ভালোবাসার_রং পর্ব-১৯

0
2565

#ভালোবাসার_রং (❣️You are my Lifeline ❣️)

#Part_19

#Ishita_Rahman_Sanjida_(Simran)

দেড় মাস পার হয়ে গেছে,,,,,,,,,,,

এই দেড় মাস আনহা কিভাবে যে থেকেছে ও নিজেই জানে,,,,,, সেদিন রাগের মাথায় চলে এসেছিল ঠিকই কিন্তু,,,,আকিবকে ছাড়া ওর দিনগুলো যেভাবে কাটিয়েছে তার থেকে ওর মরে যাওয়া অনেক ভালো ছিল,,,,
রাগের মাথায় ফোনটাও ভেঙে ফেলছে যাতে আকিব ওকে কল করতে না পারে,,,, কিন্তু এখন আনহা হাঁপিয়ে গেছে আর থাকতে পারছে না,,,,, রাতে প্রতিদিন দুটো করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমায়,,,,, কিন্তু দিনের বেলা যে কিভাবে কাটায়,,,,,দিনটা ওর যেতেই চায় না নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে চায় কাজের মধ্যে কিন্তু প্রতিটা কাজের মধ্যেই আকিবকে খুঁজে পায়,,,,,,এখন আনহার মনে হচ্ছে ও কোন ভুল করছে না তো,,,,,আকিবের কথাগুলো আনহার মনে পড়ছে আকিব বলেছিল রাগের মাথায় কোন সিদ্ধান্ত না নিতে তাহলে কি আনহা ভুল সিদ্ধান্ত নিল,,,,আনহা চুপচাপ রুমে বসে আছে আর ভাবছে,,,,,,
এমন সময় তামিম আসল,,,,, এতদিন তামিম একটা কাজের জন্য শহরের বাইরে ছিল,,,,
আজই আসল,,,, আর ওর মায়ের থেকে সব শুনেছে,,,,, সেদিন আনহা তামিম কে কিছু বলতে দেয়নি,,,,কারণ বললে তামিম সাথে সাথে চলে আসত আর ওর কাজের ক্ষতি হতো,,,,, তামিম এসেই আনহার কাঁধে হাত রাখে,,,,,আনহা পিছনে ঘুরে তাকালো,,,,,

আনহা: ভাইয়া,,,,(জোর পূর্বক হাসি দিয়ে) কখন এসেছো,,,,,
তামিম: এই মাত্র এলাম,,,, আর আমি এসব কি শুনছি তুই চলে এসেছিস আর আকিব,,,,

আনহা: তুমি ঠিকই শুনেছ,,,,,
তামিম: কিন্তু আমার বিশ্বাস হচ্ছে না আকিব এটা করতে পারে,,,,
আনহা: বিশ্বাস না হলেও এটাই সত্যি,,,,
তামিম: তারপরও,,,, তুই সব সত্যতা যাচাই না করে চলে এলি এটা ঠিক করিসনি,,,,,,

আনহা ওর ভাইয়ের কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়,,,,,,
আনহা: তুমি আকিবের এতো সাপোর্ট নিচ্ছো কেন বলতো,,,,
তামিম: কারণ আমি খুব ভালো করেই জানি তোর সাথে আকিবের বিয়েটা কিভাবে হয়েছিল,,,,, সেদিন আকিব বিয়েটা করতে কিছুতেই বিয়েটা করতে চাইছিল না,,,,,, তাই ও ঘন্টাখানেক গাড়ি নিয়ে রাকিবকে খুঁজেও ছিল কিন্তু পায়নি,,,,, তারপরও আকিব হাল ছাড়েনি অনেক চেষ্টা করেছিল বিয়েটা আটকাতে,,, তারপর শেষমেশ তোর শ্বশুরের জোড়াজুড়িতে রাজি হয়,,,এতে আমি আকিবের মধ্যে কোন নাটক দেখিনি,,,,,, আর তুই আমাকে সবকিছু না জানিয়ে খুব বড় ভুল করেছিস,,,,,

আনহা অশ্রু ভরা চোখে তামিমের কথাগুলো
শুনছিল,,,,,
তামিম: দেখ আমি খুব ভালো করেই জানি তুই আকিবকে ভালোবাসিস তাহলে ওকে ছাড়া থাকছিস কেন,,,, আর এটা ভাবলি না আকিব কিভাবে থাকবে,,,,,শোন আমি তোকে কাল আকিবের কাছে দিয়ে আসবো,,,, আর গন্ডগোল কিছু তো একটা আছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে,,,,,

আনহা কাদতে কাদতে ওর ভাইকে জড়িয়ে ধরে,,,,,ওর প্রতিটা চোখের পানি বুঝিয়ে দিচ্ছে আকিবকে ও কতটা ভালোবাসে,,,,,

তামিম আনহাকে রেখে বাইরে চলে আসে আর ভাবতে থাকে সত্যিটা কি হতে পারে,,,,,,

রাতের বেলা,,,,,,,,,

কলিং বেলের শব্দে আনহার মা গিয়ে দরজা খুলে,, মারিয়া এসেছে,,,,আনহার মায়ের সাথে কথা বলে আনহার রুমে যায়,,,এর আগে অনেক বার মারিয়া এসেছিল কিন্তু আনহা দেখা করেনি কিন্তু আজকে আনহাই ওকে ডেকে পাঠিয়েছে,,,, মারিয়া আনহার রুমে গিয়ে দেখে আনহা ব্যাগ গোছাচ্ছে,,,, ওকে একটু খুশী খুশী লাগছে,,,,,

মারিয়া: কি রে আনহা,,,, তুই নাকি আবার ফিরে যাচ্ছিস,,,,
আনহা: হুম,,,,,
মারিয়া: একথাটাই তো এতদিন তোকে বোঝাতে আসতাম কিন্তু তুই তো আমার সাথে দেখাই করতি না,,,,,দেখ আমি জানি তোরা দুজন দুজনকে ছাড়া থাকতে পারবি না তাই সবকিছু ভুলে গিয়ে সব ঠিকঠাক করে নে,,, আর সবচেয়ে বড় কথা কালকে তো নিউ ইয়ার,,,, বছরের প্রথম দিন নতুন করে লাইফটা শুরু করবি,,,, আর আকিবের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিস,,,,,

আনহা: আমি জানি না আকিব সত্যি নির্দোষ কি না,,,,, কিন্তু আমি ওকে ভালোবাসি এটাই সবচেয়ে বড় কথা,,,আমি ওকে ছাড়া আর থাকতে পারছি না,,,,,, আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে,,, আমি আর পারছি না,,,,
বলেই কেঁদে দিল,,,,, মারিয়া ওকে সামলাচ্ছে

মারিয়া: প্লিজ শান্ত হ দেখবি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে,,,,,
আনহা: আমি জানি না আকিব আমাকে মেনে নেবে কি না,,,,
মারিয়া: এসব কি বলছিস,,,,আকিব তোকে ঠিক মেনে নেবে,,,,ও তো তোকে ভালোবাসে
আর এসব বাদ দে এখন দশটা বাজে আর দুই ঘন্টা পরেই নিউ ইয়ার,,,, টিভিতে একটা অনুষ্ঠান হবে চল দেখি আজকে তোদের বাড়িতে থাকব,,,, মাকে বলেই এসছি,,,, আর কাদিস না চল,,,,,
আনহা: তুই যা আমি আসছি আর শোন তোর ফোনটা একটু দিয়ে যা,,,,
মারিয়া: নিজের ফোনটা তো গুঁড়া গুঁড়া করে ফেলেছিস,,,,, এখন আমার ফোন নিয়ে টানাটানি করছিস,,,,আকিবকে কল করবি

আনহা মাথা নাড়ল,,, মারিয়া হেসে ফোনটা দিল,,,,তারপর চলে গেল,,,,,আনহা কাঁপা কাঁপা হাতে আকিবের নাম্বারে কল করল কিন্তু ফোন সুইচ অফ বলছে,,,,,অনেকবার ফোন করে কিন্তু ফোন অফ পেল,,,আনহ রাগে বসে বসে আকিবকে গালি দিচ্ছে,,,,,এমন সময় মারিয়া আনহাকে চিৎকার দিয়ে ডাকতে লাগল আনহা দৌড়ে বসার রুমে যায়,,,, মারিয়া সোফায় বসে টিভির দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,,,,আনহা টিভির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়,,,,,

টিভিতে লাইভ এ নিউ ইয়ারের পার্টি দেখাচ্ছে
একটা পার্কে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড রা একসাথে মজা করছে,,,,,, আর একজন রিপোর্টার ক্যামেরা নিয়ে ঘুরছে আর একেকজন কে প্রশ্ন করছে,,,,নিউ ইয়ার সম্পর্কে,,,,,মাঠের এক কোনায় একটা ছেলে বসে আছে,,,,তাই দেখে
রিপোর্টার তার কাছে যায় ছেলেটাকে দেখেই মারিয়া আনহাকে ডাকে আনহা এসেই অবাক হয়ে যায়,,,,,,, কারণ ছেলেটা আর কেউ না আকিব,,,,,,
আনহা: আকিব,,,,, কিন্তু ও ওখানে কি করছে

মারিয়া:চুপ থাক দেখ কি হয়,,,,,

রিপোর্টার আকিবকে জিজ্ঞেস করল,,,,,

__ হে ব্রো,,,, সবাই ওখানে আনন্দ করছে আর তুমি এখানে কি করছো,,,, তোমার কেউ নেই,,,,,
আকিব: আছে,,,,,
__ তাহলে কোথায়,,,,
আকিব: সবাই বাড়িতে,,,,,
__আমি সেটা বলিনি,,,,সবাই তো যার যার লাইফ পার্টনার এর সাথে এনজয় করছে তুমি এখানে একা বসে আছো,,,,,মন খারাপ,,,,
আকিব: নো,,,,,
__ আমার কিন্তু তা মনে হচ্ছে না,,,, ভালোবাসার মানুষটির সাথে মান অভিমান হয়েছে,,,,,
আকিব: না,,,,,,
__ হোয়াট ব্রো বলতে পারো তোমার মনের কথা,,,,লাইভে দেখানো হচ্ছে তোমার মনের মানুষ যদি দেখে থাকে তাহলে সে নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে তোমার কাছে ফিরে আসবে,,,,,,
আকিব: সে আর কখনো ফিরে আসবে না,,,,
না হলে এতদিনে ঠিকই ফিরে আসত,,,,, আমাকে ছাড়া থাকতে পারত না,,,,,

__ হয়তো সে একটু বেশি অভিমান করে ফেলেছে,,,,
আকিব: অভিমান না,,,,,সে আমাকে ঘৃণা করে,,,,,, আমাকে অবিশ্বাস করে,,,, তার কথা বাদ দেই,,,,, নিজের আপন মানুষই যখন পিছন থেকে ছুরি মারে,,,, সেই জায়গায় সে তো কিছুই না,,,,,,
__ তাকে তুমি কিছু বলতে চাও,,,,,
আকিব: শুধু এটুকুই বলতে চাই সে যেন ভাল থাকে,,,,, আমি কেমন আছি সেটা না হয় নাই জানল সে যেন ভাল থাকে,,,,কারণ তাকে যে খুব ভালোবাসি,,,,সে আমাকে ঘৃণা করলেও আমি তাকে ভালোবেসেই যাব,,,,

__ আর একটা কথা,,,,,
লোকটা কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আকিব চলে যায়,,,,,,

__ ভালোবাসা সত্যি অদ্ভুত কাউকে হাসায় আবার কাউকে কাদায়,,,,,,

আনহা আর মারিয়া থ হয়ে এতক্ষণ সব দেখছিল,,,,,আনহার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তেছে,,,,, এতক্ষণ ধরে ও আকিবকে দেখছিল,,,, কি হাল করেছে চেহারার নিশ্চয়ই এতদিন নিজের খেয়াল রাখেনি,,,,, মুখটা শুকিয়ে গেছে,,,,, বেহাল অবস্থা,,,,,,

মারিয়া: আনহা আকিব এটা কি বলে গেল,,,,,

আনহা: মারিয়া,,,, জায়গাটা তুই চিনিস
মারিয়া: হুম,,,,,
আনহা: আমাকে নিয়ে চল,,,,প্লিজ,,,, ওখানে গেলে আকিবের দেখা পাব
মারিয়া: কিন্তু আকিব যদি চলে যায়,,,,
আনহা: তুই চল না,,,,,

মারিয়া আর আনহা বেরিয়ে পড়ে,,,, কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পার্কে চলে যায়,,,,,
আনহা আর মারিয়া আকিব কে খুঁজতে থাকে
অনেক মানুষ ওখানে ভিড় ঠেলে দুজনে আকিবকে খুঁজতে থাকে,,,,, কিন্তু পেল না শেষে ফিরে আসার জন্য বাইরে আসতেই রিপোর্টার কে দেখতে পায়,,,ওনি ক্যামেরা গুছিয়ে চলো যাচ্ছিলেন আনহা গিয়ে ওনাকে আটকায়,,,,,,
আনহা: শুনুন,,,, একটু আগে মাঠের কোনায় বসে একটা ছেলের সাথে কথা বলছিলেন ওই ছেলেটা কোথায়,,,,,,
__ কেন বলুন তো,,,, আর আপনি কে,,,,,
মারিয়া: ও ওই ছেলেটার ওয়াইফ এখন তাড়াতাড়ি বলুন আকিব কোথায়,,,,

__ ওহ রিয়েলি,,,, ওনার কথা শুনে আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছে করছিল,,,, কিন্তু আমি ভাবতে পারিনি আপনার সাথে দেখা হয়ে যাবে,,,,
মারিয়া: হাসের মতো প্যাকপ্যাক না করে বলুন আকিব কোথায়,,,,
__ কুল কুল,,,, এতো চটে যাচ্ছেন কেন,,,,,
ওনি তো একটু আগেই চলে গেছে,,,, আর আপনাকে একটা কথা বলি (আনহার দিকে তাকিয়ে) আপনার হাজবেন্ড আপনাকে খুব ভালোবাসে,,,,তা আমি ওনার চোখে স্পষ্ট দেখেছি,,,,ওনি যদি কোন ভুল করে থাকে তাহলে প্লিজ ক্ষমা করে ওনার কাছে ফিরে যান ওনি খুব কষ্টে আছে,,,,, ওনার চোখে আমি সত্যিকারের ভালবাসা দেখেছি সেই ভালোবাসায় কোন খাদ নেই,,,,প্লিজ আমার কথাটা রাখার চেষ্টা করুন,,,,,

লোকটি চলে গেল,,,,,,আনহা এতক্ষণ ধরে লোকটার কথা শুনছিল আর চোখের পানি ফেলছিলো,,,, আজকে ওর মনে হচ্ছে ও সত্যি আকিবকে ছেড়ে এসে ভুল করেছে,,,,,

মারিয়া: আনহা প্লিজ কাদিস না,,,,, বাড়িতে চল কালকে তো তুই ফিরে যাচ্ছিস,,,,চল,,

মারিয়া আনহাকে সামলিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে সারারাত আনহার নির্ঘুমে কেটে যায়,,,
ও সারারাত ছটফট করে কখন সকাল হবে,,,
সকাল হতেই তামিম কে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে,,,, তামিমের সাথে আকিবের বাড়িতে গেল,,,,,,

আকিবের বাবা তখন সোফায় বসে পেপার পড়ছিল রিমি টেবিলে বসে খাচ্ছিল আর ওর মা খাবার সার্ভ করছে,,,,,আনহা আর তামিমকে দেখে সবাই একটু অবাক হয়,,, আনহা উপরে যেতে নিলে রিমির ডাকে থেমে যায়,,,
রিমি: দাঁড়াও আনহা,,,,, কোথায় যাচ্ছ

আনহা: আপু আকিব কোথায় নিশ্চয়ই রুমে আছে আমি ওর সাথে কথা বলব,,,,,,,
রিমি কিছু বলতে যাবে সেই সময় রাকিব সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে,,,,আনহাকে দেখে রাকিব বলে উঠলো,,,,,,
রাকিব: আনহা তুমি,,,,, আর তামিম ও এসেছে,,,,
রাকিবকে দেখে আনহার মেজাজ বিগড়ে যায়
তাও কিছু বলল না,,,,,
রাকিব: এখানে আসার কারণ,,,,,,
আনহা: আপনি বোধ হয় ভুলে গেছেন আমি এবাড়ির বউ,,,, এখানে আসতে আমার কোন কারণ লাগে না,,,,,,
রাকিব: হা হা হা,,,,,,হাসালে,,,,কার বউ,,,,যে কিনা এখানে থাকে না তার বউ,,,,,
আনহা: মানে,,,,,,
রিমি: মানে,,, তুমি চলে যাওয়ার পরেরদিন আকিবও চলে গেছে কোথায় গেছে আমরা কিছু জানি না,,,,,ফোনটাও অফ করে রেখেছে

আনহার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো এজন্যই আকিবের ফোনটা অফ পেয়েছিল ও

আনহা: আপনারা কেউ আটকালেন না,,,
বাবা: দেখ আমরা কেউ ওকে যেতে বলিনি আকিব নিজের ইচ্ছায় চলে গিয়েছে এতে আমরা কি করতে পারি,,,,,
আনহা: কি করবেন মানে,,,,আকিব আপনার ছেলে বাবা ওকে কেন আটকালেন,,,না,,,

রাকিব: আর আমি বুঝি ওনাদের ছেলে না আমাকে যখন বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল তখন তুমি কোথায় ছিলে,,,,হুম,,,,

আনহা: তখন যদি আমি সেখানে থাকতাম তাহলে ঠিকই আটকাতাম,,,,,এখন সেকথা বলার সময় না,,,আকিবকে খুঁজে বের করতে হবে,,,,,
রাকিব: ওহ রিয়েলি,,,, তুমি আকিবের মতো একটা ছেলের সাথে সংসার করবে,,,,,, কি বুঝিয়েছে তোমাকে,,,,হুম,,,,,যে কিনা নিজের ভাইয়ের সাথে বেঈমানি করেছে,,,,, ওকে তো আমার নিজের ভাই ভাবতেও ঘৃণা করছে,,,,

আনহা: আপনি কি ভাবছেন তা আমার জানার দরকার নেই,,,,, আমার শুধু আকিবকে চাই ব্যস,,,,,

রাকিব: এক মিনিট তুমি আকিবের ব্যাপারে এত সিরিয়াস কেন,,,,, শুনেছি বিয়ের আগের দুমাস তুমি আকিবের সাথে ছিলে ওর সাথেই ভার্সিটিতে যেতে,,,,, তাহলে কি তুমি আর আকিব দুজনে প্ল্যান করে আমাকে সরিয়ে,,,
হুম,,,, আবার এখন নাটক করে ফিরে এসেছ
বাহ খুব ভালো এখন আমি সব বুঝে গেছি

আনহা আর সহ্য করতে পারল না ঠাস করে আকিবের গালে চড় বসিয়ে দিল
বাবা: আনহা,,,,,,
আনহা: ব্যাস বাবা,, আমি আর কিছু শুনতে চাই না,,,, এবার আমি বলি আপনারা শুনুন

রাকিব তো গালে হাত দিয়ে রাগে ফুঁসছে,,,,,

আনহা: কি যেন বলছিলেন (রাকিবের দিকে তাকিয়ে) আকিব খারাপ ছেলে,,,হ্যা তাই তো আপনি পালিয়ে যাওয়ার পরও বাড়ির সম্মান বাঁচাতে আমাকে বিয়ে করেছিল,,,,আর আপনি পালিয়ে গিয়েছিলেন,,,, সেদিন কিন্তু আকিব আপনার নামে একটা বাজে কথাও বলেনি,,, বরং আপনাকে মিস করেছিল,,,, সবার আড়ালে আপনার নামে আমার কানে বিষ ঢালতে পারত কিন্তু ও তা করেনি উল্টো বলেছিল ও আপনাকে খুব ভালোবাসে,,,,,,,
আর আপনি একটা মিথ্যে গল্প সাজিয়ে সবার থেকে আকিবকে আলাদা করে দিলেন,,,,,, নিজের রক্তের সম্পর্কের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন,,,, আপনার তারিফ না করে থাকা যায় না,,,,, আর এখন আবার আমাকে এর সাথে জড়িয়ে সত্যি আপনি প্রমাণ করে দিলেন যে এসবের পিছনে আপনি আছেন,,,,,মেইন কালপিট আপনি,,,,,
(একটু থেমে,,,,,আনহা এবার কেঁদে ওঠে) সব দোষ আমার,,,,সেদিন কেন আমি চলে গেলাম
আমার উচিত ছিল আকিবের পাশে সেদিন আমার থাকাটা খুব দরকার ছিল,,,, আমার প্রয়োজন ছিল,,,,,এখন আমি কোথায় খুজব আকিবকে,,,,,,,

রিমি আনহার কাছে এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে কেঁদে উঠলো,,,,,,আকিবের মা চেয়ারে বসে কাঁদতে লাগলো,,,,,,

রিমি: প্লিজ আনহা আকিবকে খুঁজে আনো ওকে ছাড়া আমি ভালো নেই,,,,

আনহা: আপু আপনি তো আকিবকে আটকাতে পারতেন,,,,,যে ছেলেটা একা এক গ্লাস পানি ঢেলে খেতে পারে না রাতে যাকে খাইয়ে না দিলে খায় না,,,,সেই ছেলেটা এখন কোথায় আছে কি খাচ্ছে কিভাবে থাকছে সেটা ভেবে দেখেছেন একবার,,,,,, আর আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলেন না,,,,

রিমি: ক্ষমা করে দাও,,,, আমরা সত্যি ভুল করেছি,,,,,
আনহা: এখন এসব কথা বলার সময় নয় আমি আসি,,,,,আকিবকে খুঁজতে হবে,,, চলো
ভাইয়া,,,,,,

আনহা দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে এসে রাকিবের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,,,,,

আনহা: মিস্টার রাফসান আদনান রাকিব,,,,
এরপর আমি এসে আপনার এই ভালো মানুষির মুখোশ টা টেনে খুলে ফেলব মাইন্ড ইট,,,,রেডি থাকবেন,,,,, আমাদের আবার দেখা হবে,,,,,,,(কড়া চোখে)

আনহা বেরিয়ে আসে,,,,, আজকে আনহার কথায় ওর শ্বশুর বাড়ির সবাই একটু অনুতপ্ত হলো,,, শুধু রাকিব বাদে,,,,ও আনহার উপর ভিশন রেগে আছে,,,,,আনহা ওকে চড় মেরেছে বলে,,,,,,রাকিব রাগে ফুঁসছে,,,, হনহনিয়ে উপরে চলে যায়,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে