রাত যখন গভীর ২ পর্ব-১১+১২+১৩

0
1331

#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :১১
************
ঘুম একটু গভীর হতেই, জান্নাত এর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। জান্নাত রুম থেকে বেরিয়ে আসে, জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে,,কে যেন দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়।জান্নাত চিন্তা করে এতো রাতে কে ওখানে। কে তা দেখার জন্য, জান্নাত বেরিয়ে পড়ে। তবে কাউকেই দেখে নি বারান্দা তে,।হঠাৎ জান্নাত উঠানে দেখতে পেল একটা ছায়া মুর্তি।জান্নাত আবার এগিয়ে গেছে সেদিকে।কিন্তু এবার ও গায়েব।আবার লক্ষ্য করে, ছায়া মানবি হেটে যাচ্ছে। জান্নাত ও নাছোড় বান্দা পিছু নিলো।কারণ এট এনি কস্ট জানতে হবে, কে এটা!!!

ছায়া মানবি হেটে হেটে চলছে বেস কিছুক্ষণ ধরে। অবশেষে, একটা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে পড়ে। জান্নাত ও কিছু টা দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে। জান্নাত লক্ষ্য করে এটা এতটা মেয়ে।নদীর পানিতে মেয়ে টার চুল ভেসে উঠেছে।অনেক লম্বা চুল গুলো। মেয়ে টি নদীর পানিতে নেমে যাই। অমাবস্যার কারণে বিদঘুটে অন্ধকার ছিল। তাই জান্নাত এর দেখতে কষ্ট হচ্ছিল।

ছায়া মানবি নদীর পানিতে ফুটে থাকা শাপলা তে হাত দিয়ে ছিড়ে নেই।নদীতে অনেক গুলো শাপলা ফুল ফুটে ছিল। একটা ফুল হাতে নিয়ে ছায়া মানবি ঠোঁট জোড়া নাড়ছে। তাই জান্নাত অনুমান করে।ছায়া মানবি
কোন মন্ত্র উচ্চারণ করেছে। আবার নদীতে লাগিয়ে দেয় শাপলাটা।তবে এখন শাপলা টা অসম্ভব সুন্দর লাগছে। চকচক করছে। জান্নাত কে পানিতে নামতে বাধ্য করছে।শাপলাটা জান্নাত কে তার দিকে আকর্ষিত করছে। জান্নাত নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। জান্নাত আস্তে আস্তে নেমে যাচ্ছে নদীর জলে।

সবাই কে সতর্ক করে দিয়েছিল মেয়েরা যেন একা কোথাও না যায়। কিন্তু অতি আগ্রহ একদম সুখের হয়না। জান্নাত এর অতি আগ্রহের জন্য এই পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে।

জান্নাত এর গলা অবধি পানি।তবে চোখ জোড়া স্থির করে তাকিয়ে আছে শাপলা ফুলের দিকে।অসম্ভব চকচক করছে।শাপলা টা যতোই স্পর্শ করতে চাইছে। ততই জান্নাত এর হাতের নাগালে চলে যাচ্ছে। জান্নাত আস্তে আস্তে ডুবে যাচ্ছে। জান্নাতের খেয়াল নেই সেদিকে।জান্নাত এর শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। জান্নাত যেন কোন এক ঘোর থেকে বেরিয়ে আসলো।নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এখন খুব ভালো ভাবে অনুভব করছে ।হাত, পা ছড়াছড়ি করছে। জান্নাত সাতার কাটতে জানে না।তাই আস্তে আস্তে নদীর গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া জান্নাত স্পষ্ট বুঝতে পারছে,এখন তার পা টা ও কে যেন পানির ভিতরে টান দিচ্ছে। জান্নাত এর দুচোখ অন্ধকার ঘিরে আসছে।হঠাৎ, জান্নাত এর অবচেতন শরীর বুঝতে পারছে,কে যেন কোমরে স্পর্শ করছে। জান্নাত নিশ্বাস নিতে পারছে একটু একটু তবুও কষ্ট হচ্ছে। জান্নাত এর মস্তিষ্ক আর কাজ করছে না। সেন্স লেস হয়ে পড়ে জান্নাত ।

মুগ্ধ অনেক চেষ্টা করছে তবুও জান্নাত এর সেন্স ফিরে আসছে না। শ্বাস প্রশ্বাস ও বড্ড অস্বাভাবিক। মুগ্ধ ডাক্তার তাই বেশ বুঝতে পারছে বড্ড ক্রিটিকাল অবস্থা।এই মুহূর্তে অক্সিজেন দিতে হবে। অন্য তাই মারাত্মক ভাবে খারাপ কিছু হবে। মুগ্ধ কোন উপায় না পেয়ে। মুগ্ধ,
কিছু চিন্তা না করে কৃত্রিম পদ্ধতি নিশ্বাস প্রদানের প্রয়োগটি জান্নাত এর উপর এপ্লাই করে । মুগ্ধের ঠোঁট জোড়া জান্নাত এর ঠোঁটের সাথে আটকে দেয়।
বেশ কিছুক্ষণ পর জান্নাত একটা বড় করে শ্বাস নেই। মুগ্ধের ঠোঁট সরিয়ে নেই। মুগ্ধ আবার চেক করে দেখে।এখন নরমাল আছে সব।তবে জান্নাত এর পুরো শরীর কাঁপুনি দিচ্ছে। ভিজে কাপড়ে আর বেশিক্ষণ থাকলে জান্নাত এর আরও ক্ষতি হবে। মুগ্ধ দাঁড়িয়ে যায় । হাত দুটো প্রসস্থ করে।মুগ্ধের কাঁধ দিয়ে এক জোড়া ডানা বেরিয়ে আসে। খুব সর্তকতার সাথে কোলে তুলে নেই জান্নাত কে ।চোখের এক পলকে মুগ্ধ
ছুটে চলে, অর্কের বাসার গেইটের সামনে। মুগ্ধ নিজের ডানা লুকিয়ে নেই। কারণ, মুগ্ধ চাইনা,সে যে জিন পরী একথা সর্ব প্রথম জান্নাত ছাড়া কেউ জানুক। তাছাড়া, জান্নাত জানার পরে,যদি ও কাউকে জানাতে চাই। তাহলে, সে জানাতে পারে।মুগ্ধ তাড়াতাড়ি জান্নাত কে ঘরে শায়িত করে। সবাই দেখে জান্নাত কে।সুমি,শাম্মি তাদের সাথে জান্নাত কে নিয়ে যায়। কাপড় চেঞ্জ করে দেয়।

সুমি নিজেকে দোষ দিচ্ছে। কারণ, কালকে সিরাজ এর সাথে ব্রেকআপ হয়েছে তাই মন খারাপ ছিল।জান্নাত যখন মাঝ রাতে ডেকে দেয়। আর বলে, সুমি একটু বাইরে আয় না।তখন রাগ দেখায় সুমি।যার ফলে জান্নাত একা বেরিয়ে ছিল।

শাম্মি বলেঃ আপু যা হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করে কি হবে?ইনশাআল্লাহ ভালো হয়ে যাবে। তাছাড়া মুগ্ধ ভাইয়া আছে না।যে কেয়ার করে।হায় আল্লাহ। দেখলেই জিলাসী হয়।

আসলে, কেউ একজন ঠিকই বলেছিল,এক রমনীর সুন্দর হলে, অন্য জন জিলাসী করবে।তাছাড়া, কারো স্বামী বা প্রেমিক বেশি কেয়ার করলেও এটা দেখে মেয়েদের জিলাসি হয়।ঠিক তেমনই, শাম্মির ও জিলাসি হয়েছে জান্নাত এর প্রতি মুগ্ধের কেয়ার ও ভালোবাসা দেখে।😴

সকালে রৌদ্রময় আলোতে,জান্নাত চোখ জোড়া খুলে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে। সুমি বলেঃ সরি।কালকের জন্য।

জান্নাত বলেঃ সরি তে কাজ হবে না।তাছাড়া কি পেত্নী কি মনে করচস এতো সহজে ছেড়ে দেবো তুকে।শালার, বজ্জাত সিরাজ এর জন্য আমাকে রাগ দেখিয়ে ছিলি।সিরাজের ছেয়ে ভালো কারো সাথে তুর বিয়ে দিবো দেখিস।ওই সিরাজ এর লগে আর যোগাযোগ করবি না।করলে তুর একদিন কি আমার একদিন।

সুমি বলেঃ ওকে মেরি আম্মা জান।এবার তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যা।রিনিকে খুঁজে বের করতে হবে।

রাহাত হুজুর বলেঃ তা জান্নাত, এত রাতে কই গেছিলা।কেন গেলে?তোমাদের মেয়ে দের একা কোথাও না যেতে বলছি না।

জান্নাত সব কিছু খুলে বলে। জান্নাত বলেঃ তবে মরার পথের থেকে কে ফিরিয়ে আনছে জানি না।

রাজা মশাই ও লোভা বলেঃ ওই যে এক কোণায় একটা ছেলে বসে আছে না মুখ গুমরে সে বাচিয়েছে।আল্লাহ সহায়ক ছিলেন। ছেলে টা ওচিলা ছিল।তাছাড়া,
ও ছাড়া আর কে বাঁচাবে।

জান্নাত লক্ষ্য করে দেখে। এটা তো মুগ্ধ। জান্নাত বলেঃ আপনি? কেমনে কি?
আমি যে ওখানে কেমনে জানলেন?

মুগ্ধ বলেঃ জানি তুমি সব উত্তর না পাওয়া অবধি অস্থির হয়ে থাকবে।শুনো তাহলে।

সবাই মনোযোগ দিয়েছে।মুগ্ধ শুরু করে।কাল রাতে…..

এমন সময়,
কে যেন একজন বলে উঠে:রিনি মেম আপনার হাতটা দেন।চুড়ি পরিয়ে দিব।

রিনি হাতটা বাড়িয়ে দিল।রিনিকে একজন সাজাচ্ছে। একজন খোপা করেছে। একজন জুয়েলারি পরাচ্ছে। রিনির নিজেকে জুয়েলারির দোকান মনে হচ্ছে। বেশ কিছু সময় পর সাজ শেষ হয়েছে।

তাসনিয়া বলেঃ দেখি কেমন লাগছে?

রিনি কে তাসিনিয়ার সামনে আনা হয়।
তাসনিয়া বলেঃ বাহ আমার ভাই এর পছন্দ আছে। বেশ লাগছে।

রিনি এবার নিজেকে আয়নার মধ্যে দেখে।রিনি মনে মনে বলছে, অনেক ইচ্ছে ছিল বউ সাজার, এই ভাবে যে সাজতে হবে চিন্তা করিনি।

রিনি অস্পষ্ট স্বরে বলেঃহলুদ শাড়ি, সাদা ফুলের হাত,মাথার,গলার গহনা।সাথে নাকে নাক ফুল। ঠোঁটে মিষ্টি রঙের লিপস্টিক।এতো কিছু তে আমি নিজেকেই চিনতে পারছি না। বড্ড অচেনা লাগছে আয়নার সেই প্রতিবিম্ব কে।

তাসনিয়া বলেঃ আস নিচে যায়। সবাই এসেছে।ভাই ও প্রস্তুত।

সবাই মিলে নেমে যাই। রিনি এই প্রথম তার রুম থেকে বেরিয়েছে।তবে যখন থেকে নিচে নেমেছে একটা অনুভূতি কাজ করছে। রিনির মনে হচ্ছে, কাছের কেউ খুব আশেপাশে আছে।

রিনি নামতেই, রহমান জিন তার হাত বাড়িয়ে দেয়। রিনি অনিচ্ছার শর্তে ও রহমানের হাতটা ধরে। রহমান রিনির কানের কাছে মুখ করে ছোট ছোট করে বলে,
ফাগুনের আহবানে,
শুধু দুজনে।
হারিয়ে যাবো দূর অজানায়।
পাশে থেকো চিরদিন।
মৃত্যু অবধি,
ভালোবাসায়।।।।।😍

এসব কথা শুনে রিনির রাগ হচ্ছে বড্ড। ইচ্ছে করছে, পালিয়ে যেতে।কিন্তু রিনি যে নিরুপায় ।রহমানের রোমান্টিক কথা শুনলে বড্ড গা ঘিনঘিন করে রিনির।অবশ্য, সব কিছু ভাগ্যের কাছে ছেড়ে দিলেও মন মানতে নারাজ।মন যে বেহায়া। এই মন নামক জিনিস টা রহমান কে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা।আসলে, মনটা যে বড়ই খেয়ালি। মাঝে মাঝে অদ্ভুত আচরণ করে।

রহমান লক্ষ্য করে রিনির মুখে রাগের চাপ ফুটে উঠেছে। আবার,রহমান, রিনির কানের কাছে এসে বলে,
kabhi kabhi gussa
Muskurahat se
Zada khas hota hai,
Kyun ki
Muskurahat toh sab ki liya
Hota hai.
Magar gussa sirf us
K liya,
Hota hai,
Jinhei humm kabhi khona,
Nahi chahty😇😇😇😍

রহমান মনে মনে বলছে, রিনি ভালবাসা আর যুদ্ধে ভুল বলে কিছু নেই,হ্যাঁ ভুল বলে কিছু নেই। কিছু কিছু জিনিস জোর করে আদায় করে নিতে হয়।

রহমান চেয়ে আছে রিনির দিকে। আজ রিনিকে অপসারী লাগছে। রহমান আর রিনিকে স্টেজ এ নিয়ে গেল।

রিনি চুপ হয়ে আছে। দুজন কে হলুদ লাগিয়ে দিয়েছে। রিনির হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছে। রিনির চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে চাইছে, কিন্তু চোখে যে জল নেই।তাই চোখ জোড়া দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়ে নি।

রিনির মেহেদী লাগানোর সময় রহমান রিনিকে ছোট ছোট কন্ঠে বলে,
তুমি যদি হও মেহেদী ,
আমি হবো সেই মেহেদীর রঙ,
দুজনে মিলে করবো
এবার প্রেম নামক ডং😁😁

রিনি হেসে উঠে রহমানের এমন কথা শুনে। রহমান চলে গেল, মেহমান দের সাথে গল্প করতে। রহমান মেহেদী দেয়নি। কারণ ছেলে দের মেহেদী দেওয়া ঠিক না।

রিনির হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছে।তবে মেহেদী তে নামের অক্ষর দিতে গিয়ে E অক্ষর হয়ে গেছে। যে মেহেদী দিচ্ছি লো সে ভয় পাই। কারণ, রহমান যদি দেখে আস্তো রাখবে না।মেয়ে টা অক্ষর টাকে বুঝা না যায় মতো করে দিয়েছে। তবে কেউ মন দিয়ে খুঁজলে ঠিকই খুঁজে পাবে।

আসলেই, এটা কি কোন কোইন্সিডেন্ট ছিল? নাকি নিয়তির কোন ইশারা???

রিনির কিছুই ভালো লাগছে না।নিজেকে নিজে ভরসা দিচ্ছে সব ঠিক হয়ে যাবে।

রিনি আবার মনে মনে বলছে, সব ঠিক হয়ে যাবে, একটা বাজে রকমের মিথ্যা কথা। সব কখনো ঠিক হয় না।হলুদ কখনো লাল হয়না।সাদা কখনো কালো হবে না।দুই আর দুয়ে মিলে কখনো পাঁচ হয়না।কষ্টের দাগ কখনো মুছে যায় না।সব কখনো ঠিক হয় না।সব আগের মতোই থাকে। আমরা শুধু মেনে নিতে শিখি।মানিয়ে নিতে শিখি। কষ্ট কখনো কমে যায় না।কষ্ট কখনো চলে যায় না। কষ্ট তার জায়গাতেই থাকে। আমরা শুরুতে তাকে তাড়িয়ে দিতে চাই।যেদিন টের পাই সে কখনো চলে যাবে না সেদিন থেকে আমরা তাকে আপন করে নিই।নীরবে,নিঃশব্দে ভেতর থেকে মারা যেতে থাকি।

এসব চিন্তা করতে করতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। যার ফলে,

অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে । সবাই চলে যেতেই।বাসায় যে মহিলা ছিল, উনি বলে, মেম আপনি আমার রুমে বসেন।আমি আপনার রুমে একটু পরিষ্কার করে আসি।আসলে, সময় পাইনি। সবাই রাতে হাড্ডি খেয়ে ছে।এগুলো পরিষ্কার করতে করতে দেরি হলো।

জিনদের খাবার হলো, পশুর হাড্ডি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার।

রিনি বলেঃ আচ্ছা সমস্যা নেই। তোমার রুম কোন দিকে?

মহিলা সিড়ির নিচের রুম টা দেখিয়ে দেয়। রিনি সেই রুমে প্রবেশ করে। রিনির কেমন জানি লাগলো। খুব আপন কেউ আছে এই রুমে এমন মনে হচ্ছে।রিনি সোফায় বসে পড়ে। প্রিন্স এতক্ষণ মন খারাপ করে বসে ছিল।কিন্তু যখন বোতল বেদ করে বাইরে তাকিয়ে দেখছে,আরে এটা কাকে দেখতে পাচ্ছে।

প্রিন্স বলেঃ এটা কে? এটা কি আমার রিনি? রিনি রিনি।প্লিজ হেল্প মি।

বোতলে থাকার ফলে প্রিন্স এর কথা রিনি শুনতে পেল না। রিনি সম্পূর্ণ রুম টা দেখছে।আর চিন্তা করছে,আজ রাতে ঘুম হবে না।আসলে, রাত শত্রুর চেয়ে ও ভয়ংকর। দিনের আলো নিভে যখন রাতের আধার নেমে আসে তখনই মনের কষ্ট গুলো জ্বলে উঠে। রাতটা শুধু কি ঘুমের জন্য?

হাজারো অতীত আর ভবিষ্যত কল্পনা আর স্বপ্ন এর স্বর্গরাজ্য।এসব বলে সামনে তাকিয়ে দেখে।

এমন সময় টেবিলে দেখে একটা বোতল।

রিনি বলেঃ বাহরে বোতল একটা কেন এখানে? তবে বোতলটা বেশ সুন্দর।তবে কেন জানি মনে হচ্ছে কোথায় জানি বোতল টা দেখেছি। কিন্তু কোথায় দেখেছি?

এই বলে, রিনি এগিয়ে যাচ্ছে বোতলটার দিকে…….

চলবে……..

#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :১২
************
সবাই মনোযোগ দিয়েছে।মুগ্ধ শুরু করে।কাল রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়লো। তখন আমার মনে কেন জানি অদ্ভুত লাগছিল। মনটা বারবার আনচান করছিল। মন অস্থির হয়ে থাকলে ঘুম আসে না।তাই ঘুমাতে পারিনি।কি করবো চিন্তা করতে করতে।

রাতে ছাদে গিয়ে বসেছিলাম।অমাবস্যার রাত,বিদঘুটে অন্ধকার। গুমট একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।সঙ্গী হয়েছে আমার মনের আনচান অনুভুতি। রাতে কি করবো কিছু করতে না পেরে। আমি আনমনে কিছু একটা ভাবিতেছিলাম।তখনই মন চাইলো একটা গান গাই।তাই
মনে মনে একটা গান ও ধরেছিলাম,

“বকুলের ও মালা শুকাবে
রেখে দিবো তার সুরভি।
তুমি চোখের আড়াল হও,
পলকে বাঁধনে রও,
জেনে রেখো আমিও ছিলাম,
এই মন তোমাকে দিলাম।
এই প্রেম তোমাকে দিলাম। ”

গান শেষ হতেই কারো যেন নুপুর এর ঝুমুর ঝুমুর শব্দ শুনতে পেলাম। তবে শব্দ টা অনেকটা দূরের থেকে আসছিল।তাই আমি নুপুরের শব্দ কোথা থেকে আসছে জানার জন্য রাস্তায় চলে যায়। তবে,
আমি অনেক টা পথ চলার পর ও কাউকে দেখতে পেলামনা।

যখনই মন স্থির করি, ফিরে বাসায় চলে আসবো।তখনই নাকে একটা ঘ্রাণ পাই।এই ঘ্রাণ টা যে আমার খুব চেনা।রাতের মৃদু বাতাসে ঘ্রাণ টা বারবার নাকে আসছিল।মে অজানা আতংক। আমি আর পিছপা হয়নি।কারণ এই ঘ্রাণ জান্নাত এর আমি জানি। খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারি ওর গায়ের সেই মিষ্টি ঘ্রাণ। সোজা ঘ্রাণ টা যেদিক দিয়ে আসছে ওইদিকে যাচ্ছিলাম।যখন একটা নদীর তীরে আসি।তখন দেখি,জান্নাত হাত, পা ছোটাছুটি করছে। সেই মুহূর্তে হার্ট বিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপক্রম হয়েছিল। সাথে সাথে ঝাপিয়ে পড়লাম নদীতে। এরপর তীরে নিয়ে যায়।

অতঃপর বাসায় নিয়ে আসি।বাকিটা তো আপনারা জানেন ই।।

মুগ্ধ ইচ্ছে করে,কৃত্রিম শ্বাস এর ব্যাপারে বলে নি।কারণ জান্নাত জানতে পারলে,লঙ্কা কান্ড বাধিয়ে ফেলবে।

সবাই মুগ্ধ কে কৃতজ্ঞতা জানাই। সবাই মিলে সকালের নাস্তা করে নেই। এরপর ই শুরু হবে তাদের কার্যক্রম।হাবিব অল্প একটু নাস্তা করে নিজের রুমে প্রবেশ করে।

হাবিব ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে মোবাইল টা দেখছে।আড়ালে শাম্মির কিছু ছবি তুলেছিল।সেগুলো কেমন হয়েছে দেখছে?

তখনই, হাবিবের চোখ জোড়া গেল আয়নাতে। টাস করে মোবাইল পড়ে যায়।

হাবিব বলেঃ ইয়ে মানে, আপনি এখানে? আয়নাতে কি করছেন?আমার রুমে অনুমতি ছাড়া কেন আসছেন? তুক্কো আমার আয়না তে?

শাম্মি বলেঃ এইখানে না আসলে জানতাম ই না আমার ছবি তুলে রাখা হচ্ছে। ওই মিয়া কারো অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাই না জানো না?আরোও আসছে আয়নাতে কেন অনুমতি নিয়ে আসেন্নি বলতে।ঢং।।।

হাবিব বলেঃ আসলে, আসলে।।

শাম্মি বলেঃ আসলে কি?
আপনার খবর আছে,আজ আপনাকে মজা দেখাবো।

এই বলে,শাম্মি আয়না থেকে বেরিয়ে মোবাইল টা নিতে আসছিল। এমন সময় হাবিব মোবাইল টা নিয়ে ভো দৌড় দিল।শাম্মি ও কম কিসের। পিছু নিলো। দুজনের দৌড়াদৌড়ি একদম ছাদ অবধি চলে গেল। দুদিন আগের বৃষ্টির জন্য ছাঁদ কিছুটা পিছলে ছিল। শাম্মি, হাবিব কে অলমোস্ট ধরে ফেলছিল। তার আগেই টাস করে পড়ে যায়। হাবিব, শাম্মি কে ধরতে গিয়ে। শাম্মির পায়ের সাথে লেগে গিয়ে শাম্মির উপর পড়ে যায়।দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেছে। শাম্মির মুখ লজ্জায় রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে।

হাবিবের ঠোঁট একদম শাম্মির ঠোঁটের ২ ফিট দূরত্বে ছিল।শাম্মি চোখ বন্ধ করে ফেলে। হাবিব আস্তে করে সরে যায়। হাবিব তার হাত বাড়িয়ে দেয়।

হাবিব বলেঃ উঠে পড়েন।

শাম্মি চোখ জোড়া খুলে দেখে হাবিব দাঁড়িয়ে আছে। হাত বাড়িয়ে। শাম্মি একটা মুচকি হাসি দেয়। এই হাসি যেন কিছু একটা ইশারা করছে।

হাবিব মনে মনে বলছে, একটা মেয়ের মন পেতে হলে তার কব্জি শক্ত করে ধরতে হয়না। আলতো করে মেয়েটার হাতটা মুঠোয় পুরে নিতে হয়।এতে মেয়ে টা ব্যথা ও পায় না আবার মেয়েটার মন ও খারাপ হয় না।

হাবিবের মনে একটা চাপা আনন্দ। শাম্মির এই মৃদু হাসি যেন কোন ভালো কিছুর ইশারা করছে।

এই বলে, রিনি এগিয়ে যাচ্ছে বোতলটার দিকে,প্রিন্স এর মনে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে।রিনি বোতলে হাত দেয়। রিনির খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে। কি আছে ভেতরে?,এত আকর্ষণীয় লাগছে কেন এই বোতালটা কে?
রিনি আর সাত,পাঁচ না ভেবে বোতল টার মুখ খুলে ফেলে। চারপাশে একটা মিষ্টি ঘ্রাণ চড়িয়ে পড়ে । রিনির খুব চেনা মনে হচ্ছে এই ঘ্রাণ টা কে।হঠাৎ চোখ জোড়া গেল বোতলে।হালকা হালকা ধোঁয়া বের হচ্ছে। রিনি চোখ জোড়া বন্ধ করে, রিনি মাতাল করা সেই ঘ্রাণ টা নিচ্ছে। তখনই, কেউ একজন মিষ্টি স্বরে বলে, রিনি।।।।।ও রিনি।

রিনি বলেঃ কে?

কেউ একজন বলেঃ চোখ তু খুলে দেখো।

রিনি চোখ জোড়া খুলে দেখে এটা প্রিন্স (ইনতিয়াজ)। রিনির মনে পড়ছে এটা সেই বোতল যেটাতে প্রিন্স কে বন্দী করা হয়েছিল। রিনি একদম অবাক হয়ে গেছে। কেমনে কি হলো?প্রিন্স রিনি কে জড়িয়ে ধরে।

রিনি এবার বলে উঠেঃ কেমন আছেন? কেমন ছিলেন?

প্রিন্স বলেঃ আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি ছিলাম।

রিনি বলেঃ বোতল বন্দী জীবনে কেমনে ভালো ছিলেন?অতীত চিন্তা করে কি আপসোস হচ্ছে না?

প্রিন্স বলেঃ রিনি,একটা কথা মনে রাখবে,যে অবস্থায় থাকোনা কেন।ভালো থাকবে।ভালো থাকার চেষ্টা করবে।কেননা ভালো থাকতে হলে জীবনে থাকা চাই সন্তুষ্টি। আর সেজন্য বর্তমান কে বর্তমান দিয়েই বিবেচনা করতে হবে। উপভোগ করতে হবে সবটা আনন্দ আজই।কেননা যা চলে যায়, বা গিয়েছে তা আর ফিরে আসবেনা।অতীত হয়তো কষ্টের ছিল তা ভুলে থাকতে পারলেই ভালো থাকতে পারবো।তাছাড়া যা আছে তা অমূল্য, তাকে সাজাতে হয়।আমি ও সাজাবো আমার যা আছে তা দিয়ে।
এইতো তা তাই বললাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি রিনি।

তখনই,
প্রিন্স আবার বলেঃ এই দিকে কাছে আসো!আমাকে শক্ত করে ঝাপটে ধরো???

রিনি চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছে,
রিনি বলেঃ কি বলছেন এসব?

প্রিন্স বলেঃ আমার কোন ছোঁয়াছে রোগ নেই। সো চিন্তা করিও না।যা বললাম তাই কর।
আর খুব শক্ত করে আঁকড়ে ধরবে কিন্তু। তোমার সাথে কি হয়েছে কে করছে এমন?
এখানে কেমনে আসলে?
সব শুনবো।
তার আগে এখন দেখি তো গায়ে কেমন শক্তি আছে?
কত শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে পারো?

রিনি এক মূহুর্ত দেরি না করে।হুরমুডিয়ে প্রিন্সের বুকের সাথে মিশে যায়। খুব শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে। রিনি স্পষ্ট অনুভব করতে পারছে প্রিন্স এর শ্বাস প্রশ্বাস।

প্রিন্স তখন, একটা দীর্ঘ শ্বাস নেই। সাথে সাথে,
চোখ বন্ধ করে,,,

চলবে……..

#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :১৩
************
প্রিন্স তখন, একটা দীর্ঘ শ্বাস নেই। সাথে সাথে,
চোখ বন্ধ করে।

প্রিন্স (ইনতিয়াজ) বলেঃ আর কতক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকবে? নাকি জড়িয়ে ধরে থাকার ইচ্ছে?এইভাবে জড়িয়ে ধরে থাকলে কিন্তু কিছু একটা হয়ে যাওয়ার সম্ভবাবনা আছে। তখন কিন্তু আমাকে দোষ দিতে পারবা না।আবার কান্না ও করতে পারবে না।

রিনি চোখ জোড়া খুলে দেখে। একটা খুব সুন্দর রুম। অনেক বড়।কিন্তু রিনির মনে হচ্ছে, প্রিন্স কে জড়িয়ে ধরেছে মাত্র ১ মিনিট ও হবেনা।এত তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেল।

রিনি মনে মনে বলছেঃ চান্দু,আমাকে কথা শোনাই ছো।এর হিসেব আমি বরাবর করে দিবো।আমি তো জানতাম না ১ মিনিট পৌঁছে যাবো যে সেটা।তাই বলে ওমন কথা বলবে।সময় আমারও আসবে,

রিনি আড় চোখে তাকিয়ে আছে প্রিন্সের দিকে।

তখনই,

প্রিন্স বলেঃ বস।এবার বল,কি হয়েছিল? তুমি কেমনে এইখানে? সব খুলে বল রিনি।।।।

রিনি সব খুলে বলে। এরপর
রিনি বলেঃ আপনি কেমনে ওই ঘরে, ওই মহিলার রুমে ছিলেন?আপনার সাথে কি হয়েছিল?

প্রিন্স ও তার সাথে যা যা হয়েছে সব খুলে বলে। প্রিন্স বলেঃ আচ্ছা, রিনি তুমি তো সব বলছো।তবে যে জিন এসব করছে? তার নাম কি?
দেখতে কেমন?কিছুই তো বল নি।

রিনি বলেঃ বিশ্বাস করবেন? কে করছে এসব তার নাম বললে!তাছাড়া হুহ্। আমার প্রতি আপনার প্রতিশোধ এর নেশা ধরিয়ে দিতে সে মুখ্য ভুমিকা রেখেছিল।

প্রিন্স বলেঃ আমি জানি রিনি তুমি মিথ্যা বল না।তোমার সাথে তু ছিলাম।যখন ছিলাম, তখন প্রতিটি মূহুর্তে, তোমাকে অনুসরণ করেছি।বিশ্বাস করি তোমাকে রিনি।আমার নিজের চেয়ে বেশি। বল কে করছে?

রিনি বলেঃ সব কিছুর মূলে আছে, রহমান জিন। আপনার সেই কলিজার বন্ধু। যা কে নিয়ে আমার স্কুলে যাওয়ার পথে দাড়িয়ে থাকতেন।

প্রিন্স নিস্তব্ধ হয়ে আছে। সে যেন নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না।

প্রিন্স বলেঃ রিনি ওটা শয়তান জিন এর বাসা ছিল। বলতে পারো শয়তান প্রিন্স এর।কিন্তু রহমান কেমনে শয়তান প্রিন্স?

রিনি বলেঃ সেসব তু আমি জানি না।

প্রিন্স বলেঃ রিনি, সরি।তোমার জীবন টা একদম নষ্ট করে পেলেছি।আসলে, রাগ,প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ এর মনোভাব কখনও ভালো কিছু নিয়ে আসে না।তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছো,তোমার পরিণতি রিনি।

রিনি বলেঃ আমি এসব নিয়ে চিন্তা করি না।এটাই আমার ভাগ্যে আছে বা ছিল বলে মেনে নিয়েছি।বাবার কথার অবাধ্য হওয়ার জন্য এই শাস্তি আল্লাহ পাক আমাকে দিয়েছে এটা আমার প্রাপ্য।

প্রিন্স বলেঃ আমরা ২,৩ দিন পর পৃথিবীতে যাবো।কারণ এখন যাওয়া টা তোমার জন্য সুরক্ষিত না।এই জায়গায় তুমি সুরক্ষিত।

রিনি হালকা মাথা নাড়ে। দুজন দু পাশে বসে আছে। প্রিন্স এর মন বড্ড জ্বালাচ্ছে। কারণ, সে ভালো ভাবে বুঝতে পারছে,রিনির মনে তার জন্য এখনো কোন জায়গা হয়নি।জায়গা তো এমনে এমনে হয়না করে নিতে হয়।

প্রিন্স জানালায় দাঁড়িয়ে বাইরের প্রকৃতি দেখছে।সত্যি বলতে, যখন কারো প্রতি ভালবাসা বেশি হয়ে যাই, তখন সেই ভালোবাসা সুখের চেয়ে কষ্ট বেশি দেয়।

এটা বলে, প্রিন্স পিছনে ফিরে দেখে রিনির দিকে।রিনি কোন প্রতি উত্তর দেয় কিনা।

কিন্তু রিনি বাচ্চা মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পড়লো ।মুখে ফুটে আছে রিনির ভুবন ভোলানো মিষ্টি একটা হাসি।

প্রিন্স আবার বলে উঠেঃযে মিষ্টি হাসি দিয়ে সবার কষ্ট কে ভুলিয়ে দেয়, হাসি ভুলে সে ও একসময় কাঁদে কিছু কষ্ট ভুলতে পারে না বলে।

এমন কিছু কষ্ট লুকিয়ে আছে রিনি ও প্রিন্স দুজনের মনে।তারা এসব কষ্ট পিছিয়ে রেখে সামনের জীবন টা সুন্দর করতে পারবে?।রিনির মনে কি একটু জায়গা হবে প্রিন্স এর জন্য?

নাকি অপ্রাপ্তির খাতায় নাম লিখাবে দুজনেই?

💮
💮
💮

=>সুমি প্লিজ এমন করো না। তাছাড়া, আমাকে ভুল বুঝলে।ও আমার চাচাতো বোন ছিল। বিশ্বাস কর, সব ঠিক হয়ে যাবে।আর আজকে হলুদ ড্রেস পরেছো।বেশ মানিয়ে ছে।চোখ ই সরাতে পারছিনা।

এতক্ষণ ধরে সিরাজ তার শেষ চেষ্টা করছে সুমি কে বুঝাতে। সুমি বাসার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে।বিশেষ করে জান্নাত এর চোখ ফাঁকি দিয়ে বাসার থেকে একটু দূরত্বে একটা কফির দোকানে এসেছে।কারণ সিরাজ নানা ভাবে ইমোশনাল করছিল।শেষ দেখা হলে করতে বলেছে। এক সময় তো ভালোবেসে ছিল এখন ও ভালোবাসে সুমি। অনুভূতি গুলো এখনো কাজ করে তাইতো শেষ দেখা করতে চলে এসেছে।

সুমি বলেঃ আচ্ছা সিরাজ,
নিজের হবু বর কে যদি অন্য মেয়ের গলায় হাত দিয়ে ঘুরতে দেখি?
সেই মেয়ের কোলে মাথা রেখে গল্প করতে দেখি? তাহলে নিজের চোখ জোড়া কে কেমনে অবিশ্বাস করবো?
আসলে, তুমি যে আমার পাশে বসে আছ আমার কাছে তোমাকে প্রয়োজনীয় মানুষ বলে মনে হচ্ছে না।

কথায় আছে,
“মনের দূরত্ব বেড়ে গেলে,
পাশাপাশি চেয়ারে বসে ও
তাকে প্রয়োজনীয় মানুষ
বলে মনে হয় না।”।।।।
তাছাড়া, কারো সম্পর্কে খুব বেশী জেনে ফেলতে নেই,সবটা পড়া হয়ে গেলে তার প্রতি আমাদের আগ্রহ কমে যায়। প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করে না।মানুষ রহস্য পছন্দ করে। মানুষ কে থাকতে হবে রহস্যময়।।।

আমার জীবনের প্রত্যেক পাতা তোমার জানা তাই হয়তো রহস্য ময়ী ভাব টা নেই। সমস্যা নেই তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।
মনে রাখবে সিরাজ একটা কথা, আগে যতটা চেষ্টা ছিলো, তোমাকে পাওয়ার, আজ তার চেয়ে বেশি চেষ্টা , তোমাকে ভলে যাওয়ার।আসি সিরাজ।খুদাহ হাফেজ।

সিরাজ বেশ কয়েক বার ডেকে ছিল। সুমির অশ্রুতে টলটল চোখ জোড়া পিছনে ফিরে দেখে নি।এগিয়ে চলছে সামনের দিকে।

সুমি মনে মনে বলছে, সিরাজ,তোমার তো আজ কথা, বলার অনেক মানুষ আছে, তাই বুঝি আজ আমায় তোমার এতো অচেনা লাগে। রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে আসছে।।।

😣
💮
💮

বেশ কয়েক ঘন্টা হয়ে গেছে। অর্ক বলেঃ তোমরা সবাই আছ,সুমি কই? কোথায় গেছে?এখন আমাদের কাজ শুরু করবো তো।ওকে যে দরকার।

সবাই চুপচাপ।কারণ কেউ জানে না সুমি কই গেছে?

অর্ক রেগে গিয়ে বলেঃ সবাই কে নিষেধ করে দিছিলাম কোথাও না যাইতে।দুর এখন রিনি কে না খুঁজে সুমি কে খুঁজতে হচ্ছে। অথচ, কথা ছিল আজ রিনিকে চিরনি অবিজান চালিয়ে খুঁজে বের করবো।বাল তা আর হলো না।সুমির মোবাইলে কল দে জান্নাত।

জান্নাত বলেঃ মোবাইল টা যে বন্ধ। বেশ কয়েক বার কল দিছি।
তখনই,

শাম্মি বলেঃ সিরাজ কে একটা কল দিয়ে দেখেন মনে হচ্ছে, ওনি কিছু জানতে পারে।

রাহাত হুজুরঃ কল দিল।জানতে পারলো তাদের দেখা হয়েছে। তবে অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, সুমি কফির দোকান থেকে বেরিয়ে পড়েছে।

হাবিব বলেঃ তাহলে, সুমি কোথায়?দোকান টা থেকে আসতে তো এতক্ষণ লাগে না।আনুমানিক, ১০ মিনিট লাগবে।এখন তো প্রায় কয়েক ঘন্টা হয়ে গেছে।

সবাই সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় সুমিকে খুঁজে দেখে কিন্তু পেল না।জান্নাত একদম মন মরা হয়ে গেছে। কারণ তার বেস্ট ফ্রেন্ড কে পাচ্ছে না।কোথায় কথা ছিল আজ রিনি কে খুঁজে বের করবে সবাই মিলে।সেই জায়গায় আরেক জন নিখুজ হয়ে গেছে। রাতে সবাই চিন্তা করছে।সারাদিন খুঁজে ও পেল না সুমিকে।পুলিশ কে ও জানিয়েছে।পর মুহূর্তে,

=>মেম মেম কই আপনি??? আপনার রুম রেডি।সরি একটু বেশি দেরি করে ছি।তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন।কাল যে বিয়ে। অনেক ধকল যাবে কাল আপনার উপর। তাই রেস্ট নিয়ে নেন।

মহিলা রুমে প্রবেশ করে দেখে রিনি নেই। পাশে সেই বোতল টা খুলা অবস্থায় পড়ে আছে।

মহিলা সারা ঘর খুঁজে দেখে কিন্তু কোথাও রিনি নেই।

মহিলা বলেঃ কাল যদি বিয়ে টা না হয়?
রিনি কে না পাই রহমান তো আমাকে মেরে ফেলবে।তাছাড়া রিনি যে কেমনে পালিয়ে গেছে এই ঘর থেকে হুহ।প্রিন্স রহমান এর বউ পালিয়ে গেছে নানা জনননানা কথা বলবে।কি যে করি?????

মহিলা ভেবে কোন কোল কিনারা পাচ্ছে না। এমন সময়, মহিলার আরেক জিন বান্ধুবীর কথা মনে পড়ে। সে অসম্ভব সুন্দরী ও বুদ্ধিমতি।সেই পারবে এই অবস্থা থেকে বের করতে। মহিলা এক মুহূর্তে চলে গেল তার বান্ধুবীর বাড়িতে।রাত তখন অনেক গভীর । এমন সময়,
………

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে