Monday, October 6, 2025







আড়ালে তুমি পর্ব – ১০

#আড়ালে তুমি
পর্ব ১০
লেখকঃ শাহরিয়ার কবির নীল

[ বি.দ্রঃ ৯ম পর্বে তৃপ্তির হাসবেন্ডের নাম ভুল করে রাকিব দিয়ে ফেলেছি। ওটা আকাশ শিকদার হবে। সকালের কাছে ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী ]

শিলা আমার হাত ধরে কান্না করছে। শুধু একবারের জন্য ফিরে পেতে চাইছে। আমার হাত ওর কপালের সাথে নিয়ে নিচ দিকে মাথা করে বসে আছে। এমন সময় ও নিজের মাথায় কারও স্পর্শ অনুভব করলো। ও মাথা তুলে দেখে আমার জ্ঞান ফিরেছে। সাথে সাথে ও আমাকে বুকে জড়িয়ে নিলো। কান্না করতে করতে আমার বুক ভিজিয়ে ফেলেছে। আজ অনেকদিন পর মনে এক ধরনের শান্তি অনুভব করছি৷ তবে ৬ বছরের অভিমানের পাহাড়ে দেবে আছে আগের ভালোবাসা। মনে আছে কিছু প্রশ্ন। এতো সহজে সবকিছুর সমাধান হওয়া সম্ভব না। আমি উঠে বসলাম আর ওকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিলাম।

আমিঃ ম্যাম ক্ষমা পাওয়া এতোটাই সহজ না৷ বললেই ক্ষমা পেয়ে যাবেন। ৫ বছর বিনা কারণে আমাকে আর আমার নিষ্পাপ ছেলেটাকে একা শাস্তি দিয়েছেন। এমনকি প্রথম দিন যখন আপনি আমাকে দেখলেন তখনও আমাকে বুকে জড়িয়ে না নিয়ে ১ বছর নাটক করে গেলেন৷ আমাকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। হয়তো আপনার ভরসা অর্জন করতে পারিনি।

আমাকে এই অবস্থায় উঠে বসতে দেখে শিলা চমকে গেলো৷ কারণ এতো বড় এক্সিডেন্টের পর স্বাভাবিক ভাবে উঠে বসা মোটেও সম্ভব না৷

শিলাঃ তুমি এভাবে উঠে বসলে কিভাবে?

আমিঃ হা হা হা হা। ম্যাডাম আপনি হয়তো নিজেকে অনেক বেশি চালাক ভাবেন। তবে শুধু আপনি না গেম খেলতে আমিও পারি। আর হয়তো আপনার থেকে কয়েকগুন ভালোই পারি।

শিলাঃ মানে? কি বলছো তুমি?

আমিঃ এসব কিছু আমার সাজানো নাটক ছিলো। আমার কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি৷ আমি পুরোপুরি সুস্থ আছি। আমি জানতাম তুমি আমার আশে পাশেই রয়েছো। তোমাকে সামনে আনার জন্য এই নাটকটা করলাম। তবে তুমি হয়তো জানোনা আমার নাটক করার কোনো দরকার ছিলোনা৷ আমি এমনিতেই তোমাকে ধরে ফেলতে পারতাম।

শিলাঃ আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া তুমি ভালো আছো। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর যদি আমাকে এমনিই সামনে নিয়ে আসতে পারতে তবে এসব নাটকের মানে কি? ( আমার হাত ধরে বললো)

আমি এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিলাম৷ তারপর বললাম

আমিঃ প্লিজ কাছে আসার চেষ্টা করবেনা। আমার কথা এখনও শেষ হয়নি। তুমি জানো তোমাকে সেই প্রথমদিনই চিনে ফেলেছিলাম। এতোদিন শুধু আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি যে কখন তুমি আসবে আর আমার অভিমান ভাঙাবে। তবে সেটা তুমি করোনি। তুমি কি করলে ১ টা বছর আমার পরীক্ষা নিলে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি কিনা। নিজের ছেলেটার সাথেও নাটক করলে। এতোদিন পর কাছে পেয়ে একটা বার মা ডাক শোনার ইচ্ছা হয়নি। জানিনা তুমি এমন কিভাবে হলে। তবে এতোদিনে আমি বুঝেছি আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা সময়ের সাথে কমেছে।

শিলাঃ তুমি যদি আমাকে আগেই চিনে থাকো তাহলে এতোদিন বলনি কেনো? কেনো তুমিও আমাকে কাছে টেনে নিলে না?

আমিঃ বড়ই আজব মানুষ আপনি। দীর্ঘ ৫ বছর আড়ালে থেকেও আজ দোষটা আমাকে দিচ্ছেন। আপনি কষ্ট দিবেন, আপনি ছেড়ে যাবেন আর আপনাকে কাছে টানার দায়িত্ব নিতে হবে আমাকে?

শিলাঃ ক্ষমা করে দাও নীল আমাকে। আমি বাধ্য ছিলাম।

আমিঃ মানুষ বাধ্য হলেও এতোটা বাধ্য হয়না যে নিজের দুধের ছেলে কথা ভাববেনা। ৫ টা বছরে একটা কল করতেও মন চাইনি? একবার খোজ নেওয়ার ইচ্ছা হয়নি?

শিলাঃ তুমি বুঝবেনা নীল। আমি বাধ্য ছিলাম৷ আমার অন্য কোনো রাস্তা ছিলোনা৷

আমিঃ রাস্তা কখনও একটা হয়না। বিকল্প পথও হয়। আপনি কখনও সেই বিকল্প পথটা খুঁজার চেষ্টাও করেননি।

শিলাঃ তোমাকে সব বুঝিয়ে বলবো। আগে তুমি বাড়ি চলো।

আমিঃ এখনও তো কিছু বলাই হলোনা। সবটা বলে ফেলি। আচ্ছা আপনি জানেন আপনাকে কিভাবে আমি প্রথমদিনই চিনেছি?

শিলাঃ কীভাবে।

আমিঃ সেদিন যখন আমি ইন্টারভিউ দিতে যায় তখন আপনাকে সালাম দিলাম কিন্তু আপনি উত্তর না দিয়ে রিফাতের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। তারপর যখন আমি সেই চিরচেনা কন্ঠটা শুনি তখনই আমি কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। তারপর যখন আপনার চোখের দিকে দেখি তখন আমি পুরোই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ এই মায়া, এই চোখের ভাষা আমাকে আপনার পরিচয় দিয়ে দিয়েছিলো। তারপর আপনি আমাকে কিছু না জিজ্ঞেস করেই চাকরি দেন৷ এরপর আমাকে এডভান্স ১০ হাজার টাকা দেন যেটা কোনো কোম্পানি কোনোদিন করেনা। জয়েনের আগে অগ্রীম কোনো টাকা দেওয়া হয়না। তার সাথে রিফতাকেও আপনি অফিস টাইমে নিজের কাছে রাখতেন। আপনার এসব কর্মকাণ্ড আমাকে আপনার পরিচয় বলে দিয়েছিলো। আমি অপেক্ষা করতাম তোমার জন্য যে কখন তুমি আমার কাছে এসে সবটা বলবে। একটা কথা জানো কি? আমি জানতাম সেদিন কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে ওই মেসেজটা তুমিই দিয়েছিলে। মোবাইল টিপতে টিপতে যখন তুমি তোমার ব্যাগ থেকে অন্য একটা মোবাইল বের করো তখন আমি সেটা খেয়াল করেছিলাম। তুমি মেসেজ দেওয়ার পর যে ফোন এরোপ্লেন মোডে রেখেছিলে ওটাও আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আর তোমার কাজ দেখার জন্যই আমি সেদিন বলেছিলাম যে তুমি অন্য কারও জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেছো। তারপর তুমি আমাকে অন্য কিছু বুঝাতে চাইলে। আর যখন তুমি ফোনটা বের করার পর পরই আমাকে মেসেজ দাও তখন আমি জানতাম সবকিছু। সেজন্য সাথে সাথে কল করিনি। ২ মিনিট শক হবার এক্টিং করি। আমি সারা রাস্তা ছটফট করছিলাম তবে আপনিও ঘুমান নি।

চাঁদের আলো যখন জানালা ভেদ করে আপনার মুখে পড়ছিলো তখন আমি আপনার চোখের নড়াচড়া বুঝতে পারছিলাম। সেই দিন থেকেই আমি আপনাকে সামনে আনার জন্য প্ল্যান করতে থাকি। জানেন তৃপ্তি ঢাকাতেই আছে। আপনি যেদিন আমাকে মেসেজ দেন আমি সব তৃপ্তিকে খুলে বলি। তবে এটা বলিনি যে আমি আপনাকে চিনি বলেছি আপনাকে সামনে আনার জন্য কিছু একটা করতে হবে৷ তারপর তৃপ্তি আমাকে এই নাটকটা করতে বলে। কারণ আপনি যদি আমাকে এক বিন্দুও ভালোবেসে থাকেন তাহলে আমার এক্সিডেন্টের কথা শুনে কখনই নিজেকে আটকে রাখতে পারবেন না৷ আর আপনার পরিচয় ৪ দিন আগে বর্না আপুকে বলেছি। আমরা সবাই মিলে এই প্ল্যানটা করেছি শুধু আপনাকে আড়াল থেকে প্রকাশ্যে আনার জন্য। আমার কিছুই হয়নি৷ ডাক্তারদের সাথে কথা বললে ওনারাও আমাদের সাহায্য করেছেন। সব কিছু সাজানো।

শিলাঃ তুমি একটা বার আমাকে বলে দেখতে যে আমাকে চিনেছো তাহলে তোমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিতাম। আমি শুধু একটু পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম। আমি মানছি এটা করা আমার উচিৎ হয়নি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। একটা বার আমাকে তোমার বুকে জড়িয়ে নাও। কথা দিচ্ছি সারাটা জীবন তোমার পাঁয়ের নিচে পড়ে থাকবো। তোমার কথার বাইরে আমি একটা কাজও করবো না। সব কিছু স্বাভাবিক করার জন্য আর একজন অপরাধীকে সাজা দিয়ে আমি তোমার কাছে ফিরে আসতাম। তবে ভাগ্য তোমাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছে। আমি জানি তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো তারপরও আমাকে ক্ষমা করে দাও ( হাত ধরে কান্না করছে)

আমিঃ আমার সব কথা শুনলে কিন্তু আমি শুধু একটা জিনিসই জানতে চাই কেনো? কেনো তুমি নিজেকে আড়ালে করে নিলে? এর পিছনের কাহিনী আমি জানতে চাই৷ তবে এখানে না। আমার ফ্ল্যাটে সরি তোমার দান করা ফ্ল্যাটে চলো৷ আমি সব জানতে চাই। রফিক ভাই, আপু তোমরা ওনাকে নিয়ে যাও। আমি বাইক নিয়ে আসছি।

শিলা কান্না করতে করতে গেছে। আমি যেতে পারতাম তবে এই মূহুর্তে ওর থেকে দূরে থাকাটাই আমার জন্য ভালো হবে। জানিনা ও কষ্ট পেয়েছে না পাইনি তবে এতো সহজেই সব মেনে নেওয়া যাবেনা। ৬ বছর খুব কম একটা সময় না। এই ৬ বছরে মরে যেতে পারতাম। সব থেকে বেশি খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে পাশে থাকার পরও ও আমাকে ১ বছর দূরে রাখলো। আমিও পারতাম ওকে বলে দিতে যে আমি ওকে চিনতে পেরেছি। তবে এতিম হলেও আমারও একটা সম্মান আছে নিজের কাছে।

এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পৌছালাম। আমি বর্না আপুকে বললাম যেনো আজকে রিফাতকে কিছু না বলে যে আমি এসেছি৷ আমি শিলার কথা জানতে চাই যে কেনো ও নিজেকে আড়াল করে নিলো৷

আমি শিলাকে আমার ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে নিজে ছাদে গেলাম। কারণ আমি ওর সাথে একাকী সময় কাটাতে চাইনা এখন। প্রায় ১ ঘন্টা থাকার পর বর্না আপু ফোন দিয়ে নিচে ডাকলো। আমি নিচে গেলাম।

চারজন মিলে বসে আছি। সবাই চুপ চাপ। শিলা কান্না করছে। তবে আমি কিছু বলছিনা আর বর্না আপুকেও বারণ করেছি যাতে ওকে একটু কাঁদতে দেয়। নিরবতা ভেঙে আমি বললাম

আমিঃ শিলা চুপচাপ না থেকে কারণটা বলো।

শিলা এবার কান্নার বেগ একটু বাড়িয়ে দিলো। ওর চোখের পানি দেখে খারাপ লাগার কথা হলেও এখন বিরক্ত লাগছে৷

আমিঃ শিলা কান্না থামিয়ে কারণটা বলো। আর নাহলে তুমি চলে যেতে পারো। তবে এবার গেলে আমি কসম করে বলছি আমাদের হারিয়ে ফেলবে। তারপর তুমি যা করো তাতে আমার কোনো মাথা ব্যাথা থাকবেনা। ( একটু ধমক দিয়ে। জীবনের প্রথম কাউকে ধমক দিলাম)

শিলাঃ না না বলছি বলছি। সব বলছি। তাহলে শুনো

★শিলার অতীত★

সংসার জীবনটা আমি অনেক বেশি উপভোগ করছিলাম৷ তোমার জন্য রান্না করা, রাতে বসে গল্প করা, তোমার দেওয়া ভালোবাসা এইসব পেয়ে আমি অনেক খুশি ছিলাম। মা তো সবটা মেনে নিয়েছিলো কিন্তু বাবার জন্য খারাপ লাগতো। তবে তোমার সঙ্গ পেয়ে আমি অনেক বেশি খুশি ছিলাম।

সেই খুশিকে দ্বিগুন করতে আমার গর্ভে আসলো তোমার সন্তান। আমি বুঝতে পারছিলাম তুমি খুশি হলেও আমার জন্য অনেক চিন্তিত। কারণ আমার মতো স্টুডেন্টের জীবন তুমি এভাবে নষ্ট করতে চাচ্ছিলেনা। তবে আমার অনাগত সন্তানের জন্য আমি অনেক বেশি খুশি ছিলাম। ওর নাম কি রাখবো? ওর জন্য কি কি করবো সব ভেবে মনে মনে হাসতাম। আর সাথে তোমার ভালোবাসা তো ছিলোই। সময় বাড়ার সাথে সাথে আমার উৎসাহ ততই বাড়ে। আসলে মা হবার অনুভূতি মুখে বলে বুঝান যাবেনা। আমার প্রেগ্ন্যাসির সময় তোমাকে পাশে পেয়ে অনেক ভালো লাগতো। সাথে মা কিছু দিন পর পর আসতো। জানো মা আমাদের জন্য অনেক দোয়া করতেন। মা চেয়েছিলেন ওনার সব সম্পত্তি আমাকে দিয়ে দিতে। তবে আমি নেইনি৷ কারণ বাবাকে না বলে কিছু করলে পরে মায়ের জন্য ভালো হবেনা।

দেখতে দেখতে আমার সন্তান দুনিয়াতে আসে। এতোদিন যে কষ্ট গুলো পেয়েছিলাম ওকে দেখে তা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। ওকে যখন প্রথমবার কোলে নেই তখন হয়তো আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ ছিলোনা। দিনগুলো ভালোই কাটছিলো। তবে ভালো দিনগুলোর দিকে যে কারও নজর ছিলো সেটা বুঝতে পারিনি। রিফাতের বয়স যখন ৩ মাস তখন হঠাৎ বাবা একদিন আমাকে ফোন দেই।

আমিঃ হ্যালো বাবা? কেমন আছো তুমি?

বাবাঃ ভালো আর রাখলি কই। সেই যে গেলি একটা বারের জন্য ফোন দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করলিনা৷

আমিঃ বাবা তুমি তো আমাকে তাজ্যপুত্রি করে দিয়েছিলে। কোন মুখে তোমার সাথে কথা বলতাম?

বাবাঃ আচ্ছা সব বাদ দিয়ে এখন সব আগের মতো করে নে।

আমিঃ বাবা তুমি সত্যি বলছো? আমাদের মেনে নিবে?

বাবাঃ হ্যাঁ। আর কতদিন এভাবে চলবে বল?

আমিঃ এখন তাহলে আমি কি করবো?

বাবাঃ তুই কালকে আয় বাড়িতে। তোর সাথে আগে মন ভরে কথা বলবো। কালকে তুই একাই আই।

আমিঃ আচ্ছা বাবা আমি আসবো।

বাবাঃ আর তোর জামাইকে বলিসনা এই ব্যাপরে। বলবি ভার্সিটিতে কাজ আছে।

আমিঃ আমি তো ওকে কখনও মিথ্যা বলিনা। তবুও তোমার জন্য এটুকু করতেই পারি।

সেদিন অনেক খুশি হয়েছিলাম এই ভেবে যে আমাদের সুখের দিন হয়তো ফিরে আসবে। বাবার কথা মতো আমি বাসায় গেলাম৷ বাসায় বেল দিতেই মা দরজা খুলে আমাকে দেখে চমকে গেলো।

মাঃ শিলা তুই? তোর বাবা বাড়িতেই আছে মা৷

আমিঃ মা আমাকে বাবাই কালকে ফোন করে আসতে বলেছে।

মাঃ তার মানে তোর বাবা সব মেনে নিয়েছে?

আমিঃ হ্যাঁ মা।

মাঃ কই আমাকে তো কিছু বলেনি?

আমিঃ বাবা হয়তো তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছে।

মাঃ ভিতরে চল।

আমি ভিতরে গেলাম৷ একটু পর বাবা এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। আমরা বসে অনেক্ষন গল্প করলাম। কথার মাঝপ বাবা বললো

বাবাঃ তাহলে জামাইকে আর তোর ছেলেকে রেখে এসেছিস?

আমিঃ হ্যাঁ বাবা। আমাকে যেতে হবে তাড়াতাড়ি। ও হয়তো আমার জন্য চিন্তা করবে।

বাবাঃ শোন এখন তোকে আমি কিছু কথা বলবো। তুই মন দিয়ে শুনবি।

আমিঃ বলো বাবা।

বাবাঃ আগামী সপ্তাহে তোর বিয়ে।

আমি আর মা কথাটা শুনে অনেক খুশি হলাম। এবার তাহলে বিয়ে দিয়েই আমাকে ঘরে তুলবে৷ যদিও মানুষে কি বলবে ভেবে খারাপ লাগছিলো। তবুও খুশি হলাম।

আমিঃ বাবা তুমি সত্যি বলছো? আমাদের আবার বিয়ে দিবে?

বাবাঃ হ্যাঁ।

আমিঃ তাহলে আমি নীলকে সবটা খুলে বলি। ও অনেক খুশি হবে।

বাবাঃ তুই হয়তো আমার কথাটা বুঝতে পারিসনি।

আমিঃ এটা আবার না বুঝার মতো কি?

বাবাঃ আমি বলেছি তোর বিয়ে সামনে সপ্তাহে আমি এটা বলিনি যে তোর বিয়ে নীলের সাথে। আমি তোট বিয়ে এমপির ছেলে রকির সাথে ঠিক করেছি।

কথাটা শুনে যেনো আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। মা ও হতবাগ হয়ে গেছে বাবার কথায়।

মাঃ এই তুমি এসব কি বলছো? ওর নিজের ঘর সংসার আছে একটা ছেলে আছে। আর তুমি কিসব আজেবাজে কথা বলছো?

বাবাঃ আমি কোনো মজা করছিনা। ভার্সিটি যাবার সময় রকি ওকে দেখে পচ্ছন্দ করেছে। এমপি সাহেব নিজে আমাকে বলেছেন। আর আমি চাইনা ওই এতিমের বাচ্চার সাথে আমার মেয়ে সংসার করুক।

আমিঃ বাবা তুমি পাগল হয়ে গেছো? আমার ঘর ভাঙতে চাইছো তুমি?

বাবাঃ আমার এই কথা তোকে মানতেই হবে।।

আমিঃ বাবা আমি কিছুতেি আমার স্বামী সন্তান ছেড়ে আসবোনা। আর কতটা নিচু মানসিকতার মানুষ হলে তুমি এসব কথা বলো?

বাবাঃ আমি যা বলেছি তাই হবে। আগের বার আটকে রাখতে পারিনি তবে এবার যেতে পারবিনা।

আমিঃ আমি তোমার কথা শুনতে বাধ্য নই। তুমি আমাকে তাজ্যপুত্রি করেছো তাই এখন আর তোমার অধিকার নাই।

বাবাঃ বেশি কথা বলিসনা। এখন এই বাড়ি থেকে তুই এক পাঁও এগোতে পারবিনা।

মাঃ এসব কাজ করনা। তোমার মেয়ে অনেক সুখে আছে ওর ঘর এভাবে নষ্ট করোনা।

বাবাঃ আমি কিছু জানিনা। আমি চাই রকির সাথে ওর বিয়ে দিয়ে ওর শশুরের লোকবলের মাধ্যমে এলাকার মেয়র হতে।

আমিঃ ছিঃ বাবা ছিঃ। তার জন্য নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দিবে? আমাকে মেরে ফেললেও আমি এই কাজ করতে পারবোনা৷ চাইলে আমাকে মেরে ফেলো।

বাবাঃ তোকে মেরে ফেলতে পারবোনা৷ তবে তোর ছোটলোক এতিম জামাই আর ওর ছেলেকে মারতে আমার সময় লাগবেনা।

আমিঃ বাবা তুমি এতোট নিচে নেমে গিয়েছ? আমার স্বামী সন্তানের ক্ষতি করতে চাইছে? ( কান্না করে)

বাবাঃ আমি চাইনা তবে তুই রাজি না হলে আমি বাধ্য হবো।

আমিঃ তার চাইতে বরং তুমি আমাকে মেরে ফেলো। আমি তোমার পাঁয়ে ধরি বাবা আমার নিজ হাতে সাজানো সংসার তুমি এভাবে ভেঙে দিয়োনা? ( পাঁয়ে পড়ে কান্না করছি)

বাবাঃ আমি কিছু শুনতে চাইনা। আর শোন তোর আর ওর ফোন কিন্তু ট্র্যাক করা হবে। ভুলেও যদি ওর কাছে কল যায় তাহলে সাথে সাথে ওদের মেরে ফেলা হবে।

মাঃ এতো বড় পাপ তুমি করোনা৷ এর প্রায়শ্চিত্ত করতে পারবেনা। আমার কথাটা শুনো।

বাবাঃ আমি কিছু শুনতে চাইনা। আর শিলা তোকে আগেই সাবধান করছি ভুলেও কারও সাথে কথা বলার চেষ্টা করবিনা। নাহলে যার সাথে কথা বলবি সবাই মরবে।

আমিঃ আমার স্বামী সন্তানের ভয় দেখিয়ে হয়তো তুমি আমাকে আটকে রাখলে। তবে একটা কথা জেনে রেখো তোমার মরা মুখটাও আমি দেখবোনা। এমন সময় আসবে আমাকে একটাবার দেখার জন্য আকুতি মিনতি করবে। তবে সেইদিন আমাকে দেখতে পাবেনা। আমি বিয়ে করবো। তবে আমি আজ তোমাকে অভিশাপ দিচ্ছি কোনোদিন তুমি সুখী হবেনা৷ আমার বিয়ের পরই আমি আত্মহত্যা করব।

বাবাঃ এসবের চেষ্টা করলেও ওদের মরতে হবে।

আমিঃ মেরে দিও। এমনিতেও আমাকে ছাড়া নীল পদে পদে কষ্ট পাবে। আমাকে অন্য ছেলের সাথে দেখে তিলে তিলে মরার চেয়ে বেশি ভালো ওকে মেরে দিয়ো। সাথে আমার ছেলেকেউ। কারণ একজন এতিমের কষ্ট আমি বুঝি। নিজের স্বামীকে দেখে আমি বুঝেছি।

সেদিন বাবার প্রতি আমার ঘৃনা পৃথিবীর সব জিনিসের চাইতে বেশি ছিলো। আমি পারলে সেখানেই তাকে মেরে ফেলাতাম। তবে আমি পারিনি। তবে আমি অন্য কারও হতেও পারতাম না৷ তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি পালিয়ে যাবো। তোমাকে ফোন করতে পারতাম না৷ কারণ আমার ভয় ছিলো বাবা যদি তোমাকে কিছু করে বসে? তাই ফোন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বাবা মায়ের ফোনও বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলো। আমি বাড়ি থেকে পালার সুযোগ পাচ্ছিলাম না৷ একটা ব্যাগে কিছু জামা কাপড় আর কিছু টাকা নিয়ে আমি রেডি ছিলাম৷ ৪ দিন আমি কোনো সুযোগ পাইনি। ৫ ম দিন রাতে আমি সুযোগ বুঝে আমি পালিয়ে যায়। তবে যাবা আগে একটা চিঠি লিখে গেলাম।

তারপর সেই রাতে আমি একা একটা মেয়ে রাতের অন্ধকারে পালাচ্ছিলাম। কাউন্টারে গিয়ে ঢাকার একটা টিকিট কেটে অজানার দিকে পাড়ি দেই৷ কারও সাথে যোগাযোগ করার আমার সাহস হয়নি।

তারপর আমি ঢাকায় আসি। আমি যে টাকা নিয়ে এসেছিলাম তা দিয়ে আমি হোটেলে উঠি। আর তবে আমার কাজের প্রয়োজন ছিলো। তবে বাইরে যাবার আগে আমি নিজেকে পর্দার আড়ালে ঢেকে নিলাম৷ দুইদিন চাকরি খোজার পর কোনো জায়াগাতে কোনো চাকরি পেলাম না।

একদিন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ফিরতে একটু সন্ধ্যা হলো। আমি বেখেয়ালি ছিলাম। প্রতিটা সেকেন্ডে আমার ছেলে আর তোমার কথা মনে পড়তো। জানিনা তুমি আমাকে খুঁজে না পেয়ে কি করছিলে তবে আমি নিরুপায় ছিলাম। আমি এটাও জানতাম না যে বাবা তোমার সাথে কিছু করেছে কিনা। তবে এরকম কোনো কিছু জানতে পারলে আমি নিজেকে শেষ করে দিতাম।

যাইহোক সেদিন বেখেয়ালি ভাবে রাস্তা পর হচ্ছিলাম৷ এর মাঝে আচমকা একটা প্রাইভেট কার আমাকে ধাক্কা দিলো। যদি গাড়ির গতি বেশি ছিলোনা। আমার তারপর কিছু মনে নেই। যখন চোখ খুলি তখন ৪০-৪৫ বছর বয়সি একজন মানুষকে আমার পাশে দেখতে পাই। আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করি

আমিঃ আমি কোথায় আছি? আর আপনি কে?

লোকটাঃ শান্ত হও মা। তুমি রাস্তা পার হবার সময় আমার গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে একটু আহত হয়েছিলে। আমি তোমাকে নিয়ে আসি।

আমিঃ আমাকে যেতে হবে। চাকরি খুজতে হবে আমাকে। আংকেল আপনাকে ধন্যবাদ আমার সাহায্য করার জন্য। তবে আমাকে এখন যেতে হবে।

লোকটাঃ আরে মা তুমি এতো উত্তেজিত হবেনা। এখন তো তুমি কোথাও যেতে পারবেনা৷

আমিঃ কিন্তু আমার তো চাকরি খুঁজতে হবে৷

লোকটাঃ চাকরি কিসের জন্য?

আমিঃ আমি তো এখন অসহায়। চাকরি না করলে চলবো কিভাবে?

লোকটাঃ আচ্ছা তোমার সাথে কি হয়েছে আমাকে খুলে বলবে?

আমিঃ সেরকম কিছু হয়নি আংকেল।

লোকটাঃ দেখো আমি তোমার মুখ দেখেই বুঝতে পারছি যে তোমার সাথে কিছু একটা হয়েছে। আমাকে খুলে বললে হয়তো আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।

আমিঃ আসলে আংকেল হয়েছে কি ( সব খুলে বললাম। বলা শেষে নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। কান্নায় ভেঙে পড়লাম)

লোকটাঃ আচ্ছা তোমার সার্টিফিকেট আছে?

আমিঃ এইচএসসির সার্টিফিকেট আছে আংকেল। ভার্সিটি তো শেষ করতে পারিনি।

লোকটাঃ তোমার আইডি কার্ড আছে?

আমিঃ জ্বী আংকেল আছে।

লোকটাঃ তাহলে তুমি কোনো চিন্তা করবেনা। আমি ******* কোম্পানির মালিক। তুমি সুস্থ হলে আমার অফিসে জয়েন করবে।

আমিঃ এতো কিছু আমার জন্য কেনো করছেন?

লোকটাঃ বেশি প্রশ্ন করবেনা। আর আজকে আমি তোমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো।বাড়িতে আমি আর আমার মেয়ে থাকি। আমার স্ত্রী মেয়েটাকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেছে। এখন ওকে নিয়ে আমি একা থাকি। তবে আজ থেকে তুমি আমার সাথে থাকবে। আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা এই নিয়ে।

এরপর আংকেল আমাকে ওনার সাথে ওনার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। ওনার মেয়েটাও ছিলো একদম তার মতোই। বড় মনের মানুষ ওরা। আস্তে আস্তে আমি সুস্থ হয়ে উঠি।

কিছুদিন পর থেকে আংকেলের অফিসে জয়েন করি৷ ২ মাস লাগে আমার কাজ শিখতে তবে বেতন অনেক বেশি দিতো। তার সাথে ওনার বাড়িতে থাকতে পেতাম। দিনগুলো চলছিলো। তবে রাত এলেই তোমার কথা মনে পরতো, নিজের ছেলেটার জন্য মনটা ছটফট করতো। মন চাইতো ছুটে চলে যায় তোমার কাছে। একটা বার কল দিয়ে খোজ নেওয়ার ইচ্ছা হতো। তবে ফোন দিতে গেলে প্রথমত আমার লোকেশন আমার বাবা ট্র্যাক করতে পারত আর দ্বিতীয়ত তোমার সুরক্ষার জন্য।

আমার কাজ ভালোই চলছিলো। অনেক অল্প সময়ের মধ্যেই উনি আমাকে সিনিয়র পদ দিয়ে দেন। আমি এতো তাড়াতাড়ি এতো বড় দায়িত্ব নিতে চাইনি। তবে ওনার জোরাজুরির জন্য হার মানতে হয়।

সব কাজ ভালোই চলছিলো। আমি নিজেকে সম্পূর্ণ পর্দার আড়ালে করে নিয়েছিলাম। আমি চাইতাম না যে কোনো পর পুরুষ আমাকে দেখুক। তবে এতোকিছুর পরও অফিসের আরেক সিনিয়র অফিসার আমাকে বিয়ে প্রস্তাব দিয়ে বসেন। প্রায় প্রতিদিন উনি আমার সাথে এই নিয়ে কথা বলতে আসতেন। একদিন তো উনি তার মাকে দিয়েও ফোন করায়। আমি তখনও উনাকে বলিনি যে আমি বিবাহিত আর আমার বাচ্চা আছে। একদিন লাঞ্চ টাইমে উনি এসে আমার সাথে কথা বলতে চাইলেন। তবে আমি তার কোনো কথা শুনছিলাম না৷ তারপরও তিনি প্রশ্ন করলেন

ছেলেটাঃ আচ্ছা তোমার সমস্যা কি বলোতো? আমি তো কোনো হারাম সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছিনা। আমি তোমাকো বিয়ে করতে চাচ্ছি।

আমিঃ আমিও কারও সাথে পবিত্র সম্পর্কে আবদ্ধ আমার একটা ছেলে আছে। প্লিজ আমার সাথে এই নিয়ে কোনো কথা বলবেন না।

ছেলেটাঃ আমি বিশ্বাস করিনা। যদি তোমার স্বামী সন্তান থাকে তাহলে তুমি বসের বাড়িতে উনার সাথে থাকো কেনো? আমাকে ইগনোর করার জন্য তুমি এসব বলছো।

আমিঃ আপনাক মিথ্যা বলে আমার লাভ কি? তাছাড়া আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি।

ছেলেটাঃ আচ্ছা এতোদিন থেকে তোমাকে বলছি তাও তোমার মনে কোনো মায়া সৃষ্টি হলোনা?

আমিঃ আজব ব্যাপার। আপনার প্রতি আমার মায়া সৃষ্টি হবে কেনো? আমার সব মায়া আমার স্বামীর জন্য।

ছেলেটাঃ দেখো আমাকে মিথ্যা বলে লাভ নাই৷ যদি তুমি রাজি না হও আমি নিজের ক্ষতি করবো।

আমিঃ তাতে আপনার ক্ষতি আমার কিছু যায় আসেনা।

ছেলেটাঃ সত্যি তোমার কোনো জায় আসেনা?

আমিঃ হুম। আমার কোনো যায় আসেনা।

ছেলেটাঃ আর কিছু বলার নাই আমার। খু্ব ভালেবাসতাম তোমাকে।

আমিঃ আমাকে কখনও দেখেছেন?

ছেলেটাঃ তোমাকে না দেখেই আমি তোমাকে ভালোবাসি।

আমিঃ আমি ভালোবাসি আমার স্বামীকে।আর কখনও আমাকে এসব কথা বলতে আসবেন না।

সেদিন রাতে ওনার মা আমাকে ফোন দিয়ে বলেন যেনো আমি রাজি হয়ে যায় কারণ তার ছেলে নাকি আমার জন্য কিছু খাচ্ছেনা আর কান্না করছে। তারপরও আমি রাজি হয়নি। হবো কেমন করে? নিজের স্বামী থেকে দূরে থাকলেও আমি তাকে এক সমুদ্র পরিমান ভালোবাসি। তার কিছুদিন পর থেকে ছেলেটাকে আর দেখিনি। আর খোজ নেওয়ার বিন্দু মাত্র প্রয়োজন মনে করিনি।

দেখতে দেখতে ১ বছর কাটে। একদিন রাতের খাবারের পর আংকেল আমাকে বলেন

আংকেলঃ শিলা মা আমি সিলেট চলে যাবো।

আমিঃ কয়দিনের জন্য?

আংকেলঃ ওখানেই শিফট করতে হবে। তুই ও চল আমার সাথে।

আমিঃ না আংকেল আমি এখানেই থাকবো।

আংকেলঃ তাহলে আমি তোকে কিছু বলতে চাই৷ তবে আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবিনা৷

আমিঃ জ্বী আংকেল বলুন

তারপর আংকেল যা বললেন তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সবকিছু যেনো স্বপ্নের মতো লাগছিলো। আংকেল যে আমাকে এই কথা বলবেন তা আমি কখনও ভাবতেও পারিনি। কারণ আংকেল যা বললেন……………..

চলবে…………..

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ