্তু তাও রাহুলকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না!
[ বাকিরাও আর কিছু বললো না, চলে গেলো যে যার মতো ভার্সেটিতে, স্নেহা ও সেই কখন থেক থমকে বসে আছে খাটে, সামির আসার পর থেকে সব কিছু কেমন যেনো উলটে পালটে যাচ্ছে তার লাইফে এসব নিয়েই ভেবে চলছে, হঠাৎ ফোনটা আবার বেজে উঠলো স্নেহার ]
স্নেহা : [ রিসিভ করে ] হ্যালো!
রাহুল : গুড মর্নিং!
স্নেহা : গুড মর্নিং!
রাহুল : তোমার শরীর ঠিকাছে?..
স্নেহা : হ্যা ঠিকাছে!
রাহুল : মার্জান বললো তোমার মামার বাসায় যাচ্ছো!
স্নেহা : হ্যা! এক্সুলি মা যেতে বললো তাই আর ভার্সেটি যাওয়া হয়নি!
রাহুল : একা যেতে হবে না আমি পৌছে দিবো!
স্নেহা : আপনি আবার কষ্ট করে কেনো আসবেন?..
রাহুল : তো কি একা যাবা?..
স্নেহা : না! যয..যদি বাবা দেখে আপনাকে.. না জানি কি কি বলে বসে থাকে..
রাহুল : সেটাই তো চাইছিলাম! যে তোমার বাবা আর আমার সামনাসামনি হোক!
স্নেহা : তা কেনো?..
রাহুল : তোমার বাবার সামনে থেকে তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাবো বলে! [ হেসে উঠলো স্নেহা ]
– আচ্ছা শুনো আমি আসছি! তুমি তৈরী থাকো!
স্নেহা : আচ্ছা! [ বলেই রেডি হয়ে কিছুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো, এদিক ওদিক হাটছে, আর সইছিলো না রাহুলের জন্য অপেক্ষা, আজকাল রাহুলকে দেখার জন্য ওয়েট করা ও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে স্নেহার! হঠাৎ গাড়ীর হর্ণ বাজতেই একপলক নিচের দিক তাকিয়ে দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ব্যাগ কাধে নিয়ে নিচে নেমে গেলো, গেইটের সামনে পা রাখতেই স্নেহা থেমে গেলো ]
– [ মনে মনে ] আরে! এটা তো রাহুলের গাড়ী না! [ বলতেই দেখে গাড়ী থেকে সামির নেমে আসছে, চোখ গুলো বড় করে ফেললো স্নেহা! শকড হয়ে তাকিয়ে আছে ]
সামির : [ স্নেহার কাছে এসে ] হাই!
স্নেহা : আপনি?..
সামির : হ্যা! আমিই! কেনো অন্য কারো অপেক্ষা করছিলে নাকি! [ স্নেহা নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো ]
সামির : তোমার আশিকের অপেক্ষা করছিলে!
স্নেহা : আপনাকে প্রথম দেখে মোটেও মনে হয়নি আপনি এমন! কি না অভিনয় করেন আপনি!
সামির : অভিনয়ের এখনো কি দেখেছো স্নেহা! [ চোখ মেরে ]
স্নেহা : দেখেন! আমার আপনার এসব ফালতুমি দেখার আর শোনার টাইম নেই! প্লিজ চলে যান এইখান থেকে!
সামির : ভাবছি! এসেছি যখন,তোমার আশিখের সাথেও একটু দেখা করে যাবো!
স্নেহা : হ্যা! আপনার হাড় গুলো ও মজবুত করে রাখেন নাহলে ও আসলে কোন সময় গুড়ো করে ছাড়ে!
সামির : আমি ও সেটাই চাইছিলাম! আসলে, আমি হাত দিয়ে কাজ করিনা দিমাগ দিয়ে করি!
স্নেহা : আপনি আসলেই একটা..চ্যাছড়া! [ বলেই অন্যপাশ ফিরে গেলো, কিছুক্ষণ পর আড়চোখে তাকাতেই দেখে সামির তার দিকেই এখনো তাকিয়ে আছে, বিরক্তি হয়ে স্নেহা ভেতরে ঢুকে যাচ্ছিলো ঠিক ঐ সময়ই সামির স্নেহার হাত ধরে ফেলে ]
স্নেহা : [ রাগান্বিত ভাবে চেচিয়ে ] হাত ছাড়েন! [ বলতেই হঠাৎ চোখ পড়লো রাহুলের গাড়ীর দিক ]
স্নেহা : দেখেন হাত ছাড়েন বলছি! রার..রাহুল আসছে! [ সামির কোনো জবাব দিলো না, হাসছে আর স্নেহার বিরক্তিকর কান্ড দেখছে ]
– লাগছে আমার! ছাড়েন প্লিজ!
সামির : হাত আমি ছাড়ছি না! এমন মোমেন্ট বার বার আসেনা স্নেহা!
স্নেহা : বারাবারি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু প্লিজ হাত ছাড়ুন!
সামির : বারাবারিটা আজ নাহয় করেই ফেলি! [ বলতেই হঠাৎ খেয়াল করলো কেউ তার কলার ধরে পেছন ধাক্ষা দিলো ]
সামির : [ হেসে ] আরে রাহুল! তুই! তোরই অপেক্ষা করছিলাম [ বলতেই রাহুল দু-তিনটা ঘুষি দিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো সামিরকে ]
রাহুল : ভেবেছিলাম ঐদিনের মারে তোর শিক্ষা হয়ে যাবে! কিন্তু তোর কপালে আমার আরো মার খাওয়া বাকি ছিলো [ বলে বলেই মারতে লাগলো সামিরকে, কিন্তু সামির কিছুই করছে না শুধু হেসে চলছে ]
স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে ] রাহুল! ব্যাস চলেন আমাদের এবার যাওয়া উচিৎ!
সামির : [ হেসে রাহুলকে ফিসফিসিয়ে ] এতো সফট হাত! তাই তো বলি তুই ছাড়ছিস না কেনো! ভাবছি পুরো বডি জুড়ে আরো কতো সফট… [ বলতেই রাহুলের শরীরে আরো যতো জোড় ছিলো তা দিয়েই সামিরকে মারতে লাগলো, হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহা! আশেপাশে অনেকটাই ভীর জমে গেছে, কয়েকজন এগিয়ে এসে রাহুলকে ছুটাতে চাইলেও রাহুলের রাগের কাছে সবাই হার মেনে পিছিয়ে যায় ]
হঠাৎ, শব্দ এলো পুলিশের গাড়ীর, স্নেহার মাথায় যেনো বাজ ভেংগে পড়লো, রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখলে দেখে রাহুল থেমে নেই! মারতেই চলছে সামিরকে, আর সামির অনেকটা সুযোগ পেয়ে ও রাহুলের গায়ে একটা টোকা ও লাগালো না, এবার স্নেহা বুঝতে পারলো এসব সবই সামিরের করা প্লান ছিলো,
পুলিশের গাড়ী এসে থামতেই, চারজন পুলিশ নেমে এলো, তিনজন পুলিশ মিলেই রাহুল থেকে সামিরকে ছুটিয়ে আলাদা করে নিলো!
আরেকজন পুলিশ অফিসার এসে রাহুলের কলার টেনে হাত রাখতেই রাহুল রাগান্বিতভাবে তাকালো!
পুলিশ : কি দেখছিস এভাবে ?…তোর রাজত্ব শেষ এবার থানায় চল!
রাহুল : লিভ মাই কলার!
পুলিশ : [ হেসে ] তুই বললেই ছেড়ে দিবো?..হ্যা?..
রাহুল : অফিসার, পুলিশের গাড়ী এসেছে! আমি গাড়ীর আওয়াজ শুনেছি! কিন্তু পালানোর চেষ্টা করেছি?…
– করিনি তাই তো?.. তাহলে কেনো যে তোমরা নিজেই নিজের প্লেটের খাবার খালি করার ধান্ধায় থাকো বুঝি না!
পুলিশ : ভুলে যাচ্ছিস কার সাথে কথা বলছিস!
রাহুল : বাংলাদেশ পুলিশ [ With tedi smile ]
অফিসার রাহুলের কলার ছেড়ে, কাউন্সটেবলকে ইশারা করলো যাতে রাহুলকে হ্যান্ডকাফস্ পড়িয়ে দেই!
রাহুল : [ হেসে ] ওয়েট! আমিই উঠছি এটা পড়ানোর প্রয়োজন নেই! গাড়ী এটাই তো, তাই না?… [ বলেই রাহুল হেসে পুলিশের গাড়ীতে উঠে বসে ]
স্নেহা : [ দৌড়ে এসে কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি সত্যি সত্যিই!… কি দরকার ছিলো ওকে মারার..বলেন তো!
রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি! স্নেহা! টেনশন করো না আমি চলে আসবো!
স্নেহা : কিন্তু রাহুল… [ বলতেই একজন পুলিশ কাউন্সটেবল এগিয়ে এসে ]
– লাভ-সাব পরে ঘরে দেখাবে আগে থানায় চলুক! এখন সরে দাঁড়াও!
রাহুল : তোমাদের ট্রেনিং সো্র্স কে ছিলো বলো তো?.. মেয়েদের কিভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় সেটা হয়তো সে শিখেনি!
কাউন্সটেবল : এসব এটিটউড নিজের ঘরে দেখাইও.. পুলিশের সামনে না!
রাহুল : [ হেসে ] ভাবছি ব্যপারটা কেমন যেনো বাংলা সিনেমার কাহানী হয়ে গেছে তাই না?..আমি যে ওকে মারছি পুলিশকে ইনফর্ম করলো কে?..পুলিশ তো বরাবর টিম নিয়েই হাজির!
কাউন্সটেবল : [ রাহুলের হাত টেনে নিয়ে ] চুপচাপ হ্যান্ডকাফস্ পড়ে নে!
রাহুল : [ হেসে ] ভয় পাচ্ছো? কোনো তোমাদের ফাকি দিয়ে না পালিয়ে যায়!
– আরে এতো টানাটানি করছো কেনো দাও আমিই লাগিয়ে দিচ্ছি [ বলেই রাহুল লাগাতে চাইলো, কাউন্সটেবল তাও টেনে নিজ হাতে লাগিয়ে দিলো ]
[ রাহুল পাশ মুড়ে তাকাতেই দেখে স্নেহা কেদেই চলছে! চোখের দিক আংগুল দেখিয়ে ইশারা করলো স্নেহাকে যাতে কান্না না করে, এক এক করে বাকি পুলিশ গুলো ও গাড়ীতে উঠে বসলো ]
অফিসার : ও হিরো এমন বিহেভ করছিস যেনো তোর বিয়ের বরাত যাচ্ছি!
রাহুল : [ হেসে ] ক্যারেক্ট অফিসার! আমার ও তাই মনে হচ্ছে! কিন্তু আইডিয়া করে পাচ্ছি না ও আমার বরাতির জন্য তোমাদের কতো দিয়েছে হবে!
অফিসার : একবার ইনকাউন্টার হোক তারপর আইডিয়া হয়ে যাবে!
_______________________________________
তাকিয়ে আছে স্নেহা, চলে গেলো পুলিশের গাড়ী, পাশ থেকে গাড়ীর হর্ণ বেজে উঠলো, তাকাতেই দেখে সামির!
সামির : স্নেহা! তুমি তোমার মামার বাসায় যাচ্ছিলে মনে হয় ?.. [ স্নেহা অবাক হলো ও কি করে জানলো ]
– আ..এক্সুলি আমরা আজই আসছিলাম এংগেজমেন্ট করতে, প্লাস বিয়ের তারিখ তোমার পেরেন্টসকে জানাতে! তাই হয়তো তোমাকে আগে থেকেই তৈরী হয়ে থাকার জন্য তোমার মা ইনফর্ম করেছে!
– চলো আমিই পৌছেদি তোমাকে আবার সন্ধ্যার জন্য তৈরী হতে হবে তো!
স্নেহা : লজ্জা হচ্ছে আমার আপনার উপর! আপনি এতোটাই নিচে নামবেন ভাবতেই পারছিনা!
সামির : কেউ ভাববে এমন কাজ আমি করিনা! স্নেহা!
– আচ্ছা এসব বাদ দাও! চলো গাড়ীতে উঠো!
স্নেহা : কেনো করছেন আপনি এমন প্লিজ!
– [ কাদো কন্ঠে ] আপনি বলুন পুলিশকে ওর কোনো দোষ নেই!
সামির : আহা! নির্দোষ একজন ব্যাক্তির উপর হাত তোলা এটা দোষ না স্নেহা?..এটা আইনের বিরোধী!
স্নেহা : [ চেচিয়ে ] প্লিজ! বন্ধ করুন আপনার এসব অভিনয়! কোনো আইনের ধারায় পুলিশ আসেনি! আপনিই এসব প্লান করে টাকা খাইয়ে এনেছেন!
– আপনি ইচ্ছে করেই রাহুলের রাগ তুলেছেন যাতে রাহুল আপনার গায়ে হাত তুলে, সুযোগ পেয়েও আপনি ওর গায়ে হাত তুলেননি যাতে আপনি আপনার করা প্লান কাজে লাগাতে পারেন!
সামির : ওয়াও স্নেহা! তুমিতো দেখছি মারাত্মক ইন্টেলিজেন্ট!
স্নেহা : [ কেদে হাত জোড় করে ] প্লিজ!
সামির : সইছে না তো রাহুলের কষ্ট?..ঠিকাছে! সন্ধায় তৈরী থেকো,তুমিই পারবে রাহুলের কষ্ট কমাতে, আমাদের এক একটা প্রোগ্রাম শেষ হবে
– ধীরেধীরে রাহুলের কষ্ট কমতে থাকবে, [ বলেই চোখ মেরে গাড়ী টান দিয়ে চলে যায় নিস্থব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা ]
চলবে…