আমি শুধুই তোমার পর্বঃ০২

0
3451

#আমি_শুধুই_তোমার?
#পর্বঃ০২
#Arshi_Ayat

প্রায় ঠোঁট মিলিয়ে ফেলেছে কিন্তু পুরোটা মিলাতে পারে নি তার আগেই কেউ একজন ওকে ইনশিরার থেকে ছাড়িয়ে সজোরে নাকের মধ্যে একটা ঘুষি মারে।তারপর ইনশিরার দিকে না তাকিয়েই বলে

“ইনশু তুই শাড়িটা পড়ে নে আমি আদ্রিকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আর এই শালাকে আমি আর আয়াশ দেখে নিচ্ছি।

এটা বলেই ইনান তিয়াসের কলার ধরে মারতে মারতে বাইরে নিয়ে গেলো আর ইনশিরা কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো।ইনান বাইরে গিয়েই আদ্রিকে বলল

” দোস্ত তুই একটু ইনশুর কাছে যা ওকে সামলা।”

আদ্রি ইনশিরার কাছে যায় আর ইনান আর আয়াশ মিলে তিয়াসকে মেরে হসপিটাল পাঠিয়ে দিছে আর থানায় গিয়ে জিডি করে রাখছে।আর এদিকে আদ্রি ইনশিরার জামা কাপড় চেঞ্জ করে দেয় ইনশিরা বেচারি তো কাঁদতে কাদতে বেহুঁশ অবস্থা। আয়াশ আর ইনান ভার্সিটিতে এসে দেখে আদ্রি আর ইনশিরা বসে আছে।ইনশিরা অনবরত কান্না করছে। আদ্রি পাশে বসে থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু ও থামছেই না।ইনান আর আয়াশ এসে দুটো চেয়ার টেনে ওদের পাশে বসেছে। ইনানকে দেখেই ইনশিরা ওকে জড়িয়ে ধরে কাদতে কাদতে বলল

“দোস্ত তুই না থাকলে আমার মনে হয় গলায় দড়ি দেওয়া লাগতো।”

“ধূর পাগলি তোর তো কিছু হয় নি।সো চিল এতো প্যারা নিস না।”

ওদের কথার মাঝখানে আদ্রি বলে উঠলো

“আমিই ভালো কোনো প্রেম টেম করি নি।”

আয়াশ ওর কথার মাঝে খোঁচা লাগিয়ে বলল

“করবি কেমনে তুইতো মুটকি তোরে তো কেউ পাত্তা দেয় না।”

আদ্রি রেগে বলল

“লাত্তি চিনোছ?”

আয়াশ বত্রিশ দাত বের করে বলে

“না রে চিনি না কিন্তু ইয়া জোরে একটা দিতে পারি।”

ওর কথা শুনে ইনশিরা আর ইনান হেসে দেয়।ইনশিরার হাসি দেখে সবারই ভাল্লাগলো।তারপর ইনান বলল

“গাইস চল কিছু খেয়ে আসি।”

আয়াশ সবার আগে লাফিয়ে উঠে বলল

“চল, চল এখনি চল।”

আদ্রি মুখ ভেংচি দিয়ে বলল

“খালি খাই আর খাই।”

“তোর টাকা দিয়াতো আর খাই না।”

“আমার টাকা দিয়া না খাস কি খাস তো।”

এবার ইনশিরা ইনানকে বলল

“দোস্ত আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আয়।”

ইনান ভ্রুকুচকে বলল

“এখনি চলে যাবি?”

“হ্যা, ভালো লাগছে না।”

ইনান সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল

“উল্টাপাল্টা কিছু করবি না তো?”

“না কিচ্ছু করবো না।”

“আচ্ছা চল।”

ইনান আয়াশ আর আদ্রিকে উদ্দেশ্য করে বলল

“তোরা এখানেই থাক আমি ওকে দিয়ে আসি।”

তারপর ওরা বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।আদ্রি আর আয়াশ ওদের ক্লাসে যায়।কিন্তু ক্লাসের দরজা খুলতেই যা দেখলো তাতে আদ্রি অনেক জোরে একটা চিৎকার দিতে নিলেও পারলো না কারণ আয়াশ এক হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরেছে।তারপর মুখ চেপে কানে কানে বলল

“দোস্ত আস্তে আস্তে আয়।আমার পিছন পিছন একদম শব্দ করবি না।”

আদ্রিও মাথা নাড়ায়।তারপর ওরা পা টিপে টিপে ক্লাস রুমের শেষ মাথায় যাচ্ছে। মনে হচ্ছে দুজন চোর ধরতে যাচ্ছে। আয়াশ ইরা আর জয় ওদের একটু পিছনে দাড়িয়ে বলল

“কি করছিস রে তোরা?”

ওর কথায় দুজনই হকচকিয়ে যায়।কারণ ওরা কিস করছিলো। তারপর জয় বিরক্ত হয়ে বলল

“আসার আর টাইম পাস নাই শালা।”

আদ্রি বলল

“তোমরা এমন খুল্লাম খুল্লাম রোমান্স করবা আর আমরা কইলেই দোষ।”

“তোরা নক করে ঢুকবি তো।”

আয়াশ ওর মাথায় গাট্টা মেরে বলল

“এইটা কি তোমার বেডরুম পাইছো যে নক করমু।”

আদ্রি জয়কে খোচা মেরে বলল

“তো দোস্ত মধু কতটুক খালি?”

জয় রেগে রেরিয়ে যায় আর ইরা অন্য একটা বেঞ্চ বসে পড়ে।আয়াশ আদ্রির কথায় হাসতে হাসতে বলল

“মধু তো খাইতেই পারে নাই।এই জন্যইতো এমন শকুনের মতো মুখ করে চলে গেছে। ”

তারপর আয়াশ আর আদ্রি পিছনের বেঞ্চে বসে পড়ে।একটু পর ইনান এসে ওদের সামনের বেঞ্চে বসে।ওরা চারজন সবসময়ই পিছনের দুইটা বেঞ্চে বসে তাই কেউ ভুলেও ওই বেঞ্চ গুলোতে বসে না।ইনান বসতে বসতে বলল

“দোস্ত আজকে তো ক্লাস টেস্ট তোরা কিছু পারিস?”

আদ্রি মাছি তাড়ানোর ভঙ্গি করে বলল

“এটা কাশফা ইবনাত আদ্রাহার কাছে কোনো ব্যাপারই না।”

“এইজন্যইতো ফেল করো।” (আয়াশ)

আয়াশের কথা শুনে ইনান আর আয়াশ দুজনই হাসতে থাকে।আর আদ্রি মুখ লটকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে।দুইমিনিট পর আয়াশ একটু চিল্লিয়ে বলল

“ফারা আ আ..”

আদ্রি আর আতঙ্কে বলল

“দোস্ত ফারা কই শার্টে নাকি প্যান্টে তাড়াতাড়ি বল।কেউ দেখলে শর্বনাশ হয়ে যাইবো।আর ইজ্জত যাইবো গা।”

ইনান আদ্রির মাথায় গাট্টা মেরে বলল

“আরে ওই যে দেখ ফারা আসছে।দেখিস এসেই আমার পাশে বসে পড়বে।”

ইনানের কথা সত্যি করে দিয়ে আসলেই ফারা ইনানের পাশে এসে বসল আর হাসিমুখে বলল

“হাই ইনান।”

ইনান না পারতে বলল

“হাই।”

বেচারা ইনানের ফেস দেখে আদ্রি আর আয়াশ সেই মজা নিচ্ছে। ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আদ্রি পিছন থেকে বারবার ফারার চুল টান দিচ্ছে। আর ফারা পিছন ঘুরতেই আদ্রি মনে হয় কিছু জানে না এমন ভাব ধরে আছে।এটা দেখে ইনান আর আয়াশ খুব কষ্টে হাসি কন্ট্রোল করছে।ফারা একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে বলল

“ইনান চলোতো এখানে বসবো না।”

ইনান সোজাসাপ্টা উত্তরে বলল

“তোমার ইচ্ছা হলে তুমি যাও আমি যাবো না।”

ফারা রাগে ফুসতে ফুসতে চলে গেলো।”

আদ্রি হাসতে হাসতে ইনানের সাথে হাই ফাইভ করলো।

দ্বিতীয় ক্লাসে ওদের পরীক্ষা। ওরা তিনজনই পরীক্ষা শেষ করে বেরিয়ে পড়লো আজকে আর ক্লাস করবে না।বের হতেই আদ্রি ইনানকে জিগ্যেস করলো

“ইনশু ঠিক আছে তো?”

“হুম ঠিক আছে।বাসায় দিয়ে আসছি।আন্টি জিগ্যেস করছিলো কি হইছে আমি শরীর খারাপ বলে চালাইছি।

আয়াশ ইনানের কাধে হাত রেখে বলল

” ভালোই করছিস।”

ওরা তিনজন হাটছিলো হঠাৎ করেই ইনানের ফোনে একটা কল আসে।ইনান ফোন রিসিভ করে কথা বলতেই ওর চেহারার রং পাল্টায়।ও ফোন রেখেই আদ্রি আর আয়াশকে বলল

“দোস্ত ইনশু হসপিটালে।”

তারপর…….

চলবে….?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে