একজোড়া চড়ুই পর্ব-১৮

0
1185

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_১৮
#Writer_Afnan_Lara
?
ছোঁয়া পরেরদিন সকাল হতেই চলে গেছে ছাদের দিকে
হাতে কাগজ কলম নিয়ে, বিয়ের পর শ্রাবণকে নিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরবে সেসবের লিস্ট করতেছে সে
শ্রাবণ ২বার কল করেছে সেদিকে তার খবর নেই
সে এখন প্ল্যানিং করানোয় ব্যস্ত
শ্রাবণ তার ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা তুলতে এসেছে,বিয়েটা নরমালিই হবে তবে যা খরচ হবে তার সবটার খরচ সে নিজে বহন করতে চায়,তাই এতদিনের জমানো হালকা কিছু টাকা সে নিতে এসেছে
ছোঁয়া লিস্ট করা শেষ করে সিঁড়ি বেয়ে দৌড়ে নিচে আসতে গিয়ে পা পিছলিয়ে পড়ে গেলো,একেবারে ছাদের প্রথম সিঁড়ি থেকে শেষ সিড়ি পর্যন্ত গড়িয়ে নিচে পড়লো
সবার আগে ইতি দৌড়ে এসেছে ছোঁয়ার চিৎকার শুনতে পেয়ে
শ্রাবণ টাকা তুলে বাসায় ফিরবে এসময়ে ছোঁয়াকে আবার কল করলো,যদি ধরে তবে যাওয়ার সময় একবার দেখা করে নেওয়া যাবে
সে কল করলো কিন্তু ছোঁয়া ধরলো না,ধরলো ইতি
ইতি একটা কথাই বললো আর সেটা হলো ছোঁয়ার এক্সিডেন্ট হয়েছে,সে যেন জলদি হসপিটালে চলে আসে
শ্রাবণের বুকে প্রথমে ধাক্কা লাগলেও পরেই ভাবলো যে দুষ্টু মেয়েটা নিশ্চয় আবার বাড়ি খেয়ে ব্যাথা পেয়েছে
তাও এক প্রকার জলদি করেই সে হসপিটালে আসলো,,ইতিকে ফোন করে কেবিন নাম্বারটা জেনে এসেই থেমে গেলো সে
ছোঁয়ার পায়ে আর মাথায় ব্যান্ডেজ করা দেখে এক মূহুর্তের জন্য তার সারাটা দেহ থমকে গেলো
ছোঁয়া চোখ মেলে তাকাতেই শ্রাবণ শ্বাসটা ফেললো এতক্ষণ দম বন্ধ ছিল তার
ছোঁয়া অসহায়ের মত চেয়ে একটু উঠে বসার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না
শুধু মুখ ফুটে বললো”বিয়ের তারিখ যেন না পিছায়”
.
শ্রাবণ ওর পাশে বসে ইতির দিকে তাকালো
ইতি জানালো সিঁড়ি থেকে পড়ে এমন হাল বানিয়েছে
শ্রাবণ এবার ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে বেশ কিছুক্ষন চেয়ে রইলো তারপর বললো”কি সমস্যা তোমার??তোমার কি নিজের প্রতি কোনো যত্নই নিতে মন চায় না?এসবের কারণে যে একবার এক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তোমার সেদিকে কি তোমার নজর নেই?আর কতো?”
.
সরি
.
বিয়ে যেন না পিছাই এটাই বলছো তো??ঠিক আছে
১বছর পর এই দিনে বিয়ে হবে,বিয়ে ১বছরের জন্য পিছানো হলো
তোমার স্বভাব চেঞ্জ করার জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিলাম আশা করি এরপরে বাঁদরামি কমিয়ে দিবা
.
না প্লিস
.
হ্যাঁ,আমি যেটা বলবো সেটাই হবে
কথাটা বলে শ্রাবণ উঠে চলে গিয়ে ছোঁয়ার বাবার সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো
ছোঁয়া মুখটা ছোট করে বসে আছে,হঠাৎ পা টা পিছলিয়ে যাবে সে তো জানতোই না,হাতের মুঠোই এখনও কাগজটা আছে,কাগজটার দিকে চেয়ে থেকে সে কেঁদে দিলো,শ্রাবণকে কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু সে কোনো সারা না দিয়ে চলে গেছে
আরও কষ্ট হচ্ছে ছোঁয়ার,এই লিস্ট যত নষ্টের গোড়া
ছোঁয়া রেগে মেগে কাগজটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো
আজকের দিন হসপিটালে থাকতে হবে,শ্রাবণ সেই যে বেরিয়েছে আর একটি বারের জন্যও ছোঁয়াকে দেখতে আসেনি,ছোঁয়া কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে
বাসায় ফিরেছে পরেরদিন দুপুর ১২টার দিকে
ইতি আপুর বিয়ের সব কাজ রেডি করতেছে সবাই মিলে
ছোঁয়া সোফায় বসে চিপস খাচ্ছে,আর পায়ের দিকে তাকাচ্ছে বারবার
আজ তার এমন অবস্থা না হলে তারও বিয়ের আয়োজন চলতো,কষ্ট লাগে,আবারও কান্না পাচ্ছে অনেক
দেখতে দেখতে গায়ে হলুদের দিন ও এসে পড়েছে
ছোঁয়া ছাদে বসে কেঁদে কেঁদে শেষ হয়ে যাচ্ছে
হঠাৎ পিউ ভাবী এসে বললেন “হইছে মেয়ে আর কাঁদতে হবে না,এবার চলেন আপনাকে রেডি করাই,গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হতে চলেছে”
.
মানে?আমি?
.
জি,শ্রাবণ তোমাকে টাইট দেওয়ার জন্য বলেছিল বিয়েটা হবে না,আসলে কিন্তু ভিতরে ভিতরে সব রেডি হয়ে গেছে
.
ছোঁয়া খুশিতে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো তারপর পায়ে ব্যাথা পেয়ে আবার বসে গেলো,মনে মনে ভাবলো বিয়ের দিন রাতে এর শাস্তি দিব তোমায় শ্রাবণ বাবু
তারপর সে ভাবীর সাথে নিচে এসে তৈরি হয়ে নিলো,হালকা সাজে আজ ছোঁয়াকে বেশ লাগতেছে
মাথায় রজনীগন্ধা আর গোলাপের টিকলি
শ্রাবণ নাকি তার বাগানের ফুল পাঠিয়েছে ছোঁয়াকে সাজানোর জন্য
ছোঁয়া আয়নায় নিজেকে দেখে চিনতে পারছে না,শ্রাবণ বলে দিয়েছিল বেশি ভূত যেন না সাজায় তাই হালকা পাতলা সাজানো হয়েছে ওকে
শ্যামলা মেয়েদের হালকা সাজে অপ্সরীর মতন লাগে
ছোঁয়াকেও আজ অনেক সুন্দর লাগছে
ইতিকেও ভালো লাগছে তবে ইতির সাজটা বেশি বেশি হয়ে গেছে
যাই হোক পার্টি সেন্টারে রিয়ান ইতি আর ছোঁয়া শ্রাবণের একসাথে গায়ে হলুদ হবে,কিন্তু স্টেজ আলাদা
ছোঁয়া সেন্টারে এসে গাল ফুলিয়ে শ্রাবণকে খুঁজে যাচ্ছে চারিদিকে
ইতি আপুর গায়ে হলুদ শুরু হয়ে গেছে ততক্ষনে,ছোঁয়া স্টেজে এসে বসতেই শ্রাবণের দেখা পেলো অবশেষে
গায়ে হলুদ রঙের পাঞ্জাবি,মুখে হাসি নিয়ে ভিতরে ঢুকলো সে
ছোঁয়া ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে
শ্রাবণ ওর পাশে বসে বললো”বাঁদরামির স্বভাব গেছে নাকি আজকেই বিয়েটা সেরে টাইট দিয়ে দিতাম?”
.
ছোঁয়া দাঁতে দাঁত চেপে আরেকদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে উত্তরে কিছু আর বললো না সে
ধীরে সুস্থে ৪জনেরই গায়ে হলুদ সম্পন্ন হয়ে গেলো
.
সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত
ছোঁয়া এক কোণায় বসে বিরিয়ানি খেয়ে যাচ্ছে আর এদিক ওদিকে শ্রাবণকে খুঁজে যাচ্ছে,হুটাহাট করে উধাও হয়ে যায় লোকটা
কই যায় কে জানে!
হঠাৎ করে ছোঁয়া নিজের গালে হলুদের মোটা আবরণ লেগে যাওয়া বুঝতে পেরে পাশে ফিরে চেয়ে দেখলো শ্রাবণ হেসে চলে যাচ্ছে
ছোঁয়া তার আরেক হাত দিয়ে গাল ধরে দেখলো হলুদ লেগে আছে
শ্রাবণ হলুদ লাগিয়ে চলে গেছে
ছোঁয়া মুচকি হেসে ভাবলো শ্রাবণ লুকিয়ে থেকে ওর দিকেই নজর রাখছে তাহলে,এত লুকোচুরির কি আছে শুনি!!
একজন মহিলা পাশে বসে আরেকজনের সাথে কথা বলতেছেন
একজন বললেন শ্রাবণের বউটার চেহারাটা অনেক মিষ্টি
আর ঐ রিয়ান যে আছে তার বউটার গাল এত ফর্সা কেন,শ্ব্যাতের বেরাম টেরাম নাকি
ছোঁয়া চোখ বড় করে উনাদের দিকে চেয়ে আছে
সে ভেবেছিল তার গায়ের রঙ নিয়ে মানুষ কথা তুলবে অথচ এখন সব উল্টা হচ্ছে

শ্রাবণের চোখে হলুদ ঢুকে গেসিলো বলে সে এসেছে একটু টিসু দিয়ে পরিষ্কার করতে,বাথরুমের ভেসিনে এসে টিসু দিয়ে চোখ মুছে পিছন ফিরতেই দেখলো ছোঁয়া কোমড়ে হাত দিয়ে ঢুলতেছে
.
কি চাই?
.
তোমাকে?
.
কথাটা বলে ছোঁয়া এগিয়ে এসে শ্রাবণের পায়ের উপর ভর দিয়ে খুব কাছে চলো আসলো তার
শ্রাবণ পিছনে ঝুঁকে আয়নার সাথে লেগে গিয়ে চোখ বড় করে চেয়ে আছে
.
ককককককি করবা তুমি!
.
ছোঁয়া দাঁত কেলিয়ে শ্রাবণের পাঞ্জাবিতে নিজের মুখ মুছে দৌড়ে পালিয়ে গেলো
.
শ্রাবণ রোবটের মতন দাঁড়িয়ে আছে এখনও
এই মেয়েটা কি পাগল নাকি!আমি তো ভাবলাম গালে গাল লাগিয়ে হলুদ লাগিয়ে দিবে ফিল্মের মতন
আর সে দেখি সুযোগোর সদ্য ব্যবহার করে পালালো,আজব মেয়ে তো!
.
বাসায় ফিরে ছোঁয়া তখনকার কথা মনে করে মিটমিট করে হাসতেসে বারবার
ইতি কানের দুল খুলতে খুলতে বললো”কিরে এমন হাসিস কেন”
.
কিছু না এমনিই
.
সারাটা রাত ছোঁয়ার ঘুম হলো না,কাল তার বিয়ে, কি করবে না করবে এসব ভাবতে ভাবতে তার ঘুমটাই হলো না
তো এবার যখন সকালটা হয়ে গেলো তখন থেকে তার ঘুম সারা চোখে
বাসার যত কোণা আছে সব খানে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে সে
একবার পিউ ভাবী,একবার মা,আর নয়ত একবার ইতি এসে ওকে জাগিয়ে দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ছোঁয়া তো ছোঁয়াই
সে ঘুম যাবেই যাবে
.
পিউ ফোনে শ্রাবণকে জানালো ছোঁয়া মরার মত ঘুমিয়ে যাচ্ছে সকাল থেকে
শ্রাবণ তখন রেডি হচ্ছিলো তারপর এই কথা শুনে পিউকে বললো ঠাণ্ডা পানি এক বালতি নিয়ে ওর গায়ে ঢেলে দিতে
পিউ প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না পরে ভাইয়ের কড়া আদেশে ঠাণ্ডা পানি এক বালতি নিয়ে ছোঁয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে
ছোঁয়া ফ্লোরে বসে দেয়ালে হেলান দিয়ে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে
পিউ ঢোক গিলে বালতির পানি ওর গায়ে ঢেলে এক দৌড় মারলো যেতে যেতে বললো “তোমার বর বলেছে এমনটা করতে!আমার দোষ নাই”
.
ছোঁয়া চোখ বড় করে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছে
তারপর মাথা মুছতে মুছতে এদিক ওদিক তাকালো
কি হলো এটা!!!শ্রাবইন্ননায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া তোরে আমি ছাড়মু নায়ায়ায়ায়ায়ায়া
.
ছোঁয়া ভেজা চুল নিয়েই বউ সেজেছে আজ
মা বাবা আর বাকিরা সবাই হাসতেছে ওর অবস্থা দেখে
ছোঁয়া তো কি করে শোধ উঠাবে সেটাই ভেবে যাচ্ছে,মাথায় খালি ঘুরতেছে শ্রাবণের ১২টা কি করে বাজাবে সে
২টার দিকে শ্রাবণেরা সবাই এসে পড়লো
ছোঁয়া অগ্নি দৃষ্টিতে শ্রাবণের দিকে চেয়ে আছে,মনে হয় এখনই গিলে ফেলবে
শ্রাবণ এমন ভাব ধরে আছে যেন কিছুই হয়নি
তারপর ছোঁয়ার মুখের ভাবগতি দেখে হেসে হেসে বললো”বিয়ের দিন সকাল থেকে কোনো বলদ ও ঘুমায় না,আর তুমি কিনা ঘুমাচ্ছিলে,পানি ঢালতে বলেছি একদম ঠিক করেছি!”
.
ছোঁয়া আপাতত ভদ্র লুক নিয়ে চুপটি করে বসে আছে,একটা সময়ের জন্য শ্রাবণ ও এই বিষয়টার কথা ভুলে গেলো
সে ভুলে গেলো সে একটা চিকন কাঁচামরিচকে বিয়ে করতেছে যে চিকন হলেও ঝাল বেশি
তার উপর সকাল সকাল তাকে যে ঠাণ্ডা পানিতে চুবিয়েছিলো এটার কথাও ভুলে গেলো সে
.
বিয়েটা হয়ে গেলো সুন্দরমতন,তেমন বিশাল আকারের আয়োজন হয়নি,পরিবারের কয়েকজন নিয়েই হয়েছে সবটা
ছোঁয়া শ্রাবণের বাড়িতে এসে পড়েছে,প্রাইভেট কারেই এসেছিল,তবে মাঝখানে অপু বসেছিল,ছোঁয়াই বসিয়েছে ওকে
শ্রাবণ ও মানা করেনি আর
ছোঁয়া তো মনে মনে ফাঁদ আঁটতেছে
.
রাত ৯টা বাজে
ছোঁয়াকে শ্রাবণের মা নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছেন এটা নাকি তাদের বংশের নিয়ম,বিয়ের দিন নতুন বউ ঘরে আসলে তাকে শাশুড়ি খাইয়ে দিতে হয়
শ্রাবণ নিজের রুমটা দেখতেছে কোমড়ে হাত দিয়ে
রজনীগন্ধা দিয়ে সাজানো পুরোটা রুম,তার ও পছন্দের
আর ছোঁয়ার তো ডেফিনেটলি
ছোঁয়া আজ লাল রঙের একটা বেনারসি পরেছে আর শ্রাবণ লাল রঙের পাঞ্জাবি পরেছে
শ্রাবণ বিছানায় বসে ছোঁয়ার অপেক্ষা করছে তারপর ছোঁয়া আসতেছে না দেখে উঠে গিয়ে জানালার কাছে এসে দাঁড়ালো,আকাশে চাঁদ নেই
খালি খালি চেয়ে আছে সে অন্ধকার আকাশটার দিকে
ছোঁয়া পা টিপে টিপে রুমে ঢুকেছে,হাতে এক বালতি পানি
.
হাহা চান্দু!!তুমি যেমন তোমার বউ ও তেমন!
.
ছোঁয়া ২/৩কদম হেঁটে এগিয়ে এসে বললো “আমি এসেছি প্রিয়!☺??
.
শ্রাবণ মুচকি হেসে পিছন ফিরে ছোঁয়ার দিকে তাকাতেই ছোঁয়া হাতে থাকা বালতির সব পানি ওর গায়ে ছুঁড়ে মেরে দিলো
.
শ্রাবণ চোখ মুখ বন্ধ করে রোবটের মত দাঁড়িয়ে আছে
.
বাসর করা দেখাচ্ছি!একবার বিয়ে করবে না বলে আমাকে ৫দিন ধরে কাঁদিয়েছো আবার বিয়ের দিন সকাল সকাল আমাকে পানি দিয়ে কাক ভেজা ভিজিয়েছো তোমারে এমনি এমনি ছাড়বো?
.
ছোঁয়া এগিয়ে এসে কোমড় থেকে একটা প্যাকেট বের করলো,রাধুনী জিরা গুড়ার প্যাকেট
মুখ দিয়ে ফুটো করে শ্রাবনের গায়ে ঢেলে দিলো পুরোটা
তারপর বললো”মশলা মাখানো শেষ এবার সারাজীবন ধরে ভাজবো”
.
শ্রাবণ এখনও রোবটের মত দাঁড়িয়ে আছে তারপর হঠাৎই হেসে দিলো
ছোঁয়া ব্রু কুঁচকে বললো”হাসি পাচ্ছে আপনার?”
.
হ্যাঁ অনেককককক
.
আমার কাছে মরিচের গুড়াওও আছে,আর একবার হাসলে সেটাও ঢেলে দিবো
.
সামনে জ্যান্ত মরিচ দাঁড়িয়ে আছে,বাজারের মরিচগুড়ার দরকার নেই আমার
কথাটা বলে শ্রাবণ এগিয়ে এসে ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে
.
ইইইইইইইই!!আমার গায়ে জিরা পানি সব লেগে গেলো,ছাড়ুন বলতেছি
.
হিহি,তুমি যদি হও কাঁচা মরিচ তো আমি গোলমরিচ
.
ছাড়ুন,আমার এখন গোসল করতে হবে তা না হলে
.
করবা,সমস্যা কি!তুমি তো এসব করলা,তোমাকে তো স্বাদ পেতেই হবে
.
ইইইই,জিরার গন্ধে বমি আসতেছে আমার
.
আমার কাছে রাধুনীর গরম মশলা গুড়া আছে,খাগড়াছড়ির বাসায় থাকতে বড় রান্নায় ইউজ করতাম,তোমার সারা গায়ে ছিটিয়ে দিই?তাহলে ব্যাপারটা বিরিয়ানি বিরিয়ানি মনে হবে
.
স্টুপিড!!
.
শ্রাবণ ছোঁয়াকে ছেড়ে দিলো,ছোঁয়ার পুরো গায়ে জিরার গুড়া লেগে গেছে আঠার মত,পানির উপর জিরার গুড়া ঢালার কারণে জিরা এখন ভালোমতন গায়ে লেগে গেছে

হ্যাঁ বাবু!!আমি ভোরবেলায় উঠে তোমাকেও জাগিয়ে দিব,ডোন্ট ওয়ারি,আমার ফোনে এলার্ম নষ্ট তো কি হয়েছে ঠিক ভোর যখন শুরু হবে তখনই তোমাকে জাগিয়ে তুলবো তারপর তুমি গানের প্রেকটিস করিও কেমন??
.
অপু!আমার এলার্মেও ঘুম ভাঙ্গে না বলে তোমাকে দায়িত্ব দিলাম
কিন্তু বাবু তুমি এলার্ম ছাড়া আমাকে জাগাবা কি করে?
.
আরেহ নো টেনসন,আমার ভাইয়ার আজ বিয়ে হয়েছে না?নিউ কাপল ভোরবেলায় উঠে গোসল করে?জানি আমি
তো আমি দরজা খোলার আওয়াজ পেলেই জেগে যাব আর তখন তোমাকে কল করে গুড মর্নিং জানাবো বেবি
.
আচ্ছা তাই
.
এক মিনিট!ভাইয়া ভাবী দেখি পুকুর ঘাটের দিকে যাচ্ছে
ওমা তারা এখন গোসল করবে নাকি!!
ও মাই গড!
বাবু কয়টা বাজে দেখো তো,এখনও তো রাতই শুরু হলো না ভোরবেলা তো দূরে থাক
এখন গোসল করতে আসছে কেন
আমার না শরীর খারাপ করছে,মায়ের কথা মতো সকালে আমলকি খেতে হবে,সব ভুলভাল দেখতেছি চোখে
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে