#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা_২০২০
প্রিয়তমেষু,
অাশাকরি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতের ছাঁয়ায় অাবদ্ধ থেকে তুমি খুব ভালো অাছো।এবং অামিও তাঁর পরম কৃপায় বেশ ভালো অাছি।প্রথমে দীর্ঘদিন তোমাকে চিঠি না লিখার জন্য অান্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।অামাকে ক্ষমা করতে অাশাকরি তুমি কিঞ্চিৎ পরিমান কার্পন্য মনের মধ্যে রাখবেনা।অামার চিরকুট তোমার নিকট কতোটা পছন্দ তা অামি জানি,তাই তোমাকে প্রতিনিয়ত লিখতে না পারলেও মনের মাঝে তোমাকে কি লিখবো তা অামার শত ব্যাস্ততার মাঝেও ভাবি।তোমাকে লিখতে কিংবা তোমাকে নিয়ে ভাবতে অামার একটুও ক্লান্তি অাসেনা কখনো।মনের সব কথা গুলো চিরকুটের সংকুচিত পাতায় ও স্থান দিতে পারিনা।অামি যে বেশি কথা বলি,স্বল্প কথায় সব কথা বুঝাতে অক্ষম!কি করবো বলো!তাই তোমার বিস্তীর্ণ অন্দরমহলে শুধু তোমাকেই খুঁজতে থাকি।তোমাতেই মত্ত থাকি,তোমার মায়ায় অাটকে থেকে অন্যসব ভাবনাদের হারিয়ে ফেলি।তোমার মনে অাছে!তোমার শেষ চিঠিতে অামাকে বলেছিলে, অামি যেনো তোমার সন্তানদের খুব স্বযত্নে বাবার মতো অাগলে রাখি।যাদেরকে তুমি রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে তোমার বিস্তীর্ণ অন্দরমহলে ঠাই দিয়েছিলে,লালন করেছো নিজ সন্তানের মতো। তখন অামি ছিলাম তোমার দু’চোখে বিষবৃক্ষের ছাঁয়া।দেখলেই যেনো রাগে গা জ্বলে উঠতো! সেই বিষধর মানুষটি অাবার কি করে যে তোমার নিকট এতোটা প্রিয় হয়ে গেলাম যাকে তুমি তোমার সন্তানদের দায়িত্ব দিয়েছো।সে উত্তর অামি অাজো খুঁজি। তুমি জেনে অনেক খুশি হবে যে, অামি তোমার মতো তাদেরকে ভালোবেসে অাগলে রাখছি নিজ সন্তানের মতো।তাদেরকে এখন কষ্ট করে হাসতে হয়না।নিয়মিত পড়াশুনা করছে।খাবারের জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হয়না।তাদের হাসি সুন্দর।বড্ড অমায়ীক।যেনো পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। তাদের এই হাসিতে যেনো তোমাকে খুঁজে পাই।তারাও যেনো তোমার মতোই মহানূভুতীর মানুষ। একজন কষ্ট পেলে অন্যজন কষ্ট পায়।মান অভিমান কিভাবে করতে হয় তা যেনো তোমার কাছ থেকেই শিখা।তুমি যেমন অামার সাথে অভিমান করলে কখনোই বলতেনা।উচ্চস্বরে অাওয়াজ করতেনা।রাগ, অভিমান সবকিছুতে অামাকে জরিয়ে ধরে রাখতে,তারাও ঠিক এমন।সুখ,দুঃখ,মান-অভিমান সব অামাকে ঘিরে হলেও বুকের সাথে মিশে গিয়ে তাদের সবকথা প্রকাশ করে নিশ্চুপ থেকে।
জানো! এই বর্ষায় সবজায়গায় বিগত বছরের চেয়েও বেশি পানি উঠেছে।সকলেই নৌকো করে ঘুরতে বের হয় প্রিয় মানুষটিকে সঙ্গে করে। প্রিয়তমার ভেজা চুলের ঘ্রাণ নেয়।অামাদের বাড়ির পাশে নদীটিতে বিকেল হলে সোনামণিদের থেকে শুরু করে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠদের দেখতে পাই।সকলে অনেক মজা করে।নদীর গভীর জলে কেউ হারায়না,বরং ভালোবাসার মানুষের অতল গভীরে হারিয়ে যায়।এই চিরকুটের শব্দগুলো যখন লিখছি, অামার ভাবনায় তুমি অাটকে অাছো।তোমাকে নিয়ে ভাবছি।ভাবছি তোমাকে নিয়ে কূলহীন নদীতে হারিয়ে বেড়াবো।যদি সমুদ্রে এতদূর যাওয়া যেতো মন্দ হতো না।তোমাতে বিভোর হবো।সম্ভব হলে খুব শিগ্রই এসো।অামি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।অাসলে দু’জন একসঙ্গে নিখোঁজ হবো।অাচ্ছা অামার এ ভাবনাগুলো কি পূর্ণতা পাবে!না, পাবেনা।যেহেতু তুমি সেই কবেই পার্থিব অালো ছেড়ে কালো অন্ধকারে নিখোঁজ হয়ে অাছো।অার অামি!
ইতিঃ-
তোমার অভ্র
কলমেঃ- নাজমুল হাসান।