তোমার জন্য সাইকো পর্ব-১২

0
2291

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_১২
সারাটাদিন মুন অহনার সাথে ছিল । রোদ অহনাকে বলছে মুনকে সাথে সাথে রাখতে ।
বিয়েতে পার্লার থেকে আসছে অহনাকে সাজাতে। সবাই পার্লার থেকে সাজবে মুন নিজে নিজে সাজবে ওর বেশি সাজ পছন্দ না।
মুন একটা গোল্ডেন কালার এর লেহেঙ্গা পরেছে চুল গুলো ছেড়ে দিয়া। কানে মেচিং ঝুমকো ।মুনকে আজ গোল্ডেন পরীর মতো লাগছে। আমাদের হিরোকে ও কম সুন্দর লাগছে না মুনের সাথে ম্যাচিং করে গোল্ডেন পাঞ্জাবি পরছে হাতে দামী ঘড়ি । চুল গুলো সেট করা।
মুন আর রোদকে দেখলে যে কেউ বলবে এরা একে অপরের জন্য হয়ছে ।
মুন গিয়ে ওর পাপাই এর পাশে দাঁড়ালো ।
রোদ কিছু ছেলেদের সাথে কথা বলছে মেয়েরা তো আজ রোদ কে চোখ দিয়ে গিলে খাসছে।
একটু পর বর জাত্তি আসলো ।
হটাৎ মুনের হাত ধরে কে যেনো টান দিলো মুন তাকিয়ে দেখে আরুশ
আরুশ একটা নীল পাঞ্জাবি আর ব্ল্যাক জিন্স পড়েছে আরুশ কে ও খুব সুন্দর লাগছে ক্রাশ খাওয়ার মত ।
মুন: আপনি এখানে
আরুশ: হা আমার মামাতো ভায়ের বিয়ে আমি ছাড়া কে আসবে
মুন: সে আপনি আসেন কিন্ত আমার হাত ধরলেন কেনো ।
আরুশ : আমার ইচ্ছা তাই এখন কি তোমার পারমিশন নিয়ে চলতে হবে
মুন কিছু না বলে হাত ছাড়িয়ে চলে আসলো
আরুশ ও মুনের পিছন পিছন যাচ্ছে মুন যেখানে যায় আরুশ ও সেখানে।
মুন: আল্লাহ প্লিজ আমার পিছন ছাড়েন
আরুশ : ভালোবেসেছি ছাড়ার জন্য না
মুন: কিসের ভলোবাসা হা আমি আপনাকে ভালোবাসি না ।
তখনই মুন দেখলো রোদ ওর দিকে তাকিয়ে আছে মুন কিছু না বলে নিহাল চৌধুরী কাছে গেলো ।
কিছুক্ষণ পর রোদ মুনের কাছে গিয়ে মুনের হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেলো
মুন: রোদ আমরা এখানে কেনো? ( ভয়ে ভয়ে)
রোদ কিছু না বলে চোখবন্ধ করে আছে ।
মুন ঠিক বুঝতে পারছে আজ মুনের কপালে দুঃখ আছে ।
মুন: রোদ আমি
আর কিছু বলতে পারলো না
রোদ মুনকে ঠাসস করে চর মেরে দিল ।
মুন পরে জিতে নিলে রোদ মুনকে টেনে ধরে।
রোদ: চুপ আর একটা কথা না কাল আমায় কি বললে যে আর কোনো ভুল করবে না তাহলে আজ ঐ ছেলের সাথে কি করছিলে হা বিয়ে বাড়িতে সারাক্ষণ ওই ছেলের সাথে ছিলে বলো কেনো( চোখ লাল করে মুনের বাহু ঝাকিয়ে)
মুনের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
মুন: রদদোদ আম মার র লাগছে
রোদ: লাগুক আগে বলো তুমি ঐ ছলের সাথে কি করছিলে তোমাকে উরতে দিছি বলে যা খুশি তাই করবো আজ আমি আছি বলে এই করছো কাল যদি আমি না থাকি তখন ( জোরে চিল্লিয়ে)
নিজের জিনিস এর উপর নিজের নাম লিখে রাখা ভালো ।
এই বলে বেরিয়ে গেলো ।
মুন তো সেখান দাড়িয়ে কাদছে মুনের হাত লাল হয়ে গেছে রোদের অভাবে ধরতে।
একটু পর রোদ আসলো হাতে বেলেট আর মোমবাতি নিয়ে ।
মুন এটা দেখে ওর রুহু কেপে উঠলো।
মুন: রোদ এগুলো কিসের জন্য
রোদ: নিজের জিনিস এর উপর নিজের নাম লেখানোর জন্য ।
মুন: রোদ প্লিজ আমায় বিশ্বাস করুন আমি সত্যি কথা বলতে চাইনি
রোদ: চুপ একটা কথা বললে জানে শেষ করে দেবো।
বলে রোদ মোমবাতি জ্বালিয়ে বেলেটা পোড়াতে লাগলো ।
মুন তো রোদের পায়ে পড়ে যায়
মুন: রোদ প্লিজ আমায় এতো বড়ো শাস্তি দেবেন না আমি সত্যি এমন আর করবো না আপনার সাথে সাথে চলবো । প্লিজ আমার কাটাকুটি দেখতে খুব কষ্ট হয় প্লিজ রোদ এমন করবেন না ( কাদতে কাদতে)
মুনের ছোটো বেলা থেকে কাটাকুটি রক্ত এসব দেখতে পারেনা একবার তো অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো।
রোদ মুনের বাহু ধরে পা থেকে উঠলো
রোদ: কেনো এমন করো বলো তো কেনো আমাকে রাগিয়ে দাও । আমার রাগটাই কি তোমার কাছে সব আমার ভালোবাসা কিছু না ।
মুন শুধু কেদেইই যাচ্ছে
রোদ: অনেক হয়ছে আজ তোমাকে এর শাস্তি পেতে হবে
বলে বেলেট টা মুনের সামনে ধরলো
মুন রোদকে জড়িয়ে ধরে কদছে
মুন: রোদ প্লিজ না আপনি বিশ্বাস করুন আমি শুধু আপনাকে ভালোবাসি অন্য কেউ কে না সেই ছোটো বেলা থেকে খুব ভালোবাসি আপনাকে আমার সাথে প্লিজ এমন করবেন না।
সত্যি আমার কোনো দোষ নেই

রোদ তো মুনের মুখ থেকে এই কথা শুনার অপেক্ষায় ছিল । রোদ জানে মুন ওগুলো সহ্য করতে পারে না রোদ তো মুনকে ভয় দেখানোর জন্য এগুলো করছিলো কিন্ত রোদের কাজে লেগে গেলো আর ও ওর ভালোবাসার মানুষের মুখ থেকে ভালোবাসি শুনেছে।
রোদ: আমি জানি sweetheart তোমার কোনো দোষ নেই আমি তোমার সব কাজের উপর নজর রাখছি আমি জানি আরুশ তোমাকে বিরক্ত করে কিন্ত আমি কিছু বলিনি কারণ আমি চেয়েছি তুমি নিজে আমাকে বলবে কিন্ত তুমি বলনি আমার রাগ সেটাই তুমি আমাকে এই টুকু বিশ্বাস ও করো না । ওই আরুশ কে তো আমি ছাড়বো না ও কার কলিজায় হাত দিয়েছে জানে না ওকে আজ রাতেই বুঝিয়ে দেবো রোদ আহমেদ চৌধুরী কে।( মনে মনে)
মুন রোদকে এখন ও জড়িয়ে ধরে কাদছে।
রোদ মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো
রোদ: তুমি আমায় ভালোবাসো আর না বসো তোমাকে আমার হতে হবে by hook by crock
এখন নিচে আমার হাত ধরে থাকবা আমার থেকে একটু ও দূরে যাবা না আমি যেখানে যাবি সেখানে যাবা।
রোদের বুক থেকে উঠে
মুন: রোদ আমি
রোদ: চুপ কোনো কথা না যা বলছি তাই কর( রেগে)
মুন: হুম
তারপর ২জন নিচে নামলো ।
নিচে এসে রোদ মুনের হাত ১সেকেন্ড এর জন্য ও ছাড়ছে না । মুনের বিরক্তি হলে ও রোদকে কিছু বলার সাহস নেই ।

এদিকে আরুশ মুনকে রোদের সাথে দেখে জ্বলে পুড়ে মরছে
আরুশ : না এতো সহজে মুনকে আমার কাছ থেকে ওই রোদ নিয়ে যেতে পারে না আমার সাজানো বাগান এতো সহজে নষ্ট হতে পারে না কিছুতে নায়া।
আরুশ কয়েক বার মুনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্ত মুন রোদের দিকে তাকিয়ে আছে ।
এভাবে বিয়ে শেষ হলো ।
সবাই খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি চলে গেলো ।
রোদ: আম্মু আমি মুনকে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি এখানে আর থাকতে ভালো লাগছে না
রাইমা: এখন যাবি এতো রাতে
রোদ: যা আম্মু
রাইমা: আচ্ছা যা সাবধানে
রোদ: তুমি চিন্তা করো না আমাদের পিছনে আমার বডিগার্ড থাকবে।
রাইমা: আচ্ছা মুন বাড়ি গিয়ে ফোন দিস
মুন: জী মামনি।
রাইমা: কিরে মা তোর মন খারাপ
মুন কিছু বলতে যাবে
রোদ: না আম্মু খুব টায়ার্ড তাই
রাইমা : আচ্ছা যা
রোদ আর মুন বেরিয়ে গেলো।

নিহাল: কি ব্যাপার ওরা কোথায় গেলো
রাইমা: বাড়ি গেছে
নিহাল: মুনকে যেতে দিলে কেনো?
রাইমা: তোমার মনে হয় তোমার ছেলে
মুনকে রেখে যাবে
নিহাল চৌধুরী আর কিছু বলল না

গাড়িতে মুন সারাদিনের ক্লান্তিতে রোদের কাধে ঘুমাচ্ছে আর রোদ ড্রাইভ করছে আর মুনের দিকে তাকাচ্ছে
রোদ: উফফ এই মেয়ে যে কত ঘুমাতে পারে সারাদিন ঘুমিয়ে ও হয়না নাকি আমার কাঁধ খুব পছন্দের ।
সে যাই হোক বিয়ের পর কিন্ত ঘুমাতে দেবো না সারাক্ষণ আমার চোখের সামনে বসিয়ে রাখবো
তখন তোমার এই ঘুম দেখবো কই যায়।
বলে ডেভিল স্মাইল দিলো।

সকালে মুনের ঘুম ভাঙলো দেখলো যে ও নিজের ঘরে ওর বুঝতে আর বাকি হইলো না যে কে নিয়ে এসেছে ।
মুন উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডী হয়ে নিচে গিয়ে দেখে রোদ টেবিলে বসে আছে । মুন ও একটা চয়ার টেনে বসে।
মুন: মামনি আসেনি
রোদ: দেখতে তো পাচ্ছো
মুন: খারুস বিটা বললে কি হয় ( মনে মনে)
রোদ: তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও আমাকে একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে।
মুন: হুম

খাওয়া দাওয়া শেষে রোদ আর মুন বেরিয়ে পড়লো

গাড়িতে
রোদ: কাল যা বলেছি মনে আছে তো
মুন: হুম
রোদ: কথার নড়চড় হলে কিন্ত আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না এখন যাও
মুন চলে গেলো,

মুন: কি ভাবছে যা বলবে তাই শুনবো হুউ আইচে আমায় ধমকাতে লুচু ছেমর
মুন এসব বির বির করতে করতে যাচ্ছিলো তখনই মুন লামিয়ার সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যায়
লামিয়া: ও জামাই গো এই শয়তান ছেমরি আমায় শেষ করে দিল আমার ফিউচার সন্তানরা কই সব তোমার আম্মু গেলো গো
মুন: ওই চুপ ছেমরি কি কস
( উঠে)
লামিয়া: তুই আমায় ফেলি কেনো আমার কোমর টা শেষ হয়ে গেলো
হটাৎ কেউ লামিয়া কে কোলে তুলে নিলো
মুন আর রুমা তো চেয়ে চয়ে দেখছে
লামিয়া: ওই কোন হুনুমান রে
লামিয়া সামনে তাকিয়ে দেখে বাঁধন ওর দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে
লামিয়া: তুমি এখানে।
বাঁধন : হা তুমি ত আপনাকে দাকলে
লামিয়া: আমি ডাকছি কখন আর তুমি আমায় কোলে নিচো কেনো নামও নামাও বলছি
বাঁধন : তুমি তো জামাই বলে ডাকলে ।
লামিয়া: ওটা আমি তোমাকে ডাকিনী আমি অন্য।
বাঁধন: চুপ একটা কথা বললে ফেলে কোনো ভেঙ্গে দেবো
লামিয়া আর কিছু বলে না
বাঁধন : তো সালিকা তোমরা থাকো আমি তোমাদের বোনের সাথে রোমান্স করে আসি
মুন+ রুমা: ওকে জিজু
লামিয়া: ওই কিসের জিজু রে
বাঁধন : আবার ( চোখ বড়ো করে)
লামিয়া আর কিছু বলে না
বাঁধন লামিয়াকে নিয়ে চলে যায়

মুন: ২জন কে খুব মানিয়েছে
রুমা: হা রে তোদের তো আছে শুধু আমার কেউ নেই
মুন: চুপ থাক তো এখন বল ফাংশন এর কি খবর
রুমা যা বললো টা শুনে মুনের মুন খারাপ হয়ে গেলো

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে