একজোড়া চড়ুই পর্ব- ১১

0
1289

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_১১
#Writer_Afnan_Lara
?
রিয়ানের কথা শুনে শ্রাবণ তো রেগে দাঁড়িয়ে পড়েছে
তারপর ছোঁয়ার হাত ধরে টেনে রেস্টুরেন্টের বাইরে নিয়ে এসে বললো “ইতি এসব কেন করতেসে”
.
ছোঁয়া চুপ করে থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো”আমি কি করবো এখন”
.
রিয়ান যা করসে একদম ঠিক করসে,আমি তো সবটা জানতামই না
জানলে আমি ব্যাপারটা সর্ট আউট করতে আসতামই না,এই মেয়ের জীবনেও বিয়ে হবে না দেখো
.
আপনার সাথেই হবে
.
কি বললা আমার সাথে?আমি আমার মা বাবাকে জীবনেও আলাদা করে দিব না,তারা আমার সব,শুধু আমি না পৃথিবীর সব ছেলেরাই তাদের মা বাবাকে ভালোবাসে
যারা আলাদা থাকে তারা বউয়ের পাল্লায় পড়ে এমনটা করে,বউ যখন আলাদা হওয়ার কথা বলে তখনই ঠাস করে চড় মেরে দিলে আর কথা এতদূর যেতো না,এখন কথা হলো তোমার কাছে মা বেশি না বউ বেশি
আমার কাছে দুটোই বেশি,আমি দুজনকে নিয়ে একই বাসায় থাকবো,আলাদা হবো না
.
ছোঁয়া শ্রাবণের কথায় কান না দিয়ে গ্যাস বেলুনের দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে,লাল রঙের বেলুন,ছেড়ে দিলে উড়ে চলে যাবে,কি জোস!
.
শ্রাবণ ছোঁয়াকে ঝাঁকিয়ে বললো কথার উত্তর দিতে
.
কিসের উত্তর?
.
আজব এতক্ষণ কি বলসি,তোমার মন কই থাকে?
.
আমার মন তো!আচ্ছা আবার বলেন
.
তুমি তোমার বোনকে বুঝাও,এমন করে ওর জীবনেও বিয়ে হবে না
.
আচ্ছা ওকে
.
ছোঁয়া বাসায় ফিরে আসলো,ওমা এসে দেখলো ইতি আপু পায়ে নেইলপলিশ লাগাচ্ছে চিল হয়ে
.
আপু আমি অনেক হ্যাপি তুমি চিল নিসো,এমন করেই থাকবা অলওয়েজ
.
হুম চিল তো হবোই,রিয়ানকে দেখিয়ে দেওয়ার মত কাজ করবো তো তাই
.
কি কাজ?
.
আমি বাবা মাকে বলসি আমি শ্রাবণকে বিয়ে করতে রাজি
.
ছোঁয়া চোখ বড় করে ইতির মুখের দিকে চেয়ে আছে তারপর নিজের রুমে এসে ফোন হাতে নিয়ে শ্রাবণকে ফোন করলো,শ্রাবণ তখন হাইওয়ে তে,তাই কল রিসিভ করলো না
ছোঁয়া তো এদিক ওদিক হাঁটা হাঁটি করতেসে,কি করবে এখন সে,শ্রাবণ ভালো ছেলে কিন্তু ইতি তো এটা ঠিক করতেসে না,রিয়ান তাকে ভালোবাসে,একটা শর্তের জেদ ধরে সে কিনা বিয়েটা ভাঙ্গতেসে
.
নাহ আমার মনে হয় ইতি আপুর সাথে কথা বলা উচিত
.
আপু!
.
কি?
.
শ্রাবণ ভাইয়া তো মনে হয় না বিয়ের পর আলাদা থাকতে রাজি হবে
.
ও হবে না ওর বাপে হবে,এখন তো চুপচাপ বিয়ে করে কদিন ওর ফ্যামিলির সাথে থাকবো তারপর বরকে কি করে হাতের মুঠোয় আনা যায় তা জানা আছে আমার
.
!কি করবা তুমি?
.
তখন দেখে নিস!আর হ্যাঁ এসব যেন কেউ না জানে,তোর আর আমার সিক্রেট
.
ছোঁয়া মুখটা ছোট করে আবার রুমে ফেরত আসলো
শ্রাবণের ফোনের অপেক্ষা করতে লাগলো সে
এদিকে মা এসে ব্যাগ নিয়ে হাজির,বাজার করতে যাবে কাল শ্রাবণের ফ্যামিলি আসবে তাই
ছোঁয়া কি আর করবে মায়ের সাথে বাজারে চলে গেলো
শ্রাবণ বাড়ি ফিরে কল ব্যাক করলো ছোঁয়াকে কিন্তু ছোঁয়ার হাতে তখন ৬টা ব্যাগ,সাইড ব্যাগ থেকে ফোন নিয়ে ধরা অসম্ভব
.
শ্রাবণ গামছা নিলো পুকুরে গিয়ে গোসল করবে,পিছন থেকে মা ডাক দিয়ে বললো থামতে
.
কি মা?
.
কাল আমরা সবাই পিউর শশুরবাড়ি যাবো,পিউকে কতদিন হলো দেখি না আর!
.
(ভালো হবে,ছোঁয়ার সাথে আলোচনা ও করা যাবে)ঠিক আছে আমি যাই গোসল করে আসি,যা গরম পড়েছে
.
মা মুচকি হেসে চলে গেলেন
.
ছোঁয়া বাজার করে এসে ধপ করে বিছানায় মাথা এলিয়ে শুয়ে পড়লো,মা বাজারে গেলে এত হাঁটায় বলার মতন না,খুব ক্লান্ত সে,চোখ বন্ধ করতেই ঘুম এসে গেলো তার
.
কখন যে পরেরদিন সকাল হয়ে গেলো,ছোঁয়া চোখ ডলে উঠে বসতেই মা চিল্লাচিল্লি শুরু করলো সোফার রুম গুছাতে,শ্রাবণের পরিবার যেকোনো সময় চলে আসতে পারে
ছোঁয়া বিছানা থেকে নেমে দৌড়াদৌড়ি করে সব রেডি করে ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তাটা সেরে নিলো,তার পর চা হাতে ছাদে গিয়ে একটু বসলো,শ্রাবণকে তো বলাও যাবে না ইতি আপু কি প্ল্যান করতেসে,কিছু বললে ইতি আপু কাঁচা গিলে ফেলবে
আমি কি করবো এখন!
.
শ্রাবণেরা সবাই এসেও পড়েছে ততক্ষণে, মায়োর ডাকে ছোঁয়া দৌড়ে ছাদ থেকে নেমে আসলো,সোফার রুমে শ্রাবণ আর তার মা বাবা,অপু বসে আছে
ছোঁয়া তাদের সালাম দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো
.
মা ছোঁয়ার হাতে ট্রে দিয়ে বললো ইতিকে ডেকে ওর হাতে দিতে তাহলে বলবে ইতি বানিয়েছে,কিন্তু সব বানিয়েছে ছোঁয়া আর মা মিলে
ছোঁয়া ট্রেটা নিয়ে ইতিকে ডাক দিলো,ইতি ঘাড়ো নীল রঙের একটা শাড়ী পরে রেডি হয়ে ছিল,তারপর ট্রেটা হাতে নিয়ে সবার সামনে গেলো,ছোঁয়া পর্দার আড়ালে মুখ বের করে চেয়ে আছে দূরে দাঁড়িয়ে
শ্রাবণ ছোঁয়ার দিকে চেয়ে আছে আর ইশারায় জিজ্ঞেস করতেসে ইতি রিয়ানকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে কিনা
ছোঁয়া শ্রাবণের ইশারা বুঝতে পারলো না
ইতি সালাম দিয়ে এসে শ্রাবণের পাশে বসে গেলো
শ্রাবণ একটু নড়েচড়ে বসলো,সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে
এই মেয়েটা এমন সাজ দিসে কেন,আর আমার পাশেই বসছে কেন
তার উপর কেমন লজ্জা লজ্জা ভাব দেখাচ্ছে
ছোঁয়ার মা বাবাও এসে বসলেন ওপাশে
.
শ্রাবণের মা খুশি হয়ে বললেন”বাহ ইতি আর শ্রাবণকে তো বেশ মানিয়েছে”
.
মায়ের কথা শুনে শ্রাবণ চোখ বড় করে ছোঁয়ার দিকে তাকালো,ছোঁয়া দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে
.
সবটা বুঝতে পেরে শ্রাবণ একটু শক্ত গলায় বললো “আমি ইতির সাথে আলাদা কথা বলতে চাই”
সবাই রাজি হয়ে গেলো,ইতি শ্রাবণের সাথে ছাদে আসলো
ছোঁয়া নিজের রুমে ঘাপটি মেরে বসে আছে
কেন জানি বুকের ভেতরটা খালি খালি মনে হচ্ছে,মন চাচ্ছে গিয়ে দেখতে ওরা কি কি কথা বলে

তুমি বিয়ের পর আলাদা হতে চাইবা?
.
ইতি চোখ বড় করে তাকিয়ে বললো “না তো!আমি আপনার মা বাবার সাথে আপনাদের বাড়িতেই থাকবো
এমন কথা কে বললো আপনাকে?”
.
রিয়ান
.
ওহ,ও তো আমাকে কখনও ভালোই বাসেনি,কিন্তু আপনি আমাকে ভুল বুঝবেন না,আমি আপনার পরিবারের সাথেই থাকবো
.
তাহলে রিয়ানের পরিবারের সাথে থাকতে কি সমস্যা?
.
রিয়ান তো চিট করসে,এখন আর এসব বলে লাভ আছে?
.
কি চিট করসে?
.
সে কানাডিয়ান একটা মেয়েকে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে
.
শ্রাবণ মুচকি হেসে বললো”কিন্তু আমি তো তোমাকে সাথে করে খাগড়াছড়িতে নিয়ে যেতে চাই”
.
ইতি তো মহাখুশি,হেসে চেয়ে রইলো সে
.
শ্রাবণ ছাদের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো”আমার বেতন যতটা আমার খরচ বাদে বাকিটা আমি বাবাকে দিয়ে দিই
তোমার এতে কোনো সমস্যা নেই তো?”
.
না তো?
.
খাগড়াছড়িতে যে বাসায় থাকি সেটাতে ভোর ৫টায় গিয়ে মহল্লারর সবার সাথে ঠেলাঠেলি করে পানি পুরাইতে হয়,পারবা তো?
.
কিহহ?!!!আচ্ছা পারবো
.
আজকে যে পিঠা বানাইসো চিনি এত কম দিসো কেন?
.
আমি মাকে বলসি চিনি বেশি করে দিতে মা আমাকে বললো চিনি নাকি আপনারা কম খান
.
তার মানে তুমি পিঠা বানাও নি,কারণ পিঠাতে চিনি ঠিকমত হয়েছিল, কে বানিয়েছে তা পরীক্ষা করার জন্যই আমি এসব জিজ্ঞেস করসি
.
ইতি জিভে কামড় দিয়ে আরেকদিকে ফিরে গেলো
.
সপ্তাতে একদিন মুরগি রান্না হয় আমার বাসায়,চলবে তো?
.
আপনার বেতন কত?সবকিছুতে এত কম কম কেন?
.
তাহলে ভাবো কত কষ্ট করতে হবে তোমায়,রিয়ান কিন্তু আরও ধনী
ভেবে দেখো!সময় আছে
.
শ্রাবণ দাঁত কেলিয়ে ছাদ থেকে নিচে নেমে আসলো,যা বলেছে সব মিথ্যা জাস্ট ইতির থেকে রক্ষা পওায়ার জন্য
আর ইতি যেমন মেয়ে নির্ঘাত বিয়ে ভাঙ্গবে
.
কিরে শ্রাবণ? ইতি কোথায়?
.
আসতেসে
.
ইতি চোরের মত হেঁটে এসে মাকে একটু কাছে ডাকলো
মা ওর কাছে যেতেই বললো সে এই বিয়ে করতে পারবে না
.
এসব কি বলিস তুই??কেন কি সমস্যা?
.
মা আসলে আমার শ্রাবণকে পছন্দ নাহ
.
ওহ!ঠিক আছে,জোর করবো না তোকে
.
শ্রাবণের মা তো খুশিতে আটখানা হয়ে বারবার ইতির দিকে তাকাচ্ছেন
ছোঁয়া পর্দার আড়ালে মুখ লুকিয়ে সবার মুখের ভাবগতি পরোক করে যাচ্ছে
তবে শ্রাবণ হাসতেসে কেন,মনে হয় ও নিজেও বিয়েতে রাজি
ছোঁয়া মন খারাপ করে নিজের রুমে চলে আসলো আবার
.
ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা চকলেট বের করে মুখে দিলো,টুং টাং করে মেসেজ আসলো ফোনে
হাতে নিতেই দেখলো শ্রাবণ মেসেজ করেছে,এই বিয়ে হচ্ছে না
মেসেজটা দেখে ছোঁয়া হেসে দিলো,কেন হাসলো জানে না,ইতি আপুকে সে ভালোবাসে তার ক্ষতি চায় না কখনও,কিন্তু এখন কেন হাসলো সেটাই বুঝতেসে না সে
দৌড়ে আবারও পর্দার আড়ালে এসে দাঁড়ালো ছোঁয়া
শ্রাবণের মা এতক্ষণ দাঁত কেলিয়ে হাসতেসিলেন আর এখন তার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে আছে
মা বলতেসেন ইতির নাকি বিয়েতে মত নেই,উনি তাই আর কিছু বললেন না,পিউকে দেখে চলে গেলেন,শ্রাবণ যাওয়ার সময় ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে গেলো
ইতি রুমে এসে শাড়ী চেঞ্জ করতেসে
.
আপু তুমি না বলসো শ্রাবণ ভাইয়াকে বিয়ে করবা?
.
হুম বলসিলাম,বাট একদম ফকির,এরে বিয়ে করে আমার কোনো লাভ হবে না
.
ফকির?কে বললো
.
ভোরে নাকি গিয়ে মহল্লার সবার সাথে মিলে পানি পুরাইতে হয় তার উপর সপ্তাতে একদিন মুরগি রাঁধে আর তুই তো জানিস ২দিন বাদেই আমি মুরগি খাই
.
এইটুকুর জন্য তুমি বিয়েতে রাজি না?
.
হুম,আমি পারফেক্ট সো আমার হাসবেন্ড ও পারফেক্ট হতো হবে,অবশ্য তুই শ্রাবণকে বিয়ে করতে পারিস,তুই তো পারফেক্ট না,শ্রাবণ ও না
.
ছোঁয়া হেসে চলে আসলো,শ্রাবণের ফোন এসেছে,শ্রাবণ তো সব ঘটনা খুলে বললো ছোঁয়াকে,ছোঁয়া হাসতে হাসতে শেষ
মা তো নাকি অনেক রেগে আছে,তার ছেলের মধ্যে কোনো কমতি নাই আর ইতি তাকে পছন্দ করলো না,মা তো এখন ইতির নাম শুনতেই খেঁপে যাচ্ছে
শ্রাবণ ইতিকে যা যা বলেছে সব যে মিথ্যা তা সে ছোঁয়াকে জানালো,ছোঁয়া ভাবতেই পারতেসে না শ্রাবণ বিষয়টাকে এত স্মার্টলি হ্যান্ডেল করে নিয়েছে
ছোঁয়া একটা বড় শ্বাস নিয়ে নুডুলস বানাতে চলে গেলো
২মিনিট বাদেই শ্রাবণের আবার মেসেজ আসলো যে কাল তারা দেখা করবে
ছোঁয়াও রাজি হলো
পরেরদিন সকাল বেলা নাস্তাটা সেরে ছোঁয়া একটা কালো রঙের থ্রি পিস পরে তৈরি হয়ে নিলো
ইতি টিভি দেখতে দেখতে বললো”কালোদের কালোতে মানায় না,বেকুব,অন্য কালার পরে যা”
কিন্তু ছোঁয়ার কালো রঙটাই ভালো লাগে,তাই সে বেরিয়ে পড়লো
কিছুদূর হাঁটতেই শ্রাবণ বাইক নিয়ে হাজির হয়ে গেলো ওর সামনে
.
ছোঁয়া ওর বাইকে উঠে বললো”কি ব্যাপার?হঠাৎ দেখা করতে চাইলেন?”
.
বাসায় ভাল্লাগতেসিলো না,তাই ভাবলাম ঘুরি,পরে ভাবলাম একা কেন,তোমাকে নিয়েই ঘুরি
.
ভালো করসেন,আমারও বাসায় থাকতে ভালো লাগতেসিলো না
.
দুজনে মিলে “নুহাশ পল্লী “তে আসলো
.
ছোঁয়া তো খুব মজা করতেসে,এত ভালো লাগতেসে তার
শ্রাবণ দাঁড়িয়ে ছোঁয়ার চোখে মুখে হাসি দেখছে
যাকে বলে প্রাণখোলা হাসি
মিতুলের চোখেও এই হাসি সে দেখেনি কোনোদিন
.
কালো রঙের জামাটাতে ছোঁয়াকে অনেক ভাল্লাগতেছে
মুখ ফসকে কথাটা বলেই দিলো শ্রাবণ
ছোঁয়া থমকে শ্রাবণের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে বললো”কিন্তু কালোদের তো কালোতে মানায় না”
.
কালোদের কালোতেই মানায়!বিশেষ করে শ্যাম বর্নের মেয়েদের অনেক ভালোমতন মানায়,সবারটা জানি না তবে আমার কাছে বেশ লাগতেসে
.
ছোঁয়া মুচকি হেসে বললো”আপনাকে আজ হিমু হিমু লাগতেসে হলুদ পাঞ্জাবিটাতে
.
তাই বুঝি,তা আমার রুপা কোথায়?
.
আছে বিয়ের সময় এসে হাজির হবে
.
দুজনে এবার হাঁটতে শুরু করলো,কিছুদূর গিয়ে ঘাসের উপরই বসে পড়লো
শ্রাবণ হাতে একটা বুনোফুল নিয়ে আকাশের দিকে ধরে বললো”আমরা ঝগড়া থেকে হঠাৎ করে ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম না??”
.
ছোঁয়া ফোনে কয়েকটা ছবি তুলতে তুলতে বললো’হুম”
তারপর ফোনটা রেখে শ্রাবণের দিকে ফিরে বসে বললো”আচ্ছা আমরা কি বেস্টফ্রেন্ড হতে পারি না?”
.
শ্রাবণ ব্রুটা কুঁচকিয়ে বললো তবে এক শর্তে
.
কি?
.
চুরি কমিয়ে দিতে হবে
.
না,এটা পারবো না,থাক আপনার বন্ধুত্ব্ব আমার লাগবে না হুহ!
.
যে মেয়ে তার অভ্যাস ছাড়তে পারে না সে আমাকেও ছাড়বে না
.
হিহি
.
তোমার আর ইতির মধ্যে অনেক তফাৎ
.
হুম,আমি কালো আর আপু ফর্সা
.
না সেটা নয়,স্বভাবের কথা বলতেসি
.
হয়ত আমি ফর্সা হলে আমিও এমন হতাম
.
মানে?
.
মানে যখন আপনি সুন্দর হোন তখন চারপাশের মানুষ আপনার সাথে আলাদা একটা ভালো ব্যবহার করে,সবসময় আপনাকে প্রসংসার কাতারে রাখে এতে করে আপনার একটা অহংকার সৃষ্টি হয় যার কারণে আপনার সব কিছুতে সেই অহংকার প্রস্ফুটিত হয়
আর যখন আপনি কুৎসিত হোন তখন কেউ সেধে আপনার সাথে কথা বলতে আসে না
আপনি একাকিত্বতে থেকে থেকে নিজেই নিজের হয়ে যান,মানে নিজেই নিজেকে ভালোবাসতে শিখেন
এই হলো তফাৎ
.
বাপরে বাপ,তোমার তো লেখিকা হওয়া উচিত ছিল
.
কেন?
.
এরকম যুক্তি তো আম জনতার থাকে না,লেখক লেখিকারাই এমন যুক্তি দিতে জানে,লাইক হুমায়ুন আহমেদ,তারই বাড়ি তো “নুহাশ পল্লী”
.
হয়ত নুহাশ পল্লীতে তার লেখনীর সব ছোঁয়া মিশে আছে সেই ছোঁয়া আমাতে লেগেছে আর আমি কবি কবি ভাব দেখাচ্ছি
.
হাহাহা,তোমার কথাগুলো জোস!
.
ধন্যবাদ শ্রাবণ ভাইয়া!
.
ভাইয়া?আচ্ছা ছোঁয়া আপু!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে