তুমি রবে ২২
.
.
বিদায়ের বেলা এমন কিছুর প্রত্যাশা অভাবনীয় নয়, অবিশ্বাস্যও ছিল মাহির কাছে। প্রগাঢ় চাউনি সেই মানুষটার। যেন কত কিছু বলার অপেক্ষাতে আছে সে। কিন্তু মানুষটা তো তাকে এক তুচ্ছ মানবী ছাড়া গণ্যই করে না কখনো। সব ভুল ভাবনা। নিবারিত মুখভঙ্গি ও দৃষ্টি মেলে বলল সে ওই মানুষটিকে,
– “কিছু বলবেন?”
উৎকণ্ঠিত হয়ে আশফি জবাব দিলো,
– “একটা কথা বলব ভাবছিলাম।”
মাহি এত সময় দৃষ্টি ঘুরিয়ে রেখেছিল অন্যত্র। মানুষটার ওই গহন চাহনিতে তাকিয়ে থাকার সামর্থ্য যে নেই তার। কিন্ত এবার সে চকিতে ফিরে তাকাল তার দিকে। সেই গহন দৃষ্টি পানে তাকাতেই মাহির ভাবনাগুলো ফের নিরাশ্রয় হয়ে গেল। ভাবনার কথাগুলো ভিন্ন ভিন্ন যে। তার ভাবনার ভাষাগুলো হোক অসহায়। কিন্ত তার বুকের অভ্যন্তরভাগ হতে আওয়াজ আসছে মানুষটা এবার তাকে বলবেই,
– “আপনি যাবেন না মাহি!”
বা এর থেকেও হয়তো বিশেষ কিছুই বলবে সে মাহিকে। মাহির জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে নীরব রইল সে বেশ কিছু সময়। মাহিও চেয়ে আছে ব্যগ্র দৃষ্টি মেলে। সে যে সত্যিই শুনতে চায়।
– “যেখানেই থাকুন নিজের খেয়াল রাখবেন।”
একদম নিরুদ্যম চোখে তাকাল মাহি। মাথাটা নত করে ফেলল দ্রুত। চোখদুটো ঝাপসা হয়ে উঠল তার নিমিষে।
– “আর…”
মাহি ফের তার দিকে চেয়ে চকিতে জিজ্ঞেস করল,
– “আর?”
কারণ সে যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তার কাঙ্ক্ষিত জবাব শোনার আশায়। আশফির মাঝে এক জড়তা কাজ করছে কথাগুলো বলতে। একটু থেমে থেকে সে এবার বলল,
– “নির্ভরতা পরিত্যাগ করার চেষ্টা করবেন। এমন বহু ক্ষণ আসে যখন নিজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে খুব আপন মানুষটার সিদ্ধান্তের ভিন্নতা থাকে। কিন্তু আপনি জানেন আপনার সিদ্ধান্তই সঠিক। তখন যদি আপনি সেই আপন মানুষটার সিদ্ধান্ত নিজের কাঁধে চাপিয়ে নেন তার সম্মান আর তার ভালোবাসা রক্ষার্থে, তবে পরবর্তীতে এমনভাবে আপনাকে অনুশোচনা করতে হবে তখন সেও আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবে না। জীবনের দীর্ঘস্থায়ী আর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো সবসময় নিজে ভেবে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।”
– “ধন্যবাদ। আর কিছু বলার আছে?”
আশফি নীরব দৃষ্টি মেলে চেয়ে রইল মাহির পানে। প্রচন্ড আসক্তিহীন মুখভঙ্গি তার।
– “না।”
– “ঠিক আছে। এবার আমি আসি।”
– “অবশ্যই।”
মাহি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আশফিকে বলল,
– “হাতটা ছাড়ুন।”
মুহূর্তে আশফি হাতটা ছেড়ে দিলো। এতসময় যে তার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় বন্দি করে রেখেছিল তা সে ভুলে গিয়েছিল।
– “স্যরি।”
মাহি আর কোনো জবাব প্রদান করল না। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে চলে গেল সামনে। একটাবার ফিরেও তাকাল না সে। অভিমানের চাদর ঢেকে দিলো আশফির বুকের অভ্যন্তরভাগ। কী আশা করেছিল সে ওই মেয়েটার থেকে? তাকে নিশ্চয সে বলবে না,
– “আমি যেতে পারব না আপনাকে রেখে?”
কখনোই নয়। এমনটা আশা করা অর্থ সে চরম নির্বদ্ধিতা। গাড়ি ব্যাক করে ফিরে এলো আশফি। নিজের আচরণে সে নিজেই নিজের প্রতি ক্ষুব্ধ। একে তো যা সে বলতে চেয়েছিল তা তো বলতে পারেইনি, তার উপর সেই মানুষটার হাত ধরেছিল সে যে মানুষটা তাকে ওর অধিকারের গন্ডি চিনিয়ে দিয়েছিল। কী প্রয়োজন ছিল তার সঙ্গে এত কথা বাড়ানোর? যত রাগই তার হোক, কিন্তু প্রচন্ড আফসোস হচ্ছে তার এখন। কেন সে বলতে পারল না?
– “আপনি কোথাও যাবেন না মাহি। ফিরে আসুন প্যারোটে। আমি বলছি তো।”
মাহি বাসায় ফিরল খুব সতেজতা আর প্রফুল্ল চেহারা নিয়ে। সবার সঙ্গে আগের চেয়েও বেশি হাসিখুশি হয়ে কথা বলল। তার যে শরীরে অসম্ভব জ্বর বইছে তা সে বুঝতেই দিলো না। তার মলিন আর শুকনো মুখটা দেখে মুমু বেশ কয়েকবার মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছিল তার শরীর ঠিক আছে কি না। মাহি তার প্রশ্নে এক গাল হেসে উত্তর দেয়,
– “ঠিক না থাকার মতো কিছু হয়েছে না কি? একদম পারফেক্ট আমি।”
রাতে রেলস্টেশনে মাহির সঙ্গে এলো মমিন, লিমন আর আলহাজ। আলহাজ মাহির সঙ্গে চট্টগ্রাম যাবে। মাহি সকলকে বিদায় জানিয়ে ট্রেনে ভেতর চলে এলো। পাঁচ মিনিটের মাথায় ট্রেন ছেড়েও দিলো। অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে মাহির মাথাতে। তবে যন্ত্রণা কি শুধু মাথাতেই? না, পুরো পরিবারটা ছেড়ে বারোটা মাসের বেশি থাকতে হবে অন্য কোনো অঞ্চলে। ইচ্ছে করলেই দৌঁড়ে মায়ের ঘরে এসে তাকে বলতে পারবে না,
– “মা কাঁথা সেলাই রাখো তো। আমার চুলে তেল দাও জলদি।”
বাবার কাছেও যখন তখন, এ বেলা ও বেলা বায়না করতে পারবে না,
– “বাবা আমার রসমালাই খেতে ইচ্ছে করছে। আর মোড়ের ওই হোটেলের পুরি আর চাটনিও খেতে ইচ্ছে করছে। বাসায় ফেরার সময় নিয়ে এসো তো।”
দাদু যখন বলতো,
– “নানুভাই এদিকে আয় তো। আমার পাকা চুলগুলো একটু তুলে দে।”
তখন মাহির উত্তর হতো,
– “মাথা ভর্তিই তো পাকা চুল আপনার দাদু। তুলে না দেওয়ার থেকে বাবাকে বলি আপনার চুল লাল করে দিতে? আর নয়তো টাক করে দিতে বলি?”
তারপর খিলখিল করে হেসে উঠত মাহি। এতগুলো দিনে এই অভ্যাসগুলো যে মাহির রক্তে মিশে গেছে। কী করে ভুলে থাকবে? কী করে ছেড়ে থাকবে এই অভ্যাসগুলো? এর বাহিরেও যে সে প্রকট যন্ত্রণা অনুভব করছে। কিন্তু সেই যন্ত্রণা উপলব্ধি করা যে বৃথা। এক সময় এই মানুষগুলোকে ছেড়ে থাকার যন্ত্রণা যে পুষে যাবে তাদের কাছে ফিরে। কিন্ত এর বাহিরে যে মাহি আরও এক প্রকট যন্ত্রণা অনুভব করছে, তা তো সে কোনোদিনও পুষিয়ে নিতে পারবে না। কখনো কি সেড়ে যাবে এই যন্ত্রণা?
আলহাজ মাহির মাথায় হাত রাখল। দ্রুত চোখের কোণ মুছে মাহি তার দিকে ফিরে তাকাল। এ কী! এই মানুষটা যে তার পাশে বসে চোখদু্টো ভিজিয়ে ফেলেছে! কে জানে মাহিকে ছেড়ে আসার পর তাঁর কী অবস্থা হবে! মাহি আর পারল না মনের অনুরাগে নিজেকে বেঁধে রাখতে। ঝাঁপিয়ে পড়ল দাদুর বুকে।
– “নানুভাই, কিছু কথা বলি শোন।”
গলা ধরে এসেছে আলহাজের। চোখের চশমাটা খুলে চোখের কোণটা মুছে নিলো। তারপর বলতে আরম্ভ করল,
– “যেখানেই থাকবি নিজের ব্যক্তিত্ব, নিজের সংস্কৃতি, নিজের রুচি একদম নিজের মতোই রাখবি। নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা খুবই জরুরি। তাই বলে নিজের এই তিনটা জিনিস পরিবর্তন করে নয়। তুই যেমন তুই তেমনই থাকবি। শুধু নিজের চিন্তাধারা প্রসার করবি। তোর কালচার এতটাও অখ্যাদ্যের সমতুল্য নয় যে তোকে নিজের সংস্কৃতি, নিজের রীতিনীতি পরিবর্তন করে কারো সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়তে হবে। তুই এমনভাবে থাকবি যার মাঝেই তোর আভিজাত্য ফুটে উঠবে। অতি সাধারণের মাঝেও তোকে বিশেষ একজন মনে হবে। ঠিক সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলবি।”
মাহি কান্নার কণ্ঠেই বলল,
– “দাদু আমি তো দেশেই আছি। বিদেশে যাচ্ছি না তো। তাহলে এসব কেন বলছেন?”
– “কারণ তুই যে এখনো এই সমাজের বুকে আনাড়ি। কখনো তো তোকে একা কিছু করতে দিইনি। নির্ভরশীলতার গন্ডির মাঝে রেখেছি তোকে। আসলে সেটা ছিল ভুল আমাদের। তার জন্যই তোকে চাকরিতে পাঠিয়েছিলাম। যাতে বাকি সকলের সঙ্গে মিশে এই সমাজকে চিনতে পারিস, তার সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলতে ফিরতে পারিস। আমি তোকে দেখতে চাই আত্মনির্ভরশীল আর আত্মমর্যাদাপূর্ণ একজন ব্যক্তি হিসেবে। কিন্তু তাও সেই শাসনের মাঝে রেখেই। তাই তোকে তোর মামার কাছে পাঠানো।”
– “আপনাদের কাছে থাকলে কি তা হতো না?”
– “হয়তো না।”
দুটি মানুষের গন্তব্য হয়তো চিরকালের জন্য ভিন্ন হয়ে গেল। হয়তোবা কখনো ভাগ্যের লিখনে একও হতে পারে কিংবা নাও হতে পারে। কিন্তু দুজনের মনের গহীনে যে না বলা অনুভূতির জন্ম হয়েছিল তা কখনোই ভিন্ন ছিল না। হয়তো কেউ তা কোনোদিন জানতেও পারবে না। সেদিন রাতে নয়, বিকালেই আশফি আকাশ পথে পারি দিয়েছিল। মাহির কাছ থেকে ফিরে গিয়ে তার বুকের ভেতরটা এত বেশি ভার হয়ে গিয়েছিল যে সে কাউকে জানিয়ে অবধি যায়নি।
প্রথম তিনটা মাস মাহি অনবরত রোগেই পড়েছিল। ধীরে ধীরে সে সমম্ত কিছু আপনা আপনি ভুলে নতুন উদ্যমে চলতে শুরু করে। আর আশফি! দীর্ঘ পাঁচ মাসের বিরতির পর সেও তার পূর্বের গন্তব্যে ফেরে এক নতুন আমেজে। নিজেদের মতো করেই এগোতে থাকে তারা আগামী পথে। সাফল্য আর সাফল্যের আনন্দে দুজনেই ভুলে যেতে থাকে তাদের দমিয়ে রাখা অনুভূতিগুলো। সময় চলে যায় তাদের আপন গতিতে।
.
.
একের পর এক দামি গাড়ি চেপে অতিথি আসতেই আছে জয়নাল খানের বাঙলো হাউজে। অনেক বড়সড় আয়োজন করেছে সে তার একমাত্র নাতির বিবাহে। সাবেক তথ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তার এক মাত্র নাতির বিয়ের আয়োজনে কি আর কমতি রাখা চলে? মানুষটাও বেশ দিলখোলা। এখনো সে মনে রেখেছে তার রাজনৈতিক অসিলায় পুরোনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলোকে। অতিথিরূপে মাত্র এসে নামল আবরার মোস্তাফিজ ও তার তিন নাতি আশফি মাহবুব, দিশান মাহবুব আর ছোট নাতনি শাওন নওরীন। আবরারকে দেখেই হাত মেলাতে এগিয়ে এলো জয়নাল। তার তিন নাতিকে দেখেও বেশ খুশি হলো সে। মিনহাজও এগিয়ে এলো তাদের কাছে। ওখানে উপস্থিত সবাই মোটামোটি আবরার সাহেবের তিন নাতির চেহারা আর তাদের যোগ্যতার প্রশংসায় ব্যস্ত। জয়নালের মিসেস লিমা জাহান সে তো বলেই ফেলল আশফি আর দিশানকে উদ্দেশ্য করে,
– “এই যে ইয়াংম্যান, হার্টি হ্যান্ডসাম বয়জ! আমার দিকে কেউ তো একজন তাকাও। অস্বীকার করতে পারবে না আমি বাকি সব বয়স্কাদের তুলনায় ওভারলড সুন্দরী রমণী!”
কথাটা শুনতেই প্রত্যেকে আমেজের সুরে হেসে উঠল। দিশান বলল,
– “অবশ্যই হ্যাঁ। গ্রান্ডড্যাড জয়নালের যে ভাগ্য উত্তম আপনার মতো রমণীর মনিব হতে পেরে। এমন ভাগ্য পাওয়া যে প্রতিটি সুপুরুষের স্বপ্ন।”
লিমা জাহান তার গাঢ়ো গোলাপি বর্ণের লিপস্টিক মাখা ঠোঁটের চওড়া হাসি হেসে বলল,
– “ডিয়ার প্লিজ আমাকে ভুলেও গ্র্যানি বলো না। আসতে চাও আমার সান্নিধ্যে?”
শেষ কথাটা বেশ গাঢ়ো সুরেই বলল সে। আশফি তখন ঠোঁট চেপে হাসতে ব্যস্ত। এই প্রশ্নের কাছে প্রত্যেকে মজা পেলেও দিশান একটু লজ্জায় পেল। তবে এর উত্তর তো তাকে দিতেই হয়। এমন সময়ে সে হেরে যাওয়ার মতো পাত্র কখনোই হবে না। সেও অনেকটা আবেগ ঢালা সুরে বলল,
– “আমি আনন্দিত আপনার প্রস্তাবে মোস্ট বিলাভড! শিওরলি অ্যাস অ্যা বেডফিলো?”
এবার প্রত্যেকে ওদের তামাশাতে উচ্চস্বরে হেসে উঠল একত্রে। লিমা তার যোগ্য জবাব পেয়ে থামতে বাধ্য হলো। সে দিশানের গায়ে মজার ছলে চাপর মেরে বলল,
– “তোমার সঙ্গে পেরে ওঠা মুশকিল। আমি বরং আমার ফার্স্ট হ্যান্ডসামের কাছেই যাই।”
এ কথা বলেই সে আশফির কাছে এগিয়ে এসে বলল,
– “আমার নাতিটা এখানে দাঁড়িয়ে খুব বোর ফিল করছে আমি তখন থেকে লক্ষ্য করছি।”
– “একদম নয় নানু। আমি ঠিক আছি। বরং খুব আমোদে আছি। আপনারা চালিয়ে যান না!”
এর মাঝে আবরার আর জয়নাল আলহাজকে দেখতে পেয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আবরার তাকে বলল,
– “আমি তো ভেবেছিলাম তুই ব্যাটা বুড়ো হয়ে গিয়েছিস একদম।বোধহয় তোকে আমাদের মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে তোর বাসায় যেতে হবে কিছুদিন পর।”
– “কী যে ভাবিস না? এই শরীর দেখলে এখনো কেঁপে উঠবি। প্রত্যেকটা হাড় এখনো ইনশাআল্লাহ মজবুত।”
– “যাক তোর সঙ্গে দেখা হয়ে সত্যি খুব ভালো লাগছে রে।”
জয়নাল বলল,
– “আরে ও না এলে কি এই প্রোগ্রাম হয়?”
লিমা দিশান আর আশফিকে পৌঁছে দিয়ে গেল তার নাতি রায়হানের কাছে। রায়হান আশফির দুই বছরের জুনিয়র হলেও ভার্সিটিতে তাদের বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। শাওনকে লিমা তার নাতবউদের বান্ধবীর কাছে নিয়ে রেখে এসেছে। রায়হান আশফি আর দিশানকে বলল,
– “ভাইয়া কিছু নিয়েছেন আপনারা?”
আশফি বলল,
– “আয়োজনটা সন্ধ্যায় না হলে তোমার বিয়েতে অ্যাটেন্ডই করা হতো না। তো সেইজনকেই কি বিয়ে করলে?”
– “নিজের চোখেই দেখবেন ভাই। আর এখানে আপনাদের রেখে বোর করব না। চলুন আমার বউ সহ শালীকাদেরও দেখে নেবেন।”
দিশান হেসে বলল,
– “তখন থেকে তো তাদেরই খুঁজছি।”
রায়হানও তার সঙ্গে হেসে উঠে বলল,
– “তারাও যে তোমাদের দর্শনের অপেক্ষাতে।”
আশফি আর দিশান হাতে সফ্ট ড্রিংক নিয়ে রায়হানের মিসেসের সঙ্গে পরিচিত হতে এলো। বউয়ের বন্ধুমহলের সাথে আগে মুখোমুখি হতে হলো ওদের। রীতিমতো ওদের দুজনের পা হতে মাথা অবধি খুব নিঁখুত দৃষ্টিতে চেয়ে দেখে একে অপরের মাঝে কানাকানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল তারা। আজ আশফি ডার্ক ব্লু স্যুটের নিচে হোয়াইট শার্ট ছেড়ে পরেছে। আর সেই সঙ্গে ডার্ক ব্ল্যাক ওয়াশ কালার প্যান্ট। দিশানও সেম তবে সে ডার্ক ব্ল্যাক কালার স্যুট পরেছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে নজরকাড়া কেউই কম নয়। তবে উচ্চতা আর দৈহিক গঠনে আশফি এক ধাপ এগিয়ে দিশানের থেকে। যার জন্য অধিকাংশ পরিমাণ বিশেষ নজর আশফির প্রতিই। কিন্তু দিশানকেও কেউ ছেড়ে রাখছে না। প্রত্যেকেই পরিচিত হতে এগিয়ে এলো ওদের কাছে। খুব বিনয় আর আগ্রহের সঙ্গে দিশান তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল। আশফি তার পাশে দাঁড়িয়ে রায়হানের সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত। এর মাঝেই আশফি চরম গতিতে একটা ধাক্কা খেয়ে বসল। রায়হানের বউয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে এসে নিজের শ্বাস আটকে আসার উপক্রম আশফির। এভাবে যে আশফি তার মুখোমুখি হবে কোনোদিন তা সে কল্পনাও করেনি। তার এই মুহূর্তে মনে হতে লাগল বৈশাখের ঝরের আগমন ঘটার পূর্বে যে উথাল পাতাল বাতাস বহে, তার চারপাশে যেন সেই বাতাস বইছে। তাকে অসম্ভব পরিমাণ ঘামতে দেখে দিশান এগিয়ে এসে বলল,
– “ভাই তুমি ঠিক আছো?”
আশফির নজর গেঁথে আছে সামনের দিকেই। চাইতেও যেন সেই দৃষ্টি নামছে না তার।
…………………………………..
(চলবে)
– Israt Jahan Sobrin
অনুগ্রহ করে কপি করা থেকে বিরত থাকুন। ভুলসমূহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.