ভাবিনি ফিরে আসবে পর্ব-১১

0
800

ভাবিনি ফিরে আসবে
পর্ব-১১
রোকসানা আক্তার

বাবার জরুরী কল আসাতে বাহিরে চলে যান।এতক্ষণ পর মনের মধ্যে দমিয়ে রাখা আনন্দের ছন্দ সাথী এক এক করে ফাঁস করতে থাকে।
মাকে, আন্টিকে,ছকিনা খালাকে বাদুড়ের মতো লাফ মেরে জড়িয়ে ধরে খুশির তালে।
-আহা,খালামণি জানো??আমার পথের কাঁটাটা অতঃপর গেলো।এখন নিশ্চিন্তে থাকতে পারবো।আমাকে আর বিয়ের জন্যে জোর জবরদস্তি করবে না,টাকা-পয়সার জন্যে যখন তখন থ্রেট দিবে না।আহ,বিন্দাস লাইফ আমার।এখন,আমার সব সব ড্রিম সাকসেস করতে পারবো,ইয়াহু।।

আমি সাথীর কথায় পুরো ফিদা।চোখ টিপ মেরে বলি,
-নিদু চলে গেলো বুঝলাম,আহসান খিদ্দেরী তো এখনো বেঁচে আছে।
-ভাইয়া!! তুমি চাচ্ছো ওই বুইড়াও আবার আমার মাথার উপর চড়ে বসুক?
-হুম,চড়লেতো আমার রাস্তা একদম ক্লিয়ার।
-খালামণি, কিছু বলো ভাইয়াকে?

মা সাথীর কথায় আমায় বকতে যাবে,ওমনি চোখ ইশারা দিয়ে মাকে বলি,
মা, মা বুঝো না?একটু মজা নিচ্ছি।তুমিও পারলে আমায় সাপোর্ট করে সাথীর রাগী মুখটাকে দেখার একটু উপায় করে দাও,প্লিজজ মা(মনে মনে)
মা আমার ইশারা বুঝতে পেরে আরো রেগে বলেন,
-শাওন??এসব কি,হুম?যা তোর রুমে যা!!নিদু খিদ্দেরী মারা যাওয়া মানেই আহসান খিদ্দেরী প্যারালাইজড। সো, সাথী মা এই পাগলটার কথা মাথায় নিবা না,এ একটা পঁচা।

সাথী খিলখিল করে হেঁসে উঠে মাকে জড়িয়ে একটা চুমু দিয়ে বলে,
-এইতো আমার লক্ষী খালামণি।কেউ আমায় না বুঝুক,অন্তত লক্ষী খালামণিটি আমায় বুঝলো।যাও তোমরা সব পঁচা।হিহিহিহি।

আমি আর হাসি দমিয়ে রাখতে না পেরে নিজের রুমে চলে আসি।পিছু পিছু সাথী টুকী যে আসবে মাথায় ছিল না।।পেছন থেকে ঘুরে আমার সামনে এসে বলে,
-কি হ্যাঁ মেও?বোকা বানাতে পারলাম তো আজ??
-টুকী!!
-মানে!? টুকী কে ভাইয়া??
-কেন,তুই??
-এই এসব কিন্তু ঠিক না।আমার নাম টুকী না,আমার নাম সাথী!!
-আমার নামও মেও না,আমার নাম শাওন।ডু ইউ আন্ডার্সটেন্ড??
-বিড়ালের মতো সারাদিন ঘ্যাঁনঘ্যান করলে সে তো মেও হিসেবেই উপাধি পায়।
-আর সারাদিন চোরের মতো আঁকুপাঁকু করলেতে তাকে টুকীই বলা হয়।।
-ভাইয়া তুমি থামবে??(রাগ নিয়ে বলে সাথী)
-তুই এখান থেকে যাবি??
-যাবো না।দেখি কি করতে পারো।।
-তোকে এখন মারবো!!
-মারো??

হাতটা এগিয়ে নিয়েও পিছু টেনে সরু করে ফেলি।সাথী আমার দিকে একপলকে তাকিয়ে আছে।একটা দীর্ঘশ্বাস টেনে বলে,
-ভাইয়া, তুমি খুশি না?নিদু যে মারা গেছে??
-নিদুর মৃত্যুকে এখানে আমার খুশি হওয়ার কি আছে সাথী??
-কারণ,নিদু আমার লাইফ থেকে চলে যাওয়া মানেই শাওন ভাইয়াকে আমার করে পাওয়া।আর অন্যকোনো শক্তি আমাদের মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারবে না।
-এসব কি বলছিস তুই??
-ভাইয়া, আমি ভুল কিছু বলিনি। তোমার এত্ত ইগনোরের পরও এখনো পাগলের মতো তোমার পিছে পিছে ছুটি!!আমার ভালোবাসার কি কোনো দাম নেই??

-তুই এখনো অনেক ছোট সাথী।তোর এখনো বয়স হয়নি।তুই পড়ালেখা করবি, নিজের পায়ে নিজে দাড়াবি।দ্যান বিয়ের কথা ভাববি।
-তোমার সাথে বিয়ে হওয়ার পর কি আমি স্টাডি করতে পারবো না ভাইয়া??

ওর এসব পাগলামো কথা শুনতে শুনতে অনেকটা বিরক্তি চলে আসে।উপায়ন্তর না পেয়ে ডিরেক্ট জবাব দিই,
-সাথী আমার পক্ষে সম্ভব না।পারলে ক্ষমা করিস।
-ভাইয়া,কেন সম্ভব না কারণ বলো?বলো, কেন সম্ভব না?!

আমি সাথীর এসব প্রশ্নের উওর না দিয়ে চলে আসি।।
বেলকনিতে এসে বেতের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসি।বাহিরে কি সুন্দর দগদগ আলো,চারদিকের পরিবেশটা যেন ঝিকঝিকিয়ে উঠছে।পাখিরা কিচিরমিচির তুলে নিজেদের সুরে গান গাচ্ছে। ক্ষান্ত মনটাকে প্রশান্তি দেওয়ার জন্যে বাহিরের দিকে মুখটা এগিয়ে থমকা হওয়া গায়ে মাখি।।সারাদিনের কষ্ট ভুলতে প্রকৃতি অবিরল জেগে থাকে।মানুষের মনের দুঃখ নিবারণের জন্যে সে সদা প্রস্তুত।
এসব ভাবতে ভাবতে পেছন দিকে একটু ফিরে তাকাই। রুমটা শূন্য দেখতে পাই।সাথী হয়তো মন খারাপ করে রুম থেকে চলে গিয়েছে।এই মেয়েটাকে নিয়ে কি করবো,কিছুই মাথায় আসছে না।।

সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়।মা সবাইকে খাওয়ার জন্যে ডাকেন।আমি খাবার রুমে যেতেই সাথী ছাড়া সবাইকে চেয়ারে দেখতে পাই।ভাইয়াও এসছেন,হয়তো বাবা বুঝিয়ে-সুঝিয়ে খাবার টেবিলে নিয়ে আসছেন।মা আমায় দেখে চেয়ার টেনে বলেন,
-বাবা,আয় বস।
-মা? সাথী খাবে না??
-ওর নাকি পেটভরা।সেজন্যে খাবে না।
– সে কেমন কথা!!সকালে নাস্তাতেই পেটভরা?
-জানি না।গিয়ে জিজ্ঞেস কর খাবে কি না।
-আচ্ছা যাচ্ছি।

সাথী যে রুমে থাকে, সে রুমে আসি।এসে দেখি দরজা বন্ধ।দরজায় কড়া নাড়তে থাকি।
-সাথী?সাথী?দরজা খোল??

কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছি না।
– আরেহ,এই মেয়ে দরজা খোল??তুই না খেলে আমি কিন্তু আজ সারাদিন খাবো না।

তারপর হালকা একটা আওয়াজ তুলে বলে,
-তা তোমার ইচ্ছে আমায় বলছো কেন?
-সত্যি,তাই???তাহলে আজ সারাদিন উপোস থাকবো।তোর নিজের জন্যে আমায় আজ না খেয়ে থাকতে হবে।ভালোবাসার মানুষটিকে এভাবে কষ্ট দিয়ে থাকতে পারবি??

সাথী আমার মুখ থেকে নিবৃও “ভালোবাসার মানুষ” শব্দটি শুনে খুশিতে আৎকে উঠে।কিন্তু এটাতো জাস্ট এক্সকিউজ টু রিমুভ হার আয়ার(রাগ)।
-তুমি যে আমায় এখন কষ্ট দিচ্ছ ভাইয়া??তুমি যেভাবে পারছো,ঠিক আমিও পারবো।

-দেখ, সাথী?পাগলামী বহু হয়েছে।প্লিজজ দরজাটা খোল।আমি হাঁপিয়ে উঠছি।প্লিজজ??

এভাবে অনেকক্ষণ ঘ্যাঁনঘ্যাঁনাতে থাকি।হুট করে সাথী দরজা খুলে আমায় জড়িয়ে ধরে। মুখে কাঁদো কাঁদো ভাব এনে বলে,
-আমার সাথে কেন এমনটি করছো ভাইয়া?আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না।কত আর কষ্ট দিবে,বলো??

এরইমধ্যে বাবা ডাক দেন।
-শাওন??খেতে আসছিস না কেন??এখনো ওখানে কি করছিস??

আমি থতমত খেয়ে সাথীকে আগলে রেখে বলি,
-সাথী, বাবা ডাকছেন।চল লক্ষীটি আমরা খেতে যাই।
সাথী চোখের পানি মুছে অনেক কষ্টে বলে,
-আচ্ছা,চলো।।

খাওয়াদাওয়া শেষ হয়।আমি দুপুরে একটা ঘুম দিই।বিকেলে সাথীর ডাকে ঘুম ভাঙ্গে।
-বাহ,বাহ ভাইয়া?? তুমিতো বেশ ভালোই ঘুমতে পারো!এই নাও তোমার চা।
আমি কাচুমাচু দিয়ে বলি,
-ঘুম থেকে না উঠতেই চা!বাহহ!!তোর মতো এমন লক্ষী বউই আমার প্রয়োজন।

সাথী মুখটা গোমড়া করে বলে,
-চা আমি বানাইনি।খালামণি বানিয়েছেন।
-ওহ,তাহলেতো তুই কাঁচা!!ভাবলাম চা বানাতে পারলে তোকে বউ হিসেবে মেনে নেওয়া যায়,কিন্তু এখনতো…..

সাথী ক্রুদ্ধ হয় যায় আমার কথা শুনে।মনে মনে বিড়বিড় করতে থাকে আর বলে,
-হবো না তোমার বউ,দূর!!

এ বলে প্রস্থান ফ্রম মাই রুম।
আমি একটা মুঁচকি হেসে টেবিলের উপর থেকে চায়ের কাপটা হাতে নিই।আর একটা চুমুক দিই দুধ চায়ে।।দুধ’চা আমার অনেক ফেভারিট। যত খাই,ততই তৃপ্তী মেটে।।

পরদিন সকালে,
মা আমার দরজায় সজোরে আঘাত করে আমায় ডাকতে থাকেন।মায়ের এমন উচ্চ হৃদয় কম্পিত আওয়াজ শুনে আমার ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। কোনোকিছু এলক্ষ না করতে পেরে বিছানা থেকে তড়িঘড়ি উঠে দাড়াই এবং দরজার সামনে গিয়ে দরজা খুলতেই মা আমায় জড়িয়ে কেঁদে দেন,আর বলেন,
-বাবা,তুই রুম থেকে বের হইস না।ওরা তোকে ধরে নিয়ে যাবে।
আমি মায়ের কথা বুঝতে না পেরে অনেকটা নাজেহাল হয়ে যাই।বিষয়টি আরেকটু ক্লিয়ারের জন্যে মাকে ছেড়ে দরজার দিকে পা বাড়াই।মা আমার হাতটা জোরে আঁকড়ে ধরে বলেন,
-বাবা যাস নে নিচে,যাস নে রে বাপজান।।

আমি আরো বেশি অবাক হয়ে যাই।মায়ের এরকমটা করার কারণ কি!!মাথায় কোনো ভাবনা না আসতেই মায়ের সম্মতি অগ্রাহ্য করে সিড়ির কাছে আসি।সিড়ির কাছে এসে যা দেখলাম,মুখে ভাষা নেই কি বলবো!!একদল পুলিশ পিস্তল-টিস্তল নিয়ে আমাদের বাড়ি হাজির।আমাদের বাড়িতে উনাদের আসার কারণটাও বুঝতেছি না।
উনাদের উদ্দেশ্য করে বলি,
-এক্সকিউজ মি, স্যার?আমাদের বাড়ি আসার কারণটা কি??
আমার কথার আওয়াজ পেয়েই উনারা সবাই আমার দিকে তাকান এবং সাথে সাথে কয়েকজন আমাকে লক্ষ্য করেই আমার দিকে পিস্তল তাক করেন।
-এই সাবধান!কোথাও পালাবার চেষ্টা করবে না।পালাবার চেষ্টা করলে গুলি করতে বাধ্য হবো।

আমি তড়িঘড়ি হাতদুটো শূন্যে তুলে ফেলি।কোনোকিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উনারা বলে উঠেন,
-তুমও নিদুকে খুন করেছো।এবার জেলে চলো।

উনাদের এসব কথা শুনে আমার পরিবারের সবাই আৎকে মুখে হাত রাখে।আমি অনেকটা অবাক হয়ে যাই!!এরা এসব কি বলছে!??

-কোনো প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে?আমি যে নিদুকে খুন করেছি??
-তোমার যা বলার কোর্টে বলবে।চলো!??
আর কোনো কথা বলতে না দিয়েই আমার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে সিড়ি বেয়ে নিয়ে যাচ্ছে উনারা।সাথী,আন্টি,মা নিবৃও চোখের পানি ফেলছেন আমার দিকে চেয়ে।আর বাবা বিমূঢ় হয়ে মূর্তির মতন দাড়িয়ে আছেন।

বড় একটা জেলে আমায় ঢুকিয়ে লোকাবে তালা ঝুলিয়ে দেয়। আমি অবুঝ বাচ্চাদের মতো চেয়ে আছি শুধু।চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে হয়,কিন্তু পারতেছি না!!
কিছুক্ষণ পর ঝুলে থাকা তালা খুলে একজন ইনস্পেকটর আমার সামনে উপস্থিত হয়।।
আমার সামনে একটা চেয়ার টেনে বসেন,আর মুখের কোণে হাত রেখে জিজ্ঞেস করেন,
-তুই নিদুকে কেন মারলি? কি উদ্দেশ্যে ওকে খুন করলি?কি লাভটা হলো ওকে খুন করে!??

আমি মুখ দিয়ে কিছু বলতে যাবো,তা গলায় এসেই আঁটকে যায়।তার গতিতে বাঁকটাও যেন হারিয়ে গেছে।

-কি কথা বলছিস না কেন??কেন খুন করলি নিদুকে???তোর এবং নিদুর কল লিস্ট চেক করে অনেকগুলো সূএ শনাক্ত করতে পেরেছি।
কাল রাত তোর সাথেই নিদুর শেষ কথা হয়েছিল ফোনে। তোর সাথে নিদুর ভালোই সম্পর্ক ছিল।অনেকগুলো ডায়ালিং কল,রিসিভিং কল,,বাহহহ!!!তবে বন্ধুর অনেকগুলো ডায়ালিং কল থাকার পরও ব্যাক করতি না কেন!!বন্ধু কি তোকে হুমকি দিয়েছিল নাকি??সে ভয়ে কল রিসিভ করিস নি!!তার বদৌলতে সোঁজা খুন।আর এই হুমকির প্রতিবাদের মূল কারণ কি?
বল???



-বুঝছি, তুই বলবি না।আচ্ছা, তাহলে আমি বলছি,শোন।
রাস্তার কাঁটা ক্লিয়ার করে সাথীকে নিজের করে পেতে???
জবাব দে??

উনার ধমকের সুরে আমার আত্মা কেঁপে উঠে।
উনি আমার থেকে কোনো জবাব না পেয়ে বলে উঠেন,
-ওকে বুঝলাম।তোর মুখে কথা আসবে না।কি মলম লাগালে তোর মুখদিয়ে শব্দ হবে তা আমি খুব ভালো করেই জানি।।

এ বলে মস্ত একটা লাঠি দিয়ে এক এক করে আমার পিঠে বাঢ়ী দিতে থাকেন।আর আমি চোখবুঁজে সহ্য করে নিচ্ছি!! তবুও আমার মুখ থেকে কোনো শব্দ আসছে না।অতঃপর উনি বিরক্ত হয়ে একমতে স্থান ত্যাগ করে নিজ কক্ষে চলে যান।।।

এভাবে ৫ দিন পর্যন্ত আমায় মেরে অবশ বানিয়ে ফেলে।আমি আর কোনো নড়াচড়া করতে পারছি না।চারদেয়ালের মধ্যে অসাড় হয়ে শুয়ে আছি।হুট করে কারো কান্নার শব্দ কানে বাঁজে। তাকিয়ে দেখি মা,শিমলা এবং সাথী আসছে।
আমি মাকে দেখে বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে থাকি।উঠতে চেষ্টা করলেও উঠতে পারছি না।পরে লেচরাতে লেচরাতে জেলের শিক ধরে অনেক কষ্টে উঠে দাড়াই।সাথী আমার এ অবস্থা দেখে উচ্চ আওয়াজে কান্না করতে থাকে, আর মা সে’তো বুক ভেঁসে কান্নাকে উড়িয়ে দিচ্ছে।।
শিমলা শিকের মাঝখান দিয়ে হাত বাড়িয়ে আমার কাঁধে হাত রেখে বলে,
-চিন্তা করিস না শাওন।যারা তোকে মিথ্যে অপবাদে ফাঁসিয়েছে,ওদের খুঁজে বের করবোই।ইনসাল্লাহ তোকে অপরাধী মুক্ত করবোই।আমরা একজন উকিলের সাথে কথা বলেছি।।

-মা,শিমলা তোমরা বলো?আমি কি নিদুকে খুন করতে পারি??
-নাহ,বাবা নাহ!!তুই কখনোই এই কাজ করতে পারিস না।এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস!!
-তাহলে কেন আমি আজ পএ-পএিকা,মিডিয়াতে খুনী হিসেবে সাব্যস্ত হলাম?বলো???
মা আমায় শুধু আশ্বাস দিতে থাকেন।আর আঁচলে মুখ গুঁজে কাঁদেন।কারণ,সবকিছুই অব্যক্ত,বলতেও গিয়েও কারো মুখে কথা আসছে না।।

আমি সাথীর দিকে মুখতুলে তাকিয়ে আবার বলি,
-সাথী?আমি কি তোকে পাওয়ার জন্যে নিদুকে খুন করেছি,বল?নাকি ভাইয়ার বউয়ের জন্যে!?

সাথী চোখগুলো কপালের দিকে উঠিয়ে বলে,
-ভাইয়া, তুমি এসব কি বলছো???
-হ্যা-রে, হ্যাঁ।
আর শুধু ফুঁপিয়ে কান্না আসে আমার।
-নিশ্চয়ই সব ওই শিপ্রা ডাইনীর কাজ হবে,শাওন!!আই এম সিউর!!এ ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই!তোর কিছুই হবে না শাওন।আমরা আছি তোর পাশে।মিথ্যাবাদীকে তার উচিত জবাব ঠিকই ফিরিয়ে দিব।জাস্ট একটু ওয়েট এন্ড সি!!(শিমলা)
-ভাইয়া,প্লিজজ তুমি কান্না করো না।(সাথী)

আপনাদের সময় শেষ।এবার আসতে পারেন(থানার হালদার)
আজ কেন জানি মায়ের হাতটা ছাড়তে ইচ্ছে না।অনেক কষ্টে মায়ের আদুরী মাখা হাতটা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি।
পরে,মা,শিমলা,সাথী কেঁদে কেঁদে আমায় বিদেয় জানায়।
আমি ফ্লোরের উপর চোখবুঁজে বসে পড়ি।

এরইমধ্যে থানায় আরেকটা খবর রটায়।থানায় একজন পুলিশ হাতে একটা পএিকা নিয়ে ওসির সামনে হাজির হয়।
তা’হলো দিবানির হত্যাকান্ড,যেটিতেও আমি জড়িত।

চলবে…
(এক ঢিলে দু’পাখি😅।দেখা যাক মিশন সাকসেস হয় কিনা ট্রিকিবাজের😁।আর দিবানির ব্যাপারটা অনেকে বুঝতেছেন না।অবশ্যই সামনে বুঝবেন।দুঃখের পর সুখ আসে,এই গল্পটিতেও তাই হবে।তাই খামোখা বিচলিত হওয়ার দরকার নেই।গল্পটি অনেকটা শেষের দিকে।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে