আমার ক্রাশ পর্ব-১২

0
1988

#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১২
#Tanisha Sultana (Writer)

“সিট বেলটা বাধো

” কিহহহহ

“ছিট বেল

” আপনি বেধে দেন

“পারবো না

” তাহলে এভাবেই যাবো। গাড়িটা জোরে ব্রেক করলে আমার মাথা ফাটবে আপনার তো আর কিছু হবে না। মরলে আমি মরবো। আপনার কি? আপনি তো বেঁচে যাবেন তাই না

“এতো কথা বলো তুমি

সায়ান বিরক্তি নিয়ে তুলির সিট বেল বাঁধতে যায় তুলি সেই সুযোগে টুক করে গালে একটা কিস করে দেয়। সায়ান বড়বড় চোখ করে তুলির দিকে তাকায়। তারপর নিজের ছিটে গিয়ে বসে

” এটা কি হলো

“আপনি জানেন না

” নাহহ জানি না। এতো অসভ্য কেনো তুমি? মিনিমাম কমনসেন্স নেই

“নাহহ নেই। আর জামাইরে কিস করছি এতে অসভ্যতামির কি আছে?

” ইডিয়েট একটা

“আপনারই তো বউ

” সেটাই তো কপাল

“ঢং

সায়ান গাড়ি চালানো শুরু করে।

” আমি দুই মিনিটের বেশি চুপ করে থাকতে পারি না

“তো

” তো আমি কথা বলবোই। পাঁচ মিনিট চুপ করে ছিলাম। এখন কথা আমার পেটের মধ্যে গিজগিজ করছে।

“আল্লাহ

” এতো বিরক্ত হন কেনো বলেন তো? দেখছি তো মনা খালাম্মার সাথে কতো কথা বলতেন তো আমার কথা জাস্ট শুনলে কি হবে আপনার বলেন তো? বউ হই আপনার। গার্লফ্রেন্ড না। আর বউকে সব সময় খুশি রাখতে হয়। গিফট দিতে হয়। অবশ্য আমার এসব কিছু চায় না। আমার অন্য গিফট চায়

“কিহহহহ

” একটা কিউট গলুমলু ক্রাশ বেবি। ও থুক্কু একটা না এতোগুলা বেবি চায় আমার।

“টিকতে পারবা না

” অবশ্যই পারবো। আমার দাদিমার মায়ের কতো গুলা বেবি ছিলো জানেন? বাইশ টা। তো উনি এতো বেবি নিতে পারলে আমি জাস্ট এগারোটা নিতে পারবো না কেনো? আর দেখুন এখন কারো এতোগুলা বেবি নেই তো আমার এতো বেবি হলে আমি আর আপনি ফেমাস হয়ে যাবো। ইতিহাসের পাতায় আমাদের নাম লেখা থাকবে। এতো বেবি না নিলেও ইতিহাসের পাতায় আমার নামটা লেখা থাকবে কজ আমার যে বুদ্ধি নাম না লিখে যাবে কই৷

“আমি পাগল হয়ে যাবো

” পাগল হবেন ঠিক আছে। কিন্তু পাগল হয়ে সব সময় তুলি তুলি করবেন ভুলেও যদি মনা মনা করেছেন তো তো আপনার চুল ছিড়ে টাকলা বানিয়ে দেবো হু

সায়ান গাড়ি থামায়

“কি হলো? গাড়ি থামালেন কেনো? কোনো সমস্যা? নাকি এটুকুতেই হাঁপিয়ে গেছেন

সায়ান তুলির চুলের মুঠি ধরে কাছে এনে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। তুলি মোটেও এটার জন্য তৈরি ছিলো না। চোখ বড়বড় করে ফেলে। পাঁচ সেকেন্ডের আগেই সায়ান সরে নিজের জায়গায় বসে ঠোঁট মুছে। তুলি ঠোঁটে হাত দিয়ে বলে

” এটা লিপ কিস ছিলো?

সায়ান ভ্রু কুচকে বলে

“সন্দেহ আছে

” অবশ্যই। এটাকে পাপ্পি বলে। আপনি কখনো হিন্দি মুভি দেখেন নাই? কিসটাও ঠিক করে করতে পারেন না। পাঁচ সেকেন্ড ও হতে দিলেন না ধুর

সায়ান এমনটা করেছিলো কারণ সায়ান ভেবেছিলো কিস করলে তুলি লজ্জায় আর কথা বলবে না। চুপ করে যাবে। কিন্তু তুলি তো তুলিই। ও চুপ করবে না।
সায়ান এবার নিজের চুল নিজে চানছে।

“আজ আমি আর আপনি ইমরান হাশমির একটা মুভি দেখবো

” কার?

“ইমরান হাশমির। দারুণ কিস করে।

সায়ান কানে হেডফোন দেয়।

শপিং মলে এসে তুলি একটার পরে একটা ড্রেস দেখে যাচ্ছে।
” আর কতোখন

সায়ান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বিরক্তি নিয়ে বলে

“একটাও ড্রেস পছন্দ হচ্ছে না
তুলি অসহায় ফেস নিয়ে বলে। চুজ করে দেন না।

যদিও সায়ান কখনো মেয়েদের জিনিস পছন্দ করে নি। নিজের জামাকাপড় ও মা পছন্দ করে দেয়। কিন্তু এই মুহুর্তে সায়ানের মনে হচ্ছে যত তারাতাড়ি ড্রেস চুজ করবে ততো তারাতাড়ি এখান থেকে বের হতে পারবে। সায়ান চারটা ড্রেস চুজ করে দেয়। তুলি সেগুলো নেয়।

সায়ানের হাতে শপিং ব্যাগ তুলি সায়ানের হাত ধরে হাঁটছে। একটা ছেলের সাথে তুলির ধাক্কা লাগে।
” সরি মিছ
তুলি সায়ানের হাত ছেড়ে ছেলেটার সামনে যায়

“চোখ কি পকেটে রেখে ঘুরেন না কি? না কি মেয়ে দেখলেই ধাক্কা দিতে মন চায়।

” সরি বললাম তো

“কিসের সরি হ্যাঁ। কোনো সরি টরিনা ওকে

” তুলি চলো
সায়ান তুলির হাত ধরে বলে

“যাবো মানে? এই বেডাটা আপনার বউকে ধাক্কা মারলো আর আপনি চলে যেতে বলছেন? ওনাকে মারুন।

” মানে কি?

“ছিনেমায় দেখেন নাই হিরোরা কেমন ডিসুম ডিসুম করে পেটায় ভিলেনদের। দেখেন নাই

” এখানে ভিলেন কে? (লোকটা)

“ইহহহহহ যেনো জানেই না ভিলেন কে? আপনি ভিলেন। আর আমি হিরোইন ও হিরো

লোকটা হো হো করে হেসে ওঠে। তুলি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়। সায়ান মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

” ক্লোজ আপ দিয়ে ব্রাশ করেছেন কিন্তু দাঁত পরিষ্কার হয় নাই।
লোকটা হাসি বন্ধ করে। এবার তুলি হাসে

“স্মার্ট হতে চান তাই না?

সায়ান লোকটাকে সরি বলে তুলির হাত ধরে হাঁটা শুরু করে

” আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন এখনো তো ঝগড়া শেষ হয় নাই

সায়ান তুলিকে গাড়ির কাছে এনে ছেড়ে দেয়। তুলি হাত ডলতে থাকে

“উফফ হাত ভেঙে গেছে। তুলোর মতো হাত কেউ হাতির মতো করে ধরে।

” তুমি চুপ থাকতে পারো না

“নাহহ পারি না তো।

সায়ান সায়ানের রুমাল দিয়ে তুলির মুখ বেধে দেয়। তারপর তুলির শাড়ি দিয়েই তুলির হাত বেধে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। তারপর গাড়ি চালিয়ে বাড়ি আসে।

অভি আর জিসান বসার ঘরে বসে গল্প করছিলো তখন দেখে তুলির হাত মুখ বেধে সায়ান তুলিকে কোলে করে আনছে।

” আরে ব্রো তুলির এই অবস্থা কেন?(জিসান)

“অতিরিক্ত কথা বলে

সায়ান তুলিকে রুমে এনে মুখ হাত খুলে দেয়। তুলি জোরে জোরে শ্বাস নেয়।

” এখন থেকে কথা বললে এই প্রদ্ধতিতে চুপ করাবো

“এটার থেকে কিস ভালো। তোমার মতো হট হট গ্রীষ্মকাল ছেলে হাত মুখ বেধে চুপ করাবে এটা কেমন দেখায়

” তুমি এতো ইডিয়েট কেনো?

“আমি তো জন্ম থেকেই ইডিয়েট

” সেটাই

“লাভ থুক্কু হেট ইউ

” মি টু

সায়াব মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে যায়। তুলি শাশুড়ীর রুমে চলে যায়। শাশুড়ী কাপর ভাজ করতেছিলো

“শাশুড়ী

” এটা কি রকম ডাক😡

“সরি মা

” বস

তুলি বসে।
“কিছু বলবি

” বলছিলাম তোমার দাদি হতে মন চায় না?

“হুম চায় তো

” তাহলে তোমার ছেলেরে বোঝাও

“কি বোঝাবো

” এটাই তুলিকে একটু ভালোবাস। ওকে একটু হেল্প কর। যাতে ও মা হতে পারে

“আমি😱

” তো কি শশুড়কে বলবো না কি?

“নাহহহ

” তাহলে তুমি বুঝাবা

“আমি বোঝাচ্ছি

তুলি পেছনে তাকিয়ে দেখে সায়ান।

” আআআআপনি

তুলি তুতলিয়ে বলে।
“তোমার কি কি লাগবে শুনতে এলাম

” মা আমি আসছি

তুলি দৌড় দিতে যায় সায়ান ধরে ফেলে। রুমে চলো সব বোঝাবো

সায়ান তুলির হাত ধরে রুমে নিয়ে যায়।
“আল্লাহ হেলেপ করো। এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও। আর কখনো ওনার পেছনে লাগবো না। আল্লাহ

সায়ান তুলিকে রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দেয়। তুলি ভয়ে ঢোক খিলে। সায়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলে

” তারপর বলো তোমার কি চায়

“কককই কিছু না তো

” ভয় পাচ্ছ কেনো বলো?

“আমার বেবি চায়
তুলি একটু সাহস করে বলে।

” ওকে দেবো বেবি। এবার বলো কিভাবে তোমাকে বেবি দেবো

“সত্যি তো কিভাবে উনি আমাকে বেবি দেবে
তুলি মনে মনে ভাবতে থাকে।
” জানি

“কোনো বেপার না আমি দেখাচ্ছি

সায়ান তুলির দিকে এগিয়ে যায় তুলি পিছিয়ে যাচ্ছে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে