একগুচ্ছ কদম পর্ব : ৫

0
2657

একগুচ্ছ কদম ?
পর্ব : ৫
লেখা : আহমেদ রিপা

মোহোর জন্মদিনের কেক কাটার পর পরই যখন মোহো আর রিদিতা দাঁড়িয়ে কথা বলছিল তখনই পাশে দাঁড়ানো কয়েকটা ছেলে রিদিতাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে লাগলো। যা রিদানশের চোখ এড়ায়নি। কাউকে কল করে বলে দিল ছেলেগুলো বের হলেই আটকে ফেলতে ।

-রিদি আজকে থাক প্লিজ ( মোহো )
-না যে ভাইয়া বকবে আমায় ( রিদি )
-তুমি তোমার ভাইকে এতো ভয় পাও কেন ( ভ্রু কুঁচকে জিগ্যেস করল রিদানশ )
-ভয় না পাওয়ার তো কিছু নেই বড় ভাই সে আমার ( রিদি )
-তোমার ভাইয়ের নাম টা যেন কি ( রিদানশ )
-মাহিদ খান ( রিদি )
-ম মাহিদ তোমার ভাই ( রিদি )
-হ্যা কেন আপনি চিনেন ভাইকে ( রিদি )
-না না আমি কিভাবে চিনব চিনি না ( রিদানশ )
-ওহ আচ্ছা শোন মোহো আমি তাহলে যাই ( রিদি )
-তুমি একি কোথায় যাচ্ছো আমি দিয়ে আসব তোমায় ( রিদানশ )
-আচ্ছা মোহো যাই তাহলে ( বলেই জড়িয়ে ধরলাম মোহো কে )
-আচ্ছা যা !!

গাড়িতে চলতে লাগল । দু’জনের মধ্যে কেউ কথা বলছে না কি বলবে কেউ ভেবে পাচ্ছে না। দু’জনের মনের মধ্যে নিষিদ্ধ অনূভুতি চারা দিয়ে উঠছে ।

-পড়াশোনা কেমন চলছে তোমার ( রিদানশ )
-ভালোই চলছে ( রিদি )
-বাসা থেকে বের হও না যে এখন ( রিদানশ )
-সামনে পরিক্ষা তাই বের হই না ( রিদি )
-পরিক্ষা তাই না কি অন্য কোনো সমস্যা ( রিদানশ )
-না কি সমস্যা হবে ( রিদি )
-হতেও তো পারে ( রিদানশ )
-আমার এই ধরা বাধা জীবনে কোন সমস্যা নেই ( রিদি )
-সেদিন রাতে বেলকনিতে কাঁদলে কেন ( রিদানশ )
-ক কবে ( রিদি )
-মনে করে দেখো ( রিদানশ )
-আপনার এতো কিছু জেনে লাভ নেই বাহিরের মানুষ বাহিরের মানুষের মতোই থাকুন ( রিদি )
-(কথাগুলো শুনতে রিদানশের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল) বাহিরের মানুষ ভাবো আমায় !!
-আপনি তো সেটাই ( রিদি )
-আচ্ছা।

বাকি রাস্তায় আর কেউ কোন কথা বললো না।বাড়ির সামনে আসতেই রিদি বেড়িয়ে চলে আসতে নিলেই রিদানশ বেড়িয়ে আমাকে টেনে ধরলো ।

-কি হচ্ছে টা কি ( নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম )
-কিচ্ছু হয়নি হবে এখন ( রিদানশ )
-আপনি ছাড়ুন আমায় কেউ দেখে ফেলবে ( রিদি)
-ছাড়ব আগে আমার কথার উত্তর দাও ( রিদানশ )
-কিসের উত্তর ( রিদি )
-আমাকে বাহিরের মানুষ ভাবো তুমি । আমার দিকে তাকিয়ে উত্তর দাও ( রিদানশ )
-উত্তর দিতে বাধ্য নই আমি ( রিদি )
-অবশ্যই বাধ্য ( রিদি )
-আমাকে আপনি ছাড়ুন কেউ দেখে ফেলবে ( রিদি)
-দেখুক কি হবে ( রিদানশ )
-আপনার কিছু না হলেও আমার হবে ( রিদি )
-আমার কথার উত্তর দাও আমি তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি ( রিদানশ )
-হ্যা হ্যা ভাবি ( রিদি )
-মাথা নিচু কেনো !! আমার দিকে তাকিয়ে বলো ।( রিদানশ‌ )
-ছাড়ুন তো আমাকে ( রিদি )
-বুঝে গেছি আমার যা বুঝার যাও তুমি ( বলেই জড়িয়ে ধরলো )
-( আনমনেই তার কাঁধে হাত রাখলাম বুঝতে পেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম ) আসছি
-যাও ( বলেই মুচকি হাসতে লাগল)

কেউ একজন দূর থেকে ওদের দেখছিল । রাগে তার চোয়াল শক্ত হয়ে এসেছে । বলতে লাগলো !!

-যেই আগুন আমার বুকে লাগিয়েছিলি সেই আগুন তোর বুকে কেমন লাগবে রিদ । একদিন তোকেও সেই আগুনে পুড়তে হবে । তার ব্যবস্থা আমি নিজে করে দিব । যেই অন্ধকারকে তুই ভয় পাস সেই অন্ধকারকেই তোর ভালো লাগবে যে ( বলেই হাসতে লাগলো আর চোখের কোণে পানি ঝড়তে লাগলো ) ।

বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে মোহো । সবার সামনে হাসি খুশি থাকলেও রাতের এই সময়টা আর হাসি খুশি থাকতে পারে না। আক্ষেপ হয় তার এই সৌন্দর্য এই রূপ তাকে কেনো তার ভালোবাসাকে কাছে এনে দিল‌ না। লোকটাকে প্রথম থেকেই পছন্দ করে কখন যে ভালোবেসে ফেলেছে বুঝতে পারিনি । কতোবার বুঝাতে চেয়েছি কিন্তু ওই যে কথায় আছে না যে নিজে বুঝতে চায় না তাকে হাজার বুঝালেও বুঝবে না। মাঝেমধ্যে মনে হয় তার মনে অন্যকেও আছে । তখন নিজেকে নিজে বুঝায় । তাকে দেখার জন্য ওই বাড়িতে গিয়ে বসে থাকতাম কখন আসবে একটু কথা বলব । কিন্তু প্রতিবারই ইগনর করে চলে গেছে । মন বলে কোনো একদিন সে আমারই হবে । মাথায় চলে সে তোমার নয় তোমার হবেও না। আমি চাই‌ না সে জোর করে আমার হোক । আমি চাই সে ভালোবাসে আমার হোক । কখনো কখনো মনে হয় তার সামনে একগুচ্ছ কদম ? নিয়ে দাঁড়িয়ে বলি ভালোবাসি আপনাকে । ভালোবেসেছিলাম ভালোবাসি ভালোবাসব ।
আমি অপেক্ষা করবো সেদিনের যখন আপনি আমায় কাছে টেনে নিবেন ।

“চোখের দৃষ্টি যেন
মনের গীতি কবিতা
বুকের ভালোবাসা
কোথায় রয়েছে গাঁথা ”
( সংরক্ষিত )

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে