হয়তো_ভালোবাসি Part_11

0
2031

হয়তো_ভালোবাসি
Part_11
#Writer_Eshetaq_Nora

আকাশঃ তুই আমার জানের দিকে চোখ দিয়েছিস তোকে আর বাচিয়ে রাখা যাবে নাহ। আজ তোকে শেষ করে দেব

নীড়ঃ মানে??

আকাশঃ তুই আমার ব্যাপারে সব কিছু জানলি কিভাবে।আর তোর সাহসই কিভাবে হয় নেশাকে ওইসব বলার।

নীড়ঃ ওহহ তারমানে তুমি আমাদের কথা আড়িপেতে শুনছিলে।দা মাফিয়া লর্ড কিনা আড়িওপাতে?

আকাশঃ নীড়ের কলার ধরে- বেশ করেছি পেতেছি।না হলে যে জানতেই পারতাম নাহ তলে তলে এতো কিছু হয়েগেছে।। কিন্তু আমি খুব খুশি হয়েছি।দেখেছিস আমার জান আমায় কতো ভালোবাসে।

নীড়ঃ হুহ।এই ভালোবাসা আমি আর কয়েকদিনেই শেষ করে দিবো।

আকাশঃ তার জন্য তো তোকে বাচতে হবে। আমি তো তোকে আজই শেষ করে দিবো।

[ সবাই বুঝতে পারছেন নাহ কি হয়েছে তাই নাহ।আচ্ছা চলুন বুঝিয়ে দিচ্ছি আকার কেন নীড়কে এক্ষণ মারতে চাইছে।।]

বিয়ের দিন সকালে-

রাতে বিয়ে তাই সকালে সবাই মিলে হলুদ লাগিয়ে নিসুকে গোসল করাবে।।নিসুকে হলুদ লাগানোর পর সবাই মিলে দৌড়াদোড়ি লাগিয়ে দিয়েছে একজনকে আরেকজন হলুদ লাগানোর জন্য।।

নেশা আকাশকে পিছনে থেকে গালে হ্লুদ লাগিয়ে দিয়ে ভো দৌড়। আকাশ ও পিছনে ঘুরে নেশাকে দেখে মুচকি হেসে হলুদ হাতে নিয়ে নেশার পিছনে দৌড় লাগালো।

আকাশঃ দাড়া বলছি পাজি।।আমাকে হলুদ লাগানো।।একবার হাতে পাই বুঝাবো মজা।।হ্লুদ লাগিয়ে ভুত বানিয়ে দিবো।

নেশাঃ আগে ধরে তো নাও।

অনেকক্ষন দৌড়ানোর পর নেশা দেখলো আকাশ অনেক পিছনে। এই সুযোগে নেশা গিয়ে একটা রুমে লুকিয়ে পরলো।তখনই ওই রুমের ওয়াশরুম থেকে নীড় বের হলো।খালি গায়ে শুধু টাওয়াল পড়েছে।।নেশা দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে ওইদিকে তাকালো। আর নীড় কে এই অবস্থায় দেখে

নেশাঃ আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াআয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া????

নীড় তো থতমত খেয়ে গেল।।নেশাকে রুমে দেখে অবাক ও হলো।।নীড় গিয়ে নেশার মুখ চেপে ধরলো।

নীড়ঃ শসসসস??।।এতো চিল্লাও কেন হ্যাঁ।। আগের জন্মে কি মাইক ছিলা নাকি?

নেশাঃ উম্মম্মম্ম

নীড়ঃ কি উম্ম?

[নীড় বুঝতে পারলো নেশা মুখ থেকে হাত সরাতে বলছে ]

নীড়ঃ ওহহ সরি সরি।।।[হাত সরিয়ে ]

নেশাঃ আপপনি এএখাননে ককেনন??

নীড়ঃ আমার রুমে আমি থাকবো নাহ তো কে থাকবে।

নেশা চারদিক ঘুরে

নেশাঃ ওহহ হ্যাঁ এইটা তো আপনার রুম।।আমি ভুলে ঢুকে গেছি মনে হয়।।সরি

[ বলে চলে যেতে নিলো।নীড় টেনে আবার আগের জায়গায় দাড় করিয়ে দিলো।।দেয়ালের সাথে মিলিয়ে দুইদিকে দুইহাত দিয়ে দাড়ালো যাতে নেশা যেতে নাহ পারে ]

নীড়ঃ এইভাবে যেতে দেই কিভাবে।।বিনা অনুমতিতে রুমে ঢুকেছো পানিশমেন্ট তো দিতেই হবে. ( নেশার মুখের কাছে মুখ নিয়ে)

নেশাঃ দদদেখুন এএইসসব হবে নাহহ।।??

নীড়ঃ কেন হবে নাহ আর তুমি তোতলাচ্ছো কেন।

নেশাঃ ককই তোততললাচছি?

নীড়ঃ ওহহ তোতলাচ্ছো নাহ বুঝি?।।আচ্ছা যাই হোক তোমার পানিশমেন্ট টা দিয়ে নেই

[বলেই নেশার ঠোঁটে কিস করতে নিলো।।নেশা ধাক্কা দিয়ে সরাতে গেলো।।কিন্তু নীড়ের খালি বুকে হাত লাগায় নেশা কেপে উঠলো। নীড় নেশার কেপে উঠা দেখে ওর দিকে তাকালো]

নীড়ঃ এখনো তো কিস করলামই নাহ।। এখনই এতো কাপাকাপি করছো কেন?

নেশাঃ।……..

[ নেশা কিছুই বললো নাহ।। ওতো নীড়ের বুকের দিকেই তাকিয়ে আছে।শাওয়ার নেয়ার কারনে বুকে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।।যা নেশাকে খুব টানছে।।ইচ্ছে করছে ছুয়ে দিতে।নেশা নীড়ের বুকে হাত বুলিয়ে দিলো কিছুক্ষণ। ওর যেন ঘোর লেগে যাচ্ছে।। ]

[ নীড় ভ্রু কুচকে নেশার দিকে তাকালো। খেয়াল করলো নেশা তার বুকের দিকে তাকিয়ে আছে।নীড় ব্যাপার টা বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো ]

নীড়ঃ কি দেখছেন ম্যাডাম ??

নেশাঃ চমকে উঠে- হ্যাঁ??? ?

নীড়ঃ বললাম কি দেখছেন

নেশাঃ ককিছু নাহ( বলেই চলে যেতে নিলো।।নীড় নেশার দুই হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো)

নীড়ঃ কিছু তো দেখছিলে( নেশার মুখের কাছে মুখ নিয়ে)

নেশা নীড়ের দিকে তাকালো ছেলেটার মুখে দুষ্টু হাসি।ব্যাপার টা নেশাকে আরো লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে।

নেশাঃ ববিশ্বাসস ককরুনন ককিছু দেখছিলাম নাহহ ??

নীড়ঃ তাই বুঝে তাহলে আমার বুকের দিকে তাকিয়েছিলে কেন?

নীড় একদম নেশার মুখের সামনে গিয়ে কথা গুলো বলছে।।নীড়ের গরম নিশ্বাস গুলো নেশার মুখে পড়ছে।।যা নেশাকে আরো পাগল করে দিচ্ছে।।নেশা খিচে চোখ বন্ধ করে রাখলো।কিন্তু কাপাকাপি বন্ধই হচ্ছে নাহ।

নীড়ঃ কি ম্যাডাম আজ যে আপনার কাপাকাপিই থামছে নাহ

নেশাঃ প্লিজজ গিয়য়ে জজামা পরুন।।আমমার ককেমন জজানি ললাগছে?[ চোখ বন্ধ রেখে৷ ]

নীড়ঃ ??আগে তুমি তাকাও তো?

নেশাঃ প্লিজ???

নীড় নেশাকে ছেড়ে দিলো।নেশা তো ভো দৌড়

নীড় সেদিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।

নীড়ঃ পাগলি,

নেশা এক দৌড়ে দরজার বাইরে গিয়ে দাড়িয়ে জোড়ে জোরে শ্বাস নিলো।এতক্ষণ মনে হচ্ছিলো দমটাই আটকে ছিলো।হঠাৎ নেশার চোখ গেল হলুদের বাটির দিকে।।তা দেখে নেশার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এলো।।

হাতে কিছুটা হলুদ নিয়ে নীড়ের রুমে ঢুকে গেলো দরজা নক না করেই।নীড়কে দেখেই

নেশাঃ আস্তাগফিরুল্লাহ??(৷ বলেই উল্টো ঘুরে গেলো)

নীড় আওয়াজ পেয়ে দরজার দিকে তাকালো।।নেশাকে দেখে পেন্ট না উঠিয়েই রাগি চোখে তাকালো

নীড়ঃ ইউউউ??

নেশাঃ ববিশ্বাস ককরুন কিছু দদেখিনি???????

নীড় পেন্ট পরে নেশাকে টেনে রুমের ভিতর এনে দরজা লাগিয়ে দরজার সাথে চেপে ধরলো।।

নীড়ঃ এই মেয়ে দরজা নক করে আসা যায় নাহ

নেশাঃ আমি কি জানতাম নাকি যে আপনি এইভাবে থাকবেন?

নীড়ঃ হুহ [৷ বলেই নেশাকে ছেড়ে শার্ট পড়তে গেলো]

নেশা পিছন থেকে চুপিচুপি নীড়ের পিছনে দাড়ালো।।আর গালে হলুদ লাগিয়ে দৌড় দিতে নিলো। কিন্তু নীড় হাত ধরে ফেললো।

নেশাঃ মনে মনে- এই রে এখন আমি শেষ?

নীড় আয়নার দিকে তাকালো।আর দেখলো নেশা তার গালে হলুদ লাগিয়ে দিয়েছে

নীড়ঃ এগুলা কি করলা তুমি?

নেশাঃ ??আপনাকে নাহ হুতুম পেচা লাগছে।

নীড়ঃ খুব হাসি পাচ্ছে তাই নাহ।। দাড়াও

[ নীড় এদিক ওদিক তাকালো কিন্তু কিছু পেলো নাহ ]

নেশাঃ হিহি?।।কিছু করতে পারবেন নাহ।।আপনার কাছে তো হলুদই নেই যে আমায় লাগাবেন

নীড় মুচকি হেসে নেশার মুখ দুইহাত দিয়ে ধরে নিজের দুই গালের সাথে নেশার দুইগাল ঘষে দিলো।।তারপর ঠোঁটে জোরে একটা কামড় দিয়ে সরে এলো।

নেশাঃ ??☹?????

নীড়ঃ নাও লাগিয়ে দিলাম হলুদ।।

নেশা মুচকি হেসে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে গেল।।নীড় ও পিছন পিছন ছুটলো।দুইজনই সায়ানের সামনে পরলো।

সায়ানঃ আমি তো ভাবলাম তুই বুঝি শাওয়ার নিতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছিস তাই বাচাতে এলাম।।এখন দেখি দরজা লাগিয়ে শাওয়ারের সাথে টাওয়ার ও করছিস??

নেশা লজ্জা পেয়ে চলে গেল।

নীড়ঃ কি যে বলস নাহ তুই [৷ মাথা চুলকাতে চুলকাতে]

সায়ানঃ কি জানি বললাম??

নীড়ঃ ধুর কিছু নাহ।।চল নিচে যাই

সায়ানঃ নীড়

নীড়ঃ বল

সায়ানঃ নেশাকে যা বলার এখনই বলে দে।।পরে নাহ আকাশ ওকে পেয়ে যায়

নীড়ঃ মনে মনে- শিট আকাশের কথা তো মাথা থেকে বেরিয়েই গেছিলো।।নাহ ওকে জানাতে হবে

সায়ানঃ কি ভাবছিস

নীড়ঃ কিছু নাহ। নেশাকে খুব তাড়াতাড়ি বলবো।এখন চল নিচে যাই

বিকালে –

সবাই রেডি হচ্ছে।।নিসুকে সাজাতে পার্লার থেকে লোক এসেছে।নেশাও তাদের থেকে সেজে নিলো।।অফ হোয়াইট কালারের লেহেঙ্গা।। তার সাথে রেড কর্পটপ।অফ হোয়াইট কালারের ওড়না। অয়েলি মেকআপ, ব্লাক স্মোকি আইস,ড্রাক রেড লিপস্টিক ।হাতে সাদা লাল চুরি।।গলায় সাদা পাথরের নেকলেস, ঝুমকা।চুল গুলো খোপা করা।।।আর লাল গোলাপ লাগানো।নাকে নোসপিন।।এককথায় পরি।।

আকাশ তো দেখেই ফিদা।

আকাশঃ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে নেশা?

নেশাঃ আর তোমাকেও ??

তখন রুম থেকে নীড় বের হলো।।নীড় কেও আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে। অফ হোয়াইট কালারের রাউন্ড শেপ পাঞ্জাবি। বুকের দিক দিয়ে লাল সুতার কাজ।।ব্লাক পেন্ট।।চুল গুলো স্টাইল করা।।হাতে কালো ঘড়ি।

হঠাৎ নীড়ের চোখ গেল নেশার দিকে।।।আর চোখ আটকে গেল।।জান্নাতের হুরের থেকে কম সুন্দর লাগছে নাহ তাকে।

নীড়ঃ উফফ জান আজ তো তুমি আমায় একদম শেষ করে দেব।।তোমার এতো রুপ যে আমায় ঘায়েল করতে করতে শেষ করে দিচ্ছে।??

নীড় আর নেশার সামনে গেল নাহ। দুর থেকে দেখেই চলে গেল।। কারন সামনে গেলেই তার ঘোর লেগে যাবে।।।

নিসুকে স্টেজে আনা হলো। লাল কালারের লেহেঙ্গাতে নিসুকেও অপসরী থেকে কম সুন্দর লাগছে নাহ।।বিয়ে পরানো শুরু হলো।

ওই মুহুর্তে নেশাকে টেনে নীড় একটা রুমে নিয়ে গেল।

নেশাঃ আপনি!!!

নীড়ঃ হুম

নেশাঃ এখানে কেন আনলেন?

নীড়ঃ তোমাকে দেখতে। জানো কতোটা সুন্দর লাগছো তুমি।।ইচ্ছে করছে…..

নেশাঃ নীড় কে থামিয়ে… জানি সুন্দর লাগছে।।।এখন চলুন ওইখানে যাই।।বিয়ে শেষ হয়ে যাবে।।[৷ বলে নেশা চলে যেতে নিলো।। নীড় হাত ধরে তার দিকে ঘুরালো]

নেশাঃ কি?

নীড়ঃ তোমায় কিছু কথা বলার ছিলো।

নেশাঃ এখন!!! পরে বললে ও তো হবে

নীড়ঃ নাহ এখনই বলবো

নেশাঃ আচ্ছা বলুন কি বলবেন।

নীড়ঃ জানি নাহ কথাটা কিভাবে নিবে।।

নেশাঃ কি??

নীড়ঃ আসলে আকাশ

নেশাঃ আকাশ কি?

নীড়ঃ আসলে আকাশ একজন খুনি

কথাটা বলতে বলতে নেশা নীড়ের গালে থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো।নীড় অবাক হয়ে নেশার দিকে তাকালো।কারন নীড় যতো ভুলই করেছে নেশা কখনো হাত তোলে নি।।কিন্তু আজ আকাশের কথা বলার হাত তুললো।।তাহলে কি সত্যিই নেশা আকাশকে ভালোবাসে

নেশাঃ এনাফ ইজ এনাফ।।কি ভেবেছেন আপনি।।ভালো করে একটু কথা বলেছি বলে ভাবছেন আমি সব ভুলে গেছি আর আপনি যা বলবেন তাই বিশ্বাস করবো। নাহ মি. নীড়. এইটা আপনার ভুল ধারনা।।যখন আমার পাশে কেউ ছিলো নাহ তখন শুধু আকাশ ছিলো আমার পাশে।আর কেউ নাহ।।।আর আপনি তার নামে এতো বড় মিথ্যা বললেন।।আপনি ওকে পছন্দ করেন নাহ ঠিক আছে। কিন্তু এইসব।। ছি আপনাকে দেখে আমার ঘৃণা হচ্ছে

বলেই নেশা চলে গেল।এইদিকে নীড় থ মেরে গেছে।।।নেশা যে তাকে বলার সুযোগ দিবে নাহ তাতো নীড়ের জানা ছিলো নাহ।।।নীড় ও চুপচাপ বের হয়ে গেল রুম থেকে।

কিন্তু আকাশ তাদের দুইজনের কথাই শুনেছে।।তাই নিসুর বিদায়ের পর নীড়কে কিডনাপ করে আর তাকে মারার প্লেন করে

বর্তমানে

নীড়ঃ এইভাবে তুই কতোদিন পালাবি আকাশ। একদিন নাহ একদিন নেশা সব জানতে পেরে যাবে।

আকাশঃ তার কোন সুযোগই দিবো নাহ আমি।।এই মাসেই আমি নেশাকে বিয়ে করে আমার করে নিবো।তারপর আর ও আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারবে নাহ।।
তুই ওইসব নিয়ে ভাবিস নাহ।।তুই বরং তোর কথা ভাব?

বলেই আকাশ বন্দুক নিয়ে নীড়কে শুট করতে যাবে।তখনই পিছন থেকে একটা বড়ো ছুরি এসে আকাশের হাতের কব্জি কেটে নীড়ের হাতের বাধনে গিয়ে লাগলো।।আর বাধনটাও খুলে গেল।নীড় খুব অবাক হলো।।আর আকাশ তো ব্যাথায় কাতরাচ্ছে।

নীড়ঃ
.।।।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে