নিশ্চুপ ভালোবাসা পর্ব-০৭

0
1093

গল্পের নামঃ- #নিশ্চুপ_ভালোবাসা ❤️🖤
লেখিকাঃ-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৭
পরিবেশ টা অনেক সুন্দর চারপাশে মেঘের মেলা এইদিক ঐদিক উড়ে বেড়াচ্ছে আর সবাই নিজের মতো। আদ্রিয়ান ব্যাস্ত আধারকে দেখতে একসময় আধার এদম পাহাড়ের কিনারায় চলে যায় আর ওমনি খেয়াল না করারা কারণে পা পিছলে পড়ে যায়। আর আদ্রিয়ান আধার বলে চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসে। ( এক বালতি সমবেদনা যারা ভাবছিল আধার সত্যি পাহাড় থেকে পরে গেছে আমি এতটাও খারাপ না ওকে) ঘেমে একাকার হয়েগেছে। আশিকেরও আদ্রিয়ানের চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। সে আদ্রিয়ানকে হাঁপাতে দেখে বলে

—-দোস্ত তোর কি হয়েছে এভাবে ঘামছিস কেন?আদ্রিয়ান কিছু সময় চোখ বন্ধ করে মাথার দুইপাশে চেপে ধরে চুপ থেকে বলে

—-কিছু না বাজে স্বপ্ন ছিল একটা। আশিক আদ্রিয়ানের পিঠে হাত বুলিয়ে বলে

—কিছু হবে না, চিন্তা করিস না। তারপর৷ এক গ্লাস পানি ঢেলে আদ্রিয়ানের দিকে দিল। আদ্রিয়ান সম্পূর্ণ পানিটা ঢকঢক করে একবারে খেয়ে নিল। তার আর আজ ঘুম হবে না, তাই সে তাদের বেলকনিতে চলে আসে।রাতের অধারের আদ্রিয়ান খুজে চলছে তার আধারকে। আধারকে প্রথম দেখাতেই আদ্রিয়ানের মনে সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য #নিশ্চুপ_ভালোবাসা আর আধারের সাথে আজ তার কাটানো মূহুর্ত গুলো বার বার মনে করতে লাগলো। আধার কি আদেও তাকে বুঝবে কিনা সেটা তার অজানা।

★পরের দিন সকালে

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফুট উঁচু সাজেক ভ্যালিতে তারা সবাই খাওয়াদাওয়া শেষ করে সাজেকের সবচেয়ে উঁচু কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশে বের হয়। পাহাড়ে উঠে প্রচণ্ডভাবে ক্লান্ত হলেও প্রকৃতি সেটা বেশিক্ষণ থাকতে দেয়নি। আশপাশের সুন্দরের মোহে আকর্ষিত হয়ে সব ভুলে প্রকৃতি উপভোগ করতে থাকে সবাই। কেউ এক মনে দূরের আকাশের দিকে তাকিয়ে, কেউবা নিজে মোবাইল–ক্যামেরায় প্রকৃতির সৌন্দর্যবন্দীতে ব্যস্ত। চারপাশে তাকিয়ে উঁচুনিচু পাহাড়গুলোকে মনে হচ্ছিল সবুজ ঘাসের চাদরে ঢাকা সব। আকাশটা যেন অনেকটা মাথার কাছে চলে এসেছে। আর এই সব কিছু বাদ দিয়ে আদ্রিয়ানে তাকিয়ে আছে আধারের দিকে। কাত-তালীয় ভাবে আজ আধার আর আদ্রিয়ান এই রকম ড্রেসআপ করেছে। আধার পরেছে একটা হুয়াট কালারের টপস্ ব্লাক কালারের জিন্স গোলায় পিংক কালের স্কার্প আর হুয়াইট কালারের জুত, আদ্রিয়ান ও সেম সাদা শার্ট, কালো পেন্ট হাতে ব্রেন্ডর ঘড়ি সু জাস্ট ওসাম লাগছে দুজনকে। দিহান এসে আদ্রিয়ান কে কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বলে

—-কিরে তুই যবর খারাপ, আমাদের বলিস হরতাল আর তোলে তোলে তুমি, বাস টেম্পু,রিক্সা সব চালাও? আদ্রিয়ান বলে

—-ঐ নাপিত কি আবুল তাবুল বকছিস, মাথার তাড়টা ছিড়ে গেছে তোর? এক জন্যই এমন করেছিস তাই না? আশিক বলে

—-কি হয়েছে তোদের? দিহান বলে

—দেখ আজ আমাদের মিষ্টি আলু আর আধার ভাবি সেম সেম পরছে। কিন্তু ফুলঝাড়ু কোথায় ওকে তো দেখছিনা? আশিক বলে

—-তুমি দোস্ত ফুলঝাড়ুর প্রেমে তো স্লিপ কর নাই? দিহান বলে

—-আরে,,,না,,,,। আশিক বলে

—-জানি জানি, আর বলতে হবে না। দিহান বলে

—-বাঁশি তাহলে আবার জিজ্ঞেস করিস কেন। আমার লজ্জা লাগে না বুঝি, দাড়া একটু আমার ফুলঝাড়ু কে জ্বালিয়ে আসি।
বলেই চলে যায় আর আদ্রিয়ান নিজের ক্যামেরা দিয়ে পিক তুলতে লাগলো আধারের। আধার তো অনেক খুশি চারিদিকে সবুজের সমাহার কিন্তু আকাশ অনেক মেঘলা। হয়তো বৃষ্টি হবে এই পাহাড়ি অন্ঞ্চলে কখন বৃষ্টি হবে তা বলা বড় দায়। মিম আর মারিয়া আনলিমিটেড বকবক করছে। মরিয়া তার লম্বা চুলগুলো খুলে দিয়েছে তাকেও সবুজ রঙ টায় বেশ মানিয়েছে। মিম আধারের কাছে যায় কারণ সে একা একাই ঘুরছে। তখনই দিহান এসে বলে

—হ্যালো। মারিয়া বলে

—হাই। দিহান বলে

—একটা হেল্প করবা প্লিজ?মারিয়া ভাবে এত সুন্দর করে বলছে হয়তো সত্যি কোনো কাজ আছে সে বলে

—আগে বলেন তারাপর। দিহান বলে

—মারু, ফারু, ফুলঝাড়ু। আমার রুমটা না অনেক নোংরা হেয়ে গেছে, তো আমার তোমাকে লাগবে, ঝাড়ু দিতে। মরিয়া রেগে গিয়ে বলে

— ফাজিল,শেয়ালের নানার নানা, নারিকেল গাছের পত্নী এর জামাই। দিহান বলে

—-তাহলে সেই পেত্নী টা তুমি। মারিয়া কথাটা প্রথম দফা বুঝতে না পারলেও সেটা বুঝতে তার টাই লাগলো না যে দিহান কি বললো। মারিয়া আর চোখে তাকিয়ে বলে

—আপনি পাগল হয়ে গেছেন মিয়া,পাবনা পাঠানো দরকার আপনাকে। দিহান বলে

—এই তোমরা মেয়েরা এমন কেন বলতো, দেখ আমার সোজাসাপটা কথা। মারিয়া বলে

—এখান থেকে একটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব জান বলছি। দিহান বলে

—-ওয়াও প্রথম বারই জান, হাউ কিউট। আচ্ছা এই দিকে তাকাও। বলেই নিজের ফোনটা বের করে ঘেচঘেচ করে কয়েকটা সেলফি তুলে নিল তার আর মারিয়ার। মারিয়া আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছে। দিহান বলে

—টাটা ফুলঝাড়ু। মারিয়া কিছুই বলেনা তা দেখে দিহান বলে না পিক গুলা দেখতে দেখতে কেটে পরে। মিম আধারকে আধার বলে ডাক দিলে, সে যখন নিজের ঘাড় ঘুরায় ঠিক সেই মূহুর্তেই একটা পিক তুলে নেয় আদ্রিয়ান মুখে বড় হাসির রেখা জাস্ট ওয়াও হয়েছে পিকটা। মিম দৌড়ে যাওয়ার সময় আশিকের সাথে ধাক্কা লাগে, কারণ আদ্রিয়ান আর আিশক প্রায় আধারের কাছেই ছিল। আশিক রেগে গিয়ে বলে
—-একটু কমন সেন্স নেই তোমার? এখন যদি পরে যেতাম খাদে? ওরা অনেকটা পাহাড়ের শেষ প্রান্তের দিকে ছিল। মিম বলে

—সরি আসলে আমি,,, আশিক জোরে আরেকটা ধমক দিয়ে বলে

—-সরি মানে? এত বাচ্চামো দুষ্টাম করা ভালো না, বড় হয়েছে ক্লাস নাইন টেনে পড় না। আধার আশিকে এতো রুড হতে দেখে তার সামনে এসে বলে

—ভাইয়া এত রাগার কি আছে আর আমার মনে হয়না ধাক্কা লাগলেও আপনি খাদে পরতেন বলে বেশ আগিয়ে গিয়ে নিচে তাকাতে যায় আর এমনি আদ্রিয়ানের রাতের স্বপ্নের কথা মনে পরে। সে আধারের হাত ধরে টেনে নিয়ে এসে বলে

—-আপনাকে কে পাকনামি করে দেখতে হবে না। আধার বলে

—কেনো ভয় পান যদি পরে যাই? আদ্রিয়ান কিছু সময় পর ভেবে বলে

—-হুম পাই কারণ, তোমাকে বলতে বাধ্য নই ।আধার বলে

—অহহ,আচ্ছা। মিম চল যাওয়া যাক ।মিমের মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায় কারণ মিম আর যাই করুক এমন দুষ্টামি সে করবে না যাতে অন্যের খারাপ হোক। সে আশিকের দিকে তাকিয়ে বলে

—-আমও সরি ভাইয়া আসলে আমার আপনার সাথে এভাবে কথা বলা ঠিক হইনি মানি। কিন্তু আমি আপনাকে ইচ্ছে করে দেয়নি।আর কিছু না বলেই আধারের সাথে চলে যায়। আদ্রিয়ান বলে

—-এখানে মিমের কি দোষ ছিল এভাবে বকা দিল কেন? আশিক বলে

—-বাদদে একটু পরেই আবার ঠিক হয়ে যাবে। আদ্রিয়ান কিছু বলে না।একটু পরেই শুরু হয় বৃষ্টি আর তখনই টিচার সাহ সবাই নিচে নামতে লাগে। কিন্তু আধার দাড়িয়ে আছে দু হাত মেলে বৃষ্টি বিলাস করছে। আদ্রিয়ান খেয়াল করে দেখে মারিয়া মিম নামলেও আধার নেই।মিম আর মারিয়া ভাবে হয়তো আধার তাদের সাথেই কাণ তাদের পাশ দিয়ে আরেকটা সাদা জামা পড়া মেয়ে নাম ছিল। মনে একটা ভয় আকরে ধরে। সে আবার দৌড়ে পাহাড়ের চুড়ায় উঠতে লাগে। আশিক দিহান ডাকলে পরে বলে

—- তোরা যা আমি আসছি। আদ্রিয়ান যেয়ে দেখে আধার বৃষ্টি ভিজে একাকার। আদ্রিয়ানের রাগে গা রিরি করছে। গিয়ে আধাীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে

—-এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি হ্যা? তোমার ধারণা আছে কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি? আমাকে মানুষ মনে হয়না তোমার? আধার বলে

—-কি হয়েছে? আদ্রিয়ান বলে

—-কি হয়েছে মানে? মানে জানতে চাও? তুমি সেটা জানো আধার তুমি এতো টাও অবুজ না। সব বুজও কেনো অবুজের মতো সেজে থাকো? আধার বলে

—কিছু জিনিস না জানাই ভালো। আদ্রিয়ান বলে

—পারতো শুধু বড় বড় কথা বলতে, না বুজাই ভালে কিভাবে তুমি বুঝনা সেটা আমি তোমাকে পরে বুজাচ্ছি। বলই কোলে তুলে নিল আধার কিছু বলতে যাবে তখনই আদ্রিয়ান বলে

—-একটা কথা বলবা, মাথায় তুলে আছাড় মারবো ফাজিল মেয়ে একটা। আধারও মুখে হাত দিয়ে বুজালো সে চুপ, কোনো কথা বলবে না। আদ্রিয়ান আধারকে কোলে তুলেই নামতে লাগলো। দুজনেই বৃষ্টিতে ভিজে একাকার…..কিছু পথ যেতেই

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে