#জল্লাদ বয়ফ্রেন্ড❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ (রোজ)
#পর্ব- ১৪
নিরব রাগী লুকে বললো।”
—-” এই তোদের এত বড় সাহস? আমার এত সুন্দর কোকিলের গলাকে। তোরা ২জন কাক আর হুতুম পেঁচা বললি?”
আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,
—-” হ্যা বললাম তো?”
নিরব মুখটা বাঁকিয়ে বললো!”
—-” তাহলে শোন কান খুলে। তোর গলা হচ্ছে কাকের গলা। আর আমার ভাইয়ার গলা হচ্ছে হুতুম পেঁচার গলা হু,
আমি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললাম।”
—-” কি বললে তুমি? আমার গলা কাকের গলার মত? শোনো কোকিলের গলাও। আমার গলার কাছে হার মানবে হু,
শুভ্র বিরবির করে বললো!”
—-” হোয়াট এ গ্রেট চপ,
আমি রাগী গলায় বললাম।”
—-” কি বললে তুমি?”
শুভ্র দাত কেলিয়ে বললো,
—-” শুনলেই তো নাকি?”
আমিও হেসে বললাম!”
—-” বলতেও তো পারো না। ওটা চপ না ঢপ হবে,
নিরব গিটারটা রেখে বললো।”
—-” সে তোদের গলা যাই হোক। আমার এমন কোকিলের গলাকে। তোরা আর কখনো কাক, বা হুতুপ পেঁচা বলবি না হু। তাহলে তোদেরকে মেরে আমি আচার বানাবো,
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই বললো!”
—-” ও না রোজকে মারা যাবে না। আফটার অল বাচ্চার মা বলে কথা। কিন্তুু ভাইয়া তোকে মেরে আচার বানিয়ে। সেই আচার আমি তোর বউকে খাওয়াবো,
শুভ্র শার্টের হাতা ফোল্ট করতে, করতে বললো।”
—-” কি, কি বললি তুই?”
নিরব দাত কেলিয়ে বললো,
—-” এরকম আরো মজার, মজার জোকস শুনতে চাইলে। আপনারা নিরব চৌধুরীর সাথেই থাকুন!”
সবাই ছাদ কাঁপিয়ে হেসে দিলো। নিরব গাল ফুলিয়ে বসে রইলো। শুভ্র টেডি স্মাইল দিয়ে বললো,
—-” গুড জোকসই মনে করবি।”
এরমাঝে মামনি ডেকে বললো রান্না শেষ। তাই আমরা সবাই নিচে নেমে এলাম। ওরা চেঁচামেচি করতে ওস্তাদ কি না। তাই এক একজন চেঁচামেচি করছে। আমি কোমরে হাত দিয়ে বললাম,
—-” এই তোমরা ফ্লোরে বসে খাও!”
শুভ্রর ফ্রেন্ড নওশাদ ভাইয়া বললো,
—-” কামঅন ব্লাক রোজ। এটা কিন্তুু ভারী অন্যায়।”
নিরব সোফায় বসতে, বসতে বললো,
—-” আরে ওর কথা কেন শুনছো?”
নিরবের ফ্রেন্ড রাজ বললো!”
—-” বিকজ উনি আমাদের ভাবী,
আমি হেসে দিয়ে বললাম।”
—-” রাইট এইতো রাজ ভাইয়া বুঝেছে,
মামনি বিরিয়ানি এনে সবাইকে দিলো। সবাই সেটা নিয়ে সোফায় বসলো। ভাইয়া বিরিয়ানি খেতে, খেতে বললো!”
—-” স্যাড ফর ব্লাক রোজ। বেচারীর কথা কেউ শুনলো না,
শুভ্রও তালে তাল মিলিয়ে বললো।”
—-” ঠিক বলেছিস রোদ। আমার বউয়ের জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। ওর কথা কেউ শুনলো না? পোর রেড রোজ,
আমি ভেংচি কেটে বসে রইলাম। একটুপর মামনি এসে আমাকে খাইয়ে দিলো। খাওয়া, দাওয়া শেষে রাজ ভাইয়া। আর নওশাদ ভাইয়া চলে গেলো। আর আমরা যে যার রুমে চলে এলাম। পরেরদিন সকালে দেখি নিরব সোফায় বসা। মুখটা বাংলার পাচের মতো করে রেখেছে। কিচেন থেকে চা নিয়ে ওর পাশে বসে বললাম!”
—-” কি হয়েছে? মুখটা এমন করে আছো কেন?”
নিরব দাত কিড়মিড় করে বললো,
—-” গার্লফ্রেন্ড একটা প্যারা।”
আমি চোখ বড়, বড় করে বললাম,
—-” মানে?”
নিরব জোরে শ্বাস নিয়ে বললো!”
—-” তার আগে বল ভাইয়ার সাথে তোর বিয়ে হলো কি করে?”
আমি আমতা আমতা করে বললাম,
—-” কেন?”
তখনি শুভ্র এসে ফোড়ন কেটে বললো।”
—-” আমি বলছি,
নিরব ঠিক হয়ে বসে বললো!”
—-” হারি আপ বল,
শুভ্র এক, এক করে সব বললো। সব শুনে নিরব হা করে চেয়ে রইলো। শুভ্র আর আমি একে অপরের দিকে তাকাচ্ছি। নিরব কিছুক্ষণ পর চেঁচিয়ে বললো।”
—-” পেয়েছি আইডিয়া,
শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো!”
—-” কেমন আইডিয়া?”
নিরব কাঁচুমাচু হয়ে বললো,
—-” কিছু না।”
আমি রেগে বললাম,
—-” এই ফাজিলটা সব বলেনি। জানো ও আমার মুখে বরফ দিয়েছিলো। আমি কি লাফানো লাফিয়েছিলাম!”
নিরব ওদিক তাকানো ছিলো। এবার আমার দিকে ঘুরে বললো,
—-” কি মরিচের গুড়া ছিলো নাকি?”
আমি না বলতে গেলে শুভ্র বলে উঠলো।”
—-” হ্যা, হ্যা মরিচের গুড়া,
আমি আবার বলতে গেলেই। শুভ্র আমাকে নিয়ে চলে এলো। আমি রুমে এসে চোখ ছোট, ছোট করে বললাম!”
—-” নিয়ে এলে কেন?”
শুভ্র মুচকি হেসে বললো,
—-” নাহলে খেলা দেখবো কি করে?”
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললাম।”
—-” মানে কি হ্যা?”
শুভ্র রাগী লুকে বললো,
—-” চুপ থাকতে পারো না?”
আমি গাল ফুলিয়ে বসে রইলাম। বিকেলে নিরবের ডাক শুনে নিচে এলাম। নিচে এসে দেখি নিরবের সাথে একটা মেয়ে। মামনি এগিয়ে গিয়ে বললো!”
—-” ও কে?”
নিরব হেসে বললো,
—-” আম্মু ও আমার ফ্রেন্ড শাওরিন।”
শাওরিন দাত কেলিয়ে বললো,
—-” জ্বি না আম্মু আমি ওর গফ। হি হি আপনাদের বাড়ির ছোট বউ!”
মামনি ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” নিরব ও এসব কি বলছে?”
আমি মেয়েটাকে দেখছি। একটা শর্ট টপস পড়া। টপসটা হাটু পর্যন্ত। তবে চেহারায় একটা মায়া আছে। আমি মুচকি হেসে বললাম।”
—-” তোমার বাড়ি কোথায়?”
শাওরিন আবারো দাত কেলিয়ে বললো,
—-” এটাই আমার বাড়ি ভাবী!”
আমি হা করে তাকিয়ে আছি। মামনি বিরবির করতে করতে চলে গেলো। মামনি যেতেই নিরব ঠাস করে শাওরিনকে থাপ্পর মারলো। আমি আর শুভ্র হা করে তাকিয়ে আছি। শাওরিন গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। নিরব একটা ভাব নিয়ে বললো,
—-” তোকে বলেছিলাম না? আমি যা বলবো তাই শুনবি? নাহলে আবার লন্ডন পাঠিয়ে দেবো।”
আমি নিরবকে বললাম,
—-” মানে?”
নিরব সোফায় বসে বললো!”
—-” ওর বাবা, মা লন্ডনে আছে। লন্ডনেই ওর সাথে আমার পরিচয়। ওরা বাংলাদেশী বাট লন্ডনে থাকে। কিন্তুু এই মহারানী আমাকে না জানিয়ে। আমার জন্য আজকে চলে এসেছে,
শুভ্র ভ্রু নাচিয়ে বললো।”
—-” তোর জন্য মানে?”
নিরব আমতা, আমতা করে বললো,
—-” ও আমার গার্লফ্রেন্ড!”
আমি শাওরিনকে রুমে নিয়ে এলাম। মেয়েটা খুব মিশুক আছে। ওকে রুম দেখিয়ে আমি আমার রুমে আসতেই শুভ্র বললো,
—-” নিরব কি করতে চাইছে?”
আমি বিছানায় বসে বললাম।”
—-” যেহেতু তোমার ভাই। ভাল কিছু যে করবে না সেটা সিওর থাকো,
পরেরদিন সকালে মামনিকে বলেছি। শাওরিন নিরবের বেস্ট ফ্রেন্ড। তাই মামনি এটা নিয়ে কিছু বলেনি। মামনি কিচেনে রান্না করছে। আমি আর শুভ্র বসে আছি। নিরব হাতে কি নিয়ে যেন ঘুরছে। সেটা দেখে আমি বললাম!”
—-” তোমার হাতে কি?”
নিরব মুখ বাঁকিয়ে বললো,
—-” সেটা জেনে তুই কি করবি?”
বেদ্দপ বলে বসে রইলাম। এরমাঝে শাওরিন এলো নিচে। নিরব দাত কেলিয়ে শাওরিনের কাছে গেলো। গিয়েই ওর মুখটা চেপে মুখে কি যেন ঢুকিয়ে দিলো। সাথে, সাথে শাওরিন লাফানো শুরু করলো। আমি বসা থেকে উঠে বললাম।”
—-” ও এমন করছে কেন? কি দিয়েছো ওর মুখে?”
নিরব দাত কেলিয়ে বললো,
—-” গুড়া মরিচ দিয়েছি। বিকজ নেক্সট জল্লাদ বয়ফ্রেন্ড আমি তাই!”
আমি আর শুভ্র হা করে তাকিয়ে আছি। আমি নিরবের কাছে গিয়ে বললাম,
—-” আরে বলদের দোকান। শুভ্র আমার মুখে গুড়া মরিচ না বরফ দিয়েছিলো।”
নিরব চোখ বড়, বড় করে বললো,
—-” কি বলছিস?”
শুভ্র হাসতে, হাসতে বললো!”
—-” হ্যা,
নিরব মুখে হাত দিয়ে বললো।”
—-” হায় আল্লাহ,
এরপর দৌড়ে কিচেনে গেলো। এক জগ পানি এনে শাওরিনের মাথায় ঢেলে দিলো। শাওরিন লাফানো বাদ দিয়ে। হা করে নিরবের দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্রর তো হাসতে, হাসতে গড়াগড়ি টাইপ অবস্থা। আমিও কতক্ষণ ওদেরকে দেখে। ফিক করে হেসে দিলাম!”
#চলবে…