হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি পর্ব-০৪

0
1583

#হৃদয়_জুড়ে_শুধু_তুমি
#পর্ব_০৪
#জান্নাতুল_বিথী

“দিয়া তোর হবু বর না অনেক কিউট।”(মিলি)

“ইয়া আল্লাহ এই শাকচুন্নি তো এখন বকবক করতেই থাকবে।কুত্তি তো আর এটা জানবে না যে এখন ও কার সামনে কথা বলছে।এখন আমি কি করি।”(মনেমনে)

“ওই কিরে অন্য সময় হলে তো বক বক করে আমার মাথা নষ্ট করে দিতেও তোর কষ্ট লাগতো না। তাহলে এখন এতো চুপ করে আছত কেনো দোস্ত।জিজু তোর উপর কোনো জাদু করে নাই তো।..???”(মিলি)

আমি একবার অয়নের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে আসি। এতক্ষন যতো কিছু বলছে সব কিছু এখন সুদে আসলে গুনে হিসাব নিতে হবে।এতক্ষন অয়ন সামনে ছিলো কারনে কিছু বলতে পারি নাই।কিন্তু এখন তো ইচ্ছে মতো দোলাই দিতে পারবো।

“তুই একটু দয়া করে চুপ করবি।কি সেই কখন থেকে জিজু জিজু করচ।তোর যদি জিজুকে এতোই পছন্দ হয় তো আমাকে বল প্যাকিং করে তোর কাছে পাঠিয়ে দেই।..(ধমক দিয়ে)

আমার ধমক শুনে মিলি চুপ করে যায়।আমতা আমতা করে বলতে থাকে..

“এতো রেগে যাচ্ছো কেনো কলিজা।জাস্ট একটু তো মজা করলাম।জানচ দিয়া আমি কতো লাকি সকল মেয়েদের ক্রাশ অয়ন চৌধুরি আমার জিজু।আহা ভাবতেই লুঙ্গি ডান্স দিতে ইচ্ছে করে।..”(মিলি)

“আপনার যদি জিজুর সুনাম করা শেষ হয় তাহলে যার জন্য ফোন করেছি সেটা বলা যাক…???(বিরক্তি মাখা কন্ঠে)

“ওহহহ সরি সরি হু এবার বল।..”(মিলি)

“তোকে জিজ্ঞেস করছি বাড়ির কী অবস্থা..??? “(আমি)

“হ্যা তুই ভালো কথা মনে করচত।আন্টি আংকেল অনেক কান্না করছে।তুই চলে যাওয়ার পর আংকেল নিজেই বলেছিলো।উনি যদি একবার তোর কথা শুনত। হয়তোবা তুই এমন কিছুই করচ নাই।আর যদিও করে থাকচ তাহলে হয়তোবা ট্রাফে পড়ে এমন করচত।এখন আংকেল তোকে খুজতেছে। তুই কোথায় বল আমাকে।আমি গিয়ে তোকে নিয়ে আসি।নয়তো আংকেলকে বলব তোকে আনার ব্যবস্থা করতে।..”(মিলি)

মিলির কথা শুনে অজান্তেই আমার মুখ দিয়ে দীর্যশ্বাস বেরিয়ে আসে।..

“এখন যা হবার হয়ে গেছে।যাই হোক আমি এখন…….”

কথা শেষ না করতেই অয়ন আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে যায়। ফোন কেটে আমার দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে বলে….

“দিয়ুপাখি তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি তোমাকে কি বলেছিলাম।বলছি না যে যতোদিন আমি চাইবো ততোদিন তুমি এখানেই থাকবে।তার আগে যদি এখানে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করো বা কাউকে এই বাসার ঠিকানা দাও তো অনেক খারাপ হয়ে যাবে। তখন বুঝবে এই অয়ন চৌধুরি কতো টা খারাপ।মাইন্ড ইট।….”(রাগী লুক নিয়ে)

বলেই রুমের ভেতরে চলে যায়। আমি ওই খানেই দাড়িয়ে আছি। এই লোকটা কেনো আমার সাথে এমন করছে সেটাই তো বুঝতে পারছি না।

________________________

দুপুরে লাঞ্চ করার জন্য নিচে আসতেই সিমি আন্টিকে হেল্প করার জন্য চলে যায়।…

“আন্টি আমি কি একটু হেল্প করবো।…??”(আমি)

“সে কি মা এটা কি বলছো তুমি।তুমি আমাদের মেহমান। তুমি কেনো কাজ করতে যাবে। ওকে যদি হেল্প করতে চাও তাহলে গিয়ে একটু অয়নকে ডেকে নিয়ে আসো।..(অয়নের মা)

কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয়।এখন আমার অবস্থা ও সেইম হলো।কেনো যে হেল্প করবো বলতে গেলাম।এখন নিজের কথার জালে নিজেই ফেসে গেলাম। এসব ভাবতে ভাবতেই অয়নের রুমের সামনে গিয়ে কাপা কাপা হাতে নক করি।….

অয়ন….

“কি কাজ করতে পারো তোমরা।একটা কাজও কখনো ঠিক মতো করো না।কিভাবে একটা পুচকির মুখ থেকে তোমরা কথা বের করতে পারো না।পালিয়ে যায় কিভাবে তোমাদের মতো অপদার্থের দল গুলো থাকতে।…???”(অনেক জোরে চিৎকার করে)

আমি ফোনে কথা বলতে বলতে একটাই রেগে যাই যে ইচ্ছে করছে সব গুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতে।হঠাৎ দরজায় কেউ নক করায় আমি ফোন কেটে ওই দিকে যাই। রুমটা সাউন্ডপ্রুফ হওয়ার কারনে বাহিরে কেউ থাকার সত্ত্বেও কিছু বুঝতে পারে নাই। এমনিই অনেক রেগে আছি তার উপর এখন অসময়ে আমাকে বিরক্ত করছে ভাবতেই মুখে বিরক্তির আভা ফুটে উঠে। বিরক্তি মাখা মুখ নিয়ে দার খুলতেই আমি হা হয়ে যাই। আমার সামনে দিয়া দাড়িয়ে। ব্ল্যাক স্কার্ট,সাথে হোয়াইট কালারের টপস,গলায় ওড়না জড়ানো,চুল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে,মুখে কোনো রকমের মেকাপ নেই।তারপরও ওর থেকে চোখ সরানো দায় হয়ে পড়ে।আমি কখনোই দিয়াকে এভাবে দেখি নাই। আমি ভাবছি মেকাপ ছাড়াও একটা মেয়েকে কতোটা সুন্দর লাগতে পারে তা দিয়াকে না দেখলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না। কিন্তু আমার একটাই কষ্ট এই পর্যন্ত ওকে একটা বারও হাসতে দেখি নাই।এমনকি ওকে আমি কখনোই হাসতে দেখি নাই।প্রথম যেদিন দেখেছিলাম ওই দিন ও ওর হাসি মাখা মুখ খানা দেখতে পারি নাই। আচ্ছা এই মেয়েটা কি কখনো হাসতে জানে না।….

অন্যদিকে….

আমি সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি অথচ অয়ন দার খুলে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে।তাতে আমার একটুও ভালো লাগছে না। অসম্ভব অস্ততি লাগছে। আমি একটু নড়ে চড়ে দাড়াই।তারপরও অয়নের চোখের পলক পর্যন্ত পগে নাই।উপায় না পেয়ে আমি উনার মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলি….

“এই যে অয়ন আপনাকে খেতে ডাকছে।….(আমি)

” তোমার মুখে আমার নাম টা অনেক সুন্দর মানিয়েছে। এমন আবেগ মাখা কন্ঠে ডাকলে যে পাগল হয়ে যাবো।…”(অয়ন)

অয়ন এমন ভাবে কথা বলছে মনে হচ্ছে উনি এই পৃথীবিতে নেই।উনার দেহটা এখানে ঠিকই কিন্তু মন হয়তো অন্য জায়গায়। আর উনার মুখে এই ধরনের কথা শুনে তো আমি পুরোই শকড।

“এই সব কি বলছেন আপনি নিজে জানেন…????”( হালকা ধাক্কা দিয়ে)

ধাক্কা খেয়ে অয়ন কল্পনার জগৎ থেকে ফিরে আসে।..

“কি-কি জানবো।….???”(অয়ন)

” আজব তো…???”(আমি)

“হোয়াট…???? “(অয়ন)

“কিছু না।আপনাকে খে…….”

এতো টুকু বলার পর আমার মুখ থেকে আর কথা বের হচ্ছে না।আমার চোখ যায় অয়নের খাটের উপর রাখা ল্যাপটপের স্কিনে। যেখানে বড় বড় করে লেখা আছে……

চলবে কি…………..?????

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে