“ফাঁদে পড়ে”(শেষ পর্ব)

0
1532

“ফাঁদে পড়ে”(শেষ পর্ব)

এক ফাঁকে তিতাসের ঘরে গেলাম। দেখলাম সে জানালার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো তার নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে। এই প্রথম নিজের অপকর্মের জন্য আমার ভীষণ অনুসূচনা হচ্ছে। জানি এখন কথা বললেই সে আমাকে উরাধুরা ঝাড়ি দেবে কিন্তু আমি নিরুপায়। ঝাড়ি হজম করার প্রস্তুতি নিয়েই বললাম-
“বাবু এখন কী করি বলো তো?”
সে পেছন ফিরে আমার দিকে তাকালো। তারপর রেগে উঠে বলল-
“নিজের বিপদ তো নিজেই ডেকে এনেছো। সাথে আমাকে আরও বড় বিপদে ফেলেছো।এখন বলছো কেন? কে বলেছিল গাড়ির সাথে ধাক্কা খেতে? এই তোমার বুদ্ধি সুদ্ধি কবে হবে বলো তো? কোন কুক্ষণে যে তোমায় ভালোবেসেছিলাম!”
“ওই একটা ভুল ধরে বসে থাকার সময় এখন বলো?”
“ওই একটা ভুলই তো সব উলট পালট করে দিয়েছে। আমি কি করবো? কিচ্ছু করতে পারবো না। তুমি যাও তো! আমার মাথা হ্যাং হয়ে গেছে।”
হুট করে আমার মেজাজ চরম গরম হয়ে গেল। রাগ করে বললাম-
“তোমার মাথায় এই হ্যাং ছাড়া তো আর কিচ্ছু নেই।”
“মেজাজ গরম করে দিও না তো।”
“বাড়িতে বিয়ের কথা বলতে তো পারনি, ভালো হয়েছে আমি তোমার দাদী হয়েছি। থাকো তুমি তোমার হ্যাং নিয়ে, হুহ।”
তার উত্তরের অপেক্ষা না করে রাগ করে বেরিয়ে এলাম। জানি দুই চারটা ধমকে কথা বলা ছাড়া তার আর কিছুই করার নেই।

হানিমুনে এলাম কক্সবাজার। দাদু হোটেলে ডাবল বেডের একটা রুম নিলেন। আমার মেজাজ গরম হয়ে আছে। এরচেয়ে বালিচাপা থাকাও তো ভালো ছিল। হঠাৎ করেই আমার মৃত্যুর ভয় কেটে গেল। আমি রাগে লুচির মতো ফুলে আছি। আর মনে মনে বালি চাপা পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দাদু আমার সামনে দাঁড়ালেন। কিছুক্ষণ চুপচাপ চেয়ে থাকলেন। তারপর হঠাৎ তার কি যে হলো তার দৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে রোমান্টিক হয়ে গেল। উনার দৃষ্টি দেখে নায়ক আলমগীরের কথা মনে পড়লো। বুইড়া বয়েসেও যে নিজেকে প্রেমিক ভেবে বসে আছেন। দাদুর হাবভাব ভালো ঠেকছে না। মরণ! এই বয়সে বুইড়া হিরো হিরো ভাব নেয়। আমি আমার দৃষ্টি অন্য দিকে নিলাম। কি আর করবো? কিছু তো করার নেই। উনি রোমান্টিক চোখে তাকিয়ে বললেন-
“শোনো কাল আমরা বিয়ে করবো?”
উনার কথা শুনে তো আমার মাথায় যেন ঠাডা পড়লো। এতদিন চুপচাপ সব সহ্য করেছি শুধু মরার ভয়ে। আজ হুট করেই যেন মরার ভয়টা পালিয়ে গেছে। আমি চেঁচিয়ে উঠে বললাম-

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


“কিহ?”
“হ্যাঁ কাল আমরা বিয়ে করবো। আজকেই করতাম কিন্তু অনেক রাত হয়ে গেছে তাই কাল সকালে করবো।”
“আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?”
“এখানে মাথা খারাপের কি আছে? বিয়ে একটা বৈধ কাজ। আমি অবৈধ কিছু তো করছি না।”
“আপনি অবৈধ কিছুই করছেন।”
তিনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন-
“বুঝিয়ে বলো।”
“আপনাকে তো বলেছিই যে, আমার লাভার আছে। আর আমরা একে অপরকে খুব ভালোবাসি। অথচ আপনি সব জেনেও জোর করে আমাকে বিয়ে করতে চলেছেন। আমি রাজী নই তাও আপনি বিয়ে করবেন, এটা কি অবৈধ না?”
“শোনো সুইটি, যুদ্ধে আর প্রেমে ভুল বা অন্যায় বলে কিছু নেই। আর অবৈধ বলেও কিছু নেই। যেকেউ যেকাউকে ভালোবাসতেই পারে। আর ক্ষমতা থাকলে সেটা খাটিয়ে বিয়েও করতে পারে।”
“কি ভেবেছেন আপনি? আমি সিনেমার ডায়ালগের মতো বলবো, “আমার দেহ পাবেন মন পাবেন না” এটা বলবো? একদম এসব বলবো না।”
“এসব বলতেও হবে না সুইটি। বিয়ের পর মন জয় করে নেবো।”
“আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না।”
“ইচ্ছে ছিল দ্বিতীয় বিয়েটা হানিমুনে এসে করবো। সেই ইচ্ছেটাই এবার সত্যি করবো আর করবোই।”
“এরচেয়ে আমাকে গুলি করে পাথর চাপা দিন। আমি আমার প্রেমিককে ভীষণ ভালোবাসি, তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করার চেয়ে মরে যাওয়াও অনেক শান্তির। প্লিজ আমাকে মেরে ফেলুন!”
“এসব তুমি কি বলছো সুইটি?”
“আমি বিশেষ কিছুই বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলবো, হয় আমাকে মেরে ফেলুন, নয় আমি সুইসাইড করবো।”
তিনি ভড়কে গিয়ে ঠান্ডা গলায় বললেন,
“শান্ত হও বেবি।”
“রাখেন আপনার সুইটি বেবি, আপনার নাতি জীবনেও আমাকে এসব বলেছে? পুরাই তো একটা ধাতব পদার্থ সে।”
“আমার নাতি এসব বলবে কেন?”
যাহ্ মুখ ফসকে কি সব বলছি! এখন ম্যানেজ করি কি করে? আবার নতুন বিপদ, ধুর! আমি কথা ঘুরিয়ে বললাম-
“আসলে নাতিরা তো দাদীদের এমন সব বলেই থাকে। আমার ভাই আমার দাদীমাকে সুইটি বিউটি কিউটি বেবি এসব বলে।”
“ওহ আচ্ছা। কিন্তু আমার নাতি তো আসলে মেয়েদের সাথে তেমন মিশে না। তাই তার মুখে এসব কথা নেই। আচ্ছা তুমি চাইলে আমি তাকে বলবো সে যেন তোমাকে বেবি দাদী বলে ডাকে।”
ইয়া মাবুদ! আমার কপালে এটাও লেখা ছিল? আমার প্রেমিক আমাকে বেবি দাদী বলে ডাকবে? দাদুর পিস্তলটা হাতে পেলে নিজের মাথায় নিজেই গুলি করতাম এখন। বললাম-
“থাক এসব বলে আমাকে ডাকতে হবে না।”
“তা বললে হয় নাকি? এত কম বয়সী সুন্দরী দাদী কয়টা ছেলের কপালে লেখা থাকে বলো?”
“একদম আমাকে দাদী টাদী বানাবেন না।”
“দাদুর বউ তো দাদীই হবে।”

আমি কিছু বলতে যাব তখনি হঠাৎ দরজায় নক। দরজা খুলতেই তিতাসকে দেখে তো আমরা দু’জনই অবাক। সে যে এখানে আসবে তা আমি ভাবতেই পারিনি। তিতাস তীক্ষ্ণ চোখে দাদুর দিকে তাকিয়ে সামনে এগিয়ে এলো তারপর আমার বাম হাতটা শক্ত করে ধরে টেনে দরজার দিকে যেতেই দাদু বললেন-
“দাঁড়াও!”
তিতাস কিছু না বলে দাঁড়িয়ে গেল। দাদু ঠান্ডা গলায় বললেন-
“তুমি তোমার দাদীকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?”
“স্টপ দাদু। খবরদার তুমি কুসুমকে আমার দাদী বলবা না।”
“দাদুর বউকে তো দাদীই বলে সবাই।”
“সে আমার দাদী নয়, বরং সে তোমার নাতি বউ।”
কথাটা বলেই তিতাস আমাকে বলল-
“যাও তোমার দাদা শ্বশুরকে সালাম করে এসো।”
আমি টুপ করে গিয়ে দাদুকে সালাম করে আবার তিতাসের পাশে দাঁড়িয়ে বললাম-
“আবার হাত ধরো বাবু।”
তিতাস কিছু বলার আগেই দাদু বললেন-
“এসব কি হচ্ছে তিতাস?”
“আমদের রিলেশনের বয়স প্রায় তিন বছর। আমরা একে অপরকে ভালোবাসি আর তুমি হুট করেই তাকে নিজের বউ বানিয়ে বাড়িতে আনলেই আমি মানবো নাকি?”
তিতাসের কথায় দাদু অবাক হলেন না। তার ভেতরে তেমন রিয়্যাকশই দেখলাম না। উনি বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বললেন-
“এই কথাটা বলতে তোমার এতোদিন লাগলো?”
তিতাস মাথা নিচু করে বলল-
“সাহস পাইনি।”
“হুট করে আজ এত সাহস কোথায় পেলে?”
তিতাস জবাব দিলো না। দাদু আবার বলতে শুরু করলেন-
“এখন তো দেখছি তোমার নায়িকা মৌসুমী গার্লফ্রেন্ডই বেশি সাহসী।”
তিতাস অবাক চোখে তাকিয়ে বলল-
“মানে?”
দাদু মুচকি হেসে বললেন-
“সেদিন ব্যাংক থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতেই মখলেস বলল, এই মেয়েটা নাকি আমার গার্লফ্রেন্ড। বিষয়টা খটকা লাগলো। যদিও মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করার পর বলল, ভুল করে বলে ফেলেছে। তখন আমার সন্দেহ আরো বেড়ে গেল। আমি তাকে জোর করে গাড়িতে তুললাম। বললাম সত্যি কথা না বললে গুলি করে বালিচাপা দেবো। সে বললো, তার প্রেমিকের গাড়িটাও নাকি এমনই দেখতে তাই সে ভেবেছে এটা তার প্রেমিকের গাড়ি। সে সিনেমা প্রেমী তাই চেয়েছে গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে রোমান্টিক একটা ঘটনা ঘটাতে। তাই সে তার বন্ধুদের ডেকে এনে বখাটে ছেলে সাজিয়ে সে আমার গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়েছিল। তবে সে ভাবতেই পারেনি যে এটা একটা দাদু বয়সী লোকের গাড়ি। ওর মুখে এমন কথা শুনে সত্যিই আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। আর সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলাম যখন দেখলাম মেয়েটার ফোনের হোম স্ক্রিনে তোমার ছবি। আমি ভীষণ খুশিও হয়ে ছিলাম এই ভেবে যে, আমার নাতি জীবন সঙ্গী বাছাই করতে ভুল করেনি। এত সরল একটা মেয়ে আমার বাড়ির বউ হবে এটা ভাবতেই আনন্দে বুকটা ভরে গেল তখন। ভেবেছিলাম কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেবো কিন্তু ওর ফোনের হোম স্ক্রিনে তোমার ছবি দেখে বাধ্য হলাম তাকে বাড়ি আনতে। যাকে বাড়ির বউ বানাবো তাকে তো একটু যাচাই করে দেখতেই হবে। এছাড়াও আমার মাথায় একটা প্ল্যান এলো। একরোখা গোয়াড় নাতিকে একটু নাকানি চুবানি খাওয়ানোর সূবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি। তুমি আমাকে দিনরাত জ্বালাও হিরো, তাই তোমাকেও জ্বালানোর একটা সুযোগ পেলাম। তাই আমি কুসুমকে থ্রেড করলাম। বললাম, আমি গুন্ডাদের গড ফাদার। আমার কথামতো না চললে গুলি করে বালিচাপা দিয়ে দেবো। সে ভয় পেয়ে গেল আর সেই ভয়টাকেই কাজে লাগিয়ে এত দূরে এলাম। আমি জানতাম তুমিও কুসুমের পেছন পেছন এখানে আসবে তাই তোমার জন্যও একটা রুম বুক করেছি। এখন নিজের তুমি নিজের রুমে যাও তো। আমি কুসুমের সাথে একটু সিনেমার গল্প করবো।”

বাপরে বুদ্ধি মাইরি! আগে থেকেই জানতো তিতাস আমার বয়ফ্রেন্ড তাও একটুও বুঝতে দেয়নি! কি ভয়ানক সাংঘাতিক লোক! এজন্যই তিতাসকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওসব করেছে। আর আমি মনে মনে কত কি ভেবেছি।
তিতাস চেঁচিয়ে উঠে বলল-
“একদম অন্যের বউয়ের সাথে কোনো গল্প নয়। এই রুমে আমরা তিনজনই থাকবো।”
“বাব্বাহ হবু বউকে একটুও ছাড়তে পারছো না?”
“অনেক জ্বালিয়েছো দাদু। এবার থামো।”

পরেরদিন আমরা ফিরে এলাম। দাদু আমাকে নিজে গিয়ে আমাদের বাড়িতে রেখে এলেন আর বিয়ের তারিখও পাকা করে এলেন। বাড়িতে এসে জানলাম দাদু আগেই বাড়িতে বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করে সব বলে ঠিকঠাক করেই রেখেছেন।
দাগ থেকে যদি ভালো কিছু হয় তাহলে দাগই ভালো। আর ধাক্কা থেকে যদি প্রেমিক বর হয়ে যায় তাহলে ধাক্কা খাওয়া ডাবল ভালো।

বাসর ঘরের বিছানায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছি। দরজার আওয়াজে হালকা ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম। দাদু আর তিতাস ঠ্যালাঠেলি করছে। তিতাস কিছুতেই দাদুকে ভেতরে আসতে দেবে না। এদিকে দাদু ভেতরে এসেই ছাড়বেন। অবশেষে দাদু জোর করেই ভেতরে এলেন। বিছানায় বসে তিতাসের দিকে তাকিয়ে বললেন-
“এতদিন তো আমাকে পাহারা দিয়ে রেখেছো। আজ আমি তোমায় পাহারা দেবো হিরো।”
তিতাস মুখটাকে তেতো করে বলল-
“একদম না দাদু। এখনি নিজের ঘরে যাও।”
দাদু দুষ্টুমির চোখে তাকিয়ে বললেন-
“উহু।”
“তোমার আর দাদীমার বাসর ঘরে কি আমি পাহারা দিয়ে ছিলাম?”
“দিয়েছো তো, তবে আমার আর তোমার কুসুম দাদীর বাসর ঘরে।”
“দাদু একদম কুসুমকে আমার দাদী বলবা না।”
দাদু আমার মাথায় হাত রেখে বললেন-
“অনেক বছর আগে আমার রাঙা বউ অভিমান করে না ফেরার দেশে চলে গেছে। এতগুলো বছর পরে আমার রাঙা বউ আবার ফিরে এসেছে।”
আমি মুখ তুলে দাদুর দিকে তাকালাম। তার চোখে আমি তার রাঙা বউকে দেখতে পেলাম। কতটা গভীর মমতায় সে তার রাঙা বউকে মনের গভীরে আগলে রেখেছেন। তিতাস বলল-
“অন্যের বউকে নিজের বউ ভাবা বাদ দাও দাদু। আর এখন যাও।”
দাদু দুষ্টুমির চোখে তাকিয়ে বললেন-
“ঠিক আছে আমি দরজার ওপাশেই আছি। পরিস্থিতি বুঝে দরজা ভাঙা হবে। টিকটিকি তুই আজকেও আয়।”
কথাগুলো বলেই দাদু মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলেন। দাদু চলে যাবার পর তিতাসকে বললাম-
“কি গো ঘোমটা সরাবে না?”
“এজন্মে তো কখনো ঘোমটা দাওনি। আজ একটু থাকো না ঘোমটা দিয়ে।”
“মানে কি?”
“তোমার আহম্মকি আমাকে নাকানি চুবানি খাইয়েছে। তোমার শাস্তি প্রাপ্য আছে।”
“আমার আহম্মকির জন্যই আজ বাসর ঘরে বসে আছো। নইলে চুল দাড়ি পেকে যেতো তাও তো বাড়িতে বিয়ের কথা বলতে পারতে না।”
“ঠিকই বলতাম।”
“কোন মোল্লার দৌড় কোন মসজিদ পর্যন্ত তা আমার জানা আছে।”
“ভেবেছিলাম তুমি পাগলি।”
“এখন কি সুস্থ মনে হচ্ছে?””না, এখন মহাপাগলি মনে হচ্ছে।”
“কিহ?”
“ঘোমটা সরাচ্ছি বাবাহ, জোরে কথা বলো না, বুড়ো দরজা ভাঙতেও পারে।”

সকালে ঘুম ভাঙতেই নাতি নাতনি আই মীন ননদ দেবরদের সাথে দেখা। আমি ভীত চোখে তাকিয়ে আছি। ননদীনি কাছে এসে বলল-
“তোমায় কিন্তু দাদীমা বলেই ডাকবো।”
“কেন?”
“তোমাকে দাদীমাতেই মানায়।”
আমাকে কি বুড়ি বুড়ি লাগে? কি কপাল আমার!

বিয়ের এক সপ্তাহ পরে আমরা হানিমুনে এসেছি। তবে তিন জন। আমি তিতাস আর দাদু। দাদু যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন নাকি আমাদের পাহারা দেবেন। একরোখা গোয়াড় ছেলেটা গ্যারাকলে পড়েছে। আমার অবশ্য ভালোই লাগছে। তিতাস তো মুখটাকে হাড়ি বানিয়ে রেখেছে। আমি আর দাদু ছবি উঠছি, ক্যামেরাম্যান তিতাস।
#পরিসমাপ্তি

বিঃদ্রঃ গল্পের কাহিনী এবং চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে গল্প কখনোই মিলবে না। জীবন কখনও গল্পের মতো সাজানো গোছানো হয় না। গল্পটা শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য লেখা হয়েছে তাই বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়।

Written by- Sazia Afrin Sapna

পর্ব-৬
https://m.facebook.com/groups/884724498624937?view=permalink&id=942105922886794

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে