তুই আমারই থাকবি part-25

0
1971

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_25
!
‘একপর্যায়ে উনি ঝগড়া থামিয়ে দিলেন।হাত উঁচিয়ে আরহাম ভাইয়াকে শাসানোর ভঙ্গি করলেন।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে গাড়ির দরজাটা খুললেন,ঠাস করে আমাকে হ্যাঁচকা টান দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়লেন। আর আরহাম ভাইয়া বেক্কলের মতো দুইহাত গুঁটিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন,মুখটা কেমন শুকনো, প্রাণহীন লাগছে। এরকম হওয়ার মানে বুঝলাম না।

-আমার বউ আমি নিয়ে যাবো। তুমি কোনখানের কার জামাই যে,অন্যের বউকে নিয়ে তাঁরই শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছো?লিসেন…তুমি অফিসে যাও।আমি একাই আমার বউকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যেতে পারবো!গট ইট…

-একদমে পুরো কথাটা বলে উনি গাড়ি স্টার্ট দিলেন।চোখে কালো রোদচশমা, পুরোই হিরো। বাট এই হিরোগিরির দাম নেই আমার কাছে।যাচ্ছিলাম একা একা,যে শান্তিতে বাসায় যাবো, সবার সাথে মজা করে কাটাবো। কিন্তু মাঝপথে এই উটকো ঝামেলা আমার পিছনে লেজ লেগেছে! ধুর…ভাল্লাগেনা…

প্রচন্ড বাতাসে আমার এবং উনার দুজনের চুলগুলোই উড়ছে।চারদিকে কোলাহল কমে এসেছে।গাড়িটা আমাদের পাড়ায় ঢুকতেই আশেপাশের লোকজন সবাই মিটিমিটি করে তাকালো! চা-স্টলে চা-খেতে আসা মুরুব্বিরা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে! আমার কেমন অস্বস্তি শুরু হলো।

গাড়ি থেকে নেমে আমি এক দৌড়ে আমাদের বাসার দরজায় গেলাম।আহ….কত্ত শান্তি!এতদিন পর বাসায় এলাম যে……

-যাইহোক কলিংবেল চাপার আগেই গুন্ডাটা এসে আমার পাশে দাঁড়ালো। গা থেকে কড়া পারফিউমের স্মেল আসছে।আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,এতক্ষণ তো এত স্মেল পাইনি,তাহলে?

উনি পাত্তা না দেওয়ার ভঙ্গিতে কলিংবেল চাপলেন।আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো।আমাকে আর উনাকে যেন আকাশ থেকে পড়লেন,এতই খুশি হয়েছে যে কথা বলতে পারছে না।আমাদের ভিতরে আসতে দিয়ে আম্মু আব্বুকে ডাকলেন।আব্বু এসে আরও খুশি।দুজনের খুশি দেখে উনিও খুশি।আর আমি অবলা নারীর মতো তাকিয়ে রইলাম।

সেই খুশিতে তিনজন নিজেদের কুশল বিনিয়ম করলেন।আপু,ভাইয়া এলো এবং সবাই মিলে একসাথে বসে নানান কথাবার্তা শুরু করলেন।

কিছুক্ষণ পর!আমরা ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় বসে আছি,উনি আমাকে পা দিয়ে বারবার খোঁচা দিচ্ছেন আর আমি রেগে উনার পায়ে লাথি মারছি!আর উনি রেগে আমার দিকে তাকাচ্ছেন।

-দুপুরের খাবার দেওয়া হলো উনাকে। উনিও ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলেন।আমি রাগে গজগজ করতে করতে ফ্রেশ হতে রুমে আসতে চাইলাম,আর আম্মুকে বলে গেলাম যে,আমি রুমে যাচ্ছি।ঘুমাবো…

আম্মু বললো, ঠিক আছে মা।বলেই জোর করে আমার মুখে ভাতের লোকমা তুলে দিলেন,আম্মুর দেখাদেখি আব্বুও।আর তা দেখে আমার বড় গরিলা আর বড় হনুমান ভাইবোন এসে আমাকে আদর করে একের পর এক লোকমা মুখে দিয়েই যাচ্ছে।আমার খেতে কষ্ট হচ্ছে….যে এই গরিলারা বুঝবে না….গুন্ডাটা আমার এই পরিস্থিতি দেখে হাসতে হাসতে অজ্ঞান হবার দশা…

যাইহোক, এই নির্মম অত্যাচার শেষে আমি নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম।আহ….কত শান্তি।এতদিন পর নিজের রুমে এসেই শুয়ে পড়লাম আমার ছোট্ট বিছানায়। নিজের ঘর ছাড়া আমি যে এতদিন ওখানে ছিলাম,, ভাবতেই অবাক হচ্ছি।যে আমি দুদিন কারো বাসায় থাকিনি নিজের রুমে থাকবো বলে!

সময়! সময় মানুষকে কতখানি পাল্টে দেয়!কত কিছুর সাথে মানিয়ে নিতে শিখায়….

কিছুসময় পর,

আমার গুন্ডাটা এলো রুমে।চোখ গোল গোল করে পুরোটা রুম গিলে খেলো।কারণ আমার রুমটা অন্যরকম।

প্লাস্টিকের ফুল,লতা,পাতা দিয়ে ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত ছেয়ে আছে ঘরটা। একপাশে প্লাস্টিকের ম্যাপল পাতা কমলা রঙের! তার পাশের দেয়ালে টাঙানো আমার ছোট্টবেলার গুলুমুলু একটি ছবি।যেখানে আমি একা পাহাড়ের উপর সবুজ জামা পরে দাঁড়িয়ে আছি,মেঘেরা উড়ে যাচ্ছে আমার মাথার উপর দিয়ে!আমার সারা রুমটাতেই মেঘ-বৃষ্টি,পাহাড়, কুয়াশা,নদ-নদী,হ্রদ,আর গাছগাছালির ছবি।বড্ড অবাক করার বিষয় এটা।আমার মতো মেয়ের রুমে এসব প্রাকৃতিক ছবি থাকাটা!

-উনি বেশ কিছুক্ষণ এসবকিছু দেখে আমাকে বললেন,তুমি তো রুমটাকে একেবারে বন্যবাড়ি বানিয়ে ফেলেছ!নদী, আকাশ,গাছগাছালি, পাহাড় সব এক জায়গায়!

-আমি কিছু বললাম না।

-উনি এসে আমার পাশে বসে বললেন,আমি ঘুমুবো!

-ঘুমাতে চাইলে ঘুমান।আমার কী!

-তোমার কী মানে? তুমি আমার বউ,আমার প্রতি তোমার একটা দায়িত্ব আছে না?

-আমি সন্দেহী চোখে তাকিয়ে বললাম,কী বলতে চাইছেন আপনি?

-উনি গমগমে স্বরে বললেন,সেটাও বলে দিতে হবে?

-আজব পাবলিক তো!প্রবলেম কী আপনার?

-আমার অনেক প্রবলেম!

-যেমন?

-যেমন আমি এখন ঘুমাতে চাচ্ছি,কিন্তু তুমি ঘুমাতে দিচ্ছো না!

-কীহহ?আমি ঘুমাতে দিচ্ছি না?রেগে বললাম….

-তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও!

-কচি খোকা!আসছে…..

-দেখো, পকপক বন্ধ করো। যা বলছি তাই করো…. রেগে বললেন।

-আমি পারবো না।

-হোয়াট দ্যা হেল… প্রচন্ড রেগে বললেন উনি।বাকিটা বলার আগেই…..।আর আমি তাতে ভয় পেয়ে বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে যেই একদৌড়ে বেরিয়ে যাবো বলে ভেবেছি….আর উনি একটানে আমাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার ঠোঁটে কিস করতে লাগলেন।

আমি ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে উনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম আর উনি তাতে আরও প্রচন্ড রেগে আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজের শরীরের সমস্ত ভর আমার উপর ছেড়ে দিলেন।

আর আমি ৪৫+ ওজনের শুভ্রতা জান্নাত খুশবু যেন বিছানার সাথে মিশে গেলাম।উনার শরীরের ভারে আমি ঠিকঠাক শ্বাস নিতে পারছি না।যদিও আমার শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে!যেটা উনার অজানা….

উনি উনার শরীরের ভার আমার উপর ছেড়ে দিয়ে আমার গলায় মুখ গুজলেন।ঠোঁটের উপর এমন জোরে একটা কামড় দিলেন যে,আমার প্রাণপাখিটা ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবার দশা!আমি চিৎকারও করতে পারছিনা,উনাকে সরাতেও পারছিনা।

এদিকে উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন।একের পর এক ঠোঁটে আর গলায় কামড় দিয়েই যাচ্ছেন।আর আমি ব্যথায় অজ্ঞান হবার দশা!

আমি এবার………. ‘

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে