বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে পর্ব-০১

0
3441

?বাড়িওয়ালার রাগি মেয়ে?
?পর্ব:১
লেখা :Sakib Nisi?
.
.
> ব্যাগটা ধরুন তো!!
> মানে কি?? আমি কেন ব্যাগ ধরব? ?
> এত কথা বলেন কেন?? দেখছেন না সব জিনিসপত্র নিতে হচ্ছে?? ধরুন। ( কড়া গলায় বললাম ) ?
> আজিব তো এই কে আপনি?? আমাকে চিনেন আমি কে?? ??
> আমি নতুন ভাড়াটিয়া ৩ তলায় উঠেছি। আর আপনি কে সেটা জেনে আমার কি হুমমম। একটু হেল্প করলে কি হাতে ফোস্কা পড়বে নাকি???
> এটা আমার বাবার বাড়ি। আমি বাড়িওয়ালার মেয়ে আর আমাকেই বলছেন কাজ করতে এত সাহস আপনার??? ??
> ওহ তাহলে আপনি সেই কটকটি বেগম থুক্কু আপনি সেই মেয়ে যার কথা আংকেল বলেছিল?? ?
> এইইইই কি বললেন আমাকে?? খুব সাহস দেখছি আপনার। একটা উল্টাপাল্টা কথা বললে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম। ??
> সেটা পরে দেখব আগে ব্যাগটা নিয়ে উপরে চলুন।?
ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গেলাম তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও । ?
ওহহ হ্যা তোমাদের তো পরিচয় দেয়া হয়নি। আমি সফিয়ার কিন্তু এই গল্পে ছদ্মনাম থাকবে অাবির। আজ নতুন বাসায় উঠলাম পরিবার সহ। আব্বু আম্মু ভাইয়া ভাবী ভাতিজি এটাই আমার পরিবার। বাবা সরকারি চাকরি করেন। আর সাথে এতক্ষণ ঝগড়া করলাম মানে ফাউ কাজ করিয়ে নিলাম সে হলো এই বাড়ির একমাত্র মেয়ে মানে বাড়িওয়ালার মেয়ে। নাম টা এখনো জানা হয়নি ওর। তবে পরে জেনে নিব কোন উসলত দিয়ে। ??
ওরা ৪ তলায় থাকে আমরা ৩ তলায়। বড় ফ্লাট ৩ টা রুম। বেলকোনির সাথে আমার রুম। ?
এই বাসাটা নেবার একমাত্র কারন হলো বাবার অফিস, ভাইয়ার অফিস আর আমার ভার্সিটি ৩ টাই পাশাপাশি।
আর বাড়িওয়ালা আংকেলও খুব নরম মানুষ। ট্রাক থেকে সব মালামাল বাসায় উঠিয়ে সেগুলো গুছাতেই রাত হয়ে গেলো। ৯ টার দিকে বাড়িওয়ালা এলো দেখা করতে। আব্বু দরজা খুলে ভেতরে এনে আংকেলকে সোফায় বসতে দিল।
> ভাই কোন সমস্যা হচ্ছে নাতো?
> না না সব ঠিক আছে। বাসাটা সত্যি খুব সুন্দর।
> সারাজীবন পরিশ্রম করে একটা আশ্রয় বানিয়েছি আপনাদের দোয়ায়। কোন প্রকার সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন।
> সে তো ঠিক আছে। আজ তো সব গুছালাম কাল ভাবী কে নিয়ে আসবেন বেড়াতে।
> সে তো আসবই। আপনার ভাবী আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু পরে উনিই বললো সবকিছু ঠিকঠাক করতে সময় লাগবে এখন না গিয়ে কাল যাব তাই আমিই এলাম।
> তাহলে তো ভালোই হলো।
> ওহহ হ্যা আপনারা আজ রাতে আমার বাসায় খাবেন। আপনার ভাবী রান্না করেছে। আজ আর গ্যাস নষ্ট করে লাভ নেই কাল সকালে করবেন। আপনারা গুছিয়ে চলে আসুন আমি গিয়ে ওদিকে সব ঠিক করি।
> হাহা ভাই আপনি দেখছি সব খবর রাখেন।
> কি যে বলেন ভাই আমি কখনো ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালা সম্পর্কে বিশ্বাস করিনা। সবাই এক পরিবার।
কথা হচ্ছিল আব্বু আর আংকেলের।
ডিনারের দাওয়াত পেলাম, এমনি তে কাজ করে ক্ষুধা লেগেছে অনেক। আমার মত একটা পিচ্চি পোলা কি এত কাজ করতে পারে?? ভাইয়া টা ও হারামি একটা কাজ করেনি সব আমাকে দিয়ে করিয়েছে। বাড়ির ছোট বলে কেউ আদর করে না। ??
ফ্রেশ হয়ে সবাই ওপর তলায় গেলাম আংকেল দরজা খুলে আমাদের দেখে আন্টিকে ডেকে বললো।
> কই অর্পিতার আম্মু দেখো কারা এসেছে।
আমি বুঝে নিলাম ওই কটকটির নাম তাহলে অর্পিতা। ??নামটাও যেমন ঠিক তেমনই কর্কট মেয়ে একটা।
তাতে আমার কি?? আমি তো ভালো ছেলে। ☺☺
আন্টি এসে সালাম দিলো তারপর সবাইকে নিয়ে গেলো ভেতরে। আমার ছোট মামনিকে আগে কোলে নিয়ে দাদু দাদু বলে আদর করলো। সবাই ওকে দেখে বলে এত মিষ্টি একটা মেয়ে। ?
বুঝলাম তারা সবাই খুব মিশুক। ভালোই লাগলো। সবার সাথে কথা বলছিলাম। আন্টি আমাকে জিজ্ঞেস করলো কিসে পড়াশোনা করি কোথায়। সবই জানালাম।
> অপি এই অপি দেখে যা কারা এসেছে বাসায়।
আন্টি তার মেয়ে কে ডাকলো। আবারও বুঝলাম বাসায় তাকে আন্টি অপি বলে ডাকে। একটা মানুষের এত নামের কি দরকার?? ??
রুমের দরজা খুলে কটকটি মানে অপি ম্যাডাম বের হলেন অবশেষে। সাদা একটা জামা পরা। লম্বা চুল, হাসিমুখ, খুব সুন্দর লাগছিলো দেখতে।?
ওয়েট ওয়েট আমি ক্রাশ,
খাইনি কিন্ত শুধু বলছিলাম আর কি।??
এসে সালাম দিয়ে বসলো সোফায়। একে একে সবার সাথে পরিচিত হলো। তখন জানলাম সে এবার ৯ম ক্লাসের ছাত্রী। সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে শেষে যখন আমার দিকে তাকালো দুজনেরই মুখে যেন কালো মেঘ জমে গেলো। আমি মুখ ভেংচি দিলাম আগে।? তাতে তার মুখটা খুলে গেলো হা করে। ?
রাগে ফুলছে তাতে আমার কি?? ?
আন্টি বললেন,
> কিরে তোর ওই ভাইয়ার সাথে পরিচিত হলি না??
আমি বললাম আন্টি আমি কটকটিকে চিনি। থুক্কু ও যে আপনার মেয়ে সেটা জানি। সকালে দেখলাম রাস্তায় চিৎকার করে সবাইকে বলছে। ও এই বাড়ির মেয়ে। তখনি জানছি,, ??
> একদম মিথ্যা কথা বলবেন না নিজে আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিছে আবার বড় বড় কথা। ??
তখন সবাই আমার ওই কথা শুনে হাসতে লাগলো।
> আমার মেয়েকে আজ অবধি পানি ঢেলে খাওয়াতে পারিনি আর তুমি আজ ওকে দিয়ে কাজও করিয়ে নিলে বাবা হাহাহাহা। ভালো করেছো।?
> আন্টি আমি এসব ভালো পারি কাকে কখন কোথায় টাইট দিতে হয়।?
সবাই আরেকচোট হাসলাম। আর ওদিকে কটকটি বেগম রাগে জলছে। যেন পরে আমাকে চিবিয়ে খাবে।
তারপর সবাই মিলে ডাইনিং টেবিলে বসলাম খেতে আমার সামনেই বসলেন অপি ম্যাডাম। ওর চোখে চোখ পড়তেই আমি জগটা ঠিক ওর সামনে রাখলাম যাতে ওর চেহারা না দেখা যায়। ??
ভাবী আমার পাশে বসে এসব খেয়াল করছে আর চিমটি দিচ্ছে। ?
আন্টির হাতের রান্না খেয়ে খুব ভালো লাগলো যদিও আম্মুর রান্না ছাড়া কারোটা আজ অবধি ভালো লাগে নি।
> আন্টি মাঝে মাঝে এসে খেয়ে যাব এত সুন্দর রান্না।?
> যখন মন চায় এসো কোন সমস্যা নেই।
আমি মাথা নাড়িয়ে খেয়েই যাচ্ছি হটাত দেখলাম কে যেন আমার দিকে শকুনি চোখে তাকিয়ে আছে। কটকটি বেগম ছাড়া আর কে এমন করবে। ওর দিকে তাকাতেই মুখ ভেংচি কেটে আগেরটা শোধ দিল।
প্রথম দিনই এমন অবস্থা না জানি সামনে কি আছে আমার কপালে।
খাওয়া শেষ করে যখন বের হবো তখন অপির পাশে দাড়িয়ে বললাম।
> সারাক্ষণ মুখে ঠাডা পড়ার মত চেহারা না বানিয়ে একটু হাসবে। না হলে পেচার মত লাগে। ???
বলেই দরজা দিয়ে দৌড়ে চলে গেলাম।
আর সে রাগে জলতে থাকলো। ???
রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। সারাদিন অনেক খাটাখাটি হইছে শরীরটা ক্লান্ত তারওপর এত ঝগড়া করলে এনার্জি কই পাবো। ?
তারপর ভাবলাম, মেয়েরা সারাদিন এত ঝগড়া করার এনার্জি কই পায়?? রক্তে ওদের ঝগড়ার কোন কণা আছে মনে হয়। ???
চোখটা বন্ধ করতেই অপির মুখটা ভেসে উঠলো। ফাল দিয়ে উঠে বুকে থুড়থুড়ি মেরে দোয়া পড়লাম। আল্লাহ ওই মেয়ের চেহারা আর চোখে ভাসাইও না। ??
ঘুমটা রাতে ভালোই হলো। পরদিন সকালে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বাসা থেকে বের হবো তখন দেখি সিড়িতে কে জানি দাড়িয়ে আছে চোখগুলো বড় বড় করে রাগে জলছে আমাকে দেখে।
আমি একবার একসিড়ি নামি তো দু সিড়ি উঠে যাই।
তারপর সাহস নিয়ে নামলাম কিছু না জানার ভান করে
ওর পাশ দিয়ে যাবার আগেই আমার কলার ধরে বললো ……………..
চলবে……..T͟o͟ b͟e͟ c͟o͟n͟t͟i͟n͟u͟e

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে