Love At 1St Sight Season 3 Part – 30

0
5437

Love At 1St Sight
~~~Season 3~~~

Part – 30

writer-Jubaida Sobti

স্নেহা : বাই দ্যা ওয়ে, রাহুল!

রাহুল : হুম?..

স্নেহা : আপনি লোকটাকে দেখে এমন রিয়েক্ট করলেন কেনো?…

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] আমার জাষ্ট এটা জানার ছিলো ওকে কে পাঠিয়েছে!

স্নেহা : কিন্তু রাহুল আপনার এমন কেনো মনে হচ্ছিলো যে লোকটাকে কেউ পাঠিয়েছে!

রাহুল : তুমি যখন বেড়িয়েছো ও তখন তোমার পিছু নিচ্ছিলো, আমি গাড়ীতে বসেই দেখেছিলাম, ইনফ্যাক্ট ও ফোনে কারো সাথে কথাও বলছিলো তখন আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিয়র হয়েগিয়েছিলাম যে একে কেউ পাঠিয়েছে,

স্নেহা : [ একটু হেসে ] এমন ও তো হতে পারে লোকটা নিজের পার্সোনাল মেটারে কাউকে ফোন দিয়েছে!

রাহুল : তোমার মতো বোকা মেয়েরা এসব ভেবেই বোকামি করে ফেলে!

– আরে ওর কোনো প্লান না থাকলে ওর থেকে আমি যখন জিজ্ঞেস করছিলাম তখন ও পালালো কেনো?…

[ স্নেহা আর কিছু বললো না চুপ হয়েই রইলো ]

বাড়ী এসে পৌছালো, স্নেহা গাড়ী থেকে নামতেই রাহুল ও বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো,

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম! [ বলেই হেসে উঠে ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হাসছো কেনো?

[ স্নেহা হেসে হেসে হাত দিয়ে রাহুলের নাকের দিক ইশারা করলো ]

রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] অহ ইয়াহ! [ বলেই স্নেহার ওড়নার আচল টেনে নিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে দেওয়া Mayonnaise গুলো মুছে নেয় ] এবার হাসো!

স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বাই গুডনাইট! [ বলেই ওপাশ ফিরে চলে যাচ্ছিলো ]

রাহুল : Listen! [ স্নেহা ফিরে তাকালো ]

রাহুল : আই লাভ ইউ!

স্নেহা অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, হঠাৎ কেনো যেন অনেকটা মায়াবী লাগছে আজ রাহুলের চেহেরাটা! স্নেহার ইচ্ছে করছিলো জোড়ে টাইট করে রাহুলকে জড়িয়ে ধরবে…কিন্তু কি করার আশেপাশে কেউ এসে দেখে ফেললে!

রাহুল ও তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক ,ধীরেধীরে এগিয়ে রাহুলের একদম কাছে এসেই দাঁড়ালো স্নেহা, আশেপাশে একবার তাকিয়ে, পা কিছুটা আলগা করে রাহুলের গালে একটি চুমু খেলো, তা দেখে রাহুলের চেহেরায় হাসি ফুটলো!

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়িয়ে ] বাই!

রাহুল : বাই! [ With tedi smile ] [ চলে গেলো স্নেহা, রাহুল ও হেসে বেড়িয়ে পড়লো ]

[ বাসায় ঢুকে স্নেহা ফ্রেশ হয়ে খাটে বসলো ]

মার্জান : স্নেহা! ডিনার করবিনা?..কখন থেকেই ডাকছি!

স্নেহা : এক্সুলি মার্জান আমার না খিদে নেই তোরা খেয়েনে!

জারিফা : [ স্নেহাকে হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে ] একটা সেন্ডুইচে পেট ভরে উলটে যায় না, ওকে! চল…

– আর এমনিতেও সারাদিনে যে ডান্স ডান্সে পার করিয়ে দিস এতে তো ক্ষিধে আরো বেশি লাগা উচিৎ তাই না!

স্নেহা : [ একটু হেসে জারিফা থেকে হাত ছুটিয়ে আবার খাটে বসে ] সত্যি ক্ষিধে নেই আমার, আর তোরা… ফোর্সড করিসনা প্লিজ…এক কাজ কর খাবার টেবিলে রেখে দে আমার ক্ষিধে লাগলে তখন নিয়ে খেয়ে নিবো!

জারিফা : [ মুখ ভেংগিয়ে ] ওকেই…[ বলে উঠে চলে যায় ]

স্নেহা হেসে চোখ থেকে চশমাটা খুলে টেবিলে রাখে, কম্বলটা টেনে শুতে যাবে তখনি রাহুলের পড়িয়ে দেওয়া রিংটির দিকে চোখ পড়লো সাথে সাথেই ব্লাশিং হতে লাগলো! আর রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করতে লাগলো,

কিছুক্ষণ পর, পাশ থেকে মোবাইলটা নিয়ে রাহুলকে ফোন দিলো!

রাহুল : ব্যাস! ফোন দিতেই ছিলাম আর তুমি দিয়ে দিলা!

স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা?..তো কি করছিলেন?…

রাহুল : এইতো তোমাকেই মিস্ করছিলাম!

– উম! তুমি?…

স্নেহা : [ লজ্জায় কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আ…আমি ও!

রাহুল : রিয়েলি? [ with tedi smile ]

স্নেহা : [ কম্বল গায়েটেনে শুয়ে ] হুম! রিয়েলি!

রাহুল : আচ্ছা শুনো তুমি আমাকে তুমি বলেই বলো! এসব আপনিটাপনি…

স্নেহা : হোহ! আপনাকে তুমি বলবো?

রাহুল : ইয়েস্!

স্নেহা : ইম্পসিবল রাহুল! আমার জন্য আপনিটাই ঠিক আছে!

রাহুল : Shut-up স্নেহা!

স্নেহা : আই কান্ট রাহুল প্লিজ!

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওখে! As ur wish!

স্নেহা : [ হেসে ] থেংক্স!

রাহুল : আচ্ছা চলো এইবার ঘুমিয়ে পড়ো!

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?..

রাহুল : হোহ কেনো?…সকাল থেকে কতোটা এনার্জি লস্ট করেছো ঐ Disgusted ওভারটাইম জবের পিছনে…

স্নেহা : [ হেসে মনে মনে ] আবারো শুরু হলো!

রাহুল : কি বলছি শুনছো?…

স্নেহা : হুম! কিন্তু…

রাহুল : নো এক্সকিউজ!

স্নেহা : বাট রাহুল…

রাহুল : এগেইন?..

স্নেহা : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] ওকে!

রাহুল : [ হেসে ] বাই গুডনাইট!

স্নেহা : গুডনাইট!

[ কেটে দিলো ফোন, স্নেহা ও হেসে ব্লাশিং হয়ে ফোনটা টেবিলে রাখতেই জারিফা এসে হাজির হয়! ]

জারিফা : ওহো মেরি জান! কি খুশি দেখাচ্ছে…গালটাতো গোলাপের পাপড়ি হয়ে গেছে ব্লাশিং হতে হতে!

– [ স্নেহার পাশে এসে বসে ] আমার জিজুর সাথে কথা হচ্ছিলো বুঝি?..হুমহুম?…[ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে লাগলো ]

স্নেহা : [ লজ্জা পেয়ে ] Shut-up জারিফা! আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দে! [ বলেই কম্বলটা নাকে মুখে টেনে শুয়ে পড়ে, জারিফা স্নেহার কম্বলটা টেনে সরাতে চাইলো কিন্তু স্নেহা হেসে শক্ত করে চেপে ধরে রাখলো ]

জারিফা : [ স্নেহার কানের দিক ফিসফিসিয়ে ] আচ্ছা যা ছেড়ে দিলাম…বাট স্নেহা অনাথসনাথ কিছু করলে আমাকে আগে বলবি কিন্তু! আই মিন কিছুটা এমন!

– আচ্ছা তুই মার্ডার ফ্লিমটা দেখেছিস ইমরান হাশমির

স্নেহা : [ লাফিয়ে উঠে ] ছিঃ জারিফা…

জারিফা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] অমনি ছিঃ হয়ে গেলো?…আচ্ছা রাহুলকে ফোন দিচ্ছি ওর থেকে জিজ্ঞেস করি ও দেখেছে কিনা [ বলেই স্নেহার ফোনটা টেবিল থেকে এগিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ জারিফার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ] স্টপ ইট জারিফা!

জারিফা : [ হেসে ] আরে!

মার্জান : কি হচ্ছে?…

জারিফা : ওহ হ্যা! বলছিলাম যে ইমরান হাশমির…

মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] ইয়াককক!

[ বলতেই জারিফা আর স্নেহা দু-জনেই হেসে উঠে ]

স্নেহা : হয়েছে অনেক যা এবার ঘুমিয়ে পড় আমাকে ও ঘুমাতে দে!

জারিফা : জি! মেম যাহা আপনার আজ্ঞা!

[ স্নেহা হেসে জারিফার মাথায় হালকা একটা বারি দিয়ে শুয়ে পড়ে ]

রাত ২টা বেজে ১০মিনিট! অনেকটাই গভীর ঘুমেই ঘুমিয়ে আছে সবাই!
________________________________

দিনটা শীতকালই চলছে! রাহুল আর স্নেহা দুজনেই গাড়ীতে বসে আছে,

স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ব্যাস! ব্যাস! রাহুল দাড়ান ঐ যে দেখেন কুলফি আইসক্রিম এর গাড়ীটি!

রাহুল : বাট স্নেহা! শীতে এভাবে আইসক্রিম খেলে তোমার গলা খারাপ হবে!

স্নেহা : আচ্ছা! আমি আপনার মতো সিংগার না আমার গলা খারাপ হলেও সমস্যা নেই! প্লিজ রাহুল!

[ বাধ্য হয়ে গাড়ী থামালো রাহুল! স্নেহাকে ও তার ইচ্ছামত কুলফি আইসক্রিম খাইয়ে তারপর আবার গাড়ীতে উঠালো, এবং ডান্সক্লাসে এসে পৌছাতেই রাহুল আগে নেমে এসে স্নেহার দিক দরজাটা খুলে দিলো,একটু হেসে নেমে এলো স্নেহা ]

রাহুল : [ স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] বাই!

স্নেহা : [ ব্লাশিং হয়ে ] বাই!

[ স্নেহা তাকিয়ে রইলো রাহুল গাড়ীতে উঠে বসলো জানালার গ্লাস নামিয়ে আবারও একটা ফ্লায়িং কিস্ দিলো স্নেহাকে…স্নেহা মুচকি হাসে, একটা তেডি স্মাইল দিয়ে চলে যাচ্ছে রাহুল! স্নেহা তাকিয়েই রইলো, কিছুটা দূর চলে যাওয়ার পর স্নেহা ও পাশফিরে ভেতরে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ বিকট এক কর্কট আওয়াজ কানে ভেসে আসলো, তাড়াতাড়ি পেছন মুড়ে তাকাতেই দেখে বড় এক ট্রলি গাড়ীর সাথে মুখোমুখি হয়ে রাহুলের গাড়ীটি দুমড়ে মুচড়ে গেছে,

– রাহুল! বলেই চিৎকার করে উঠলো স্নেহা! ]
________________________________

হুট করেই চোখ খুলে ফেলে স্নেহা! উঠে বসলো তাড়াতাড়ি! শরীরে ঘাম দিচ্ছে, জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে! চারদিক নিস্থব্দ হয়ে আছে,ঘড়ির টিকটক টিকটক আওয়াজটায় শুধু কানে বাজছে! তাকিয়ে দেখে ২টা বেজে ৩৫ মিনিট!

মার্জান আর জারিফার দিক তাকিয়ে দেখলো তারা ঘুমিয়েই আছে!

ধীরেধীরে চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে দেখে,বুকটা এখনো ধুপধুপ করে কাপছে! চোখের কোণে জমে থাকা পানিটি গড়িয়ে পড়লো! মনেমনে ভাবতে লাগলো ভাগ্যিস সপ্নই ছিলো!
কিছুক্ষণ এভাবেই চুপ হয়ে বসে রইলো!

কম্বল সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাড়ালো! টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় এগিয়ে গেলো! চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ভরপুর,রাস্তার লাল ল্যাম্পপোস্ট গুলোই জলছে,

ডায়াল লিষ্টে রাহুলের নাম্বারটার দিক তাকিয়ে রইলো! আর মনে মনে ভাবছে কল দিবে কি দিবে না! আবার ভাবছে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে ডিষ্টার্ব করা ঠিক হবে না!

আর কিছু না ভেবে রুমের ভেতরেই ঢুকে পড়লো! জারিফা আর মার্জানের গায়ের কম্বলটা ঠিক করে দিয়ে দিলো!

ধীরেধীরে আবারো বারান্দায় এগিয়ে গেলো! রাহুলের নাম্বারটা এনে হুট করেই কল দিয়ে দিলো! প্রথম রিং পড়তেই রাহুল রিসি্ভ করে স্নেহা! বলে উঠলো! স্নেহা মুখ চেপে ধরে হতোভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে!

বাতাস এসে গা ছুয়ে যাচ্ছে স্নেহার! এলো মেলো হয়ে থাকা চুল গুলো ও উড়ছে,ঠান্ডায় গায়ের লোমগুলো ও দাঁড়িয়ে পড়ছে!

রাহুল : স্নেহা!

[ জোড়ে মুখ চেপে ধরে ফুফিয়ে উঠলো স্নেহা ]

রাহুল : স্নেহা! তুমি কি কাঁদছো?…[ চুপ করেই রইলো স্নেহা! ]

রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] Talk to me sneha! কিছু বলছো না কেনো?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রার…রাহুল [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : আরে?.. কি হয়েছে স্নেহা ?..
– ওকে আমি আসছি! ওয়েট

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে চেঁচিয়ে উঠে ] না.. নাহ রাহুল! আ…আমি ঠিক…ঠিকাছি!

রাহুল : বাট আমার তোমাকে মোটেও ঠিক লাগছে না!

স্নেহা : [ কান্না কন্ট্রোল করে নিয়ে ] আপ…আপনি ঘুমাননি?…

রাহুল : আমারটা ছাড়ো! তুমি এতোরাতে জেগে আছো কেনো?…

স্নেহা : ব্যাস্ ঘুঘ…ঘুম ভেঙে গেছে!

রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে কাদো কন্ঠে ] আপ…আপনাকে মনে পড়ছিলো [ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

রাহুল : ওকে রিলেক্স স্নেহা! ডোন্ট ক্রাই,

– এতে কান্নার কি আছে….আমি তো সবসময় তোমার সাথে আছি,

স্নেহা : [ ফুফিয়ে ] হুম!

রাহুল : স্নেহা প্লিজ! ডোন্ট ক্রাই…

[ কেঁদেই চলছে স্নেহা ]

রাহুল : ওকে! আমি আসছি…[ বলতেই ]

স্নেহা : [ আবার চেঁচিয়ে কাদো কন্ঠে ] নাহ প্লিজ রাহুল! ওকে আমি কাঁদছিনা প্লিজ! আসবেন না!

রাহুল : কেঁদে কেঁদেই বলছো আমি কাঁদছি না!

স্নেহা : [ চোখমুখ মুছে রিলেক্স হয়ে ] ওকে! এখন ঠিকাছি! আমি রাখি ঘুম পাচ্ছে আপনি ও ঘুমান!

রাহুল : হুম! [ স্নেহা ফোন কেটে বুকে জড়িয়ে আবারো ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো ]

[ ধীরেধীরে রুমে এগিয়ে এসে খাটে বসলো ]

স্নেহা : [ মনমনে ] হঠাৎ এমন সপ্ন কেনো দেখলাম!

– না নাহ! এসব আজেবাজে ভেবে লাভ নেই কিছুই হবে না রাহুলের,এটা তো সপ্নই ছিলো [ কিছুক্ষণ নিস্থব্দ হয়ে থেকে ]

– তবে দূর্সপ্নই কেনো দেখলাম! [ চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে ] উফফ! স্নেহা…এসব কেনো ভাবছিস হ্যা দূর্সপ্নই তো ছিলো তাতে কি হয়েছে [ বলেই উঠে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক ছুটাছুটি করে হাটতে লাগলো, বেসি্নের দিক এগিয়ে গিয়ে মুখে ঝাপটে পানি দিলো, মুখ মুছে আবার খাটে এসে শুয়ে পড়ে ]

কিছুক্ষণ এপাশ ফিরছে তো কিছুক্ষণ ওপাশ ফিরছে,ঘুম আসছেই না চোখ বন্ধ করতেই রাহুলকে মনে পড়ছে!

হাটু কুড়িয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে, ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ৩টা বাজতে চলছে, কম্বলটা ঠিক করে টেনে নিয়ে আবার শুয়ে পড়ছে হঠাৎ মোবাইলটা বেজেই উঠলো,

স্নেহা : [ ফোন রিসি্ভ করে ] হ্যালো!

রাহুল : আমায় মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] হুম!

– [ কাদো কন্ঠে ] অনেক!

রাহুল : তাহলে নিচে আসো!

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রার..রাহুল আপ..আপনি?..

রাহুল : আই এম ওয়েটিং [ বলেই ফোন কেটে দিলো ]

[ স্নেহা তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে বারান্দায় এগিয়ে যায়, রাহুলকে দেখতেই চেহেরায় খুশির ঝলক ছুটছে সাথে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে, রাহুল ইশারা করলো নিচে নেমে আসতে, স্নেহা মাথা নাড়িয়ে চোখ মুছে তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে নিচে নেমে আসে, গেইট দিয়ে বেরুতেই রাহুল স্নেহার দিক এগিয়ে আসে, হুট করেই স্নেহা রাহুলকে জড়িয়ে ধরে ফেললো, রাহুল ও একটু হেসে জড়িয়ে নিলো ]

রাহুল : এতোটা মিস্ করছিলে?…

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে নিষেধ করেছিলাম না?..না আসতে?…

রাহুল : আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে চলে যাচ্ছি [ বলেই স্নেহাকে ছুটিয়ে আনলো,স্নেহা মুখ গোমড়া করে তাকালো ]

রাহুল : বাই!

স্নেহা : [ হেসে চেঁচিয়ে ] রাহুল!

[ বলেই রাহুলের জ্যাকেট ধরে টান দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে বুকের মাঝেই মাথা লুকালো স্নেহা ]

[ রাহুল ও হেসে দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দিলো ]

রাহুল : সব ভালোবাসা কি আজ রাস্তায় দেখিয়ে দিবে নাকি?… [ With tedi smile ]

[ এইবার স্নেহার মাথায় এলো সে তো রাস্তায় দাড়িয়েই রাহুলকে জড়িয়ে ধরে আছে তাড়াতাড়ি সরে দাঁড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! কেউ দেখেনি!

– আর সবাই এখন ঘুমের মধ্যেই ব্যস্ত! কার টাইম আছে আমাদের মতো এতোরাতে প্রেম করার [ বলেই স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে কাছে টেনে নেই ]

স্নেহা : রার…রাহুল! [ বলেই আশেপাশে তাকাতে লাগলো ]

রাহুল : আর তোমাকেই দেখো, আমাকে এতোটাই মিস্ করছিলে যে স্কার্ফ ছাড়ায় বেড়িয়ে এলে! [ বলেই চোখ টিপ মাড়লো ]

[ স্নেহা গলায় হাত দিয়ে তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো স্কার্ফ, ওড়না, শাল কিছুই তো পড়ে এলো না, ছিঃ রাহুলের সাথে চোখ মেলাতেই লজ্জা লাগছে স্নেহার, আড়চোখে তাকিয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে, স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে পাশমোড়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টে ঢুকে বসে পড়লো ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি করছেন?…

রাহুল : ডোন্ট ওয়ারি কিছুই করবো না [ বলেই গাড়ীর দরজাটা বন্ধ করে স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়েই আছে ]

রাহুল : [ হেসে ] রিলেক্স স্নেহা! [ স্নেহা ও একটু মুচকি হেসে অন্যপাশ তাকিয়ে ফেলে ]

[ রাহুল স্নেহার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, স্নেহা ও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাহুলের বুকে মাথা হেলিয়ে দেই! সাথে সাথে রাহুল ও জড়িয়ে নেই ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম!

স্নেহা : আপনাকে ফোন দিতেই রিসি্ভ করে ফেলেছেন! আপনি…ঘুমাননি?…আই মিন…

রাহুল : কারণ আমি জানতাম যে তুমি ফোন দিবা তাই!

স্নেহা : [ মাথা তুলে রাহুলের বুকে বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি রাহুল!

রাহুল : [ হেসে স্নেহার কপালের একটি চুমু দিয়ে ] ব্যাস! আমি ও তোমাকে মিস্ করছিলাম তাই ঘুম আসছিলো না! জেগে ছিলাম!

– কিন্তু তুমি এভাবে মিস্ করছিলে কেনো বলোতো?.. কেঁদে কেঁদে তো নাক মুখ লাল বানিয়ে ফেলেছো! [ বলতেই স্নেহার চোখে আবার পানি টলমল করছিলো ]

রাহুল : আরে?…আবার কি হলো?..এখন তো পাশেই আছি!

স্নেহা : [ রাহুলের বুকে মাথা রেখে ] ব্যাস! রাহুল একটা স..সপ্ন দেখেছি!

রাহুল : [ হেসে ] তাই?..আচ্ছা কি দেখলা…

স্নেহা : [ মাথা তুলে ] দেখেছি…একটা বব…বড় গাড়ি… [ কাদো কন্ঠে ] মানে আপ…আপনার এক্সিডেন্ট! [ বলতেই চোখ থেকে গড়গড় করে পানি ছুটতে লাগলো ]

রাহুল : [ স্নেহার চোখ মুছে দিতে দিতে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো [ হেসে ] এটা তো সপ্নই ছিলো!

– আর রিয়েলিটিতে আমি অনেকবারই এক্সিডেন্ট হয়েছি! কিন্তু গুড লাক আমার [ চোখ মেরে ] কিছু হয়নি!

– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] সো্ ডোন্ট ওয়ারি প্লিজ!

[ স্নেহা কোনো জবাব দিলো না চুপ হয়েই রইলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : আম সরি!

[ স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : সকালে আমি যা বলেছি! আসলে!
– স্নেহা আমি এখন বুঝছি এসব হুট করেই….

স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে দেই ] সরি! বলার দরকার নেই রাহুল!

– ইনফ্যাক্ট আমিতো খুশিতে আত্নহারা হয়ে গিয়েছিলাম! তখন [ বলতেই চোখে আবার পানি টলমল করছে ]

রাহুল : [ স্নেহার দুনো হাত তার হাতের মুঠোই নিয়ে ] স্নেহা! You know তুমি আমার লাভ এট ফার্ষ্ট সাইট!

– আমি তোমার বেকগ্রাউন্ড,ফ্যামিলি, তোমার স্টেটাস্ এসব কিছুই দেখে তোমার প্রেমে পড়িনি! ইনফ্যাক্ট এসবে আমার কিছু আসে যায় না!

– আমি তোমাকে দেখেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম! [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো ]

– [ একটু হেসে ] স্টেশনে যখন তুমি দৌড়ে আসছিলে,তোমার ভীতু চেহেরাটা… [ চোখ খুলে ] এক্সুলি স্নেহা! ঐদিন…

– তোমাকে আমি ইচ্ছে করেই ধাক্ষা দিয়ে ফেলেছিলাম! [ স্নেহা চোখ বড় করে অবাক হয়ে তাকালো ] কন্ট্রোলই হচ্ছিলো না…আমার ঐ মুহূর্তটা তখন সর্গীয় মনে হয়েছিলো,তোমাকে কাছে না পেলে পাগলই হয়ে যেতাম আমি!

[ স্নেহা হেসে উঠে,রাহুল ও হেসে চোখটা বন্ধ করে নেই ]

রাহুল : স্নেহা তোমাকে ভালোবাসার পর আমার নিজের চেয়ে ও তোমার উপর ট্রাষ্ট বেশি হয়ে গেছে! আমি হয়তো তোমাকে ছেড়ে দূরে যেতে পারি কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো দূরে থাকতে পারবে না!

[ পানি গড়িয়ে পড়ছে স্নেহার চোখ থেকে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার প্রতিটা ফিলিংস্ই আমি ফিল করতে পারি!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : হুম?…

স্নেহা : একটা প্রশ্ন করি?…

রাহুল : [ চোখ খুলে ] শিয়র!

স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] ব্যাস আমার চোখের দিক তাকাবেন না!

রাহুল : [ একটু অবাক হয়ে ] ওকেই [ বলেই চোখটা আবার বন্ধ করে নিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] যদি! কখনো জানেন আমি আপনার কাছ থেকে কিছু লুকিয়েছি…তাহলে আপনি রার..রাগ করবেন?…

রাহুল : [ জোড়ে একটি শাস ফেলে ] লুকিও না স্নেহা!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] Compulsion [বলেই ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]

– আমাকে কিছুটা সময় দেন!

রাহুল : স্নেহা! আমার সাথে খুশি গুলো ঠিকই ভাগ করছো… কিন্তু দুঃখ্য গুলো একাই সইছো….

– স্নেহা! You know হাউ মাচ্ আই লাভ ইউ…

[ বলেই রাহুল চোখ খুললো স্নেহা তাকিয়ে দেখে রাহুলের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে চোখে পানি টলমল করছে, স্নেহা একটু হেসে রাহুলের মাথা টেনে নিয়ে কপালে একটি চুমু খেলো, ধীরেধীরে রাহুলের দু-চোখে চুমু খেলো নাকের সাথে নাক ঘষে হেসে উঠলো ]

স্নেহা : ইয়েস্ I know হাউ মাচ্ ইউ লাভ মি!

[ রাহুল ও হেসে স্নেহার দু-গালে দাড়ি দিয়ে ঘষে দিলো, স্নেহা শিউরে উঠলো, দু-হাত গালের উপর রেখে স্নেহা রাহুলের খোচা খোচা দাড়িগুলোর উপর হাত বুলাতে লাগলো ]

স্নেহা : আপনি…ডিনার করেছেন?…

রাহুল : [ স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ] তোমার হাতেই তো করেছি!

স্নেহা : ব্যাস! ঐ দু-কামড় সেন্ডুইচে?..

রাহুল : হুমমম! এমনভাবে বলছো যেনো নিজেও আরো অনেক কিছু খেয়ে তড়িয়ে ফেলেছো!

স্নেহা : হ্যা! কিন্তু তাও আমিতো আপনার চেয়ে বেশিই খেয়েছি তাই না!

রাহুল : সো্ কি করা যায়?… [ with tedi smile ]

[ স্নেহা ঢোগ গিলে রাহুলের মুখ থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসে ]

রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা! আমি তোমার থেকে কিস্ চাইছি নাকি [ বলেই হেসে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

– আর শোনো তুমি ভার্সেটি থেকে ডান্স ক্লাসে একা যাবা না! আমি ড্রপ করে দিবো!

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] হুম বলো! [ স্নেহা চুপ হয়ে রইলো ]

রাহুল : [ উঠে বসে ] কি হলো বলো?..

[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে সি্টে হেলান দিয়ে বসে,রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক! ধীরেধীরে স্নেহা রাহুলের জ্যাকেট ধরে তার একদম কাছে টেনে নেই, রাহুলের নিশাসগুলো স্নেহার মুখের উপরই পড়ছে! ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : শিসস! [ বলেই চোখটা আলতো করে বন্ধ করে ফেলে,এবং ধীরেধীরে রাহুলের ঘাড়ে স্লাইড করে হাত রেখে মুখটা কাছে টেনে ঠোটে একটি চুমু খেলো! রাহুল আকষ্মিক চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক চোখের কোণ থেকে পানি বেয়ে পড়ছে স্নেহার, কিছুক্ষণ পর ধীরেধীরে রাহুল ও স্নেহার পুরো ঠোট নিজের দখলে নিয়ে নেই! স্নেহা রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে ধরে আছে, হারিয়ে যাচ্ছে স্নেহা রাহুলের ভালোবাসায়…হ্যা এভাবেই হারিয়ে যেতে চাই সে…

রাহুল ছুটে এসে হাত দিয়ে স্নেহার চোখের কোণ বেয়ে পড়া পানি গুলো মুছে দিলো,

ধীরেধীরে স্নেহার গলার দিক থেকে চুলগুলো সরিয়ে নিলো…. স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস নিচ্ছে…রাহুল স্নেহার গলায় একটি গভীরচুমু খেলো,শক্ত করেই রাহুলের চুল গুলো মুঠি বেধে চেপে ধরলো স্নেহা!

রাহুল মাথা তুলে স্নেহার দিক তাকাতেই স্নেহা ও চোখ খুললো….উঠে বসলো স্নেহা….

রাহুলের কাছে মুখ এগিয়ে এনে ধীরেধীরে রাহুলের ঠোট নিজের করে নিলো, রাহুল ও স্নেহার কোমোড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে স্নেহাকে আরো কাছে টেনে নেই! আলতো করে রাহুল ও স্নেহার ঠোটের সাধ গ্রহণ করতে লাগলো!

ছুটে আসলো রাহুল,স্নেহার বন্ধ করে রাখা দু-চোখ ভরে চুমু দিলো, কপালে, দু-গালে,

ধীরেধীরে ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে একপাশ এনে রাখলো…খালি পাশে একটি চুমু খেয়ে নাক দিয়ে স্মেল নিতে লাগলো… স্নেহা শিউরে উঠে রাহুলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফেললো…

[ রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে বুকে টেনে সি্টে হেলান দিয়ে বসলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হুম!

রাহুল : তোমার ভালোবাসা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে! [ স্নেহা একটু হেসে রাহুলের গালটা টেনে দেই ]

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে