ভালোবাসি বলেই তো পর্ব-১+২

0
1998

#ভালোবাসি_বলেই_তো ♥️
লেখিকা #আদ্রিয়া_রাওনাফ
পর্ব – ১

আজ মেডিক্যালের “নবীন বরন” অনুষ্ঠান । প্রতি বছরের মতো এবারো সকল অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিজ ঘাড়ে নিয়েছে মেডিক্যালের ভিপি । তবে তার ইচ্ছা অনুযায়ী এবারের অনুষ্ঠান গুলো কিছুটা ব্যতিক্রম ভাবে উদযাপিত করা হবে । তবে সব আয়োজন সে , তার বন্ধু এবং অন্যান্য সহযোগীদের সাথে নিয়ে করবে ।

অন্যান্য বছর গুলো ক্যাম্পাস ৩ দিন আগের থেকে সাজালেও , এবছর ৭ দিন আগের থেকে সাজ-সজ্জার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ।

এ বছর ক্যাম্পাসে প্যান্ডেল করা হয় নি । সরাসরি প্রকৃতির সাথে সংযোগ রেখে স্টেজটা করা হয়েছে ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে । আর ছায়াঘেরা জায়গাটাতেই রাখা হয়েছে কয়েক হাজার চেয়ার । সব গাছগুলোর কান্ডকে রঙ্গিন জরি কাগজের সাহায্যে ডিজাইন করে পেচিয়ে লাগানো হয়েছে । আর উপরের দিকটাতে অসংখ্য রঙ্গিন কাগজ আর ফিতার মেলা । কিছু কিছু জায়গা ফুল দিয়েও সাজানো হয়েছে ।

অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা ইনভাইটেশন কার্ডে সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ১২ টায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে ।
………………………………………………
সকাল ১১ টা ,

নীল শাড়ি গায়ে জড়িয়ে বিছানার উপর পা তুলে গাল ফুলিয়ে বসে আছে পূর্নতা ।
এর কারন হচ্ছে , তার একমাত্র বান্ধবী তাকে এসে রেডি করিয়ে দিবে বলেছে । ১২ টায় অনুষ্ঠান , আর তার এখনো আসার কোনো নাম গন্ধ নেই । পূর্ণতা মনে মনে বিরক্ত হয়ে বলছে ,

– সেই কখন আম্মু শাড়ি পড়িয়ে দিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল । আর প্রেনার এখনো আসার কোনো নাম গন্ধ নেই । তারপর শেষে তাড়াহুড়ো করে বের হতে হবে । ধূর , ভাল্লাগেনা ।

এই বলে পূর্ণতা বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতেই কলিং বেলের শব্দ শোনা গেল । পূর্ণতার বুঝতে বাকি র‌ইল না , প্রেনা এসেছে । ও নিজের রুমের দরজাটা খুলে দিয়ে আবার গাল ফুলিয়ে বিছানায় আবার এক‌ই ভাবে বসে র‌ইল ।

কলিং বেল বাজতে শুনে মিলি রহমান রান্নাঘর থেকে বের হয়ে গিয়ে দরজা টা খুলে দেখলেন নীল শাড়ি পড়ে সেজেগুজে প্রেনা দাঁড়িয়ে আছে । মিলি রহমান বললেন,

– এতক্ষন পর তোর সময় হলো আসার ?? গিয়ে দেখ পূর্ণ গাল ফুলিয়ে আছে ।

প্রেনা হেসে বলল ,
– তুমি চিন্তা করো না আন্টি । আমি ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করছি ।

এই বলে প্রেনা এগিয়ে গেল পূর্ণতার রুমের দিকে । ওর রুমের দরজাটা খোলা পেয়ে প্রেনা ভিতরে প্রবেশ করে দেখলো পূর্ণতা উল্টো দিকে মুখ করে বিছানায় বসে আছে । প্রেনা বলল ,

– কিরে !! এভাবেই বসে থাকবি নাকি রেডি হবি ??

পূর্ণতা উঠে দাঁড়িয়ে বলল ,
– এতক্ষন পর আসতে মন চাইলো ?? নিজে তো একেবারে সেজেগুজে রেডি হয়ে চলে এসেছেন । এখন আমাকে কে রেডি করিয়ে দেবে ??

– কেন ? আমি‌ই দিব । আয় চুলে খোপা করে এই বেলী ফুলের মালা পেচিয়ে দিই ।

– সত্যি ? তুই এনেছিস মালা ??( চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো)

– হ্যা , এনেছি তো । এটা কিনতে গিয়েই তো একটু লেইট হয়ে গেল ।

পূর্ণতা খুশি হয়ে দৌড়ে এসে প্রেনা কে জড়িয়ে ধরে গলে চুমু খেল । প্রেনা হেসে বলল ,

– হয়েছে , হয়েছে । এখন বস । নাহলে দেড়ি হয়ে যাবে ।

……………………………………………….

ম‌ই বেয়ে ফাহিম গেইটের উপরে উঠেছে মেইন গেইটটা সাজাবে বলে । নিচে আয়মান দাড়িয়ে আছে দুই ঝুড়ি ফুলের মালা নিয়ে । ওর ই পাশে তাসিন দাড়িয়ে আছে এক ডালা ভর্তি গাদা ফুলের পাপড়ি হাতে নিয়ে ।

প্ল‍্যান মোতাবেক ফাহিম আয়মানের কাছ থেকে ফুলের মালা গুলো চেয়ে চেয়ে গেইট ডেকোরেশন করছে । অবশেষে ডালা ভর্তি ফুলের পাপড়ি গুলো নিয়ে এমন ভাবে সেট করলো যেন দড়ি ধরে টান দিলেই ডালা কাত হয়ে উপর থেকে ফুলের বৃষ্টি ঝরে । এটা শুধুমাত্র প্রধান অতিথিকে বরণ করার জন্য‌ই ।

ফাহিম সবকিছু সেট করে নিচে নামতেই উপর থেকে ঠাস করে সব ফুলের পাপড়ি নিচে পড়ে গেল । আয়মান বলল,

– আয় হায় !! ফাহিম !! কি করলি তুই ??

তাসিন বলল ,
– আজকে কপালে শনি আছে যদিও আজকে মঙ্গলবার !! আবরন যদি দেখে অতিথি আসার ৩০ মিনিট পূর্বে তুই এই কাজ করেছিস , তোকে আস্ত চিবিয়ে খাবে ।

ফাহিম কাদো কাদো ফেস করে বলল ,

– ভাই হেল্প কর প্লিজ । কিভাবে যে পড়ে গেল বুঝতে পারছি না ।

– আকাম করলি তুই !! আমরা কেন হেল্প করবো ?? ( আয়মান )

– আরে , দৌড় দে । আবার ফুলের পাপড়ি নিয়ে আয় । আমি আর তাসিন ততক্ষনে এই জায়গাটা পরিষ্কার করে ফেলি । নাহলে আবরন এসে দেখলে আজকে কপালে সত্যিই শনি আছে ।
জলদি যা ।

– ধূর !! যাচ্ছি আমি । জলদি পরিষ্কার কর । আবরন এসে দেখলে তোকে এই ময়লা ফুলের পাপড়ি ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খাওয়াবে ।
এই বলতে বলতে আয়মান চলে গেল ফুলের পাপড়ি আনতে ।

ফাহিম আর তাসিন মিলে পরিষ্কার শুরু করলো ।
……………………………………………..

প্রেনা পূর্ণতাকে সাজিয়ে দিয়ে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে বলল ,

– তোকে একদম নীল পরি লাগছে রে !! কারো নজর যেন না লাগে তোর উপর ।
এই বলে নিজের চোখের থেকে কাজল নিয়ে পূর্ণতার কানের পেছনে লাগিয়ে দিল ।

পূর্ণতা আয়নায় তাকিয়ে দেখলো নীল শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে হাতে নীল চুড়ি , কানে সোনালি কানের দুল , গলায় একটা চিকন চেইন পড়িয়েছে প্রেনা । আর সাজ বলতে মুখে একটু ফেইস পাউডার , চোখে কাজল , ঠোঁটে হালকা ন‍্যুড লিপস্টিক দিয়েছে । ব্যস , রেডি ।
পূর্ণতা হ্যান্ড ব্যাগ টা হাতে নিয়ে রুম থেকে প্রেনা কে নিয়ে বের হয়ে গেল ।

– আম্মু , আসছি ।

মিলি রহমান বললেন ,
– অনুষ্ঠান শেষ হলে জিব্রানকে কল করিস । ও তোকে নিয়ে আসবে ।

– ভাইয়া না কক্সবাজার গিয়েছে বন্ধুদের সাথে ?

– কাল রাতে এসেছে । ওর বন্ধুর বাসায় উঠেছে । বাসায় ফেরার পথে তোকে নিয়ে আসবে ।

– আচ্ছা , ঠিক আছে । তুমি চিন্তা করো না । আসছি । আল্লাহ হাফেজ ।

– আল্লাহ হাফেজ আন্টি । ( প্রেনা )

– আল্লাহ হাফেজ । আর শোন প্রেনা , একসাথে থাকবি দুজনে । আলাদা হবি না । মনে যেন থাকে ।

– ওকে , আন্টি । ডোন্ট ওয়ারি ।

প্রেনা আর পূর্ণতা বেরিয়ে পড়লো । রাস্তায় এসে প্রেনা রিকশা ডাক দিল ,

– এই মামা , যাবেন ??

পূর্ণতা চোখ গোল গোল করে বলল ,
– প্রেনা , ওয়েট ওয়েট ওয়েট !!

প্রেনা পেছনে তাকিয়ে বলল ,
-আবার কি ??

– তোর স্কুটি কোথায় ?? আমরা রিকশায় যাবো নাকি !!

– আমারে কি পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে যে আমি শাড়ি পড়ে যাবো স্কুটি চালাতে !! এখন কথা না বাড়িয়ে রিকশায় উঠ । উপস্থিত থাকতে বলেছে ১২ টায় । আর আমরা এখানেই ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছি ।

পূর্ণতা রিকশায় উঠে বসে বলল,
– ওও , আসলেই তো । আমাদের নবীনদের তো আজ নীল রং পরিধান করে যেতে বলা হয়েছে । মেয়েরা নীল শাড়ি , আর ছেলেরা নীল পাঞ্জাবি । আজ তার মানে সব মেয়েরা হিমুর রূপা হয়ে যাবে । তাই না ??

প্রেনা বলল ,
– হিমুই যেখানে নেই অনুষ্ঠানে , রূপা হয়ে কি লাভ !!

– ধুর ! তুই ও না …………..

……………………………………………..

ফাহিম ম‌ই থেকে নেমে দাড়াতেই পেছন থেকে কারো গলা শোনা গেল ,

– তোদের এখনো হয় নি ?? একটা গেইট সাজাতে এতো সময় নিচ্ছিস ?? অতিথিরা তো ওন দ্য ওয়ে ।

ফাহিম , আয়মান , তাসিন পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখলো আবরন নাক ফুলিয়ে রাগি রাগি ফেস করে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে ।
ফাহিম একটা ঢোক গিলে মনে মনে ভাবছে , ” যাক , মাত্র‌ই কাজ শেষ করলাম । একদম পারফেক্ট টাইমিং । ”

তারপর জবাব দিল ,

– ইয়ে মানে !! কাজ তো শেষ । এই যে আমার হাতে দড়ি দেখছিস , এটা ছেড়ে দিলেই ডালা ভর্তি ফুলের পাপড়ি কাত হয়ে বৃষ্টির মতো ঝড়বে ।

– সব ঠিক ঠাক করেছিস তো ?? কোনো কিছুতে যেন ভুল না হয় । নাহলে অনুষ্ঠান শেষে খবর করে দিব । ( আবরন )

আয়মান তাসিনকে উদ্দেশ্য করে বলল ,
– দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছিস কি ?? যা , ম‌ইটা জায়গা মতো রেখে আয় ।

তাসিন ম‌ই হাত দিয়ে ধরে বলল ,
– যাচ্ছি , যাচ্ছি ।

আবরন বলল ,
– অতিথিরা কিছুক্ষনের ভেতরেই চলে আসবে । তাই আমি এখানেই দাড়াচ্ছি । তোদের কোনো কাজ থাকলে জলদি সেড়ে আয় ।

আয়মান বলল ,
– আমি বরং স্টেজের দিকটায় গিয়ে দেখে আসি ।

ফাহিম বলল ,
– আমি এখানেই দাড়াই , আমাকে দড়ি ধরে থাকতে হবে ।

– ঠিক আছে , দাড়িয়ে থাক । অতিথি প্রবেশ পথে আসতেই দড়ি ছেড়ে দিস ।
( আবরন )

– আচ্ছা , চিন্তা করিস না । ( ফাহিম )

…………………………………………….
আয়মানকে স্টেজের সামনে দেখেই জল দৌড়ে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে হাপাতে হাপাতে জিজ্ঞেস করলো ,

– আয়মু , আমার আবরন বেবি কে দেখেছো ??

আয়মান জলকে দেখে মনে মনে ভাবছে ,
-” লে , চিপকুগাম এসে পড়েছে । এখন তো আবরনকে পেলেই চিপকে থাকবে । ”

আয়মানকে চুপ করে থাকতে দেখে জল বলল ,
– কি হলো ! চুপ করে আছো কেন ? আবরন কোথায় ??

আয়মান রেগে বলল ,
– আমি কি দেখেছি নাকি ?? দেখলে তো বলেই দিতাম । আর আবরন স্বর্গে গিয়েছে । তুমি গিয়ে তোমার কাজ করো ।
এই বলে আয়মান সেখান থেকে কেটে পড়লো ।

জল দাড়িয়ে দাড়িয়ে বলতে শুরু করলো ,
– আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস ও পেলো কোথায় ?? দাড়াও , আবরন বেবির সাথে দেখা হলেই বিচার দিব । তখন বুঝবে , জলের সাথে মিসবিহেইভ করার মানে !!
এই বলে আবার আবরনকে খুঁজতে শুরু করলো ।

………………………………………………

পূর্ণতা এবং প্রেনা মেডিক্যালের মেইন গেইটের সামনে এসে রিকশা থেকে নেমেছে মাত্র । পূর্ণতা প্রেনাকে বলল ,

– রিকশা তুই ডেকেছিস ! ভাড়া ও তুই দিবি !
এই বলে দাঁত কেলিয়ে সে গেইটের দিকে হাঁটতে শুরু করলো ।

প্রেনা রিকশাওয়ালার ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ওর ৫-৬ হাত পেছনে হাঁটতে শুরু করে বলল ,
-পূর্ণ দাড়া , আমি আসছি ।

পূর্ণতা মেইন গেইটে পা রেখে প্রেনার ডাকে পিছনে ঘুরে তাকাতেই ………..

#চলবে ♥️

#ভালোবসি_বলেই_তো ♥️
লেখিকা – #আদ্রিয়া_রাওনাফ
পর্ব – ২

ফাহিম কাদো কাদো ফেস করে বলল ,

– উফফ , এই দড়ি ধরে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে হাতটা ব্যথা হয়ে গেল অথচ প্রধান অতিথির এখনো আসার কোনো খবর নেই !!

আবরন দাড়িয়ে মোবাইলে স্ক্রলিং করতে করতে বলল ,

– বলদের মতন দড়িটা ছোট না করে আরেকটু বড় করলেই তো কোনো এক জায়গায় বেধে রাখা যেত । এখন দাঁড়িয়ে থাক , কি আর করবি !! জিনিসটা কিভাবে সেট করবি সেটা তোর আগে থেকেই মাথায় ঢোকানো ………..

আবরন কথা বলে শেষ করতে না করতেই কোথা থেকে জল হঠাৎ এসে আবরনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতে যায় আর আবরন তাল সামলাতে না পেরে ছিটকে গিয়ে গেইট দিয়ে প্রবেশরত কাউকে নিয়ে উল্টে পড়ে …

পূর্ণতা প্রেনার ডাকে সাড়া দিতে পেছনে ঘুরে তাকাতেই হঠাৎ ওকে নিয়ে কেউ ধপাস করে নিচে পড়ে যায় ।

ঘটনা এত দ্রুত ঘটলো যে প্রেনা সেখানেই দাঁড়িয়ে গিয়ে জাষ্ট চিল্লিয়ে বলল ,
– পূর্ণওওওওওওওও !!

আবরন পড়ে যেতেই ওকে উঠাবে ভেবে ফাহিম দড়ি ছেড়ে এগিয়ে যেতে না যেতেই গেইটের উপরে ঝুলানো ডালা কাত হয়ে গাদা ফুলের পাপড়ি আবরন আর পূর্ণতার উপর বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়লো । পূর্ণতা হঠাৎ পড়ে গিয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ছিল , আবরনের‌ও এক‌ই অবস্থা !

জল এই ঘটনা দেখে ” ওহ মাই গড ” বলে নিজের সম্মান বাঁচাতে সেখান থেকে কেটে পড়ল ।

আবরন তাকিয়ে দেখলো ও একটা মেয়ের উপর পড়েছে ।
পূর্ণতার চোখ থেকে দুই ফোটা কাজল কালো পানি দ্রুত গতিতে নিচে পড়ে গেল । আবরন খেয়াল করতেই জলদি জলদি উঠে দাড়ালো ।

আবরন উঠে দাঁড়াতেই প্রেনা দৌড়ে এসে পূর্ণতা কে ধরে ওঠালো । এতক্ষন পূর্ণতা নিজ ইচ্ছাতে না কাদলেও এবার একেবারে ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিল ।

আবরন ওকে কি বলে বুঝাবে ভেবে না পেয়ে বলল ,

– দেখো , আমি ইচ্ছে করে কাজটা করি নি । কেউ আমাকে ধাক্কা দেওয়াতে আমি ব্যলেন্স সামলাতে না পেরে পড়ে যাই । তাকে তো আমি খুঁজে বের করে শাস্তি দিবোই কিন্তু তবুও বলছি I’m extremely sorry …

আবরন পূর্ণতা কে উদ্দেশ্য করে এইটুকু বলে থামল । তারপর প্রেনাকে উদ্দেশ্য করে বলল ,
– ওকে নিয়ে ওয়াশরুমে যাও । ক্লিন করে দাও যেখানে যেখানে ক্লিন করা দরকার ।

প্রেনা মাথা নেড়ে “হা” সূচক জানিয়ে পূর্ণতা কে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে গেল ।

প্রেনা পূর্ণতা কে নিয়ে চলে যেতেই আবরন ফাহিম আর তাসিনের দিকে তাকিয়ে দেখল ওরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে । আবরন বলল ,

– জলদি এসব ক্লিন কর আর কাউকে দিয়ে ফুলের পাপড়ি আনার ব্যবস্থা কর । আজ আর এভাবে বরন হবে না । হাত দিয়ে ফুল ছিটিয়েই বরন হবে । পাঁচ মিনিটে সব রেডি চাই ।

এই বলে আবরন‌ও ওয়াশরুমের দিকে গেল । ও পড়ে গিয়ে কিছু কিছু জায়গায় ব্যথা পেয়েছে আর ওর পরনের পাঞ্জাবীতেও মাটি লেগেছে ।

……………………………………………..

প্রেনা পূর্ণতার শাড়ি তে লেগে থাকা মাটি পরিষ্কার করছে আর পূর্ণতা কাদতে কাদতে বলছে ,

– আগে যদি জানতাম আমাকে এভাবে বরণ করা হবে , তাহলে বিশ্বাস কর , আমি আসতাম না ।

প্রেনা হেসে বলল ,
– ধুর বোকা !! তোকে তো আরো দুই বার বরন করা হলো । এই যে দেখ একবার মেইন গেইটে ফুলের বৃষ্টি দিয়ে বরন আরেকবার ফুল হাতে দিয়ে বরন হবে ।

পূর্ণতা হেচকি তুলতে তুলতে বলল ,
– খুব মজা লাগছে না তোর ??

প্রেনা বলল ,
– এভাবে বলিস না পাগলি !! তুই কি এখনো বাচ্চা যে এভাবে কাদছিস ?? সবাই কি ভাববে বল ?? দুদিন বাদে ডাক্তার হবি আর এখনো যদি নিজেই এইটুকু ব্যথা পেয়ে কাদিস তাহলে রোগীর সেবা কিভাবে করবি ??

পূর্ণতা আবারো হেচকি তুলতে তুলতে বলল ,

– আমি কি ব‍্যথা পেয়ে কাদছি নাকি ?? আমি তো কাদছি ভরা ক্যাম্পাসে আমার উপর একটা সিনিয়র ছেলে এভাবে পড়ে গেল !! আমার মান সম্মান সব ধুলোয় মিশে গিয়েছে !!

প্রেনা বলল ,
– যার যা ইচ্ছে ভাবুক । আর যে তোর উপর পড়েছে , তাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে ভার্সিটির সব মেয়েদের মন আকুপাকু করে । আর সেখানে সেই ড্যাশিং বয় তোর উপরে পড়েছে , সবার তো জেলাস হবে একথা জানলে ।

পূর্ণতা কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলল ,

– সে কোন রাজার রাজপুত্র যে তার জন্য সবাই এমন করে ? যার যা ইচ্ছে করুক , আই হ্যাভ নো ইনটারেষ্ট !

– লাইক সিরিয়াসলি ?? তুই চিনিস না ওটা কে ছিল !! আরে বুদ্ধু , ঐটাই তো ভার্সিটির ক্রাশ “দ্য গ্ৰেইট আবরন”

– সে যে ই হোক , বললাম তো আই হ্যাভ নো ইনটারেষ্ট !!

– আচ্ছা , হয়েছে ।
এই বলে পূর্ণতার চোখ নাক মুখ মুছে দিয়ে বলল ,
-চল , এখন । দেড়ি হচ্ছে ।

প্রেনা পূর্ণতা কে নিয়ে ওয়াশরুমের মেইন ডোর দিয়ে বের হতেই আবরনের সাথে আবার দেখা ।

আবরন পূর্ণতা আর প্রেনাকে দেখে ওদের দাড় করিয়ে পূর্ণতা কে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো ,
– কোথায় কোথায় লেগেছে? খুব বেশি চোট পেয়েছো ??

পূর্ণতা আবরনের প্রশ্ন শুনে জবাব দিতেই যাচ্ছিল যে ,

– আপনার মতো তাল গাছের সমান লম্বা সুঠাম দেহের এক ময়দার বস্তা আমার মতো মশার উপরে পড়ে গেলে ব্যথা না পেয়ে উপায় আছে ??

কিন্তু পূর্ণতার কথা গুলো ওর পেটেই চাপা পড়ে মারা গেল প্রেনার কথায় । প্রেনা বলল ,
– না না ভাইয়া । পূর্ণতা ঠিক আছে । সামান্য একটু হাত ছিলে গিয়েছে । তাই না বল ?? ( পূর্ণতা কে আঙ্গুল দিয়ে খোঁচা মেরে )

পূর্ণতা কিছুই বলছে না , চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে ।

আবরন বলল ,
– ঠিক আছে তোমরা গিয়ে স্টেজের সামনে গ্যালারিতে বসো । আমি আসছি । এক্ষুনি অনুষ্ঠান শুরু হবে ।

……………………………………………
দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিট ,

প্রেনা আর পূর্ণতা গ্যালারিতে প্রবেশ করতেই দেখলো স্টেজের সামনের দিকের জায়গাগুলোতেই নীল রং পরিহিতা সকলে বসেছে । প্রেনা আর পূর্ণতা ও একটা খালি জায়গায় গিয়ে বসে পড়ল একসাথে । হয়তো নবীনদের বরনীয় অনুষ্ঠান বলেই সামনে বসতে দেওয়া হয়েছে ।

এর‌ই মধ্যে ধ্বনি ভেসে আসতে লাগল ,
– ” প্রধান অতিথির আগমন , শুভেচ্ছার স্বাগতম । ”

সবাই পেছন থেকে ভেসে আসা ধ্বনির রহস্য উদঘাটন করতে ব্যস্ত আর এদিকে স্টেজে কেউ প্রবেশ করে মাইক হাতে বলল ,

– সবাই বলো , “প্রধান অতিথির আগমন , শুভেচ্ছার স্বাগতম ”

সবাই স্টেজের দিকে লক্ষ‍্য করতেই আর বুঝতে বাকি র‌ইল না স্টেজে কে দাঁড়িয়ে !!

আবরনের কথা মতো গ্যালারিতে উপস্থিত হাজার হাজার ব্যক্তি একসাথে এই ধ্বনি দিতে ব্যস্ত ।

এরপর আবরন হাত দিয়ে ইশারা করতেই সবাই থেমে গেল ।

আবরন উপস্থিত বক্তৃতা দিতে শুরু করলো ,
– বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
আসসালামু আলাইকুম । আশা করি , সকলে ভালো আছো ।
আজকের আমাদের এই অনুষ্ঠান ভার্সিটিতে আগত নতুন স্টুডেন্টস দের নিয়ে । তাদেরকে বরণ করে নিতেই আজকে আমাদের এত আয়োজন । প্রতিবছর ই নতুন আগত হ‌ওয়ার পাশাপাশি পুরাতন রাও বিদায় নেয় । তাই দিনটা যেমন সুখের তেমন ই কষ্টের ও । আমাদের এই অনুষ্ঠান টা কে আরো সুন্দর করতে এই মূহুর্তে স্টেজে প্রবেশ করছে আমাদের সম্মানিত প্রধান অতিথি জনাব হাসান মাহমুদ রাজা । সকলে জোরে কড়া তালি ।
এই বলে থেমে আবার বলতে শুরু করল ,

এরপর স্টেজে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আমাদের মেডিক্যাল কলেজের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো: টিটো মিঞা এবং সেই সাথে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আমাদের মেডিক্যাল এর সহকারী অধ্যাপক এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. খান আবুল কালাম আজাদ এবং আমাদের গাইনী বিভাগের অধ্যাপিকা ডা. নূর সাঈদা । আরো একবার জোরে কড়া তালি ।

এরপ‍র একে একে সবাই কে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ডাকা হলো । সকলের বক্তৃতা শেষে এলো আবরনের নিজ পরিচয় তুলে ধরার সময় ।

আবরন মাইক হাতে নিয়ে দাড়িয়ে ঠোঁটে বাকা হাসি দিতেই ভার্সিটিতে উপস্থিত সকলে চিল্লিয়ে উঠলো স্বজোরে ।
পূর্ণতা এতক্ষন আবরনকে ভালো করে খেয়াল‌ই করে নি । কিন্তু সকলের এতো আকর্ষ‌ণ ওকে টানছে চোখ তুলে আবরনকে দেখার জন্য । পূর্ণতা তাকিয়ে দেখলো ,
উচ্চতায় ৫’৯” , গায়ের রং গোলাপি ফর্সা অর্থাৎ দুধে আলতা মিশালে যে আকার ধারন করে ঠিক তেমন , গায়ে পরোনে সাদা পাঞ্জাবি তাতে সাদা সুঁতোর কাজ করা , আর রং বেরং এর সুঁতোর কাজের কাশ্মীরি শাল পেঁচিয়ে এক হাতে মাইক নিয়ে ঠোঁটে বাকা হাসি হেসে বক্তব্য দিচ্ছে , হালকা মিষ্টি বাতাসে সিল্কি চুল গুলো উড়ছে আর কৃষ্ণচূড়া গাছ থেকে ফুল ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে । খুবই রোমাঞ্চকর একটা পরিবেশে আবরনের কথা শুনতে ব্যস্ত সকলে ,

– আসসালামু আকাইকুম । আমার নাম “শাহরিদ আহনাফ আবরন ” । এই মেডিক্যাল কলেজে বর্তমানে মেডিসিন বিষয়ে পড়ুয়া একজন ছাত্র । সেই সাথে এই ভার্সিটির নির্বাচিত ভিপি । আমি আমার এই জায়গায়টা নিজ যোগ্যতায় অর্জন করেছি । এই ভার্সিটিতে আমাকে চেনে না এমন কেউ নেই এবং এই এলাকায় আমি সবার পরিচিত । এই ভার্সিটিতে অধ্যায়নরত প্রতিটি অধ্যাপক অধ্যাপিকা আমাকে যেমন ভালোবাসে তেমনি আমাকে বিশ্বাস‌ও করে । এই ভার্সিটির সব কিছুর দেখভাল আমি‌ই করি । যারা পুরাতন তারা আমাকে চিনে খুব ভালো করেই । তবে তোমরা যারা নতুন তাদের বলছি সর্বপ্রথম এখানে মিথ্যা বলা , সিনিয়রদের সাথে বেয়াদবি করা , ছেলেদের মেয়েদের সাথে খারাপ আচরন এবং মেয়েদের ছেলেদের সাথে দুর্ব্যবহার এসব কিছুই এখানে চলবে না । সিনিয়রদের যেমন জুনিয়ররা সম্মান করবে ঠিক তেমনি জুনিয়রদেরকেও সিনিয়রদের ভালোবাসতে হবে । এছাড়া কারো যদি কোনো প্রবলেম হয় বা কারো দ্বারা কোনোভাবে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হ‌ও , ৩০৫ নাম্বার কক্ষটা আমার , সেখানে গিয়ে কমপ্লেইন জানাবে , আমি নিজে ব‍্যবস্থা নেব । মনে কোনো ভয় বা সংকোচ না রেখে সরাসরি আমাকে জানাবে ।
আমি যেমন ভালোতে খুব ভালো হতে পারি , ঠিক তেমনি খারাপে কিন্তু অনেক খারাপ ও হতে পারি । আশা করি , এতক্ষনে সকলে বুঝে গিয়েছো আমি কেমন ??

সবাই স্বজোরে তালি বাজালো । পূর্ণতা মনে মনে ভাবছে ,
– মুখে মুখে সবাই এসব বলতে পারে , দেখা যাবে কাজের বেলায় কতদূর !! সুন্দর বলে জাতির ক্রাশ আপনি কিন্তু কতদূর সমাধান দেন সমস্যার তা ই দেখবো !!

এসব ভেবেই চোখ তুলে স্টেজের দিকে তাকাতেই দেখল আবরন ওর দিকেই দেখছে । দুজনের চোখে চোখ পড়াতেই ইতস্তত বোধ করে দুজনেই দৃষ্টি সরিয়ে নিল ।

……………………………………………

অবশেষে সিনিয়ররা নবীনদের ফুল হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করলো । আয়মান প্রেনাকে ফুল দিয়ে পূর্ণতার হাতে একটা রজনী গন্ধার স্টিক আর সাথে একটা মলমের টিউব দিল ।
তা দেখে পূর্ণতা ভ্রু কুচকে বলল ,
– এটা কি দিলেন ভাইয়া ??
আয়মান বলল ,
– তুমি নাকি পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছো । তাই আবরন তোমাকে ক্ষত জায়গায় এটা লাগাতে বলেছে ।
এই বলে অন্যদের ফুল দিতে ব্যস্ত হয়ে গেল আয়মান ।

প্রেনা দাঁত কেলিয়ে পূর্ণতা কে বলল ,
– আরেব্বাস !!! ভাইয়া তো দেখছি তোর কেয়ার নিতেও শুরু করেছে ।

প্রেনার কথা পূর্ণতার কান অবধি পৌছালো না , কারন আয়মানের কথা শুনেই পূর্ণতা স্টেজের দিকে , আশে পাশে তাকিয়ে আবরনকে খুঁজছে । হঠাৎ‌ই লক্ষ‍্য করলো স্টেজের এক পাশে দাঁড়িয়ে আবরন একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে । এক পলক দেখেই পূর্ণতা দৃষ্টি সরিয়ে নিল ।
প্রেনা বলল ,
– কিরে ?? কোথায় হারিয়ে গেলি ?? আয় মলমটা লাগিয়ে দিই ।
এই বলে পূর্ণতার হাত থেকে মলমটা নিয়ে ওর হাতের পেছনের ক্ষত জায়গাটাতে মালিশ করে দিতে লাগল ।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
(এট দ্য সেইম টাইম )

আবরন স্টেজ থেকে নেমে দাড়াতেই জল দৌড়ে গিয়ে ওর সামনে দাড়ালো । তারপর ন্যাকা কান্না শুরু করে বলল ,

– আই এম রিয়েলি ভেরি সরি বেইব । আমি তখন তোমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছিলাম , কিন্তু তুমি‌ই তো দূরে সরতে গিয়ে ছিটকে পড়ে গেলে !! খুব লেগেছে তাই না ??

আবরন রেগে বলল ,
– দেখো জল , আমার এসব ন্যাকামো পছন্দ না । তুমি সব সময় আমার পেছনে এভাবে কেন লেগে থাকো !! জাষ্ট ফুপির মেয়ে বলে তোমাকে কিছু বলি না , অন্য কেউ এমন বেয়াদবি করলে এতদিনে খবর করে দিতাম । আর শোনো যখন তখন আমাকে জড়িয়ে ধরবে না । সেই যোগ্যতা এবং অধিকার দুটোর একটাও তোমার নেই ।

– কেন , বেইব !! এভাবে কেন বলছো !! আমি তো তোমাকে ভালোবাসি । আমার তো তোমার কাছাকাছি থাকার অধিকার আছে ।

– কিন্তু আমি তো ভালোবাসি না । তাই যথা সম্ভব দূরে থাকবে । আজ তোমার কারনে ঐ মেয়েটা তখন কতটা চোট পেল । আজ প্রথমদিন এলো , ওদের জন্যেই এত আয়োজন । আর ওর দিনের শুরু টা এভাবে নষ্ট হয়ে গেল তোমার জন্য । তুমি আমার সাথে ভদ্রভাবে আচরন করো , নাহলে আমি ফুপিকে জানাতে বাধ্য হবো । সো , ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট !!

এই বলে আবরন চলে গেল ।

জল সেখানেই দাঁড়িয়ে রাগে ফুসতে ফুসতে ভাবতে লাগল ,
– কোথাকার না কোথাকার একটা মেয়ের জন্য আবরন আমাকে এত্ত গুলো কথা শুনালো । ঐ মেয়েকে হাতের নাগালে একবার পাই তারপর বুঝাবো জল কি কি ক‍রতে পারে !!

এই ভেবে সেখান থেকে চলে গেল জল ।

………………………………………………

অনুষ্ঠান শেষ হলো দুপুর ৩ টায় । লাঞ্চ আওয়ার বলে সবাইকে ১ প্যাকেট করে খাবার দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠান শেষে ।

প্রেনা আর পূর্ণতা ক্যাম্পাসের এক সাইডে এসে দাঁড়িয়েছে । পূর্ণতা ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে জিব্রানকে কল করতেই যাচ্ছিল , তখন হঠাৎ কোথা থেকে জল এসে ওর ফোনটা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে নিল চিলের মতো থাবা মেরে ।
পূর্ণতা হকচকিয়ে গিয়ে সামনে থাকা আপুকে বলল ,
– আপু , কোনো সমস্যা ?

জল মোবাইল টা হাতে নিয়ে ছুড়ে ছুড়ে ক্যাচ ক্যাচ খেলতে খেলতে বলল ,

– আবার সমস্যা নেই বলছো কি ?? অনেক সমস্যা !! তোমার রূপ দেখিয়ে তো সিনিয়র ভাইদের ভালোই পটানো শিখে গিয়েছো দেখছি ।

পূর্ণতা বলল ,
– এক্সকিউজ মি আপু !! আপনার হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে । আমি তো আপনাকে চিনি না ।

জল বলল ,
– তো এখন চিনে নাও । আমি আবরনের হবু ফিওন্সে । তোমাকে যেন আবরনের আশেপাশে কখনো না দেখি । তাহলে আমার হাত কতদূর তা হারে হারে বোঝাবো !!

পূর্ণতা আর নিজেকে সামলাতে পারলো না । কষ্টে চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো ।

প্রেনা কিছুটা রেগে বলল ,
– ও তো ভাইয়াকে কিছু বলে নি বা ভাইয়ার আশেপাশে ও ঘোরে নি । তাহলে কি সমস্যা আপনার ?? মোবাইলটা দিন বলছি !!

– আমার সাথে মুখে মুখে তর্ক করছো ?? সাহস তো কম না । একজনের রূপ আর আরেকজনের দেখছি মুখ চলে । মোবাইল পাবে না । যা বলেছি , কথাটা যেন মাথায় থাকে ।

এই বলে ফোনটা নিয়েই চলে গেল জল ।

পূর্ণতা কে এভাবে কাদতে দেখে প্রেনার মাথায় রক্ত উঠে গেল ।
ও পূর্ণতা কে ধরে টানতে টানতে গেল ৩০৫ নাম্বার কক্ষের দিকে …………

#চলবে ♥️

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে