স্তব্ধের স্নিগ্ধতা পর্ব-০১

0
1836

#সূচনা_পর্ব
#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)

কবুল বলার আগ মুহূর্তে বিয়ের আসর থেকে বরকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তেই বিয়ে বাড়িতে গোলমাল বেঁধে গেল কনের বেশে বসে আছে স্নিগ্ধতা আশেপাশে এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল তাতে কোনো হেলদোল নেই।স্নিগ্ধতার বাবা সানজিদ ওয়াজেদ মাথায় হাত দিয়ে একপাশে বসে আছেন লজ্জায় মেয়ের সামনে যাওয়ার মুখ নেই তার। শাহিলী ওয়াজেদ মেয়েকে এভাবে শান্ত হয়ে বসে থাকতে দেখে রেগে গেলেন স্নিগ্ধতাকে টেনে তুলে অনবরত থাপ্পড় মা’র’তে মা’র’তে,

– মুখপুড়ি আমাকে শান্তি দিবি না সারাজীবন আমার ঘাড়ে বসে খাওয়ার ইচ্ছে তাই না? আমি জানি সব তোর চাল তুই এসব করে বিয়ে ভেঙেছিস তোকে আমি মে’রে’ই ফেলব।

স্নিগ্ধতার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে গাল দুটো লাল টকটকে বর্ণ ধারণ করেছে।শাহিলী ওয়াজেদ ক্লান্ত হয়ে খাটের নিচ থেকে বাঁশের কঞ্চি বের করে জোরে স্নিগ্ধতার হাতে আঘাত করতেই সে ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো। স্নিগ্ধতার বান্ধবী শিরিন দৌড়ে এসে শাহিলী ওয়াজেদের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে,

– এভাবে কেউ নিজের মেয়েকে মা’রে? এসবকিছুর মধ্যে স্নিগ্ধার দোষ কোথায়? এই ছেলেটার সঙ্গে বিয়ে আপনি ঠিক করেছেন।

– তুমি একদম আমাদের মাঝখানে আসবে না এই মুখপুড়িকে আমার থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।

বলেই আবারো তেড়ে যাচ্ছিলেন শাহিলী ওয়াজেদ কিন্তু আশেপাশের কিছু মহিলা তাকে ধরে জোর করে বাহিরে নিয়ে যান। স্নিগ্ধতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে শিরিন স্নিগ্ধতার মাথায় হাত বুলিয়ে,

– কাঁদিস না স্নিগ্ধা আন্টি কেন যে তোর সঙ্গে এমন খারাপ ব্যবহার করে বুঝি না এত বড় মেয়ের গায়ে কেউ হাত তুলে?

আজ স্নিগ্ধতার বিয়ে ছিল বিয়েটা স্নিগ্ধতার মা শাহিলী ওয়াজেদ ঠিক করেছিলেন তবে স্নিগ্ধতার এই বিয়েতে কোনো মত ছিল না মায়ের ভয়েই বাধ্য হয়ে রাজি হতে হয়েছিল। কিন্তু কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করতে যাবেন ঠিক সেই সময় পুলিশ এসে স্নিগ্ধতার হবু স্বামী রিয়াদকে মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্ৰেফতার করে নিয়ে গেল।

সানজিদ ওয়াজেদ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন কি করবেন বুঝতে পারছেন না। রাতুল শিকদার সানজিদ ওয়াজেদের পাশে বসে,

– মি.ওয়াজেদ এভাবে ভেঙ্গে পড়লে হবে বলুন তো? যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে বিয়ের পর যদি এমনটা হতো তাহলে মেয়েটার জীবন নষ্ট হয়ে যেত।

– আমি কি করবো বুঝতে পারছি না কিভাবে মেয়েটাকে মুখ দেখাব? আজ যদি স্নিগ্ধা মায়ের বিয়েটা দিতে না পারি তাহলে আর কখনো হয়তো আমার মেয়েটার বিয়ে হবে না কিভাবে রাস্তায় চলাচল করবো মান সম্মান যা ছিল সব শেষ।

রাতুল শিকদার কথাগুলো শুনে নিজেও বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন কিছুক্ষণ ভেবে তারপর শক্ত গলায় বললেন,
– আপনার মেয়ের বিয়ে আজই হবে আমার ছেলে স্তব্ধ শিকদারের সঙ্গে।

– স্যার!

– দ্রুত গিয়ে সবকিছুর ব্যবস্থা করুন আমি স্তব্ধকে বিয়ের আসরে আনছি।

সানজিদ ওয়াজেদের চোখে পানি আর খুশি একত্রে চিকচিক করছে দ্রুত তিনি বসা থেকে উঠে ঘরের দিকে গেলেন। সানজিদ ওয়াজেদ রাতুল শিকদারের অফিসে ম্যানেজার পদে কাজ করেন দশ বছর ধরে।এই দশ বছরে উনি রাতুল শিকদারের অনেক বিশ্বস্ত হয়ে গেছেন আজ স্নিগ্ধতার বিয়ে উপলক্ষে রাতুল শিকদার ছেলেকে নিয়ে সানজিদ ওয়াজেদের বাড়িতে এসেছিলেন।

স্তব্ধ একপাশে বিরক্তিমাখা মুখ নিয়ে বসে আছে রাতুল শিকদার ছেলের পাশে এসে বসতেই স্তব্ধ প্রশ্ন করলো,

– ড্যড আর কতক্ষন এখানে বসে থাকব? তোমার জন্য বাধ্য হয়ে এখানে আসতে হলো এখন তো বিয়ে ভেঙে গেছে তবুও আমরা বসে আছি কেন?

– মি.সানজিদের মেয়েকে তোর বিয়ে করতে হবে বিয়ে শেষ হলেই তোদের নিয়ে বাড়িতে ফিরব।

– হুয়াট!আর ইউ ক্রেজি ড্যড? কি বলছো?

– মি. সানজিদকে আমি কথা দিয়েছি।

– আমাকে না জিজ্ঞেস করে কেন কথা দিয়েছ? আমি এখন বিয়ে করছি না তার উপর মম যদি জানতে পারে কি হবে ভাবতে পারছো?

– তোর মমকে আমি সামলে নিবো তুই শুধু বিয়েটা কর আমি কথা দিয়ে ফেলেছি কথার খেলাপ হোক তা চাই না চল।

– যাই হয়ে যাক আমি অপরিচিত একটা মেয়েকে এভাবে বিয়ে করতে পারবো না।

– মেয়েটার বিয়ে এভাবে ভেঙে গেছে তুই যদি বিয়ে না করিস কি হবে বল তো?

– এখন কি যার যার বিয়ে ভেঙে যাবে তাকেই আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে?

– কি বলিস সবাইকে তোর ঘাড়ে চাপাবো কেন?

– তাহলে এই মেয়েটাকে বিয়ে করতে বলছো কেন?

– মি.সানজিদ এবং স্নিগ্ধতাকে আমি চিনি তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়েটা অনেক ভালো।

– কিন্তু ড্যড..

– কোনো কিন্তু নয় তুই যদি এখন এই মেয়েকে বিয়ে না করিস তাহলে..

স্তব্ধ কপাল কুঁচকে,
– তাহলে কি?

– আমার সম্পত্তির এক কানা-কড়িও তোকে দিবো না আজকেই তোর একাউন্ট বন্ধ করে দিবো।

– তুমি কিন্তু আমায় ব্ল্যাকমেইল করছো।

– যা মনে করিস এবার বল বিয়ে করবি কি করবি না?

স্তব্ধ মুখটা মলিন করে,
– কখন কবুল বলতে হবে বইলো।

রাতুল শিকদার মুচকি হেসে মনে মনে,’ওষুধে কাজ দিয়েছে।’ স্তব্ধের দিকে আবারো কঠোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে,
– চল আমার সঙ্গে।

সানজিদ ওয়াজেদ স্নিগ্ধতার পাশে বসলেন করুন চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে,
– স্নিগ্ধা মা যা হয়েছে মন থেকে ঝেড়ে ফেল, আমার স্যার তার ছেলের সঙ্গে তোর বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন তৈরি হয়ে বাইরে আয় আজই তোর বিয়ে হবে।

স্নিগ্ধা বাবার দিকে তাকিয়ে,
– আমি কি বুঝা হয়ে গেছি বাবা? আমি তো একটা চাকরি খুঁজছিলাম তারপরেও জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলে এখন বিয়ে ভেঙে গেছে তাহলে আবার কেন?

– আমাকে ভুল বুঝিস না মা, আমি তোর ভালো চাই আর এই নরকে তোকে রাখতে চাই না সবসময় তোর উপর তোর মায়ের অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছে প্রতিবাদ করতে পারিনি কিন্তু আর নয় এবার তোর সুখ দেখে ম’র’তে চাই তুই না করিস না।

স্নিগ্ধতা বলার মতো আর কিছু পেল না কিই বা বলবে তার বাবা তো ভুল কিছু বলেনি। সানজিদ ওয়াজেদ চলে যেতেই শিরিন স্নিগ্ধতাকে পুনরায় বধূ বেশে সাজিয়ে দিলো। শাহিলী ওয়াজেদ স্নিগ্ধতাকে মা’রা’র ফলে সে কান্না করেছে এতেই সাজ নষ্ট হয়ে গেছিল। শিরিন স্নিগ্ধতার হাত ধরে,

– আর কান্না করিস না তোর ভাগ্যে যা লেখা আছে তাই হচ্ছে হয়তো এই বিয়ের মাধ্যমেই তোর জীবনে সুখ নামক পাখির আগমন ঘটবে।

স্নিগ্ধতা মনে মনে আওড়াচ্ছে,’সুখ! সত্যিই কি সুখ নামক কিছু আমার ভাগ্যে আছে?

স্তব্ধ এবং স্নিগ্ধতার বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেল দু’জনে জড়িয়ে গেল নতুন এক সম্পর্কে। কবুল বলেই স্তব্ধ এখান থেকে বেরিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো। রাতুল শিকদার সানজিদ ওয়াজেদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে স্নিগ্ধতাকে স্তব্ধের পাশে বসিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে গেলেন ড্রাইভারের পাশের সিটে বসলেন।

স্তব্ধ একবারের জন্যও পাশ ফিরে তাকায়নি স্নিগ্ধতাও চুপচাপ জানালার দিকে তাকিয়ে আছে।আসার সময় শাহিলী ওয়াজেদকে একবারের জন্যও দেখতে পায়নি
_________________

গাড়ি থেমেছে এক আলিশান ভবনের সামনে, গাড়ি থামতেই স্তব্ধ চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে চলে গেল।স্নিগ্ধতা স্তব্ধের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে রাতুল শিকদার পুত্রবধূর মাথায় হাত দিয়ে,

– হুট করেই বিয়ে হয়ে গেল তাই স্তব্ধ মেনে নিতে পারছে না দুয়েক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।

স্নিগ্ধতা মৃদু হাসলো। রাতুল শিকদার আবারও বললেন,
– চলো মা ভেতরে যাই।

স্নিগ্ধতা সম্মতি দিলো, স্তব্ধ অনবরত কলিং বেল চেপে যাচ্ছে সাথে সাথে একজন মাঝ বয়সী মহিলা দরজা খুলে দিলেন। পরনে বেশ দামী গাড় ডিজাইনের শাড়ি ঠোঁটে হালকা গোলাপী রঙের লিপস্টিক অনেক স্মার্ট।স্তব্ধকে দেখে বিরক্ত নিয়ে বললেন,

– এভাবে কেউ বেল বাজায় বাবু? তুই একা কেন তোর ড্যড কোথায়?

রাতুল শিকদার পেছন থেকে বলে উঠলেন,
– এই তো আমি এখানে।

– ভেতরে এসো বাপ-ছেলে।

স্তব্ধ ভেতরে ঢুকে যাচ্ছিল সঙ্গে সঙ্গে রাতুল শিকদার স্তব্ধের হাত চেপে ধরে,
– চুপ করে এখানে দাঁড়া।

স্তব্ধ পেছনে ঘুরলো না মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে আছে।মহিলাটি স্তব্ধের গাল টেনে,
– তোর মুখ ভার কেন কি হয়েছে? বিয়ে কেমন লাগলো?

– মম…

– উফ অরিত্রি আমার কথা শুনো তোমার জন্য একটা গিফ্ট এনেছি।

– কি গিফ্ট?

রাতুল শিকদার একটু সরে গিয়ে স্নিগ্ধতাকে দেখিয়ে,
– এই যে দেখো তোমার জন্য ছেলের বউ করে একটা মেয়ে এনেছি।

অরিত্রি শিকদারের দৃষ্টি দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক অবাক হয়ে গেছেন। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললেন,
– ছেলের বউ! মানে স্তব্ধের বউ! কি বলছো?আমায় দেখে কি তোমার মজা করার অবস্থায় মনে হচ্ছে?

– মজা করছি না স্তব্ধের সঙ্গে স্নিগ্ধতার বিয়ে দিয়েছি আমি।

অরিত্রি শিকদার এবার স্তব্ধের বাহু ধরে,
– তোর ড্যড কি বলছে এসব?

স্তব্ধ মলিন কন্ঠে,
– মম ড্যড আমায় ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে দিয়েছে বিলিভ মি আমি বিয়েটা মানি না প্লিজ তুমি কিছু করো আমার ভালো লাগছে না ঘরে গেলাম।

স্নিগ্ধতা একপাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে এতক্ষণে এটা সে বুঝতে পেরেছে বাড়ির কেউ তাকে মানবে না এমনকি নিজের স্বামীও না। স্তব্ধ চলে গেল নিজের ঘরের দিকে।

অরিত্রি শিকদারের মুখে রাগ স্পষ্ট, দৃষ্টি দিয়েই রাতুল শিকদারকে ঝলসে দিচ্ছে। রাতুল শিকদার ঢুক গিলে,
– আমি তোমাকে সব বুঝিয়ে বলছি।

– চুপ করো স্তব্ধের ব্যাপারে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত তুমি কি করে নিতে পারলে তুমি জানতে না

রাতুল শিকদার চেঁচিয়ে,
– সালেহা….সালেহা….

রাতুল শিকদারের ডাকে একটি মহিলা দৌড়ে এসে,
– ভাইজান কি করতে হইবো কন।

– এ হচ্ছে স্নিগ্ধতা স্তব্ধের বউ ওকে স্তব্ধের ঘরে দিয়ে আসো।

– স্তব্ধ বাবায় বিয়া করলো কবে!

– আজই করেছে এখন যা বলছি তাই করো।

– আচ্ছা ভাইজান।

সালেহা স্নিগ্ধতাকে নিয়ে স্তব্ধের ঘরে যাচ্ছে। অরিত্রি শিকদার রাতুল শিকদারকে হুংকার দিয়ে,
– ওই মেয়ে স্তব্ধের ঘরে থাকবে?

– তাহলে আর কোথায় থাকবে।

– তুমি জানতে না আমি আমার বোনের মেয়ে নাতাশার সঙ্গে স্তব্ধের বিয়ে ঠিক করেছি সব কথা বার্তা ঠিক তারপরেও কেন এই কাজটা করলে এখন রুশিকে আমি মুখ দেখাব কিভাবে?

– রুশির সঙ্গে আমরা কথা বলে নিবো দরকার হলে নাতাশার জন্য আমি ভালো একটা ছেলে খুঁজে দিব তারপরেও তুমি এমন করো না মেনে নাও স্নিগ্ধতাকে মেয়েটা অনেক ভালো।

– এই বিয়ে আমি মানি না আর কখনও মানবো না এই মেয়েটাকে স্তব্ধের জীবন থেকে সরিয়ে নাতাশার সঙ্গেই আমি আমার ছেলের বিয়ে দিব।

বলেই হনহন করে চলে গেলেন অরিত্রি শিকদার, রাতুল শিকদার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে,’স্নিগ্ধতাকে এই বাড়িতে স্থায়ী করতে হলে অনেক লড়াই করতে হবে সকাল হলেই মায়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’

স্তব্ধ ফ্রেশ হয়ে বিছানায় অর্ধ শুয়ে মোবাইল টিপছে সালেহা স্নিগ্ধতাকে স্তব্ধের ঘরে নিয়ে এসে,
– স্তব্ধ বাবা এই নাও তোমার বউ ভাইজান কইছে নতুন বউরে তোমার ঘরে রাইখা যাইতে।

স্তব্ধ ব্রু জোড়া কুঁচকে সামনে তাকালো স্নিগ্ধতার মুখে গুমটা টানা মুখ দেখা যাচ্ছে না।

– বিয়ে করালো জোর করিয়ে এখন আবার ঘরও দখল করাবে বাহ।

– কিছু করার নাই আমি গেলাম।

সালেহা দরজা চাপিয়ে চলে গেল, সালেহা স্তব্ধদের বাড়িতে অনেক বছর ধরে কাজ করে।স্নিগ্ধতার ভেতরে ভয় কাজ করছে এক পলকে একবার স্তব্ধকে দেখে নিলো।

মোটামুটি ফর্সা মুখের গড়নটা বেশ সুন্দর চিকনও না আবার মোটাও না ছাঁটা দাড়ি চুলগুলো সুন্দর করে কাঁটা এতে দেখতে বেশ লাগছে। স্তব্ধ স্নিগ্ধতাকে ধমক দিয়ে,
– এই মেয়ে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।

স্নিগ্ধতা কিছুটা কেঁপে উঠলো ভয়ে ঠোঁট জোড়া কাঁপছে।স্তব্ধ বিছানা থেকে নেমে স্নিগ্ধতার কাছাকাছি এসে,
– কথা কানে যায়নি? নাকি কানে শুনো না।

স্তব্ধের এভাবে কাছে আসাতে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না অনেক কষ্টে বলল,
– কি পরবো?

– আচ্ছা দাঁড়াও আমি আসছি।

বলেই স্তব্ধ ঘর থেকে বেরিয়ে গেল,স্নিগ্ধতা গুমটা উঠিয়ে আশেপাশ দেখে নিলো ঘরটা খুব গুছানো আর দামি দামি জিনিস দিয়ে সাজানো। মিনিট দুয়েক পর স্তব্ধ ঘরে এসে দরজা আটকে দিলো তারপর স্নিগ্ধতার দিকে একটা শাড়ি ছুঁড়ে দিয়ে,

– ফ্রেশ হয়ে এটা পড়ে নিও ওইখানে সোফা আছে ঘুমিয়ে পড়বে তোমাকে আমি বউ হিসেবে মানি না মানতেও পারবো না তাই আমার থেকে দূরে থাকবে।

স্নিগ্ধতার দিকে না ঘুরেই কথাগুলো বলে বিছানায় গিয়ে উল্টো দিক ফিরে শুয়ে পড়লো স্তব্ধ।স্নিগ্ধতা শাড়িটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।

সারাদিনের এত ক্লান্তি দূর করতে একেবারে গোসল করে বের হলো স্নিগ্ধতা। একবার স্তব্ধের দিকে চোখ বুলিয়ে সোফায় গিয়ে বসলো,স্তব্ধ পূর্বের মতো শুয়ে আছে।স্নিগ্ধতাও লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়লো আর ভাবতে লাগলো,’কি ঘটতে চলেছে তার সঙ্গে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এই সম্পর্কটা।’

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে