একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_২
#Writer_Afnan_Lara
?
ছোঁয়া!!!
.
হ্যাঁ ভাইয়া বলো
.
তুই কই ছিলি এতক্ষণ?? ইতি তোকে খুঁজতেসে,যা ওর কাছে
.
ওরে বলো আমার কাছে আয়না নেই,আমার কাছে আয়না থাকে না তারপরেও সবসময় আমার কাছেই আয়না খোঁজে সে,এত সাজগোজ দিয়ে কি হবে?বিয়েটা তো তোমার আর পিউ ভাবীর!
.
ইতির কথা না শুনলে সব উল্টায় ফেলবে যা এখন
.
ছোঁয়া অভ্রর দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো বউয়ের বাসার দিকে
দালান করা যে দুটো রুম আছে তার মধ্যে একটাতে ইতি বসে আছে,ছোঁয়ার বড় বোন সে
.
কিরে ছোঁয়া!!তোকে খুঁজতে খুঁজতে আমার জীবন যৌবন শেষ
তুই আবার অভ্রর সাথে চিপকুর মত লেগে ছিলি বুঝি?
.
কই চিপকুর মত লেগে ছিলাম,দূরেই বসেছিলাম
.
চোখকে সংযত রাখ,অভ্র এখন বিবাহিত
.
কিসের জন্য ডাকসো?সেটা বলো
.
আমার চুলে এই ফুলগুলো লাগিয়ে দে
.
ওমা রজনীগন্ধার মালা!!কোথায় পেলে তুমি!!আমাকে দাও না প্লিস,প্লিস!
.
চুপ!কত কষ্ট করে খুঁজে আমি এসব আনছি,পিউ ভাবীর বড় ভাইয়ের বাগান থেকে
সব তুলে এই নিয়ে মাত্র একটা মালা বানাতে পারলাম,নে মাথায় লাগিয়ে দে
.
ছোঁয়া মুখ বাঁকিয়ে ফুল লাগাতে লাগাতে বললো”পিউ ভাবীর আবার ভাই আরেকটাও আছে নাকি,ধানিলঙ্কা একটা আছে পাতলা শুটকি,আবার আরেকটা শুটকিও আছে?
.
কি জানি!আমি তো দেখিনি সবে শুনলাম সে নাকি কাল রাতে খাগড়াচড়ি থেকে ফিরেছে,তাই হয়ত আমরা এতদিন দেখিনি
হইসে তোর?
.
হুম
.
ছোঁয়া ফুল লাগিয়ে রুম থেকে বের হলো,রজনীগন্ধার নাম শুনছে তাকে আর কে আটকায়,চুপিচুপি উঠানে নেমে এদিক ওদিক চেয়ে সে গেলো রজনীগন্ধার বাগানটা খুঁজতে,সবচেয়ে প্রিয় ফুল তার রজনীগন্ধা!!
অবশেষে বাগানটা পেলোই,সামনে একটা ছোট্ট পুকুর
তার আগে বাগানটা পড়ে,পাশ কেটে পুকুরে যেতে হয়,বাগানটায় বড় করে সাইনবোর্ডে লিখা আছে
“”এই বাগানের দিকে তাকানোও নিষেধ”
ওমা এটা দেখি ছোট একটা বাগান,আবার সাইনবোর্ড ও লাগানো,আর ইতি আপু তো দেখি পুরো বাগান খালি করে দিসে, এখন শুধু একটা কলি আলা রজনীগন্ধা আছে আর একটা ফুল ও নেই
ছোঁয়া হাত দিয়ে কলিটা ধরে পিছন ফিরতেই একটা ছেলেকে দেখে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলো একটু দূরে
ছেলেটা কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে আছে,মনে হয় গিলে খাবে
লম্বা বলতে একটু মাথা উঁচু করে তাকাতে হয় এই আর কি,ফিল্মের নায়কের মত ৬ফুট না তবে কাছাকাছি হবে
গায়ের রঙটা মেয়েদের মত সাদা,তবে ওতো ফকফকা না
চাপা দাঁড়িও আছে,গায়ে লাল পাঞ্জাবি, হাত দেখি মুঠো করে রাখসে
“কি সমস্যা?? এরকম সংয়ের মত দাঁড়িয়ে আছেন কেন আপনি?আমার আর একটুর জন্য হার্ট এটাক হতো,আজব লোক!”
.
আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে আমার বাগানের ফুল চুরি করতে লজ্জা করে না?দেখে তো ভদ্র ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে তবে স্বভাব চুন্নি কেন?
.
কি বললেন আপনি?আমি চুন্নি মানে চোর??আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে চোর বলার?
.
চোরকে চোর বলবো না তো কি ডাকাত বলবো?আমার বাগানের সব রজনীগন্ধা শেষ দিয়ে এখন বড় বড় কথা বলতেসেন,আপনার দেখি লজ্জা শরম বলতে কোনো কিছুই নাই
.
শুনুন!আপনি অতিরিক্ত কথা বলতেসেন,না জেনে কাউকে দোষ দিবেন না,আমি মোটেও ফুল চুরি করিনি
আমি ছুঁয়ে দেখসি শুধু,ব্যস আর কিছু না,একটাও ছিঁড়ি নাই
.
শ্রাবণ মাথা বাঁকা করে পুরো বাগানটায় চোখ বুলিয়ে নিয়ে ব্রু কুঁচকে বললো”বাগান তো খালি করে দিসেন আবার বলেন ফুল চুরি করেন নি!”
.
আপনি আবারও চুরি চুরি বলতেসেন,বললাম তো আমি চুরি করিনি,দেখুন আমার হাতে কি ফুল আছে?
.
হয়ত লুকিয়ে কোথাও রেখেছেন,মা এদিকে আসো,এসব লোককে কেন দাওয়াত দাও!!
বিয়ে খেতে আসে না চুরি করতে আসে
আমার পার্সোনাল বাগানকে ছোঁয়ার সাহস দিলো কে আপনাকে,সাইনবোর্ড চোখে দেখেন না?
“এই বাগানের দিকে তাকানোও নিষেধ”বড় বড় করে লিখা তারপরেও আপনি কিনা আমার বাগান খালি করে দিলেন?
.
শাট আপ,পাগল ছাগল!!দোষারোপ করার জায়গা পায় না,আব্বুউউউ আম্মুউউ,ইতি আপু,আবিদ ভাইয়া!!এদিকে আসো
.
মশা মারতে কামান ডাকতেসেন?নিজে পারেন না লড়তে?
.
আপনার সাথে কথা বলাই আমার সময় ওয়েস্ট ছাড়া আর কিছু না
কথাটা বলে ছোঁয়া চলে যেতে নিতেই শ্রাবণ ওর পথ আটকালো
.
৫০০ টাকা দিন
.
কেন দিব?
.
আমার বাগানের সব ফুলের দাম!
.
একটা কানাকড়ি ও দিব না!
.
শ্রাবণ ছোঁয়ার হাত টেনে ধরলো,তারপর টানতে টানতে নিয়ে গেলো স্টেজের দিকে
.
আমার হাত ছাড়ুন বলতেসি,জনসম্মুখে টিজ করতেসেন আপনি,আপনার সাহস তো কম না
.
শ্রাবণ ছোঁয়াকে স্টেজের কাছে নিয়ে এসে মাইক হাতে নিলো
.
এখন যদি announcement করেন আপনার বডি কেটে টুকরো টুকরো করে বাগানে পুঁতে দিব!
.
শ্রাবণ ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবিদ স্টেজ থেকে নেমে জিজ্ঞাসু চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে বললো “কি হয়েছে ছোঁয়া?”
.
ভাইয়া দেখো না এই লোকটা আমাকে চোর বলতেসে
.
আবিদ ভাই এই মেয়েটা আমার বাগানের সব রজনীগন্ধা শেষ করেছে
.
ভাইয়া আমি করিনি
.
দূরে ইতি তাকিয়ে সবটা দেখে জিভে কামড় দিয়ে লুকিয়ে গেলো,সব দোষ তার,আর দোষটা ছোঁয়ার ঘাড়ে দিয়ে পালানোর অভ্যাস তার অনেক পুরোনো
.
তুই করোস নাই বুঝলাম এখন শ্রাবণ কেও অবিশ্বাস করতে পারি না কারণ তোর প্রিয় ফুল রজনীগন্ধা, তুইও নিতে পারিস
.
ভাইয়া কি বলো এসব,আমি ক্যান নিব
.
শ্রাবণ চোখ রাঙাতেই দূর থেকে একজন ভদ্রলোক এসে শ্রাবণকে ধমক দিলেন
.
কি ব্যাপার শ্রাবণ?? সামান্য ব্যাপার নিয়ে এত বড় ঝামেলা কেন করো তুমি?ফুলই তো নিয়েছে
.
আঙ্কেল আমি নিই নাই
.
বাবা ও আমার পুরো বাগানটা খালি করে দিয়েছে!
.
আচ্ছা,সব বাদ,যে যার কাজে যাও
.
শ্রাবণ ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে রাগে কটমট করতে করতে চলে গেলো,বাবার কথার উপর দিয়ে কথা বলে না সে
তার প্রিয় বাগান এটা,চাকরির জন্য যত্ন নিতে পারে না,পিউ যত্ন নেয়,আর সে ছুটিতে বাড়িতে থাকলে সে নেয়,তার একটা ছোট পাখির খামার ও আছে,একদম ছোট,এই দুইটা তার শখ,আর সেগুলোর মধ্যে রজনীগন্ধার বাগানটা পুরো নষ্ট করে দিলো মেয়েটা,বাগানে গেট লাগানো উচিত ছিল,বেতন পেলে এবার গেট লাগাবে সে,মন খারাপ করে নিজের রুমের তালা খুলে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে বিছানায় এসে বসলো সে
.
ছোঁয়া হনহনিয়ে ইতির কাছে আসলো
আপু তুমি ফুল চুরি করলা আর চোর হতে হলো আমাকে!!
.
তাই?কে বললো?কি বললো?
.
ইতিকে বকেও লাভ নেই,সবসময় ইতির দোষ ছোঁয়ার উপর এসে পড়ে,এটা নতুন না
তাই বাধ্য হয়ে ছোঁয়া চেয়ার টেনে বসে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,দুজন বয়স্ক মহিলা ইতির পাশে বসে ওর সাথে কথা বলতে চাইছে
.
একজন মুখ থেকে ওড়না সরিয়ে বললেন” মা তোমার নাম কি?”
.
ইতি তাবাসসুম
.
ওহহ,এইটা বুঝি তোমার বোন?
.
হুম
.
দুজনের গায়ের রঙ আলাদা তো তাই ভাবলাম হয়ত আপন না
.
হু,আমি একটু ফর্সা এই আর কি,আমি নাকি মায়ের পেটে থাকতে মা হলুদ দিয়ে দুধ খেতো,ওর বেলায় নাকি দাদু বাড়ি ছিল সেখানে গরুর দুধ পাওয়া যেতো না,তাই তো একটু কালো হইসে
ইতি প্রশংসা পেয়ে ফুলতে লাগলো খুশিতে,দেমাগে
.
ছোঁয়া বাইরের দিকে চেয়ে আছে জানালা দিয়ে,দূরে আরেকটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে,সাইড ওয়ালের,একটা খড়ের আরা ও দেখা যাচ্ছে,মাঝে মাঝে উদম বাচ্চা ছেলের দল যাচ্ছে,তারা খেলতেসে সবাই
পিউ গ্রামের মেয়ে,ভাইয়ার ইচ্ছা ছিল গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করবে,আর তাই মা আর বাবা মিলে খুঁজে শান্তশিষ্ট, নম্র ভদ্র একটা ভালো পরিবারের মেয়ে খুঁজে বের করলো
এতদিন তো জানতাম পিউ ভাবীর একটাই ভাই,রোগা পাতলা শুটকি ছেলেটা,কি যেন নাম,অপু,হুম দেখতে কেমন যেন লাগে মনে হয় ফু দিলে মরেই যাবে
.
মহিলা দুজন ইতির সাথে কথা বলতে বলতে মনে হয় দিন শেষ করে দিবে
এরকম ঘটনা নতুন না,কোথাও গেলে মানুষ আগে ইতিকে দেখে পরে ছোঁয়াকে,ইতি ফর্সা আর ছোঁয়া শ্যামবর্ণের
আর বাংলাদেশে তো শ্যামবর্ণ মানে কালা কালা কালা
শ্যামবর্ণ আর কালোর তফাৎ অনেকেই জানেন না,গ্রাম হলে তো কালো ছাড়া কিছুই বলবে না
বরং আপনি যদি বলেন আপনি কালো নন শ্যামলা আপনার সামনে মুখ ভেটকানি দিবে যেন আপনার কথায় তার কোনো বদল হবে না,সে শ্যামলাকে কালোই বলবে
.
ছোঁয়া রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো,এরকম গসিপ তার ভালো লাগে না,শুনতে শুনতে তিক্ত সে
আর ইতি আপু তো কথায় কথায় উদাহরন হিসেবে ওর নাম নেয়
যে আমি তো দুধ ডিম খাই তাই রুপের ঝলক বাইয়া বাইয়া পড়ে আমার আর ছোঁয়া একদমই এসব খায় না বলে চেহারার কি হাল হয়েছে দেখসেন??একটু বুঝান,এই রঙ ছেলের পরিবার পছন্দ করে না
নিজের চরকায় তেল দিতে মানুষের কি সমস্যা আমি বুঝি না বাপু!!
.
মা!!মা!!এক কাপ চা পাঠাও!
.
ছোঁয়া রুমের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো এরকম চিৎকারে ভয়ে সে দূরের দেয়ালে ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো,কিরকম চিৎকার করলো,বেয়াদব একটা ছেলে
আল্লাহ জানে পিউ ভাবী কেমন,অবশ্য কথাবার্তা তো শান্ত স্বভাবের,তাহলে উনার বড় ভাইয়া এমন গন্ডার হলো ক্যান
আল্লাহ মালুম
অবশ্য ইতি আপু ফর্সা আর আমি তো শ্যামলা,সেম ডিজাইনের দুই কালার!হয় হয় এমনটা হয়!!
এক পরিবারে বাঘ/সিংহ জন্ম নিতেই পারে যদি বাবা মা বাঘ সিংহ হয়ে থাকে,আমার আম্মু তো ফর্সা খালি আব্বু আমার কালার
ছোঁয়া দেয়ালে হেলান দিয়ে গালে হাত দিয়ে ভাবতেসে এসব,গভীর চিন্তায় মগ্ন সে
শ্রাবণ রুমের দরজা খুলেই দেখলো ছোঁয়া সামনের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে কিসব ভাবতেসে উপরে টিনের দিকে চেয়ে
.
শ্রাবণ বামপাশে ডানপাশে তাকালো,বিয়ে শেষ বলে সবাই এখন গেটের দিকে গেছে,কেউ নেই বললেই চলে,সবাই এখন বউয়ের বিদায় দেখবে,কান্নাকাটি করবে
শ্রাবণ পাঞ্জাবির হাতা উঠিয়ে এগিয়ে আসতে যেতেই ছোঁয়া শ্রাবণকে দেখতে পেয়ে ব্রু কুঁচকে সেও এগিয়ে গেলো,মুখ উঁচু করে বললো”কি?এমন করে চেয়ে আছেন কেন?বিনা অপরাধে তো আমাকে যা নয় তাই বলছেন,এবার কিছু বলতে আসলে আপনার বাগানে যা অবশিষ্ট আছে সেটাও ধংস করে দিব আমি,চেনেন আমাকে?
.
ইয়াহ,এক নাম্বারের চুন্নি
কথাটা বলে শ্রাবণ গাল বাঁকিয়ে চলে গেলো বাসা থেকে
ছোঁয়া রাগে চলে যেতে নিতেই থেমে গেলো,শ্রাবণের রুমের দরজা খোলা দেখে
সুযোগ পেয়ে চুপিচুপি ঢুকলো সে,কিছু একটা করতে হবে,আমাকে চুন্নি বলা??চান্দু তোমাকে এমনি এমনি তো ছাড়বো না
হিহি,এবার বুঝবে ঠেলা,ওকে বাই
ছোঁয়া মুচকি হেসে তার কাজ করে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো
বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে দেখলো পিউ তার মাকে ধরে কাঁদছে
মেয়েদের এই সময়টা অনেক কষ্টের হয়,কি করে এতদিন ধরে বাবা মার সাথে থেকে নতুন বাড়ি যায় সে??
এটা তো মেনে নিতেও সময় দেওয়া উচিত,আমি হলে মাটিতে গড়াই গড়াই কাঁদতাম
বিয়ের কথায় মনে পড়লো অভ্র আর প্রিয়ার কথা
ওরা কই!
ছোঁয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো অভ্র তার বাইকে প্রিয়াকে বসিয়ে চলে যাচ্ছে
ছোঁয়া ওদের চলে যাওয়া দেখে মন খারাপ করে আবারও আবিদের পাশে এসে দাঁড়ালো
মা বাবা দূরে গাছতলায় দাঁড়িয়ে আত্নীয় স্বজনের সাথে কথা বলতেসেন,আবিদ ভাইয়া পিউ ভাবীর কান্না দেখতেসে
হাতে টিসু নিয়ে চেয়ে আছে,হাতের মুঠোয় টিসু মুছড়াচ্ছে আর বউয়ের কান্না দেখতেসে
এরেঞ্জ ম্যারেজে এই এক সমস্যা, বউ কাঁদছে তাকে টিসু দিতেও লজ্জা করে আর একটা বাধা কাজ করে
লাভ ম্যারেজ হলে তো হয়ত সবার সামনে চোখই মুছে দিতো,হাউ কিউট!!
চলবে♥