একজোড়া চড়ুই পর্ব-১৭

0
1370

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_১৭
#Writer_Afnan_Lara
?
মানে কি এসবের!
.
মানেটা সহজ,মানে হলো আমি ইতিকে বিয়ে করছি না,আমি তোমাকে বিয়ে করবো,কাল আবারও আসবো মা বাবাকে নিয়ে এই বাসায়
.
ইতি আপু!
.
তার কথা ভেবো না,তার জন্য আমি রিয়ানকে রেডি করে রেখেছি
.
মানে রিয়ান ভাইয়া কি করে?উনার তো বিয়ে হয়ে গেছে তাই না?
.
রিয়ান বিয়েটা করেনি,সে এখনও ইতিকে ভালোবাসে আর ইতির এমন বদল দেখে সে ইতিকে একসেপ্ট করতে ইচ্ছুক
.
বাহ!!এটা তো দারুন খবর!!
ছোঁয়া খুশি হয়ে শ্রাবণের দিকে তাকাতেই দেখলো শ্রাবণ চোখটা লাল করে ওর হাতের দিকে চেয়ে আছে
ছোঁয়া হাত লুকিয়ে এগিয়ে এসে শ্রাবণকে জড়িয়ে ধরলো
শ্রাবণ চেয়েছিল ছোঁয়ার গালে চড় মেরে দিবে কিন্তু ছোঁয়া এভাবে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরায় নিমিষেই তার রাগ চলে গেলো
সেও জড়িয়ে ধরলো ছোঁয়াকে,মুচকি হেসে ফিসফিস করে বললো”ভালোবাসি”
.
ছোঁয়ার চোখ দিয়ে না চাইতেও অশ্রু বয়ে গেলো,এর কারণ সে জানে না
হয়ত জীবনে এ প্রথম কারোর মুখ থেকে ভালোবাসিটা শুনে এমনটা হলো
সে উত্তরে কিছু বলতে পারলো না,চুপ করে রইলো
শ্রাবণ ওকে ছেড়ে মুচকি হেসে ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলো
শ্রাবণ চলে যাওয়ার পর ছোঁয়া বাসায় ফিরতেই দেখলো ইতি ঘুমিয়ে পড়েছে
ছোঁয়ার আজ এত খুশি লাগতেছে সে কি করবে না করবে বুঝে উঠতে পারছে না,জীবনে না পাওয়া গুলো আজ সে পেয়ে গিয়েছে এর চাইতে সুখের আর কি হতে পারে!
.
পরেরদিন ইতি আরেকটা শাড়ী পরে নিয়েছে অথচ এতদিন সে টপস আর প্লাজো পরেই বাসায় থাকতো আর ইদানিং সে শাড়ী পরে থাকে বাসায়
কলিংবেল বেজে উঠতেই সে দৌড়ে গিয়ে দরজাটা খুললো,ওপারে রিয়ান আর তার বাবা মা হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন
ইতি চমকে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে
মা পাশ দিয়েই রান্নাঘরে যাচ্ছিলেন উনাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে ইতিকে সরিয়ে বললেন ভিতরে আসতে
উনারাও ভিতরে এসে সোফায় বসলেন
মা ও বুঝতেছেন না উনারা হঠাৎ করে কেন আসলো
রিয়ানের বাবা সবটা খুলে জানালো ইতির মা বাবা আর আবিদকে
ইতি তার গলার হারটা মুঠো করে ধরে চেয়ে আছে তারপর মাকে একটু দূরে এনে বললো শ্রাবণের ফ্যামিলিকে কি করে বুঝাবে এবার
.
মা ও ভাবনায় পড়ে গেলো,তারা ভাবতে ভাবতে ততক্ষণে শ্রাবণের ফ্যামিলিও এসে পড়েছে
মা বাবা তো পড়লেন মহা চিন্তায়
উনারদের মুখের অবস্থা দেখে শ্রাবণের মা মুচকি হেসে অবশেষে কথা শুরু করলেন
.
আসলে শ্রাবণ ছোঁয়াকেই পছন্দ করে,ইতিকে নয়
আর আমি তো ওকে বিয়ে নিয়ে বাধ্য করতে পারি না,আর ইতির ও আগের সম্পর্ক আছে,সেই ছেলেটাও ইতিকে বিয়ে করতে চায় এখন তাই আমি চাই ৪পক্ষকে আলাদা না করে একসাথে করে দিলে কেমন হয়?
.
মা বাবা তো রীতিমত অবাক উনাদের কথা শুনে,ভাবছে শ্রাবণের মা ইতির নারাজ শুনে উথাল পাতাল করবে কিন্তু এখন দেখি তার পুরো উল্টা
ছোঁয়া ঘুম থেকে সবে উঠেছে,ফ্রেশ হয়ে বিছানার উপর থেকে ওড়নাটা নিয়ে পরতে ওরতে রুম থেকে বেরিয়ে দেখলো তার ২০গুষ্টি তার সামনে সোফায় বসে আছে দাঁত কেলিয়ে
সবাই আছে তবে শ্রাবণ নেই
ছোঁয়া ঢোক গিলে এগিয়ে আসলো,শ্রাবণের মা খুশি হয়ে ওর হাত ধরে ওকে পাশে বসিয়ে দিলেন তারপর নিজের গলার হারটা খুলে ছোঁয়ার গলায় পরিয়ে দিলেন তারপর বললেন ইতিকে দেওয়া হারটা খুলে নিলে ব্যাপারটা খারাপ লাগবে,ওটা ছোঁয়ার বোন হিসেবে ইতিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে
সবাই মিষ্টি খাচ্ছে,অপু মিষ্টির পিক তুলে এফবিতে পোস্ট করতেছে আর রিয়ান আর ইতি ছাদে গিয়ে কথা বলতেছে
ছোঁয়া বাসার বাইরে এসে বারবার রোডের দিকে চেয়ে শ্রাবণকে খুঁজে যাচ্ছে কিন্তু শ্রাবণ কেন আসতেছে না সেটাই ভেবে পাচ্ছে না সে
মন খারাপ করে বাসার ভিতর চলে আসতে নিতেই বাইকের আওয়াজ পেয়ে থেমে গেলো সে
তারপর পিছন ফিরে চেয়ে দেখলো শ্রাবণ বাইক নিয়ে আসতেছে,বাইকের পিছনে বিরাট একটা বালতি আটকানো
ছোঁয়া কিছু বুঝতে না পেরে চেয়ে আছে সেদিকে
তারপর শ্রাবণ কাছে আসতেই জিজ্ঞেস করলো দেরি হলো কেন আর এই বালতিটা কিসের
.
শ্রাবণ মুচকি হেসে বালতিটা হাতে নিয়ে ছোঁয়ার হাতে ধরিয়ে দিলো হাঁটু গেড়ে বসে
ছোঁয়া তো অবাক হয়ে এদিক ওদিক তাকালো তারপর ভ্রুটা কুঁচকে বললো”মানুষ গোলাপ নয়ত অন্য কিছু দিয়ে প্রোপোজ করে আর আপনি কিনা বালতি দিয়ে করতেছেন,এটা কেমন কথা?”
.
আরে বোকা মেয়ে বালতির ঢাকনা খুলে দেখো আগে
.
ছোঁয়া শ্রাবণের কথা মত বালতির ঢাকনাটা খুললো,ওমা বালতি ভর্তি ফুচকা আর ফুচকা
ছোঁয়া বালতিটা জড়িয়ে ধরে বাসার ভেতর দৌড় দিলো
.
যাক বাবা!আমি বেশি না এই বালতির ফুচকা বেশি,একটিবার ফিরেও তাকালো না,দিস ইজ নট ফেয়ার!
.
ছোঁয়া বালতি নিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেছে আর শ্রাবণ এসে মায়ের পাশে বসেছে
মা বললো সব কথাবার্তা হয়ে গেছে,সবাই সবটা বুঝে নিয়েছে
পরের শুক্রবার শুভ কাজটা সম্পন্ন হবে,ইতির রিয়ানের আর শ্রাবণ ছোঁয়ার একসাথে বিয়েটা হবে
শ্রাবণ মনে মনে প্ল্যানিং করে রেখেছে যা সম্পর্কে ছোঁয়া কিছুই জানে না
বিকাল পর্যন্ত সবাই ছিল,আংটি বদল হয়ে গিয়েছে ততক্ষনে
ছোঁয়াকে শ্রাবণ বললো একটু বাইরে আসতে
ছোঁয়া বাইরে আসতেই শ্রাবণ ওর হাতটা মুঠো করে ধরে টেনে নিয়ে গেলো
.
আরে আরে কই যাচ্ছেন?
.
পালাচ্ছি
.
মানে?
.
মানে তোমারই তো ইচ্ছা ছিল বিয়ের কথা পাকা হলেই পালিয়ে যাবে তারপর বিয়ের সময় হাজির হবে,আমরাও এখন সেটা করবো
.
আরে না না,মা বাবা কি বলবে,আমি তো মজা করে বলেছিলাম
.
তাহলে এখন চলো
.
এখন কই?
.
আরে পুরো রাত কাটাবো না জাস্ট হালকা কিছু মুহুর্ত উপহার দিবো তোমায়
.
আচ্ছা তাহলে যাওয়ায় যায়
.
দুজনে মিলে একটা লেকের পাশে আসলো,কিনারায় বসে এখন চুপ করে আছে দুজনে
শেষে শ্রাবণই বললো”সারাদিন তো এত কথা বলো তাহলে এখন কথা নেই কেন তোমার?
.
লজ্জা লাগে?
.
শুনো,বিয়ের পর যদি দেখি তুমি আবারও হাত কেটেছো তো চড় ২টা করে ৪টা দিব
.
আপনি আমাকে মারবেন?
.
মারার কাজ করলে অবশ্যই মারবো
.
ছোঁয়া মুচকি হেসে শ্রাবণের হাতটা জড়িয়ে ধরলো তারপর বললো”আশা করি আর দরকার হবে না,আপনি আমার জীবনটাকেই বদলে দেবেন আমি জানি,এখনই অনেকটা বদলে গেছে বিয়ের পর নিশ্চয় অনেকটা বদলে যাবে
.
হুম,তোমাকে আমি সেই সব কিছু দিব যেটা দিয়ে তোমার জীবনটা আগের চেয়েও মাচ বেটার হয়ে যাবে
.
আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা কিছুই
.
বিয়েটা হয়ে যাক,২/৩টা বাচ্চা হলে এমনিতেই সব বিশ্বাস হয়ে যাবে
.
কথাটা শুনে ছোঁয়া লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে একটু দূরে সরে বসলো,ইস কি লজ্জা!
.
চলুন ম্যাডাম এবার আপনাকে আমার শশুর বাড়ি দিয়ে আসি তারপর একেবারে আমার নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে আসবো
.
ঠিক আছে

বাসায় ফিরে ছোঁয়া জানালার ধারে এসে দাঁড়িয়ে আকাশের চাঁদটার দিকে অনেকক্ষণ ধরে চেয়ে রইলো তারপর মুচকি হেসে বললো”তাহলে এতদিনে আজ তা পেয়েছি যা আমি চেয়েছিলাম,অভ্রকে হারানোর পর ভাবতেও পারিনি আমাকেও কেউ একজন মেনে নিবে তার নিজ দায়িত্বে
তার মুখ থেকে একটিবারের জন্য ও আমি শুনিনি আমার গায়ের রঙ নিয়ে কোনো কথা
আজব না?আর এতদিন ভাবতাম সবার আগে আমাকে দেখতে এসে পাত্রপক্ষ কোন কটু কথাটা বলবে
ইতি আপুও খুশি,উনার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যাকে উনি ভালোবাসতেন তার সাথেই তার বিয়ে হচ্ছে
আজ সকালটা সব সব কিছু বদলিয়ে দিলো
ছোঁয়া গলার হারটার দিকে চেয়ে মুচকি হাসতেছে
তারপর চোখ বন্ধ করে শ্রাবণের সাথে কাটানো সময়টা অনুভব করতে লাগলো সে
আর কয়েকদিন বাদেই শুরু হবে বিয়ের সব কাজ
ছোঁয়া আয়নার সামনে এসে লাল একটা ওড়না মাথায় দিয়ে ভাবতে লাগলো তাকে বিয়ের দিন কেমন লাগবে তারপর মুখটা ফ্যাকাসে করে ওড়নাটা খুলে রেখে দিয়ে ভাবলো কেমন লাগবে আর বিচ্ছিরি লাগবে
পরেই ভাবলো যেমনই লাগুক
বিয়ে তো হবেই,যে মেইন সে তো আমাকে আমার আমিতেই পছন্দ করেছে তাহলে এত চিন্তা কিসের আমার?আমিও না!
.
শ্রাবণ বাসায় ফিরে নিজের রুমটার দিকে চেয়ে হালকা হেসে বললো”এখন থেকে এই রুমটায় একটা চিকন কাঁচামরিচ ও থাকবে,হাহা!সারাদিন বাসাটাকে মাথায় করে রাখবে সে”
এসব ভাবতে ভাবতে শ্রাবণ বিছানায় এসে শুতেই ফোন বেজে উঠলো,মিতুলের ফোন
চমকে সে উঠে বসলো তারপর রিসিভ করলো
ওপাশ থেকে মিতুল মৃদু গলায় বললো,”কেমন আছো?”
.
শ্রাবণ হেসে বললো”বেশ ভালো,তুমি?”
.
আমি…. ও,আচ্ছা একটা কথা বলবে তুমি কি আমাকে এখনও ভালোবাসো?
.
শ্রাবণ আবারও হেসে দিলো তারপর শক্ত গলায় বললো”শুক্রবারে আমার বিয়ে মিতুল!এসো কিন্তু!
সেই মেয়েটার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে যে আমি যেমন আমাকে তেমন ভাবেই নিয়েছে,আমাদের বাসার পাশে পুকুর এতে তার কোনো সমস্যা নেই,আমাদের বাসাটা পুরোটা দালান নয় এতেও তার কোনো সমস্যা নেই,আমি সামান্য একটা প্রাইমারি স্কুলের টিচার এতেও তার কোনো সমস্যা নেই
তার শুধু আমাকেই চাই,আমার জন্য সে নিজরে হাত পুরোটা কেটে লুকিয়ে কাঁদতেছিলো
আমাকে ছাড়া সে কিছু বুঝে না মিতুল!
আমি সেই মেয়েটাকেই ভালোবাসি,তার নাম ছোঁয়া
শ্রাবণের ছোঁয়া!

ছোঁয়া ডিনার করে এসে বিছানা করতে যেতেই দেখলো অভ্রর কল
চমকে ফোনটা হাতে নিয়ে অনেকক্ষন ধরে চেয়ে রইলো তারপর ভাবতে ভাবতেই কলটা কেটে গেলো
কিছুক্ষন বাদেই ফোন আবারও বেজে উঠলো
ছোঁয়া এবার রিসিভ করেছে
অভ্র প্রথমে খোঁজখবর নিলো সবার তারপর ছোঁয়াকে বললো ছোঁয়া তার ভালো বন্ধু এখনও,চাইলেই তারা প্রতিদিন ফোনে কথা বলতে পারে,রাতে ১২টার পর,প্রিয়া ঘুমিয়ে গেলে
ছোঁয়া অভ্রর সাথে সবসময় সিরিয়াসলি কথা বলতো তবে এখন কেন জানি না অভ্রর কথাটা শুনে ফিক করে হেসে দিলো সে তারপর বললো”অভ্র!আমরা ভালো বন্ধু না,তুমি জাস্ট আমার ভাইয়ার ফ্রেন্ড আর কিছু না
.
মানে.তুমি আমাকে ভালোবাসো না?
.
আপনাকে আমি কেন ভালেবাসতে যাবো অভ্র ভাইয়া??আপনি বিবাহিত,এসব কি বলছেন তওবা তওবা
.
এসব কি বলতেছো,তুমি তো আমাকে পাগলের মত ভালোবাসো তাহলে এখন এগুলা কি?
.
ভাইয়া আমার শুক্রবারে বিয়ে,আসবেন কিন্তু
অবশ্য আপনি আমার ভাইয়ার বন্ধু তো,বেশি দূর সম্পর্ক হয়ে যায় তাও আসিয়েন,আমি বাবুর্চিকে বলবো রোস্ট এক পিস বাড়াই বানাইতে
.
বিয়ে হচ্ছে বলে এত দাপট দেখাচ্ছো?তা তোমার মা বাবা কত টাকা যৌতুক দিয়েছে ছেলেকে?
.
সবাই তো আর অভ্র না,আফসোস!
আমি সেই ছেলেটাকে বিয়ে করতেছি যে কিনা আমাকে বিয়ে করার জন্য নিজের ফ্যামিলিকে মানিয়ে নেওয়ার যথাযথ চেষ্টা করেছে আর আপনি তো সেটাও করেন নি
বাই দ্যা হয়ে তোরে আপনি /তুমি বলে সম্বোধন কেন করতেছি তুই তো সেটার ও যোগ্য না
আর হ্যাঁ আমি যে শ্যামলা এতে তার কোনো সমস্যা নেই,
নেক্সট টাইম আমাকে আর একবার কল দিলে তোর প্রিয়াকে কল করে বলে দিব যে নিজের স্বামীকে সামলাও
সে কালা/ ধলা /শ্যামলা মানে না সবার সাথে প্রেম করতে আসে বিবাহিত হওয়ার পরেও
আবার কল করে বলে এজ এ ফ্রেন্ড ডেইলি কল করতে রাতের বেলায়
.
ছোঁয়ার কথা শুনে অভ্র লাইন্টাই কেটে দিলো
.
ছোঁয়ার নিজেকে কেমন স্ট্রং স্ট্রং মনে হচ্ছে এতদিনে সে অভ্রকে উচিত জবাব দিতে পেরেছে
.
এখন বুঝতেছি মানুষ এক্সকে সাপ বলে কেন,আসলেই এগুলা সাপ হয়
দরকারের সময় ছেড়ে চলে যায় আরেকটার হাত ধরে আবার যখন আমরা কাউকে রিয়েলি পাই তখন আসে সুখটা নষ্ট করতে,বেয়াদব গুলা সব!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে