ভালোবাসার তুই পর্ব-০১

0
8854

#ভালোবাসার_তুই
#Part_01
#Writer_NOVA

—এই মেয়ে ঠোঁটে এত গাঢ় করে লিপস্টিক দিছো কেন?জলদী মুছো।
—এএএএএএহহহহহহ আইছে!!!কোথাকার কোন ধলা ইন্দুর?ইস,নবাবজাদা। চেনা নাই জানা নাই আমারে বলে লিপস্টিক দিছি কেন?জলদী মুছো।আমার লিপস্টিক আমি গাঢ় করে দেই নাকি হালকা কইরা দেই সেটা আমার ব্যাপার।মন চাইলে ঠোঁটে দিমু নয়তো চোখের উপরে আই সেডের মতো দিমু কিংবা গালে ব্লাসের মতো লাগাই থুমু।কার বাপের কি?আমার বাপের টাকার লিপিস্টিক আমি লাগামু এতে অন্য মানুষের চুলকানি হয় কেন?দরকার পরলে লিপস্টিক হাতে বডি লোশন হিসেবে ঘষমু,পায়ে দিয়া আলতাও পরতে পারি।আমার লিপস্টিক আমি যেমনে খুশি তেমনে লাগামু।যেখানে খুশি সেখানে লাগামু।তোর কি রে ছেমড়া?তোরটা খাই নাকি পড়ি যে তোর কথা শুনতে হইবো।বুঝি না এরকম পাগল-ছাগল কোথা থেকে আমদানি হয়।এগুলিরে কি রাস্তার জনগণ চোখে দেখে না।দেখলে তো পারে নিজ দায়িত্বে ধইরা বাইন্ধা পাবনার কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে।যত্তসব ফাউল পোলাপাইন।ইচ্ছা করতাছে উষ্ঠা মাইরা নাকটা ফাটাই ফালাই।আমাকে বলে আমি লিপস্টিক দিছি কেন?

মনে মনে হাজারটা গালি দিয়ে চোখ রাঙিয়ে ছেলেটার দিকে তাকালাম।দাঁত কটমট করছি আর ছেলেটার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছি।ছেলেটা এবার আমাকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো
—হাই আমি মোঃ এনাজ আহমেদ।
আমি কোন কথা না বলে তার দিকে ভ্রু উঁচু করে একটা ভেংচি কেটে তার দিকে তাকালাম।
উনি ইতস্তত করে নিজের হাতটা সরিয়ে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে বললো।

এনাজঃ ঠোঁটের লিপস্টিক মুছো।তুমি না মুছলে কিন্তু আমি মুছে দিবো।কি বললাম শুনতে পাওনি।হা করে কি দেখছো? (একটু ভেবে)মনে হচ্ছে তুমি চাইছো আমি নিজ হাতে তোমার লিপস্টিক মুছে দেয়🤨।আমি ঠিক ধরেছি তাই না।

শয়তানি হাসি দিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করলো।হাতটা আমার ঠোঁটের দিকে বাড়িয়ে দিতেই আমি ব্যাঙের মতো দুটো লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেলাম।ছেলেটার কান্ড-কারখানায় অলরেডি আমার মাথা গরম হয়ে গেছে। আমি রেগে বললাম

আমিঃ আপনার সাহস তো কম বড় না।আপনি আমার ঠোঁট ধরতে আসেন।যেখানে আছেন সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকুন। আরেকবার আমার ঠোঁটের দিকে হাত বাড়ালে হাত কেটে আরেক হাতে ধরিয়ে দিবো।আমাকে চেনেন আপনি?আমি আপনাকে কি কি করতে পারি তা আপনার ভাবনার বাইরে।আমার থেকে দূরে থাকায় আপনার জন্য মঙ্গলজনক।
এনাজঃ আই সি।এরকম একটা ধানি লঙ্কা মেয়ে আমার খুঁজছিলাম,এদেরকে জ্বালাতে আমার ভীষণ ভালো লাগে 😁(মনে মনে)। আমি তোমাকে লিপস্টিক মুছতে বলেছি।তুমি যদি না মুছো তাহলে আমি পানি দিয়ে ডলে উঠিয়ে ফেলবো।
আমিঃ হি হি হি কাজ হবে না মহাশয়।আমার লিপিস্টিক ওয়াটার প্রুফ। সারাদিন ডললেও উঠবে না।
এনাজঃ তুমি এরকম করে লিপস্টিক দিয়ে আসবে না।
আমিঃ ও হ্যালো,আমার লিপস্টিক আমি যেভাবে খুশি সেভাবে দিয়ে আসবো।আপনি কে বলার?নিজের লিমিট ক্রশ করার চেষ্টা করবেন না।(রেগে)
এনাজঃ ওহ তুমি তাহলে মুছবে না।থাক মুছতে হবে না।কি বিচ্ছিরি কালার।তোমার চয়েজ এতো খারাপ। এরকম বাজে কালারের লিপস্টিক ঠোঁটে দেও।ওয়াক ছিঃ আমার তো দেখেই ঘৃণা করছে।তুমি ঠোঁটে কি করে লাগিয়েছো?

আমি দুই হাত কোমড়ে রেখে ঝগড়া করার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে তাকে বললাম।

আমিঃ এতোবড় সাহস আপনার??আমাকে নিয়ে বাজে কথা বললে আমি মেনে নিতাম কিন্তু আপনি আমার লিপস্টিক কে নিয়ে বাজে কথা বলেছেন।আপনি আমার লিপস্টিক কে অপমান করেছেন?আমাকে যা খুশি বলে অপমান করলে আমি কিছু বলতাম না।কিন্তু আপনি আমার লিপস্টিক কে অপমান করেছেন আপনাকে আমি ছারবো না।আমি নিজের থেকে বেশি আমার লিপস্টিক কে ভালবাসি।আর সেটাকে নিয়ে বাজে কথা😭😭।ছারবো না আমি আপনাকে। কিছুতেই ছারবো না।

দুই হাত মুঠ করে কান্নার ভান করে তার দিকে এগিয়ে গেলাম।উনি আগের মতো ভাবলেশহীন ভাবে আমার দিকে শয়তানি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে।আমার বুকটা ফাডি যাচ্ছে গো🥺। আজ পর্যন্ত কেউ আমার লিপস্টিক কে এভাবে অপমান করে নি।ই-ই ই-ই 😭।

এনাজঃ ওয়েট ওয়েট।তুমি যদি আমার সামনে আসো তাহলে আমি জোর করে তোমার ঠোঁট থেকে লিপস্টিক মুছে দিবো।

আবারো ব্লাকমেল। হে আল্লাহ তুমি আমায় কোন পরীক্ষায় ফেললে।অচেনা ছেলের মুখে এসব তো সহ্য হচ্ছে না।ইচ্ছে করছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি।আমি কিছু সময় ভেবে শয়তানি হাসি দিয়ে বললাম।
এনাজঃ বুঝি না বাবা,এরকম পাগলকে এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত কে দিয়েছে।সত্যি করে বলুন তো আপনাকে কি দাওয়াত দিয়েছে নাকি বিনা দাওয়াতে চলে এসেছেন🤨।(ভ্রু নাঁচিয়ে)

আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে তার দিকে তাকাতেই বুকটা কেঁপে উঠলো। এ মা, চোখ দুটো লাল টকটকে করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেন?মনে হচ্ছে এখনি আমাকে গিলে খেয়ে ফেলবে।হু হু হু আমি কি ভয় পাই নাকি?কে হয় উনি আমার?এত সময় আমার লিপস্টিক কে অপমান করছে তখন বুঝি আমার খারাপ লাগে নি।এখন দেখো চান্দু তোমাকে অপমান করলে তোমার কেমন লাগে।রেগে আমার সামনে এসে আবারও আমার ঠোঁটের দিকে হাত বাড়াতে নিলে আমি হাতের মধ্যে জোরে একটা চড় মেরে ভেতরের দিকে ভৌ দৌড় লাগালাম।

আমি নোভা ইসলাম।এবার অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করছি।আমি বাবা-মায়ের বড় মেয়ে। আমার ছোট বোন ইভা ইসলাম। এবার দশম শ্রেণিতে পড়ে। আমার কোন ভাই নেই।আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবার। বাবা একটা বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরী করে। আর মা গৃহিণী। আমি খুব ভদ্র, শান্ত শিষ্ট ও ফাজিল বৈশিষ্ট্য মেয়ে😐।আমি অনেক অনেক ভালো।নিজের প্রশংসা নিজে কমু না, আমার শরম করে🙈।ইস, কি লজ্জা, কি লজ্জা😁।কতটা ভালো সেটা ইতিমধ্যে টের পেয়েছেন সামনে আরো পাবেন।আমার লিপিস্টিক অনেক পছন্দ।কেউ আমার লিপিস্টিক নিয়ে উল্টো পাল্টা কথা বলে তাহলে আমার হুস থাকে না।আমার বান্ধবী সিফার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসেছিলাম।এখানে এসে দেখা হয়েছে ঐ ধলা ইন্দুরটার সাথে। বান্ধবীর মাস্টার্স পড়ুয়া ভাইয়ের বন্ধু মোঃ এনাজ আহমেদ। আমি আগে কখনও দেখি নি তাকে।সাহস দেখে অবাক আমি।আমার ঠোঁট ধরতে এসেছে। ইচ্ছে করছে কষিয়ে কয়েকটা দুরুম দারুম কিল বসিয়ে দিতে। কিন্তু আমার লিপস্টিককে অপমান করেছে এত সহজে তো আমি তাকে ছারবে না।এর শোধ আমি যদি না তুলি তাহলে আমার নামও নোভা নয়।এতসময় বাইরে দাঁড়িয়ে ধলা ইন্দুরটার সাথে বকবক করলাম।ভেতরে এসে রাগে ফুঁসতে লাগলাম।আমাকে দেখে সিফা এগিয়ে এলো।

সিফাঃ কি রে তোর কি হয়েছে? এমন রাগে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করছিস কেন?
আমিঃ তুই আর কথা বলিস না।যত দোষ সব তোর।
সিফাঃ আমি আবার কি করলাম?(অবাক হয়ে)
আমিঃ তুই জোড়াজুড়ি না করলে আমি কখনি আজ আসতাম না।আর ঐ ধলা ইন্দুরটার সাথে এত কিছু হতো না।আমার লিপিস্টিক কে অপমান করেছে।আমিও দেখে নিবো।
সিফাঃ বলবি তো কি হয়েছে? কি বিরবির করছিস?কার কথা বলছিস?আমাকে বুঝিয়ে বল।

আমি সিফাকে একটু আগে এনাজের সাথে ঘটা যাবতীয় ঘটনা খুলে বললাম।আমার কথা শুনে সিফা হাসতে হাসতে বসে পরলো।ওকে এভাবে হাসতে দেখে আমার মাথা আরো গরম হয়ে গেলো।

আমিঃ ঐ ছেমরী দাঁত বের করে ভেটকানো বন্ধ করবি।নয়তো গাট্টা মারবো মাথায়।
সিফাঃ দাঁড়া বোন। আমাকে একটু হাসতে দে।
আমিঃ তুই হাসি বন্ধ না করলে তোকে মাথায় তুলে আছাড় মারবো কিন্তু বলে দিলাম।আমার লিপিস্টিক কে অপমান করছে আর তুই হাসছিস😡।
সিফাঃ ওরে লিপস্টিক পাগলীরে।এনাজ ভাইয়া ঐ রকমি।সে মেয়েদের ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়া পছন্দ করে না।তার ধারণা মেয়েদের ঠোঁট এমনিতে সুন্দর,আবার লিপিস্টিক দেওয়ার কি দরকার?তুই আজকে একটু গাঢ় করে লিপস্টিক দিয়ে এসেছিস বলে তোকে এসব কথা বলেছে।
আমিঃ সে পছন্দ করে না বলে কি আমি দিবো না।
সিফাঃ তুই কিছু মনে করিস না।এনাজ ভাইয়া ওরকমি।ভুলে যা সব।
আমিঃ তুই আমার বান্ধবী হয়ে এসব কথা বলতে পারলি🥺।আমার লিপস্টিক কে অপমান করেছে আর আমি সব ভুলে যাবো।তোর মুখে এমন কথা মানায় না।অন্য কেউ বললে আমি মেনে নিতাম। কিন্তু তুই? আমি বিশ্বাস করি না।সবাই একরকম।তুইও ঐ এনাজকে সাপোর্ট করছিস।নয়তো ভুলে যাওয়ার কথা বলতে পারতি না।আমি এখানে এক মুহুর্তেও নয়।তুইও আমাকে ধোকা দিলি😭।

আমি হাতে থাকা পার্সটা নিয়ে কাঁদো কাঁদো ফেস করে সেখান থেকে চলে এলাম।সিফা অবাক হয়ে আমার যাওয়ার পানে বোকা হয়ে তাকিয়ে আছে।
সিফাঃ আমি বললাম কি আর বুঝলো কি?এই মেয়েটা লিপস্টিক কে যতটা পছন্দ করে নিজেকেও মনে হয় না এতো পছন্দ করে।যা বাবা চলে গেল। এই নোভা শোন।নোভা, নোভা।তুই আমাকে ভুল বুঝছিস।

আমি আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে সিফার কান্ড দেখে মুচকি হাসলাম।চোখের পানির ফোঁটা টোকা মেরে ফেলে দিয়ে শয়তানি হাসি দিলাম।আমি আসলে এতখন অভিনয় করছিলাম।আমি ঐ এনাজ কে সহ্য করতে পারবো না সারা অনুষ্ঠানে। তাই অভিনয় করে সেখান থেকে চলে এলাম।কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ঘটলো বিপত্তি। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে প্লাজুর সাথে বেজে ঠাস করে পরে গেলাম।পরলাম তো পরলাম আর কোন কিছুতে নয়।একটা ভাঙা টবের ওপর পঁচা পানি রাখা ছিলো।সেখানেই পরে গেছি।ওয়াক ছিঃ ভাবা যায় এসব।ওয়াক, ওয়াক🤮।পরে গেছি সেটা বড় নয়।কেউ দেখেছি কি না সেটা বড় কথা।জলদী করে উঠে দাঁড়ালাম। আশেপাশে পাশে তাকালাম।নাহ্ বাবা।বাঁচা গেল,কেউ দেখিনি।পরে গেলে ততটা লজ্জা করে না যতটা কেউ দেখে ফেললে করে। মুখটা আমার বাজে অবস্থা হয়ে আছে।গা গুলিয়ে আসছে।হঠাৎ আমার মনে হলো পেছনে কারো জোরালো হাসির শব্দ পাচ্ছি। চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে তাকাতেই দেখতে পারলাম।এনাজ পেট ধরে হাসতে হাসতে বসে পরেছে।রাগে শরীরটা ফেটে যাচ্ছে। আর শয়তানটা ৩২টা দাঁত বের করে হেসেই যাচ্ছে।

এনাজঃ একদম ঠিক হয়েছে। আমি অনেক খুশি হয়েছি।আমার কথা না শুনলে এমনি হবে।ও আল্লাহ, আমি হাসি থামাতে পারছি না।তোমার ঐ লিপস্টিক তো পঁচা পানিতে লাগলো।ওয়াক ছিঃ। কি নোংরা মেয়ে।যেমন লিপস্টিক তেমন মেয়ে।
আমিঃ বান্দর,কুমির,টিকটিকি,গরিলা,গন্ডার।আমি তোকে ছারবো না।হাসো, হাসো। বেশি করে হাসো।এক মাঘে শীত যায় না।আমিও দেখে নিবো তোমাকে।এই নোভা ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না।দিন আমারো আসবে।তখন আমি ৩২ টা দাঁত বের করে হাসি দেওয়ার মজা বুঝাবো। কেথায় আমাকে ফিল্মী স্টাইলে নায়কের মতো বাঁচাবে। তা না করে ৩২ টা দাঁত বের করে টুথপেষ্টের এড দিচ্ছে। আমি আমি সব শোধ তুলে রাখলাম সময়মতো আবার সব ফেরত দিবো।আমি আবার কারো ঋণ রাখি না।সময়মতো সুদ সহ আসল ফেরত দিয়ে দেই😎।(মনে মনে)

এনাজের দিকে একটা খাইয়া ফালামু লুক দিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে বাসার দিকে রওনা দিলাম।পার্স থেকে টিস্যু বের করে মুখ মুছে নিলাম।পঁচা পানির কি বিচ্ছিরি গন্ধ, ওয়াক🤮।

বাসায় গিয়ে কোন কথা না বলে রুমে দরজা আটকে ফেললাম।আম্মু কিচেনের থেকে অবাক হয়ে আমার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।
আম্মুঃ নিশ্চয়ই আজও নোভা কোন ঝামেলা পাকিয়ে এসেছে।এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি আর পারি না।এখন আমার সাথে চিল্লালে পায়ের জুতা ছুঁড়ে মারবো।

রুমে এসে আমার চোখ চড়কগাছ। আম্মুকে রেগে+চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
আমিঃ আম্মু,আম্মু, আম্মু। বলি কানে কি শুনতে পাও না।আমি যে ডাকছি।
আম্মুঃ কোথা থেকে জিদ করে এসেছেন।সেখানে নিশ্চয়ই পারেন নি।এখন যদি বাড়িতে এসে আমার সাথে শুধু শুধু চেঁচামেচি করিস তাহলে তোর কপালে ঝাড়ুর দৌড়ানি আছে। খুন্তির বারিতো ফ্রীতেই খেতে পারবি😡।
আমিঃ তুমিও শুরু করলে।ধূর,কিছু ভালো লাগে না। আমার গোলাপি লিপস্টিকের এই অবস্থা কে করেছে। আমি ডেসিং টেবিলের ওপর সুন্দর করে রেখে গিয়েছিলাম।এসে দেখি পুরো লিপস্টিক নষ্ট করে ফেলেছে।সবার কি আমার লিপস্টিকের সাথে শত্রুতা।আমার লিপস্টিক কি সবাইকে খোঁচা মারে।কে এসেছিল আমার রুমে।
আম্মুঃ আমি দিয়েছি তোর লিপস্টিক।আয় এখানে এসে দেখে যা।তোর লিপস্টিকের খবর তুই জানিস আমি নয়।(রেগে)
আমিঃ ধূর, ভাল্লাগে না।যত ঝড় সব আমার লিপস্টিকের ওপর দিয়ে যায়😤।

আমি জোরে দরজাটা বারি দিয়ে ওয়াস রুমে ঢুকে গেলাম।আম্মু বড় করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বিরবির করে বললো।
আম্মুঃ বিকালে নোভার ফুপাতো বোনের মেয়ে এসেছিলো।নিশ্চয়ই ঐ ছোট্ট মেয়ে এমন অবস্থা করেছে। এখন যদি এটা নোভা জানে তাহলে সারা বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে।যাক,কোনমতে ওকে সামলানো গেল।আল্লাহ জানে মেয়েটা কেমন হয়েছে। সারা ডেসিং টেবিল ভর্তি শুধু লিপস্টিক। আর একটা অন্য সাজসজ্জার জিনিস নেই। কেউ লিপিস্টিক এতো পছন্দ করতে পারে তা আমার মেয়েকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।

আম্মু জোরে জোরে ফুঁসানোর শব্দ শুনে পেছনে তাকাতেই আমাকে দেখতে পেলো।আমি জানতাম এমন কিছুই হয়েছে। তাই দরজায় বারি দিয়ে ওয়াস রুমে ঢুকে আবার বের হয়ে কিচেনের সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আম্মুঃ আমি যাস্ট এভাবে বলছিলাম😑।
আমিঃ তুমি আর কথা বলো না।তোমরা সবাই আমার সাথে এমন করো।আমি আর এই বাড়িতে থাকবো না।

মুখ গোমরা করে ঠাস ঠাস করে পা ফেলে নিজের রুমে গিয়ে দরজা আটকে রাখলাম।আসার আগে শুনতে পেয়েছিলাম আম্মু মুচকি হেসে শুধু বলেছিলো
“লিপস্টিক পাগলী”।কেটে গেছে বেশ কিছু দিন।একদিন কলেজে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ দেখতে পেলাম আমার কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে মোঃ এনাজ আহমেদ। আশেপাশে তাকিয়ে একটা পচা ডোবা দেখতে পেলাম।মনের মধ্যে আমার শয়তানি বুদ্ধি জেগে গেল।

আমিঃ দাঁড়াও মহাশয়। আমাকে পঁচা পানির মুখে পরতে দেখে খুশি হয়েছিলেন না।আপনাকে এখন আমি পঁচা ডোবায় গোসল না করাই তাহলে আমার নামও নোভা নয়। আমি আরেকবারও বলেছিলাম কথাটা😁।

শয়তানি হাসিে তার দিকে এগুতে লাগলাম।আজ তার খবর আছে।এই নোভার সাথে পাঙ্গা দিতে এসেছো।তোমাকে তো আমি হারে হারে টের পাইয়ে দিবো আমি কি?আরেকটু ওয়েট করো চান্দু। তোমাকে আজ আমি পঁচা পানি খাওয়াবো সাথে এরকম পারফিউম যুক্ত পানি দিয়ে গোসল করাবো।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে