ভালোবাসার_রং পর্ব-১৪

0
2754

#ভালোবাসার_রং (❣️You are my Lifeline ❣️)

#Part_14

#Ishita_Rahman_Sanjida_(Simran)

পরেরদিন ভার্সিটিতে,,,,,,,,

আনহা আর মারিয়া মাঠের কোনায় বসে আছে,,,,,,আনহা চুপ করে আছে,,,,,

মারিয়া: কি রে তখন থেকে চুপ করে আছিস হয়েছে কি তোর,,,, আর কালকে আকিবকে সব বলেছিলি,,,,,
আনহা মাথা নাড়িয়ে না সূচক জবাব দেয়
মারিয়া: কি,,,,,, এই গাধি একটা বললি না কেন হুম,,,,,,
আনহা: আরে ডায়লগ গুলোই তো ভুলে গেছি,,,,, বলতে গিয়ে সব ভুলে গেছি,,,,,,

মারিয়া: হায়রে পোড়া কপাল,,,,, তুই আর বলতেও পারবি না পরে দেখবি আকিব ফুড়ুত করে উড়ে গেছে,,,,,
আনহা: প্লিজ মারিয়া আমাকে ভয় দেখাস না দেখছিস এমনিতেই টেনশনে আছি,,,,,,
মারিয়া: ওকে ওকে,,,,, আমি তোকে লিখে দিচ্ছি,,,,, বাড়িতে গিয়ে মুখস্থ করে নিবি ওকে

আনহা: ওকে,,,,,
মারিয়া আনহাকে ওর বলা ডায়লগ গুলো একটা কাগজে লিখে দিল আনহাও খুশি মনে
নিয়ে নিল,,,,,ক্লাস শেষে আনহা আকিবের সাথে বাড়িতে ফেরে,,,,,

বিকেল বেলা,,,,,,,,আনহা ওর রুমের বেলকনিতে এপাশ ওপাশ পায়চারী করতাছে আর মারিয়ার দেওয়া কাগজটা মন দিয়ে পড়তাছে,,,,,, তখনই আকিব রুমে আসলো আনহাকে না দেখে বেলকনিতে ঢুকল,,,,, আকিবকে দেখে আনহার হাত থেকে কাগজটা পড়ে গেল,,,,,,আকিব গিয়ে কাগজটা ওঠালো এবং পড়তে শুরু করে,,,,,

আকিব: তুমি আমার সাদাকালো মনটাকে #ভালোবাসার_রং দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছো
আমি তোমাকে ভালবাসি খুব ভালোবাসি
আই লাভ,,,,,,

আকিব আর পড়তে পারলো না তার আগেই আনহা আকিবের হাত থেকে কাগজটা নিয়ে ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলল,,,,,,

আকিব: এটা কি করলে,,,, আমি তো পুরো পড়তে পারলাম না,,,,,
আনহা: অন্যের জিনিস পড়াও উচিৎ না তুমি কেন পড়ছিলে,,,,,
আকিব: ওয়েট,,,,, কালকে তুমি এসব বলতে চাইছিলে,,,,
আনহা: কি সব,,,,
আকিব: ওই যে সাদাকালো মন তারপর কি যেন বললে রঙিন,,,,,
আনহা: এই রে এখন কি বলি গেলাম তো ফেসে,,,,, (মনে মনে)
আকিব: তুমি আমাকে এসব বলছিলে কেন,,,,
আনহা: আ আমি তোমাকে কখন,,,,
আকিব: এর মধ্যেই সব ভুলে গেলে,,,,,কেসটা কি বলো,,,,,,
আনহা: আসলে এটা একটা কবিতা মারিয়ার লেখা,,,,,
আকিব: তো অন্যের লেখা কবিতা আমাকে কেন শোনাচ্ছিলে,,,,
আনহা: আমি আর কিছু বলতে পারব না,,,, বাই দা ওয়ে তুমি আমার সাথে এতো কথা বলছো কেন,,,,
আকিব: মানে,,,,
আনহা: মানে,,,, দুদিন ধরে তো আমার সাথে কথাই বলছো না গোম মেরে আছো,,, আজকে কথা বলতে কেন এসেছো,,,, আরে যাও যাও তোমার সাথে কথা না বললে আমার ঘোড়ার ডিম হবে,,,হুম এই আনহা আদনান কাউকে পরোয়া করে না হুহ,,,,,,

আনহা মুখ ঘুরিয়ে চলে আসে,,,,,এসেই বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে,,,,,,
আনহা: উফফ বাবা বাঁচা গেল,,,, না হলে এক্ষুনি ধরা পড়ে যেতাম,,,,সরি আকিব আমি তোমার সাথে ওভাবে কথা বলতে চাইনি,,,, কিন্তু যদি ওভাবে কথা না বলতাম তাহলে তুমি সব জেনে যেতে,,,,,

আকিব তো এখনো থ হয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,আনহার কথায় ওর আরও রাগ হচ্ছে,,,,,ওর সাথে কথা না বললে আনহার কিছুই যায় আসে না,,,,আনহা কি ওকে একটু ও ভালোবাসে না,,,, কিন্তু আকিব খুব ভালো ভাবেই জেনে গেছে যে এতদিনে ও আনহাকে কতটা ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু আনহা কেন আকিবকে ভালোবাসতে পারল না,,,, কেন পারল না,,,,,এটা ভাবতে ভাবতে আকিব আরও রেগে গেল,,,,

আকিব: আমি আর তোমার সাথে কখনোই কথা বলব না আনহা,,,,কখনোই না,,,, আমার শত কষ্ট হলেও না,,,,,,,

আকিব রাগে দেওয়ালে একটা ঘুসি মেরে চলে আসে,,,,,,

রাতে আকিব টেবিলে বসে পড়তাছে আর আনহা বেলকনিতে গিয়ে মারিয়াকে কল করে

মারিয়া: হ্যা বল বলেছিস,,,,
আনহা: না,,,,, তারপর আনহা মারিয়াকে সব খুলে বলল,,,,
মারিয়া: আরে বোকারাম তখনই বলে ফেলতি কি একটা কাজ করলি তুই,,,,আকিব যখন কাগজ টা পড়তেছিল ওখানে তো ওর নাম লেখা ছিলো,,,ওটা পড়তে দিলি না কেন তাহলেই তো হয়ে যেত,,, আর তুই বলতি ওটা তোর মনের কথা,,,,
আনহা: আকিব কি ভাবতো,,,,যে আমি ডায়লগ কাগজে লিখে মুখস্থ করি,,,,
মারিয়া: আমি এখন কেমনে বুঝাই তরে,,,,
তাতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত এতে আকিবকে তো তোর মনের কথা জানাতে পারতি,,,, এখন বোঝো ঠেলা পাশা খেলার চাল তুমি ঘুরিয়ে ফেলছো এখন জেতাটা আরও মুসকিল,,,,,
আনহা: এখন আমি কি করবো সেটা বল,,,
মারিয়া: কিলিবিলি ড্যান্স দে হারামি মাইয়া,,

আনহা: প্লিজ মারিয়া একটা বুদ্ধি দে,,,
মারিয়া: কালকে ভার্সিটিতে আয় তারপর,,,

আনহা ফোন কেটে রুমে এসে দেখে আকিব লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,,,আনহা ও শুয়ে পড়ল কিন্তু ওর ঘুম চান্দের দেশে চলে গেছে,,,, সারারাত এপাশ ওপাশ করে করে শেষ রাতে ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,,

সকালে তাড়াতাড়ি ওঠে রেডি হয়ে আকিবের পিছু পিছু ছোটে,,,,,আকিব একবার ও আনহার সাথে কথা বলেনি,,,,আনহা অবশ্য কথা বলেছে আকিব শুধু শুনেছে কোন উওর দেয়নি,,,, ভার্সিটিতে গিয়েই আনহা মারিয়ার সাথে দেখা করে,,,,,

আনহা: ওরে আমার মারি বু রে একখান বুদ্ধি দেও রে,,,,,
মারিয়া: তোমার বুদ্ধির গুষ্টি কিলাই রে,,,,
আনহা: এমন কইরো না বু রে,,,,মোর কলিজা
হাডি যায় রে,,,,
মারিয়া: এটা তখন মনে হচ্ছিল না এখন সব কিছু উগান্ডায় পাঠিয়ে এসেছে হেতের কলিজা হাডি যায়,,,,, আচ্ছা শোন আমি খুব ভালো করেই বুঝে গেছি তুই কিছু বলতে পারবি না,,,আকিবের মুখ দিয়েই কথা বের করতে হবে,,,,,
আনহা: কিন্তু কিভাবে,,,,,
মারিয়া: তুই বলাবি ওর মুখ দিয়ে,,,,,
আনহা: আকিব কোনদিন ও বলবে না এসব ক্ষেত্রে ও বরাবর একটু লাজুক টাইপের রিধিকে প্রপোজ করার ঘটনা শুনলে তুই হাসবি,,,,
মারিয়া: আমি ওসব জানতেও চাইনা,,,, আর তুই নিজেকে আর রিধিকে এক করিস না তুই আকিবের ওয়াইফ আর রিধি গার্লফ্রেন্ড ছিল
যাক গে বাদ দে ক্লাসে যাই এসব ব্যাপারে পরে প্ল্যান করা যাবে,,,সময় তো আর পেরিয়ে যাচ্ছে না,,,,,

দুজনে মিলে ক্লাসে যায়,,,, কিন্তু আজকে তেমন ভাবে ক্লাস হয় না,,, কয়েকজন সিনিয়র স্টুডেন্টরা এসে প্রতি ক্লাসে গিয়ে ওদের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলে আনহার ক্লাসে ও যায়,,,আকিব ও যায়,,,,স্যার বলল

স্যার: শোন স্টুডেন্টস,,,, তোমাদের সিনিয়রদের বিদায় অনুষ্ঠান দুদিন পর ওরা শেষ বর্ষের ছাত্র ছাত্রী,,,, কিছুদিন পর ওদের পরীক্ষা,,,,, তার পর ওরা ভার্সিটি থেকে চলে যাবে,,,তাই বিদায় অনুষ্ঠানে সবাই অংশ গ্রহন করবে,,,, মেয়েরা শাড়ি পড়বে,,,, যে যেরকম পারো সেই রংয়ের শাড়ি পড়তে পারো,,,, আর ছেলেরা পাঞ্জাবি,,,,ঠিক আছে,,,,

এতোক্ষণ স্যার ৭ই মার্চের ভাষণ দেওয়ার পর চলে গেল,,,,,,, মারিয়া তো খুব খুশি,,,,শাড়ি পরতে ও ভিশন ভালোবাসে,,,,,,

মারিয়া: আনহা তোর একটা চান্স আসছে সামনে,,,
আনহা: কি,,
মারিয়া: শাড়ি পড়ে সুন্দর করে সেজে গুজে আকিবকে একটু ইমশোনাল করবি তোর প্রতি
দেখবি বরফ গলে পানি,,,,,
আনহা: তুই সবসময় বেশি বুঝিস,,,
মারিয়া: তুই দেখিস এতেই কাজ হবে,,
আনহ: ওকে দেখি কি হয়,,,,









আজকে ভার্সিটিতে আকিবদের বিদায় অনুষ্ঠান,,,,আনহা গাঢ় গোলাপি রঙের একটা শাড়ি পড়েছে,,, শাড়ির পাড়ে মোটা করে চুমকির কাজ করা,,,, চোখে মোটা কাজল ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক
চুলগুলো খোপা করে তাতে সাদা ফুলের মধ্যে একপাশে তিনটা গোলাপ ফুল লাগিয়েছে,,,,,
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শাড়ি ঠিক করতেছে,,,আকিব শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আনহাকে দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে চোখ ফেরাতেই পারছে না,,,,আকিব যে আনহাকে অনেকক্ষন ধরে দেখতাছে সেটা আনহা খেয়ালই করেনি,,,,ও শাড়ি ঠিক করতে ব্যস্ত,,,, আকিব চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে আয়নার সামনে এসে আনহার পাশে দাঁড়ায়,,,,আকিবকে দেখে আনহা একটু অবাক হয়ে আবার নিজের শাড়ি ঠিক করাতে মন দিল,,,,, একটু পর পর আকিবের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে দেখে,,,,আকিব গাঢ় খয়েরী রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে জিন্সের সাথে
পাঞ্জাবির হাতা কনুই পর্যন্ত ভাজ করা,,, চুলগুলো স্পাইক করা,,,,আনহা এসব দেখতে দেখতে পাগল হয়ে যাবে,,,,উফফফ কি মানিয়েছে আকিবকে,,,,,আনহা আয়নার দিকে তাকিয়ে আকিব আর ওর প্রতিবিম্ব দেখতেছে,,,,,,

আনহা: আচ্ছা,,,,আকিবকে কি আমার পাশে মানিয়েছে,,,, নাকি রিধিকে,,,, না ওই বারোভাতারি Max pro কে কখনোই আকিবের সাথে মানাবে না,,,,হুহ,,,আনহা তোকেই আকিবের পাশে মানায়,, (মনে মনে)

ততক্ষণে আকিব রেডি হয়ে গেছে,,,, ছেলের রেডি হতে মাত্র পাঁচ মিনিট লাগে,,, মেয়েদের মতো চুল বাঁধা মেকআপ করা লাগে না ওদের
যাই হোক আকিব রেডি হয়েই বেরিয়ে পড়ল
আনহার তখনও চুড়ি পড়া বাকি,,,,চুড়ি গুলো হাতে নিয়ে পড়তে পড়তে আকিবের পিছু পিছু ছুটল,,,,,আকিব বাইক চালাচ্ছে আনহা পিছনে মুখ গোমড়া করে বসে আছে,,,,এতো সুন্দর করে সেজেছে সেটা তো আকিবের জন্য কিন্তু আকিব ওকে একবার ও দেখল না,,,,,, ধুর ওর ভালো লাগছে না ইচ্ছে করছে এখনই সব খুলে ফেলতে,,,,, কিন্তু আনহার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল,,,,,আকিব বাইকের লুকিং গ্লাস এ আনহাকে সারা রাস্তা দেখতে দেখতে আসে ওর চোখে সানগ্লাস থাকার জন্য আনহা দেখেনি,,,,,

ভার্সিটিতে আজকে সব মেয়েরা রং বেরঙের শাড়ি পরে এসেছে ছেলেরা ও পাঞ্জাবি পরে এসেছে,,,, সিনিয়ররা এক কালারের পাঞ্জাবি পরেছে,,,,,আকিব ভার্সিটির সামনে বাইক থামায়,,,,আনহা নেমেই হনহনিয়ে ভেতরে আসতে লাগলো,,,, একটু খানি আসতেই আনহা আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগলো ভেবছিল আকিব ওকে পিছু ডাকবে কিন্তু ডাকল না
এতে আনহা আরো রেগে যায়,,,, তাড়াতাড়ি চলে আসলো,,,,,, ভিতরে আসতেই মারিয়ার সাথে দেখা হয়,,,,মারিয়া জাম কালারের শাড়ি পরেছে,,,, খুব সুন্দর লাগছে ওকে,,,,

মারিয়া: ওয়াও আনহা তোকে তো আজকে হ্যাব্বি লাগছে,,,,,,,
আনহা: যার বলার কথা সে বলল না এখন তুই বল আমি এতেই খুশি হবো,,,,,
মারিয়া: বলিস কি আকিব তোর প্রশংসা করেনি,,,,
আনহা: প্রশংসা দূরের কথা আমার দিকে তাকায়নি পর্যন্ত,,,,,,,
মারিয়া: ইম্পসিবল,,,,,
আনহা: এটাই সত্যি,,,,,
মারিয়া: আড়ালে ঠিকই তোকে দেখেছে তুই দেখিস নি,,,,চল আজকে আমি দেখব আকিব কিভাবে তোর দিকে না তাকিয়ে থাকে চল অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে যাই,,,,,

মারিয়া আনহাকে নিয়ে প্যান্ডেলের কাছে যায় তেমন মানুষ আসেনি ওরাই তাড়াতাড়ি এসেছে আকিব আর ওর বন্ধুরা মিলে সব ফুল দিয়ে প্যান্ডেল সাজাচ্ছে,,,,আনহা মারিয়া আর একটা মেয়ে প্যান্ডেল থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর মারিয়া গোয়েন্দাগিরি করছে,,,, একটু পর পর আকিবের দিকে তাকাচ্ছে,,,,,,

এমন সময় আনহার ক্লাসের কতগুলো দুষ্টু ছেলেরা আসল,,,,,আনহা আর মারিয়াকে দেখে ওখানেই থমকে দাঁড়ায় ওদের দিকে তাকিয়ে কি যেন বলছে আর মিটিমিটি হাসছে
আনহা সেটা লক্ষ্য করে,,,,,

আনহা: মারিয়া চল এখান থেকে চলে যাই
ওই ছেলেগুলো বেশি সুবিধার না,,,,
মারিয়া: এখান থেকে গেলে আরও সমস্যা হবে,,, এই বদ গুলো মেয়েদের একা পেলেই বিরক্ত করে,,,, আমাদের ক্লাসের অনেক মেয়েকেই বিরক্ত করে,,,,,বড় লোকের ছেলে বলে কেউ কিছু বলতেও পারে না,,,,যাই হোক এখানেই থাকি,,,,দেখছিস না এখানে সব সিনিয়ররা আছে ওদের সামনে কিছু বলতে পারবে না,,,,,,
আনহা: ঠিক আছে,,,,,,

ছেলেগুলো ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর হাসছে,,,,, হঠাৎ করে একটা ছেলে এসে আনহার পিঠে হালকা চাপড় মেরে বলল,,,,,

__ কি রে আনহা কেমন আছিস,,,(১ম ছেলে)
আনহা: ভালো আছি,,,,,

বলেই ছেলেটা চলে যায় একটু পরে আরেকটা ছেলে এসে আগের মতো আনহার ঘাড়ে চাপড় মেরে বলল,,,,,
__ আনহা তোকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে
তা তোর হাজবেন্ড কেমন আছে আর তুই ভালো আছিস তো,,,,,,(২য় ছেলে)

আনহা একটু বিরক্ত ফিল করে,,, তবুও হ্যা ভালো আছি বলল,,,, মারিয়া ও বিরক্ত হয়ে যায়,,,,,ওদের কর্মকান্ডে,,,, কিন্তু কিছু বলে না

এরকম একটু পর পর একেকজন এসে আনহাকে ছোঁয়ার বাহানায় একেকটা প্রশ্ন করতে লাগলো,,,,আনহাও বিরক্ত হয়ে উওর দিচ্ছে,,,,, ছেলে গুলো একজায়গায় দাঁড়িয়ে হাসছে,,,,, একজন বলল তোরা তো পিঠে হাত দিলি আমি এবার কোমড়ে হাত দিব দেখবি সবাই হেসে ছেলেটার সাথে তাল মেলালো,,,,
আনহা মারিয়ার সাথে কথা বলছিল,,, আর ওই ছেলেটা আস্তে আস্তে আনহার দিকে এগোচ্ছে,,,,যেই না আনহার কোমড়ে হাত দেবে অমনি একটা হাত ছেলেটার হাত ধরে ফেলল,,,,,আনহা পিছনে তাকিয়ে দেখে আকিব,,,,,চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে রাগের কারণে,,,,,মুখেও লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে আনহা আকিবকে এতোটা রাগতে কখনোই দেখেনি,,,, আনহা ভাবতে লাগলো এটা কি আগের সেই সহজ সরল আকিব নাকি অন্য কেউ,,,,,,

আকিব একহাতে ছেলেটার হাত ধরে আছে অন্য হাত দিয়ে আনহাকে সরিয়ে দিল,,,,
এতোক্ষণ ধরে আকিব ছেলেগুলোর কান্ড দেখে রাগে লাল হয়ে গিয়েছে,,, আর এখন ওদের রক্ষা নেই,,,,,আকিব ছেলেটার হাতটা মুচড়ে ধরে,,,ছেলেটা ব্যাথায় কোকড়াচ্ছে,,,,,

আকিব: কেমন আছিস হাজবেন্ড কেমন আছে তোকে খুব সুন্দর লাগছে,,,,এসব বলার জন্য গায়ে হাত লাগানো জরুরি কি,,,,হ্যা,,, জরুরি,,,,,

অন্য ছেলেগুলো এগিয়ে এলে আকিব ওর কাছে থাকা ছেলেটাকে ধাক্কা দিয়ে ওদের উপর ফেলে দিলো,,, সাথে সাথে সাবাই ব্যালেন্স রাখতে না পেরে পড়ে যায়,,,,আকিব কোমড় থেকে বেল্ট খুলে ওদের মারতে লাগলো,,,,এটা দেখে আনহা আকিবকে বাঁধা দিতে নিলে মারিয়া ওকে টেনে ধরে,,,,,,

মারিয়া: তুই কোথায় যাচ্ছিস,,,,বেশ হয়েছে চুপ করে দাঁড়া এখানে,,,,,
আনহা: কিন্তু ওরা যে মরে যাবে,,,
মারিয়া: মরুক,,,, জাহান্নামে যাক,,,, তুই এখানেই দাঁড়া,,,,,

আকিব অনেকক্ষণ ধরে ওদের মেরে যাচ্ছে ছেলেগুলো চেঁচাচ্ছে,,,,,,, পরিস্থিতি খারাপ এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে রিসাদ আর নয়ন এসে ওকে আটকায়,,,,,,

আকিব: তোরা ছাড় আমাকে,,,,আনহার গায়ে হাত দেওয়ার সাহস হলো কি করে,,,, ওদের তো আমি মেরেই ফেলবো,,,,

রিসাদ: শান্ত হ আকিব,,,,প্লিজ এমন করিস না পরে প্রব্লেম হতে পারে,,,,,
নয়ন: আকিব প্লিজ জাস্ট রিল্যাক্স,,,,

আকিব একটু শান্ত হয়,,,, কিন্তু ছেলেগুলোর উপর এখনো রেগে আছে,,,, ছেলেগুলো ব্যাথায় কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়ালো,,,,,
একজন বললো,,,,,

__ ভাইয়া আপনি সামান্য একটা মেয়ের জন্য আমাদের মারলেন,,,,এটা ঠিক করলেন না,,, কি হয় মেয়েটা আপনার বউ নাকি,,,,,

রিসাদ: আরে না,,,আনহা তো আকিবের ভা,,,,
আকিব: Yes she is my wife,,,, (রাগি কন্ঠে)

আকিবের কথায় উপস্থিত সবাই চমকে যায়,,,
ইনফ্যাক্ট আকিবের বন্ধুরা বেশি চমকায়,,,,, কারণ এই প্রথম সবাই সত্যি জানলো আনহা তো রোবট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,,, আর মারিয়া খুশিতে টলটল করছে,,,,

রিসাদ: কি বলছিস তুই,,,,আনহা তোর,,,,

আকিব: ঠিক শুনেছিস আনহা ইজ মাই ওয়াইফ,,,,,এটাই সত্যি,,,, আর তোদের যদি আরেকবার আনহার আশেপাশে দেখেছি তো খুব খারাপ হয়ে যাবে মাইন্ড ইট,,,, (ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে)
নয়ন: কিন্তু,,,,,
আকিব কিছু না বলে আনহার হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে গেটের কাছে নিয়ে এলো,,,
বাইকে গিয়ে বসে আনহার হাত ধরে টেনে বসালো,,,,আনহা তো ভয়ে কিছু বলতে পারছে না চুপচাপ বাইকে বসে পড়ল আকিবের বন্ধুরা সব হা হয়ে দেখছে মারিয়া তখন ওদের সব ঘটনা বলল যে কিভাবে ওদের বিয়ে হয়েছে,,,,,,,

আকিব ফুল স্পীডে বাইক চালাচ্ছে,,,,আনহা আকিবে শক্ত করে ধরে আছে,,,,বাড়ির সামনে গিয়ে আকিব বাইক থামায়,,,,আনহার হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে যেতে লাগলো,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে