স্পর্শ পর্ব-০২+০৩

0
1137

#স্পর্শ
#part_2+3
#sarika_Islam

পরেরদিন সকালে দিয়ার ফোন খুব বেশি বাজছে অন্যদিনের থেকে একটু বেশিই।ঘুম ঘুম চোখে দিয়া ফোন রিসিভ করলো,
-জানুউউউউ কই তুই?
-ঘুমের দেশে
-আরমানের পিএ নীল এসেছে
-আজ তো ছুটির দিন আজ কেন?
-আই ডোন্ট নো তুই এসে জিজ্ঞেস কর,
-হুম

ফোন কেটে দিয়ে উঠে বসতে বসতেই একদফা হাচি শুরু হলো টিস্যু দিয়ে নাক মুছে শাওয়ার নিতে গেল।ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিল তার নিত্যদিনের মতো টপস জিন্স আর গলায় ঝুলানো স্কার্ফ চুলগুলো ছাড়া।ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে বেরিয়ে পরলো।শপে গিয়ে পৌছালো,নীল অলরেডি সেখানেই বসে ছিল দিয়াকে দেখে উঠে দারালো,
-হায় মিস দিয়া
-হ্যালো,
-আরমান স্যার আপনাকে আমাদের কাম্পানিতে জব করার অফার দিয়েছে এস এ ডিজাইনার হিসেবে!!!

কথাটা শুনা মাত্রই দিয়া আর শ্রেয়া দুইজনিই অবাক বেশ অনেক অবাক হলো তারা,আরমান মাত্র কাল তাদের কালেকশন নিল আর আজিই অফার?হাউ ইস দিস পসিবল??দিয়া নিজেকে সামলিয়ে বলল,
-জি?
-জি,আপনি কাল থেকে জয়েন করতে পারেন,

বলেই চলে গেল নীল,, দিয়া আর শ্রেয়া এখনো স্টাচুর মতোই দারিয়ে আছে মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছে।কখনো ভাবেনি ‘DEABOOK’ এর মতো এত বড় কাম্পানিতে এস এ ডিজাইনার হিসাবে সে যেতে পারবে।দিয়া খুশিতে চিৎকার করে উঠলো,
-আয়ায়া শ্রেয়ু শ্রেয়ু শ্রেয়ু আমি আমার স্বপ্নের DB তে কাজ করতে পারবো ওয়াওওওওও আম সো সো সো হ্যাপি।
-আম আলসো হ্যাপি ইয়ার,আমাকে আবার ভুলে যাস না,
-ধুর বোকা তা কি হতে পারে কখনো,

বলেই হাগ করলো দিয়া আর শ্রেয়া দিয়ার ফোন আসলো,
-হ্যালো
-দিয়া কোথায় তুমি?
-আমি শপে মম
-আমি আসছি পিক করতে,
-মম সবে তো বারোটা,,

দিয়া তার কথা পরিপূর্ণ করতে পারলো না তার আগেই দিতি ফোন কেটে দিল।
-কিরে কি হলো?
-আমার সো কল্ড মম কোথায় যেন নিয়ে যাবে,
-ওহ যা গিয়ে দেখে আয়,
-না যাওয়া ছাড়া কি আর উপায় আছে,

কিছুক্ষন পর শপের বাহিরে জোরে জোরে হর্ন বাজাতে লাগলো দিয়া বিদায় নিয়ে বের হলো।গাড়িতে বসলো দিতি ড্রাইভ করছে আর দিয়া তার পাশের সিটে,,গাড়ি স্টার্ট করলো।
-মম হোয়ার উই গোইং?
-গেলেই না হয় দেখ আর দিয়া ওয়েল বিহেভড ওকেহ
-ইয়েস মমা,(মাথা কিছুটা ঝাকিয়ে বলল)

এক ঘন্টার মধ্যে দিয়া আর দিতি পৌছে গেল,দিয়া গাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়িটার দিকে তাকিয়ে বলল,
-আমরা ডলি আন্টির বাড়ি কেন এসেছি?(ভ্রু কুচকে বলল)

দিতি গাড়ি থেকে বের হতে হতে বলল,
-তোমাকে দেখাতে,

দিয়া অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালো কিছুটা রেগে বলল,
-হোয়াট ননসেন্স, এইসব তুমি কি বলছ?এখন আমি আমার ক্যারিয়ারের উপর ধ্যায়ান দিতে চাই নাকি এই সো কল্ড বিয়ে সাদির উপর,

দিতি দিয়ার কাছে এসে বলল,
-তোমার ক্যারিয়ার আমি দেখে তুমি বরং বিয়ের উপর ফোকাস করো,
-কিন্তু,,,

দিতি সবসময়ের মতো দিয়াকে কিছু না বলতে দিয়ে ভিতরে চলে গেল,দিয়াও বাদ্ধ মেয়ের মতো পিছু পিছু গেল,কলিং বেল বাজাতেই ডলি এসে দরজা খুলল,,দিয়া সালাম দিল, ডলি সালামের উত্তর নিয়ে তাদের ভিতরে ঢুকালো,
-আসতে আসতে এত্ত দেরি করলি কেন দিতি?
-ওই একটু জ্যামে পরে গিয়েছিলাম,
-আয় বস,

দিয়া আর দিতি একবারে টেবিলে বসলো লাঞ্চের জন্য,সার্ভেন্টরা এসে সব খাবার সার্ব করতে লাগলো পুরো টেবিল জুরে খাবার এত এত খাবার,,তখনি সিড়ি দিয়ে কেউ নেমে এসে ঠিক দিয়ার বরাবর বসলো,দিয়া মাথা নিচু করে আছে উপরে দেখছে ও না কে এসেছে না এসেছে।দিতি ডলির একমাত্র ছেলেকে দেখে বলল,
-রায়ান বাবা কেমন আছো?

দিয়া রায়ান নামটা শুনে হঠাৎ মনে হলো কোথায় যেন শুনেছে এই নামটা হুট করেই মাথা উঠিয়ে নিল রায়ানকে দেখে সেইদিনের কথা মনে পরে গেল তারাতারি করে মাথা নিচু করে হাত দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টায় আছে।রায়ান বসতে বসতে বলল,
-জি আলহামদুলিল্লাহ আপনি কেমন আছেন?
-আমিও ভালো আছি,আমার মেয়ে দিয়া,

দিয়ার দিকে ইশারা করে দিতি বলল,দিয়া মাথা উঠিয়ে হাল্কা হাসির চেষ্টা করে তাকালো।রায়ান দিয়াকে দেখে কিছুক্ষন ভ্রু কুচকে দেখে দিতির দিকে তাকিয়ে বলল,
-এইটা আপনার মেয়ে?
-কেন চিনো নাকি?

রায়ান দিয়ার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলল,
-নাহ,হায় দিয়া

বলে দিয়ার দিকে হাত বারালো,দিয়ার এখন হাত না বাড়িয়ে উপায় নেই তাই চুপচাপ হাত বাড়িয়ে দিল,
-হ্যালো রায়ান,নাইস টু মিট ইউ
-সেম টু,

সবাই খাওয়া শুরু করলো খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে দিতি আর ডলি গল্প গুজবে বেস্ত।
-দিয়া আর রায়ানকে একা কথা বলতে পাঠাই কি বলিস দিতি?
-হ্যা অবশ্যই,যাও তোমরা কথা বলো,

দিয়া সোফায় বসে ফোন টিপছিল হঠাৎ এই কথা বলায় তার মার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো,
-আমি কেন একা কথা বলবো?

ডলি হাল্কা একটু হেসে বলল,
-কেন আমার ছেলেকে বুঝি ভালোলাগে নি?

দিয়া এখন কি বলবে খুজেই পাচ্ছে না,
-না আসলে তেমন কিছু না আন্টি,

দিতি ইশারা করে যেতে বলল দিয়া উঠে দাড়ালো,ডলি বলল,
-রায়ান তার রুমে হয়ত উপরের সেকেন্ডে রুমটা ওর,

দিয়া উপরে তাকিয়ে ধীরে ধীরে যেতে লাগলো,
-কি মুসিবতে পরেছি বাবা এই হোয়াটএভারের সাথে দেখা করতে হবে এখন নিজে গিয়ে বাহহহহ,

নিজে নিজেই দিয়া বলতে বলতে উপরে গেল,সেকেন্ড রুমের সামনে গিয়ে দরজার দিকে হাত বাড়িয়েও আবার ফিরিয়ে নিল।দরজা না খুলে থার্ড রুমে চলে গেল,ভাবলো সেখানে অবশ্যই রায়ান নেই গিয়ে বলবে রায়ানকে পায়নি।হ্যা এইটা ঠিক হবে,যেই ভাবা সেই কাজ দরজা খুলে যেই ভিতরে যাবে সামনে রায়ানকে দেখে স্তব্দ হয়ে গেল,রায়ান সেল্ফ থেকে কিছু বই পরছিল চোখে চশমা দিয়ে।রায়ান দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সেদিকে তাকিয়ে দিয়াকে দেখে দিয়ার দিকে তাকিয়ে হাল্কা বাকা হাসলো।বইটা নিয়ে টেবিলে গিয়ে বসলো।
-আমাকে খুজছিলে?

দিয়া থতমত খেয়ে গেল কি ভেবেছিল আর কি হয়ে গেল,আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকে বলল,
-না তেমন কিছু না
-আসো বসো
-না না থাক,গল্পের বই পরা হচ্ছে?

রায়ান বইয়ের উপর পেজ দেখালো,
-ওপ্স লয়ারেরর

একটু টান মেরে বলল রায়ান চশমাটা খুলে উঠে এসে দিয়ার সামনে দাড়ালো,
-কেন ভালোলাগে না লয়ার?
-নাহ মোটেও ভালোলাগে না,
-কেন?
-আমার ইচ্ছা,

রায়ান কিছুটা হেসে বলল,
-সবার সাথেই কি এভাবে কথা বলো?

দিয়া স্টাডি রুম ঘুরতে ঘুরতে বলল,
-আমি যেমন সেভাবেই কথা বলি,

দিয়া এক জায়গায় দারিয়ে কিছু বই নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলো।রায়ান তার পিছু এসে দারিয়ে বলল,
-শাড়িতে কিন্তু বেশি ভালো লেগেছিল,

এই কথা শুনে দিয়ার পেজ উল্টানো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল পিছে ঘুরে দেখলো রায়ান তার খুব কাছে এসে দারিয়ে আছে।দিয়া রায়ানের দিকে তাকালো রায়ান এক গাল হেসে তাকিয়ে আছে দিয়া এক আংগুল রায়ানের বুকে রেখে দূরে সরিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে বলল,
-থেংস ফর দি কমপ্লিমেন্ট,
-ইউর ওয়েলকাম মিস,

সারাটা দিন দিয়া আর দিতি ডলিদের বাড়িতেই ছিল রাতের দিকে তারা চলে আসলো দিয়া নিজের ফ্লাটে আর দিতি তার বাড়িতে।দিয়া ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পরলো।

সকালে,দিয়া আজ একটু তারাতারিই উঠলো আজ তার জবের ফাস্ট ডে একটু বেশিই এক্সাইটেড।আজ একটা লেডিস শার্ট আর জিন্স পরলো চুলগুলো ঝুটি করে নিল আর কাধে একটা ব্যাগ ঝুলিয়ে বের হলো DB এর উদ্দেশ্য।।এক ঘন্টার মধ্যে পৌছে গেল তার বাসা থেকে বেশ অনেকটা দূর এই কাম্পানিটা।দিয়া হাত ঘড়ি টা দেখে নিল সবে নয়টা বাজে লেট হয়নি।কোম্পানির সামনে এসে দারালো বিল্ডিংটার উপর বড় বড় অক্ষরের DB লেখা।দিয়া চোখ বন্ধ করে ভিতর থেকে শ্বাস নিয়ে একটা ফালি হাসি ঝুলিয়ে ভিতরে ঢুকলো।সবাই কাজ করছে একজনকে বসের কেবিন জিজ্ঞেস করায় দেখিয়ে দিল।দিয়া আরমানের কেবিনের সামনে দারিয়ে নিজেকে একটু ঠিক করে নক করলো।ভিতর থেকে আওয়াজ আসলো,
-কাম ইন

দিয়া ভিতরে ঢুকলো আরমান কিছু ফাইল দেখছিল আর নীল তার সামনে দারিয়ে ছিল।নীল দিয়াকে দেখে বলল,
-আরমান মিস দিয়া,

নীলের কথা শুনে আরমান ফাইল থেকে মুখ তুলে দিয়ার দিকে তাকালো।দিয়া আরমানের তাকানো দেখে কিছুক্ষন আরমানের দিকেই তাকিয়ে রইলো।আরমান দিয়ার এমনভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে উঠে দারালো পকেটে দুই হাত গুজে দিয়ার সামনে এসে দারালো।দিয়ার তাও যেন হুশিই নেই,আরমান এক গাল হেসে দিয়ার সামনে তুড়ি বাজালো দিয়া তখন হয়ত হুশে আসলো।আরমানকে তার এতটা সামনে দেখে হচকচিয়ে গিয়ে তারাহুরো করে পিছনে যেতে নিয়ে হিল বাকা হয়ে পরে যেতে নিলে আরমান ধরে ফেলে।নীল এইসব দেখে চোখ বাহির হওয়ার উপক্রম প্রায়।দিয়া আরমানের বাহুতে থেকেই বলল,
-গু,,গুড মর্নিং স্যার,
-ইউ কল মি আরমান,
-জ,জি আরমান,

দিয়া সেভাবেই রয়েছে এখনো আরমানের বাহুতেই আরমান হাল্কা হেসে বলল,
-আর কতক্ষন এভাবে আমার বাহুতে থাকার চিন্তা ভাবনা করছেন?

দিয়া এখন খেয়াল করলো সে আসলে কোথায় তারাতারি করে উঠে ঠিকভাবে দারালো।আরমান পুনরায় হাত গুজে নীল কে বলল,
-নীল মিস দিয়াকে কেবিন দেখিয়ে দাও,
-জি আরমান

নীল দিয়াকে কেবিনে নিয়ে গেল দিয়া আরমানের দিকে তাকিয়ে হাত কিছুটা উচু করে বলল,
-বা,,বায়

আরমান সেই এক গাল হেসেই বলল,
-বায়,সি ইউ এগেন,

বলেই এক চোখ মারলো তা দেখে দিয়ার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেল হঠাৎ হেচকি উঠা শুরু হয়ে গেল।তারাতারি করে দিয়া আরমানের কেবিন থেকে বের হয়ে গেল।

চলবে,,
(ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🖤)

#স্পর্শ
#part_3
#sarika_Islam

দিয়া নিজের কেবিনে গিয়ে ব্যাগটা টেবিলে রেখে বসলো,
-উফফ কি বস রে বাবা,রিলেক্স দিয়া নিজের কাজের উপর ফোকাস কর।

নিজে নিজেই বলে জোরে শ্বাস টেনে রিলেক্স হয়ে বসলো।পেন্সিল হাতে নিয়ে ড্রইং করতে শুরু করলো একেক স্টাইলের ড্রেস ড্র করতে লাগলো। হঠাত ফোন বেজে উঠলো ড্রইং থেকে চোখ সরিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ফোন রিসিভ করলো,
-কে?(ড্র করতে করতে বলল)

অপর পাশ থেকে বলল,
-আমি
-আমি কে?
-লয়ার রায়ান,

দিয়া রায়ানের নাম শুনে কান থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে নাম্বার টা দেখে আবার কানে দিল,
-কি কাজ?
-ফ্রি ছিলাম তাই কল করেছি,
-কিন্তু আমি বিজি বায়,

বলেই ঠুস করে ফোনটা কেটে দিল দিয়া।ডিজাইন করতে করতে বেশ টায়ার্ড হয়ে গেছে আবার বেশ ক্ষুধাও লেগেছে উঠে দারালো কেন্টিনে গিয়ে কিছু খাওয়ার উদ্দেশ্যে।ক্যান্টিনে গেল কিন্তু সেখানে এখন কিছুই নেই খাবার নাকি শেষ মিজাজটা একদম বিগরে গেল।হিল পরে এখন হাটতেও দিয়ার বেশ অসহ্য লাগছে তাও যেমন তেমন করে হেটে কফি স্টলে গেল।এক কাপ কফি নিয়ে সেটাতে চুমুক দিল সাথে সাথেই।
-আহহহ শান্তি লাগছে এখন,

বলেই পিছে ঘুরতেই দেখলো আরমান পকেটে হাত গুজে একদম ডেসিং লুকে তাকিয়ে আছে।দিয়া কিছুক্ষন তাকিয়ে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিল আবার না জানি সে কতক্ষন তাকিয়ে থাকে।আরমান দিয়ার আরএকটু কাছে এসে বলল,
-কফি
-জি?
-কফি খাবো যদি একটু চেপে দারান,
-ওহহ সরি সরি,

বলেই দিয়া তারাতারি করে সরে দারালো।আরমান দিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
-আপনার টা খেতে পারি?

দিয়া পুরোই টাস্কি খেয়ে গেল কি বলল এইটা আরমান?দিয়া কি বলবে এখন দিবে নাকি না করে দিবে ভেবে পাচ্ছে না,
-আ,,আমার টা?

আরমান দিয়ার দিকে হাল্কা একটু ঝুকে বলল,
-হুম,,

সাথে সাথেই দিয়ার হেচকি শুরু হয়ে গেল,আরমান এক গাল হেসে আরেক কাপে কফি নিয়ে খেতে খেতে চলে গেল।দিয়া নিজের কফির কাপে চুমুক দিয়ে আরমানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।দিয়া নিজের কেবিনে গিয়ে বসলো,
-এই ছেলে পেয়েছে টাকি?যখন তখন সামনে এসে পরে?আর আমার এমন অবস্থা হয়ে যায় কেন সে সামনে আসলে?উফফফফ আমি জানি নায়ায়া,,

কফি শেষ করে আবার কাজে মন দিল,,বেশ কয়েকটা ড্রেস ড্র করে ফেলল এখন নিজের ডিজাইন এক এক করে নিজেই দেখতে লাগলো।নীল কেবিনে এসে বলল,
-মিস দিয়া আরমান ড্রইং দেখতে চাচ্ছে,

দিয়া উঠে যাওয়ার জন্য বের হওয়ার সময় নীলকে বলল,
-মিস না শুধু দিয়া বলো,
-ওকেহ,

দিয়া মুচকি হেসে হাতে ড্রইং গুলো নিয়ে আরমানের কেবিনের সামনে গেল।নক করে ভিতরে ঢুকলো,দিয়া আরমানের সামনে সব ডিজাইন গুলো পেশ করলো আরমান এক এক করে সব গুলো দেখছে।আরমান ডিজাইন গুলো হাতে নিয়ে দিয়ার সামনে এসে দারালো,
-সব ওয়েস্টার্ন ড্র করেছেন?
-হুম
-কিছু সেলোয়ার-কামিজ অথাবা শাড়ি ড্র করলেও কিন্তু বেশ খারাপ হতো না,

বলেই দিয়ার দিকে তাকালো দিয়া আইস্তা আইস্তা করে বলল,
-আসলে আমি একটু এগুলোই বেশি পছন্দ করি তাই এগুলোই বেশি ড্র করি,
-হ্যা তা আপনাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে,কিন্তু বাংগালী মেয়েরা সেলোয়ার-কামিজ অথবা শাড়িতেই বেশি মানায়,আপনি লাইক করেন না এইসব?
-হ্যা হ্যা করি করবো না কেন,করি
-ওকেহ,

বলে আরমান চেয়ারে গিয়ে বসলো দিয়ার দিকে আর্ট গুলো দিয়ে বলল,
-নেক্সট টাইম আশা করি আর একটু ইম্প্রুভমেন্ট হবে
-জি অবশ্যই

বলে দিয়া কেবিন থেকে বের হয়ে গেল।রাত দশটার দিকে বাড়ি ফিরলো খুব বেশিই অস্থির লাগছে তার।কাধের ব্যাগটা সোফায় ফালিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল নাইট সুট পরে ডিনার করে নিল।রাত বারোটা বাজে দিয়া বেডে গেল ঘুমানোর জন্য কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পরলো কিন্তু ঘুম আসছে না আরমানের কথাই বারংবার মাথায় ঘুরপার খাচ্ছে।দিয়া হুট করে উঠে বসলো,
-এখন একটু ড্র করি তাহলে হয়তো ভালোলাগবে,

দিয়া উঠে পেন্সিল পেপার সব নিয়ে বিছানায় বসলো,এক এক করে তিন চারটার মতো ড্রইং করে ফেলল কখন যে চারটা বেজেও গেল হুশিই নেই তার। সাইডেই পেপার পেন্সিল রেখে ঘুমের দেশে পারি জমালো।

সকালে কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভাংগলো দিয়ার ঘুম ঘুম চোখে ফোন চেক করলো সবে মাত্র আটটা বাজে এখন কে আসতে পারে কিছুক্ষন আগেই তো সে ঘুমালো।দিয়া যেমন তেমন করে উঠে গিয়ে দরজা খুলল তার মাকে দেখে দরজা খুলেই হেলেদুলে চলে আসতে নিলে হঠাৎ থমকে যায়।আবার পিছে ঘুরে দেখে তার মার সাথে রায়ানও এসেছে দিয়া বিরক্তি হয়ে গেল একেতো পুরো ঘুম হলো না আবার এসে পরেছে তাকে জ্বালাতে উফফফ জীবনটাই বেদনার।।।
-আজ এত সকালে কেন এসেছ মম?
-রায়ান তোর বাড়ি চিনতে আসলো

দিয়া তার মার দিকে তাকিয়ে বলল,
-চিনতে আসলো মানি?

রায়ান সোফায় বসতে বসতে বলল,
-সে কিছু না

দিয়া সোফার থেকে ব্যাগ চিপসের প্যাকেট সব উঠিয়ে নিল একা ঘর কিছুটা অগোছালো তো থাকেই আবার সকাল সকাল এসে হাজির।দিতি তারা দেখিয়ে বলল,
-আচ্ছা দিয়া আমার কোর্টে কাজ আছে আমি যাই,
-আর রায়ান?
-ও না হয় কিছুক্ষন থাক,
-মা,,

দিতি চলে গেল,রায়ান চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পুরো ঘর দেখতে লাগলো দিয়া ফ্রেশ হতে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে চুলগুলো খোপা করে নিল তাও সামনে অবাদ্ধ চুলগুলো বেরিয়ে আসলো।নাইট সুটেই সোফায় এসে বসলো হাতে একটা টোস্ট আর কফি নিয়ে।
-আমি শুনেছি মেয়েদের ঘর অনেক গোছালো থাকে,

দিয়া ব্রেডে কামর দিয়ে বলল,
-আমি একজন working women তো আমার ঘর একটু অগোছালো টাই স্বাভাবিক।
-হুম তাও বটে,আমি কিন্তু গেস্ট,

দিয়া কফির মগে চুমুক দিতে দিতে বলল,
-তো?
-আমাকে খাবারের জন্য কিছু জিজ্ঞেস করবে না?
-তুমি গেস্ট তো আমার জন্য কিছু আনবে না?
-এইযে আমি এসেছি না?
-এইযে আমি আছি না?
-কি খাওয়ার জন্য?

দিয়া টিভির দিকে তাকিয়ে বলছিল হঠাৎ এমন কিছু বলায় রায়ানের দিকে তাকালো রায়ান এক গাল হেসে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।দিয়া প্রসংগ পালটে বলল,
-আচ্ছা দারাও কফি আনছি,

দিয়া উঠতে নিবে রায়ান বলল,
-আনার কি দরকার তোমার টাই শেয়ার করতে পারো আমি কিছু মনে করবো না,

দিয়া নিজের কফির মগের দিকে একবার তাকালো রায়ানের দিকে একবার তাকালো।হুট করেই কাল আরমানের কথা টাও মনে পরে গেল।দিয়া আর কিছু না বলে কফি আনতে গেল।দিয়া চটজলদি ব্রেকফাস্ট শেষ করে উঠে দারালো,
-এখন তুমি যেতে পারো,

রায়ান কফিতে চুমুক দিতে দিতে বলল,
-মাত্রতো কফিটা দিলে শেষ তো করতে দাও,

দিয়া দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো নয়টা বাজতে আর মাত্র পনের মিনিট বাকি আছে দিয়া রায়ানের সাথে কথা বলে আর সময় নষ্ট করতে চায় না তাই সে তারাতারি করে শাওয়ার নিতে চলে গেল।শাওয়ার শেষ করে ড্রেস পরে নিল কানের দুল পরতে পরতে ব্যাগ নিতে লাগলো।চুলগুলো পুরোই ভিজা যেমন তেমন করে নেরেচেরে রেখে দিল।যেই বেরুতে যাবে ওমনি রায়ানের ডাক পরলো,
-এই এই কোথায় যাচ্ছো?

দিয়া পিছে ঘুরে বলল,
-কেন দেখ না কাজে যাচ্ছি,
-তো আজ কোন খুশিতে সেলোয়ার সুট?

দিয়া নিজের দিকে তাকিয়ে হাল্কা মুচকি হাসলো।

চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে