প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৫৭
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আহানা ঘুম ঘুম কণ্ঠে বললো”থ্যাংক ইউ”
.
শান্ত হয়ত শুনলো না,সে এখন নানা চিন্তায় বিভোর,চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলো সে
পরেরদিন সকালে আহানা যখন ঘুম থেকে উঠলো তখনই ওর হুস আসলো যে আসলেই কাল রাতে কি কি হয়েছিলো,সে কি কি করেছিলো
সব মনে পড়তেই জিভে কামড় দিয়ে আহানা পাশে তাকালো,শান্ত উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছে এক কোণায়
আহানা আর ওখানে না থেকে বিছানা থেকে নেমে ওয়াসরুমের দিকে দৌড় দিলো
আয়নার কাছে এসে নিজেই নিজেকে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে টমেটো সস হয়ে গেলো একদম
তারপর চোখ বুজে কোনো রকম ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরে চলে আসলো
শান্তর সামনে আর যাওয়া যাবে না,লজ্জায় তার মাথা কাটা যাচ্ছে সব ভেবে
চুপচাপ নাস্তা বানিয়ে নিলো আহানা,কাজ করার সময় সে খেয়াল করলো রিপা ওর দিকে চেয়ে মিটমিট করে হাসছে
এর কারন কি আহানা বুঝলো না তারপর কৌতুহলবশত জিজ্ঞেস করেই বসলো “যে কি সমস্যা?এরকম হাসার কারণ কি”
.
রিপা হাসি থামিয়ে বললো”না তো কিছু না,এমনি ”
.
আহানা আর জেরা করলো না,খাবারগুলো নিয়ে টেবিলে রাখতে গিয়েই দেখলো শান্ত গোসল করে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে এদিকেই আসতেছে
পরনে হালকা নীল রঙের টিশার্ট আর গলায় ঝুলানো সাদা তোয়ালে,চুলগিলো এলোমেলো হয়ে আছে,ভিজে একাকার
আহানা কিছুক্ষনের জন্য সব কিছু ভুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে শান্তকে দেখলো তারপর সব আবার মাথায় আসতেই পালিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেলো সে
শান্ত সোফায় বসে টিভি অন করলো তারপর চেঁচিয়ে বললো”মা!!!খাবার খেতে আসো,নিতু তুমিও আসো,আমি সবার সাথে নাস্তা করে তারপর অফিসে যাবো”
.
নিতু চুলে জুটি করে এসে চেয়ারে বসেছে শান্তর কথামতন আর মা ও তার হুইলচেয়ার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এদিকে আসলেন,রিপাও গেছে সার্ভ করতে এদিকে আহানা নড়ছে না রান্নাঘর থেকে,তার খুব লজ্জা লাগছে শান্তর সামনে যেতে
যে কিসের জন্য সে শান্তকে চড় মেরেছিলো সেই কিস কিনা সে নিজ থেকেই করে দিলো
হায়হায় কি লজ্জাকর একটা ব্যাপার!
.
শান্ত খেতে বসে এদিক ওদিক চেয়ে বললো”আহানা কোথায়?”
.
রিপা শান্তি রহমানের প্লেটে রুটি রাখতে রাখতে বললো”সে তো এতক্ষণ রান্নাবান্না সব করেছে,তাও রান্নাঘরে এখনও,মনে হয় চা বানাচ্ছে”
.
আহানা খেতে আসো,চা পরে হবে
.
আহানা ঢোক গিলো রান্নাঘরের দরজার কাছে এসে আড়ালে থেকে বললো”আমার শরীর খারাপ তো,পরে খাবো,খিধে নেই এখন”
.
শান্তর মনে পড়লো আহানার জ্বরের কথা,সে এবার এক ধমক দিয়ে বললো”তোমার জ্বর তার মধ্যে এতসব নাস্তা বানিয়েছো এখন আবার নাস্তা করতে লেট করছো,জলদি করে নাস্তা করে ঔষুধ খাও,আসো এদিকে!”
.
আহানা এবার কি করবে?কি বলবে?
কোনো উপস্থিত উপায় না পেয়ে মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে চেয়ে সে পা টিপে টিপে ডাইনিং রুমে আসলো
.
শান্ত খেয়াল করেছে আহানা ভুলেও ওর দিকে তাকাচ্ছে না,কোনোমতে মায়ের দিকে চেয়ে উনার পাশে গিয়ে বসেছে সে
শান্ত আর ব্যাপারটা নিয়ে ভাবলো না,নাস্তা করে উঠে রুমে গেলো রেডি হতে
আহানা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে রিপাকে খুঁজছে,শান্তকে দিয়ে আসার জন্য, সে কিছুতেই যাবে না
কিন্তু সমস্যা হলো রিপা নিতুকে রেডি করে দিচ্ছে ওর স্কুল বাস যেকোনো সময় চলে আসবে তাই
আহানা তাই বাধ্য হয়ে চায়ের কাপ নিয়ে করিডোর দিয়ে এসে চোরের মতন শান্তর রুমে ঢুকলো
শান্ত তখন বিছানায় বসে হাতে ঘড়ি পরছিলো
আহানা ওর দিকে চায়ের কাপটা বাড়িয়ে ধরে বললো”নিন”
.
শান্ত কাপটা নিলো তারপর আহানাকে কিছু বলার আগেই ও চলে যেতে নিলো,শান্ত তার আরেক হাত দিয়ে আহানার হাত ধরে ওকে আটকে ফেললো
আহানা চুপ করে আরেকদিকে ফিরে আছে
.
কি ব্যাপার বলোতো?আমার চোখে চোখ রাখতে এত কিসের সমস্যা??
এমনটা নয়ত যে কাল যে পাকনামি করছো তার মানে এখন বুঝে ভেতরে ভেতরে লজ্জায় মরে যাচ্ছো?
.
আহানা জিভ দিয়ে ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে বললো”নাহহহ তো!আসলে”
.
শান্ত আহানাকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে ফেললো তারপর চুপ করে ওর দিকে চেয়ে বললো”যাই হোক,যেটা করেছো ভালোই করেছো,নেক্সট টাইম তাহলে আর চড় খেতে হবে না আমাকে,কি বলো?”
.
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,কোনো কথা নেই মুখে
শান্ত ওকে দুলাতে দুলাতে বললো”কেমন লাগছে বরের কোলে বসে??দুলতে কেমন লাগছে?”
.
আহানা মনে হয় এবার মরেই যাবে লজ্জায়,উঠতে গিয়েও পারছে না
শান্ত ওর এক হাত দিয়ে আহানার পিঠ ধরে রেখেছে আরেক হাত থেকে চায়ের কাপ রেখে সেই হাত দিয়ে আহানার হাত ধরে রেখেছে
.
আহানা নিজেকে শক্ত করে বললো”মা কি করছে গিয়ে দেখে আসতে হবে,আমি যাই?”
.
শান্ত আহানার হাত ছেড়ে দিয়ে বললো”যান!সাবধানে থাকিয়েন”
.
আহানা কথাটা শুনে থেমে গিয়ে শান্তর দিকে তাকালো,তারপর এগিয়ে এসে শান্তর কোটটার দিকে চেয়ে বললো”আপনার বুকের ক্ষতটা সেরেছে?দেখি একটু”
.
সেরেছে,হালকা একটু বাকি,সেটাও ঠিক হয়ে যাবে
.
আজ অফিসে না গেলে হয় না?
.
কাজ কে করবে?এমনিতেও প্রচুর মিস দিয়েছি আর দেওয়া সম্ভব না,ডোন্ট ওয়ারি
.
শান্ত ল্যাপটপের ব্যাগটা হাতে নিয়ে চলে গেলো
আহানা দরজার কাছে এসে ওর চলে যাওয়া দেখছে,ও চলে যেতেই আহানা এবার শান্তি রহমানের রুমে এসে হাজির হলো,উনি বারান্দার কাছে বসে গন্ধরাজ ফুলগুলোর সারি দেখছেন হাতে তফসি নিয়ে
.
মা একটা কথা বলবো??
.
মা বারান্দা থেকে চোখ সরিয়ে আহানার দিকে তাকালেন এবার
.
আহানা মুচকি হেসে বললো”তোমার শান্ত কি কাউকে ভালোবাসতো?
.
মা হাসলেন তারপর হুইলচেয়ার ঘুরিয়ে চললেন শান্তর রুমের দিকে
আহানাও এক রাশি প্রশ্ন নিয়ে উনার পিছু নিলো
উনি শান্তর রুমে ঢুকে ওর আলমারির কাছে আসলেন তারপর আলমারিটা খুলে নিচের ডেস্ক গুলো খুঁজে খুঁজে একটা ছবি বের করলেন যেটা কদিন আগে আহানাও দেখেছিলো
মা ছবিটা আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরলেন
আহানা ছবিটা হাতে নিয়ে আবারও তাকালো মায়ের দিকে,কারণ কিছুই বুঝলো না সে
মা এবার নিজের আঁচলে জুলন্ত একটি চাবির গুচ্ছ একটা ছোট চাবি বের করে সেটা দিয়ে ৩য় তম ডেস্কটা খুললো,ভেতরে ১০/১৫টা ছবি,এখানে সব ছবি শুধু আহানার ছোটবেলার ছবি
এই ডেস্কটা সেদিন আহানা দেখেছিলো তবে লক ছিলো বলে সে খুলতে পারেনি,এর চাবি শান্ত আর তার মায়ের কাছে আছে তাহলে?
মা ছবি সব আহানার হাতে দিলেন
আহানার আর বুঝতে বাকি নেই শান্তর সেই অত্যন্ত কিউট আর দুষ্টু প্রেমিকাটি সে নিজেই”
.
আহানা মুখে হাত দিয়ে পিছিয়ে গেলো,মা হেসে রুম থেকে চলে গেলেন চেয়ার ঘুরিয়ে
আহানা ছবিগুলো হাতে নিয়ে চুপ করে আছে,শান্ত ওকে ছোট থেকেই ভালোবাসতো?
তাহলে মুখে কেন বলে না সে?
কেন স্বীকার করে না?
.
আহানার ফোন বাজতেছে,সেই কখন থেকে
টোনের আওয়াজ কানে আসতেই আহানা ছবিগুলো এক পাশে রেখে ফোন হাতে নিলো,রুপার কল
রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো
যেন মরাকান্না,আহানা কিছুটা ভয় নিয়ে জিজ্ঞেস করলো আঙ্কেল আন্টি ঠিক আছে কিনা
রুপা কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো “ঠিক আছে”
.
তাহলে এমন মরাকান্না জুড়ে দিয়েছিস কি জন্যে?কে মরছে তোর?
নওশাদ ভাইয়া ঠিক আছে তো?
.
আরে সব ঠিক আছে,জিজ্ঞেস কর আমি কেমন আছি
.
ওহ,তোর কি হলো?
.
আমি এখন তোদের বাসায় তোর রুমে ঘাপটি মেরে বসে আছি আর তোর আম্মু এক গ্লাস ট্যাংয়ের শরবত হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেছে নাস্তা বানাতে
.
ওমা সেকি,তুই আমাদের বাসায় গেছিস কেন?আমি তো শান্ত ভাইয়াদের বাসায়,আর মরাকান্না শুরু করলি ক্যান সেটা তো বললি না?
.
শান্ত ভাইয়া?আর ইউ সিরিয়াস আহানা?বিয়ের এতদিন হলো তুই এখনও ভাইয়া বলিস?তোর থেকে তো এডভাইস নিলে মনে হয় আমার দুদিনে ডিভোর্স হবে
.
ওসব বাদ দিয়ে আগে বল কাঁদতেছিলি কেন?
.
বাবা জোর করে কোথাকার কোন বুইড়া সরকারি চাকরি করা ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়া ধরছিলো তাই ভেগে এসেছি তোদের বাসায়
.
বাহ!নওশাদ ভাইয়া জানে?
.
সেটাই তো মেইন সমস্যা! নওশাদ বিদেশে গেছে একটা কাজে,আজই ফিরবে,এখন কথা হল কি করে কি হবে আমি কিছুই বুঝতেছি না,তুই প্লিস আয়
.
আহানা বিচলিত হয়ে বললো”আচ্ছা কাঁদিস না,আমি আসতেছি,দেখি কি করা যায়”
.
আহানা সাইড ব্যাগ নিয়ে মাকে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো সোজা তার বাসায়,শান্তকে ফোন করে কিছু বলার আগেই শান্ত বললো সে সবটা জানে,নওশাদ ওকে বলেছে সব
আর সে নওশাদকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে ওকে নিয়ে আহানাদের বাসায় আসবে বিকালের দিকে
আহানা তাই নিশ্চিন্তে রুপার কাছে আসলো,রুপা আহানাকে দেখে কান্না থামিয়ে বারবার জিজ্ঞেস করতেছে কি হবে নেক্সট
.
আহানা ওর হাত থেকে শরবতটা নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে বললো”আমি এমনিতেও ভেজালে আছি,শান্ত ভাইয়া,না মানে শুধু শান্ত সে আমাকে ভালোবাসে তবে মুখে স্বীকার করতে চায় না,এখন তার মুখ দিয়ে কি করে বের করাবো সেটা ভাবতে ভাবতেই মাথায় এসে জুটলো তোর এই চিন্তা,তোরা এক কাজ কর আমি আর
শান্ত যেমন করে বিয়ে করেছি তোরাও সেমন করে কর
.
আরে কোনোরকম হুজুর ডেকে বিয়ে করে ফেলবো,দলিল লাগবে না,রেজিস্টার পরেও করা যবে যখন পরিবার মানবে তখন এখন আপাতত ধর্মীয় মতে বিয়েটা করতে চাই
.
ওকে,নওশাদ ভাইয়া আসুক,উনি তোর থেকেও এনাফ ম্যাচিউর,উনি যেটা বলবেন সেটাই হবে,তুই আপাতত কান্না থামা
.
আহানা সবকিছু বাদ দিয়ে ভাবতেছে শান্ত ওকে ভালোবাসে আর সে নিজেই জানে না সেটা,একটাবার একটু হিনট ও পায়নি সে,কি আজব ব্যাপার,অথচ আমি ভেবেছিলাম অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে,তার প্রতিচ্ছবি নিজের চোখের সামনে এনে কত কি ভেবেছিলাম আর সেখানে সেই মেয়েটাই কিনা আমি?
আজ উনার একদিন কি আমার যতদিন লাগে,স্টুপিড একটা!
♣
শান্ত এয়ারপোর্ট থেকে নওশাদকে নিয়ে আহানাদের বাসায় ফিরলো,রুপা দৌড়ে এসে নওশাদকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে
.
আহানা রুপাকে কিছু বলার আগেই শান্ত ওর হাত ধরে টেনে একপাশে নিয়ে আসলো
.
কি ব্যাপার?এখানে নিয়ে আসলেন কেন কি হয়েছে?
.
নওশাদের মা নাকি রুপাকে পছন্দ করে না
.
সেকি!দুই পরিবারই একে অপরকে পছন্দ করে না তাহলে কি করে হবে
.
সেটাই তো,নওশাদ তার মায়ের মতের বিরুদ্ধেও যেতে পারবে না এদিকে রুপাকেও ছাড়তে পারবে না,এখন সে কি করবে আমার থেকে জানতে চাচ্ছে,আমাদের দুজনেরই পরিবারের মনের মিল ছিল আমাদের চেয়েও অনেক বেশি তাই আমরা এক হয়েছি সো আমার কোনো অভিজ্ঞতা নেই,কি করা যায় তুমি ভেবে বলো
.
রুপার বাবাকে রাজি করানো একদমই সম্ভব নাহ,উনি হিটলারের বড় ভাই,উনার কথাবার্তা শুনে ভয়ে গলা শুকিয়ে আসে তাই আমার মনে হয় টার্গেট করা উচিত নওশাদ ভাইয়ার ফ্যামিলিকে
.
তো কি করবা?
.
আগে বলুন নওশাদ ভাইয়ার মা রুপাকে পছন্দ করে না কেন?
.
রুপার ফ্যামিলি স্টেটাস লো আর রুপা নওশাদের বরাবর না মানে স্মার্ট না
.
রুপা তো যথেষ্ট স্মার্ট
.
আরে আমার কথা হচ্ছে উনার এমন মেয়ে পছন্দ যে বললেই শাড়ী পরতে পারবে আবার বললেই জিন্স,ওয়েস্টার্ন পরতে পারবে
.
ওসব পড়লেই স্মার্ট হয়ে যায়?বুঝলাম আন্টির মাথায় গোবর ঠেসা,সেটা সাফ করলেই রুপাকে মেনে নেবে
.
তা সেটা হবে কি করে?
.
চলুন আমরা যাই নওশাদ ভাইয়ার বাসায়,আমরা বুঝাবো তাদেরকে
.
আরে আমরা জোয়ান কাপল,আমাদের কথায় কোনো পাত্তাই দেবে না
.
সেটা আমি জানি,আগে বলেন নওশাদ ভাইয়ার পরিবার আপনাকে চেনে কিনা?
.
চেনে তো,আমি অনেকবার ওদের বাসায় গেছি
.
ধুর!তাহলে যা বুঝলাম আমাকেই সব করতে হবে
.
কি করবা তুমি?
.
পাশের বাসার আন্টি সেজে যাব
.
পাশের বাসার আন্টি মানে,ইউ মিন রেক্সিনা আন্টি?
.
এক্সাকলি
.
হোয়াট!তুমি রেক্সিনা আন্টি সেজে যাবে নওশাদের বাসায়??গিয়ে কি করবে?
.
সেটা কাজ হওয়ার পর বুঝবেন এখন আপাতত আমাকে রেক্সিনা আন্টি যে পোশাক পরেন ওগুলা বাজার থেকে এনে দেন জলদি
.
জীবনেও না,রেক্সিনা আন্টি অলওয়েজ হাতা কাটা একটা ফতুয়ার উপর দিয়ে শাড়ী ঝুলিয়ে কোনোরকম পরে যেন এখনই পড়ে যাবে ওরকম বিশ্রি সাজ তোমায় সাজতে হবে না
.
আরে নওশাদ ভাইয়ার মা তো বেশি স্মার্ট পছন্দ করেন তো আমি যখন তাকে জ্ঞান দিতে যাব আমাকে তো হাইলি ওভারস্মার্ট হতে হবে তাই না?
.
ফতুয়া আর শাড়ী তো এনে দিবো বাট একটা শর্তে
.
কি শর্ত আবার?
.
কোমড় ঢাকবা ভালো করে
এক মিনিট তোমার কাছে কি আর কোনো অপশন ছিলো না?আমাদের তো অনেক পাশের বাসার আন্টি আছে,তাহলে বেছে বেছে রেক্সিনা আন্টিকে চুজ করলা কি জন্যে?
.
কারণ উনাকে দেখলে বলদ লাগলেও উনার কথার জোর আছে আর সাজ তো জাস্ট কি বলবো,নওশাদ ভাইয়ার আম্মু ইম্প্রেস হলেই হলো
চলবে♥
প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৫৮
#Writer_Afnan_Lara
🌸
ঠিক আছে আমি সেই উদ্ভট সাজের অর্নামেন্টস রেডি করছি,তুমি তারপর ভাবো কি এমন করবা যে নওশাদের আম্মু এত সহজে রুপাকে পছন্দ করে ফেলবেন,বিয়েতে মত দিয়ে দেবেন
.
ওসব নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না,আমি যা করার করবো,হিসেব আছে আমার
.
শান্ত তাহসিনকে ফোন করে বললো মার্কেট থেকে একটা মেয়েদের ফতুয়া আর জর্জেটের শাড়ী কিনে আনতে সাথে সিলভার অর্নামেন্টস,এসব কালেক্ট করে জলদি আহানাদের বাসায় নিয়ে আসতে,যদি কিনতে সমস্যা হয় তাহলে যেন সে রিপাকে সাথে নিয়ে যায়
.
ওদিকে রুপা যখন শুনেছে নওশাদের মা ওকে পছন্দ করে না তখন সে আবারও মরাকান্না জুড়ে দিয়েছে
শান্ত নওশাদকে নিয়ে সোফায় বসে বুঝাচ্ছে ও যেন ওর মাকে বুঝায়
.
আর আহানা তার রুমে রুপাকে বুঝাচ্ছে সাথে আশা ভরসা দিচ্ছে যে সে সব ঠিক করে দেবে
১ঘন্টার মধ্যে তাহসিন সেইসব নিয়ে হাজির যেগুলো শান্ত ওকে কিনে আনতে বলেছিলো
শান্ত ওর থেকে প্যাকেটগুলো নিয়ে আহানার হাতে দিতে দিতে বললো”শর্তের কথা মনে থাকে যেন ম্যাডাম”
.
জি মনে থাকবে
♣
নওশাদ টিভিতে একটা ফুটবল ম্যাচ দেখছে,কারোর আসার শব্দ পেয়ে সে সিঁড়ির দিকে তাকালো
আহানা সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসছে,পরনে পেস্ট কালারের একটি ফতুয়ার উপর কমলা আর কালো রঙের মিশ্রন রঙের একটা জর্জেটোর শাড়ী,চুলগুলো খোঁপা করে রাখা,আর ইয়া বড় ফ্রেমের একটা মোটা চশমা,কেউ দেখে বলবে না যে এটা আহানা
নওশাদ হা করে চেয়ে বললো”শান্ত রে,রেক্সিনা আন্টি আল্ট্রা প্রো ম্যাক্স এসে গেছে,চাহিয়া দেখ”
.
শান্ত এক গ্লাস পানি নিয়ে খাচ্ছিলো নওশাদের কথা মতন সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে আহানাকে এমন বেশে দেখে পুরুত করে সব পানি ফেলে দিলো সে মুখ থেকে
আহানা একটা ভাব নিয়ে ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো”শান্ত!!দ্যা হ্যান্ডসাম বয়!!!কাজ কতদূর তোমার??তোমার স্কিন সুন্দর বলে কি আর যত্ন নিবা না??প্রতিদিন আনপাকা টারমারিক দিয়ে মিল্ক খাবা,ভেতর থেকে ফর্সা হইয়া যাবে,তুমি এমনিতেও ফর্সা আরও ফর্সা হয়ে যাবা,লোকে বলবে “শ্বেত রোগী”হাহা!!আই এম জোকিং,নেভার মাইন্ড!
.
নওশাদ আহানার ডায়ালগ শুনে শান্তর কানে ফিসফিস করে বললো”সব তো বুঝলাম,আনপাকা কি জিনিস আবার সেটা বুঝলাম না”
.
কাঁচা হলুদরে রেক্সিনা আন্টি আনপাকা টারমারিক বলে
.
ওহ!হোয়াট!!কি বিচ্ছিরি ভাষা
.
আমি জানি না আহানা তোর আম্মুর মাথায় কি কি ঢুকায়,শুধু জানি এই সাজ দিয়ে কিছু একটা তুলকালাম লাগাবে সিউর
.
আহানা কোমড় দুলিয়ে হেঁটে গিয়ে কারে বসলো তারপর জানালা দিয়ে মাথা বের করে বললো”অন্তত ওদের বাসায় তো পৌঁছে দিবেন নাকি?
নাকি এখান থেকে রেক্সিনা আন্টির মত স্কুটি চালিয়ে যেতে হবে আমাকে”
.
শান্ত টাই ঠিক করে আসতে আসতে বললো”আরে না না,আমার বউকে এত কষ্ট করতে হবে না
.
আহানা বললো”তার কাজ সারতে ১/২ঘন্টা লাগতে পারে,আর পথে যেন কোনো মার্কেটের সামনে শান্ত কার থামায়
.
কেন?মার্কেটে কি করবা আবার?
.
বাহ রে,রেক্সিনা আন্টি হাতে কিছু না কিছু নিয়ে আসে সবসময়,তো আমাকেও তো কিছু নিয়ে যেতে হবে
.
আরে নওশাদের আম্মু রেক্সিনা আন্টিকে চেনে না
.
তো?না চিনলে আমার কি,বাট কারো বাসায় গেলে খালি হাতে যদি যাই তাহলে সবাই সব রেখে এই খুঁতটাই ধরবে,আর এটা একটা ব্যাড ম্যানার,বুঝছেন?
.
ফাইন!তা কি কিনবে?ফ্রুটস?
.
ডায়মন্ড নেকলেস
.
কিহহ!
আগে জানতাম মানুষ কারও বাসায় গেলে ফল বা ফুল নিয়ে যায়,ডায়মন্ড নেকলেস নিয়ে যায় সেটা তো জানতাম না
.
আরে টেনসন নিয়েন না,নেকলেসটা আবার ফেরত এসে আমাদের বাসাই ঢুকবে,জাস্ট কাজটা সারলে চেয়ে নেবো,ইম্প্রেস আগে জরুরি
.
ওকে,নওশাদের আম্মু ওটা রেখে দিলেও সমস্যা নেই,গিফট তো গিফটই
.
ঠিক আছে
.
একটা হালকা পাতলা ডায়মন্ডের নেকলেস কিনলো শান্ত আর আহানা মিলে,তারপর সোজা নওশাদদের বাসায় গেলো
উত্তরার একটা ১৫তলা বিল্ডিংয়ের ৭ম তম তলায় নওশাদের ফ্ল্যাট
.
কলিংবেল বাজতেছে,নওশাদের আম্মু টিভিতে “সাথ নিভানা সাথিয়া দেখছেন”কলিংবেল বাজতেই বাসার গৃহকর্মী এসে দরজা খুললো
.
গৃহকর্মী তো আহানাকে দেখে অবাক,এরকম স্টাইলের মানুষকে দেখলে অবাক হওয়ারই কথা
.
আহানা একটু ভিতরে ঢুকে এদিক ওদিক চেয়ে বললো”মিসেস রাহেলা কোথায়?আই হ্যাভ সাম টকস উইথ হার”
.
ইংরেজী শুনে রাহেলা হক মাথা উঁচু করে দরজার দিকে তাকালেন,আহানার সাজগোজ দেখে উনার চোখ কপালে
হুরমুর করে ঠিকঠাক হয়ে বসে বললেন”আমি এখানে,আপনি কে,,চিনলাম না!”
.
আহানা হেলেদুলে এগিয়ে এসে উনার পাশে বসে পড়লো তারপর সমস্যা হলো কি বলবে সেটাই ভুলে গেছে সে রাহেলা হকের চোখ দেখে
কি বড়বড় চোখ তার উপর কাজল এমন ঘাড়ো করে দিয়েছে পুরো সিরিয়ালের মহিলাদের মতন লাগে
.
উনি দাঁত কেলিয়ে বললেন”আপনি কে?যদি পরিচয়টা দিতেন!”
.
ওহ!আমি আসলে পাশের ফ্ল্যাটে নতুন এসেছি,আমি রেক্সিনা উমেদ,আমার হাসবেন্ড ম্যারাইনে জব করে,আর আমার একটা ছেলে আছে সদ্য বিয়ে করেছে,সেও ম্যারাইনে জব করেরে
.
ওয়াও!বাহ!
.
কথাটা বলে রাহেলা হক আহানার হাতের গয়নার বক্সটার দিকে তাকালেন
আহানা বুঝতে পেরে এগিয়ে ধরে বললো”এটা আপনার জন্য আনলাম,আমি আবার কাউকে ছোটখাটো গিফট দিই না”
.
রাহেলা হক বক্সটা খুলে হা করে চেয়ে বললেন”এটা কি ডায়মন্ডের?”
.
আমি ডায়মন্ড ছাড়া আর কোনো ব্র্যান্ড চিনি না,গলার সেট আবার অন্য কিছুর ও হয় নাকি?
.
না মানে,এমিটেশন নাকি অন কিছু সেটা জিজ্ঞেস করছিলাম
.
এমিটেশন কি আবার,আমি তো জন্ম থেকে ডায়মন্ড শুনে এসেছি, সব ডায়মন্ড পেয়ে এসেছি!! দিয়ে এসেছি,এমিটেশন কি আবার?নতুন শুনলাম,তার দাম কি ডায়মন্ডের চেয়েও বেশি?
.
রাহেলা হক দাঁত কেলিয়ে বললেন”না না,বাদ দেন ওসব
মর্জিনা যাও নাস্তা নিয়ে আসো
তা সাথে করে নতুন বউকেও নিয়ে আসতেন
.
আরে কি বলবো,আমার পুত্রবধূ সারাদিন কিটি পার্টি আর ফ্রেন্ডদের নিয়ে থাকে,এসবের সময় কই
জিন্স ছাড়া চলেই না,বিয়ের আগে বলেছিলো শাড়ী জিন্স দুটোই পরতে পারবে,এখন দেখি রাতে ঘুমাতে যেয়েও জিন্স পরে,মেহমানদের সামনে আমার মাথা কাটা যায়
কথায় আছে না,বিয়ের জন্য বেশি বাছা বাছি করলে কপালে ছাই জোটে
আমার ও হয়েছে তাই,আমি সবসময় স্মার্ট মেয়ে চাইতাম আমার ছেলের জন্য,আর জুটেছেও ওভারস্মার্ট
এখন তো ভাবি কেন এটা চাইলাম,এর চেয়ে তো গ্রামের ক্ষ্যাত মেয়ে অনেক ভালো,অন্তত আমার কথা তো শুনবে!
.
রাহেলা হক চুপ করে কিসব ভাবলেন,তারপর বললেন”আপনার কোনো কোথাই শোনে না?”
.
শোনে তো,যখন ডাইনিংয়ে নাস্তা রেডি করে বলি বউমা খেতে আসো তখন সাথে সাথে এসে হাজির হয়
.
হায় হায় বলেন কি,আপনার বাসার কি কোনো কাজই সে করে না?চা ও বানায় না?
.
কাজ করে না কে বলে??সারাদিন কত কাজ করে
নখে নেইলপলিশ লাগায়,ফেসিয়াল করে,আবার আমাকেও নেইলপলিশ লাগিয়ে দেয়,এই ভালো দিক আর কি
.
আমি তো আরও এমন বউ চাইছিলাম এতদিন,না বাবা আর চাইবো না,ঘাঁট হইছে আমার,আমার ছেলে যে মেয়েটাকে পছন্দ করে ওরেই বিয়ে করে আনাবো,তা একটা কথা আপনার এমন সুন্দর বডি মেইনটেইন করার টিপসটা বলুন আমি লিখে নিই
.
কিরকম টিপস?
.
আপনাকে দেখে একদমই মনে হয় না আপনার একটা ছেলে আছে আবার তারে বিয়েও করিয়েছেন
মনে হয় আপনি নিজেই নতুন বিয়ে করেছেন
.
কথাটা শুনে আহানার কাশি উঠে গেলো,কাশতে কাশতে বললো”আজ আসি কেমন??”
.
আরে আরেকটু থাকুন না
.
না না,পরে আসব,কাজ হয়ে গেছে আর থেকে কি হবে
.
কাজ হয়ে গেছে মানে?
.
না মানে,আপনাকে ডায়মন্ড দেওয়া হয়ে গেছে,সেটা বললাম আর কি,হেহে,বাই বাই,নাইস টু মিট উইথ ইউর ১৪গুষ্টি,আবারও কাম কেমন?
.
আবারও কাম?,ওহ আচ্ছা আবারও আসবেন,হুম আসিয়েন
.
আহানা হাঁপাতে হাঁপাতে বিল্ডিংয়ের নিচে চলে আসলো,শান্ত কার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল এতক্ষন,আহানাকে দেখে এগিয়ে এসে বললো”কাজ হয়েছে কিনা?”
.
হয়েছে মানে!!!উনি তো এখন রুপাকেই পছন্দ করবেন শুধু,এমন ট্রিকস করছি না
.
আহানা জলদি করে কারে বসে চোখের চশমাটা খুলে বড় করে একটা শ্বাস নিলো সে,তারপর মুচকি হেসে বললো”কাজটা বেশি কঠিন ছিলো না আবার সহজও ছিলো না”
.
কি কি করলা একটু শুনি
.
ওভারস্মার্ট মেয়ের সুবিধা আর অসুবিধা বুঝালাম উনাকে,এই আর কি
.
যাক এবার তাহলে নওশাদের বিয়ে খাবো,একের পর এক আমার সব ফ্রেন্ড সার্কেল মিঙ্গেল হয়ে যাচ্ছে
.
হুম,আর আপনি হয়েও না হওয়ার মতন
.
বুঝলাম না কি বললে
.
মানেটা সহজ,আপনি বিয়ে করলেন তবে আমাকে কি বউ হিসেবে মানেন নাকি মানেন না সেরকম অবস্থাতে আছি দুজন
.
তোমাকে তো বললাম আমার প্রেমিকার….
.
থাক আর বলতে হবে না,আপনার প্রেমিকা কে তা জানা হয়ে গেছে আমার,শান্তি আম্মু আমাকে সব বলেছে
.
শান্ত কার ড্রাইভ করতে করতে হাসলো কিছুটা তারপর জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আবারও সামনে তাকালো,হালকা পাতলা জ্যাম লেগে আছে
.
আহানা শান্তর দিকে ঘুরে বসে বললো”তা স্বীকার করবেন না আপনি আপনার অত্যন্ত কিউট প্রেমিকা ওরপে বউকে কত ভালোবাসেন?”
.
শান্ত জিভ দিয়ে ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে বললো”সেটার সময় আসলে সে জানতে পারবে,সব কথা মুখে বললেই কি বলা হয়ে যায়?
.
যায় তো!
.
আচ্ছা তাহলে বলবো তাকে,বাসি নাকি পুরান
.
আহানা হেসে দিলো,মিনিট দশেক বাদেই দুজনে আহানাদের বাসায় পৌঁছালো,আহানা কিছু বলার আগেই নওশাদের ফোনে কল আসলো তার মায়ের
তার মা জানালো রুপাকে নিয়ে যেন সে তাদের বাসায় আসে
রুপা তো এ কথা শুনে আহানার হাত ধরে নাচতে নাচতে অবস্থা বেহাল করে ফেলেছে
নওশাদ আহানাকে থ্যাংকস বলে রুপাকে নিয়ে চলে গেলো তাদের বাসার দিকে
আহানা এবার শান্তর দিকে চেয়ে বললো “চলুন সাহেব,আমরা আমাদের বাসায় ফিরে যাই,এটা তো আমার বাপের বাড়ি”
.
চলুন যাই
.
দুজন মিলে বাড়ি ফিরলো তখন মনে হয় বিকাল হয়ে এসেছে
আহানা শান্তর রুমে এসে নিজের একটা শাড়ী হাতে নিলো রেক্সিনা আন্টির সাজটা বদলাবে বলে,শান্তি আন্টি দেখলে কি না কি ভাববে তার আগেই সব পাল্টে ফেলতে হবে যত জলদি পারি
.
শান্ত রুমে এসে দেখলো আহানা গলার আর কানের গয়না খুলছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
শান্তর হাতে এক গুচ্ছ বিদেশি অর্কিড ফুল
তাহসিনকে দিয়ে আনিয়ে রেখেছিলে শান্ত,আহানা মনে হয় রুমে ঢুকার সময় দেখতে পায়নি
শান্ত আস্তে আস্তে এগিয়ে এসে ফুলগুলো নিয়ে আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরলো
আহানা কানের দুলটা হাত থেকে রেখে ফুলগুলোর দিকে চেয়ে থেকে তারপর ব্রু কুঁচকে তাকালো শান্তর দিকে
শান্ত নিজের মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো”সকালে আসার সসময় পথে একটা দোকানে দেখছিলাম তাই কিনে ফেললাম,কারেই ছিলো,দিতে ভুলে গিয়েছিলাম,নাও রাখো,সুন্দর ফুলগুলো
.
আহানা ফুলগুলো হাতে নিয়ে বললো”আর কিছু না?
.
আর কি?
.
কিছু বলার নেই?
.
আছে তো
.
তো বলেন
.
আগে তুমি ফ্রেশ হবা নাকি আমি?
.
আহানা রাগে কটমট করতে করতে শান্তর গায়ে ফুলগুলো মেরে হনহনিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো
.
যাক বাবা,আমি কি করলাম আবার!
চলবে♥
প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৫৯
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আহানা ওয়াসরুম থেকে বের হতেই দেখলো শান্ত অর্কিডগুলো নিয়ে দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে
.
কি ব্যাপার?এবার এগুলো চিবিয়ে দেখাতাম?এরকম চেয়ে আছেন কেন?
.
না মানে এত দামি ফুল তো,পছন্দ হয়নি তোমার?
.
দামি ফুল আমার পছন্দ না,আমার ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ার বেশি ভাল্লাগে,এর জায়গায় একটা গন্ধরাজ দিলে আরও খুশি হতাম,যাই হোক ধন্যবাদ!
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো রুম থেকে,শান্ত মন খারাপ করে ফুলগুলো টবে সাজিয়ে রেখে সেও চলে গেলো ফ্রেশ হতে
♣
ঢং দেখায় আমাকে!প্রোপোজ করতে শরম করে তার,অসভ্য একটা,এর থেকে কিছু আশা করাও মস্ত বড় ভুল আমার,এই জন্য মানুষ বলে আগে মেয়েরা প্রোপোজ করতে নেই,করলে বহুত ঘানি টানতে হয়
আমারও হয়েছে তাই
শান্ত যে আমাকে কোনোদিন ভালোবাসি বলবে না তা আজ হারে হারে বোঝা হয়ে গেছে আমার
.
রিপা পানি গরম করতে এসে আহানার দিকে চেয়ে বললো “কি গো? কি এতো বিড়বিড় করে বলছো?”
.
আহানা চমকে রিপার দিকে তাকিয়ে বললো”না কিছু না”
কথাটা বলে সে চায়ের ট্রেটা হাতে করে মায়ের রুমের দিকে গেলো সোজা,মা যেন ওরই অপেক্ষা করছিলেন,আহানা মুচকি হেসে উনার হাতে চায়ের কাপ দিলো সাথে বিসকিট তো আছেই তারপর সে চললো শান্তর রুমের দিকে
রুমে এসে টেবিলের উপর অর্কিড ফুলগুলো দেখে আহানার খুব রাগ হলো,রাগে গজগজ করতে করতে সে চায়ের কাপটা টেবিলের উপর রাখলো,শান্ত সবে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়েছে
আহানা ওর দিকে একবার তাকিয়ে বিছানায় এসে বসলো চায়ের কাপ নিয়ে,তারপর চায়ে চুমুক দিয়ে ব্রু কুঁচকে বললো”কি ব্যাপার বলুন তো?,এমন ড্যাবড্যাব করে দেখতেছেন কেন আমাকে?সেই তখন থেকে”
.
কেন?তোমার কোনো সমস্যা?
.
আহানার আরও রাগ উঠলো,সামান্য কথায় হ্যাঁ/না বলে উত্তর দেওয়াই যেতে পারে তাই বলে ধমক দেবে কেন?
.
আহানা আর কিছু বললো না,টম এন্ড জেরি দেখায় মন দিয়েছে সে এখন
শান্ত চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেও আহানার গা ঘেঁষে বিছানায় এসে বসলো,আহানার কেমন একটা অস্বস্তিকর লাগছে ব্যাপারটা,একটু নড়েচড়ে বসে সে বললো”পুরো খাট খালি রেখে আমার গায়ের সাথেই আপনাকে লেগে বসতে হবে সবসময়?”
.
ছোটবেলায় তুমি আমার কোল ছাড়া কোথাও বসতে না,ওটার শোধ তুলতেছি
.
শোধ তুললে পুরোটাই তোলা উচিত,গা ঘেঁষে না বসে একেবারে কোলে এসেই বসুন না,দেখি আপনার কত ক্ষমতা?
.
শান্ত মুচকি হেসে সত্যি সত্যি আহানার কোলে বসে পড়লো
.
আহানা এক চিৎকার দিতেই শান্ত ওর মুখটা চেপে ধরে বললো”তুমি তো বললা বসতে!”
.
আহানা কিছু বলতে পারলো না হুট করেই কেঁদে ফেললো
হঠাৎ ওকে কাঁদতে দেখে শান্ত সরে গিয়ে বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো ব্যাথা পেলো কিনা
.
আহানা চোখের পানি মুছে বললো”হাতের চুড়ির সাথে পেয়েছি একটু”
.
শান্ত আহানার হাত দুটো ধরে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন, তারপর অসহায় একটা লুক নিয়ে বললো”সরি!আমি এতসব খেয়াল করিনি আসলে,মজা করতে গিয়ে কষ্ট দিয়ে ফেললাম তোমাকে”
.
হুহ!কাঁচের চুড়ি গুলো কত সাধ করে কিনেছিলাম,একদিন একটা ভাঙ্গেন আপনি
.
আরও ভাঙ্গছিলাম?কবে সেটা?
.
কথায় কথায় আমার হাত চেপে ধরে যে টান দেন,তো সেটাতে আমার চুড়িগুলো ভেঙ্গে যে চুরমার হয়ে যায় সেদিকে খবর আছে আপনার?
অবশ্য খবর থাকবে কি করে,পারেন তে শুধু ঝগড়া করতে আর কিছুই পারেন না,ভালোবাসা টাসা মনে হয় না আপনার দ্বারা জীবনে হবে
.
এর মধ্যে ভালোবাসা আসে কোথা থেকে,আসলো যখন তখন একটা কথা বলি শুনো!!তুমি যে বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো ব্যস হয়ে গেলো এটাই ভালোবাসা?
তোমাকে এটা কে বললো?
ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করলেই সব হয়ে যায় না,কাজে দেখাতে হয়
.
তো আমি কিস করি নাই আপনাকে?
.
আজব তো!কিস আসছে কোথা থেকে,ভালোবাসার মধ্যে ছোঁয়াছুঁয়ি থাকে না বুঝলে?
.
আহানা গালে দুটো আঙ্গুল রেখে ভাবতে থাকলো
তারপর আবার শান্তর দিকে চেয়ে বললো”তাহলে ভালোবাসাই কি থাকে?”
.
শান্ত মুচকি হেসে আহানার কোমড়ে হাত দিয়ে এক টান দিয়ে কাছে নিয়ে এসে বললো”অনুভূতি”
.
আহানার হার্টবিট বেড়ে গেছে,ঢোক গিলে বললো”এটা?”
.
জি!বুঝতে পারছেন তাহলে!
.
আমি তো বুঝলাম,তবে আপনি কবে বুঝবেন শুনি?
.
আমিও বুঝে গেছি
.
আহানা রুমের চারপাশটায় চোখ বুলিয়ে বললো”কই ভালোবাসার অনুভূতিটা টের পেলাম না,চোখে দেখলাম না!
.
চোখে দেখতে চাও?চলো তোমাকে আজ আমি সেই অনূভূতিটা দেখাবো,চা শেষ করো
.
আহানা ব্রু কুঁচকে চা হাতে নিয়ে সবটা শেষ করে ফেললো দু সেকেন্ডেই,তারপর আবারও শান্তর দিকে চেয়ে বললো”কই দেখান”
.
শান্ত নিজের চা শেষ করে বিছানা থেকে নেমে বললো”ফলো মি”
.
আহানাও গাধার মতো ওর পিছু পিছু ছুটেছে,শান্ত রান্নাঘরে ঢুকে মুঠো করে কি যেন নিলো তারপর বাসা থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যাচ্ছে সে এখন,আহানাও এবার সিঁড়ি বেয়ে ওর পিছু পিছু ছাদে যাচ্ছে,শান্ত হাতে কি নিলো সে দেখলো না
.
ছাদে এসে আহানা হাঁপিয়ে গেলো তারপর বললো”কই??”
.
শান্ত মুচকি হেসে ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছে
আহানা আরেকটু এগিয়ে গিয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে বললো”মিথ্যে আশা দিয়ে এখানে আনছেন তাই তো?আপনি তো জানেনই না ভালোবাসা কি হয়,কি করে সেটা ফিল হয়,শুধু শুধু আপনাকে বিশ্বাস করে এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে আমার”
.
শান্ত তার হাতের মুঠোয় থাকা জিনিসগুলো ছাদের উপর রাখলো
আহানা মুখ বাঁকিয়ে চলে যেতে নিতেই শান্ত ওর হাত ধরে ফেললো
আহানা পিছন ফিরে তাকিয়ে বললো”আবার কি?”
.
শান্ত পিছনে ছাদের রেলিংয়ে হাত দিয়ে জিনিসগুলো একটু খানি নিয়ে আহানার গায়ে ছুঁড়ে মারলো
আহানা চোখ বন্ধ করে ফেললো সাথে সাথে
ওর সারা গায়ে লাল রঙের আবিরের ছড়াছড়ি
আহানা চোখ খুলে নিজের গায়ের দিকে তাকিয়ে আবারও শান্তর দিকে তাকালো,কিছু বলার আগেই শান্ত আবারও আরেক মুঠো আবির ওর গায়ে ছুঁড়ে মারলো
এটা ছিলো নীল রঙের
তারপর আহানার হাত ছেড়ে দিলো সে
আহানা হাত দিয়ে শাড়ী থেকে আবির ঝাড়তে ঝাড়তে বললো”পাগল গয়ে গেলেন??
.
আহানা বিরক্তি নিয়ে গায়ের থেকে আবির ঝেড়ে যাচ্ছে,শান্ত আহানার হাত দুটো ধরে ফেললো আবারও
আহানা এবার অবাক হলো,বিরক্তি ভাব কমে গেছে তার মুখ থেকে
শান্ত হ্যাচকা টান দিয়ে ওকে একদম কাছে নিয়ে আসলো
তারপর রেলিংয়ে থাকা অবশিষ্ট আবিরের গুড়ো আহানার ডান হাতের তালুতে রাখলো সে,তারপর সেই হাতটা দিয়ে নিজের মুখে আর গলায় লাগালো আহানার হাত দিয়ে
.
আহানা অবাক হয়ে শুধু দেখছে শান্ত কি করছে এসব
♥
বিকালের শেষ অংশ এখন
সূর্য ডুবুডুবু,,নভেম্বরের এই সময়টা মুখে প্রকাশ করার মতন না,এই সময়টা সারাদিনের মধ্যে বেস্ট বলা যেতে পারে চোখ বন্ধ করেই
.
আহানা হাত মুছড়াচ্ছে ছাড়ানোর জন্য,তারপর যখন দেখলো শান্ত দুষ্টু একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে
তখন উপায় না পেয়ে সে বললো”কি করতে চান বলুন তো??
এমন হাত আটকে ধরেছেন কেন?তার উপর আবির দিয়ে ভূত বানিয়ে রেখেছেন আমাকে আর নিজেকেও
সন্ধ্যাবেলার ভূতে ধরেছে নাকি আপনাকে? কি হলো উত্তর দিচ্ছেন না কেন?আর আমার হাতই বা ছাড়ছেন না কেন?ছাড়ুন,হাতে চুড়ি আর ২/৩টা আছে এগুলাও ভাঙ্গার শপথ করে রাখছেন নাকি আপনি?
যেভাবে ধরে রেখেছেন যেন আমি আবার আপনাকে চড় মারতে পারি সে ভয়ে……
.
আহানা কথাটা শেষ করে চুপ হয়ে গেলো,বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো তার,শান্ত কি তাহলে!
আহানা সব কথা থামিয়ে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে এবার,ভয় কাজ করছে,এ এক অন্যরকম ভয়,কারোর থেকে ভালোবাসার স্পর্শ পাওয়ার আগ মূহুর্তে যে ভয়টা হয় ঠিক সেটা
আহানার আরও ভয় করছে শান্তর চোখ দুটো দেখে
শান্তর চোখ যেন স্পষ্ট করে বলছে”আহানা আজ তুমি শেষ”
.
শান্ত আহানার ঠোঁটজোড়ার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসছে সেই কখন থেকে
আর এদিকে আহানার ভয়ে গলা শুকিয়ে হাত পা কাঁপার মতন অবস্থা,হাত নাড়তে নাড়তে তার হাত ব্যাথা হয়ে গেছে যার কারণে এখন সে হাতদুটো নিচে নামিয়ে নিয়েছে শান্ত কিন্তু এখনও আহানার হাত ছাড়েনি
.
বিকাল সম্পূর্ণ শেষ,সন্ধ্যা হয়ে গেছে,অন্ধকার নামছে ধীরে ধীরে
শান্ত এখনও সেই একই মিষ্টি হাসি দিয়ে আহানার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে
আর আহানা চুপ করে শান্তর চোখের দিকে চেয়ে আছে
.
রোডের ল্যাম্পপোস্ট গুলো এক এক করে জ্বলে উঠছে,বাসার গেট থেকে দারোয়ান উঠে গিয়ে এদিক ওদিক হাঁটছেন
তারপর তিনি বাগানের লাইটগুলো জ্বালিয়ে আবার আগের জায়গায় গিয়ে বসলেন
.
আহানা বড় করে একটা নিশ্বাস ফেলে বললো”সারা জীবন এমন ফ্যালফ্যাল করে চেয়েই থাকবেন?হাত ছাড়ুন,অনেক হয়েছে!!আমার হাত পা ধরে গেছে এরকম এক টানা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে
আজব তো!!সেই তখন থেকে বকবক করে যাচ্ছি আমি আর আপনি খালি আমাকেই দেখে যাচ্ছেন,কিছু তো বলবেন!নাকি বোবা হয়ে গেলেন!
.
আহানা আবারও হাত মুছড়ানো শুরু করলো
ওর হাতের ২জোড়া কাঁচের চুড়ি ঝুনঝুন আওয়াজ করছে একটার সাথে একটা লেগে
আহানা আবারও থেমে গেলো,হাত ব্যাথা হয়ে গেছে তাই
মলিন চোখে সে শান্তর দিকে তাকিয়ে বললো”ছেড়ে দিন নাহলে কিছু তো বলুন,আমার ভালো লাগছে না এমন দাঁড়িয়ে থাকতে”
.
কিছু ফিল হয়?
.
কি?
.
এই যে এতক্ষণ ধরে ভালোবাসার মানুষের কাছাকাছি আছো কিছুই ফিল হয়নি তোমার?কথা ছিলো ভালোবাসা ফিল করানো তাইতো এত কিছু করার,আবির মেখেছিলাম কেন জানো?কারণ তোমার গায়ে আবির মেরে আমি তোমার চোখে নেশা দেখেছিলাম,তারপর তোমার হাতে আবির আমার গায়ে লাগিয়ে আমি আমার চোখের নেশা তোমাকে দেখালাম
.
হইছে,ভালোবাসা দেখা হয়ে গেছে আমার,এবার তো হাত ছাড়ুন!শান্তি আন্টি এতক্ষণ আমাদের না দেখলে চিন্তা করবে,তার উপর রিপা বা নিতু যদি হুট করে ছাদে চলে আসে?
.
রিপা তার বাড়ি ফিরে গেছে,নিতু ডান্স ক্লাসে গেছে,মা উপন্যাস পড়ছেন
আর কারোর ডিটেইলস লাগবে আহানা ম্যাম?
.
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো”তাহলে বলুন আর কি চান যে এমন হাত ধরে রেখেছেন আমার”
.
শান্ত আহানাকে আরেকটু কাছে টেনে নিয়ে বললো”তোমাকে ”
.
আহানা শক্ত গলায় বললো”মনের কথা না জানিয়ে আমাকে ছুঁবেন না”
.
শান্ত হাসলো তারপর হাসি থামিয়ে বললো”কেন?মনের কথা ছুঁয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যায় না বুঝি?”
.
আমি কাজে-বোঝাতে মানি না,আমি মুখে স্বীকার করাকে মান্য করি,আশা করি বুঝতে পেরেছেন!
.
সেটা তো এত সহজে প্রকাশ করবো না,তোমাকে কাঁদতে হবে শাহরিয়ার শান্তর জন্য,বুঝলা মেয়ে?
.
আরও কাঁদাবেন?এতদিনের কান্নায় হয়নি আপনার?
.
হয়নি তো,আরও কাঁদো,দেখি একটু
.
আহানা জোরে জোরে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে,মেজাজ সম্পূর্ণ বিগড়ে গেছে,এরই মাঝে শান্ত আলতো করে ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দিলো
আহানা মূহুর্তেই থেমে গেলো,চুপ করে থাকলো সে
শান্ত ফিসফিস করে বললো”ফিল হয়?”
.
আহানা চোখ দুটো বন্ধ করে চুপ করে থাকলো,কিছু বললো না আর
শান্ত আহানার ঠোঁটজোড়া স্পর্শ করে ফেলেছে
গুনে গুনে ৪সেকেন্ডের জন্য! তারপর আহানাকে ছেড়ে দিলো সে
আহানা এখনও নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,তারপর কি যেন ভেবে সে দৌড়ে চলে গেলো ছাদ থেকে
শান্ত মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে আকাশের দিকে তাকালো,সন্ধ্যাতারা উজ্জ্বল হয়ে আছে,আর কোনো তারা নেই আকাশে
অথচ শান্তর মনে হচ্ছে তার আশেপাশে আলোয় আলোয় ভর্তি
আহানা শান্তর রুমে এসে বিছানার ওপাশে ফ্লোরে বসে পড়লো হাত পা গুটিয়ে,পুরো শরীরের শিরায় শিরায় কম্পিত হচ্ছে ৪সেকেন্ডের সেই অনুভূতিটা,এত সময় ধরে এর রেশ রয়ে গেলো,থেকে যাবে অাজীবন,মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ ছোঁয়া আমার মনে থাকবে
আমি এটা নিয়েই হেসে খেলে জীবন কাটাতে পারবো,আমার আর কিছু চাই না শান্ত,আমাকে সব দিয়ে দিলে আজ
চলবে♥