না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৯

0
1500

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_jahan
#Part_9

আস্তে আস্তে ভয় বেড়ে যাচ্ছে,,,,

বসে বসে কাঁদছি এমন সময় কলিংবেল বেজে ওঠলো,,,

ইচ্ছা করে খুলছি না।অনেকক্ষণ ধরে কলিংবেল বাজাচ্ছে খুলছি না দেখে মনে হয় ডুবলিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে পেলছে,,খুলে দেখলো আমি এককোণে জড়োসড়ো হয়ে বসে কাঁদছি।

ও দৌড়ে এগিয়ে এসে,,,,

আদিঃ কি হয়েছে ঋতু কাঁদছ কেন? ( অনেকটা গাবড়ে গিয়ে)

আমি কিছুই বলছি না,,,

আদিঃ প্লিজ চুপ করে থেকো না বলো কি হয়েছে?

আমি ওখান থেকে ওঠে চলে আসতেই ওনি হাত ধরে ফেললেন,,

আমি এবার চিৎকার করে,,,,,

আমিঃ হাত ছাড়ুন বলছি,,,,এখন কেন আসছেন অফিস থেকে ওখানেই থেকে যেতেন।এতো বড় বাড়িতে যে একটা মেয়ে একা আছে তা কি জানেন না একটু নূন্যতম সেন্স নেই যে তার ভয় লাগতে পারে।নাকি স্বামীর অধিকার পাচ্ছেন না যে ওই চিন্তা শক্তি হারিয়েছেন, নাকি ভালোই লাগছে না আমার কথা চিন্তা করতে।

আমার কথায় আদি হাতটা আলগা করে,,,

আদিঃ ঋতু,,,,,,,,( জোরে)

চিৎকার করবেন না আমি ভুল কিছু বলি নাই।আপনার যদি একটুও দায়িত্ববোধ থাকতো তাহলে একটা বার খোজ হলেও করতেন।

বলে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম,,,।

আদি দেওয়ালে সজোরে ঘুষি মারলো,আসলে ও কি পারলো দেরি করতে,,,

আদি নিচে বসে বসে ঋতু বলা কথা ভাবছে,, কথা গুলো যেন কাঁটার মতো বিঁধছে,,, আদি আবার ওঠে দাঁড়ালো যে করে হোক ঋতুর রাগ ভাঙ্গতে হবে। গাড়িতে দেখলো খাওয়ার টাইম হয়ে গেছে আদি খাবার নিয়ে ঋতুর রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে দরজায় টোকা দিয়ে,,,,

আদিঃ ঋতু আম সরি, কাজের অনেক চাপ ছিল।কাজ করে করতে আমার খেয়াল ছিলো না কয়টা বেজেছিল,, টাইম দেখা মাত্র তোমার কথা মনে আসলো আমি সব কাজ রেখে চলে আসছি,,তবুও আমার ভুল হয়েছে আমার কেন তোমার কথা মনে ছিল না,,,প্লিজ এইবারের মতো ক্ষমা করে দাও প্লিজ,,,

আমি কিছুই বলছি না,,,

প্লিজ ঋতু দরজা খুলো না বলছি তো আর এমন হবে না।অনেক রাত হয়েছে আমি তোমার জন্য খাবার এনেছি খেয়ে নাও,,,

আমিঃ আমি খাবো না আপনি যান এখান থেকে,,,,,

আদিঃ আমার উপর রাগ করে না খেয়ে থেকেও না প্লিজ

আমিঃ খাবো না বললাম না যান এখান থেকে,,

আদিঃ তুমি যতোক্ষণ না দরজা খুলবে আমি এখান থেকে এক পা ও নড়বো না,,,,

আমিঃ,,,,,,,,,

অনেকক্ষণ পর ঋতুর আওয়াজ না পেয়ে আদি আবারও বললো,,

আদিঃ আমার কিন্তু অনেক ক্ষিদে পেয়েছে কাজের চাপে দুপুরেও খাওয়া হয় নাই,,,প্লিজ দরজা খুলো তুমি না খেলে আমিও খাবো না,,,

(এবার কি রকম খারাপ লাগলো কাজের চাপে দুপুরেও খায়নি,,,,কিন্তু তাই বলে আমি একা যে ভুলে যাবে নাকি,,,থাক ক্ষমা তো চেয়েছে,,,)

গিয়ে দরজা খুললাম,,,,

আদিঃ ছরি,,,( কান ধরে)

ওনার ইনোসেন্ট মুখ দেখে হাসি পেল,,,কিন্তু হাসলে চলবে না,, মুখে গম্ভীর ভাব বিয়ে ওনার হাত থেকে খাওয়ারের প্লেট নিয়ে টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করলাম

ওনি মুচকি হেসে আমার সামনের টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করলো,,,

ও টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিতেই আমার চোখ গেলো ওনার হাতে,,,,হাতটা পুরা লাল হয়ে আছে।যেন কেউ আঘাত করছে,,,,,

আমিঃ আপনার হাতে কি হয়েছ লাল হয়ে আছে কেন?

আদি কিছুনা বলে কিচেনে চলে গেল,,,মনে হলো কিছি লুকালো,,,আমি তেমন পাত্তা না দিয়ে চলে গেলাম,,,,মোবাইলে এলার্ম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম,,,

সকাল বেলা এর্লামের ডাকে ঘুৃম ভাঙ্গলো,,,,ওঠে নাস্তা রেডি করলাম,,,আদি শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে আমাকে বললো,,

আদিঃ তোমার নতুন কলেজের এডমিশনের জন্য আগের কলেজের টিসি লাগবে কয়কদিন পর গিয়ে নিয়ে এসো,,,

আমিঃ না না আমি নতুন কলেজে এডমিশন নিবো না,,, আগের ওইটাতে থাকবো,,,,

আদিঃ পাগল নাকি ওখান থেকে কলেজ করা অনেক কষ্টকর তারপরএক্সাম আছে,,,সম্ভব না,,তোমাকে এখানেই এডমিশন নিতে হবে।।

আমি নেকা কান্না করে,,

আমিঃ আমার জীবনটাই তেনা তেনা হয়ে যাচ্ছে।আমি নিউ কলেজে কাউকে চিনবো না আমি রিয়াকে ছেড়ে থাকবো কেমন,,,

আদিঃ কেন তুমি তো অনেক ভালো ঝগড়া করতে পারো কলেজে ঝগড়া করে করে ফ্রেন্ডশিফ করে ফেলো।

আমিঃ কি,,,,, আমি ঝগরুটে ( কোমরে হাত দিয়ে)

আদিঃ তা কখন বললাম😬।এনি ওয়ে আমার লেট হয়ে যাচ্ছে,,,,, তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও।

আমি বাঁকা চোখে তাকিয়ে ওনাকে নাস্তা দিলাম।ওনি খেয়ে চলে গেল,,,,

💐💐💐
এভাবে এক সাপ্তাহ চলে গেল,,,এখন আর রাতে দেরি করে আসে না, সন্ধার মধ্যে চল আসে,।প্রতিদিন আসতে কিছু না কিছু নিয়ে আসে,,এই এক সাপ্তাহে ওনাকে যা চিনলাম মানুষটা খারাপ না।আমাকে টার্চ করা তো দূর কখনও খারাপ চোখেও তাকায় নাই।কিন্তু আজো ভাবি আমার জীবনটা কতোটা বদলে গেছে,,,, আগে আমাদের বাসায় একা একদম থাকতাম আমার ভালো লাগতো না একা থাকা, , ,,, আর এখন সারদিন কাটে একাকিত্ব,,,, এই একাকিত্ব সময়টা আমাকে খুব কষ্ট দেয়।

রাতে ওনি আসতেই দরজা খুললাম,,ওনি ফ্রেশ হয়ে এসে,,,,

আদিঃ তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।

আমিঃ হ্যা বলেন।

আদিঃ আসলে,,,,,,,আসলে আমাদের বিয়েটা গ্রামে হওয়ায় আমার ফ্রেন্ডরা আর অফিসের কলিগরা সবাই বিয়েতে যেতে পারেনি। এখন সবাই একটা পার্টি থ্রো করেছে আমাদের জন্য,, আমি অনেকবার মানা করেছি কিন্তু ওরা মানছে না।এখন তুমি যদি আমার সাথে যাও ভালো হবে,,আমি তোমাকে জোর করছিনা যদি চাও আরকি( অনেকটা ভয়ে আর সংকোচ হয়ে)

আমি ওনার মুখ দেখে,,,, হাসি পাচ্ছে কথাগুলো বলতেও তোতলাচ্ছে,,,, ওনি এতো আশা করে বলছে না করতে পারছি,,ওনার সম্মানের দিকে ভেবে,,,

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,কখন যেতে হবে,,,।

আদি মুখে হাসি ফুটলো,, যেন এক রাজ্যকে জয় করেছে,,,

আদিঃ কাল সন্ধ্যার দিকে রেডি থেকো আমি অফিস থেকে এসে নিয়ে যাবো,,,

আমিঃ আচ্ছা

বলে চলে আসতেই ওনি,,,,

আদিঃ ঋতু,,,,,,

আমিঃ হুম

আদি একটা প্যাকেট এগিয়ে এনে,,

আদিঃ এখানে কিছু জিনিস আছে তোমার পছন্দ হলে কাল পরো।

আমি প্যাকেটা নিয়ে রুমে আসলাম,,,,পরে খুলে দেখলাম,,, একটা গর্জিয়াছ কালো শাড়ী ,,,, মেসিং জুয়েলারি সব মিলিয়ে খুব সুন্দর। ওনার চয়েয় আছে বলতে হবে,,।আমি জিনিসগুলো রেখে দিলাম

পরেরদিন বিকেলে কালো শাড়ী পড়ে, চুল গুলো সামনের দিকে হালকা ফুলয়ে পিছনে খোপা করে খোপার মধ্যে কালো কালারের গজরা লাগালাম।জুয়েলারি গুলো দিয়ে হালকা লিপস্টিক আর কাজল দিয়ে দিলাম আমার সাজ সম্পুর্ণ হলো।

আদির জন্য ওয়েট করছি,,,,হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ আসলো,,,,,,

চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে