Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তুমি এলে তাই পর্ব-৩১

তুমি এলে তাই পর্ব-৩১

#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৩১
.
রাগ মাথা ফেটে যাচ্ছে স্পন্দনের। এটা কীকরে করতে পারে ও? যেখানে গুঞ্জন জানে যে ও গুঞ্জনকে ঠিক কতোটা ভালোবাসে, অথচ তবুও অন্যকেউ ওকে ভালোবাসে বলে এতো সহজেই ওকে ছাড়ার চিন্তা করে ফেলল? তারমানে গুঞ্জন সত্যিই কোনোদিন ওকে ভালোই বাসেনি। যদি বাসতো তাহলে এরকমটা করতে পারতো না। এসব ভাবতে ভাবতে মেঘলা বলল,

— ” কিন্তু তার পেছনে কারণ ছিলো। আসলে ও..”

স্পন্দন মেঘলাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে বলল,

—- ” শাট আপ। এরপর আর কিছু শোনার প্রয়োজন নেই। খুব মহান তাইনা তোমার বোন? এবার ওকে মাদার তেরেসার ২০২০ ভার্সেন হতে বলো। আমার কাছে যাতে না আসে।”

রেহান একটু বিরক্ত হয়ে বলল,

— ” আরে ভাই পুরোটা তো একটু শোন। আর্ধেক শুনে রিয়াক্ট কেনো করছিস?”

স্পন্দন ভ্রু কুচকে রেহানে দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” এরপরে কী আর কিছু জানার দরকার আছে। ও যেটা করেছে তার কারণ যাই হোক করাটা ঠিক হয়েছে? ওর বোনের জন্য ও আমায় ছেড়েছে? সিরিয়াসলি।”

রেহান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” আচ্ছা মানলাম ও ভুল করেছে। কিন্তু মেঘলার পুরো কথাটা শোন?”

স্পন্দন একটা বিরক্তির শ্বাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিলো। যার অর্থ না খুশি বলো আমি শুনছি। রেহান মেঘলাকে ইশারা করতেই মেঘলা বলতে শুরু করল,

— ” ছোটবেলা থেকেই গুঞ্জন বাড়ির সবার চোখের মনি ছিলো। সবার ছোট ছিলো তাই খুব আদরের ছিলো ও। আর ও খুব ভদ্র একটা মেয়ে ছিলো, হ্যাঁ দুষ্টুমি করতো অনেক কিন্তু কথা শুনতো। খুব ভালোই চলছিলো সব। আমি ক্লাস ছিক্স থেকেই হসটেলে থাকা শুরু করলাম কারণ বাবা মা চাইতো। তবে আবিরের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো ওর। আবিরকে খুব ভালোবাসতো ও। আর আমাদের দিদা গুটিকে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু ঝামেলা হলো গুঞ্জন যখন ক্লাস ফাইভ এ উঠলো তখন। আমি তখন নাইনে উঠেছি। আবিরের একটা এক্সিডেন্ট হয়। যেটাতে সব ঠিক ছিলো কিন্তু ব্রেইনে প্রচন্ড আঘাত পায়। তখন তো ছোট ছিলাম ওতো কিছু জানতাম না। তবে ইন্টারনাল কোনো প্রবলেম হয়েছে, আর নিয়মিত ট্রিটমেন্ট না হলে আবিরের লাইফ রিস্ক ছিলো। কারণ দিয়ে ফিট থাকলেও ইন্টারনালি ড্যামেজ হচ্ছিলো, আর ঐসময় বাংলাদেশে এর ট্রিটমেন্ট করা যেতোনা তাই আবিরকে নিয়ে কাকা কাকা ইউ এস যাওয়ার প্লান করলো। আবির তখন সবে এস এস সি দিয়েছে। কিন্তু গুটিকে নেওয়া নিয়েই ঝামেলা হলো। গুটিকে ছাড়তে চাইছিলেন না দিদা। আমিও ওখানে থাকিনা তাই কাকা কাকী অনেক ভেবে ঠিক করল যে গুটিকে রেখে যাবে এখানে। দীদা আছে বাবা মা আছে। সমস্যা হবে না। আর কয়েকটা বছরের তো ব্যাপার। গুটি অনেক কান্নাকাটি করেছিলো বিশেষ করে আবিরের জন্যে। আবিরকে ছাড়া তো ও আর থাকতে পরবেনা। যদিও ওনাদের খুব কষ্ট হচ্ছিলো আর আবিরও কেঁদেছিলো গুটিকে কিন্তু ওকে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে ওনারা চলে গেলেন ইউ এস।”

স্পন্দন এবার একটু নড়ে বসলো এতক্ষণে একটু ইন্টারেস্ট পেয়েছে তাই। রেহান অবাক হয়ে বলল,

— “ঐটুকু একটা মেয়েকে রেখে ওনারা ইউ এস চলে গেলেন? ”

মেঘলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

— ” এটাইতো ওনাদের ভুল ছিলো। তবে দিদার কথা ভেবে, বাবা-মাও বলেছে, তারপর আবিরে এই অবস্থা এসবের মধ্যে হয়তো মাথাই কাজ করেনি। তবে গুঞ্জন প্রথম কয়েকদিন ভালোই ছিলো। চলে আসবে আসবে সবাই শান্তনা দিতো কিন্তু কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরেই গুঞ্জনের কান্নাকাটি বেড়ে গেলো। খুব বেশিই কাঁদতো। কাকা কাকীর জন্যে তো কাঁদতোই তার চেয়ে বেশি কাঁদতো আবিরের জন্যে। খুব ভালো বন্ডিং ছিলো দুজনের। আমিও হসটেলে থাকতাম। তবে আবির কাকা কাকীর কাছে যা শুনেছি তাতে, কিছুদিন পর থেকে একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো যে গুঞ্জনকে যখন আবির বা কাকা কাকী যখন ফোন করতো তখন গুঞ্জন নাকি কথা বলতে চাইতোনা। প্রথমে ভেবেছিলো অভিমান করেছে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু গুঞ্জন কোনোমতেই ওনাদের সাথে কথা বলতো না। কিন্তু আমি ছুটিতে যতোবার বাড়িতে আসতাম তখন দেখতাম না ওনাদের ফোন করতে হয়তো করতো বাবা মার কাছে আমিই দেখিনি। তবে প্রথম তিন বছর গুটি প্রচুর কেঁদেছে। এমন কোনো দিন ছিলোনা যেদিন অন্তত একবার না কাঁদতো। তবে এরপর আস্তে আস্তে কান্না থামিয়ে দিলো কারণ সেই কান্না দেখার সময় হয়তো কারোর ছিলোনা। তবে ও যেটুকু ভালো ছিলো শুধুমাত্র দিদার জন্যেই। ঊনিই আগলে রাখতো ওকে। কিন্তু এরপর একদিন দিদা মারা গেলেন। কিন্তু কাকা কাকীরা আসতে পারলেন না কারণ আবিরের সার্জারি ছিলো। আর সেটা খুব ক্রিটিক্যাল। দিদা মারা যাওয়ার পর গুটিকে ওনারা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলেন কিন্তু গুটি যায় নি, অনেক বলার পরেও যায়নি । তবে সেদিনের পর থেকে গুটি একটু একটু করে বদলাতে শুরু করলো। জেদি, একরোখা টাইপ হয়ে গেলো। তবে পরিবর্তন টা ধীরে ধীরেই হচ্ছিলো। কিন্তু এমন মারকুটে স্বভাবের ছিলোনা। আর এখানে গুটি জেদ আর একরোখামীর বসে যাই করতো তা সেই সব খবর ইউ এসে চলে যেতো। আর আমার মাকে তো আমি চিনি, এখানে তিল হলে ওখানে তাল করে বলত। তাই কাকা কাকীরও মনে হতে লাগল তাদের মেয়ে গোল্লায় চলে গেছে। তার আবির সুম্পর্ণ বছর পর আবির সম্পূর্ণ সুস্হ হয়ে গেলো। কিন্তু ওনারা ভাবলেধ দেড় বছর পরেই আবিরের স্টাডি শেষ হয়ে যাবে তাই একটু কম্প্লিট করেই আসুক। তো ওনারা দেড় বছর পরেই আসবে বলে ঠিক করলো।

স্পন্দন ভ্রু কুচকে এতোক্ষণ সব শুনছিলো এবার ভ্রু কুচকে বলল,

— ” এরপর কী হয়েছে?”

মেঘলা কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

— “এরমধ্যে ই আমাদের কলেজেল সিনিয়র একটা ছেলে আহিলের সাথে রিলেশন শুরু হয়। খুব ভালোবাসতাম ওকে আমি আর আমি তখন এটাই জানতাম যে ওও আমায় খুব ভালোবাসে। একমাত্র গুটি আমার সাথেই খুব বেশি ফ্রি ছিলো। আর আমিও ওকে সব বলতাম। একপর্যায়ে ওকে সব জানিয়ে দিলাম ওকে আহিলের ব্যাপারে এরপরে ওকে একসাথে বিভিন্ন জায়গায় নিয়েও যেতাম আমাদের সাথে। গুটি আহিলকে নিজের ভাইয়ের নজরে দেখতো। শালী জিজুর খুনসুটিময় খুব সুন্দর ভাবও ছিলো দুজনের খুব। যদিও এই ভাবটা বাবা মায়ের পছন্দ ছিলো না। এরপর আমার আর আহিলের এনগেইজমেন্ট হয়। আহিল আর আমার ভালোবাসাও দিন দিন বাড়তে থাকে, কিন্তু..”

এটুকু বলে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলল মেঘলা। স্পন্দন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

— ” কিন্তু কী?”

মেঘলা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,

— ” আহিল একটু একটু করে গুঞ্জনকে পছন্দ করতে শুরু করে দেয়। ওর ভাষ্যমতে ভালোবেসে ফেলে।”

স্পন্দন আর রেহান অবাক হয়ে তাকিয়ে একসাথেই বলে ওঠে,

— “হোয়াট?”

মেঘলা কিছু না বলে একটা মলিন হাসি দেয়। তারপর বলল,

— ” প্রথমে আমিও কিছু জানতাম না। গুটি জানতো। ওকে প্রপোজ করেছিলো আহিল। কিন্তু গুটি ওকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছে। এরপর থেকেই গুটি আমাদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, আহিল এর সাথে কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলো। তখন বুঝতে না পারলেও এখন বুজতে পারছে। কিন্তু আহিল নাছোড়বান্দা ছিলো। বিভিন্নভাবে গুটিকে অস্বস্তিতে ফেলতো। যেখানে সুযোগ পেতো ওকে ভালোবাসার কথা বলতো। বারবার বলতো যে ওর কোনো ভয় নেই গুটি একবার হ্যাঁ বলে দিলেই ও নাকি বাকিটা সামলে নেবে। কিন্তু গুটি একাই এস সহ্য করেছিলো কাউকে বুঝতে দেয়নি। বারবার আহিলকে বোঝাতে চেয়েছে কিন্তু ও বোঝেনি। গুটিকে ঐ দিনগুলোতে মনমরা দেখতাম জিজ্ঞেস করলেও কিছু বলতোনা। গুঞ্জন জানতো যে আমি আহিলকে কতোটা ভালোবাসতাম তাই ও কাউকে কিচ্ছু বলেনি শুধু আহিলকে বুঝিয়ে। এরপর আমাদের বিয়ের দিন এসে উপস্থিত হলো। ইউ এস থেকে কাকা কাকীরাও চলে এলো কিন্তু ওরা চলে আসার পরেও গুটির ওদের সাথে কোনো কথা বলে ইগনোর করেছে। গুটির যেসব কার্যকলাপ শুনেছে তাতে এমনিতেও তারা অসন্তুষ্ট ছিলেন তাই প্রথমে কথা বলার চেষ্টা করলেও পরে আর করেনি। আমার গায়ে হলুদের দিনই সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। কারণ আহিল আমাদের বাড়িতে ফোন করে বলেছে যে আমায় ও বিয়ে করতে পারবেনা। যদি বিয়ে করে তো গুটিকেই করবে। ওরা যদি বিয়ে দিতে চায় তো গুটির সাথেই দিতে হবে। পুরো বাড়িয়ে হৈ চৈ পরে গেলো। আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরেছিলো দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিও ছিলোনা, অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম আমি। শুনেছি এরপর বাবা মা গুটিকেই ব্লেম করেছে, আর পাড়াপ্রতিবেশিরাও গুটিকে নিয়ে গুটির চরিত্র নিয়ে কথা বলেছিলো। ও নাকি আহিলকে ফাঁসিয়েছে। নিজের হবু দুলাভাইয়ের গায়ে পরে পরে তাকে পটিয়ে নিয়েছে। সবার কথা শুনে কাকা কাকীও বিশ্বাস করে নিয়েছে যে গুটিই দ্বায়ী এসবের জন্যে। আর এতোদিন ওখান থেকে গুঞ্জন সম্পর্কে যা শুনেছে তারপর এটা অসম্ভব কিছু না। কাকা তো ওক এরজন্যে মেরেছে পর্যন্ত। আমার জ্ঞান ফেরার পর যখন পরিস্হিতি বুঝলাম তখন আমি নিজেকে সামলাবো নাকি ওদের হাত থেখে গুটিকে বাঁচাবো বুঝতে পারছিলাম না। তবুও নিজেকে শক্ত করে সবাইকে যেটুকু বোঝাতে চেষ্টা করেছি কিন্তু কেউ আমার কথা মানতে রাজি ছিলো না। অদ্ভুতভাবে গুটি কিচ্ছু বলছিলো না একদম মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কাঁদছিলো। সেদিনই শেষবার সবার সামনে অভাবে কেঁদেছিলো ও। এরপর ওনারা ঠিক করলেন যা হয়েছে হয়েছে এখন বাড়ির সম্মান তো বাঁচাতে হবে কার্ড বিলি হয়ে গেছে বিয়ে না হলে ঝামেলা হবে তাই আহিলের সাথে গুঞ্জনের বিয়ে দেওয়ার কথাই ভাবছিলো। কিন্তু গুঞ্জন তখন মুখ খুলে বলেছিল ও বিয়ে করবেনা। যার ফলে ওকে আবারও মার খেতে হয়। সবার কথা একটাই ছিলো, ‘ যার ফুর্তি করতে পারিস তাকে বিয়ে করতে পারবি না?”। আবির চোখ মুখ শক্ত করে নিরব হয়ে দেখছিলো সব। দেখছিলো এরা কতোটা বাড়তে পারে। হঠাৎ করেই ওর জোরে চেঁচিয়ে এক ধমক দিয়ে ওঠে। মুহূর্তেই সব শান্ত হয়ে যায়। এরপর ও আবির গুটির দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ শক্ত করে বলেছিলো যে, ‘ভেতরে যা’ গুটি ভেতরে যেতেই আবির শুধু একটা কথাই বলেছিলো, ‘ কোনো চরিত্রহীন এর সাথে আমি আমার বোনের বিয়ে দেবোনা।’ ওর কথা বলার ধরণটাই এরকম ছিলো যে কেউ আর কিছু বলার সাহস পায় নি। কিন্তু আমিতো খুব ভালোবাসতাম আহিলকে ওর দেওয়া সেই প্রতারণা মানতে পারিনি। প্রায় মাসখানেক ডিপ্রেসড ছিলাম। সেখান থেকে গুটিই আমাকে আস্তে আস্তে বেড় করে এনেছে কিন্তু ঐদিনের পর দেকে গুটি আরো বদলে গেলো। জেদি একরোখা তো ছিলোই তারসাথে উশৃঙ্খল হয়ে উঠলো, কাউকে পরোয়া করতো না, ক্যারাটে শিখেছে, ফাইট করতে পারতো আর কেউ ওকে কিছু বলে ফ্রি তে যেতে পারতো না।”

এরপর মেঘলা ওকে সেইদিনের স্পন্দনকে নিয়ে ভুলবোঝার কথাটাও বলল, স্পন্দন কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” হুমমমম। এরপরের কাহিনীটা বুঝেছি আমি। তোমাকে একি কষ্ট দুবার দেবেনা তাই ওর এই মহান হওয়া তাইতো?”

মেঘলা মাথা নিচু করে বলল,

— ” এবার ওকে ক্ষমা করেছেন তো স্যার?”

স্পন্দন একটা বাকা হাসি দিয়ে বলল,

— ” নট সো সুন। ও যেটা করেছে সেটা ক্ষমা করার মতোনা। মানছি ও নিজের স্বার্থে কিছু করেনি বাট যেটাই করেছে সেটা ভুল। তোমাদের নিশ্চয়ই সব বলা শেষ এবার এসো।”

রেহান আর মেঘলা একে ওপরের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেলো। স্পন্দন ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে গভীরভাবে কিছু ভাবতে শুরু করলো। ওর মাথায় এখন অন্যকথা ঘুরছে।

_______________________

গুঞ্জন খাটে বসে বসে নখ কাটছে আর ভাবছে যে কী করা যায়। মেঘলাও তাকিয়ে আছে গুঞ্জনের দিকে। আর রেহান আর সারা ভিডিও কলের ওপারে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। মেঘলা বিরক্ত হয়ে বলল,

— ” আরে শুধু ভাববি না কিছু বলবি?”

গুঞ্জন মাথা চুলকে অসহায়ভাবে একবার মেঘলার দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। গুঞ্জন হঠাৎ করেই বলে উঠলো,

— ” আইডিয়া।”

মেঘলা চমকে তাকালো। রেহান আর সারা ঝিমুচ্ছিলো ওরাও হকচকিয়ে তাড়াতাড়ি তাকালো। মেঘলা বলল,

— ” কী আইডিয়া?”

গুঞ্জন একটু ভেবে তারপর বলল,

— ” মেঘুদি এরজন্যে আমার তোমার হেল্প চাই।”

মেঘলা অবাক হয়ে বলল,

— ” আমি? আমি কী করবো?”

গুঞ্জন এবার ওদের চারজনকে সবটা বুঝিয়ে বলল। সব শুনে মেঘলা বলল,

— ” ব্যাপারটা রিস্ক হয়ে যাবেনা?”

গুঞ্জন মেঘলার গাল টেনে বলল,

— ” এটুকু তো করতেই হবে দি?”

তখনি দরজার কাজ থেকে আবির এসে বলল,

—- ” এইযে ম্যাডামস্। নিজেদের প্রেম সেট করার প্লান হয়ে গেলে একটু ঘুমোতেও যানঅনেক রাত হয়েছে।”

ওরা তাড়াতাড়ি ল্যাপটপ অফ করে ঝট করে শুয়ে পরলো আবিরও ওদের কান্ড দেখে হেসে বেড়িয়ে গেলো।

______________________

স্পন্দনের দশটায় রেস্টুরেন্টে মিটিং ছিলো তাই দশটায় মেঘলাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে এসে দেখে বুক করে রেখে দেওয়া টেবিলটা ফাঁকা। স্পন্দন অবাক হয়ে বলল,

— ” একি ওনারা কোথায়?”

মেঘলা এদিক ওদিক তাকিয়ে খোজার ভান করে বলল,

— ” আমিতো জানিনা স্যার। কল করে দেখুন না।”

স্পন্দন ভ্রু কুচকে ক্লাইন্টদের ফোন করে জিজ্ঞেস করতেই তারা বলল তারা খুব দুঃখিত কিন্তু একটু আসতে আটকা পরে গেছে তাই একঘন্টা লেট হবে। আসলে সমস্ত প্লান ওদেরই। মেঘলার কাছে ক্লাইন্টদের নাম্বার আছে তাই গুঞ্জন সেখান থেকে নাম্বার নিয়ে ওনাদের ফোন করে যা বলার বলে ব্যাপারটা ম্যানেজ করে একঘন্টা পরে আসতে রাজি করিয়েছে। গুঞ্জন কী বলেছে ওনাদের সেটা কেউ জানেনা। স্পন্দন বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে বলল,

— ” ডিসগাসটিং।”

মেঘলা ইতস্তত করে বলল,

— ” স্যার একঘন্টার জন্যে আর যাবো কেনো? আপনি বসুন আমি একটু পাশের মার্কেট থেকে আসছি?”

স্পন্দন বিরক্ত কন্ঠে বলল,

— ” তাড়াতাড়ি এসো।”

স্পন্দন ল্যাপটপ অন করে ভ্রু কুচকে সব চেক করছে হঠাৎ করেই চুড়ির ঝুনঝুন শব্দ শুনতে পেলো। ও কাজ করতে করতেই বলল,

— ” ম্যাডাম প্লিজ একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ান।”

কিন্তু এটা বলায় ঝুনঝুন আওয়াজ আরো বেড়ে গেলো। স্পন্দন এবার রেগে সামনে তাকিয়ে বলল,

— ” আপনাকে দূরে গি..”

সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে থেমে গেলো। গুঞ্জন আজকেও ওর দেওয়া সেই শাড়ি আর চুড়ি পরে দাড়িয়ে আছে মুখে মিষ্টি হাসি। স্পন্দন গুঞ্জনকে দুচোখ ভরে দেখতে লাগলো। গুঞ্জন ওর সামনে তুড়ি বাজাতেই ওর হুস এলো। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,

— ” কী ব্যাপার তুমি এখানে কি করছো?”

গুঞ্জন মুচকি হেসে একটা চেয়ারে বসে বলল,

— ” আপনার সাথে কথা ছিলো।”

— ” রিডিওকিলাস্”

এটুকু বলে উঠে যেতে নিলেই গুঞ্জন হাত ধরে বসিয়ে দিয়ে বলল,

— ” আরে আমাকে এতো ভয় পাওয়ার কী আছে হুম?”

স্পন্দন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,

— ” তোমাকে ভয় পাবো আমি? রিয়েলি?”

গুঞ্জন একটু গলা ঝেড়ে বলল,

— ” আচ্ছা শুনুন না একটু সাইডে দেখুন।”

স্পন্দন বিরক্তি সাইডে তাকিয়ে অবাক। দেয়ালে খুব সুন্দর করে বিভিন্ন রং এর লাইটিং দিয়ে খুব সুন্দর করে ইংলিশ ওয়ার্ডে সরি লেখা। স্পন্দন অবাক হয়ে গুঞ্জনের দিকে তাকালো। গুঞ্জন ইশারা করতেই ওয়েটার দুটো ট্রে নিয়ে এলো। স্পন্দন ভ্রু কুচকে বলল,

— ” এগুলো কী?”

গুঞ্জন ইশারা করে ডান পাশের ট্রের ঢাকনা সরাতে বলল স্পন্দন সরিয়ে দেখে ওর ফ্যাবরেট পাস্তা যার ওপরে সস দিয়ে গারো করে ইংলিশ ওয়ার্ডে সরি লেখা। স্পন্দপ গঞ্জনের দিকে তাকাতেই গুঞ্জন দুই কান ধরে ইশারায় সরি বলল। তারপর ইশারায় পাশের ট্রে টা ওঠাতে বলল। পাশের ট্রে টা উঠিয়ে স্পন্দন পুরো শকড কারণ একটা গোল ছোট চকলেট কেক যার ওপরে সুন্দর করে ইংলিশে ‘ আই লাভ ইউ’ লেখা। স্পন্দন হা করে তাকালো গুঞ্জনের দিকে। গুঞ্জন এবার ওর হাত সামনে ধরে দেখালে হাতে মেহেদী দিয়ে আই লাভ ইউ স্পন্দন লেখা আছে। স্পন্দন এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে গুঞ্জনের দিকে মাথা নিচু করে স্পন্দনের হাত ধরে বলল,

— ” মেঘুদির কাছে তো সব শুনেছেন। বিশ্বাস করুন আমি বুঝতে পেরেছি ভুলটা আমার ছিলো। প্লিজ ক্ষমা করে দিন। আমি ভালোবেসে ফেলেছি আপনাকে। ”

স্পন্দন এখোনো তাকিয়ে আছে গুঞ্জনের দিকে। গুঞ্জন এবার নরম কন্ঠে বলল,

— ” উইল ইউ ম্যারি মি? প্লিজ? সত্যিই ভালোবাসি আপনাকে। আই রিয়েলি লাভ ইউ।”

স্পন্দন কিছুক্ষণ গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে। নাইফটা হাতে নিলো এরপর কেক কেটে একপিস নিয়ে সেটা গুঞ্জনের দিকে এগিয়ে দিলো। গুঞ্জন মুচকি হেসে অর্ধেক খেয়ে বাকি অর্ধেকটা হাতে নিয়ে স্পন্দনকে খাইয়ে দিলো। এরপর স্পন্দন সস মিক্সট করে একটু খানি পাস্তা খেয়ে গুঞ্জনকেও এক চামচ খাইয়ে দিলো। গুঞ্জন এবার নিচু স্বরে বলল,

— ” কেউ নিজের ভুল বুঝতে পেরে মন থেকে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিতে হয়। তাই আমি তোমাকে ক্ষমা করতে বাধ্য। তুমি আমার সাথে যা যা করেছো আর বলেছো তারজন্যে ক্ষমা করে দিলাম তোমাকে।”

গুঞ্জন খুশি হয়ে গেলো স্পন্দনের কথায়। ও স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আর আমার উত্তরটা?”

স্পন্দন একটু বাকা হেসে গুঞ্জনের দিক তাকিয়ে বলল,

— ” আগেও বলেছি, এখনো বলছি, ভবিষ্যতেও বলবো আই ওলসো লাভ ইউ।”

গুঞ্জন মুখে হাসি রেখেই বলল,

— ” এটার উত্তর চাইনি আমি, কারণ এটা আমার জানা আছে। অন্যকিছুও বলেছি আমি।”

স্পন্দন পাস্তা খেতে খেতে বলল,

— ” বিয়ে? সেটা কখনো সম্ভব নয়। তোমাকে আগেও বলেছি তোমাকে ভালোবাসলেও আর চাইনা আমি। তাই এসব ভুলে যাও।”

গুঞ্জন এবার হতাশ কন্ঠে বলল,

— ” কিন্তু কেনো?”

স্পন্দপ একটা বিরক্তির শ্বাস ফেলে বলল,

— “তোমার মনে হয়েছিলো তোমার বোনের আমাকে পছন্দ তাই আমাকে ছেড়েছিলে? কাল তোমার অন্যকোনো রিলেটিভ এর আমাকে পছন্দ হলে আবার যে আমাকে ছাড়বেনা তার কী গ্যারান্টি আছে? আমি তো আর কোনো প্রপার্টি নই যে যখন ইচ্ছে যার সাথে ইচ্ছে ভাগ করে নেবে? সো প্লিজ। হ্যাঁ তোমার হয়তো মনে হচ্ছে আমি ভাব নিচ্ছি কিন্তু একটু প্রাকটিক্যালি ভাবো এটাই ফ্যাক্ট। তবে হ্যাঁ আমরা আগের মতো বন্ধু হয়ে থাকতেই পারি। যদি তুমি চাও তো।”

গুঞ্জন এবার অনেকটা কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বলল,

— ” প্লিজ আমার..”

স্পন্দন গুঞ্জনকে থামিয়ে বলে উঠলো,

— ” গুঞ্জন প্লিজ। আমার ক্লাইন্টরা আসবে এখন। আমরা পরে কথা বলবো।”

গুঞ্জন মুখ ফুলিয়ে উঠে চলে যেতে নিলেই স্পন্দন হাত ধরে আটকে নিলো। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে গুঞ্জন সামনে গিয়ে ওর কপাল থেকে চুল সরিয়ে কানে গুজে দিলো। গুঞ্জন আস্তে করে চোখ বন্ধ করে ফেলল। এরপর স্পন্দন ওর কপালে আলতো করে একটা কিস করে জরিয়ে ধরে ঘাড়ে নাক ডুবির দিলো। গুঞ্জনতো অবাক। এটা স্পন্দনের ওকে করা প্রথম কিস ছিলো, আর প্রথমবারই স্পন্দন ওকে এতটা গভীরভাবে স্পর্শ করল । পুরো জমে দাঁড়িয়ে আছে ও। স্পন্দন জরিয়ে ধরা অবস্হাতেই কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,

— ” এডভান্টেজ নিচ্ছি বলো, আর যাই বলো। তোমাকে এভাবে দেখে নিজেকে সামলানো সম্ভব হলো না।”

এটুকু বলে গুঞ্জনকে ছেড়ে দিয়ে গলা ঝেড়ে বলল,

— ” তবে এটাকে অন্যকিছু ভেবে নেওয়ার দরকার নেই।”

গুঞ্জন এবার ভ্রু কুচকে চোখ খুলে তাকালো এরপর মুখ ফুলিয়ে হনহনিয়ে বেড়িয়ে গেলো। স্পন্দন ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে এরপর বসে বাকি পাস্তাটা শেষ করতে লাগলো।

______________________

বিকেলে একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে গুঞ্জন, রেহান, মেঘলা, সারা। মেঘলা বলল,

— ” কি ভাবলাম আর কী হলো? মানে সে ভালোবাসে সেটাও গলা ফাটিয়ে স্বীকার করছে, কেক পাস্তা খাচ্ছে, আবার কিস করছে, হাগ ও করছে কিন্তু শেষে সারমর্ম কী? আগের মতো ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে পারো? সিরিয়াসলি?”

রেহান একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে বলল,

— ” হুমম এটা শুধু স্পন্দনের দ্বারাই পসিবল।”

সারা হতাশ কন্ঠে গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” এবার কী করবে ভাবী জ্বী?”

গুঞ্জন এতোক্ষণ চুপচাপ গম্ভীরভাবে সব ভাবছিলো এবার মুখে একটা শয়তানী হাসি দিয়ে বলল,

— ” ডোন্ট ওয়ারী ননদিনী। তোমার ভাই তার নিজের জোন জানিয়েছে কিন্তু আমার জোন তো আমি ঠিক করবো তাইনা? এবার স্পন্দন চৌধুরী বুঝবে গুঞ্জন কী জিনিস। বি রেডি মিস্টার চৌধুরী গুঞ্জন ইজ ব্যাক।”

রেহান সারা হা করে তাকিয়ে আছে। মেঘলা হেসে গিয়ে গুঞ্জনকে টাইট করে জরিয়ে ধরলো। সেটা দেখে ওরাও হেসে দিলো।

#চলবে…

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ