তুমি রবে ২১

0
1747
তুমি রবে ২১ . . – “এটা আপনি কী করলেন!” – “দেখছেন না কী করলাম?” মাহির চোখদুটো বিস্ময়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। আশফি তার যাওয়া আটকানোর জন্য দরজাতেই তালা ঝুলিয়ে দিলো। যদিও লকড সিস্টেম ছিল। কিন্ত সেটা মাহির খোলা কোনো ব্যাপার ছিল না। এদিকে মাথা এত বেশি ভার লাগছে মাহির যে তার দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা যেন লোপ পাচ্ছে। তবে এবার আশফি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। মাহির বাহু জড়িয়ে ধরে ওকে নিজের বেডরুমে নিয়ে যেতে লাগল। – “আপনি ছাড়বেন আমাকে! আমি আপনার রুমে যাব না।” – “আচ্ছা আমার রুমে যেতে হবে না। আপনি গেস্টরুমে চলুন।” – “আপনি ছাড়ুন তো।” – “স্যরি। আপনার বান্ধবী না আসা অবধি আপনাকে এখানেই থাকতে হবে।” মাহি ড্রয়িংরুমে কাউচে পা তুলে হেলান দিয়ে বসে আছে। চোখদুটো ভীষণভাবে জ্বলছে। জ্বরের প্রকপটাও বাড়ছে সেই সঙ্গে। মাথায় পানি দেওয়া, শরীর স্পঞ্জ একান্তই জরুরি তার। এভাবে বসে থাকতেও খুব কষ্টবোধ হচ্ছে তার। হঠাৎ শরীরের অবস্থা এত বেশি অবনতির কারণ মাহি ধরতে পারল না। পা দু্টো গুটিসুটি করে কাউচে শুয়ে পড়ল সে। আশফি ওদিকে কিচেনে শুধু মাহির জন্য নয় দুপুরের জন্যও খাবার তৈরি করছে। কারণ দুপুরের আগে মাহিকে সে ছাড়তে পারছে না। বাহির থেকে লক করে আশফি আবার গিয়েছিল দিয়ার বাসার সামনে। সে এখনো ফিরেনি। আশফি রান্নার ফাঁকে একবার এসে দেখে গেল মাহিকে। ঘুমের ইঞ্জেকশনের জন্য ঘুমটা হওয়াই স্বাভাবিক। মাহি ঘুমিয়ে গেছে। ঘর থেকে ব্ল্যাঙ্কেট নিয়ে এসে ওর গায়ে জড়িয়ে দিয়ে এসিটা বন্ধ করে দিলো সে। কিচেনে যেতে গিয়েও আবার ফিরে এলো মাহির কাছে। কিছুটা দোনোমনা করে মাহির কপালে হাত দিয়ে জ্বরটা চেক করল। বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। মেডিসিন, কোনো পানিপট্টিও দেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত ওকে। মাহির মুখটার দিকে চেয়ে থেকে দিশানের নাম্বার ডায়াল করল। – “ভাইয়া আমি ফিরছি।” – “একটু জলদি আয়। মেডিসিনগুলো কিনেছিস?” – “হ্যাঁ হ্যাঁ।” দিয়া দুপুর একটার সময় ভাইকে নিয়ে ফিরল। দরজার সাথে লাগিয়ে রাখা একটি চিরকুট পেয়ে দিহানকে ঘরে থাকতে বলে ছুটে আশফির ফ্ল্যাটে এলো। দরজার মুখে দাঁড়িয়ে দিশান। দিয়াকে দেখতে পেয়ে মুচকি হেসে সে জিজ্ঞেস করল, – “তো আপনি চিরকুটটা পেয়েছেন?” – “ফোন করেননি কেন আমাকে?” – “রিল্যাক্স। আমার ভাই খুব ভালো সেবক। সে খুব ভালো সেবা দিচ্ছে আপনার বান্ধবীকে।” – “আজেবাজে কথা বলবেন না। আপনাদের চেনা আছে। ফোনটা করলেই চলে আসি আমি!” দিশান এবার দিয়ার একটু কাছে এগিয়ে এলো। দিয়া পিছু হাঁটলেও তার সরু দৃষ্টি দিশানকেই দেখতে থাকল। খুব মৃদু স্বরে সে দিয়াকে বলল, – “তাহলে আমার ফোন করার অধিকার আছে বলছেন?” – “অদ্ভুত! আমি মাহির ফোন থেকে ফোন করার কথা বলেছি।” ওদের কথার মাঝে আশফি এসে দরজা খুলে দিয়াকে দেখতে পেয়ে বলল, – “ওহ আপনি এসেছেন? প্লিজ জলদি আসুন।” দিয়া ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, – “ও ঠিক আছে তো?” – “না। অচেতন প্রায়।” – “কোথায় ও?” – “গেস্টরুমে রেখে এলাম মাত্র।” বেশ কিছু সময় ধরে দিয়া মাহির মাথায় পানি ঢালল। দিশান আর আশফি রুমের বাহিরে। দিয়া বাহিরে এসে ওদের বলল, – “এই অবস্থায় ওকে আমার বাসায় কী করে নিয়ে যাব? মাহির বাসা থেকে ফোন এসেছিল। কলটা আমি অ্যাটেন্ড করেছিলাম। আজকে রাতে ওর চট্টগ্রামের টিকিট। ওকে দ্রুত বাসায় ফিরতে বলছে।” আশফি বলল, – “আপনি বলেননি ওনার কী অবস্থা? আর এই অবস্থায় ওনারা কী করে ওনাকে একা ছাড়ল?” – “ওর বাসার কেউ জানে না ওর জ্বর এসেছে। আর আমি এখন ওর এই অবস্থার কথা বললে ওরা ছুটে আসতো। আর এসে আপনার ঘরে ওকে দেখে তাদের ভাবনাটা কেমন হতো? প্রেশারটা পড়ত সেই ওর ওপরই।” দিশান লাঞ্চে এসেছিল আশফির বাসায়। সে অফিসে চলে গেছে। দিয়া বাসায় ফিরে গেল তার বাবা চেম্বার থেকে ফিরবে দুপুরে। তাকে খেতে দিতে হবে। তারপর সে আবার আসবে। দিয়া থাকতে মাহিকে কিছু খাওয়াতে পারেনি। ঘুমের ইঞ্জেকশন দিলেও ঘুমটা মজবুত হলো না মাহির। কারণ সে স্বস্তি নিয়ে ঘুমাতে পারেনি বলে। মাহি চোখদুটো খুলে রুমে নিজেকে একা দেখতে পেয়ে উঠে বসল। আশফি বসার ঘরে বসে কী একটা মে ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে পড়ছে। খাবার টেবিলে খাবার সাজিয়ে ঢেকে রাখা। মাহির মাথা এখনো ভার। সে গায়ের ওড়নাটা ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে আশফির সামনে এসে দাঁড়াল। ম্যাগাজিনে তার প্রচুর ধ্যান। কালো প্যান্ট আর সাদা শার্ট পরিহিত যুবককে পায়ের ওপর পা তুলে বসে ম্যাগাজিন পড়তে দেখে মাহির অসম্ভব আর ভয়ংকর একটা ইচ্ছা জাগল ভেতরে। কিন্তু নিমিষেই সে নিজের ইচ্ছা দমিয়ে বলল, – “আমার মোবাইলটা পাচ্ছি না।” মাহির আকস্মিক আগমনে আশফি চকিত দৃষ্টি মেলে তাকাল ওর দিকে। দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে বলল, – “আপনার ঘুম ভেঙে গেছে?” – “কেন সমস্যা?” – “না সমস্যা হবে কেন? আপনি বসুন আমি খাবার নিয়ে আসছি।” মাহি নীরব রইল। আশফি খাবার টেবিল থেকে প্লেটে খাবার বেড়ে নিয়ে এসে দেখল দরজা খোলা।
সিঁড়ি কয়েকটা ভেঙে মাঝ সিঁড়িতে মাথা ধরে বসে আছে মাহি। আর কয়েকটা সিঁড়ি ভাঙলেই দিয়ার বাসা। কিন্তু দিয়ার বাসাতেও যাওয়ার সময় নেই এখন তার। নিজের বাসায় যেতে হবে। কিন্তু এই শরীরে সে এতগুলো সিঁড়ি ভেঙে কী করে নিচে যাবে? মাহি নিচের সিঁড়িগুলোকে করুণ চোখে তাকিয়ে দেখছে। – “আমি আপনাকে হেল্প করতে পারি।” আওয়াজ পেয়ে মাহি ঘাড় ঘুরিয়ে পিছে তাকাল। আশফি দেয়ালে হেলান দিয়ে বুকের ওপর হাত মুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিচে নেমে এলো সে। মাহির পিছে দাঁড়িয়ে বলল, – “এটাই তো ভাবছেন এতগুলো সিঁড়ি কীভাবে ভাঙবেন? আমি আপনাকে খুব সহজ একটা পদ্ধতি দেবো। বিনা কষ্টে আপনি নিচে পৌঁছে যাবেন।” মাহি খুব ক্রুর চোখে তাকিয়ে আছে আশফির দিকে। আশফির কথা সে একদমই গায়ে মাখল না। আশফি এবার বলল, – “বিশ্বাস করলেন না তাই না? আপনাকে ধরে রেখে আমার কোনো লাভ আছে? খামখা আমি কেন ঘরে সেধে পড়ে মেহমান টেনে রাখব? তবে আপনি চাইলে আমি সত্যিই আপনাকে হেল্প করব।” মাহি যেন একটু স্বস্তিবোধ করে জিজ্ঞেস করল, – “কী হেল্প?” – “সে তো যখন করব তখন দেখতেই পাবেন। কিন্ত তার আগে আপনাকে আমার ঘরে বসে কিছু খেয়ে মেডিসিন নিয়ে একটু রেস্ট করতে হবে। তারপর আমি আপনাকে অনায়াসে নিচে যাওয়ার পদ্ধতি বলে দেবো।” – “লিফ্ট ঠিক হয়েছে?” – “জি না। আমার কথা রাখলে উঠে আসুন। নয়তো এখানেই বসে থাকুন।” আশফি কথা শেষ করে চলে গেল। মাহি সিঁড়িতে বসে ভাবতে থাকল আর কী উপায় থাকতে পারে নিচে যাওয়ার? অন্য কোনো লিফ্ট ব্যবস্থা আছে বলে জানা নেই মাহির। তবে ওই লোকটা যে মজা করে কথা বলার মতো মানুষ নয় তা মাহি বেশ ভালোভাবেই জানে। সে যখন বলেছে কোনো হেল্প সে করবে তবে নিশ্চয় কোনো উপায় আছে বলেই সে বলেছে। মাহি উঠে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেল আশফির বাসার দরজার সামনে। আশফি দরজার সঙ্গে সেই আগের মতো করে হেলান দিয়ে বুকের ওপর হাত মুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে তার সাথে এবার নতুন করে যোগ হয়েছে তার সেই মুচকি। যথেষ্ট চেষ্টাও করছে সেই হাসি চেপে রাখতে। দরজার মুখ থেকে সরে ভেতরে চলে এলো আশফি। উপায়হীন মাহিও আশফির পিছু পিছু এলো ঘরে। খুব চেষ্টা করল দুই লোকমা ভাত মুখে দেওয়ার। কিন্তু খেতে পারল না সে। আশফির অবশ্য ইচ্ছা করছিল জোর করে মাহিকে খাইয়ে দেওয়ার। শেষমেশ সে একটা স্যান্ডউইচ খেতে দিলো মাহিকে। দু কামড় খেয়ে বসে রইল মাহি। এরপর অনুরোধে সুরে সে আশফিকে বলল, – “লিফ্ট কি ঠিক হয়েছে? প্লিজ সত্যি বলুন।” আশফি পানি খাওয়া শেষে ন্যাপকিনে মুখ মুছে বলল, – “আপনি কি আপনার ফ্রেন্ডের বাসায় যাবেন?” – “না, আমি এখন সোজা আমার বাসায় যাব।” – “আচ্ছা চলুন।” – “কোথায়?” আশফি কোনো জবাব না দিয়ে রুমে চলে গেল। পকেটে কিছু একটা ঢুকিয়ে সে বেরিয়ে এসে বলল, – “আসুন।” মাহি আশফির সঙ্গে রুম থেকে বের হয়ে তাকে ডোর লক করতে দেখে বলল, – “কীভাবে যাব বলবেন আপনি?” আশফি তাকিয়ে দেখল মাহি দেয়ালের সঙ্গে হেলে দাঁড়িয়ে আছে। মুখটা অসহায় অসহায় লাগছে তার। দাঁড়িয়ে থাকতেও যে সামর্থ্যের প্রয়োজন তাও অবশিষ্ট নেই তার শরীরে। আশফিকে এগিয়ে আসতে দেখে মাহি সোজা হয়ে দাঁড়াল। আশফি কয়েক মুহূর্ত কেমন নির্বাক চোখ মেলে মাহির মুখটার পানে তাকিয়ে আছে। কেমন একটা অপ্রস্তুত অবস্থা তখন মাহির আশফির চাউনির কারণে। অন্যদিকে মুখ করে তাকিয়ে রইল মাহি। এরপর আচমকা আশফি মাহিকে কোলে তুলে নিলো। মাহি বিস্ময়ের সর্বশেষ ধাপে। – “কী করছেন আপনি?” – “হেল্প করছি।” – “এটা ছিল আপনার হেল্প করার পদ্ধতি?” আশফি নিশ্চুপ। তাকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অষ্টম তলাতে পৌঁছে গেল প্রায়। – “আপনি আমাকে নামিয়ে দিন বলছি। খুব খারাপ হবে নয়তো।” আশফি কোনো কথা বলল না। মাহি প্রচুর চেষ্টা করতে থাকল ওর কোল থেকে নামার জন্য। আশফি বলে উঠল, – “আপনার ওজন সর্বোচ্চ পঞ্চাশ মনে হচ্ছে। আমি না ছাড়লে আপনি কোনোভাবেই নামতে পারবেন না। তাই ব্যর্থ চেষ্টা করে ক্লান্ত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।” এক পর্যায়ে ক্লান্ত মাহি তার চেষ্টা বাদ দিলো। আশফি তাকে পার্কিং লটে এসে নামাল। গাড়ির দরজা খুলে মাহিকে বলল, – “উঠুন।” মাহি কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে আসতে গেল ওখান থেকে। আশফি মাহিকে পেছন থেকে ডেকে বলল, – “আপনার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস কিন্তু আমার কাছে।” মাহি আশফির কথায় থেমে গিয়ে ওর দিকে ঘুরে তাকাল। – “কী জিনিস?” – “এখানে দাঁড়িয়ে বলব না কি কাছে এসে বলব?” – “কী ধরনের ফাজলামি?” আশফি এগিয়ে এসে মাহির খুব কাছে দাঁড়াল। এরপর গম্ভীরস্বরে খুব নিচু কণ্ঠে মাহিকে বলল, – “ফাজলামি কী করে করতে হয় তা আমি জানি না। তাই সেটা করার মতো কোনো ভাবনাও আমার হয় না।” মাহি খুব তেজি সুরে বলল, – “ও হ্যাঁ, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। ওয়ার্ল্ড ফ্যামাস রাশভারী মানুষ আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তাকে কী আর….” কথা শেষ করার পূর্বে আশফি মাহির সামনে মেলে ধরল মাহির সেই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। মুহূর্তে মাহির মুখটা লাল হয়ে উঠল লজ্জাতে। প্রচন্ড ক্ষিপ্তভাবে মাহি বলল, – “আপনি আমার ব্যাগ থেকে এটা কেন বের করেছিলেন? ছিঃ! এত অসভ্যতা আপনি কী করে করতে পারেন?” – “থামুন। আপনি আবার আমাকে অসভ্য বলছেন!” – “তো এটা কী করেছেন আপনি?” – “আপনাকে সকালে রুমে নিয়ে আসার সময় এটা আপনার ব্যাগ থেকে পড়ে গিয়েছিল। ভেবেছিলাম গাড়িতে ওঠার পর আপনাকে না জানিয়েই ফেরত দেবো। কিন্তু আপনাদের মেয়েদের কাছে ওই সব ছেলেরাই অসভ্য যারা আপনাদের লজ্জা নিবারণের চেষ্টা করে চলে।” হেঁটে আশফি গাড়ির কাছে চলে গেল। মাহি এগিয়ে এসে ওকে বলল, – “আমি খুব স্যরি আমার ব্যবহারের জন্য। ওটা আমাকে ফেরত দিন।” আশফি ঘুরে তাকিয়ে দেখল মাহি মাথা নিচু করে আছে লজ্জা মুখ করে। কিন্তু আশফির এবার সত্যিই খুব ইচ্ছা করল বারবার তাকে অসভ্য বলার জন্য একটা শিক্ষা দিতে। প্যাকেটটা বেশ ছোট আর খুব ফ্লেক্সিবল। যার কারণে সেটা পকেটেও পুরে রাখা যায়। আশফি প্যাকেটটার দিকে তাকিয়ে ভ্রু জোড়া উঁচিয়ে বলল, – “অস্ট্রেলিয়ান প্রোডাক্ট! বেশ দামি ব্রান্ড দেখছি।” মাহির চোখদুটো বড় বড় হয়ে গেল বিস্ময়ে। আর সেই সাথে লজ্জার পরিমাণ বৃদ্ধি হয়ে চারগুণ। – “কিন্তু জিনিসটা ইউজ করে বেশি কমফোর্ট ফিল করবেন না বোধহয়। কারণ এইসব প্রোডাক্টের ভেতরের ম্যাটেরিয়াল অনেকটা টিস্যু এই ব্রান্ডগুলোর।” মাহির চোখের দিকে তাকাল আশফি। তার চেহারার ভাব দেখে বেশ মজায় লাগল আশফির। এত বেশি বিব্রত মাহি আগে কখনো হয়েছে কিনা সেটাই মনে করার চেষ্টা করছে মাহি। এবার আশফি সব থেকে বেশি লজ্জার মুখে ফেলল তাকে। – “হ্যাঁ তবে এরা সাইজ খুব পারফেক্ট দেয়। এটার সাইজ কত?” প্যাকেটটার পেছন দিকে লক্ষ্য করে বলল, – “থার্টি ফোর। সমস্যা নেই। থার্টি টু হলেও ইউজ করা যাবে। প্রোডাক্টটাও খুব ফ্লেক্সিবল।” আশফির হাত থেকে মাহি প্যাকেট নিতে গেলে আশফি তখনই সেটা অন্য হাতে নিলো। তারপর গাড়িতে উঠে বসে মাহিকে বলল, – “আপনি খুব ঝামেলাপ্রিয় মানুষ। কিন্তু আমার বেশি চিৎকার, চেঁচামেচি, ঝামেলা পছন্দ না। গাড়িতে উঠে আসুন। প্যাকেটটা আমি রেখে দেবো না, ভয় নেই। ওটা ইউজ করার মতো সুযোগ আল্লাহ আমাকে দেয়নি।” খুব ধীরে ধীরে আশফি গাড়ি চালাচ্ছে। কারণ যাতে খুব দেরিতে পথ শেষ হয়। এরপর হয়তো সত্যিই আর সে মাহিকে দেখার, ওর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবে না। সারা পথে দুজনেই নিশ্চুপ। মাহির বাসার গলির মোড়ে আসতেই মাহি তাকে সেখানে গাড়ি থামাতে বলল। গাড়ি থামানোর পর হঠাৎ যেন আশফির ভেতরটাতে খুব অস্থিরবোধ হতে শুরু করল। মাহি গাড়ির দরজা খুলে নেমে যাওয়ার আগ মুহূর্তে সে ওর হাতের কব্জি চেপে ধরল। ………………………………… (চলবে) – Israt Jahan Sobrin অনুগ্রহ করছি। কেউ কপি করবেন না প্লিজ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে