#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_11
!
‘-আর নিচে নামতেই আনিকা বললো,তোর জামাইটা খুব ভালো।
!
-কেন?কী করেছে জামাইটা?
!
-আরে তোকে তো আজ থেকে ভার্সিটি যাওয়ার পারমিশন দিয়ে দিয়েছে!কত মজা হবে বল!
!
-হুম।
!
-আনিকা কিছুক্ষণ ভেবেচিন্তে বললো,ভাইয়া কত ড্যাশিং রে?কত হ্যান্ডসাম!কপালের আর বুকের উপরের তিলটা দেখেছিস?ওয়াও সো কিউট!(স্বপ্নালু চোখে)
!
-কালনাগিনী!তুই আমার বরটার উপর এইভাবে নজর দিলি?(সন্দেহ নিয়ে)
!
-আরে ধুর….সামনে পড়ে গেছিল দেখলি না?টাওয়াল পড়ে খালি গায়ে তোর আর আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো!তখন কী আর চোখ ফিরাতে পেরেছিলাম?কী হট লাগছিল ভেজা চুলে!হাউ কিউটি…….
!
-আমি বিরক্তির চরম সীমানায় পৌঁছে বললাম,স্টপ দিস ননসেন্স।তুই তোর সাদাফের কাছে যা!সেও তো কম হট না!
!
-তুই যা।এখন চল(রেগে)
!
-এখন কথা কাটাও কেন?শালি হারামি?
!
-আচ্ছা আচ্ছা,এখন চল…..আবরার ভাইয়া বসে আছে!
!
-চল!
!
-মামানি থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।আব্বু-আম্মু সবাই রয়েছে।
!
-বাইরে এসে দেখি গুন্ডা গাড়িতে বসে আছে।ব্যাটা ড্রাইভ করবে……যাইহোক, আমি সামনের সিটে বসে পড়লাম। আনিকা পেছনে বসে পড়লো আর গুন্ডা গাড়ি স্টার্ট করলো।
!
-আনিকা?তোর মোবাইলটা দে তো!আমার একথা শুনে গুন্ডা আবরার আমার দিকে তাকালো!আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিলাম!
!
-আনিকা বললো,মোবাইলে চার্জ নেই।ভাইয়াকে বল,উনারটা দিবে….
!
-উনার মোবাইলে ধরা বারণ!আমারটাও তো বাসায়…..
!
-উনি উনার মোবাইলটা আমার দিকে ধরলেন!কিছু বললেন না!
!
-আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়েই রইলাম।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,লাগবে না।ইট’স ওকে!
!
-নিতে চাইলে নিতে পারো।না নিলে আমার কিছু যায় আসবে না।আই ডোন্ট কেয়ার।বাট পরে কাউকে বলতে পারবে না যে,আমি আমার মোবাইল তোমাকে দিইনি!গট ইট?
!
-আমিও ভাব ধরে বসে রইলাম।উওর দিলাম না।
!
-ভাব নিচ্ছ?নাও।আই ডোন্ট কেয়ার!বাট এটার সাক্ষী রইলো আনিকা!
!
-আ…..মি?মানে……আমি?
!
-ডেফিনেটলি আনিকা।ও যে, আমার ফোন নিল না এর সাক্ষী রইলে তুমি!আর ভার্সিটিতে তুমি সবসময় ওর সাথে থাকবে,ওর পাশে বসবে,খাবে,কথা বলবে যা ইচ্ছে করবে……বাট কোনো ছেলের আশেপাশে যাতে ও না যায় সেটার রেসপনসিবলিটিও তোমার!গট ইট……
!
-আনিকা ভয়ে ভয়ে বলল,জ্বি…..।
!
-আমি একবার রক্তচক্ষু নিয়ে আনিকার দিকে তাকালাম।কিছু না বলে চুপ করে বসে আছি।
!
!
!
!
!
-ভার্সিটি পৌঁছে গেলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই।গাড়ি থেকে আমি আর আনিকা নামলাম।ব্যাটা গুন্ডাও গাড়ি থেকে নামলো। আমি বললাম,আমরা ভেতরে যাচ্ছি,আপনি বাসায় চলে যান!
!
-লিসেন খুশবু!আমি আমার পিচ্চি বউটাকে একা কোথাও যেতে দিবো না,আমি এখানেই থাকবো ।সো তুমি চুপ থাকো।
!
-না মানে,আপনার মতো ড্যাশিং ইংরেজ দেখলে সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে থাকবে, চোখ দিয়ে গিলে খাবে, তাই বলছিলাম……..
!
-তাই আমি চলে গেলে তুমি মুক্ত হয়ে যাবে!ডানা মেলে উড়বে আকাশে, তাই না?ডানা কেটে রেখে দেবো!স্টুপিড গার্ল!(রেগে)
!
-মানে বলছিলাম…..!
!
-এখানে আমার অসংখ্য ফ্রেন্ড সার্কেল আছে।আমি আড্ডা দিবো , ফুর্তি করবো, আর তোমায় পাহারা দেবো।
!
-মনে মনে বললাম,সব প্ল্যান ভেস্তে দিলো। গুন্ডা, বদ পোলা কোথাকার!ফুর্তিবাজ একটা, আমায় নাকি পাহারা দিবে…..যত্তসব!
!
-আনিকা এসব কান্ড দেখে বললো,ভাইয়া আমি ক্লাসে যাই?সুগন্ধি আপা যাবে আমার সাথে?
!
-হোয়াট?আনিকা তুমি কী বললে?সুগন্ধি?কে? (হাসতে হাসতে)
!
-আনিকা উৎসাহ পেয়ে হাসতে হাসতে বলল,আরে খুশবুর নামই সুগন্ধি!আমরা ডাকি আরকি!নামটা কেমন ভাইয়া?
!
-হাউ ফানি!(হাসতে হাসতে)
!
-উনার কিটকিটে মার্কা হাসি দেখে আমার গা জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে।তার সাথে যোগ দিয়েছে আবার আনিকা।দুজনে মিলেই হাসছে ইচ্ছেমত। মন চাইতেছে দুইটাকে নোংরা ড্রেনের পানিতে চুবাই!(আমি মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।)
!
-উনি আমার গাল টেনে দিয়ে বললেন,তো সুগন্ধি আপা আপনি আমার সাথে থাকেন আর আনিকা তুমি ক্লাসে যাও।
!
-আনিকা বললো,ওকে ভাইয়া!
!
-ক্যান্টিনে চলো।হাসতে হাসতে বললেন,
!
-বলেই উনি আমায় নিয়ে ক্যান্টিনে এলেন।আর আমি সন্দেহ ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে উনার কাণ্ডকারখানা দেখছি।ব্যাটা আমায় বসতে বললেন,আমিও বসলাম।উনি ক্রমে ক্রমে হাসছেনই।
!
-আপনি এভাবে হাসছেন কেন?
!
-হাসছি না তো!
!
-ওহহ…..আমি কানা!আমি চোখে কিছুই দেখি না?আমাকে আবাল মনে হয়?
!
-এই তুমি আবাল?রিয়েলি?আই কান্ট বিলিভ….. (হাসতে হাসতে)
!
-আমি রেগেমেগে আগুন হয়ে গেলাম।বুঝলাম এই অটিস্টিকের সাথে কথা বলে মুড অফ করার দরকার নেই।তাও…..এভাবে কেউ ইনসাল্ট করলে রাগ আপনা আপনি চলে আসে!ধরে বেঁধে রাখা যায় না।আমারো হলো সেই দশা!
!
-উনি আমার চোখের সামনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন আর আমি রেগেমেগে বললাম,এই!এই তোর কী হয়েছে রে?বদমাইশ ছেলে, তুই এইভাবে আমায় দেখে হাসছিস?তোর বিয়াল্লিশটা দাঁত যদি থাপড়িয়ে না খুলে দেই তো আমি শুভ্রতা জান্নাত খুশবু না!
!
-উনি হ্যাবলার মতো রেগে তাকিয়ে আছেন।আর আমি অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পড়েছি এতগুলো কথা বলে। উনাকে যে সাহস করে এতগুলো কথা বলতে পেরেছি তাতে নিজের না যতটা আনন্দ হচ্ছে তা চেয়ে বেশি ভয় হচ্ছে।
!
-উনি চুপচাপ উঠে কাউন্টারে গেলেন।আমায় কিছু বললেন না।দুই দুইটা বার্গার আর দুইটা তন্দুরি চিকেন এনে আমার সামনে রেখে বললেন,নাও শুরু করো!
!
-আবারো সেই খাবারের টর্চার।আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,আমি তো একটু আগেই খেয়ে এসেছি!
!
-উনি রেগে বললেন,ইউ লায়ার গার্ল।তুমি এত মিথ্যে বলতে পারো?আমি তো ভেবেছিলাম তুমি অনেক সাধাসিধে মেয়ে বাট তোমার মিথ্যে বলার ধরণ দেখে আমি সত্যিই কনফিউজড!
!
-মানে?কী মিথ্যে?
!
-তুমি সকালে খেয়েছিলে?
!
-হুম।সব খেয়েছি,বাকি রাখিনি একটুও!(ভয়ে)
!
-উনি বললেন,রিয়েলি?তো উইন্ডো দিয়ে কে ব্রেকফাস্ট ফেলেছিলো?
!
-আমি আমতাআমতা করে বললাম,কে ফেলেছিল তা আমি কী কিরে বলবো??
!
-কারণ তুমিই তো ফেলেছিলে!(রেগে)
!
-আমিও রেগে গেলাম,বললাম,হুম। আমার ইচ্ছে তাই ফেলেছি।
!
-ফেলেছ যখন এখন এসবগুলো তুমি খাবে!
!
-আপনি খান।আমি খাবো না।(রেগে)
!
-তুমি খাবে না তোমার ঘাড় খাবে!(রেগে)
!
-আপনি কী আমায় জোর করে খাওয়াবেন?
!
-ডেফিনেটলি!
!
-তারপর উনি আমায় আর কিছু বলতে না দিয়ে চিকেনের টুকরাটা মুখে পুরে দিলেন।আমিও আর না পেরে খেতে লাগলাম।উনার এসব কান্ড দেখে ক্যান্টিনের বয় আর বুড়ো লোকটা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।উনি ওদেরকে তাকাতে দেখে হাসিমুখে বললেন,বউ আমার কিছু খায়নি!বলুন তো এইসময়ে খালিপেটে থাকা কী উচিৎ?
!
-বুড়ো লোকটা বললেন,কী হয়েছে আপনের বউয়ের?
!
-উনি মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব এনে বললেন,আর বলবেন না, প্রেগন্যান্ট আরকি!
!
-বুড়ো লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,এমন জামাই ভাগ্য করে পাওয়া যায় গো মা।যে বউয়ের এত খেয়াল রাখে। আর তুমি না খাইয়া পেটের বাচ্চাটারে কষ্ট দিবা!তা তো হয় না মা।তারপর আবরার গুন্ডার দিকে তাকিয়ে বললেন,খাওয়ান বাবা!আমি যাই!
!
-উনিও হাত দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে বললেন,আচ্ছা চাচা!তারপর আমার দিকে ফিরে শয়তানি হাসি দিলেন।
!
-আমি না পারছি কিছু বলতে না পারছি সইতে!ধুর……..’
!
চলবে……….
হ্যাপি রিডিং ??