মেঘের আড়ালে পর্ব-০৩

0
2870

#মেঘের আড়ালে💞
#পর্ব__০৩
#লেখিকাঃ ফাতেমা জোহরা নাভিলা

০৬.
“ওইইইইইই বেটা সাইকো ওইইইইইইইইইইইইইইইইইই উঠ”

উনি বেক্কল এর মতো চোখ খুললেই বসে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছেন এক হাত কানে আর বুকে এক হাত দিয়ে, উনাকে দেখে মনে হচ্ছে বড় সড় কোন এক ভূমিকম্প উনার উপর বয়ে গেছে তাই এভাবে কাঁপছে। উনাকে এইভাবে জ্বালাতন করতে পেরে মনে আহহহহ সেইইই শান্তি লাগছে। এভার বুঝো বেটা কতো ধানে কতো চাল। তোর জন্য কাল এই শীতের মধ্যে মাথা ঠান্ডা করার জন্য আমায় শাওয়ার নিতে হয়েছে তার জন্য এই ছোটখাটো প্রতিশোধ নিলাম হুহ, আমি আবার বড় মনের বালিকা তো তাই কেউর ঋণ রাখা বেশী দিন পছন্দ করিনা। (শয়তানি হাসি দিয়ে)

“উনি ঝট করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন আমার সামনে ধীরো পায়ে এসে কিছুহ্মন ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে রুহ্মুচোখে তাকিয়ে থেকেই”,,,,,,

“উনার চোখে রাগটা আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এইমূহুর্তে রাগে উনার কপালে রগ গুলো ফুলে উঠেছে” কোবরা মতো ফুসফুস করে ফুলছেন কতোটা যে ভয়ংকর লাগছে উনাকে দেখতে । আমি ভয়ে ঢোক গিলে জিভ দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে কাপা কাপা গলায় বললাম ভভভভভাইয়য়য়া আঅা,,,, আপনার ক ক,,কফিটা আর কিছু বলার বা শুনার সুযোগ না দিয়ে এক দৌড় লাগালাম আপাততো এই সাইকো ছোবলা থেকে বাঁচতে পারলেই আমার বাবার নাম।

সিঁড়ি থেকে নেমেই বুকে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছি আর একটুর জন্য বড় সড় বর্জ্যপাত হাত থেকে বেঁচে গেলাম হুহ।

“কিগো ভাবি এভাবে হাপানি রোগিদের মতো হাপাচ্ছো কেনো”। ভাইয়া বুঝি আদর বেশি দিয়ে ফেলেছে তোমাকে (মুখ টিপে হেসে)

আমি চোখ বড় করে তাকিয়ে আছি ইরার দিকে,,, কতো ফাজিল মাইয়া দেখসো কি কয় এইসব। ইরার দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে নাগো ননদিনী আমাকে না আমি উল্টো তোমার ভাইজান কে পরম আদর দিয়ে এসেছি (লজ্জা পাওয়ার ভঙিতে মুখে হাত দিয়ে)

ইরা আমার দিকে অবিশ্বাস চাহনিতে তাকিয়ে আছে হা করে। তাতে আমার জামাইর কি, লও ঠ্যালা এভার হজম করো ননদিনী আমাকে পচাতে আসছিলা না (দুষ্টু হাসি দিয়ে)

দূর থেকে দীদা আর আপি ইরা থতমত অব্যস্থা দেখে মিটমিট করে হাসছে।।।

০৬.

টেবিলে সবায় এক এক করে এসে বসেছে দুপুরে লাঞ্চ করবে বলে।আমি বসতেই,,,,

ইফরানঃ কিগো শালিকা আমার ভাই কই!

নূরঃ আমি কি এখন উনাকে পকেটে করে নিয়ে ঘুরবো সবায় আমাকে কেনো জিজ্ঞাস করো মনে মনে। উনিতো রুমে জিজু।

ইশারাঃ রুমে থাকলে হবে,ডাক দিয়ে নিয়ে আয় একসাথে বসে সবায় লাঞ্চ করবো।

আসিফ আংকেলঃ ইয়াদ আমাদের সাথে লাঞ্চ করেনা। দীর্ঘ তিন বছর ধরে টেবিলে বসতে বসতে তাই ডেকেও লাভ নেই।

ইশারাঃ কেনো?

নূরঃ আরে আপি উনিতো আরামদায়ক প্রেমিক তাইতো দেখোনা রুম থেকে সহজে বের হয়না মহাশয়, ঠিক বলেছিনা আংকেল।

ইশারাঃ নূরর চোখ রাঙিয়ে এতোদিন করেনি আজ করবে যা ডাক দিয়ে নিয়ে আয় ভাইয়াকে।

নূরঃ আমি যাব।।।। আংকেল তো বললো,,, আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি এভাবে তাকাও কেন।। ভয় করে তো।

” রুমে এসে দেখি রুম পুরো ফাকা উনি কোথায় নেই, কোথায় গেলেন এই মহাশয় আবার বাহিরে ও তো যেতে দেখলাম না তাহলে।ব্যালকনি উক্কি দিয়ে দেখি উনি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি ধীরপায়ে ওনার দিকে একটু এগিয়ে গেলাম উনি এখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি একটু কেশে আমার উপস্থিতি জানান দিলাম তাতে কোন কাজ হলো না। উনি কোন রিয়েক্ট করলেন নাহ। আমি জানি যে উনি হক্কাল হক্কাল ঘুম থেকে উঠে চিরতা রসকস যুক্ত ব্লাক কফি খান ইয়াক!!! ভাবতেই গা কেমন জেনো বমি বমি লাগছে। এতো বাজে টেস্ট কিভাবে হয় মানুষের যাই হোক তাতে আমার কি। আচ্ছা উনাকে কি জিজ্ঞাস করবো।” আজ উনার কফিতে চিরতা কম হয়ে ছিলো কিনা”। সেই চিন্তায় হয়তো মহাশয় মোড অফ কিরে আছে আহহহ কি প্রেম চিরতার সাথে দেখেই আমার চোখে পানি এসে গেলো। না থাক জিজ্ঞাস করা লাগবো না পরে আবার রাম ধমক দিলে। এসব নানারকম কথা ভাবতে ভাবতেই রুমের ভেতরে আসার জন্য পা দিতেই,,,,,,,,,,,,, নূর (নরম শুরে)

“উনার এই নরম শুরে ডাকে আমি কেঁপে উঠলাম এতো সুন্দর করে কেউ ডাকেনি আমাকে এর আগে”। আমি ঘুরে উনার দিকে তাকিয়ে আছি কৌতূহল নিয়ে, উনি এখনো সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। আচ্ছা উনি এই নরম শুরে ডেকে বাশ দিবেন না তো আমাকে সকাল এর জন্য?

“I’m sorry”

আমি অবাক এর শেষ চৌড়ায় পৌছিয়ে গেলাম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি উনার দিকে, আমি কি কানে ভুল শুনলাম উনি কি আদৌ আমাকে sorry বলেছেন।এভার উনি ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে বললেন।

I’m sorry তোমার সাথে আমার কাল ওইভাবে কথা বলা উচিত হয়নি। কি করবো বলো বাবার উপর রেগে ছিলাম, আমি ভেবে ছিলাম হয়তো তুমি এই বিয়েতে না করে দিবে। কিন্তু যখন দেখলাম তুমি এই বিয়েতে না করলে না তখন তোমার উপর এক চাপা রাগ হয়।সেই রাগে ক্ষোভ আমি তোমার দিকটা না বুঝেই তোমার সাথে misbehave করি। তুমি যদি কাল আমাকে ওই ভাবে কথা গুলো না বলতে হয়তো আমি তোমার দিকটা কখনো বুঝার চেষ্টা করতাম না।

আমি উনার দিকে হ্যা করে তাকিয়ে আছি কেন জানি কথা গুলো হজম করতে কষ্ট হচ্ছে,মন বলছে বেটা সাইকো যাই হোক অতো ও খারাপ না। আমি উনার দিকে কিছুক্ষন অবিশ্বাস চাহনিতে তাকিয়ে থেকে বললাম ইট’স ওকে, আপনি আপনার ভুল বুঝতে পেরেছেন এতেই আমি খুশি। আংকেল আপনাকে ডাকছেন নিচে খেতে এই বলেই আমি নিচে চলে আসলাম।

ইশারাঃ কিরে ভাইয়া কোথায়।

নূরঃ আমি উনাকে বলছি, হয়তো আসছে।

আসিফ আংকেলঃ আসবে না তোমরা শুরু করো, দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে।।।

০৭.
ওইতো আমার দাদুভাই চলে এসেছে, কি গো দাদুভাই মুখের এমন হাবভাব করে রেখেছে কেন? আদর বুঝি কম হয়েছে নাকি(উনাকে খোঁচা দিয়ে)

দীদা কথায় আমার কাশ উঠে গেলো আল্লাহ আমি কার সামনে কি বলেছিলাম। আপু আমার দিকে পানি এগিয়ে দিয়ে চোখ টিপ দিয়ে মুচকি হাসছেন।ইশশশশশশ কি লজ্জা কি লজ্জজা মরি যাই মরি যাই। দীদা ও না কি দরকার ছিলো এভাবে সবার সামনে লজ্জায় ফেলার, আমার ইজ্জত ফালুদা করে দিলো। আর এই সাইকো বেটাকেও বলি এতোদিন রুমে বসে খেতেন আজ উনাকে এতো কষ্ট করে নিচে আসতে বললেন কে তার জন্য আমাকে অকারনে এই লজ্জা পরতে হলো। আমি এভার আড়চোখে উনার হাবভাব দেখার জন্য উনার দিকে তাকালাম,,,,,দীদার কথায় উনার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই উনি চুপ চাপ নিচের দিকে তাকিয়ে খাচ্ছেন তো খাচ্ছেন। আমার হাতে মামনি হাত দেওয়াতে আমি তার দিকে তাকালাম তার মুখে এক বিশ্বজয় করার হাসি,,,,,,,
চলবে………

[ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন। আসা করি]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে