বড়_বেশি_ভালোবাসি
part : 16
writer : Mohona
.
সকালে….
নীড় মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নীড় : তুমি বড্ড selfish…
মেরিন : তাতে আমার বাপের কি?
নীড় : তোমার বাপের কিছুনা। but আমার তো অনেক কিছু…
মেরিন : যেমন??
নীড় : যেমন…?… আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি আর তুমি….
মেরিন : তো কি করবো? আপনাকে খাওয়াতে গেলে আপনি পারলে আমার হাতই খেয়ে ফেলেন।
নীড় : huh…
তখনই কলিংবেল বাজলো।
নীড় : এইরে.. এখান থেকে ১পাও নরবেনা।
মেরিন : কেন??
নীড় : কারন আমার মনে হচ্ছে তোমার জল্লাদ ভাইয়া আসছে।
মেরিন : খবরদার আমার ভাইয়াকে জল্লাদ বলবেননা।
নীড় : shut up….
.
নীড় গিয়ে দেখলো মেঘ দারিয়ে আছে। এই মুহুর্তে মেঘকে নীড়ের সাক্ষাত যম মনে হচ্ছে।
মেঘ: আমার বোন কোথায়?
নীড় : আআআমি কককিভাবে জানবো?
মেরিন : ভাইয়া আমি এখানে…. ☺️।
মেঘ : মিষ্টি বাচ্চা….
মেরিন দৌড়ে এসে মেঘকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় মনে মনে : উফফ…. বউ পেয়েছি কপাল গুনে…. এমন বউ পাওয়ার থেকে ১টা গাধা পাওয়া অনেক ভালো।
মেঘ : মিষ্টি বাচ্চা … তুমি ঠিক আছো তো?
মেরিন : উহু.. জানো ভাইয়া কালকে রাতে না উনার সেই বিশ্ব বখাটে ৪বন্ধু আমাকে তুলে নিয়ে এসেছে… ?…
মেঘ : ওলেলে লে কাদেনা সোনা…. আর নীড়, তোমার সাহস দেখে আমি just অবাক হচ্ছি। তোমাকে বলেছিনা মিষ্টি বাচ্চার থেকে দূরে থাকতে…. আর যেন ভুলেও তোমাকে আমার বোনের ত্রিসীমানায় না দেখি। চলো মিষ্টি কলিজা।
মেরিন : হামম। চলো।☺
নীড় : ?।
মেরিন মহা আনন্দে মেঘের সাথে যাচ্ছে। নীড় ওদের পথ আগলে দারালো।
.
নীড় : দারাও ভাইয়া…. আমার মেরিনকে , আমার মোহ পাখিকে আমার কাছে থেকে কেউ নিয়ে যেতে পারবেনা… এমনকি তুমিও না….
মেঘ: oh really ? ?..
নীড় ১টানে মেরিনকে মেঘের কাছে থেকে ছারিয়ে নিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে
বলল :yes really …. তুমি মেঘ হতে পারো… তবে মনে রেখো আমিও বর্ষন। বন্যা কেবল বর্ষনেরই। তাই বন্যাকে বর্ষন থেকে আলাদা করার শক্তি আল্লাহ ছারা কারো নেই।
মেঘ: এখনই দেখা যাবে। বন্যাকে বর্ষন থেকে নাই বা আলাদা করতে পারলাম কিন্তু বর্ষনকে তো বন্যা থেকে আলাদা করতে পারি।
বলেই মেঘ গান বের করে নীড়ের কপালে ঠেকালো। এখন তো আলাদা হতেই হবে।
মেরিন : ভাইয়া… shoot টা আমি করি…
মেঘ: নিশানা ভুল হলে কিন্তু…
মেরিন : হবেনা…
নীড় : ??।
মেরিন : আহারে বেচারা।
বলেই মেরিন ট্রিগার প্রেস করলো। কিন্তু তার ভেতর থেকে বুলেট না গোলাপ বের হলো।
নীড় : ?।
মেরিন গোলাপটা হাতে নিয়ে হাটু গেরে বসে
বলল : i love you my dark chocolate ….
নীড় : ??।
.
মেরিন : কি হলো এতো ব্লাসিং ব্লাসিং এর কি আছে? আমি কতোক্ষন বসে থাকবো এভাবে? নিজেকে কি star plus এর কোনো নতুন বউ মনে করছেন? যে এতো ব্লাস করছেন? ? তারাতারি ফুলটা নিয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করুন। আমার হাটু ব্যাথা হয়ে গেলো।
নীড় হেসে দিলো। কারন এগুলো সব মেরিনকে দিয়েই সম্ভব।
নীড় : বেশ হয়েছে। থাকো এভাবে…. huh…
মেরিন : যদি বসে থেকে থেকে আমার পা ব্যাথা হয়ে যায় না তবে….
নীড় : আমি কোলে নিয়ে ঘুরবো। ?।
সবাই হেসে দিলো। নীড় মেরিনের হাতের ফুল নিয়ে
বলল : i love you 2….
আর সবাই তালি দিলো।
.
মেঘ : sorry… আসলে সেদিন over react করে ফেলেছিলাম। কিন্তু কি করতাম বলোতো? মিষ্টি বাচ্চা যে আমার কলিজার টুকরা। কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম যে মিষ্টি বাচ্চা তো আমার কলিজার টুকরা মাত্র॥ কিন্তু মেরিন যে নীড়ের সম্পুর্ন কলিজাটাই…. আমি এমন কাউকেই তো চেয়েছিলাম আমার মিষ্টি বাচ্চার জন্য।
কবির : আর আমিও তো এই কারনেই ধরে বেধে নীড়ের সাথেই বিয়েটা দিলাম।
বলেই কবির-নীড় high five দিলো।
সবাই: ??।
মেঘ : বাবা তুমি জানতে?
কবির : তা নয়তো কি? ভুলে যেওনা মেঘ-মেরিন আমি তোমাদের বাবা। dark chocolate কে তো আমি সেইদিন থেকেই চিনি যেদিন সে আমার মেয়েকে দেখে “চান্দ মেরে দিল” গানটা গেয়েছিলো।
সবাই : ?।
.
৬মাসপর….
নীড়ের দাদুভাই-দীদার ৫৫তম marriage anniversary …. ঘরোয়া ভাবেই program হচ্ছে। program চলাকালীন হঠাৎ অধরা মাথা ঘুরে পরে গেলো।
মেঘ: অধরা…. ??
doctor check up করছে।
মেরিন ফিসফিস করে নীড়কে
বলল : শুনুন না dark chocolate …
নীড় : কি?
মেরিন : ভাবির সত্যিই সত্যি কিছু হয়ে যায়নি তো?
নীড় : what rubbish….
মেরিন: না আমি মুভিতে দেখেছি যে মিথ্যাটা সত্যি হয়ে যায়।
নীড় : shut up just shut your mouth up….
মেরিন:?
doctor বের হলো।
মেঘ: আমার অধরা…. ?।
ডক্টর : congratulations … মিস্টার মেঘ আপনি বাবা হতে চলেছেন।
মেঘ: সত্যি ?
ডক্টর : হামম।
মেঘ ডক্টরকে কোলে তুলে ঘুরতে লাগলো। মেরিন তো খুশিতে লাফাতে লাগলো।
মেরিন : আমি ফুপ্পি হবো আমি ফুপ্পি হবো…ধিনাক ধিনাক….
.
পরদিন…
সকালে…
দীদা: কি গো স্বতীন আমরা কবে রাজকন্যা বা রাজপুত্র পাবো?
মেরিন: রাজকন্যা – রাজপুত্র? ?। কিন্তু দীদা এই রাজা-রানী প্রথা না বাতিল। তবে লন্ডনে তো আছে। জাপানেও আছে।
সবাই: ??।
মেরিন: কিন্তু দীদা… রাজকন্যা-রাজপুত্র দিয়ে কি করবে?
নীড় : মাটি চাপা দেবে। এরপর ওদের গাছ হবে…. then সেই গাছ থেকে একের পর এক রাজকন্যা-রাজপুত্র পাওয়া যাবে….?।
মেরিন : সত্যি?
নীড় : idiot….
মেরিন : huh…
.
২দিনপর….
রাতে…
নীড় court থেকে ফিরলো। বুঝতে পারলো যে মেরিনের মনটা খারাপ। নীড় বারান্দায় চাঁদের আলোতে মেরিনকে কোলে নিয়ে বসলো।
নীড় : আমার বউটার মন খারাপ কেন?
মেরিন : আমি না আজকে tv দেখছিলাম।
নীড় : tv দেখে মন খারাপ?
মেরিন : উহু… দেখুন না dark chocolate tv তে মা হওয়া টওয়া নিয়ে ১টা program চলছিলো।
নীড় : হামম। তো?
মেরিন : ওটাতে বলল যে pregnant এর time এ নাকি মেয়েদের মা-বাবার স্নেহ এবং সান্নিধ্যের অনেক দরকার হয়। specially মায়ের। তা না হলে নাকে pregnant lady এর মুড off off থাকে। আর যেটার bad effect বাবুর ওপর পরে।
নীড় : হামম। তো? মেরিন : কি হামম তো হামম তো করছেন শুনি? যত্তোসব। দেখি ছারেন….
নীড় : ছারবো কেন? আমারও যে ১টা বাবু চাই। ১টা ছোট্ট মেরিন চাইযে আমার বাবুর আম্মু… সেদিন তো খুব বলেছিলে….
মেরিন লজ্জায় লাল নীল বেগুনী হয়ে গেলো।
.
৩দিনপর…
আজকে অধরার জন্মদিন। মেরিন নিজের হাতে কেক বানিয়েছে।
মেঘ : অধরা…
অধরা : হামম।
মেঘ: তুমি আমাদের সবাইকে শ্রেষ্ঠ gift দিতে চলেছো। তো আমাদেরও তো অধিকার আছে তোমাকে return gift দেয়ার।
অধরা মুচকি হেসে
বলল : হামম।
মেরিন : তাহলে ভাবি তুমি চোখ বন্ধ করো।
অধরা : কেন?
নীড় : surprise gift আছে।
কবির : যেটা নীড়-মেরিনের তরফ থেকে….
অধরা: কি?
মেঘ: আগে চোখ বন্ধ করোতো ।
অধরা চোখ বন্ধ করলো। ১মিনিটের মধ্যে চির মিষ্টি সুরে শুনতে
পেলো: শুভ জন্মদিন বাবাটা… happy birthday dear…
অধরা তারাতারি চোখ মেলল। দেখলো ওর মা-বাবা দারিয়ে আছে। খুশিতে ওর চোখে পানি চলে এলো। তবুও মুখ ঘুরিয়ে নিলো। ওর বাবা অনেক ক্ষমা চাইলো।
মেরিন : ভাবি… আমার জন্যেই তো সব? তাহলে আমার জন্য উনাদের ক্ষমা করে দাও please ….
অধরা: …
মেরিন : আমি তোমারও মিষ্টি বাচ্চা….
অবশেষে অধরা ওদেরকে ক্ষমা করলো। অনেক মেলোড্রামা হলো। এরপর অধরার birthday পালন হলো।
.
কিছুদিনপর….
মেরিন : ও dark chocolate ও dark chocolate …
নীড় ল্যাপটপে মুখ গুজেই
বলল :কি? ?।
মেরিন : আমারও বাবু লাগবে…
নীড় : হামম।
মেরিন : হামম কি? বলুন কবে দিবেন?
নীড় : সময় আসুক।
মেরিন :কিসের সময়?
নীড় : যেদিন আমার বউটা বাচ্চা থেকে বউ হবে সেদিন?
মেরিন : মানে কি হ্যা মানে কি? আমি কোন দিক দিয়ে বাচ্চা?
নীড় : সব দিক দিয়ে।
মেরিন : shut up…. আমার চাই মানে চাই চাই চাই…. এক্ষনি চাই… ?
নীড় : আরে কাদছো কেন?
মেরিন : আমার জামাই আমাকে বাবু দেয়না….
নীড় ভালোমতোই জানে যে মেরিনের এই ট্যা ট্যা আর বন্ধ হবার না। তাই নীড় ল্যাপটপ রেখে মেরিনের সাথে romance শুরু করলো। কারন এটা ছারা মেরিনের ট্যা ট্যা জীবনেও থামবেনা।
.
সবাই হসপিটালে OTএর বাইরে বসে আছে ।
মেরিন : আল্লাহ যেন টুইন হয়….
নীড় : আল্লাহ কিভাবে টুইন হবে…. ??
মেরিন : উফফ চুপ থাকুন তো। আল্লাহ যেন টুইন হয়….
নীড় : আরে টুইন যে হবে সেটাতো জানাই আছে।
মেরিন : ও হ্যা তাইতো । আল্লাহ যেন ১টা ছেলে ১টা মেয়ে হয়…. আল্লাহ যেন ১টা ছেলে ১টা মেয়ে হয়… আর শুনুন আমারও টুইন বেবিই লাগবে কিন্তু।
নীড় : হায়রে….
তখন ডক্টর বেরিয়ে এলো ।
ডক্টর : congratulations … ১টা ছেলে এবং ১টা মেয়ে হয়েছে।
মেরিনের খুশি আর দেখেকে। ফুপ্পি হওয়াতে যতোটা না খুশি তার থেকে বেশি খুশি ১টা ছেলে ১টা মেয়ে হয়েছে বলে। সবাই ভীষন খুশি। ছেলের নাম রাখা হলো তিশান আর মেয়ের নাম তিশা।
কিছুদিন মেরিন খান বাড়িতেই ছিলো। পুচকু ২টার সাথে। অবশ্যই নীড়ও ছিলো। বাসায় ফেরার পরও মেরিন যখন মন চাইতো তখন চলে যেতো তিশা-তিশানকে দেখতে।
.
কিছুদিনপর….
গভীর রাত…
নীড় মেরিনকে নিয়ে ১টা খুব বাজে স্বপ্ন দেখলো। যা দেখে নীড়ের ঘুমটাই ভেঙে গেলো। দেখলো মেরিন ওর বুকের ওপর এলোমেলো হয়ে বাচ্চাদের মতো শুয়ে আছে। নীড় ১টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। এরপর মেরিনের চোখে মুখে ঠোটে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো।
নীড় : এই স্বপ্ন যেন কিছুতেই সত্যি না হয় আল্লাহ। আমি আমার মোহ পাখিকে ছারা বাচতে পারবোনা…. সকল বিপদ আপদ যেন ওর কাছে আসার আগে আমি সেগুলোকে বুকে নিতে পারি। আমি থাকি আর না থাকি ও যেন সুস্থ সলামত থাকে।
.
স্বপ্নটা দেখে নীড়ের মনে মেরিনকে হারানোর ভয় ঢুকে গেলো। তাই
পরদিন থেকে নীড় সারাক্ষন মেরিনকে চোখে চোখে রাখে। বাসার বাইরে হাজারটা guard রেখে দিলো। খুব বেশি প্রয়োজন ছারা মেরিনকে বাইরে যেতে দেয়না। আর যেতে দিলেও নিজে সাথে করে নিয়ে যায় নিয়ে আসে।
মেরিন : আচ্ছা আপনার কাহিনি কি বলুন তো?
নীড় : কিসের কাহিনি?
মেরিন : কদিন ধরে এমন আজব ব্যাবহার করছেন কেন? আমাকে এতো চোখে চোখে রাখার কারন?
নীড় : আমার ইচ্ছা।
মেরিন : আরে রাখেন আপনার ইচ্ছা। আমার নিজেকে ১টা কয়েদি কয়েদি মনে হচ্ছে। আমার এভাবে ভালো লাগেনা।
নীড় : না লাগলেও কিছু করার নেই।
.
পরদিন…
মেরিন : কিছু তো ১টা ঘাপলা আছে। এমন করার কারন কি? ১কাজ করি guard গুলোকে ফাকি দেয়ার জন্য get up নেই। তারপর বের হই। আমাকে আটকে রাখা?
এদিকে নীড় cctv camera তে সব দেখছে। ও তো মেরিনকে বিয়ে করার আগের দিনই ও ঘরে cc camera রেখেছিলো।
নীড় : আল্লাহই জানে এখন আবার কি করবে।
মেরিন মুখে কালি টালি মেখে বিদঘুটে সাজ দিয়ে main gateএর কাছে গেলো। যেখানে গার্ডরা দারানো।
মেরিন : এই যে ভাইসাব আমারে একটু বাইরে যাবার দিতোইন দেখি….
নীড় : যাও…
মেরিন : কন্ঠ এমন কেন?
নীড় : চোখটা তুলে দেখো।
মেরিন তাকিয়ে দেখলো নীড় দারিয়ে আছে।
মেরিন আবালের মতো ১টা হাসি দিলো।
নীড় মেরিনকে কোলে করে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।
মেরিন রোজ কিছু না কিছু করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য। কিন্তু পারেনা।
.
কিছুদিন পর…
অনেক জেদ করে মেরিন খান বাড়িতে গেছে। নীড়ও গিয়েছিলো। কিন্তু ওর office থেকে ১টা জরুরি ফোন এসে পরায় নীড়কে একটু যেতে হলো। নীড় গেলেও ১০মিনিট পরপর মেরিনকে ফোন করছে।
কিন্তু ১বার ফোন দিলো তখন মেরিনের ফোন বন্ধ পেলো। তাই landline এ ফোন করলো। এরপর কনিকার মোবাইলে ফোন করলো। ২য় বার ফোন করার পর কনিকা ফোন ধরলো প্রচন্ড শব্দ আসছে।
নীড় : আম্মু মেরিন কোথায়…
জবাবে নীড় যা শুনতে পেলো তা সত্যিই ভয়ংকর।
ও শুনলো : hospital এ যাচ্ছে ,,, suicide attempt করেছে।
.
চলবে….