স্বপ্নীল ০৩

0
1808

স্বপ্নীল
০৩

ঠাস ঠাস করে তামিমের গালের থাপ্পড় মারে সোহাগি বেগম।থাপ্পড় আওয়াজে যেন মির্জা বাড়ি কেঁপে উঠেছে। তারপরে বলে
-“আমার তোর সাথেই বোরখা পড়া মেয়েটাকে আগেই সন্দেহ হয়েছিল।কেন যে আমি তখন মুখটা দেখি নাই।আর তামিম তুই কেমন ভাই।বোনকে পালাতে সাহায্য করেছিস।তোকে আগেই সাবধানে করেছি এমন কোনো কান্ড করেছিস না।আমার কথা তুই শুনলি না কেন??
রোকেয়া বেগম এসে বলে,
-“ছোট থাম। তামিম কে বকে কি লাভ। দোষ তো আমার উড়নচণ্ডী মেয়েটার। সবাই আদর দিয়ে দিয়ে বাদর বানিয়েছে। আগেই বলেছি এতো আদর দিয়ে মাথা যেন না তুলে কেউ আমার কথা শুনল না।আজকে এই দিনটা দেখতে হতো না।
সোহাগি বেগম তামিম কে উদ্দেশ্য করে বলে
-“এই ছেলে যদি সাহস না দিতো তাহলে কদম কখন পালিয়ে যেত না।
সোহাগি বেগম নিজের শশুড় কে উদ্দেশ্য করে বলে,
-“বাবা এই ছেলে কি এখন ও পিচ্ছি আছে যে, আমাদের কোনটা মান সম্মান যাবে, কোনটাই যাবে না, ভালো খারাপ বুঝে না। বুঝে ও কেন কদমকে পালাতে সাহায্য করেছে। আজ ওর জন্য আপনার আমাদের সবার মান সম্মান দূলে মিশে গেছে।

সোলোমান মির্জা সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।এগিয়ে যায় তামিমে দিকে।তিনি গিয়ে তামিমের গালের থাপ্পড় মারে
-“এই থাপ্পড় মেরেছি তোকে কেন জানিস।তুই বুঝদার হয়ে অবুঝে মতো এই কাজ করলি তাই।কদম না হয় বুঝে না । তুই কেন এমন করলি।”
এই কথা বলে আর এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে উপরে চলে যায়।
রোকেয়া বেগম এতক্ষন ধরে খেয়াল করছে সোহা মাথা নিচু করে আছে। তাই সোহা কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
-“সোহা তুই কি জানতি কদম যে পালিয়ে যাবে।”
সোহা যেই ভয়টা পেয়েছে সেটাই হচ্ছে।সোহা মা আমেনা বেগম ঘাপড়ে যায়। রোকেয়া বেগম এই প্রশ্নে।আমেনা বেগম এই বাড়ি কাজের লোক।আমেনা বেগম সাথেই এই বাড়ি লোকের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক। কদম আর তামিম তাকে খালা বলে ডাকে।
সোহা মাথা তুলে তাকায়।
-“বড় মা……
আর বলতে না দিয়ে তামিম বাজ পাখির মতো সোহা মুখ থেকে কথা কেঁড়ে নিয়ে বলে
-“বড় মা সোহা কিছু জানতো না।এটা আমি আর নীল ছাড়া কে জানে না।”

রোকেয়া বেগম একবার তামিমের দিকে তাকায় একবার সোহা দিকে তাকায়।
-“কদম এখন কোথায় গেছে।
-“প্রাচ্য সাথে সাজেক গেছে।
-“এবার আসুক বাড়ি। এবার পা দুটো ভেঙে দিবো।যাতে আর পালাতে না পারে।”
এটা বলে চলে যায়।
সোহাগি বেগম এসে বলে
-“আমেনা আফা এই ছেলেকে দুইদিন কোন খাবার দিবে না।ওর শাস্তি হলো দুইদিন যেন কিছু না খেতে পারে।”
_____________________________________

তৃণ বলে,”একবার যে আমাদের সাথে কক্সবাজার ট্যুরে গেছিল তামিম নামের এক ছেলে।তোর যে কাজিন হয়।সেই তামিম।

প্রাচ্য বলে,
-“হুম।তামিম ভাইয়া।
রোদ বলে,
-” তোর বোন কদম ফুল যে এই ভাবে পালিয়ে বেড়ায়।এর কি পালানোর রোগ আছে নাকি।
নীল বলে
-“পালানোর মজাই আলাদা আপু।একবার পালিয়ে কোথায় ঘুরে দেখবেন তাহলে বুঝতে পারবেন।
-“আমার পালানোর দরকার নাই। আমার ফ্যামিলি এমনিতে আমায় স্বাধীনতা দিয়েছে।তাই পালানো কোনো প্রয়োজন নেই।”

প্রাচ্য বলে
-“আমাদের ফ্যামিলিতে এই স্বাধীনতা দিয়েছে।”
ধূসর বলে,
-“তাহলে এভাবে পালানো কোনো মানে আছে??
-“নীল যে এই ভাবে পালিয়ে যায়।তাই সবাই মিলে ঠিক করে নীলের বিয়ে দিয়ে দেবে।বিয়ে দিলে সংসার করলেই।তারএই পালানোর ধান্ধা মাথা থেকে বের হয়ে যাবে।তাই সবাই ওর বিয়ে ঠিক করে।ওর মতামত নিয়ে। নীল যখন বলেছে, ওবিয়েতে রাজি তখন দাদু বিয়ে ঠিক করে…..
রোদ বলে,
-“যখন ওর মতামত নিয়ে বিয়ে ঠিক করে তাহলে পালিয়ে আসল কেন???
-“মাঝ পথে কথা থামিয়ে দিলি।বলার তো সুযোগ দিবি নাকি?? ”
-“হুম। বল
-“তারপর আমার সাথে ওর কথা হয়।ও আমাকে বলে বিয়ে করবে না পালিয়ে যাবে।আমি তখন ওকে বলি দাদুকে বলে দিতে।কিন্তু আমায় নীল বলে, প্রাচ্য আপু আমি বিয়ে থেকে পালাতে চাই দুইটা কারণে।আমি তাকে বলে কি কারণ।নীল আমায় বলে, আপু আমার অনেক দিনের স্বপ্ন বিয়ে থেকেই পালিয়ে যাওয়ার। অনেক সিনেমা দেখেছি নাইকা বিয়েদিন পালিয়ে গিয়ে ভ্রমন করে। আমি সেই রকম করবো।তখন আমি বলি দ্বিতীয় কারন কি?? নীল আমার বলে, আপু আমি না ভালো বেসে বিয়ে করবো। ভালো বেসে বিয়ে করলে তো বিয়ের দিন আর পালিয়ে যেতে পারবো না।তাই আমার স্বপ্ন পূরন করতে পারবো না। তাই দাদুর এই সুযোগ কাজে লাগাবো। এদিকে আমার স্বপ্ন পূরন হবে।আর সেই স্বপ্ন রাজ্য থেকে আমার রাজ কুমার খুজে বের করে দাদু সামনে যেয়ে বলবো দাদু আমি আমার স্বপ্ন দেশ থেকে আমার রাজকুমার খুজে এনেছি।এবার আমার বিয়ে দিয়ে দাও।আর আমি পালাবো না। “”

প্রাচ্য কথা শুনে হো হো হো করে হেসে দেয়।রোদ বলে,
-“এবার তার স্বপ্ন দেশে থেকেই রাজ কুমার খুজে ফেলেই হবে।”

আবার বলা শুরু করে
-“একবার নীল পালিয়ে যায়।বাসা থেকে কোনো জিনিস নিয়ে পালাতে পারে না।তাই দাদি দেওয়া লকেট বিক্রি করে দেয়।বাসায় যখন আসে।তখন বড় মা ওর গলায় লকেট না দেখে অনেক মারে।ওর গায়ে কখনো কেউ হাতে তুলে নিয়ে, সেইদিন প্রথম বড় নীলের গায়ে হাত তুলে। নীল যেই দোকান বিক্রি করে পরে ছোট কাকাই, মানে তামিম আব্বু। যেয়ে সেই দোকানদার কে দ্বিগুন টাকা দিয়ে সেই লকেট কিনে আনে।কারন সেই লকেট আমার দাদি শেষ সৃতি ছিলো।একই রকম লকেট আমাকে আর নীল কে দেয়।
প্রাচ্য এবার নিজের গলার লকেট বের করেই সবাইকে দেখায়।

ধূসর বলে
-“বাব্বাহ তোদের ফ্যামিলিতে তোদেরকে হেব্বি প্যেয়ার করে।
-“হুম

তৃণ খোঁচা মেরে বলে,
-প্রাচ্য নোয়াখাইল্লা থেকে একটা জিনিস এনেছে ধূসর।

তৃণ কথা শুনে রেগে যায়।
-“এই কি বললি তুই।
স্বপ্ন এবার বলে,
-“প্রাচ্য এখন আর ঝগড়া শুরু করিস না।কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেয়, ভোর হওয়ার আর বেশি দেরী নেই।

প্রাচ্য এবার বলে
-“স্বপ্ন আমার নাম খুব ঠাণ্ডা লাগছে। প্রচুর ঠাণ্ডা লাগছে।
-“এই জন্য আমি তোদের বলেছি এসি বাস নিব।কিন্তু তোরা বলছি নন এসি বাস ও করে যাবি।এই সময় নন এসি বাসে করেই গেলেই বাসের জানালা দিয়ে প্রচুর ঠাণ্ডা লাগে।আর এসি বাসে করে আসলে আর এতো ঠান্ডা লাগত না।
-“আমরা কি কখন আগে সাজেক এসেছি যে আমরা জানতাম।তুই তো আমাদের আগেই বলতে পারতি।
ধুসর বলে,
-“এই জন্য মেয়েদের ভালো করতে নেই।আমি আর স্বপ্ন তোকে বলি নাই এসি বাস নিবো। তোরা কি বলেছিস। নন এসি বাসে করে যাবি।আর এখন বলছিস আমরা বলি নাই।
প্রাচ্য কিছু বলতে যাবে।তার আগেই স্বপ্ন বলে,
-“হইছে আর বলতে হবে না।প্রাচ্য জ্যাকেট আছে না তা পরে নেয় তাহলে ও ঠান্ডা কিছুটা কম লাগবে।
-” হুম।স্বপ্ন, নীল কি ঘুমিয়ে গেছে।এর সাড়াশব্দ শুনা যাচ্ছে না।
স্বপ্ন নীলের কথা মনেই ছিলো না। ওদের কথাই মগ্ন ছিলো।কখন সে কোনো মেয়ে জীবন কাহিনী এভাবে শুনে নি।আজ প্রথম নিজের আগ্রহ নীলের কাহিনি শুনতে মনেযোগ দেয়।স্বপ্ন তাকিয়ে দেখে নীল জানালার পাশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।চাঁদের আলোই নীলের মুখ পর্যবেক্ষণ করে।ভালো করে তাকানো সুযোগ পায়নি।

দুধে আলতাব মেশানো গায়ের রং। গোলাপের পাপড়ি মতো ওষ্ঠযুগল।পান পাতার মতো চিবুক। প্রশস্ত ললাট। উন্নত নাসিকা। তরবারির মতো চিকন লম্বা ব্রু।হরিণীর মতো ডাগর দু’নয়ন।সব মিলিয়ে যেনো বিধাতার নিজ হাতের সৃষ্টি নীল। সুন্দর মুখটি যেন পূণির্মার চাঁদ।যেনো মেঘের আড়ালে দিয়ে উঁকি মারছে এই আধাঁরে।

স্বপ্ন তাকিয়ে দেখে নীল শীতে কাঁপছে। নিজের জ্যাকেট খুলে নীলের গায়ের উপর দেয়।জানালা থেকে মাথা তুলে সিটে রাখে। স্বপ্ন চোখ বুঝে ঘুমানোর জন্য। বাসের ঝাঁকুনিতে নীলের মাথা ঠলে পড়ে স্বপ্ন কাঁধে।সঙ্গে সঙ্গে চোখে খুলে ফেলে।অদ্ভুত একটা শিহরণ জাগে শরীর । কখনো এতো কাছে কোনো মেয়ে আসেনি। নীলের মাথা তুলতে যেয়ে আর তুলেনি।

তামিম চাঁদে দাঁড়িয়ে সিগারেট খায়। কারণ তাকে সিগারেট খেতে দেখলে কেউ, আবার কেলেঙ্কারি হবে।তাই সে মাঝে মাঝে চাঁদে লুকিয়ে সিগারেট খায়।একবার নীলের কাছে ধরা পড়ে যায়।নীলকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করায়। পাঁচ হাজার টাকা নেয় নীল তামিমের কাছ থেকে, একটা কথা গোপন রাখার জন্য। তামিম বাধ্য হয়ে দিয়ে দেয়।কারন এই উড়নচণ্ডী যে বলে দিতে পারে দাদু কাছে।সেই ভয়ে দিতে বাধ্য হয়। আর সেই টাকা নীল, করিম চাচার মেয়েকে অসুস্থ দেখে তার চিকিৎসা জন্য দিয়ে দেয়।আর তামিম তাকে আবার পাঁচহাজার টাকা দেয়।নীল একশ টাকা নিয়ে বলে-“এই একশ টাকা নিলাম আমি আর সোহা ফুসকা খাবো বলে”
তামিম দৃঢ় বিশ্বাস আছে তার বোন কোনো দিন খারাপ কাজ করতেই পারে না তাই সে সব সময় নীলের সঙ্গে দেয়।।

তামিম আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগারেট আরেকটা টান মেরে বলে,
-” এতো রাতে কেন এসেছিস এখানে”
-“আমি যে এখানে আসলাম আপনি কি করে জানলেন।আমি আসতে কোনো শব্দ হয়নি। তাহলে বুঝলেন কি করেই।

তামিম এবার সোহা দিকে ঘুরে বলে,
-“তুমি শব্দ না করে হাঁটলে আমি তোমার উপস্থিতি টের পাই।
-“কিভাবে টের পান ছোট সাহেব।
এবার তামিম চোখ লাল হয়ে যায়। সে কতো বার মানা করছে তাকে যেন ছোট সাহেব বলে না ডাকে।তারপর সে ছোট সাহেব বলবে।তাই রেগে গিয়ে সিগারেট পেলে। সোহা হাত মেরে ছাদের দেওয়ালের রেলিঙ সাথে চেপে ধরে বলে
-“তোকে কতোবার বলেছি আমায় ছোট সাহেব বলবি না।আমার কথা শুনিস না কা কেন???
সোহা খুব শান্ত গলায় বলে,
-“চাকর আর মালিকে মধ্যকার সম্পর্ক এই রকম হয়।মালিক দের কে এই নামে সম্মোধন করা লাগে।
-“কে চাকর সোহা।তোকে আমি কতোবার বলেছি নিজেকে চাকর মনে করবি না।এরপর কোনো দিন যদি শুনি এইরকম কথা তোর মুখে ঠাটি একচড় মারবো।
-“আমার মা এই বাড়ি কাজের লোক।আমি তার মেয়ে সেই হিসাবে আমি ও এই বাড়ি কাজের লোক।

তামিম এবার রাগ উঠে যায়।দাঁত কিড়মিড় করে বলে
-“কি যাতা বলছি।আমেনা খালাকে আমাদের পরিবারে কেউ কাজের লোক মনে করে না।। সবাই আমেনা খালা কে এই পরিবারে একজন মনে করে।
-“আমায় ছাড়ুন প্লিজ।কেউ এভাবে দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

তামিম এবার হাত ছেড়ে দিয়ে সোহার কোমর হাত দিয়ে কাছে টেনে নেয়।তা দেখে সোহার হাত পা কাঁপতে শুরু করে। দ্রুত হার্টবিট চলতে থাকে।এক্ষুনি যেন হার্ট এ্যাটাক করবে এই অবস্থা সোহার।কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
-“কি করছেন কি????
তামিম আর কিছু না বলে নিজে সোহার মুখের দিকে এগিয়ে আসে।সোহা চোখ দুটো বন্ধ করে নিয়েছে তার সাথে ঠোঁট কাঁপছে।তামিম গরম নিশ্বাস সোহার ঠোঁটে পড়তেই সারা শরীর যেন কেমন করেই কেঁপে উঠল।শরীর প্রত্যকেটা রক্তকণা শীতল হয়ে বরফের মতো জমে গেলো।কেমন যেন এক অজানা সুখের রাজ্য হারিয়ে গেলো সে।সোহা হার্টবিট দ্বিগুন হয়ে গেলো।তার নিশ্বাস যেন ভারী হয়ে আসছে।নাড়াছাড়া শক্তি পাচ্ছে না।হাত পা যেন অবশ হয়ে আসছে।চোখে দুটো বন্ধ করে ফেলে।তামিম গভীর নিশ্বাস সোহা মুখে আঁচড়ে পড়ছে। সেই ধরে নিয়েছে হয়ত ছোট সাহেব।তার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নিবে।কিন্তু তামিম তা না করেই। সোহা মুখে উপরে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে কানের কাছে গুজে দেয়। নেশা ধরা কন্ঠে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে
-“এবার ঠিক আছে
সোহা সাহস যোগিয়ে হাত সরিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে বলে,
-“তখন মিথ্যে কেন বলেছেন??
তামিম এবার পিছন থেকে সোহা কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়।সোহার পিঠ ঠেকে তামিমের বুকে।সোহা কাঁধে চিবুক রেখে বলে
-“আমি জানতাম যদি বড় মা জেনে যায় তুই ও ছিলি তাহলে। তোকে ও আমার মত বকা ঝকা করত।আর খালা শুনলে তোকে মাইর দিত।
-“আমায় মাইর দিলে আপনার কি???
-“আমার কি মানে??আমার ভালোবাসার মানুষ কে বকাঝকা+মাইর দিবে আর আমি এগুলো চেয়ে দেখবো।
চলবে
#Kawsar_Sorna

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে