কুহেলিকা পর্ব-১৬

0
725

#কুহেলিকা (পর্ব-১৬)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

আকাশ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দু’কদম সামনে এগোতেই দেখে দিশা বালিশের পাশ থেকে পিস্তলটা নিয়ে আকাশের দিকে নিশানা করে বলে,

–‘অনেক পাখনা গজিয়েছে তোর। এবার তোর ষোলোকলা পূর্ণ হয়েছে আকাশ। এখন তোকে মরতে হবে আমার হাতে। ডাকাতের দলের মতন তোর ও সময় হয়ে এসেছে উপরে যাওয়ার।’

দিশার এমন অদ্ভুত আচরণ দেখে আকাশের হাত থেকে টাওয়াল টা ফ্লোরে পড়ে যায়। দিশার আচরণে আকাশ এতোটাই অবাক হয়, যে সে দিশার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে! মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা দিশার এই ভয়ানক রূপ আকাশের চেহারার রং পরিবর্তন করে দিয়েছে। আকাশ বুঝেই উঠতে পারছে না দিশা তার কোন কালের শত্রু। সে তো এই মেয়ের কোনো ক্ষতি করেনি কখনো। তাহলে দিশা হুট করে এভাবে নিজের রূপ পরিবর্তন করে নিলো কেন। কি চায় সে তার থেকে। আকাশ দিশার দিকে তাকিয়ে ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অমন সময় দিশা একটু জোরে চেঁচিয়ে আকাশকে বলে,

–‘মৃত্যুকে সামনে দেখে ভয় হচ্ছে বুঝি তোর?’

দিশার কথায় আকাশ ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এসে দিশাকে প্রশ্ন করে,

–‘দিশা আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?’

–‘কেন মনে নেই তোর?’

–‘নাহ আমার তো কিছুই মনে পড়ছে না।’

–‘জীবনে এতো পাপ করেছিস যে নিজের পাপের হিসেব নিজের কাছেই নেই। তবে তুই টেনশন করিস না একদম। তুই আমার সামনে এসে দাঁড়া। তারপর আমি তোর কপালে গুলির নল ঠেকিয়ে ধরলে সব মনে পড়ে যাবে।’

আকাশ চুপচাপ দিশার কথা শুনে তার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দিশার কথাবার্তা এবং তার আচরণে আকাশ একের পর এক অবাক হয়েই যাচ্ছে। তবে তার উত্তর জানা প্রয়োজন। যদি সে সত্যিই কোনো ভুল করে থাকে, তাহলে দিশার হাতে মরলেও তার কোনো আপত্তি নেই। সেজন্য সে চুপচাপ দিশার কথা মতন তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আকাশ দিশার কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই দিশা আকাশের কপালে গুলির নল ঠেকিয়ে বলে,

–‘এবার ভাবতে শুরু কর কি করেছিস তুই। দেখবি ঠিকই মনে পড়ে যাবে। তবে যদি এরপরেও মনে না পড়ে, তাহলে আমিই তোকে মনে করিয়ে দিব। আর তার সঙ্গে উপরের টিকিট কেটে দিব।’

আকাশ ভাবতে শুরু করে সে কি করেছে। ভাবতে ভাবতে অতীতের সমস্ত ফ্লাসব্যাকের কথা সে ভাবতে শুরু করে। নিজের পুরাতন হিষ্ট্রি ঘাঁটতে শুরু করেছে আকাশ। লাইফে সে বহু কিছুই করেছে। একেক করে সব কিছু মনে করতে থাকে। কিন্তু দিশার ব্যাপারে কোনো কিছুই মনে করতে পারে না। আকাশ মিনিট দশেক ভাবনায় কাটিয়ে দিয়েছে। তবে কোনো উত্তর সে খুঁজে পায়নি। সেজন্য সে দিশাকে বলে,

–‘দিশা তোমাকে কেন্দ্র করে আমার কোনো কিছুই মনে পড়ছে না। তুমি প্লিজ নিজেই আমাকে বলে দাও আমি কি করেছি। তারপর না হয় আমায় মেরে ফেলো।’

আকাশের কথায় দিশা ফিক করে একটা হাসি দিয়ে আকাশকে বলে,

–‘আমায় জড়িয়ে ধরুন জলদি। না হয় গুলি করে খুলি উড়িয়ে দিব।’

আকাশ তাজ্জব হয়ে যায় দিশার কর্মকান্ড দেখে। তবে সে তাজ্জব হলেও দিশার কথাকে মেনে নিয়ে তাকে কোনো ভাবে জড়িয়ে ধরে। আকাশ দিশাকে জড়িয়ে ধরতেই দিশা পিস্তলটা যেই জায়গা থেকে নিয়েছে সেই জায়গায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। দিশার এই অদ্ভুত কান্ডকারখানা দেখে আকাশ দিশাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘এটা কি হলো দিশা? আর পিস্তলটা ফেলে দিলে যে?’

আকাশের কথা শুনে দিশা হাসতে হাসতে আকাশের হাত নিয়ে গিয়ে তার পেটের উপরে রেখে নিজের শরীরে নিজেই আকাশের হাত দিয়ে স্পর্শ করাতে থাকে। এরপর আকাশকে বলে,

–‘আপনি কোনো কিছু করলেই তো আপনার মনে হবে। আপনি তো কোনো কিছুই করেননি। অহেতুক আপনি হাজার চেষ্টা করলেও তো কাজ হবে না।’

–‘মানে কি দিশা?’

–‘মানে হলো আমার প্রচন্ড রাগ এবং নিজের উপরে ঘৃণা হচ্ছে। এজন্য আমি নিজের রাগকে দমিয়েছি আপনাকে আবোল-তাবোল হুমকি দিয়ে। এখন আমার রাগ পুরোপুরি কমে গেছে। তবে এখনো ঘৃণাটা কমেনি নিজের উপরে। কারন আপনি যেই ডাকাতের দলকে উপরে পাঠিয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে একজন আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল। ঐ সিনটা আমার মনে পড়লেই কেমন যেনো লাগে।’

দিশার কথা শুনে আকাশের চরম মাত্রায় রাগ উঠে যায়। কিন্তু সে নিজেকে সামলে নিয়ে দিশাকে ছেড়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। আকাশ দিশাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে দাঁড়াতেই দিশা আকাশকে বলে,

–‘আকাশ সাহেব প্লিজ আমায় জড়িয়ে ধরুন। আপনার উষ্ণতা প্রয়োজন আমার৷’

–‘দিশা সেটা তুমি অন্য ভাবে আদায় করতে পারতে। এমনটা করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তোমার এমন আচরণে যানো আমার ভিতরটা পুরো দলা পেকে গেছে?’

–‘আকাশ সাহেব আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো এমনটা করবো না। এবার আপনি আমায় জড়িয়ে ধরুন। আমার প্রচন্ড ঘৃণা হচ্ছে নিজের উপরে। মনে হচ্ছে যেনো সেই লোকটা এখনো আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। কেমন যেনো লাগছে নিজেকে নিজের কাছে। প্লিজ আপনি আমায় জড়িয়ে ধরে আমার ভিতর থেকে সেই বাজে মনোভাব টাকে দূর করে দিন। না হয়তো আমি স্বস্তিতে থাকতে পারবো না।’

দিশার অদ্ভুত কর্মকান্ডের পিছনের আসল রহস্য জেনে আকাশের রাগ হাওয়া হয়ে যায়। তবে সে দিশাকে আর জড়িয়ে ধরে না। ঘাপটি মেরে আগের মতোই দাঁড়িয়ে থাকে। আকাশের নিরবতা দেখে দিশার আরো অস্বস্তি লাগতে শুরু করে। তার পক্ষে এভাবে থাকা আর সম্ভব না। নিজেই গিয়ে আকাশকে আবার জড়িয়ে ধরে পাগলামো করতে শুরু করে। দিশার পাগলামো দেখে আকাশ দিশাকে বলে,

–‘দিশা তুমি নিজে আমায় এভাবে স্পর্শ করলে তোমার অস্বস্তি কোনোদিন ও দূর হবে না। তোমার অস্বস্তি দূর হবে আমি তোমায় কাছে টানলে। আমার স্পর্শই তোমার অস্বস্তিকে দূর করতে পারবে।’

–‘তো টানছেন কেন কাছে আমায়? নিন না আমায় কাছে টেনে। আমি তো শুধু আপনার। আমার সমস্ত কিছুই তো আপনার জন্য উন্মুক্ত। আপনাকে তো বাঁধা দেওয়ার মতন কেউ নেই। তাহলে কেন আমায় কাছে টানছেন না? তাহলে কেন আমার অস্বস্তিকে দূর করছেন না? আপনি কি বুঝতে পারছেন না, যে আমি আপনার ঘনিষ্ট হতে চাচ্ছি? আপনি কি বুঝতে পারছেন না আমি আপনার ঐ লাল টুকটুকে ঠোঁট জোড়া দিয়ে আমার সারা শরীরে স্পর্শ করাতে চাচ্ছি? আপনি কি বুঝতে পারছেন না আমি আপনার সাথে একদম পুরোপুরি মিশে যেতে চাচ্ছি? তাহলে কেন এমন রোবটের মতন দাঁড়িয়ে আছেন? নিন আমায় স্পর্শ করুন। ডুব দিন আমার মাঝে। আমি আর পারছি না আপনার থেকে দূরে সরে থাকতে। আমার আপনাকে চাই।’

–‘দিশা তোমার কি কি চাই সব আমি বুঝতে পেরেছি। তবে আমি একটা জিনিস ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পারছি না! দিশা এটা তোমার কেমন চাওয়া, যে তুমি ঘৃণা কমাতে আমার সাথে ঘনিষ্ট হতে চাইছো? তাও আবার পুরোপুরি আমার মাঝে ডুব দিয়ে?’

–‘জানি না এটা আমার কেমন চাওয়া! আমি খালি এটুকুই জানি আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ হলে আমার সব কিছুই বেঁচে যাবে।’

–‘সব কিছু বেঁচে যাবে মানে বুঝলাম না।’

–‘মানে টা খুবই সহজ। আমার লাইফে একটার পর একটা ঝামেলা হয়েই চলেছে। আমি আগে যেমন এই ছিলাম না কেন, আপনার স্পর্শে আমার শরীর পবিত্র হয়েছে। তাই আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনাকে নিজের সব টুকু বিলিয়ে দিলে আমি পুরোপুরি সুরক্ষিত থাকবো। আপনার আমানতের বরখেলাপ কখন হয় সেই ভয়ে থাকি আমি। সেজন্য আপনি যদি আমায় ঐ ভাবে কাছে টেনে নেন, তাহলে আমার আর কোনো ভয় থাকবে না। পরবর্তীতে কিছু হলেও মনে হবে আমার শরীরের আসল অংশীদার এই আমাকে প্রথম স্পর্শ করেছে। তাই আপনি এবার আমায় পুরোপুরি ভাবে নিজের কাছে টেনে নিন। না হয় আমি কিন্তু খুব খারাপ কিছু ঘটিয়ে ফেলবো। আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না আপনার জন্য নিজেকে সামলে রাখা। একেকবার একেকজন এসে আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করছে। কবে জানি আমায় অন্য কেউ জোর করে বিছানার সঙ্গী বানায়। এর চাইতে ভালো আপনার আমানত আপনি বুঝে নিন।’

দিশার সমস্ত কথাবার্তা শুনে আকাশ দিশাকে কাছে টেনে নিয়ে তার কপালে কয়েকটা চুমু একে দেয়। পরবর্তীতে দিশাকে বুকে টেনে নিয়ে বলে,

–‘তুমি আমার আছো আমারিই থাকবা। আমি থাকতে তোমার শরীরে কোনোদিন কেউ স্পর্শ করতে পারবে না। নিজের সব টুকু দিয়ে আমি তোমায় রক্ষা করবো। এবার ভয়ের মাত্রাটা কমিয়ে খেতে চলো। অনেক হয়েছে অহেতুক কথাবার্তা। তোমার ঔষধের সময় হয়ে এসেছে। খাবার খেয়ে তোমার আবার ঔষধ খেতে হবে।’

–‘একটু কাছে টেনে নিলে কি এমন হবে? এমন করেন কেনো আপনি? আমি নিজ থেকে আপনাকে ধরা দিচ্ছি আর আপনি দূরে পালাচ্ছেন? এমন কেন আপনি?’

–‘দিশা সময় হলে তোমার ইচ্ছে আমি নিজেই পূরণ করবো। এখনো সঠিক সময় আসেনি। সঠিক সময়টা আসতে দাও।’

–‘ঠিক আছে চলেন খেয়ে নেই।’

আকাশ দিশাকে দমিয়ে খাবার টেবিলে নিয়ে বসে খাবার খেতে। দু’জনে মিলে কিনে আনা বিরিয়ানি গুলো খেয়ে রুমে চলে আসে। আকাশ রুমে এসে দিশাকে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে সঙ্গ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরের দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বাহির থেকে দু’জনের জন্য নাস্তা কিনে আনে। আকাশ নিজের ভাগের নাস্তা টুকু খেয়ে চটজলদি রেডি হয়ে দিশাকে বলে,

–‘দিশা তোমার নাস্তা টেবিলে রাখা আছে। নাস্তা খেয়ে ঔষধ গুলো টাইমলি খেয়ে নিও। আমি অফিসে চলে যাচ্ছি। দুপুরে বাড়ি ফিরে আসবো। আর সঙ্গে করে দু’জনের খাবার ও নিয়ে আসবো। তুমি বাড়িঘর ভালো ভাবে আঁটকে ভিতর থেকে বসে থাকবে। আমি আসা পর্যন্ত কেউ ডাকলেও দরজা খুলবে না। আর ভুলে তুমি নিজেও কোথাও যাবে না।’

–‘আচ্ছা।’

আকাশ দিশাকে একা বাড়িতে রেখে অফিরে চলে যায়। চার ঘন্টা অফিসে কাটিয়ে একটার দিকে অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় চলে আসে। বাসায় আসার মাঝপথে দু’জনের জন্য খাবার নিয়ে নিয়েছে। বাসায় এসে দরজার কলিংবেল চাপতেই দিশা এসে দরজা খুলে। আকাশ ঘরে প্রবেশ করে দিশা সহ নিজেদের রুমে চলে যায়। বেশ টায়ার্ড লাগছে আকাশের। শার্টের বোতাম খুলে পাখার নিচে বসে। এমন সময় দরজার কলিংবেল আবার বেজে উঠে। আকাশ বসা থেকে উঠে কে আসছে দেখতে যাবে, কিন্তু দিশা তাকে আঁটকে দিয়ে বলে,

–আপনি পাখার নিচে বসে থাকেন। এমনিতেই অফিস করে টায়ার্ড হয়ে এসেছেন। আমি গিয়ে দেখছি কে এসেছে।’

–আচ্ছা।’

দিশা আকাশকে বসিয়ে রেখে বাড়ির মেইন দরজায় চলে যায় কে আসছে দেখার জন্য। মেইন দরজার গিয়ে যেই না দরজা খুলেছে, এমনিই প্রভা দিশাকে ধাক্কা দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে দিশার উপরেই চেঁচাতে আরম্ভ করে।

–‘এই তুই এখানে কি করছিস? আর আকাশ কোথায়?’

–‘আপনাকে কেন বলবো আমি এখানে কি করছি? আপনি কে যে আপনাকে আমার জওয়াব দিতে হবে?’

–‘ঠিক আছে আমি আকাশকেই প্রশ্ন করবো। আকাশ কই আছে সেটা বল। আজকে ওর একদিন কি আমার একদিন।’

–‘আপনি উনার কিছুই করতে পারবেন না। আর উনি ঐ যে উপরের রুম টাতে আছে।’

–‘আমি কি করতে পারি সেটা একটু পরেই দেখতে পারবি।’

প্রভা দিশাকে দেমাগ দেখিয়ে আকাশের রুমের দিকে তেড়ে যায়। দিশাও প্রভার পিছনে পিছনে রুমে গিয়ে হাজির হয়। প্রভা রুমে প্রবেশ করা মাত্রই আকাশের কলার ধরে চেঁচিয়ে বলতে থাকে,

–‘এই হারামজাদা প্রভা এই বাড়িতে কি করছে? আমি শুনলাম তুই নাকি গতকাল তাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছিস। কি করছিস তোরা দু’টো এক সাথে? কে চলছে তোদের মাঝে?’

প্রভার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে আকাশ। কারন প্রভার সাথে কথা বলতে কোনো প্রকার রুচি হচ্ছে না আকাশের। দিশা দেখে হয়তো সে তার বাড়িতে প্রবেশ করতে পেয়েছে। যদি দিশার জায়গায় আকাশ দরজা খুলতে যেতো, তাহলে হয়তো প্রভা বাড়িতেই প্রবেশ করতে পারতো না। আকাশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আকাশের চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা থেকে প্রভা রেগে গিয়ে আকাশের শার্ট আরো জোরে টান ধরে আকাশকে বলে,

–‘আমার প্রশ্নের উত্তর দে আকাশ। তুই ওর সাথে গতকাল থেকে কি কি করেছিস? আমি সব কিছু জানতে চাই।’

আকাশ এবারো চুপ। কিন্তু দিশার রাগ উঠে যায় প্রভার আচরণে। তার সামনেই প্রভা আকাশের কলার চেপে ধরে তাকে শাসাচ্ছে। দিশা এই দৃশ্যটা সহ্য করতে না পেরে গিয়ে জোরপূর্বক প্রভা থেকে আকাশকে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর উচ্চস্বরে প্রভাকে বলে,

–‘উনার গায়ে হাত দিলে হাতের কব্জি সহ কেটে ফেলবো বলে দিলাম। আর আপনার উত্তর জানতে হলে আমি দিচ্ছি আপনাকে উত্তর।’

–‘হ্যাঁ..হ্যাঁ বল কি কি করেছে সে গতকাল থেকে তোর সাথে।’

–‘বলছি কিন্তু লজ্জা পেলে আমায় দোষারোপ করতে পারবেন না।’

–‘হ্যাঁ তুই খালি বল সে তোর সাথে কি কি করেছে। তারপরে কি হবে সেসব তুই আমার উপরে ছেড়ে দে।’

–‘তাহলে শুনেন। উনি গতকাল রাতে আমায় নিজের হাতে শাড়ী পড়িয়ে দিয়ে সেই শাড়ী গভীর রাতে উনি নিজেই খুলেছে। আমার বক্ষবন্ধনীর মাঝ বরাবর যেই গভীর খাঁজ আছে সেখানে চুমু খেয়েছে। আমার আলতো পিঠে জড়িয়ে ঠোঁটে, কপালে, ঘাড়ে এমনকি আমার নাভীর গভীর খাদে অগণিত চুমু একে দিয়েছে। এছাড়া আরো উনি উনার পুরুষত্বের পৌরষ আমার দেহে চালান করে বংশ প্রদীপের রেজিস্ট্রি করেছে। আরো শুনবেন? শুনতে চাইলে বলছি। আমার বলতে আপত্তি নেই।’

–না,না,না আমি আর শুনতে চাই না কিছু। আমার কান ফেটে যাবে এর চেয়ে আর বেশি কিছু শুনলে। আমি এখন তোদের ঘর থেকে চলে যাচ্ছি। তবে তোদের দু’টোকে আমি পরে দেখে নিব।’

প্রভা দিশার কথাবার্তা শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যায়। প্রভা আর সহ্য করতে পারছিলো না আকাশ আর দিশার গোপন কথপোকথন। সেজন্য তাড়াহুড়ো করে প্রভা ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যায়। প্রভার এমন আচরণে দিশা শব্দ করে হাসতে আরম্ভ করে। কিন্তু দিশা জানে না প্রভার ভিতরে সে দাবানলের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। যেই দাবানলের আগুনের উত্তাপে পরবর্তীতে তাদের দুটোকেই জ্বলতে হবে….

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে