#তোকে_ভালোবেসে_খুব
#পার্ট_১৪(প্রথম অংশ)
Writer:#সারা_মেহেক
মৌ মাথা উঁচু করে দেখলো আয়ান ভয়ার্ত মুখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।তার চেহারায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে সে এখান থেকে পালিয়ে যেতে পারলেই মহা খুশি।মৌ এবার দাঁতে দাঁতে চেপে রেগে বললো,
—“আপনি তো খুবই খারাপ মানুষ!! তানভীর ভাই আপনাকে টাকা দেওয়ার বদলে আমাকে চাইছিলো,তখন আপনি কিছুই বললেন না!!আমার থেকে ছাড়া পেলে বুঝি খুব খুশি হতেন?”
আয়ান অবাক হয়ে বললো,
—“কি বলছিস তুই!!তোর থেকে ছাড়া পেলে আমি খুশি হবো!!এটা ভাবলি কি করে তুই?”
—“ভাবার কি আছে?আপনার চুপ করে থাকাটাই আপনার মনের কথা বলে দিয়েছিলো।”
—“আমি তো তখন বলতেই চাইছিলাম তানভীর ভাইকে, কিন্তু তার আগেই তুই চলে এলি।”
—“ওহ আচ্ছা…তাহলে আমি না আসলে আপনি ডিলটা করে নিতেন তাইনা??টাকা নিয়ে আমাকে দিয়ে দিতেন ঠিক না?আমি আসাতে সব ভেস্তে গেলো তাই তো?”
আয়ান এবার রাগী চোখে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললো,
—“তুই এমনটা চিন্তাও করলি কি করে যে আমি টাকার বিনিময়ে তোকে তানভীর ভাই এর কাছে দিয়ে দিবো?আমি তোর স্বামী।এটা ভুলে গিয়েছিস নাকি?একজন স্বামী কোনোমতেই টাকার লোভে তার বউকে অন্যের হাতে তুলে দিবে না।”
—“এখন কি করতেন জানা নেই।তবে কয়েক মাস আগে ঠিকই তো টাকার কারনে।উঁহু বাইকের কারনে আমাকে রিলেশনে রাজি করাতে চাইছিলেন।”
মৌ এর কথা শুনে আয়ানের রাগী ভাবটা মূহুর্তেই চলে গিয়ে চেহারায় একটা বেচারা টাইপের ভাব দেখা গেলো।মৌ আবারো বললো,
—” আপনি যে এতো লোভী এটা জানা ছিলো না আমার।”
আয়ান মাথা নিচু করে মিনমিনে স্বরে বললো,
—“বাইকটা আমার খুব পছন্দের ছিলো।তাই বাইকটা পাওয়ার সুযোগটাকে হাত ছাড়া করতে চাইনি।”
মৌ রাগে জোরে একটা শ্বাস ছেড়ে বললো,
—“বাইক বাইক বাইক,উফ মাথাটা ঝিম ধরে গিয়েছে এই বাইক নামটা শুনতে শুনতে।বাইকে এতো কিসের কি আছে?”
—“মেয়েদের যেমন মেকআপ ভালো লাগে,ছেলেদের তেমন বাইক ভালো লাগে।”
—“তাই বলে বাইকের সামনে কোনো মেয়েও চোখে পরেনা?”
আয়ান এবার মাথা তুলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললো,
—“মানে?বাইকের সামনে মেয়ে আসলো কোথা থেকে?”
মৌ দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
—“আরে….আমার কথা বলছি। বাইকের ডিলটা করার সময় কি একবারো মাথায় একটু বুদ্ধি জাগেনি যে মৌ এর সাথে বাইকের ডিলটা করা কি উচিত হচ্ছে?”
আয়ান অপরাধী সুরে বললো,
—” নাহ।তখন আমার সামনে শুধু বাইক ভাসছিলো।”
—“আল্লাহ গো…আপনাকে না বাইকের সাথে বেঁধে রাখা উচিত সবসময়। তখন যদি বাইকের শখ মিটে।
আপনি একবারো ভাবেননি যে বোনের বান্ধবীর সাথে এমনটা করা উচিত হচ্ছে নাকি।”
আয়ান কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়ীয়ে থাকে।
মৌ আবারো বললো,
—“আর আপনার আক্কেল জ্ঞান সব কোথায় ছিলো হুম?যে ছেলেকে আমি দুচোখেও দেখতে পারতাম না সে ছেলের সাথে আমাকে রিলেশনে রাজি করাতে চেয়েছিলেন!!
আচ্ছা?মাথায় কি একটুও আসেনি এ কথাটা যে,আমি এ ব্যাপারে জানলে কি রিয়েক্ট করবো?কি বলবো আপনাকে?
আর বোনের বান্ধবী হিসেবে কি এটা মাথায় আসেনি যে মেয়েটার সাথে এমন করা উচিত না?কিছু একটা হয় আপনার সে।”
আয়ান বাচ্চাদের মতো সুরে বললো,
—“তখন তোর প্রতি কি আমার কোনো ফিলিংস ছিলো নাকি?এজন্য এমনটা করাতে কিছু মনে হয়নি।আর প্লিজ এবারের মতো আমাকে মাফ করে দে।এমনটা আর কোনোদিব হবেও না।আর আমি হতেও দিবো না।”
মৌ এক হাতের উপর আরেক হাত রেখে ভ্রু নাচিয়ে বললো,
—“আমিও তো এমনা হতে দিবো না।আর এমনটা যাতে না হয় সে ব্যবস্থাও করছি আমি।আর মাফ, জিনিসটা এতো সহজে করছি না আপনাকে।এতো বড় ভুল করেছেন। তো সাজা তো পোহাতেই হবে।”
আয়ান একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো,
—“কি সাজা?”
মৌ ভাব নিয়ে বললো,
—“আপনার সাজা হলো,আপনি পুরো ১ সপ্তহ আমার সাথে একটুও কথা বলবেন না।একটুও না।আই রিপিট একটুও না।”
মৌ এর কথা শোনার সাথে সাথে আয়ানের চোখজোড়া আপনাআপনি বড় হয়ে গেলো।এতো বড় সাজা সে মোটেি আশা করেনি।এটা তার কাছে বড় একটা পাহাড় কাটার সমান। উঁহু, পাহাড় কাটা হয়তো একটু সহজ কাজ কিন্তু মৌ এর সাথে পুরো একটা সপ্তাহ কথা না বলে থাকার তার জন্য সম্ভব না।আয়ান মিনতির সুরে বললো,
—“প্লিজ,মৌ।এমন সাজা দিস না।এটা খুব বড় সাজা হয়ে গেলো আমার জন্য।একটু সোজা কিছু বল।”
মৌ আয়ানের কথা শুনেও না শোনার ভান করে বললো,
—“উঁহু উঁহু। এটা তো আমার কাছে বেশ সহজ মনে হচ্ছে।”
—“কি বলছিস তুই!!এটা সোজা!!মোটেও না।পুরো ৭টা দিনের ২৪টা ঘন্টা তুই আমার সামনে থাকবি,অথচ আমি তোর সাথে কথা বলবো না!!দ্যাটস ইম্পসিবল। ”
মৌ আয়ানের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বললো,
—“অফিসের সময়টুকু কাট যাবে ২৪ ঘন্টা থেকে।আবার ঘুমের সময়টুকু।আবার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার সময়টুকুও বাদ যাবে।সে হিসেবে তো কমই হচ্ছে।”
আয়ান অবাক হয়ে বললো,
—“এই, তুই মানুষ নাকি পাথর রে?এতো বড় সাজা দিয়ে আবার হিসাব করছিস কোথায় কোথায় সময় কাট যাবে!!”
মৌ বাঁকা হেসে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
—“শান্ত হোন শান্ত হোন।সাজা তো এখনও শেষ হয়নি।”
আয়ান মৌ এর কথা শুনে একটা শুকনো ঢোক গিলো ভয়ার্ত গলায় বললো,
—“আর কি বাকি আছে?”
—“আছে আছে।অনেক গুলো বাকি আছে।
তো এবার সাজাগুলো শুনুন।১.প্রতি সকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে শাওয়ার নিয়ে অফিসে যাবেন।
২.এক সপ্তাহের জন্য বেডে শোয়া মানা।সোফায় শুবেন।দ্যাটস ইট।”
মৌ এর সাজাগুলো শুনে আয়ানের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো।সে অনুনয় করে মৌ কে বললো,
—“আচ্ছা,সবগুলোই মানবো।তবে তোর সাথে কথা না বলার সাজাটা ফিরিয়ে নে।প্লিজ।”
—“মোটেও না।মাত্র ৩টা সাজাই তো।এগুলো পূরন করতে পারলেই আপনাকে মাফ করবো।”বলে আর কোনো কথা না বাড়িয়ে মৌ রুমের বাইরে চলে গেলো।অহনা দরজা সিটকানি দিয়েছিলো না,দরজা শুধু বন্ধ করেছিলো।তাই মৌ সহজেই রুম থেকে বেড়ুতে পারলো।
এদিকে আয়ান বাচ্চাদের মতো কাঁদো কাঁদো সুরে পিছন থেকে মৌ কে ডেকেই চলছে।কিন্তু মৌ তা শুনেও না শোনার ভান করে চলে গেলো।
আয়ান আর উপায় না পেয়ে নিচে ধপ করে বসে বসে নিজের কপালে নিজেও চড়াতে লাগলো আর বলতে লাগলো,
—“কার মুখ দেখে যে সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেছিলাম!! কর কর, আরো বাইকের প্রতি লোভ কর।আয় আয়, সব লোভ আমার কাছেই আয়।বেক্কল একটা।যত্তসব লোভের পাল্লায় পরেছিলাম।আর বউটাও…মাশাল্লাহ।পাথরের চেয়ে কোনো অংশে কম না।পানিশমেন্টগুলোও দিয়েছে এমন,যা হাজার না চাওয়া সত্ত্বেও ভোগ করতে হবে।এখন বসে বসে নিজের কপাল চড়ানো ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।”বলে আয়ান কষ্টের এক শ্বাস ছাড়লো।
.
.
এভাবে ৭টা দিন কেটে গেলো। তবে দেখতে দেখতে না।আয়ানের কাছে এই ৭টা দিন সবচেয়ে কষ্টের দিন ছিলো।তার এ যাবত কালে ভোগ করা সবচেয়ে বড় পানিশমেন্ট ছিলো তার জন্য।
সেদিন রাত থেকেই মৌ আয়ানের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলো।মৌ তার সামনে দিয়ে ঘুরছে,অথচ তার সাথে কথা বলছে না,এটা বিশ্বাস করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে গিয়েছিলো।সে জানে না মৌ এর ভেতরটা কেমন করছিলো।তবে তার যে ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে গিয়েছিলো তা তার চেহারা দেখে বেশ বুঝা গিয়েছে।৭দিনেই তার মুখখানি অনেক শুকিয়ে গিয়েছে।চোখের নিচেও একটু কালো দাগ পরে গিয়েছে।পরবেই বা না কেনো।একে তো মৌ এর সাথে কথা না বলার কষ্ট,আবার সারারাত সোফায় শুয়ে কাটানো।পুরো রাত এদিক ওদিক ফিরতে ফিরতেই কেটে যেতো তার।সোফাটাও বেশ শক্ত বলে,আয়ানের পুরো পিঠ ব্যাথা হয়ে যেতো।এটা অবশ্য সে মৌ কে জানতে দেয়নি।কারন সে জানে,তার ব্যাথার কথা শুনলে হয়তো মৌ অনুগ্রহ করবে।কিন্তু সে চায়নি যে তার প্রতি অনুগ্রহ করা হোক।কারন ভুল সে করেছে,সে জন্য তাকে সাজা ভোগ করতেই হবে।
আয়ানেট প্রতিদিনের রুটিন ছিলো গৎবাঁধা। রোজ রোজ পিঠের ব্যাথা নিয়ে ঘুম থেকে উঠে হাড় কাঁপানো শীতেও ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হতো তাকে।গোসল শেষে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে রুমে এসে অফিসের জন্য রেডি হতো সে।ডাইনিং এ গিয়ে কারোর সাথেই তেমন একটা কথা হতো না তার।কেউ অবশ্য তার সাথে তেমন কথাও বলতো না।
খাওয়াদাওয়া শেষে অফিসে চলে যেতো সে।একটু রাত করেই ফিরতো সে।কারন বাসায় তাড়াতাড়ি গেলে মৌ এর সাথে কথা বলার জন্য তার মনটা আকুপাকু করতো।অফিস থেকে বাসায় এসে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পরতো সে।সারাদিনের রুটিনে মৌ এর সাথে একটুও কথা হতো না তার।মৌ অবশ্য আয়ানের সামনে বেশি আসতো না।কারন তার মনটাও যে বেশ আকুপাকু করতো আয়ানের সাথে কথা বলার জন্য।কিন্তু মনের ইচ্ছাটাকে সে সুতো দিয়ে বেঁধে রেখেছিলো। মজবুত এক সুতো।আয়ানকে এমন সাজা দিয়ে যে মৌ বেশি সুখে ছিলো তা না।প্রথম দিন আয়ানের সাজাগুলোকে বেশ সহজ আর মজার মনে হলেও দিন যেতেযেতে সেগুলো যেমন আয়ানের কাছে কঠিন হয়ে আসছিলো,তেমন মৌ এর কাছেও সেগুলো কঠিনের নতুন সংঙ্গা তৈরী করেছিলো।বিচ্ছেদ না হয়েও তারা বিচ্ছেদের স্বাদ পেয়েছিলো।একই ছাদের নিচে থেকেও সাতটা দিন কেউ কারোর পাশ ঘেঁষতো না। একে অপরের মুখের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকেও কথা বলতো না।দুজনেই চেষ্টা করতো আঁখিজুগল দিয়ে মনের কথা বলার।তবুও সেটা মুখে বলা কথার সাথে তুলনা করা যায় না।কথা বলতে পেরেও স্বামী-স্ত্রী দুজন বোবা হয়ে গিয়েছিলো।
আয়ান যখন অফিসে থাকতো, তখন মৌ রুমে এসে চুপিসারে কান্না করতো।কান্না করার সময় নিজেই নিজেকে কয়েকটা চর মারতো এই বলে যে,সে অনেক কঠোর মানুষ।আয়ানকে এতো বড় সাজা দেওয়ার কি দরকার ছিলো তার?এ সাজাটা যে শুধু আয়ান ভোগ করছে তা নয়,সে নিজেও ভোগ করে যাচ্ছে অবর্ণনীয় এ সাজা।নিজেকে বড্ড নিষ্ঠুর মনে হতো তার।বড্ড নিষ্ঠুর।
আজকে মৌ এর দেওয়া সাজার ঠিকঠিক ১ সপ্তাহ পূরন হলো।এটা অবশ্য কাউকে বলতে হয়নি।দুজনেই মনে মনে হিসাব কষছিলো আর অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো কবে ৭দিন শেষ হবে।অবশেষে আজকে সে মধুর দিন।অপেক্ষা শেষ হওয়ার দিন।
আয়ান আজকে অফিস শেষে একটা ফুলের তোড়া কিনে নিলো।আর মৌ এর জন্য লাল টুকটুকে একটা জামদানি শাড়ী কিনে নিলো।সব কিছু নিয়ে বাসার সামনে আসার সাথে সাথে আয়ানের মনটা খুশিতে নাচতে লাগলো।সে এ ভেবে খুশি হচ্ছে যে,রুমে গেলে তাহলে কতোটা খুশি হবে সে।খুশির জোয়ারে ভেসে যাবে নাকি?হয়তো।এসব ভেবে মৃদু হেসে সে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে এলো।রুমে এসে খানিকটা অবাকই হতে হলো তাকে।কারন রুমের লাইট অফ।তার জানামতে মৌ এসময়ে লাইট অফ করে রাখে না।তাহলে আজ কেনো?আয়ান আলতো পায়ে রুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে লাইট অন করে দিলো।তার চোখজোড়া শুধু মৌ কে খুঁজছে।কিন্তু মৌ রুমে নেই।আয়ান অফিস ব্যাগ,ফুলের তোড়া আর মৌ এর জন্য আনা শাড়ীটা বেডে রেখে দিয়ে বারান্দায় গেলো।সেখানে গিয়ে সে দেখলো মৌ বারান্দার গ্রিল ধরে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়ীয়ে আছে।সে মৌ এর থেকে কয়েক হাত দূরে দাঁড়ীয়ে আছে।সেখান থেকেই সে ডাক দিলো মৌ কে।
আয়ানের ডাক শোনার সাথে সাথে মৌ গ্রিল ছেড়ে দিয়ে দ্রুত এসে আয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।আয়ানও তার প্রেয়সীকে শক্ত করে চেপে ধরলো।
আয়ানকে জড়িয়ে ধরার কয়েক সেকেন্ড পর মৌ হু হু করে কেঁদে দিলো।মৌ এর হুট করে কাঁদার আওয়াজে আয়ান বেশ অবাক হয়ে গেলো।সে মৌ কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে মৌ এর কান্নার কারন জানতে চাইলো।কিন্তু মৌ আয়ানকে ছাড়লো না বরং আগের চেয়েও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।সে কান্না করতে করতে এক পর্যায়ে ফুঁপানো শুরু করে দিলো।সে অবস্থাতেই মৌ বাচ্চাদের মতো বলতে লাগলো,
—“আমি খুব নিষ্ঠুর তাইনা?আপনার মৌমাছিটা বড্ড নিষ্ঠুর ঠিক না মিস্টার মিরর?আপনাকে এতো কষ্ট কেনো দিলাম আমি?জানেন,এই কটা দিন আমার ঠিক কি রকম কেটেছে তা বলে বুঝাতে পারবো না আপনাকে।কষ্টের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে ফেলেছিলো।আপনাকে পানিশ করে আমি একটুও শান্তিতে থাকতে পারিনি।জানেন?প্রথমে ভেবেছিলাম,হয়তো আপনাকে সাজা ভোগ করতে দেখে আমি বেশ মজা পাবো।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।ভালোবাসার মানুষকে কষ্টে দেখে কি কেউ কখনো মজা পায়?জানেন?এই ৭টা দিনে আমি আপনাকে আগের চেয়ে আরো বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। আমার ভালোবাসার গভীরতাটা আপনি মাপতে পারবেন না। কখনো পারবেন না।গত এক মাস যাবত আপনাকে ভালোবেসে যাচ্ছি। অথচ বেয়াদব মনটা আমার সেটা স্বীকারই করে না।খুবই বেয়াদব সে।কিন্তু আজকে, এখন আমি স্বীকার করছি,আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসি।এই মিস্টার মিররটাকে তার মৌমাছি খুব ভালোবাসে। খুব।আই লাভ ইউ আয়ান।আই লাভ ইউ মোর দ্যান মাই লাইফ।”বলে মৌ আবারো কান্না শুরু করে দিলো।তবে এ কান্নাটা কষ্টের কান্না না।এ কান্নাটা তৃপ্তির কান্না।নিজের মনের কথার বহিঃপ্রকাশের কান্না।
মৌ এর কথাগুলো শুনে আয়ানেরও চোখ দিয়ে দুফোটা জল পরে গেলো।সে মৌ এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে এক পর্যায়ে মৌ কে নিজ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিজের সামনে দাঁড় করালো।
আয়ান তার আঙ্গুল দিয়ে মৌ এর চোখের পানি মুছে দিয়ে মৌ এর কপালে নিজের ঠোঁটের আলতো এক পরশ বসিয়ে দিলো।
#চলবে
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করবেন।)