Love At 1St Sight Season 3 Part – 32

0
5719

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 32

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : স্নেহা আই সে্ প্লিজ ডোন্ট ক্রাই!

[ স্নেহা মাথা নাড়ালো, কিন্তু তাও চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে ]

রাহুল : Listen! তোমাকে কান্নাচোখে এতোটা কিউট লাগছে না, কোন সময় সবার সামনে কিস্ দিয়ে বসি কে জানে সো্ বি কেয়ারফুল! স্নেহা আমি কিন্তু বেশিক্ষণ কন্ট্রোল করতে পারবো না নিজেকে! [ স্নেহা চোখ মুছে রাহুলের দিক তাকিয়ে হেসে উঠে ]

রাহুল : Now better! [ with tedi smile ]

স্নেহা : আপ…আপনি..কি? রের..রেগে আছেন আমার উপর?…

রাহুল : মোটেও না! [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ একটু হেসে হুট করেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] বাই!

বলেই ড্রাইভিং সি্টের দিক এগিয়ে গেলো, স্নেহা অতোটুকুতেই শকড হয়ে গেছে আশেপাশে তাকিয়ে দেখবে কেউ দেখেছে কিনা সে সাহসটুকু ও হারিয়ে ফেলেছে,রাহুল ওদিক দিয়েই দাঁড়িয়ে থেকে স্নেহার দিক তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতে লাগলো, মনে মনে ভাবতে লাগলো স্নেহা,এই রাহুলটাও না মাঝেমাঝে এমন কান্ড করে বসে থাকে লজ্জায় ইচ্ছে করে ওদিকের মাটি কুড়েই ঢুকে পড়বে,আর কিছু না বলে পেছন মুড়ে চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো স্নেহা, হঠাৎ বুকটা আবার ধুপ করে উঠলো,কোনো এক ভয় বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে বসেছে,তাড়াতাড়ি রাহুলের দিক আবার ফিরে তাকালো, রাহুল গাড়ীর চালের উপর হাত রেখে ঐভাবেই হেসে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,হঠাৎ স্নেহার মুখ গোমড়া আর চোখে পানি দেখে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এলো!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! আবার কি হলো?…

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে কাঁদো কন্ঠে ] রার…রাতে বব..বলেছিলাম না…

রাহুল : হোয়াট হ্যাপেন স্নেহা?.. এইভাবে কাঁদছো কেনো?…দেখো আশেপাশে অনেকে তাকিয়ে আছে![ স্নেহা কান্না কন্ট্রোল করে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রাখলো ]

রাহুল : স্নেহা!..তুমি এভাবে ভয় পেয়ে আছো কেনো?…কি হয়েছে?..আমাকে বলো…

স্নেহা : রার..রাহুল আ…আমি ঐ সপ্নটা এমনই দেখেছিলাম…আপ..আপনি এইভাবেই…

রাহুল : [ হেসে ] পাগলী একটা তুমি! আমরা এতো রাস্তাই তো পেড়িয়ে আসলাম কই কিছুই তো হলো না তাই না?..

– আর তোমাকে বললাম না এসব বিলিভ না করতে, স্নেহা! জাষ্ট একটা ড্রিমই তো! এটাকে এতো সি্রিয়াসলি নিচ্ছো কেনো?…

স্নেহা : কিন্তু রাহুল…

রাহুল : ওকে স্টপ ইট! যাও ভেতরে যাও….

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! তুমিও না দাদীর মতো সামান্য বেপারটাকে এতো বড় করে ভাবো! [ চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে স্নেহার ]

রাহুল : ওকে Listen! তুমি তো দোয়া করছো আমার জন্য যাতে আমার কিছু না হয় তাই না ? [ একটু হেসে ] সো্ এতো কিউট একটা মেয়ের দোয়া কি আল্লাহ কবুল করবে না?..হুম?..

স্নেহা : [ হাত এগিয়ে দিয়ে ] আপনি সানগ্লাস পড়বেন না ড্রাইভ করার সময় প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ হেসে ] এক্সকিউজ মি! তুমি কি সপ্নে আমাকে সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভ করতে দেখেছো?…

স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] মনে নেই রাহুল! ব্যাস আপনি প্রমিস্ করেন!

রাহুল : [ স্নেহার হাতে হাত রেখে ] ওকে প্রমিস্!

স্নেহা : ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবেন না! স্লোলি করবেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে! প্রমিস্ ফার্ষ্ট ড্রাইভ করবো না স্লোলি করবো!

স্নেহা : ওভারটেক করবেননা বারবার!

রাহুল : [ আহ্লাদী কন্ঠে ] ওহো স্নেহা! এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?…

স্নেহা : [ চোখ রাঙিয়ে ] প্রমিস্ করেন?

[ কি আর করার রাহুল বাধ্য হয়ে স্নেহার মনের ভয় দূর করতে প্রমিস্ করেই দিলো ]

রাহুল : হ্যাপি?..

[ স্নেহা মুখ গোমড়া করে মাথা নাড়ালো ]

রাহুল : ওকে! এবার ভেতরে যাও তারপর আমি গাড়ীতে উঠবো!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিকে,রাহুল আবার ও চোখ দিয়ে ইশারা করলো ভেতরে যেতে, স্নেহার ও আর কি করার বাধ্য মেয়ের মতো ভেতরে ঢুকে পড়লো তবে ভেতরে ঢুকেছে ঠিক…কিন্তু মনটা রাহুলের কাছেই পড়ে আছে… তাড়াতাড়ি দু-তলায় উঠে শিরির জানালার গ্লাস খুলে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, রাহুলের মুখটাও গোমড়া দেখাচ্ছে…নিশ্চয় তারমনটাও স্নেহাকে খুঁজছে, না চাইতেও বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল…তাকিয়ে আছে স্নেহা, যতোক্ষণ না রাহুলের গাড়ী দেখা যাচ্ছিলো, চলে গেলো রাহুল ]
________________________________

দুপুর ৩ টা বেজে ১০ মিনিট,

রেষ্টুরেন্টের বারের মধ্যেই বসে আছে রাহুল তার ফ্রেন্ডসদের সাথে,সবাই এসেছে লাঞ্চ করার নামে অথচ কেউই লাঞ্চ করার ধারেকাছে নেই, সামনে গ্লাস নিয়ে এলকোহল খাওয়া শুরু করে দিয়েছে সবাই, ইনফ্যাক্ট তাদের কথা বলেও কি হবে রাহুল ও আগে সে্ইম কাজটাই করতো, বাট এখন তো খাওয়া দূরের কথা ছুঁয়ে ও দেখছে না, তা দেখে অবশ্য রাহুলের অনেক ফ্রেন্ডসরাই তাকে নিয়ে মজা করছে, কিন্তু তাও রাহুল এসব কথায় কেয়ার করছে না, কারণ ঐদিন শিপে স্নেহাকে কথা দিয়েছিলো রাহুল!…

হঠাৎ,ফোনটা বেজে উঠলো রাহুলের,স্নেহার কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসি্ভ করতে গেলো রাহুল! তখনি

রিদোয়ান : [ টেনে নিয়ে রিসি্ভ করে ] হাই ডার্লিং!

[ স্নেহা অবাক হয়ে কান পেতেই রইলো, সাথে সাথেই রাহুল হেসে রিদোয়ানের মাথায় বাড়ি দিয়ে ফোনটা কেড়ে নিলো ]

রিদোয়ান : আরে দোস্ত আমাদের ও একটু বলতে দে!

রাহুল : [ ফোন কানে দিয়ে ] আমি জানতাম এরমধ্যেই তোমার ফোন আসবে, [ রিদোয়ান ও কান লাগিয়ে রাখলো রাহুলের ফোনের সাথে ]

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি কোথায় এখন?…

রাহুল : আমি..আ..আমি এখন রেষ্টুরেন্টে,

রিদোয়ান : [ হেসে চেঁচিয়ে ] আরে রাহুল মিথ্যে বলছিস কেনো…? বলনা তুই এখন বাড়ে বসে ড্রিংক্স করছিস… [ রাহুল চোখ রাঙিয়ে তাকালো ]

রিদোয়ান : [ চোখ মেরে ফিসফিসিয়ে ] আই এমমম জোকিংং!

স্নেহা : আপনি ড্রিংক্স করছেন রাহুল?..

রাহুল : নো! স্নেহা! [ বলেই গ্লাস টেনে হাতে নিলো রিদোয়ানকে মারার জন্য সাথে সাথেই রিদোয়ান উঠে হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]

স্নেহা : কিন্তু রাহুল! ওখানেই কেউ এখন বলে উঠলো আপনি ড্রিংক্স করছেন!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] রিদোয়ান ছিলো! মজা করছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ওহ!

রাহুল : তবে মিথ্যে বলছিনা, আমি বাড়েই আছি! কিন্তু এসব ড্রিংক্স ট্রিংক্স কিছুই ধরে দেখিনি!

স্নেহা : হোহ! তাহলে আপনি ওখানে কি করছেন…?

রাহুল : আরে ওরা এসেছে লাঞ্চ করবে বলে আমি ও ভাবলাম তাই…কিন্তু এসে দেখি উলটা হয়ে গেছে,

স্নেহা : হুম! কিন্তু আপনি ওখানে বসে আছেন…আমিও কেমনি বিশাস করবো আপনি ধরে ও দেখেননি!

রাহুল : তাই?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : হুম..তাই!

রাহুল : নিজেকেও ততোটা বিলিভ করোনা যতোটা আমাকে করো আই নো দ্যাট স্নেহা ওকে!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা লাঞ্চ করেছেন?…

রাহুল : নাহ! তুমি?…

স্নেহা : আমিও নাহ!

রাহুল : তোমার তো ওসব Disgusted unlogical টেনশনে পেটে কিছু ঢুকছিলো না তাই না?…

– বাই দ্যা ওয়ে প্রুফ হলো তো? যে এসব বোকাস্!

স্নেহা : বাট রাহুল আমি অনেক শুনেছি দূর্সপ্ন তখনি দেখে যখন কোনো বিপদ ঘুরঘুর…

রাহুল : Again?…

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] আচ্ছা আপনি লাঞ্চ করেননি কেনো এখনো?…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম তুমিও করোনি! তোমার ফোনেরই অপেক্ষা করছিলাম!

স্নেহা : তাই? তাহলে এবার লাঞ্চ করেনিন আমিও রাখছি…

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] আরে শুনোতো [ একটু হেসেই ফোনটা কেটে দিলো স্নেহা ]

রাহুল : [ মনে মনে ] আজিব মেয়ে!
________________________________

রাত ১০টা বেজে ২০মিনিট,

চুলটা খোপা করে,শালটা গায়ে মুড়িয়ে, ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে বেড়িয়ে এলো স্নেহা! নিচে নেমে আসতেই দেখে রাহুল হাতে হাত বটে গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,

স্নেহাকে দেখেই,

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে ] হেইইই! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

স্নেহা : [ একটু হেসে এগিয়ে এলো ] আপনি?…

রাহুল : কেনো? অবাক হওয়ার কি আছে..আগেই তো বলেছি আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : কিন্তু শুধু আসার সময় ড্রপ করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন!

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] তোমার কথা শুনে না মাঝে মাঝে সুইসাইড করতে ইচ্ছে করে আমার!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের পাশে এসে দাঁড়ায় ] হুট করেই রেগে যান কেনো বলেন তো?…

– আমি মজা করছিলাম!

রাহুল : কটা বাজছে বলোতো?…আজ ২০মিনিটস্ লেইট!

স্নেহা : হ্যা তো কি হয়েছে! আপনি আছেন না সাথে!

[ রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা ও হঠাৎ লজ্জা পেয়ে ব্লাশিং হয়ে অন্যদিক ফিরে গেলো ]

রাহুল : [ হেসে ] গাড়ীতে ওঠো! [ বলেই দরজা খুলে দিলো, স্নেহা উঠে বসলো, রাহুল ও ওপাশ গিয়ে উঠে বসে ড্রাইভ করতে লাগলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনি…আপ…আপনার জ্যাকেট চেঞ্জ করে ফেললেন যে?..

রাহুল : মানে?..

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে জোড়ে একটি শাস ফেলে ] মানে আপনি তখন ব্লু-জ্যাকেট পড়েছিলেন,এখন আবার হোয়াইট!

রাহুল : [ একটু হেসে ] শাওয়ার নিয়েছিলাম তাই!

স্নেহা : [ আড় চোখে তাকিয়ে ] আপনি উইন্টারে একদিনে কয়বার শাওয়ার নেন বলেন তো?..আচ্ছা মানলাম শাওয়ার নিয়েছেন! কিন্তু ব্লু-জ্যাকেট টা তো আবার পড়া যেতো তাই না?..

– এ..এক মিনিট! আপনি মিথ্যে বলছেন কেনো? আপনি যদি সত্যিই আবার শাওয়ার নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার হোয়াইট শার্ট ব্লাক প্যান্টটা তো ঠিকই আছে,

রাহুল : এক্সকিউজ মি! তখন হোয়াইট শার্ট ছিলো এখন টি-শার্ট!

স্নেহা : যাই হোক সব গুলো তো সেইম রাখলেন কিন্তু যেটা আমার সাথে ম্যাচ হয়েছিলো ওটাই চেঞ্জ করে ফেললেন!

রাহুল : রাগছো কেনো?..[ with tedi smile ]

স্নেহা : রাগবো কেনো! এ..এমনিই বলছি!

রাহুল : তাহলে মানছো যে তখন ইচ্ছে করেই আমার সাথে ব্লু ম্যাচিং করে পড়েছিলে!

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– তবে তাতে আপনার কি?..আপনার তো আমার সাথে ম্যাচিং করে পড়ার কোনো ইন্ট্রেষ্ট নেই!

[ রাহুল হেসে কিছু বলতে যাবে তখনি স্নেহার ফোনটা বেজে উঠে,স্নেহা ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে তার মা ফোন দিয়েছে, রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কে?. ]

স্নেহা : মা!

রাহুল : ওহ! [ বলেই আবার ড্রাইভ করতে ব্যস্ত ]

স্নেহা : রার..রাহুল একটু গাড়ী থামান!

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] কেনো?..

স্নেহা : এক্সুলি! আ…

[ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা রাহুলের সামনে হয়তো তার মায়ের সাথে কথা বলতে চাইছে না ]

রাহুল : [ হেসে ] ওকে ওকে! রিলেক্স! আই আন্ডারষ্ট্যান্ড! [ বলেই রাহুল একপাশ করে গাড়ী থামালো, স্নেহা দরজা খুলে গাড়ী থেকে নামতেই যাচ্ছিলো তখনি, ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]
তুমি ভেতরে বসো আমিই নামছি! কথা শেষ হলে নক দিও! [ বলেই রাহুল গাড়ী থেকে নেমে দরজা বন্ধ করে দিলো ]

কিছুক্ষণ নিস্থব্ধ হয়ে বসে রইলো স্নেহা! কেনো যেনো রাহুলের এতো কেয়ার,এতো ভালোবাসার মাঝে তার ভালোবাসাকে খুবই ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে আজ! কখনো ভাবেনি স্নেহা তার জীবনে এমন একজন ভালোবাসার মানুষ আসবে! যে তাকে চোখের আড়াল হতে দিবে না, ভাবতেই চোখে জল জমে আসছে স্নেহার! সাথে ব্লাশিং ও হচ্ছে!
চোখ মুছে ডায়াল লিষ্টে গিয়ে তার মা কে আবার কল ব্যাক করলো!

মা : হ্যালো!

স্নেহা : হ্যা! মা বলো.! সব ঠিকাছে তো?..এতো রাতে ফোন দিলে যে!

মা : সব ঠিকটাক! এবং সব ঠিক হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ! এখন আর কোনো টেনশন নেই! সব ধীরেধীরে শোধ করতে পারবো স্নেহা!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] কিন্তু মা এসব কিভাবে হলো ?…

মা : ব্যাস! কাউকে পাঠিয়েছে আল্লাহ! ফেরেশতা বানিয়ে!

স্নেহা : মানে?..

মা : [ একটু হেসে ] মানে সব কাল এসেই বলবো!

স্নেহা : [ এক্সাইটেড হয়ে চেঁচিয়ে ] কাল এসে মানে?..তোমরা কাল শহরে আসছো?..

মা : হ্যা! তোর মামার বাসায় আসছি!আর শোন এখন থেকে সব ধ্যান পড়ার মধ্যেই দিবি! ডান্স ক্লাস নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না!

স্নেহা : মা! তুমি জানো না কতো বড় সারপ্রাইজ দিয়েছো!

মা : তোর জন্য তো আরেকটা সারপ্রাইজ আছে!

স্নেহা : তাইই?.. কি সারপ্রাইজ?

মা : কাল দুপুরবেলাই পৌছাবো আমরা,তখন তুই মামার বাড়ীতেই এসে দেখেনিস সারপ্রাইজটা!

স্নেহা : আরে মা! আমি এমন সারপ্রাইজ পছন্দ করি না তুমি তো জানো…আমার রাতে ঘুম হবে না সো্ বলে দাও কিহ সারপ্রাইজ!

মা : এখন বললে লজ্জায় তোর আরো ঘুম হবে না আমি জানি! তাই কালই দেখিস!

স্নেহা : উফফ! আচ্ছা বাদ দাও, বাই দ্যা ওয়ে আমার ও তোমাদের কিছু বলার ছিলো…

– কাল আসলে তখন বলবো!

মা : আচ্ছা!

স্নেহা : বাবা কেমন আছে…?

মা : ভালো আছে…তোর জন্যই চিন্তা সারাক্ষণ!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আর রাশু!

মা : সে তো মহাখুশি! কাল আপুর সাথে দেখা হবে!

স্নেহা : তাই?.. আচ্ছা মা শোনো আমি না এখন রাখছি তোমার সাথে পড়ে কথা বলবো!

মা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ স্নেহা ফোন কেটে বেগে ঢুকিয়ে ড্রাইভিং সি্টে এগিয়ে গিয়ে বসে জানালার গ্লাসটা নামালো ]

স্নেহা : হ্যালোও! [ রাহুল এগিয়ে এসে দরজা খুললো ]

স্নেহা : উমম! ভাবছি ড্রাইভ আমি করি!

রাহুল : [ একটু হেসে ] তাই?..তাহলে বোধ হয় তোমার সপ্নটা আজ সত্যি হতে চলছে! [ স্নেহা মুখ গোমড়া করে রাহুলের দিক তাকাতেই রাহুল চোখ টিপ মাড়লো! ]

রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে! তোমার এক্সপেরিয়েন্স থাকা উচিৎ আসলে! সব মেয়েদেরই উচিৎ ড্রাইভিং জানা! তুমি চাইলে আমার কোলে বসে ড্রাইভ শিখতে পারো আগে! আমি মাইন্ড করবো না!

স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে হেসে ] থেংক্স বাট নো নিড! [ বলেই স্নেহা তার সি্টে চলে গেলো, রাহুল ও হেসে উঠে বসে গাড়ী স্টার্ট দিলো, কিছুদূর যাওয়ার পরেই ]

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] আরে ওদিকে কই যাচ্ছেন! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না ]

স্নেহা : রাহুল! কিছু বলছেন না কেনো?..

রাহুল : ভরসা আছে আমার উপর?…

স্নেহা : হ্যা! আছে…

রাহুল : তাহলে অস্থির হচ্ছো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না সি্টে হেলান দিয়েই বসে থাকে, কিছুক্ষণ পর দেখে গাড়ী রাহুলদের বাড়ীর গেইটের ভেতরই ঢুকছে, স্নেহা উঠে বসে অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ গাড়ী থামিয়ে ] কাম!

স্নেহা : রাহুল…আপনি এইখানে হঠাৎ…

রাহুল : এতো প্রশ্ন করো কেনো বলোতো?..ওহ ইয়াহ! আমি তো ভুলেই গেলাম তুমি ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্ট![ রাহুলের কথা শুনে স্নেহা একটু হেসে উঠে ]

রাহুল : [ হাত জোড় করে ] ক্রিপিয়া করুণ স্নেহা মেম! যদি আপনার হাতে কিছু সময় থাকে তাহলে আমার প্রতি দয়া করে একটু ভেতরে আসবেন?…

-প্লিইইইজ!

[ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দিয়ে গাড়ী থেকে বেড়িয়ে আসে, রাহুল স্নেহাকে নিয়ে তার গেষ্ট হাউজের ভেতরই ঢুকলো, দরজা খুললেই ]

স্নেহা : এতো অন্ধকার কেনো?..

রাহুল : আমার হাত ধরো,

স্নেহা : কিন্তু রাহুল লাইট জালালেই তো হয়! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না তাতে স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুল রাগছে তাই স্নেহা হেসে রাহুলের হাতটা জড়িয়ে ধরলো ]

রাহুল : তোমরা মেয়েরা এমনই! বিশেষ করে ম্যাথমেটিকস্ এর স্টুডেন্টরা, স্যার এই সূত্রটা না ঐ সূত্রটা ছিলো মনে হয়,কিছুক্ষণ চিন্তা করবে তারপর ধীরেধীরে লাইনে আসবে ওহ নো স্যার সরি স্যার এক্সুলি এটাই ছিলো!

স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে রাহুলের হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি আমার সাবজেক্ট এর পেছনে কেনো লেগে আছেন বলেন তো?

রাহুল : এক্সেম্পল দিলাম!
[ বলেই স্নেহাকে হাত ধরে নিয়ে বেডরুমে ঢুকিয়ে লাইট জালালো, হঠাৎ স্নেহা খেয়াল করলো, খাটের উপর কয়েকটা গিফট বক্স পড়ে আছে, রাহুল এগিয়ে গিয়ে সব চেয়ে বড় যেটি সেটি হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]

রাহুল : টেক ইট! [ স্নেহা অবাক হয়ে হাতে নিলো ] ওপেন করো! [ স্নেহা ধীরেধীরে ওপেন করে দেখে একটি সাদা ড্রেস! ]

স্নেহা : এটা?…

রাহুল : এটা তুমি এখন পড়বা!

স্নেহা : কিক…কিন্তু কেনো?…

রাহুল : বিকজ আমার ও [ বলেই রাহুল হাত দিয়ে তার জ্যাকেটের কলার ধরে নাড়ালো,] ইন্ট্রেষ্ট আছে! [ স্নেহা অবাক হলো রাহুলের কান্ডে তাও হাসলো ]

স্নেহা : এসবের কি দরকার ছিলো..ব্লুতে ও তো আমরা ম্যাচিং ছিলাম!

রাহুল : আমার দরকার আছে! সো্ আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ এটা পড়ে নাও!

স্নেহা : রাহুল! ড্রেসটা দেখেই মনে হচ্ছে অনেক ভারী হবে!

রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] আচ্ছা?..দেখি [ বলেই রাহুল প্যাকেট থেকে ড্রেসটা বের করে হাতে ধরলো ] আরে হ্যা! তাই তো অনেক ভারী! নিচের পার্ট এটা, কি যেনো বলে এটাকে উমমম!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] ঘাগড়া!

রাহুল : ইয়া..ইয়াহ! ঘাগড়া ক্যারেক্ট! বাট নিচের পার্টটাই এতো ভারী আর পুরোটা পড়লে তোমার শরীর বলছে তুমি এদিকেই কাত হয়ে যাবে…[ বলেই হেসে উঠে রাহুল স্নেহা চোখ রাংগিয়ে তাকিয়ে রইলো, রাহুলের দিক ]

রাহুল : ওকে ওকে আম সরি! আম সরি!

– এক্সুলি অনলাইনে এটাই ভালো লেগেছে তাই এটাই অর্ডার করেছি আমি আসলে বুঝতে পারিনি!
– আর তুমি তো দেখেই বুঝে গেছো ব্রিলিয়ান্ট

– আচ্ছা এমন ভারী ড্রেস মেয়েরা কেড়ি করবে কেমনি বলোতো? যারা ড্রেস গুলো বানিয়েছে তাদের এগুলো দিয়ে কবর দেওয়া উচিৎ! [ স্নেহা হেসে উঠে রাহুলের কথা শুনে ]

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ড্রেসটা খাটে ছুড়ে মেরে ] এনিওয়ে বাদ দাও এসব! অন্য একটা ট্রাই করবো!

স্নেহা : আচ্ছা আপনার ফেভারিট কালার কি?…

রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কানের কাছে মাথা এনে ফিসফিসিয়ে ] তোমার স্কিন কালার! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ড্রেসটা খাট থেকে এগিয়ে নিলো ]

রাহুল : Listen!

স্নেহা : শিসসস! [ বলেই হেসে উঠে, রাহুল ও হেসে উঠে ]

স্নেহা প্যাকেট থেকে টপসটা হাতে নিয়ে ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে টপসটা হাতে তুলে ধরে শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো,

রাহুল : [ এগিয়ে এসে ] আবার কি হলো ?..

স্নেহা : রার…রাহুল টপসটা অনেক ছোট আমি এমন টপস কখনো পড়িনি,

রাহুল : [ একটু হেসে ] পড়েছিলে, [ স্নেহার কাছে এসে ] মার্মেড হাউজ!

স্নেহা : হ্যা! কিক..কিন্তু এটা ওটার চেয়েও ছোট!

রাহুল : আসলে কি জানো তখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলেনা,তাই ওটা একটু বড় ছিলো, আর এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড তাই এটা একটু ছোট [ বলেই চোখ টিপ মেরে স্নেহার কাছে মুখ এনে তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে থাকে, স্নেহা ও লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]

রাহুল : কামঅন স্নেহা! এতো ভাবছো কেনো?…শুধু আমিই তো দেখবো…[ বলতেই স্নেহা শকড হয়ে তাকায় ]

– রিলেক্স স্নেহা, ওড়না মুড়িয়ে আসবা দ্যাটস ইট! [ বলেই স্নেহার চুলের খোপাটা খুলে দিলো, স্নেহা ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায় ]

কিছুক্ষণ পরই দরজা খোলার টুকটাক আওয়াজে রাহুল ফিরে তাকালো,স্নেহা বেড়িয়ে আসলো গায়ের ওড়নাটা কতোক্ষণ এদিক টানছে তো কতোক্ষণ ওদিক, কয়েক মিনিটের জন্য রাহুল নিস্থব্ধ হয়ে হারিয়েই গেছে,ধীরেধীরে রাহুল পা এগিয়ে স্নেহার কাছে আসতে লাগলো আর তা দেখে স্নেহার হার্টবিট বেড়েই চলছে….এদিকওদিক তাকাতে লাগলো স্নেহা,একহাত ঘাড়ে রেখে আরেক হাতে পেট ঢেকে রাখলো….রাহুল তার কাছে আসতেই

স্নেহা : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] ওড়নাটা অনেক পাতলা এর চেয়ে ঘঘ…ঘনো তো মশারি ও থাকে…

রাহুল : বাট এটাই তোমাকে অনেক সেক্সি লাগছে! [ With tedi smile ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে চেঁচিয়ে ] হোয়াট!

রাহুল : আব…আমি কিছু বলেছি?.[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না অন্যপাশ ফিরে যায় ]

রাহুল : [ স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে কাছে টেনে ] এনিওয়ে এখন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড বলতেই পারি! [ স্নেহার কানের দিক মুখ এনে ] রিয়েলি ইউ লুকিং সো্ সেক্সি এন্ড হট! ইন দিস্ ড্রেস্ [ স্নেহা তার কোমোড় থেকে রাহুলের হাত ছুটিয়ে সরে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : আব…দেদ…দেখা শেষ…আমি চেঞ্জ করে আসি…[ বলেই স্নেহা মোড় ফিরে চলে যাচ্ছিলো বাট রাহুল হুট করেই স্নেহার হাত ধরে কাছে টেনে নেই ]

রাহুল : আমি বলেছি?.. চেঞ্জ করতে! [ বলেই স্নেহার পিঠে স্লাইড করে হাত রেখে চুল গুলো একপাশ করে রাখলো,ধীরেধীরে স্নেহার কাধে হাত রেখে স্নেহাকে পেছন ফেরালো, বুকটা ধুপধুপ করছে স্নেহার হঠাৎ খেয়াল করলো তার গলায় রাহুল কিছু পড়িয়ে দিচ্ছে তাকিয়ে দেখে একটি হোয়াইট স্টোনের নেকলেস ]

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] রাহুল! এসব….

রাহুল : [ স্নেহার মুখে আঙুল দিয়ে ] শিসসস!….[ বলেই স্নেহাকে নেকলেসটি পড়িয়ে দিলো, ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার কানের দিক স্লাইড করে চুল গুলো গুজে দিলো, স্নেহা চোখ বন্ধ করে শিউরে উঠলো, রাহুল স্নেহার দু-কানেই ইয়ার রিং পড়িয়ে দিলো, স্নেহার হাতে স্লাইড করে তার দিক ফিরিয়ে নীল চুড়ি গুলো খুলে নিলো… ধীরেধীরে হোয়াইট স্টোনের কিছু চুড়ি পড়িয়ে দিলো,স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক…]

রাহুল : [ স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] ব্যাস! এইদিনটার অপেক্ষা ছিলো…তোমাকে নিজের হাতে সাজাবো…. [ বলতেই স্নেহা রাহুলের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে ]

কিছুক্ষণ পর,

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ব্যাস ব্যাস স্নেহা তোমার চোখ বন্ধ করো,লেইট হচ্ছে!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] চোখ বন্ধ করবো?..কিন্তু কেনো…?

রাহুল : ওহো! [ বলেই স্নেহার চোখে হাত দিয়ে চেপে ধরে, ড্রইং রুমের দিক এগিয়ে নিয়ে যায় ]

স্নেহা : রাহুল কোথায় নিচ্ছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] ব্যাস আমি যতোক্ষণ বলবো না ততোক্ষণ চোখ খুলবানা প্রমিস করো!

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] আচ্ছা! [ রাহুল স্নেহা থেকে সরে দাঁড়িয়ে লাইট জালাতে এগিয়ে গেলো হঠাৎ আবার স্নেহার দিক তাকাতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, অন্ধকারে স্নেহাকে এমন ঝলমলে দেখাচ্ছে যেনো লাগছে রাতের কালো আকাশে চাঁদের আলো ভেসে আছে, ব্লাশিং হয়ে মাথা চুলকে লাইটের সুইচটা অন করলো রাহুল! বিকট এক শব্দ কানে ভেসে আসলো স্নেহার! চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো…সামনের দিক তাকাতেই দেখে সবদিক অন্ধকার শুধু কিছু হলুদ রঙের বাতি জলে উঠলো এবং তা দিয়ে বড় করে লিখা আছে ” HAPPY ” মাথার উপর থেকে কিছু ঝড়ে পড়ছে, তাই উপরের দিক তাকালো এবং দেখতে পাই গোলাপের পাপড়ি হঠাৎ আবারো সেই বিকট শব্দ, স্নেহা চমকে উঠে কানে হাত দিয়ে চেপে আবার সামনে তাকাতেই দেখে আরো কিছু বাতি জলে উঠলো, যেখানে লিখা আছে ” BIRTHDAY ” আবারো সেই শব্দ কানে ভেসে এলো চমকে উঠে চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! ধীরেধীরে কোমোড়ে কারো স্পর্শ পেতে স্নেহা চোখ খুলে তাকালো, সামনে তাকিয়ে যে লিখাটা দেখতে পেলো একই সাথে সেই শব্দগুলো ও কানের ধারে কেউ বলে উঠলো, ” HAPPY BIRTHDAY SNEHA” চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলো না স্নেহা! গড়গড় করেই ঝড়ে যাচ্ছে, রাহুলের দিক চোখ তুলে তাকাতেই সে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো,

রাহুল : আজ একদম কাঁদবা না বুঝেছো! আজকের দিনটা খুবই স্পেশাল! [ রাহুলে পকেটে হাত দিয়ে একটু পেছন সরে দাঁড়িয়ে ] কারণ আজকের দিনে পৃথিবীতে একটা এঞ্জেল এর জন্ম হয়েছিলো! যে এঞ্জেলটা এখন আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, যে এঞ্জেলটাকে অন্ধকারে ও ঝলমলে দেখাচ্ছে… ওয়াহ স্নেহা আমার মাথা তো পুরাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তোমাকে যতো দেখছি! [ স্নেহা চোখ মুচছে আর হাসছে, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে দু-হাত মেলে দিলো,বুকে আসতে ইশারা করলো স্নেহাকে!…স্নেহা ও একটু হেসে দৌড়ে এসে রাহুলের বুকে ঝাপটে পড়লো, রাহুল ও হেসে টাইট করে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে ]

রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে ] ওয়েট আরেকটা সারপ্রাইজ বাকি আছে, [ বলেই পকেট থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিয়ে টিভিটা অন করলো, সাথে সাথেই জারিফা আর মার্জান একসাথে বলে উঠে, হ্যাপি বার্থডে স্নেহাআআআ, স্নেহা অবাক হয়ে খুশিতে মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখে ]

জারিফা : আরে ওয়াহ মাশাল্লা স্নেহা! কিনা লাগছে তোকে!

মার্জান : ইয়া আল্লাহ! বদমুখের নজর থেকে দূরেই রাখো আমার স্নেহাকে

জারিফা : [ মার্জানকে চিমটিয়ে ] এইই আমি মাশাল্লা বলেছি ওকে?..হুহ!

– বাই দ্যা ওয়ে স্নেহা! ওড়নাটা সরানা ফুল ড্রেস দেখি!

[ স্নেহা অবাক হয়ে একবার আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে সাথে সাথে অন্যপাশ ফিরে গেলো স্নেহা ]

মার্জান : [ জারিফাকে ধাক্ষিয়ে ফিসফিসিয়ে ] পাগল হয়েছিস দেখছিস না রাহুল আছে!

জারিফা : [ জিহ্বায় কামড় খেয়ে একটু হেসে ] ডোন্ট ওয়ারি! জিজু ডোন্ট মাইন্ড আমরা কিন্তু সব দেখতে চাইনি জাষ্ট কাপড় দেখতে…[ বলতেই মার্জান জোড়ে একটি চিমটি দিলো ]

জারিফা : আআআহ! [ রাহুল হেসে উঠে ]

জারিফা : ওকে ওকে! হেই স্নেহা দেখ! আমি তোর জন্য কি বানিয়েছি! চকলেট কেক হুম!

মার্জান : ওই! তুই বানিয়েছিস?…

জারিফা : আচ্ছা ও হ্যা! মানে ঐও হালকা একটু হেল্প করেছে… বাট বেশি ক্রেডিট কিন্তু আমারই!

মার্জান : ব্যাস! জারিফা ব্যাস! এখন ভিডিও কলে আছি তাই কিছু বলছি না…

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! দুজনে মিলেই বানিয়েছি! স্নেহা তুই ঐ দিকে কাট আমাদের জিজুর সাথে আর আমরা এইদিকে কাটছি ওকে! [ স্নেহা জলভরা চোখে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : স্টপ ইট! স্নেহা! [ বলেই চোখ মুচে ছুরিটা হাতে ধরিয়ে দিলো ]

মার্জান : কামঅন স্নেহা! এসব কান্নাকাটি বন্ধ কর তাড়াতাড়ি কেক কাট! [ স্নেহা চোখ মুছে কেক কেটে আগে রাহুলকে খাওয়াতে চাইলে রাহুল স্নেহা থেকে কেড়ে নিয়ে আগে স্নেহাকেই খাওয়ালো ]

জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! এখন আমরা নিজের হাতে নিজেই খাচ্ছি বাসায় আসলে তুকে খাইয়ে দিবো [ বলেই কেক কেটে মুখে ঢুকিয়ে নিলো ] ওয়াহ কি টেষ্ট!

মার্জান : [ হেসে ] খা! নাদানের বাচ্চা!

– আচ্ছা গাইস্! আমরা এখন রাখছি আমাদের কাজ শেষ! টাটা

জারিফা : বাইইই! স্নেহা…ওহহো! জিজাজি এতো ব্লাশিং হচ্ছেন কেনো…বলেন তো ?[ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

রাহুল : Shut-up [ জারিফা আর মার্জান দু-জনেই হেসে উঠে ]

মার্জান : ওকে ওকে! গুড নাইট [ বলেই কেটে দিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আপনাকে ওরা বলেছে আজ আমার বার্থডে?…

রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ] নো! ঐদিন ভার্সেটিতে তোমার ফর্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো..ওটা Solve করার সময় হঠাৎ তোমার বার্থ ডেট খেয়াল করি! ব্যাস…

স্নেহা : [ রাহুলের মাথা টেনে তার কপালে লাগিয়ে ] সো্ মিষ্টার রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : আমার বার্থডে স্পেশাল আরেকটা গিফট চাই?…

রাহুল : ইয়েস্?..

স্নেহা : আপনি এখন! গিটার বাজিয়ে একটা গান করবেন!

রাহুল : [ একটু হেসে ] রিয়েলি?..এটাই?..

স্নেহা : হ্যা এটাই!

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে ] আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে ওয়াল থেকে গিটারটা ছুটিয়ে নিয়ে স্নেহার কাছে এসে পাশে বসলো হঠাৎ স্নেহা রাহুলের কপালের দিক নেমে যাওয়া চুল গুলো হাত দিয়ে সোজা করে দিলো, রাহুল চোখ দিয়ে ইশারা করলো কিহ?..]

স্নেহা : কিছু না [ বলেই গিটার বাজাতে ইশারা করলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে বাজাতে লাগলো আর স্নেহা মন দিয়ে শুনতে লাগলো ]

রাহুল : ? ??

” পে্হলি নাযা্র মে কেসা্ জাদু কারদিয়া, তে্রা বান্ বে্ইটা হে্ মে্রা জি্য়া,
জানে্ কি্য়া হোগা্ কিয়া্ হোগা্ কি্য়া পাতা্
ইস্ পাল্ কো মি্লকে আ জি্ লে যা্রা
মে্ হু ইয়া্হা তু হে্ ইয়া্হা
মেরি বা্~হো্মে আ আভি্যা্
ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জা্হা মে্রি বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

বেবি্ আ লাভ্ ইউ
বেবি্ আ লাভ্ ইউ সো্ মোর্
ওহ্ বেবি্ আ লাভ্ ইউ….

[ গিটার টা হাত থেকে পাশে রেখে রাহুল স্নেহার হাত টেনে দাড় করিয়ে ঘুড়িয়ে এক হাত স্নেহার কোমোড়ে আরেক হাতে স্নেহার হাত মুঠি বেধে ধরলো ]

রাহুল : মে আই?…[ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে মাথা নাড়ালো রাহুল ও একটু হেসে স্নেহাকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে নাচাতে লাগলো ]

রাহুল : ♪♪ হার্ দুয়া্ মে্ শামিল্ তে্রা পি্য়ার হে ♪♪
বিন্ তে্রে লামহা্ বি্ দুশ্ওয়া্র হে্ ধাডখো্নো কো্ তুঝসে্ হি দারকা্র হে!

” তুঝ্সে্ হি্ রাহা্তে হে্ ”
” তুঝ্সে্ হি্ চাহা্তে হে্ ”

তু জো্ মিলি্ একদিন্ মুঝে্ মে্ কাহি্ হো্ গায়া্ লাপা্তা~~

ও জা্নে জা্~~ দোনো্ জাহা্ মেরি্ বা্~হো্মে আ ভুলে্ যা্

[ রাহুল হেসে হেসেই গানটা গাইতে লাগলো আর স্নেহাকে নাচাতে লাগলো,রাহুলের কান্ডে স্নেহা ও হাসতে লাগলো হঠাৎ টেবিলের ধারে আসতেই স্নেহা কেক থেকে কিছু ক্রিম নিয়ে রাহুলের গালে লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ শকড হয়ে ] আচ্ছা?.. [ স্নেহা মুখ চেপে একটু হেসে রাহুলের আরেক গালে ও লাগিয়ে দিলো ]

রাহুল : তবে আমি কিন্তু শুরু করিনি তুমিই করেছো! [ বলেই রাহুল কেক থেকে অনেক গুলো ক্রিমই তার হাতে উঠিয়ে স্নেহাকে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো তাতে স্নেহা ও পিছিয়ে নয় সে ও দৌড়াতে লাগলো হঠাৎ পেছন ফিরে তাকাতেই Unfortunately রাহুল স্নেহাকে নিয়ে লিভিং সোফায় ঝাপিয়ে পড়ে, আর স্নেহা ও Unbalance থাকায় ভয়ে চেঁচিয়ে উঠে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা কিছু করিওনি মাত্র শুলাম এতেই এতো বড় চিৎকার!

স্নেহা : ছিঃ রাহুল! [ বলেই উঠে দাঁড়াতে চাইলো কিন্তু ব্যর্থ, হঠাৎ খেয়াল করলো রাহুল স্নেহার ওড়না সরিয়ে ক্রিম গুলো স্লাইড করে পেটে লাগিয়ে দিচ্ছে, কেপে উঠছে স্নেহা! রাহুলের জ্যাকেট খিঁচে ধরলো শক্ত করে, রাহুলের হাত ধীরেধীরে উপরের দিকই উঠছে তা খেয়াল করে স্নেহা লজ্জা পেয়ে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, দু-কদম পা বাড়াতেই স্নেহা থেমে গেলো,কেউ ওড়নাটা ধরে ফেলেছে, পেছন মুড়ে তাকালে দেখে রাহুল তার ওড়না টেনে ধরে তেডি স্মাইল দিয়ে উঠে দাঁড়ালো ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ রাহুল কোনো জবাব দিলো না স্নেহার ওড়নাটা তার হাতে বটতে লাগলো আর পা স্নেহার দিক বাড়াতে লাগলো, স্নেহা ঢোগ গিলছে আর রাহুলের কাছে আসা দেখে সে পেছাতেই আছে, এক পর্যায়ে স্নেহা পেছাতে গিয়ে দেওয়ালের সাথে ধাক্ষা খেলো আর পেছানোর জায়গা নেই বুঝতে পেরে নিচের দিক চোখ নামিয়ে রাখলো স্নেহা! ওড়নাটাও পুরোটা রাহুল তার হাতেই বটে নিলো, পেটের দিক থেকে লাগিয়ে দেওয়া কিছু ক্রিম রাহুল তার আংগুল দিয়ে কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো!.. জোড়ে জোড়ে শাস নিতে লাগলো স্নেহা! যতোবারই রাহুলের ছোয়া শরীরে লাগছে স্নেহার বুকটা কেপে উঠছে…

ধীরেধীরে রাহুল স্নেহার গলায় চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো চুষে নিলো…কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্নেহা হারিয়েই গেছে এক অদ্ভুত ভালো লাগায়, রাহুল ছুটে আসলে স্নেহা চোখ মেলাতে না পেরে সরে যেতে চাইলো..কিন্তু রাহুল দেওয়ালে হাত রেখে স্নেহাকে আটকিয়ে ফেলে,স্নেহা নিরুপায় চোখে তাকালো রাহুলের দিক!… রাহুল স্নেহার কপালে একটি চুমু খেয়ে তার গালে লাগিয়ে দেওয়া ক্রিম গুলো ঘষে স্নেহার দু-গালে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো..এবং ধীরেধীরে গালে চুমু খেয়ে ক্রিম গুলো ও চুষে নিলো…

শরীরের লোম শিউরে উঠছে স্নেহার চোখ বটে নিজের কাপড় নিজেই শক্ত করে মুঠি বেধে ধরে রেখেছে স্নেহা…

রাহলে তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার পেট থেকে আঙুল দিয়ে স্লাইড করে আবারো কিছু ক্রিম কুড়িয়ে নিয়ে স্নেহার ঠোটে স্লাইড করে লাগিয়ে দিলো… ঠোট কাঁপছে স্নেহার রাহুলের হাতের স্পর্শে সাথে বুকটাও ধুপধুপ করে কেপে যাচ্ছে…

কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুল স্নেহার দিক,চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে স্নেহা…

রাহুল একটু হেসে ধীরেধীরে তার ঠোট দিয়ে স্নেহার ঠোটের ক্রিম গুলো ও চুষে নিতে লাগলো,

নিস্থব্ধ হয়ে গেছে স্নেহা…রাহুল তাকে পাগলের মতো ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে….

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে