তন্ময়ের তনু পর্ব-১৪+১৫

0
2811

#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১৪
#Jechi_Jahan

আমি ওয়াশরুমে এসে মুখে শুধু অনবরত পানি দিচ্ছি।জানিনা কেনো এখন আমার খুব কান্না পাচ্ছে।তন্ময় আমাকে আবার আপু মনে করে হয় তো এমন করেছে।আমি চোখের পানি মুচে মুখটা ধুয়ে মুচে রুমে চলে আসি।

তন্ময়-কি হয়েছে তনু?

আমি-কই কিছু না।(নিচের দিকে তাকিয়ে)

তন্ময়-তাহলে এভাবে দৌড়ে চলে গেলে যে?

আমি-মুখটা খুব জ্বলছিলো তাই ধুতে গেছি।

তন্ময়-তনু আমি সরি।

আমি-আবারো কেনো?(খাটে গিয়ে বসে)

তন্ময়-আমার তোমার পারমিশন নেওয়া উচিত ছিলো।কিন্তু আমি সেটা করিনি তাই আমি সরি।

আমি-না সমস্যা নেই।

এবার আমরা দুজনে কিছুক্ষণ নিরবতায় ছিলাম।কিন্তু তন্ময় হঠাৎ করে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয়।ওনার এই কাজে আমি প্রায় অবাক হয়ে যাই তবু একহাত ওনার কাঁধে রাখি।

আমি-তন্ময় কি হয়েছে কাঁদছেন কেনো?

তন্ময়-,,,,,,,,,(কান্না করতেই আছে)

আমি-তন্ময় প্লিজ বলুন।

তন্ময়-তুমি ওইদিন না গেলেও পারতে তনু।আমি তোমাকে কত জায়গায় খুঁজেছি এটা শুধু আমি জানি।তুমি চলে যাওয়ার পর আমি যে কেমন চিন্তায় ছিলাম সেটা তুমি জানোনা।তনু প্লিজ আর কোনোদিন এমন করোনা আমার কসম করোনা।
(কান্না করতে করতে)

আমি-তন্ময়!!!(আমার থেকে ছাড়িয়ে)

তন্ময়-তনু প্লিজ এমন করোনা।(কান্না করে)

আমি-(ওনাকে দেখে আমার চোখ থেকে পানি পরতে লাগলো।এমনে কিছুক্ষণ আগে কান্না করলাম এখন ওনাকে দেখে আবার।আমিও এবার ওনাকে জরিয়ে ধরে কান্না করেই বলি) আমি আর কখনো যাবোনা আপনায় বাড়ি থেকে।

তন্ময়-প্লিজ যেয়ো না।

আমি-না যাবোনা।

তন্ময় এবার আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমাকে দেখে।

আমি-কেমন বাচ্চাদের মতো কান্না করছেন।(শাড়ির আঁচল দিয়ে ওনার চোখের পানি মুচে)

তন্ময় আমাকে কিছু না বলে আমাকে টেনে ওনার সাথে মিশিয়ে নেয়।আমি ভাবলাম আবার কান্না করবে কিনা।কিন্তু আমার ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে উনি আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে দেয়। তন্ময়ের এই কাজে আমি অবাক হলেও কিছু বললাম না।উনি এবার আস্তে আস্তে আমার গালে আর গলায় একটা চুমু দেয়।এবার তন্ময় যেই আমার ঠোঁটের কাছে আসতে গেলো আমি ওমনি মুখটা ওদিকে ফিরিয়ে ফেলি।কিন্তু তন্ময় যেনো আজ আমাকে চায়ই চায় আর উনি আজ আমায় পেয়েছেন ও একেবারে নিজের করে।

>>সকালে<< আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি তন্ময়ের বুকের উপর শুয়ে আছি।হঠাৎ কালকে রাতের কথা মনে করে আমি কেমন লজ্জা পেয়ে যাই।আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রোজকার সময়েই উঠেছি। আমি এবার গোসল করে একটা সবুজ রংয়ের সুতি শাড়ী পরে নিলাম।রুমে এসে আমি কাজা ফজর নামাজ টা আদায় করে নিচে চলে গেলাম। নিচে গিয়ে সবার জন্য নাস্তা বানাতে লাগলাম। সাবিয়া-তনু তুমি নাস্তা বানাচ্ছো?(রান্নাঘরে এসে) আমি-রোজই তো বানাতাম। সাবিয়া-ওহ হ্যাঁ,দাও আমি একটু সাহায্য করি। আমি-না মা আজ আমিই করি। সাবিয়া-আচ্ছা যাও তন্ময়কে চা দিয়ে আসো। আমি-কিন্তু মা উনি তো চা নিচে এসে খান। সাবিয়া-না আজকে রুমেই দিয়ে আয়। আমি-চা তো এখনো.... সাবিয়া-আমি দিচ্ছি। মা এবার আমাকে তন্ময়ের জন্য এক কাপ চা ধরিয়ে দিয়ে উপরে পাঠিয়ে দিলো।আমি রুমে এসে দেখি তন্ময় রুমে নেই।আমি চা টা রেখে ওনাকে ওয়াশরুমে আর বারান্দায় খুঁজে নিলাম কিন্তু উনি সেখানেও নেই।আমি এবার খাটে বসে আমাদের মোবাইলের দিকে নজর দিলাম।আমি দেখলাম খাটের উপরে থাকা মোবাইলটা আমার না তন্ময়ের।আমি এবার রুম থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে এলাম আর ছাদে চলে গেলাম। আমি-তন্ময়!!!! তন্ময়-হুম!!!(আমার দিকে ফিরে) আমি-আপনি এখানে কি করছেন? তন্ময়-কিছুনা এমনে এসেছি। আমি-আমার ফোন আপনার কাছে? তন্ময়-কেনো থাকতে পারেনা? আমি-না তা কেনো হবে। তন্ময়-তনু তুমি কিভাবে জানলে আমি এখানে? আমি-মনে হলো তাই আসলাম। তন্ময়-তনু কালকে রাতের জন্য সরি। আমি-মানে? তন্ময়-আমি কাল ওসবের জন্য সরি বলছি। আমি-আপনি কি সবকিছুই ভুল করে করেন? তন্ময়-আরে না না তোমার পারমিশন নেওয়া উচিত ছিল তাই আমি সরি বললাম। আমি-হুম!!!নাস্তা করতে আসুন।(বলে যেইনা আমি আসতে যাবো ওমনি তন্ময় আমার হাত ধরে ফেলে আর ওনার কাছে নিয়ে যায়)কি??? তন্ময়-তনু আমরা কি এই সম্পর্কটা কে একটা সুযোগ দিতে পারি?(করুণ চোখে তাকিয়ে) আমি-কিভাবে??? তন্ময়-ভাইয়া আর ভাবীর মতো একটা জুটি হয়ে। আমি-হবেনা তো। তন্ময়-কেনো তনু? আমি-ওনাদের সম্পর্কে বিশ্বাস টা খুব বেশি যেটা আমাদের সম্পর্কে নেই।(অন্য দিকে তাকিয়ে) তন্ময়-তুমি এখনো ওইটা তেই পরে আছো?(সিয়ামের ঘটনা) আমি-না পরে থাকার মতো তো কোন বিষয় নয়। তন্ময়-ওটার জন্য আমি তোমার কাছে অনেকবার ক্ষমা চেয়েছি আর তুমি ক্ষমা করেও ছিলে। আমি-হুম করেছি!!!কিন্তু এখন আপনাকে তত ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষণ না আমি এই সম্পর্ক টাকে আরেকটা সুযোগ দিচ্ছি। তন্ময়-এমন হলে কাল রাতে আমাকে আটকালে না কেনো?(আমায় শক্ত করে ধরে) আমি-গাঁদা।(ওনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে) তন্ময়-কি??? আমি-নাস্তা করতে আসুন (বলে নিচে চলে আসি) বাবা-তনু। আমি-বাবা।(বাবাকে গিয়ে জরিয়ে ধরে) বাবা-এমনটা না করলেও পারতি। আমি-সরি বাবা। বাবা-আচ্ছা ওসব ছাড়।(আমাকে ছেড়ে) আমি-ওকে। বাবা-কোথায় ছিলি এতোদিন? আমি-(বাবার কথায় ঢোক গিলতে লাগলাম) তন্ময়-হ্যাঁ আমিও জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি কোথায় ছিলে তুমি এতোদিন?(নামতে নামতে( রহমান-আরে ওসব রাখ তো এখন।তোর শ্বশুর এসেছে সালাম কর। তন্ময়-আসসালামু আলাইকুম বাবা। বাবা-ওয়ালাইকুম আসসালাম।কেমন আছো? তন্ময়-আলহামদুলিল্লাহ ভালো!আপনি বাবা? বাবা-আমি ও আজ থেকে ভালো। আমি-বাবা।(রহমান সাহেবের পাশে গিয়ে) রহমান-কি??? আমি-আমাকে বাঁচানোর জন্য Thanks..... রহমান-কালকে যদি তুই আমাকে এসব না বলতি তাহলে আজ আমি তোকে বাঁচাতে পারতাম না। আমি-হুম। সাবিয়া-কি বিড়বিড় করছো দুজনে। রহমান-না না কিছু না। সাবিয়া-তনু তোমার বাবাকে নাস্তার টেবিলে নিয়ে যাও। আমি-হুম বাবা চলো। আমি আর মা নাস্তার টেবিলে সবাইকে নাস্তা দিচ্ছি।আজ নাস্তা একটু ভিন্ন বানালাম লাচ্চা পরোটা,সবজি,চিকেন স্টু আর জুস। বাবা-বেয়াইন আমার তনুকে একটু রান্না করা শিখাবেন তো এটা আমার অনুরোধ। সাবিয়া-কেনো? বাবা-আমার মেয়েটা রান্না জানেনা তাই। সাবিয়া-কে বলেছে জানেনা আজকের নাস্তাগুলো ও তো তনুই বানিয়েছে। বাবা-কি বলেন সত্যি? জেনি-হুম আঙ্কেল ভাবীই সব রান্না করে এখন। বাবা-হুম। সবার নাস্তা খাওয়া শেষ হলে সোফার রুমে গিয়ে বসে।আর আমি সবার জন্য ওখানে চা নিয়ে যাই। সোফায় বসা সবাইকেই আমি চা টা দিলাম।শুধু তন্ময়কে পাশ কাটিয়ে জেনিকে দিলাম। তন্ময়-আমাকে দাও। আমি-আপনার টা রুমে দিয়ে এসেছি না। তন্ময়-আমি তো রুমেই যায়নি।ছাদ থেকে সোজা এখানে চলে এলাম। আমি-নিন।(চা টা এগিয়ে দিয়ে) সাবিয়া-তনু যাও উপরে থাকা চা টা নিয়ে আসো। আমি এবার মায়ের কথায় উপরে গিয়ে চা টা নিয়ে আসারর সময় খেয়াল হলো।আপু আর আদিল ভাইয়ার ফোন নাম্বার তো তন্ময়ের ফোনে সেভ করা।আমি এবার সাথে সাথে তন্ময়ের ফোন থেকে ওদের দুজনের নাম্বার নিয়ে আমার ফোনে সেভ করে নিই আর তন্ময়ের ফোন থেকে ডিলেট করে দিই (নিচে তন্ময়ের থেকেই ফোন নিয়ে নিছি লাম)।আমি এবার নিচে আসি আর নিচে আসার সাথে জেনি আমার কাছে দৌঁড়ে আসে। আমি-কি জেনি এভাবে দৌড়ে আসছে কেনো? জেনি-তোমার নামে পার্সেল এসেছে। আমি-আমার নামে পার্সেল এসেছে? জেনি-হুম ভাবী,ওই যে বড় কার্টন টা। আমি-এটা??(কার্টন এর কাছে গিয়ে) রহমান-হ্যাঁ মাত্র দিয়ে গেলো। তন্ময়-খুলে দেখবে??? আমি-দেখিই না কে পাঠালো। তন্ময়-ওকে আমি খুলে দিচ্ছি। তন্ময় কার্টনটা খুলতে শুরু করলো।কার্টন টা বেশ বড় তাই খুলতে একটু অসুবিধা হচ্ছে।অবশেষে তন্ময় কার্টন টা খুলে আমার দিকে ফিরালো।আমি কার্টনের ভেতরে তাকিয়ে অবাক হয়ে যাই। -চলবে #তন্ময়ের_তনু #পর্ব_১৫ #Jechi_Jahan পার্সেলের বাক্স টা খোলার সাথে সাথেই আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি।বাক্সে আমার অনেক গুলো জামা কাপড় আর জুয়েলারি যেগুলো আমি এই ১৫ দিন পরেছিলাম।এগুলা আদিল ভাইয়া কিনে দিয়েছিল ওখানে।হঠাৎ বাক্সের ভেতরে একটা জিনিস আমার চোখে পরে জিনিস টা চিঠি।তখন তন্ময় বলে--- তন্ময়-এগুলা কি? আমি-জামা-কাপড় আর জুয়েলারি।(ভয়ে ভয়ে) তন্ময়-সেটা আমিও দেখতে পারছি কিন্তু এগুলো পাঠালো কে??? আমি-জানিনা।(ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে) তন্ময়-তোমার নামে এসেছে এগুলা। আমি-জানিনা তো। তন্ময়-Ok!!!! I see..... তন্ময় এবার যেই বাক্সে হাত দিতে যাবে আমি ওমনি বাক্স থেকে চিঠিটা নিয়ে রুমের দিকে দৌড় দিই।আমার এই কাজে উপস্থিত সবাই অবাক। আমি রুমে এসে দরজাটা বন্ধ করে দিই। আমি-এই ড্রেসগুলো কে পাঠাল আমাকে?এগুলা তো আপুর বাসায় ছিলো ওখান থেকে আমায় কে পাঠাতে পারে?না আগে চিঠিটা পরে দেখি। প্রিয় তনু,, আমি জানি তুই এখন তন্ময়ের বাড়ীতে আছিস।হয়তো ভাবছিস আমি কিভাবে জানলাম।সেদিন তোকে না পেয়ে আমি তন্ময়ের ফোনে কল করে ছিলাম।সেদিন কল টা রিসিভ ও হয় বাট তুই কথা বলিস না কথা বলে তন্ময়।আর যতই হোক তন্ময় এর গলা আমি চিনি।সেদিন আর বুঝতে বাকি রইলো না যে তন্ময় তোকে নিয়ে গেছে।এখন যখন তুই ই চলে গেলি তখন এগুলা রেখে গেলি কেনো।তাই আমি এগুলা তোকে কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দিলাম।আমি তো হয়তো আর যেতে পারবো না তাই এগুলা আমার দেওয়া উপহার বা আমার স্মৃতি হিসাবে রেখে দিস। ইতি তোর বদমেজাজি বোন অনু,,,,,, চিঠিটা পরে আমি যেনো এক ধরনের বোকা বনে গেলাম।এসেছি তাই বলে এগুলা পাঠিয়ে দিবে এটা কেমন কথা।আমি তো আর আগের মতো সিঙ্গেল নেই যে এসব কুর্তি,গ্রাউন,টপস ইত্যাদি পরে ঘুরবো আমি তো এখন মেরিড। তন্ময়-তনু।(জোরে দরজা ধাক্কিয়ে) আমি-কি কি।(চমকে উঠে) তন্ময়-দরজা খুলো।(রেগে) আমি-কে কেনো? তন্ময়-বাক্স থেকে কি এনেছো আমি দেখবো। আমি-কিছু আনি নি। তন্ময়-আগে দরজা খুলো। আমি-সত্যি কিছু আনি নি। তন্ময়-আমি দরজা খুলতে বলেছি। আমি-আল্লাহ আমি এখন কি করব?তন্ময় যদি চিঠি টা পড়ে পেলে তাহলে তো আমার কপালে শনি আছে।এখন আমি কি করি?আইডিয়া!!! তন্ময়-তনু দরজা খুলো। আমি-কি???(দরজা খুলে) তন্ময়-কি করছিলে? আমি-কি কিছুন না। তন্ময়-তোতলাচ্ছো কেনো?(সন্দেহজনক চোখে) আমি-ক ক কই? তন্ময়-বাক্স থেকে কি এনেছিলে? আমি-এটা???(কানের দুল দেখিয়ে) তন্ময়-মিথ্যা বলোনা। আমি-আমার বয়ে গেছে। তন্ময়-ফাইজলামি করো? আমি-আমি ফাইজলামি করতে পারিনা। তন্ময়-কানের দুল সহ বাকি জুয়েলারি নিচে বাক্সে আছে।আর শুধু এই দুলটাই তোমার চোখে পরল যেটা কিনা জুয়েলারি বাক্সের বাইরে ছিলো। হাউ ফানি!!! আমি-আমি সত্যি বলছি।দেখুন সুন্দর না?(কানের দুল দুটো দেখিয়ে) তন্ময়-একদম বাজে। আমি-কি???(মনমরা হয়ে) তন্ময়-বাট তোমাকে সুন্দর লাগছে। আমি-তাই?? তন্ময়-হুম!!!এবার সত্যি টা বলো। আমি-কোন সত্যি???(অন্যদিকে ফিরে) তন্ময়-বুঝেছি এভাবে বলবে না রাতে তোমাকে দেখে নেবো।(বলে নিচে চলে গেলো) আমি-(উনি যাওয়ার সাথে সাথে)উপপ খুব বাঁচা বেঁচে গেছি।ভাগ্যিস তখন কানের দুলের আইডিয়া টা এসেছিলো।যাই বাবা নিচে যাই। বাবা-এই এখান থেকে কি নিয়ে চলে গেলি?(আমি নিচে নামার সাথে সাথে এই প্রশ্ন) তন্ময়-Earring..... বাবা-কানের দুল(অবাক হয়ে)কিন্তু কেনো? আমি-খাওয়ার জন্য। আমার এই কথায় জেনি ফিক করে হেসে দেয়। বাবা-মানে? আমি-আরে পরার জন্য বাবা। নিসা-তনু। আমি-হুম ভাবি। নিসা-এই পার্সেল টা কে দিলো বা কেনো দিলো কিছু কি জানো তুমি? আমি-(অনেকক্ষণ ভেবে)আমি ওর্ডার করেছি। তন্ময়-ফাজিল!!!(অন্যদিকে ফিরে) আমি-কি???? তন্ময়-মিথ্যা কেনো বলো হ্যাঁ। আমি-কি মিথ্যা বললাম? তন্ময়-এগুলা একটাও নতুন জামা না শুধু ৪-৫টা জামা বাদে। অভি-তুই কিভাবে জানলি? তন্ময়-দেখলেই বুঝা যায়। আমি-আপনি কচু দেখেন এগুলা আমি নতুনই অর্ডার দিছি। রহমান-আরে তন্ময় তনু এগুলা ওনলাইন থেকে ওর্ডার দিছে।আর তুই তো জানিস অনলাইনে কত কিছু ভুলভাল দিয়ে দেয়।হয়তো তনুর ওর্ডারেও ভুল কিছু দিয়ে দিয়েছে।এটা ব্যাপার নাকি!!!! অভি-হুম তন্ময় হতেও পারে!!! তন্ময়-আচ্ছা ওসব বাদ দাও একটা কথা বলতো। আমি-কি??? তন্ময়-এতোদিন কই ছিলা??? আমি-হুম???? বাবা-হুম বলতো এতোদিন কই ছিলি? আমি-ছিলাম কোথাও একটা!!(জোর করে হেসে) তন্ময়-তো কোথাও টা কোথায়?(সামনে এসে) আমি-কো কো কোথায় মানে হোটেলে। তন্ময়-হোটেলে?টাকা কোথায় পেলে? আমি-ওটাও কোথাও একটা পেয়েছি। তন্ময়-তনু!!!(রেগে) রহমান-তোর বিকাশ থেকে নিয়েছে হয়তো। আমি-হ্যাঁ হ্যাঁ বিকাশ থেকে নিয়েছি। তন্ময়-আমার বিকাশ পিন কোথায় পেলো? রহমান-কোথায় পেলি??? আমি-(বাবা বিকাশের কথা কেন বললে) তন্ময়-তনু আমি আর কোনো মিথ্যা শুনতে চাইনা তুমি এখন যেটা বলবে সেটা যেনো সত্যি হয়। আমি-(কিছুক্ষণ পর)আমি আমার একটা আংটি বিক্রি করেছি আর ওখান থেকেই টাকা পেয়েছি। তন্ময়-তাহলে এটাই সত্য কথা তাহলে এতোক্ষণ মিথ্যা বলছিলে কেনো? তুমি জানোনা আমি মিথ্যা পছন্দ করিনা।(রেগে) আমি-আ আমি ভয় পে পেয়ে গেছিলাম।(নিচের দিকে তাকিয়ে) তন্ময়-ভয় পেয়ে গেছিলা তাইনা।এতোই যখন ভয় পাও ১৫ দিন বাইরে ছিলে কিভাবে।আবার বলতে এসেছে ভয় পেয়ে গেছিলাম।(বলে চলে গেল) আর আমি মনে মনে বেঁচে ফেরার হাঁফ ছাড়ছি। ***দুপুরে*** আমি দুপুরে গোসল করে সবে ওয়াশ রুম থেকে শাড়ির আঁচল গায়ে দিতে দিতে বের হলাম।বের হয়ে খাটের উপর শুয়ে থাকা তন্ময়কে দেখে আমার হাত থেকে শাড়ির আঁচলটা অটোমেটিক পরে যায়।আমি তাড়াতাড়ি করে শাড়ীর আঁচলটা তুলে গায়ে জড়িয়ে নিই।আমাকে এমন করতে দেখে তন্ময় বিরক্ত হয়ে মুখটা ওদিকে ফিরিয়ে নেয় মোবাইল টিপতে টিপতে বলে। তন্ময়-এমন ডং করছো যেনো প্রথম দেখছি।(মোবাইলটা টিপতে টিপতে) আমি-(উনি এখনো কালকে রাতের ঘটনাটা নিয়ে পরে আছে)বেশ করেছি এমন করেছি(বলে দৌড়ে রুম থেকে চলে যেতে লাগলে তন্ময় উঠে আমায় পেছন থেকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে) তন্ময়-কই পালাচ্ছো? আমি-দেখুন কালকে যা হয়েছে সব আমাদের অজান্তে হয়েছে।সো ওটা নিয়ে বেশি ভাববেন না। (ওনার থেকে ছুটার চেষ্টা করে) তন্ময়-তনু আমি একটা জিনিস জানি। আমি-কি জানেন? তন্ময়-তোমার একটা সিকরেট বিষয়। আমি-কি সিকরেট?(ওই ব্যাপারে যেনো না হয়) তন্ময়-এই যে তোমার.... আমি-এই যে আমার.......? তন্ময়-এই যে তোমার সুরসুরি আছে।(বলার সাথে সাথে আমাকে সুরসুরি দিতে লাগলো) আমি-(এমন করায় আমি বোকা বনে যাই)তন্ময় ছাড়ুন আমাকে(বলে একটা ধাক্কা দিই আর এক ধাক্কার সাথেই উনি বিছানায় গিয়ে পড়লেন) তন্ময়-তুমি আমাকে ধাক্কা দিলে। আমি-বেশ করেছি(বলে নিচে এলাম) সাবিয়া-কি ব্যাপার তনু আবার গোসল করলে? আমি-রান্না করার সময় গায়ে মসলা পরে গিয়ে.... সাবিয়া-বুঝেছি বুঝেছি!!!আসো টেবিলে খাবার গুলো নিয়ে যাই। আমি-হুম।(খাবার গুলো টেবিলে এনে) সাবিয়া-তনু আজ তুমিও বসে যাও। আমি-না মা আপনারা আগে খেয়ে নিয়েন। সাবিয়া-পাগলি.(মাথায় হাত বুলিয়ে) আমি-মা!!!! সাবিয়া-হুম। আমি-আপনি আমার আপুকে তন্ময়ের জন্য খুব বেশি পছন্দ করেছিলেন তাইনা? সাবিয়া-তা তো করেছিলাম..... তন্ময়-মা খেতে দাও(হুট করে এসে) সাবিয়া-তনু ওকে খাবার টা দাও আমি বাকিদের ডেকে আনছি।(বলে উপরে চলে গেলো) আমি-ঠিক আছে। আমি এবার তন্ময়কে খাবার বেড়ে দিতে লাগলাম কিন্তু আমি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখলাম তন্ময় আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। আমি-এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? তন্ময়-সব শুনেছি আমি?? আমি-কি শুনেছেন??? তন্ময়-এই যে মা আপনি আমার আপুকে তন্ময়ের জন্য খুব বেশি পছন্দ করেছিলেন তাইনা এইটা। (মুখ ভেঙ্গিয়ে কথাটা বললো) আমি-মিথ্যা কি বললাম? তন্ময়-আমার স্ত্রী হয়ে থাকতে যদি তোমার কোনো অসুবিধা হয় আমাকে বলে দিও। আমি-বলে দিলে কি হবে? তন্ময়-কিছুই হবেনা সেই আমার স্ত্রী হয়েই থাকতে হবে।(বলে মন দিয়ে খেতে শুরু করলো।ওনার খাওয়া শুরু হতেই একে একে সবাই এসে খেতে বসে।প্রথমে তন্ময় আর জেনি খেয়ে উঠে যায় আর তারপর অভি ভাইয়া।আমি আর ভাবি সবার শেষে খেয়ে জেনির রুমে চলে যাই ) আমি-জেনি।(রুমের সামনে দাঁড়িয়ে) জেনি-ওহ এসেছো আসো আসো। নিসা-কি হয়েছে এতো খুশি? জেনি-আরে কিছুনা। আমি-কিছু তো একটা আছে বলো বলো। জেনি-তোমার সাথে অনেকদিন পর গল্প করবো তাই আমি এত খুশি হয়েছে। আমি-ও তা কি গল্প করবে? জেনি-তোমার তিন বছর আগের এক্স এর। নিসা-জেনি এসব কি বলো না বলো। জেনি-না ভাবী বলো প্লিজ। আমি-আর কি বলবো ওই দিন তো সবই বললাম সাথে তোমার ভাইয়ার সামনে ধরাও খেলাম। জেনি-আরে আজ কিছু হবেনা। আমি-ওকে বলো কি জানতে চাও? জেনি-তোমাদের রিলেশন চলাকালীন কি কিছু হয়েছে? নিসা-জেনি এসব কি?? আমি-মানে? জেনি-আরে ফাস্ট কিস। আমি-আরে না না আমাদের রিলেশন এ এমন কিছুই ছিলো না। জেনি-ওকে তাহলে অন্য কিছু তো থাকতে পারে? আমি-শুধু হাত ধরা ছিলো. জেনি-এমনও হয়। আমি-আমাদের ভালোবাসা টা এমন ছিলো না জেনি যে শরীল দিয়ে ভালোবাসা প্রমাণ করতে হবে।আমাদের ভালোবাসা টা খুব পবিত্র ছিলো। নিসা-এতোই পবিত্র হলে চলে গেলো কেনো? আমি-সেটা তো আমারও কথা ভাবী যে চলে গেল কেনো।আজ পর্যন্ত এটাও বুঝতে পারিনি যে দোষটা কি ছিলো যার কারণে এভাবে চলে গেল। জেনি-ভাবী এটা নিয়ে তুমি মন খারাপ করো না। নিসা-এই তুমি কাঁদছো নাকি? আমি-না ভাবী কাঁদছি না ভাবছি। জেনি-কি ভাবছো। আমি-যেখানে আমার ভালোবাসা টা আমাকে না মেনে চলে সেখানে তন্ময় আমাকে সারাজীবনের জন্য কিভাবে মানবে? জেনি-ভাবী। তন্ময়-Stop this nonsense..... আমি-তন্ময়।(পেছনে ঘুরে) তন্ময়-জেনি তোর ভাবীকে বলে দে যে তার তিন বছর আগের এক্স এর কথা যেনো এবাড়িতে আর না উঠে।সাথে এটাও বলে দে যে তার এক্স আর আমাকে একসাথে মিলিয়ে আমার উপর যেনো আর কোনোদিন সন্দেহ না করে।(বলে রুম থেকে চলে গেলো।কিন্তু এদিকে তন্ময়কে দেখে আমি ভয় একবারে চুপসে যাই) -চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে