ভালোবাসার_রং পর্ব-১৫

0
2466

#ভালোবাসার_রং (❣️You are my Lifeline ❣️)

#Part_15

#Ishita_Rahman_Sanjida_(Simran)

আকিব আনহার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যাচ্ছে,,,,আকিব আনহার হাত শক্ত করে ধরায় আনহার হাতের কাঁচের চুড়ি গুলো মটমট করে ভেঙে পড়তাছে আকিবের সেদিকে কোন খেয়াল নেই,,,,আনহাকে টেনে নিয়ে রুমে গেল,,,,এক ঝটকায় আনহার হাতটা ছেড়ে দেয়,,,আনহা পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নেয়,,,,,আকিব গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়,,,, তারপর আনহার সামনে এসে দাড়ালো,,,, রাগের লাল আভা এখনো আকিবের মুখে দেখা যাচ্ছে,,,,আনহা ভয়ে বারবার ঢোক গিলছে,,,,,,

আকিব: কে বলেছিল তোমাকে এসব শাড়ি পরতে কে বলেছিল সাজতে,,,হ্যা,,,বলো
(ধমক দিয়ে,,,,)
আকিবের ধমকে আনহা কেঁপে উঠল আকিব কখনোই আনহার সাথে এরকম ভাবে কথা বলে নি,,,আজই প্রথম বলতাছে,,,,,
আকিব: কি হলো বলো,,,,,এইসব সাজ কাকে দেখাতে চাও,,,,সোহানকে,,,তাই তো,,,,তাহলে ভার্সিটিতে কেন গিয়েছিলে,,,,, রেস্টুরেন্টে যেতে,,,,, তাহলে তো আজকে আমাকে ঝামেলায় পড়তে হতো না,,,,

আনহা কিছু বলছে না শুধু চোখের পানি ফেলছে আর বারবার হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে পানি মুছছে,,,,আনহা ভাবছে আকিব এতো কঠোর হলো কিভাবে,,,,আকিব তো এমন ছিল না,,,,এই কদিনে কি এমন হলো যে এতটা বদলে গেল,,,,,আনহার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে সেটা বলতে পারত কেন ওর সাথে এরকম করছে,,,,,,

আকিব: লিসেন মিস আনহা আদনান,,,,,, এরপর থেকে আপনার ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ
ওকে,,,, আর আমি না আসা পর্যন্ত এই রুম থেকে বের হতে পারবেন না,,,,,

আকিব দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে বেরিয়ে যায়,,,,আকিব বের হাওয়ার সময় ওর মাকে বলে যায় আনহাকে যাতে রুমে থেকে বের হতে না দেয়,,, এটুকু বলেই বেরিয়ে যায় আকিব,,ওর মাও অবাক চোখে আকিবকে দেখছিল কেননা আজকে আকিব কে উনি প্রথম এতটা রাগতে দেখলেন,,,,তাই উনি আনহার কাছে যায়না,,,,

আনহা কাঁদতে কাঁদতে ওখানেই বসে পড়ে,,,,
আনহা ভেবে পাচ্ছে না আজকে ওর দোষটা কোথায় ছিল,,,,সাজের কথা বলতে গেলে আজকে তো সবাই সেজেছে,,,, আর আনহা আজকে শুধু আকিবের জন্যই সেজেছে,,,
আর সেকারনে আকিব এতটা বকল আনহাকে,,,,,আনহা ফ্লোরে বসে খাটের উপর মাথা রেখে কাঁদতে থাকে,,,,,

আকিব ভার্সিটিতে চলে যায়,,,,, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে,,,,,







ঘুমের মধ্যে হাতে জ্বালাপোড়া অনুভব করতেই আনহা চোখ মেলে তাকায়,,, কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে সেটা ও নিজেও জানে না,,,,চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে
আকিব ওর হাতে ঔষধ লাগাচ্ছে,,, আনহা উঠে দাঁড়ায়,,,,,

আনহা: তুমি,,,,,
আকিব: কেন সোহানকে আশা করেছিলে বুঝি,,,,,
আনহা এবার রেগে যায়,,,,
আনহা: দেখ আকিব অনেকক্ষণ ধরে তোমার কথা সহ্য করছি কিন্তু আর না আমি কি সবসময় তোমার কানের গোড়ায় গিয়ে রিধি রিধি করি,,,, তুমি আমাকে সোহানের কথা শোনাচ্ছ কেন,,,
আকিব: ওমা,,,, তোমার খারাপ লাগছে,,,, কিন্তু সোহানের কথা শুনে তোমার খারাপ লাগার কথা তো না,,,,,

আনহা: দেখ আকিব,,,,,, (হাত উঁচু করে)

আকিব সাথে সাথে আনহার হাত ধরে নিয়ে খাটে বসিয়ে হাতে ঔষধ লাগিয়ে দিল,,, চুড়িতে আনহার হাত কেটে গিয়েছে আকিব এসে সেটা দেখে ঔষধ লাগাচ্ছিল তখনই আনহার ঘুম ভাঙ্গে,,,,,আনহা উঠে যাওয়ার কারণে পুরো ঔষধ লাগাতে পারেনি,,,,,,

আকিব: মিস আনহা তোমাকে যদি সোহান এভাবে দেখে তাহলে বলবে আমি তোমার প্রতি কেয়ারফুল না,,,,,
আনহা: আবার সোহান,,,,হাত ছাড়ো তোমার ঔষধ লাগাতে হবে না,,,,
আনহা আকিবের থেকে হাত ছাড়িয়ে কাপড় নিয়ে বাথরুমে চলে যায় চেঞ্জ করতে,,,,
আকিব ফাস্ট এইড বক্স গুছিয়ে রেখে নিজেও চলে যায়,,,,,

আনহা ফ্রেশ হয়ে এসে খাটের উপর বসে আছে,,,,, আর ভাবছে আকিব তো ওকে ভার্সিটিতে যেতে বারণ করেছে,,,, কিন্তু এই বাড়িতে একা থাকা অসম্ভব,,,, শ্বাশুড়ি আর আনহা একা বাড়িতে,,,,, এভাবে থাকলে আনহার দম বন্ধ হয়ে আসবে,,,,,

আনহা: ধুর কিছু ভালো লাগছে না ভার্সিটিতে যেতেও ভালো লাগে না আর বাড়িতে থাকতেও ভালো লাগে না এখন কি করি,,,,

এমন সময় কাজের লোক এসে বলল আনহাকে আকিব নিচে যেতে বলেছে আনহা নিচে এসে দেখে আকিব দাঁড়িয়ে আছে আর সোফায় একজন লোক বসা ওনার সামনে চা বিস্কুট দেওয়া,,,আনহা ভাবলো এ আবার কে কি জন্য এসেছে,,,,আকিবের বাবা মাও বসা লোকটার সাথে কি যেন কথা বলতেছে,,,,,,
আনহা আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসে দাঁড়ালো,,,,,,,
বাবা: ওই তো আনহা এসে গেছে,,,, শোন আনহা এই হলো তোমার টিচার আজ থেকে প্রতিদিন উনি এসে তোমাকে পড়াবেন,,,,,,

আনহা: কিন্তু কেন,,,,,,,
আকিব: আপনার ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ বলে পড়ালেখা কি আকাশে উঠেছে নাকি,,,, পড়াশোনা তো চালিয়ে যেতে হবে,,,, শুধু পরীক্ষার সময় গিয়ে পরীক্ষা দিবেন আর বাড়িতে বসে পড়াশোনা করবেন,,,,,

মা: আহা ওকে এভাবে বলছিস কেন,,,, আমি বলছি,,,, তোমাকে আর ভার্সিটিতে যেতে হবে না তুমি বাড়িতে বসে পড়বে আর পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দিবে,,,,ঠিক আছে,,,,,

আনহা: ঠিক আছে,,,,,
আকিব: এখন গিয়ে বই খাতা সব নিয়ে আসো,,,,,
আনহা: কেন,,,,,
আকিব: স্যার কি তোমাকে রুমে গিয়ে পড়াবে নাকি,,,,,, আর তাছাড়া রুমে বসে আমি পড়বো আমার সামনে পরীক্ষা তুমি থাকলে আমার ডিস্টাব হবে,,,, মাথায় ঢুকেছে নাউ গো,,,,,

আনহা রাগে গজগজ করতে করতে রুমে চলে আসে,,,,বই খাতা গোছাতে থাকে,,,, আর বিড়বিড় করতে থাকে,,,,,

আনহা: ইসসস,,,, এসেছে কি ভেবেছে ও যা বলবে আমি তাই করব,,,,উনি বলবে ভার্সিটিতে যাবে না তো আমি যেতে পারব না এখন আবার বাড়িতে টিচার রেখেছে,,,,, ধুর
পড়াশোনা আর ভালো লাগে না ভেবেছিলাম
বিয়ের পর আরাম আয়েশে থাকব পড়াশোনা লাইফ থেকে আউট করে দিব কিছুই হলো না
এখন তাড়াতাড়ি যাই না হলে রক্ষা নাই,,,, কি জানি আমার ভার্সিটিতে না যাওয়ার কারণ হিসেবে কোন ভুগোল বুঝিয়েছে বাবা মাকে

আনহা তাড়াতাড়ি নিচে যায়,,,,আনহা নিচে যাওয়ার সাথে সাথেই আকিব চলে আসে,,,
আনহা এক দৃষ্টিতে আকিবের যাওয়া দেখে
আনহা স্যারের কাছে পড়তে বসে,,,,,রাত দশটায় পড়ানো শেষ করে স্যার চলে যায় আনহা বই খাতা টি টেবিলে রেখে কাজের লোকের সাথে ডিনার সাজায়,,, তারপর শ্বশুর শাশুড়িকে খাইয়ে এক কাপ কফি হাতে রুমে যায়,,,,কারণ এসময় আকিব কফি খায়,,,, না হলে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়বে কফি খেলে ঘুমটা কম আসবে,,,,,,,কফি নিয়ে আকিবের সামনে রাখতেই আকিব কফি খেতে লাগল
আনহার দিকে একবারও তাকালো না,,,,
আনহা ঠাস ঠুস করে বিছানা গুছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল,,,,,আকিব সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করল না
নিজের পড়ায় মন দিলো,,,,,,





আস্তে আস্তে সময় পেরিয়ে যায়,,,,আকিবের পরীক্ষা ও শুরু হয়ে গেছে,,,,এর মধ্যে আকিবের সাথে আনহার তেমন কোন কথাই হয়নি,,,,আকিব পরীক্ষার কারণে সারাদিন ভার্সিটিতে ক্লাস আর করেই কাটিয়ে দেয় আর রাতে আনহা পড়তে পড়তেই সময় কেটে যায়
আকিবকে সময় দিতে পারে না,,,,, আর আকিব সবাইকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে পরীক্ষার চলাকালীন ওকে কেউ যেন বিরক্ত না করে সেটাই সবাই শুনতে বাধ্য,,,,,,

দেখতে দেখতে আকিবের পরীক্ষা শেষ,,, তার সাথে সাথে আনহার পরীক্ষা শুরু,,,,এখন আকিব ও আনহার কাছে যায় না কারণ আনহা এমনিতেই ফাঁকিবাজ,,,, পড়তেই চায় না,,,,,, পরীক্ষা শেষে আনহা এখন ফ্রি,,,,
আর আকিব বাবার সাথে অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,,,,,,




আনহা সবার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করতেছে আকিব ও ওর বাবা মা খেতে আসে,,,, আকিব রেডি হয়ে আসে অফিসে যাওয়ার জন্য,,,,,,,,
আনহা: বাবা মা,,,, আমার একটা কথা বলার ছিলো,,,,,,
বাবা: বলো,,,,,
আনহা: বলছিলাম কি আমার পরীক্ষা তো শেষ রেজাল্ট দিতে সময় লাগবে আমি যদি বাড়িতে থেকে একটু ঘুরে আসি,,,,

এটা শুনে আকিবের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল,,,,,কারণ এমনিতেই আনহাকে বেশি সময় দেখতে পায়না আর যদি বাপের বাড়ি যায় তাহলে তো দশ পনেরো দিন ছাড়া আসবে না,,,, এতদিন আকিব আনহাকে ছাড়া থাকবে কিভাবে,,,,,,আকিবের বাবা আনহাকে যেতে বলল,,,,আকিব ওর বাবার মুখের উপর কোন কথা বলতে পারল না,,,,
আনহা তো খুব খুশি,,,,, সবাইকে খাইয়ে আনহা রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নিলো,,,,,
কালকে সকালে যাবে,,,,,,খুশির ঠেলায় আগেই ব্যাগ পত্র গুছিয়ে ফেলেছে

রাতে আকিব বাড়িতে ফেরে,,,,,,,আনহা সোফায় বসে টিভি দেখছিল,,,,,আকিবকে রুমে আসতে দেখে,,,,,আকিবের জন্য কফি নিয়ে যায়,,,,আকিব তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো ঠিক করছিল,,,,,, আনহা গিয়ে কফির কাপ এগিয়ে ধরল আকিব ও নিয়ে খেতে লাগল,,,,,,

আকিব: তা,,,,, কদিন থাকবে,,,, (কফির কাপে চুমুক দিয়ে)

আকিবের মুখ দেখে ও বুঝতে পারল আকিবের কষ্ট হবে ওকে ছাড়া থাকতে,, কিন্তু এটাই সুযোগ আকিবের পেট থেকে কথা বের করার,,,,,,
আনহা: একমাস তো থাকবোই,,,,,
আনহার কথা শুনে আকিব কিছু বলল না কফির কাপ শক্ত করে ধরল,,,,

আনহা: কেন,,,, তোমার কি থাকতে সমস্যা হবে,,,,,
আকিব: না,,,, খুব আরাম লাগবে,,,বাই দা ওয়ে এক মাসের জায়গায় দুই মাস থেকে এসো আরো ভালো হবে,,,,,,
বলতে বলতে আকিব বারান্দায় চলে যায়,,,,,

আনহা: ভাব দেখ,,,, ভাঙবে তবু মচকাবে না
হুহ আমিও দেখে নেব মিস্টার আরিয়ান আদনান আকিব,,,,এই আনহাকে ছাড়া তুমি কিভাবে থাকো,,,, আমি বলছি কাকে আমার ও তো থাকতে কষ্ট হবে,,,,,,,,, কিন্তু এটা যে আমাকে করতেই হবে

আনহা ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,আকিব বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,,,হাতের কফির কাপে কফি ঠান্ডা হয়ে গেছে আকিব সেদিকে খেয়াল করে না,,,, গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেছে,,,,কফির কাপ ওভাবেই টেবিলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ল,,,,

সকালে আনহা উঠে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিল,,,,রেডি হওয়ার সময় ওর চোখ গেল টেবিলের উপর রাখা কফির কাপে,,,আকিব কফি খায়নি,,,,,,আনহা একটু মুচকি হেসে কফির কাপ নিয়ে নিচে চলে আসে,,, ব্রেকফাস্ট করে আনহা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়,,,,আকিব ওকে ড্রপ করে দেবে,,,,

আকিব নিরবে গাড়ি চালাচ্ছে,,,,কোন কথা বলছে না,, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে,,,,,গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফোঁটা এসে গাড়ির উপর পড়তেছে,,,,,
আনহা জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির পানি হাতে নিচ্ছে,,,,, বৃষ্টি ওর খুব ভালো লাগে,,,,
বৃষ্টিতে ভিজতেও,,,,, কিন্তু বাড়িতে গেলে ওর মা কিছুতেই বৃষ্টিতে ভিজতে দেবে না,,,,,এটা ভেবেই ওর মন খারাপ হয়ে গেল,,,,, কিছু একটা ভেবে আনহা গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বের করে দিল,,,,বৃষ্টিটা ভালোভাবে অনুভব করার জন্য,,,,,, তখনই আকিব গাড়ির কাচ লাগিয়ে দিল,,,,,আনহা তাড়াতাড়ি মুখটা গাড়ির ভিতরে নিয়ে আসে,,,, মুখটা গোমড়া করে ফেলে,,,, মুখটা আঁচল দিয়ে মুছে নিল,,,,

গাড়ি আনহার বাড়ির সামনে এসে থামলো,,,,
তামিম ওখানেই দাঁড়িয়ে আনহার জন্য অপেক্ষা করছিল,,,,,আনহা গাড়ি থেকে নামল সাথে সাথে তামিম আনহার দিকে ছাতা এগিয়ে দেয়,,,গাড়ি থেকে ওর ব্যাগ ও নিয়ে নেয়,,,,, তামিম আকিবকে ভিতরে আসতে বললে ও যায়না বলে অফিসে কাজ আছে,,,
তামিম ভিতরে চলে যায়,,,,,আনহা ও আস্তে আস্তে ভিতরে চলে আসে,,,,,আকিব শুধু চেয়ে চেয়ে আনহার যাওয়া দেখে,,,,,ও ভেবেছিল
আনহা একবার পিছু ফিরে তাকাবে কিন্তু আনহা তাকালো না,,,,,,আকিব চলে যায়,,,,

আনহা বাড়িতে গিয়ে মা বাবার সাথে কথা বলে রুমে যায়,,,,,শাড়িটা চেঞ্জ করে খাটের উপর হেলান দিয়ে বসে আছে,,,,,, আর অতিতে ডুব দিলো,,,,,, সেদিন আকিবের ব্যবহারে আনহা খুব কষ্ট পেয়েছিল কিন্তু সেদিন বিকেলে মারিয়া ফোন করে যা বলল তাতে আনহার রাগ উধাও হয়ে গিয়েছিল,,,, সেদিন আনহাকে রুমে আটকে ভার্সিটিতে গিয়ে ওর বন্ধুদের কাছে নিজের মনের কথা শেয়ার করেছিল,,,,,ও বলেছিল আনহাকে ও কতটা ভালোবাসে,,,,,,,,,,সেখানে মারিয়া ও উপস্থিত ছিল,,,,,, তাই ও আনহাকে ফোন করে সবটা বলে,,,,, কিন্তু এখন একটা সমস্যা আনহা আকিবের মুখ থেকে কিভাবে ভালোবাসার কথা বের করবে,,,,,সেটাই ভেবে পাচ্ছে না,,,,,,,,






তিনদিন পার হয়ে গেছে,,,,,আনহা আর থাকতে পারছেনা,,,,,আকিবকে না দেখে থাকতে ওর খুব কষ্ট হচ্ছে,,,,,এই তিনদিনে আকিবকে ফোন করার জন্য অনেক বার ফোন হাতে নিয়েছে কিন্তু পরক্ষণে মারিয়ার কথা মনে পড়ল,,,, মারিয়া ওকে বারণ করেছে
আকিবকে কল করতে,,,,,,, কিন্তু আকিব তো ওকে একবার কল করতে পারত নাকি অভিমান করেছে,,,,,,,আনহা ভাবতে লাগলো আকিব কি ওকে ছাড়া থাকতে পারছে নাকি আনহার মতোই ছটফট করছে,,,,,,আনহা ভাবছে আর রুমের মধ্যে পায়চারি করতেছে
এমন সময় আনহার মায়ের ডাক পড়লো,,,,,
আনহা বিরক্ত হয়ে বসার রুমের দিকে পা বাড়ালো,,,,,,,,

আনহা: কি হলো মা এভাবে ডাকছো,,,,
আনহা আর বলতে পারল না সোফায় বসা মানুষটাকে দেখে চমকে গেল,,,,আকিব,,,,,, কিন্তু আকিব এখানে কেন,,,,

আনহাকে দেখে আকিব উঠে দাঁড়ালো আনহা আকিবের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে

মা: আকিব তোকে নিয়ে যেতে এসেছে,,,,

আনহা এবার অবকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছে,,,,আকিব ওকে নিতে এসেছে এটা হতেই পারে না,,,,আনহা নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখতাছে হুম,,,,,
মা: কি হলো,,,,যা রেডি হয়ে নে,,,,,
আনহা: কিন্তু মা আমি তো আরও কিছুদিন থাকব,,, আর তা তো বলেই এসেছিলাম,,,,,

আকিব: কেন তোমাকে নিতে এসেছি সেটা বাড়িতে গিয়েই জানতে পারবে,,,,এখন রেডি হয়ে এসো গো,,,,,

আনহা রেডি হতে চলে যায় কেন আকিব ওকে নিতে এসেছে ভেবেই পাচ্ছে না,,,,রেডি হয়ে বাড়ির সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওরা বেরিয়ে পড়ে,,,,,, গাড়িতে বসে আনহা ভাবনার জগতে ডুবে আছে,,,,কখন যে বাড়িতে এসে পড়ল সেটা খেয়াল করল না

আকিব: Excuse me আপনাকে কি কোলে করে নামাতে হবে নাকি,,,,,,
আনহার ধ্যান ভাঙে,,,,,
আনহা: হুম,,,,,, না,,,,, আমি যেতে পারব,,,,

বাড়িতে এসে আনহা ওর শ্বাশুড়ির থেকে জানতে পারল রিমি প্রেগন্যান্ট আজ দুপুরে সংবাদ রিমির শ্বশুরবাড়ি যাবে তাই আকিব গিয়েছিল আনহাকে আনতে,,,,,,

আনহা: ওহ তাহলে এই ব্যপার,,,,আকিব তাহলে মায়ের কথায় আমাকে আনতে গিয়েছে নিজের জন্য না,,,,,হুহ শয়তান একটা আমাকে একটুও মিস করেনি,,,,,

দুপুরে সবাই রিমির শ্বশুর বাড়িতে যায়,,,,,, আনহা রিম আর তানভীর কে congratulations জানায়,,,,

রিমি: আনহা সেদিনের রিপোর্ট টা তো ভুল ছিলো,,,,, তা সঠিক রিপোর্ট কবে পাবো,,,

আনহা কিছু বলল না শুধু দূরে বসে থাকা আকিবের দিকে একনজর দেখলো সবার সাথে বসে গল্প করছে আকিব,,,,,,

আনহা: এই নিরামিষ টা যে কবে বুঝবে আল্লাহ ই জানে,,,,, (মনে মনে)

বিকেল বেলা আকিব আর আনহা বাড়িতে চলে আসে,,,, আর ওর শ্বশুর শাশুড়ি থেকে যায়,,,,রিমি জোর করে রেখে দেয়,,,,,






আজকে সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে এই বৃষ্টির কোন থামাথামি নেই,,,,, সামনে শীত আসছে,,,, আর এখন বৃষ্টি,,,, নভেম্বরের এই সময়টাতে বৃষ্টি হয়,,,,, বৃষ্টির কারণে আকিব আজকে অফিসে যায়নি,,,, আর তার চেয়ে বড় কারন হলো আনহাকে একা বাড়িতে রেখে ও যাবে না,,,,,তাই সকাল থেকে রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করে যাচ্ছে,,,,, বারোটার পর বৃষ্টি একটু থামে,,,,,,আনহা খাবার রেডি করে
গোসল করার জন্য রুমে যেতেই বাইরে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টি আবার শুরু হয়েছে,,,,,,,
আনহা দৌড়ে গিয়ে বাথরুমে কাপড় রেখে ঝড়ের গতিতে রুমে থেকে বেরিয়ে যায় পথেই আকিবের সাথে জোরে ধাক্কা,,,,,,

আকিব: উফফফ,,,,, ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে কোথায় যাচ্ছো,,,, দেখতে পাওনা নাকি এভাবে কেউ ধাক্কা দেয়,,,,,,

আনহা: এখন কথা বলার সময় নেই আমি যাই,,,,,
আকিব: যাই মানে কোথায়,,,,,

আনহা আকিবের কোন কথা না শুনেই দৌড় দিল,,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে