Monday, October 6, 2025







কোথাও হারিয়ে যাব পর্ব-০৬

#কোথাও_হারিয়ে_যাব
#রূবাইবা_মেহউইশ
পর্ব-৬

জৈষ্ঠ্যের শেষ সপ্তাহ চলছে৷ সূর্যের তেজ যেন ভষ্ম করতে চায় প্রকৃতির প্রতিটি কোমল প্রাণকে। অর্থের প্রতাপে প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ পর্যায়ের মানুষজন আরামের সু ব্যবস্থা করতে পারলেও মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের জন্য তা অধরা শুয়ে শুয়ে এসব নিয়েই ভাবছিলো নুপুর। তাদের বাড়িতে ছাদ উঠলেও এয়ার কন্ডিশন অবধি এখনো পৌঁছুতে পারেনি। আজ ছুটির দিন হওয়ায় ভেবে রেখেছিল সকালটা সে ঘুমিয়ে কাটাবে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের বেয়াড়াপনা শান্তি দিলো না কিছুতেই৷ পূর্ব দিকের জানালার কপাট খোলা বলেই রোদের হলকা এসে পড়ছে তার শ্যামল বরণ মুখটাতে। আর তাতেই ছুটে পালিয়েছে সাধের ঘুম, ভাবতে বসেছে এয়ারকন্ডিশন নিয়ে। অস্বস্তি নিয়ে বিছানা ছাড়ল। ঘড়িতে চোখ রেখে তড়িঘড়ি পায়ে বাথরুমের দিকে ছুটলো এবার । হঠাৎ করেই মনে পড়লো আজও তার টিউশনি আছে একটা৷ বাড়ি গিয়ে পড়ানোর হ্যাপা অনেক৷ টাকার পরিমাণ যত বেশি, যন্ত্রণাও ঠিক ততো বেশি৷ তড়িঘড়ি মুখ হাত ধুয়ে নাশতার জন্য রান্নাঘরের কাছে গেল নুপুর। বাইরে থেকেই কানে এলো জাকির ভাইয়ের গলা। তারমানে আজ আবার এসেছে বদমাশটা নিশ্চয়ই কোন বুদ্ধি নিয়ে উহু, কুবুদ্ধি নিয়ে ৷ টিউশনির তাড়ায় যতটা না খাওয়ার রুচি ছিল ঠিক ততোটাই অরুচি ধরে গেল শয়তানটার গলা শুনে। নুপুর আর নাশতার জন্য এগোলো না। ঘরে গিয়ে পার্স আর ফোন নিয়ে বেরিয়ে পড়ল বাড়ি থেকে। টিউশনিতে স্কুটি নেওয়ার কথা ভাবতেই মনে পড়লো এ ছাত্রের বাড়ি রাস্তার পাশেই৷ সাবধানে রাখা মুশকিল তাই আপাতত স্কুটি ফেলে রিকশা ধরতে হবে। মনে মনে বিরক্তও হলো, কেন যে স্কুটি কিনলো! গলির মোড়েই রিকশা পাওয়া গেল তাই পৌঁছুতে বেশি সময় লাগেনি। দেড়টা ঘন্টা ছাত্র পড়িয়ে খিদেয় পেটের অবস্থা খারাপ। এদিকে ছাত্রের মাও ভদ্রতা সরূপ কোন নাশতা দেননি৷ তার সকল স্টুডেন্টের মাঝে একমাত্র এই একজন অভিভাবক যিনি কখনো এক গ্লাস পানিও সেধে দেন না। নুপুরও আর আক্ষেপ না রেখে বের হলো পড়ানো শেষে। পেটে খিদে, পার্সেও আছে টাকা আর জাকির ভাইয়ের উপস্থিতি বলেই হয়ত তার মন টানলো না বাড়িতে যাওয়ার জন্য। অনেক ভেবে ঠিক করলো কলেজ রোডের পাশেই কিছু ক্যাফে আছে সেখানে বসবে। একা একা বসতে ভালো লাগে না তবুও সময় কাটাতে এর চেয়ে ভাল উপায় নেই। নুপুর জানে আজ অর্নির খালারা আসবে বিয়ের আলোচনা করতে তাই অর্নিকেও সে ডাকতে পারবে না। দু চার কথা ভাবতে ভাবতেই নুপুর এসে পৌঁছুলো কলেজের সামনে। ডানে-বামে চোখ ঘুরিয়ে দেখে নিলো পরিবেশ৷ ছুটির দিন বলেই কিনা কে জানে আজ ক্যাফেগুলো মানুষজনে ভরে আছে। কই কলেজ খোলা সময়ে তো এত মানুষ চোখে পড়ে না! এতক্ষণ ধরে খিদের যে তান্ডব ছিল হঠাৎ করেই যেন তা মিলিয়ে গেল৷ নাকি অত মানুষের ভীড় দেখে? একা একা ক্যাফেতে বসে খাওয়ার অভিজ্ঞতা আজ অব্দি হয়নি তার। সবসময়ই অর্নিকে নিয়ে তবেই এসেছে। দোনোমোনো করছিলো নুপুর ক্যাফের ভেতর ঢুকবে কিনা ঠিক তখনই চোখ আটকে গেল একটু দূরে অন্য এক ক্যাফের দরজায়৷ সোনালি রোদের তীব্র আলোয় শুভ্ররঙা শার্টটা যেন ঝলসে দিলো চোখ৷ চোখ, কপাল কুঁচকে ফেলে দেখতে দেখতে মিলয়ে গেল মানুষটা। মাথার ওড়নাখানা টেনেটুনে নুপুরও এগোলো সেই ক্যাফেতে। ভেতরে ঢুকে এক মুহূর্তে খুঁজে নিলো মানুষটার অবস্থান। ক্যাফের একদম শেষের সাড়িতে বসে আছে অর্ণব। অর্ণবকে দেখেই এসেছে নুপুর এই ক্যাফেতে। নিজে এবার জায়গা খুঁজে নিলো নিজের জন্য প্রথম সাড়ির এক টেবিলে। দু জনের অবস্থান একে অপরের বিপরীত। মিনিট পাঁচেকের মাঝেই অর্ণবের সাথে আর দু’জন যুক্ত হয়েছে। নুুপুর বুঝলো কাজের জন্যই অর্ণবের আসা। ততক্ষণে ওয়েটার এসে অর্ডার নিয়ে গেল নুপুরের। কফি, চিকেন শর্মা আর ডবল লেয়ারের চিকেন স্যান্ডউইচ অর্ডার করে আয়েশি ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইলো দূরের মানব গোঁফওয়ালা জল্লাদের দিকে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকলো ওই মানুষটার চোখ, মুখ, নাক আর কণ্ঠমণি৷ এত তীক্ষ্ণ সে কণ্ঠমণি যা কয়েক হাত দূরত্বেও দাম্ভিকতার সাথে স্পষ্ট হয়ে আছে৷ আচমকাই চোখ বুঁজে নেয় নুপুর৷ কানের কাছে ভ্রমরের গুণগুণ, বুকের ভেতর ডামাডোল এ সবটাই হয় শুধু ওই একটি মাত্র পুরুষকে দেখলেই। আনমনে তাকিয়ে থাকে অর্ণবের দিকে৷ ওয়েটার তার অর্ডারকৃত খাবার টেবিলে রাখার পরও যখন সে খেয়াল করলো না তখন ওয়েটার ছেলেটি টেবিলে আঙ্গুল চালিয়ে শব্দ করল, ‘আপনার খাবার।’

-ওহ!

ছেলেটি চলে যেতেই নুপুর খাবারের দিকে দৃষ্টি দিলো আর তাতেই হলো সর্বনাশ।

-আল্লাহ! এত্তো খাবার?
নুপুরের আর্তনাদ ক্যাফেতে উপস্থিত প্রায় সকলেরই কানে গেল৷ প্রত্যেকেই কেমন অবাক চোখে তার দিকে তাকালো। তাকালো শেষের দিকে বসা অর্ণব আর তার সঙ্গীরাও৷ হঠাৎ দেখায় অর্ণব চিনতে পারলো না মেয়েটিকে। বার দুয়েক তাকাতেই ধরে ফেলল মেয়েটি নুপুর৷ বেশ বুঝতে পারলো পোশাকের জন্যই প্রথমে চেনেনি৷ নুপুরকে সে সবসময়ই কলেজের পোশাকে, দু বেনী করা, মাথাটা বরাবরই খোলা থাকে এমন অবস্থায় দেখেছে। কিন্তু আজ একদম ভিন্ন বরং আগের চেয়ে বড়ই লাগছে ভীষণ৷ সুতির সেলোয়ার-কামিজ পরা, হিজাব না করলেও ওড়না দিয়ে মাথার প্রায় অধিকাংশই ঢাকা৷ কে বলবে এই মেয়ে কলেজে পড়ে! দেখতে তো বিবাহোপযোগী কুঁড়ির ছুড়ি লাগছে। একেবারে ভিন্নরূপ কিন্তু পথে ঘাটে সব জায়গাতেই কি পাগলামি করে নাকি! এমনটাই ভেবে অর্ণব মনে মনে বলল, ছিটিয়াল একটা!

অর্ণব এসেছিল তার উকিলের সাথে জমির কিছু কাগজপত্র হাতে পেয়েছে সেগুলো দেখাতে । উকিল সাহেব সময় মিলিয়ে উঠতে পারছিলেন না তাই আজ হুট করেই বাইরে ডাকলেন। সকালের নাশতাটা ঠিকঠাক করা হয়নি বলে অর্ণবই ক্যাফেতে বসার ইচ্ছে জানিয়ে এখানে এসেছে৷ কিছু সময় নুপুরের দিকে তাকিয়ে থেকে পুনরায় কাজের কথায় ফিরল সে, ‘আঙ্কেল এই কাগজগুলো বাড়ির জমির । এগুলো দিয়ে হয়ে যাবে না?’

-দেখো অর্ণব অলরেডি কোম্পানির লোন ডিটেইলে সাবমিট করা হয়েছে একবার । সময়মত নোটশ পেলেই তোমাকে দলিলপত্র হ্যান্ডওভার করতে হবে সেইসাথে টাকা তোমার হবে। এখন নতুন করে যদি বাড়ির কাগজপত্র সাবমিট করো সেক্ষেত্রে হোম লোন আসবে তাতেও পরিমাণ অনেক কম এমনকি সময়ও পুনরায় দীর্ঘ হবে।

উকিল সাহেব নিজের কথা শেষ করতেই উনার এসিস্ট্যান্ট বলে উঠলেন, স্যার এ কাগজ তো কপি। এটাও অরিজিনাল না।

অর্ণব অবাক হলো৷ ছোট দাদী নিজে এগুলো পুরনো লকার থেকে বের করে দিয়েছেন৷ বছর কয়েক আগেই দাদা কাগজপত্র গুলো ব্যাংক লকার থেকে তুলে বাড়ি নিয়েছিলেন। এরপর দাদার মৃত্যুর জন্য পুনরায় এগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা দাদীই নিজের কাছেই করেছেন।

-এগুলো অরিজিনাল না! কিন্তু সব দাগ, নং তো…..

– সব একই থাকে কপি বলে কথা।

উকিল সাহেব আরও বিস্তারিত বলে বোঝালেন অর্ণবকে। কাগজটা সত্যিই নকল ছিল তা বুঝে আবারও হতাশ হলো সে৷ এটা ছোট দাদার সম্পত্তির কাগজ৷ লোনের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না কিছুতেই৷ কোম্পানি লোন যতদিনে পাশ হবে ততদিনে বেশ পিছিয়ে যাবে তার কাজ। বাড়িতে রোজই দাদীর সাথে সময় কাটিয়ে টুকটাক শেয়ার করে তার কাজের কথা। সেই সুবাদেই দাদী জানে অর্ণব জমির কাগজপত্র জমা দিলে ব্যাংক তাকে টাকা দেবে৷ তাই তিনি নিজেই এসব কাগজপত্র বের করে দিয়েছেন৷ কিন্তু এখানেও যে গলদ লেগেছে শুরর পথেই! আর ভাবতে পারছে না সে কিছু তাই উকিলের সাথে মিটিং সমাপ্তি টানলো৷ উকিল সাহেব৷ আগেই বেরিয়ে গেলেন৷ বিল মিটিয়ে অর্ণবও বের হওয়ার মুখে নুপুর তখনো নিজ টেবিলে নাশতা করছে। কফি আর স্যান্ডউইচটা তখনো অস্পর্শ্য তার। ‘মেয়েটার মাথায় বোধহয় বুদ্ধির ব’টাও নেই’ কথাটা অর্ণব বিড়বিড় করতে করতে বেরিয়ে গেল ক্যাফে থেকে। নুপুরও আর বসতে চাইলো না বলে ওয়েটারকে ডেকে কফিটা খেয়ে স্যান্ডউইচটা ভাইয়ের জন্য নিলো।
___________

আগুনে তেতে সকাল সকাল রান্না করছেন রায়না বেগম। মেজো বোনটা আসবে আজ শ্বাশুড়ি, ননদ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে৷ অর্নি হলো ময়নার মেয়ে কিন্তু ছোট্ট থেকে নিজের হাতে বড় করেছেন মেয়ের মত৷ তাই তার বিয়ের সকল আলাপ -আয়োজনটা তিনি জাঁকজমকপূর্ণ করবেন বলে ঠিক করেছেন৷ মেহমানদারির সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সকাল থেকে তিনি রান্নাঘরে। বৃষ্টি আর কাজের একজন মেয়েকে দিয়েছেন ঘরদোর ঝকঝকে করার দায়িত্ব আর অর্নি! সকাল থেকে বসিয়ে দিয়েছেন রূপচর্চা করতে। সল্পভাষী, খুব সাধারণ অর্নি পড়েছে বিরাট যন্ত্রণায়৷ শ্বাসকষ্ট না হয় আবার এই সৌন্দর্যচর্চা করতে গিয়ে । ভয়ে ভয়ে সে খালামনিকে বলেছে, রূপচর্চা করতে হবে না অসুস্থ হয়ে যাব। খালামনি তাই আরও সহজ পথ বলে দিলো, তবে পার্লারেই চলে যা হালকা একটা মেকআপ করে শাড়ি পরে আসিস।
অর্নি বুঝলো খালামনির উত্তেজনা ঠিক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু তার পক্ষেও অত সাজগোছ সম্ভব নয়। উপায় না পেয়ে রূপচর্চা করবে বলেই সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু এমন কি জিনিস আছে যা অল্প সময়েই উজ্জ্বল করবে! বৃষ্টিকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর পেলো, তোর তো গায়ের রং ফর্সাই না লাগালেও হয়। আচ্ছা থাক ডিম কিংবা দইয়ের কোন প্যাক লাগিয়ে নে। অর্নির পছন্দ হলো না এই সমাধান৷ আরেকটু ভেবে মাথায় এলো বান্ধবীর কথা। নুপুর আজকাল নিজের ত্বকের যত্ন করে খুব। তাকেই সে কল করে জানতে চাইলো কি করা যায়?

– কফি কিংবা মুলতানি মাটি লাগা দশ মিনিটের জন্য দারুণ গ্লো পাবি ত্বকে।

অর্নি তাই করল। নুপুরের কথামত কফি পাউডারেই দশ মিনিটের চর্চা শেষে গোসলে ঢুকে গেল। দুপুর হতেই বাড়ি হয়ে উঠলো সরগরম। মেজো খালা আর তার পরিবার এসে পৌঁছুতেই রিমনের কপাল কুঁচকালো। ছুটির দিন তার কাটে বন্ধু-বান্ধব আর প্রেমিকার সঙ্গে সে ছেলে আজ সকাল থেকে বাড়ির ভেতর ঘাপটি মেরেছিল। ভেবেছিল শিবলী ভাই আজ আসবেই না আর তা নিয়ে খুব হাঙ্গামা হবে। মা-খালাতে লড়াইও হতে পারে সেই লড়াইয়ে রেফারি হওয়ার চমৎকার একটা চান্সও আসতে পারে। বিধবাম! এখানে তো সম্পূর্ণ সিনই বদলে গেছে। দুই দুইটা গাড়ি করে শিবলী ভাই এসেছে। সাথে এসেছে মেজো খালা, খালু, খালার শ্বাশুড়ি, ননদ, জা এমনকি তাদের বাড়ির কাজের মেয়েটিও চলে এসেছে। রিদওয়ানও বুঝি রিমনের মত তেমন কিছুরই অপেক্ষায় ছিল৷ তাইতো হাস্যজ্বল শিবলীকে দেখতেই তার মেজাজ চড়ল। বসার ঘরে মিনিট পাঁচেকে কুশল শেষে বেরিয়ে পড়লো বাড়ি থেকে। আজ আর ফিরবে না সে এ বাড়িতে। বহুদিন সে নিরুদ্দেশ হয় না আজ হলে মন্দ কি! প্রকৃতি টানে তাকে খুব করে অথচ পার্থিব সব নিয়মনীতির ঘেরে আটকে পড়তে হয় রোজ রোজ। আম্মুর মুখের হাসি তাকে প্রকৃতিকে অবজ্ঞা করার শক্তি দিলেও আজ শক্তিতে টান পড়ছে খুব৷ রিদওয়ান সত্যিই বেরিয়ে পড়লো গন্তব্যহীন। বাড়ির সকলে ব্যস্ত হলো আপ্যায়নের কাজে। অর্ণব এখনো এসে পৌছায়নি খান বাড়িতে তাই আপাতত কথাবার্তা তোলার আগ্রহ কেউই দেখাচ্ছে না। শায়নার নিজের বোনের বাড়ি তবুও সে আজ এসেই কেমন ফরমাল আচরণ দিচ্ছে সবাইকে। বৃষ্টি অনেকক্ষণ ধরেই বিষয়টা লক্ষ্য করেছিল৷ ভালো লাগলো না এমনটা তাই সে মুখের ওপরই বলে বসল, ‘এখনো তো ছেলের বিয়ে দাওনি খালামনি এখনই কন শ্বাশুড়ি শ্বাশুড়ি রিয়াকশন দিচ্ছো?’

রান্নাঘরে বড় বোনের সদ্য বানানো জালি কাবাবের বাটি খানা হাতে তুলতেই বৃষ্টির কথায় থমকে গেলেন শায়না বেগম। ভাগ্নির কথার অর্থ তিনি পছন্দ না করলেও কথাটা একেবারে মিথ্যে নয়। আজকে থেকে অর্নি হবে তার ছেলের অফশিয়ালি হবু বউ। আর আজকে থেকেই তনি অফশিয়ালি হবু শ্বাশুড়ি। তার বিয়ের পর শ্বাশুড়ি মায়ের আচরণগুলো যেমন ছিল সেও ঠিক তেমনই হতে চায়। ভাগ্নির কথাটাতে পাত্তা দিতে চান না তিনি তবে মারমুখো স্বভাবের এই ভাগ্নিটার জন্যও কায়মনোবাক্যে এমন কিছুই আশা করেন। সকাল -বিকাল কথার চালে ধুতে থকবে এমন একটা শ্বাশুড়ি জুটুক৷ কায়দা করে বলেও ফেললেন, ‘বড় আপা বৃষ্টির বিয়ে নিয়ে কি ভাবলে বলো তো! বিয়ে হলে একটুখানি কথার আনন্দ টের পেত সে। ‘

-আমার বিয়েতে এখনো অনেক দেরি খালামনি৷ আমার বরের শিবলী ভাইয়ের মত অত তাড়া নেই।

-তোর বর মানে!

– ‘মানে… মানে হবু বর’ কথাটা বলেই বৃষ্টি বোকার মত শব্দ করে হাসলো। মুখ ফসকে যা ইচ্ছে বলার এই এক জ্বালা। মন তো সেই কবেই বর খুঁজে নিয়েছে বাড়ির মানুষ তো আর তা জানে না। এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে সে আরও কিছু না বলেই ফেলে সে ভয়ে দ্রুত রান্নাঘরের সামনে থেকে চলে গেল। বৃষ্টির প্রস্থান স্বস্তি দিলো রায়না বেগমকে৷ মেয়েটা আজকাল বাপের মত কথা বলে। যখন তখন যে কাউকে অপমানও করে বসে এই নিয়েই যত ভয় আজ নয় কাল বিয়ে দিতে হবে লোকজন আসবে, মেয়ে দেখবে। মেয়ে যদি চ্যাটাল চ্যাটাং কথা বলে তাহলে কি ভাল ঘরে বিয়ে দেয়া যাবে?

চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ