আজ আমার বিয়ে পার্ট ১৪+১৫+১৬+১৭

0
2677

আজ আমার বিয়ে পার্ট ১৪+১৫+১৬+১৭

রাতে খাওয়া শেষ করে আমি হাতে কাজগুলো গুছাতে লাগলাম।
আমি অযথা কিচেনে লেট করছিলাম।
আমার রুমে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না।
কিছুক্ষনপর আমি কিচেনে কারও পায়ের আওয়াজ পাচ্ছিলাম।
পিছনে তাকাই দেখি ইভান..

আমি ভয় পেয়ে পিছাতে লাগলাম…
আমি পিছাচ্ছি দেখে ইভান একটা টান মেরে আমাকে ওর বুকের কাছে নিয়াসলো….
– এক ফাজলামো সব সময় ভালো লাগেনা।
নাও তোমার ফোন…
আমার কানে ফোন্টা গুজে দিয়ে চলে গেলো…
– কি রে পাগলি…
হ্যাপি মেরিড লাইফ…

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


কেমন আছিস??
– ভালো। তুমি??
– হুম আমিতো বরাবরই ভালো।
তোরা দুজন এক হয়েছিস এতে আমার আরো ভালো লাগছে…
– হুম
– কি রে কিসের হুম হুম করছিস..??
তুই সেদিন যে কি করতে যাচ্ছিলিরে বাবা!!
আমি যদি ইভানকে ফোন না করতাম তাহলে কি হতে যাচ্ছিলো??
একবার ভেবেছিস??
– ও তুমিই তাহলে ইভানকে ফোন করে,
আমার বিয়ের খবরটা জানিয়েছিলে??
-হ্যা। কেন ইভান তোকে বলেনি..??
– না…… মানে….
– থাক এত মানে মানে করতে হবে না।
শোন সেদিন আমি যখন ইভানকে ফোন করেছিলাম…
ও তখন ঢাকা যাচ্ছিলো কোন একটা কাজে…
সবটা শোনার পর ইভান বাস থেকে নেমে পড়ে।
ও তো কথাই বলতে পারছিলো না।
সে কি কান্না..
আমার খুব খারাপ লাগছিলোরে..
শেষ মেষ ও যে তোকে বিয়েটা করতে পারছে এটাই সব থেকে বড় পাওয়া…
সব তোর জন্য…
তুই যে কেন ওর সাথে এমন করিস…
প্লিজ ওকে আর কষ্ট দিসনা..
কেমন…
ভালো থাকিস…
– আচ্ছা তুমিও ভালো থেকো….
আমার খুব কান্না পাচ্ছে…
একবার ভাবছি ওকে ক্ষমা করে দিবো।
কিন্তু ওর আর টুকটুকির ব্যাপারটা এখনো আমার আর ইভানের মাঝে একটা দেয়াল তৈরি করে দিয়েছে…
যেটা চাইলেও আমি উপড়াতে পারবো না।
আমি ফোনটা নিয়ে ইরার রুমে গেলাম…
ইরা টিভি দেখছিলো…
আমি বিছানায় বসে পড়লাম।
খুব খারাপ লাগছে…
বাবার কথা মনে হতেই আরো বেশি খারাপ লাগছে…
– ভাবি তোমার কি মন খারাপ??
– না ইরা।
– তাহলে ভাইয়া কিছু বলেছে??
– না।
– হুম কিছু এক্টাতো তো হয়েছে। আচ্ছা চল আমরা একটা মুভি দেখি….
– ওকে…
আমার ইভানের সাথে ঘুমাতে ইচ্ছা করছে না…
কোনভাবে ইনিয়েবিনিয়ে রাতটা পার করতে পারলেই হলো..
তাই ইরার সাথে মুভি দেখতে থাকলাম..
কোনভাবে ইরার সাথে ঘুমুতে পারলেই হলো।
কিন্তু বিপদটা ঘটলো তখনি…
ইরা কিছুক্ষন পর নিজেই বলতেছে..
– ভাবী অনেক্ষনতো হলো??
ভাইয়া মনে তোমাকে খুজছে..??
আমার মনে হয় তোমার রুমে যাওয়া উচিৎ…
নইলে ভাইয়া রেগে যাবে।
ভাইয়ার রাগতো তুমি জানোনা..
এই মেয়েটা না বেশি পাকনা…
আমি তখনো ঠাই বসে ছিলাম।
-আচ্ছা ভাবি তোমরা কি ঝগড়া করেছো??
যদি সেরকম কিছু করে থাকো তাহলে আমি ভাইয়াকে ডেকে মিটমাট করে দেই…
কি ডাকবো ভাইয়াকে.
ভাইয়া??
ভাইয়া??
আমি ইরার মুখ চেপে ধরলাম।
– ইরা আমি যাচ্ছি..
ডাকতে হবে না। সেরকম কিছুই হয় নাই।
আমি শুধু তোমার সাথে টাইম স্পেন্ড করতে আসছিলাম।
আর তুমি বুঝছো উল্টাটা…
ননদীনী চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকাচ্ছে..
মনে হয় আমার কথা ওর বিশ্বাস হলো না।
– ওই চোখ নামাও..
আমি যাই।
গুড নাইট..
– গুড নাইট ভাবী..
আর গুড নাইট বলা লাগবে না।
আমার নাইট যে গুড হবে না সেটা অলরেডি বুঝে গেছি।
আমি ভয়ে ভয়ে রুমে আসলাম।
তখন সাড়ে এগারো টা বাজে।
ইভান চোখ লাল করে বসে বসে ফোন টিপছে…
আমি বিছানায় বসতেই ইভান আমার বালিশ তার কোলে নিয়ে নিলো…
– বালিশ দাও??
– নাহ তুমি বাকী রাতটুকুও ইরার সাথে ঘুমাতে পারো.
আমি তোমাকে কিছুই বলবো নাহ…
আসছ কেন??
সারাদিনতো দেখলাম..
জোড় করে এই কাজ, সেই কাজ, গল্পগুজব যা আছে সব করছো…
এইগুলা যে তুমি ইচ্ছে করে,
প্ল্যান করে করছো যাতে আমার কাছে না আসতে হয়।
সেটা কি আমি বুঝি না??
– বালিশ দাও।
ঘুমাবো..
ইভান আমার,হাত চেপে ধরলো…
– আপনার ঘুম যে পেয়েছে সেটা আমি বুঝেছি।
আর কেন পেয়েছে সেটাও ভালোকরে বুঝেছি..
আমার কাছে না আসার বাহানাগুলো কেন করছো?/
– দ্যাটস,গুড তুমিতো দেখি সব বুঝো…
তাইলে এই কুয়েশ্চনের কি উত্তর হতে পারে, সেটাও তোমার জানার কথা।
ইভান আমার দুই গাল তার দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলো..
– কেন করছো অরিন??আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না।
– নাহ তুমি বুঝতে চাইছো না।
হাত সরাও।
-সরাবো বলে তো বিয়ে করিনি।
– তাহলে আমাকে বিয়েটা কেন করেছো??
আমিকি তোমাকে বিয়ে করতে বলেছিলাম??
যেহেতু নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছো,
সেহেতু এইসব প্রশ্ন আমাকে না করলে খুশি হবো?

পার্ট- ১৫

ইভান এক ঝটকায় আমাকে বিছানায় শোয়ায়।
তার দুই হাত দিয়ে আমার দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে।
আমার খুব ব্যাথা লাগছিলো।
– ওই কি বলছো তুমি??
তুমি কি সেই অরিন যে, আমার বুকে মাথা রেখে বলেছিলে তোমাকে যেন কোনদিন ছেড়ে না যাই…
আমি তোমাকে কথা দিয়েছিলাম যত বাধাই আসুক আমার থেকে তোমাকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।
অরিন তোমার ওই একটা কথা যখনি, আমার মনে হত আমি নিজেকে কনট্রোল করতে পারতাম না।
এই কয়েকটা মাস আমি একফুটোও ঘুমাতে পারি নি।
কলিজাটা মোচড় দিয়া উঠত যখনি তোমার ঐকথা মনে হত।
আর তুমি খুব ভালো করে জানো, ইভান কাওকে একবার কথা দিলে সেই কথা যে জীবিন দিয়ে হলেও রাখে ….
ছিঃ ভাবতেই অবাক লাগে তোমাকে আমি ভালোবাসি..
একটা কথা বল আমাকে ওই কথাগুলো কেন বলেছ??
কেন নাটকগুলা করেছো??
– ইভান আগের পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থতিতো এক না।
আগে যদি জানতাম তোমার চরিত্রে এত দোষ তাহলে সিরিয়াসলি ওই কথাগুলো বলার আগে দুই বার ভাবতাম।
প্লিজ আগের কোন কিছু আমি মনে করতে চাই না।
– কি আমার চরিত্রের দোষ আছে???
কি বলছ তুমি??
ছিঃ তুমি এইকথা বলতে পারলা??
– কেন তুমি কি দুধের ধোয়া তুলসি পাতা??
তুমার আর টুকটুকির বিষয়টা এতো সহজে আমি ভুলে যাবো এটা ভাবলে কি করে?
ইভান বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়ে…
ওর চোখ দিয়া জল গড়িয়ে পড়ছে…
– অরিন ও তোমাকে যা বললো তুমি বিশ্বাস করে নিলে…
শুধু আমাকেই তুমি বিশ্বাস করতে পারলে না।
আমার ও তো কিছু বলার থাকতে পারে সেই সু্যোগটাও তুমি দিলে না।
বাহ বেশ অরিন।
– এখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসছে কোথাথেকে??
নিজের চোখে যা দেখেছি তাকে আমি কি করে অবিশ্বাস করবো??
– বেশ।
আমি তোমাকে বলছি…
এইদিন্টার জন্য তুমি একদিন আফসোস করবে অরিন।
সেদিন তুমি হাজার কাঁদলেও এই দিন ফিরে পাবা না..??
– তোমার লজ্জা থাকলে এই কথাগুলো এখন বলতে না।
আর আমার সত্যি আফসোস তোমার সাথে কেন প্রেম করেছিলাম??.
আজকে তোমার জন্য আমার ফ্যামিলির সবাই আমার থেকে দূরে।
আমি তোমাকে কোনদিন ক্ষমা করবো না। তোমাকে আমি ঘৃনা করি। জাস্ট ঘৃনা।
আমি বিছানায় বসে কাদতে লাগলাম।
ইভান রুম থেকে চলে গেল…
কিছুক্ষন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থেকে..
ইভান রুমে ঢুকে বিছানার এক কিনারে শুয়ে পড়লো…
বাকী রাতটুকু আমি কান্না করেই কাটালাম।
জানিনা কখন ঘুমিয়েছিলাম।
সকালে যখন ঘুম ভাংগে তখন দেখি আমি ইভানের কোমড় জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি…
সে উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে আছে…
আমি উঠতে যাব তখনি আমার হাতের চুড়ি দিয়ে তার শরিরে ঘষা লাগে…
ইভান উহু বলে উঠে..
আমার দিকে ফিরে..
আমি বিছানা থেকে উঠে আর ওড়না খুজে পাচ্ছিলাম না। আমার খুব লজ্জা লাগতেছিলো…
ইভান ব্যাপারটা বুঝতে পারছিলো,তাই এদিক সেদিক খুজতে লাগলো…
শেষে দেখি ওড়না বিছানার যেদিকটায় পা থাকে ঠিক ওই দিক্টায় গুটিসুটি পেচিয়ে আছে…
ইভান ওড়নাটা এনে আমার দিকে ছুড়ে মারলো…
সোজা ওয়াশরুমে চলে গেল
কোন কথা না বলে।
আমি উঠে বিছানা গুছাতে লাগলাম। ইভান ফ্রেশ হয়ে এসে আবার বিছানায় শুয়ে পড়লো…
আম ফ্রেস হয়ে কিচেনে গেলাম।
আমার শাশুড়ি মা রান্না করছিলেন।
আমাকে দেখে বলে উঠলেন
– কি রে মা তোর চোখ লাল কেন??
তুই কি কান্না করছিলি??
– নাহ মা। রাতে ঘুম আসছিলো না এই জন্য মনে হয়।
– ইভান কি তোকে কিছু বলেছে??
সত্যি করে বল??
– না মা ও আমাকে কিছুই বলে নাই।
আচ্ছা তুমি এইবার সরো, আমাকে আমার কাজ বুঝাই দাও।
– আচ্ছা। তুই বরং রুটিগুলো ভেজে ফেল…
বাকী যা আছে আমি মোটামোটি করেই ফেলেছি।
সকালে খাবার টেবিলে আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম,
ইভান আমার সাথে একটা কথাও বলছেনা। মুখটা কেমন গম্ভীর বানিয়ে রাখছে…।
রুমে এসেও দেখছি সেই এক কাহিনী। সে হয় মোবাইল টিপে নয়তো টিভি দেখে।
যাক ভালোই হয়ছে কালকের ডোজ কাজে দিছে।।
আমার খুব মাথা ব্যাথা করছিলো। তাই শুয়ে আছি…
আমি রুমের আসার পর দেখলাম ইভান বিছানা থেকে উঠে পড়লো।
তারপর শার্ট পড়ে কোথায় যেন চলে গেলো..
কিছুই বুঝলাম না। আমি অবশ্য জিজ্ঞাস করিনি কোথায় যাচ্ছে..
মাথা ব্যাথাটা খুব বেড়েছে…
এই কয়েকদিনে বাবা-মা আমাকে একবারো ফোন করেনি। এটা ভাবতেই আমার বেশি খারাপ লাগছিলো।
বিকেলে ইভান বাসায় আসলো।
আমি লাইট অফ করে শুয়ে ছিলাম।
ইভান লাইট অন করলো…
আমার কাছে এসে আমাকে ডাকতে লাগলো…
– অরিন উঠ..
সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আর ওষুধ খেয়ে নাও। মাথা ব্যাথা কমে যাবে।
আমি বুঝতে পারছিলাম না ও কিভাবে জানলো যে আমার মাথা ব্যাথা করছে।
আমি কিছু না বলেই উঠে ওষুধটা হাতে নিলাম।
ইভান পানির গ্লাস্টা এগিয়ে দিল আমাকে।
আমি খেয়ে নিলাম।
– তুমি মনে হয় খাও নাই।
ইরা…
ইরা….ইরা…
জি ভাইয়া আসছি।
বলেই ইরা এসে দাড়ালো।
আমি ইভানের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকালাম..
– ভাইয়া জানোতো ভাবী কিছুই খেতে চাচ্ছে না। আমি আর মা কত জোড়াজোড়ি করলাম। নাহ তার খেতে ভালো লাগছে না। সে ঘুমাবে..
মাথাব্যথা করছে
সেই এক কথা।
– হুম জানিতো। তুই খাবার নিয়ায়…
আচ্ছা বলেই ইরা চলে গেলো।
– আমি খাবো না।
– ওকে খেয়ো না।
খেতে হবে না।
পায়ের শব্দে পিছনে তাকালাম।
ইরা খাবারের প্লেটটা ইভানের হাতে দিয়া চলে যায়…
ইভান ভাত মাখাতে লাগলো…
আমার মুখের কাছে প্লেট এনে বলে
– নাও হা করো..
আমি মুখ খুলছিলাম না।
– হা করো বলছি..
হা করো…
ইভান জোড় করে বাচ্চাদের মত করে মুখে লোকমা তুলে দিলো।
আমি খেতে খেতে ইভানের দিকে তাকালাম।
ওকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।
আমি খাবার মুখে নিয়ে বসে, ওর দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছি।আমার কেন জানি এখন খেতে ইচ্ছে হচ্ছে…
– অরিন কি হচ্ছে??
খাবার মুখে নিয়ে এইভাবে হা করে কি দেখছো??
আমি লজ্জায় নিচে তাকাই।
– নাহ কিছু না।
– আচ্ছা তুমি প্রায়শই বাচ্চাদের মত বিহেভ করো কেন??
– কোথায় করলাম। আমি এখন অনেক বড় হয়ে গেছি…
অনেক কিছু বুঝতে শিখেছি….।
ইভান তোমাকে এত ভালোবাসি কেন আমি….
তুমি কি সত্যিই এরকম করতে পারো…
কেন করলে??
নিজের মনকে বোঝাতে পারছি না। এত কাছে থেকেও তোমার কাছে যেতে পারছি না। গলায় একট কাটার মত বিধে আছে, যা আমি চাইলেও উপড়াতে পারবোনা।
অঝর ধারায় জল গড়িয়ে পড়ছে….
– অরিন কি হয়েছে??
তুমি কাঁদছ কেন??.
খাবার সামনে নিয়ে কাদতে হয় না।
আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
পানির কল্টা ছেড়ে দিলাম।
খুব কান্না পাচ্ছে…
ইভান আমার পিছু পিছু এসে ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কাচ্ছে…
তবুও আমি ওয়াশরুমে বসে বসে কাদতে লাগলাম। আমি পুরা ভিজে যাচ্ছিলাম..
কিন্তু কান্না থামছিলোই না।
ওইদিকে ইভান দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে…
এইবার সে চিল্লাতে লাগলো…
– অরিন তুমি বের হয়ে আসবা??.
নাকি আমি দরজা ভেংগে ফেলবো??..
আমি রেগে গেলে কি হবে বুঝতে পারছো??
লাস্ট বার বলছি খুল???
নইলে….
হঠাৎ আমার মনে হলো আমি কি করছি??.
সবাই জানতে পারলে কি ভাববে??
আমি নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে দরজা খুললাম।
এদিকে আমার জামা সালোয়ার পুরা ভিজে শেষ…
দরজা খুলতেই ইভান আমার দিকে চোখ রাংগিয়ে তাকালো…
আমার চোখ, নাক, গাল ফুলে গেছে দেখলে যে কেউ বুঝবে আমি এতক্ষন কান্না করেছি।
কোন কিছু বোঝার আগেই ইভান আমাকে একটা থাপ্পড় মারে…
তারপর আমাকে এক ঝটকায় বিছানায় ফেলে দেয়…
আমি গালে হাত দিয়ে ওর দিকে তাকাই।
– এইসব কি নাটক শুরু করছো??.
এখন আবার ঠান্ডা লাগানোর শখ হইছে??.
ঠান্ডা লাগলে কে সামলাবে??.না আমাকেই তো সামলাতে হবে…
অরিন এইবার যদি ঠান্ডা লাগে বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে সারাদিন পানিতে চুবিয়ে রাখবো..
ইভান বিছানায় ধপ করে বসে পড়লো…
আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম তখন…
ইভান উঠে গিয়ে একটা টাওয়েল আর জামা বের করে আমার দিকে ছুড়ে মারে।
– জিরো সেকেন্ড এর মাঝে ড্রেস চেঞ্জ করো।
আমি রাগে ওর দিকে ড্রেসটা ছুড়ে মারি।
ইভান ড্রেসটা নিয়ে আমার পাশে এসে বসে আমার হাত ধরে..
আমি হাতটা ছাড়িয়ে নেই..
– অরিন প্লিজ ড্রেস্টা চেঞ্জ করো.
আমি রাগে ওকে ধাক্কা মেরে আমার পাশ থেকে সরিয়ে দেই…
– অরিন তুমি আমার উপর একটু বিশ্বাস রাখো।
তুমি আজকে যে জন্য কাদছো , কালকে থেকে আর সেই জন্য কাদবে না দেখো, প্রমিজ..
ইভান আমার পিঠে হাত রাখলো।
আমি ঝটকা দিয়া সরিয়ে দিলাম।
– অরিন ড্রেস চেঞ্জ করো।
প্লিজ…
এইবার আমি বসা থেকে উঠে ইভানের শার্ট এর কলার ধরে বললাম
– আমি কি তোমার সামনে ড্রেস চেঞ্জ করবো??

পার্ট ১৬

কেন আমার সামনে ড্রেস চেঞ্জ করলে কি হবে??
– আমি আরো পানিতে ভিজবো..
এখনি যাচ্ছি…!!
কি আমার উপর স্বামীত্ব ফলানো হচ্ছে??
এইতো আসল চেহারা বের হয়ে আসছে??
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েরা সত্ত্যিই অসহায়…
যখন খুশি যেভাবে খুশি ব্যাবহার করতে চাও? উদ্দেশ্য পুরন হলে ছুড়ে মারতেও তোমরা দ্বিধা বোধ করোনা…
ছিঃ আমার ঘেন্না লাগে তোমাদের মত পুরুষদের প্রতি…
ইভান আমার মুখ ছাপিয়ে ধরে…
– ব্যাস আর একটাও কথা না। হুম আমি খারাপ, লম্পট, চরিত্রহীন, অমানুষ আর যত বাজে বাজে গালি আছে সব আমি স্বীকার করছি…
এইবারতো তোমার কিছু বলার নেই নাহ..
ইভান মুখ থেকে হাত সরিয়ে ফেললো..
প্রচন্ড রাগে সিটকাতে সিটকাতে নিচে তাকালাম।
– আমি বাহিরে যাচ্ছি।
তুমি চেঞ্জ করে নাও।
প্রচণ্ড রাগ লাগছে ড্রেস চেঞ্জ করে এসে শুয়ে পড়লাম।
কালকে আমার জন্মদিন এইটা মনে হতেই আরো খারাপ লাগছে। বাবা-মা, নওরিন সবাইকে ছাড়া এই প্রথম আমার জন্মদিন হবে। তাছাড়া ওরা আমাকে ফোন করে উইশটুকুও করবে না। তাছাড়া আজকে ইভান আমার সাথে খুব খারাপ আচরণ করেছে। আমার গায়ে হাত তুলেছে, যেটা আমি স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছি না।
দরজায় টোকার শব্দ হচ্ছে…
– অরিন ভিতরে আসবো??
কি আসবো??
আসবো??
– ইচ্ছে হলে আসতে পারো।
আমার পারমিশন নেয়ার কিছু নাই।
ইভান হনহন করে রুমে ঢুকে।
– হুম পারমিশন না নিয়া আসলে এখনিতো লাফালাফি শুরু হয়ে যেতো।
আমি মুখ ভেংগিয়ে অন্যপাশে শুয়ে পড়লাম।
– ভেংচি কাটলে তোমাকে অতিব সুন্দরি লাগে…
আমি আর কোন কথা বলছিলাম না দেখে,
ইভান ওয়াশরুমে যায়…
কিছুক্ষন পর বের হয় আমার ভেজা জামা কাপড় গুলো নিয়ে…
– অরিন তোমাকে আমি বাচ্চা কি শুধু শুধু বলি??
এই কাপড়গুলো এইভাবে ভিজিয়ে রাখছো কেন??
আমি কোন উত্তর দিচ্ছিলাম না।
ইভান ব্যালকনিতে যাচ্ছে আর আস্তে আস্তে বলতেছে
– কোন কিছুতো বুঝেই না। আমি কিছু বললেই দোষ।
যত্তসব…
ইভান কাপড়গুলো ব্যালকনিতে মেলে দিয়ে আসলো…
তারপর বিছানায় আসলো…
ওকে দেখে আমি অন্যদিক ফিরে শুয়ে পড়লাম।
ইভান বিছানায় ধপ করে শুয়ে পড়লো।
মনে হয় ফোন টিপছে…
কিছুক্ষন পর লক্ষ্য করলাম ইভান আমার পায়ের উপর পা ঘষতেছে..
অসহ্য লাগতেছিলো…।
ভাবছি ওকে কিছুই বলবো না।
না সে থামছেই না। সেইম কাজ বার বার করতে লাগলো।
এইবার আমি ইভানের দিকে ফিরলাম।
অনেকটা শক্ত গলায় বললাম
– কি হচ্ছে এইসব??
– কিছুই না। তুমি অন্যদিকে ফিরে শুয়েছিলে তাই…
– তাই কি??.
– মানে তোমার মুখটা দেখতে ইচ্ছা করছিলো তাই…
– ওকে এখন দেখেছো।
এইবার ঘুমাও…
ইভান আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো..
ওর এই আচমকা জড়িয়ে ধরাতে আমি অনুভুতিশুন্য হয়ে গেলাম।
আমি কি করবো কিছুই বুঝতেছিলাম না।
– অরিন আমি সরি..
তোমাকে আসলে আমি মারতে চাইনি।
তুমি না মাঝে মাঝে বাচ্চাদের মত করো, আর আমার তখন খুব রাগ উঠে গেছিলো…
সরি।
তুমি আমাকে মাফ করে দাও।
আমি তখনো চুপ করে ছিলাম।
ইভানের বুকে আমার মাথা। ওর গরম নিঃশ্বাসএর শব্দ আমি অনুভব করছিলাম।
– ইভান ছাড়ো…
– আগে বল তুমি আমার উপর রেগে নেই।
– নাহ,
রেগে নেই সরো।
– সত্যিই…
ইভান এসে আচমকা আমার কপালে শক্ত করে চুমু দিলো…..
তারপর ইভান আমাকে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আমার কেন জানি ভালো লাগতেছিলো।
আমি আর ওকে কোন বাধা দিচ্ছিলাম না।
আমার অবচেতন মন বার বার ইভানকে কাছে চাইছিলো।
এক অদ্ভুত সম্মোহনে ইভান আমাকে কাছে টানছিলো।
কিছুক্ষন পর ইভান আমাকে সরিয়ে দিয়ে উঠে যাচ্ছিলো..
আমি দুই হাত দিয়ে ওর শার্ট এর কলার ধরে ফেলি..
আমার এক গালে হাত রাখে সে..
আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম..
চোখ গুলো লাল হয়ে গেছে।
– অরিন সরি।
কিছু মনে করোনা। আসলে তোমাকে এত কাছে পেয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করা খুব কষ্টের…
তুমি বুঝবে না।
তাছাড়া আমার চরিত্র আসলেই খারাপ তাই মাঝে মাঝে আসল রুপটা বেরিয়ে আসে।
ইভান আমার হাত থেকে তার শার্ট এর কলার ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে পড়ে।
সোজা ব্যালকনিতে চলে যায়।।
আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছি না।
আমি বিছানায় বসে কাদতে লাগলাম।
আমার কান্না শব্দে ইভান রুমে আসে।
– অরিন তুমি কাদছো কেন??.
কিছুই বলছিলাম না।।
– অরিন আমি সরি।।
আমি সত্ত্যি বলছি দেখ, তোমাকে আমি আর কষ্ট দিবোনা। তুমি যা চাও তাই হবে। আমি আর তোমাকে আর টাচ করবো না।
এই প্রমিজ করছি…
– তুমি আমার সামনে থেকে যাও।
– সত্যি আর ৩ দিন পর যাবো।
আর সামনে আসবো না।
– আর এক্টাও কথা বলবা না। ভালো হবে না কিন্তু।
– আচ্ছা বলবো না। তাহলে কান্না বন্ধ করো।।
আমি ইভানকে রেগে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দেই।।
আমি ওর গলায় আমার দুই হাত দিয়ে ধরি।
– আর একটা কথা বললে একদম মেরে ফেলবো…
ইভান আমার হাতের উপর নিজের হাত রেখে বলে
– তোমার হাতে মরতেই রাজি আছি, কোন আফসোস নেই।
আমি আমার হাত সরিয়ে নিয়ে অন্য পাশে শুয়ে পড়লাম।।
আর কথা বাড়ালাম না।
বুঝতে পারলাম কিছুক্ষন পর সেও লাইট অফ করে ঘুমিয়ে
পড়লো।

পার্ট ১৭

সকাল থেকেই বাসায় কেমন যেন উৎসব উৎসব ভাব।
সবাই দেখি সকাল থেকে বাসা গুছগাছ করছে। আমি লেট করে ঘুম থেকে উঠায় কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
সব থেকে অবাক হলাম ইভান আর ইরা দুই ভাই বোন মিলে ঘর ঘুছাচ্ছে…
নাহ ভালোই গুছাতে পারে।
মা কে দেখলাম রান্নাঘরে।
বাবাকেও বাসায় দেখতেছি…
আমি ইরাকে জিজ্ঞাস করলাম
– ইরা আজকে কি??
সকাল থেকেই সবাই এত কিসের গোছগাছ করছো??
– ভাবি আজকে আমাদের বাসায় মেহমান আসবে। তাই সবাই মিলে কাজে লেগে পড়েছি।
তুমি উঠেছো ভালোই হয়েছে।
তুমি বরং মাকে হেল্প করো কেমন…
ইভানকে দেখলাম এক মনে সোফার কুশন গুলো গুছাচ্ছে..
না কোন কথাই বলছে না।
মনে মনে ভাবছি কি এমন মেহমান আসবে তার জন্য সকাল থেকেই শুরু করে দিছে…
আমি রান্নাঘরে যেতেই..
দেখি মা পরোটা ভাজতেছিলো
আমাকে দেখেই বলে উঠলো
– কি রে ভালো ঘুম হয়েছে??
– হ্যা মা।
আচ্ছা আমি কি করবো কিছু বুঝতেছিনা।
– তুই আপাতত খাবার গুলো টেবিলে নিয়ে যা, এখনো তো নাস্তা করা হয় নাই।
– আচ্ছা।
আমি খাবার সার্ভ করে সবাইকে খেতে আসতে বললাম।
খাওয়ার সময় খেয়াল করলাম আমার হাতে নতুন একটা আংটি।
আমি উলটে পালটে দেখতে লাগলাম।
– ভাবী তোমার আংটিটাতো সুন্দর।
ইরা ওর ভাইয়ার দিকে মাথা ঘুরিয়ে বলে..
– ভাইয়া তুই গিফট করেছিস??.
আমিও উৎসুক দৃষ্টিতে ইভানের দিকে তাকাই…
ইভান ইরার কান ধরে বলে
– যেটা ককরছিলি সেইটাই করনা।খাওয়ার সময় এত কথা ভালো লাগেনা।
– দেখেছো মা, দেখেছো..
তোমার ছেলে শুধরাবে না।
ভাবি বাবা মাতো ভাইয়ার দলে, কিছুই বলবে না।
তুমি অন্তত আমার হয়ে ভাইয়াকে কিছু বলো।
বাবা-মা ইভান আর আমার দিকে তাকাই মিটি মিটি হাসছে…
– ইভান সত্যিই এইটা আমার হাতে কি করে এলো।।
আমি না বুঝতেছিনা।
এইটা কার আংটি…
ইভান কিছুটা ইতস্তত বোধ করছিলো।
– কি কিছুতো বলো।
– ওইটা না ভুতে এসে তোমাকে পরাই দিয়ে গেছে…
আমার খাওয়া শেষ আমি গেলাম।
মা আর বাবা উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
উনাদের এমন হাসি দেখে ভ্যাবলার মত একবার মার দিকে আরেকবার বাবার দিকে আরেকবার ইরার দিকে তাকালাম।
ইরা আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলে
– ভাবী জানোতো তোমাকে যে ভুতে ধরেছে, সে তোমাকে এত সহজে ছাড়ছে না…
বুঝছ..
– হুম বুঝছি।
আমি আসি..
আমি রাগে গজগজ করতে করতে রুমে আসলাম।
বিছানায় ধপাস করে বসে পড়লাম। পাশে ইভান ও বসে ছিলো…
– এই তোমার কি কমনসেন্স নেই।
কোথায় কখন কি বলতে হবে সেটা আজো শিখলে না।
– নাহ শিখবো না। চাই না শিখতে। তুমি এই আংটি কখন পড়িয়েছো??
– যখন তুমি বেভোর ঘুমে তলিয়ে গেছো ঠিক তখন।
– আমি কিছুই বুঝলাম।
আজব তো..
– আসলেই তুমি আজব। নইলে শুয়ার সাথে সাথে ঘুম।
কেমনে পসিবল…
– হুম আজব ই আমি।
বাট তুমি আর কি কি করেছো কে জানে…
– আর কি কি করবো মানে??
আমি শুধু আংটিটাই পরিয়েছি। আর কিছুই করিনি সত্যি বলছি…
– কে জানে…
আমি রুম থেকে চলে গেলাম..
ইভান পিছন থেকে ডাকছে
-অরিন মানে কি??
দুপুরবেলা মাকে আমি হেল্প করেছিলাম রান্না করার কাজে। আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম প্রায় সব রান্নাই আমার ফেভারিট।
আমি অবশ্য কিছুই জিজ্ঞাস করিনি।
রান্না করার সময় ইভানকে এইদিকে পায়চারী করতে দেখেছিলাম।
হয়তবা কিছু বলতে চেয়েছিলো…
আমি দেখেও না দেখার ভাব করে বসে ছিলাম।
দুপুরে খাওয়ার পর আমার খুব ঘুম পেয়েছিলো আমি ঘুমিয়ে যাই।
ঘুম থেকে উঠে ইভানকে আর দেখি নাই। হয়তবা কোথাও গিয়েছে…
আমি ঘুম থেকে উঠতেই ইরা রুমে হাজির সাথে একটা প্যাকেট।
– ভাবি ও ভাবী..
– হুম বলো।
– আচ্ছা তুমি এত ঘুমাও ক্যান।
– আসলে তখন না খুব ঘুম পেয়েছিলো।
– আচ্ছা ঘুমাও নো প্রবলেম
আগে দেখতো শাড়িটা কেমন??
ইরা একটা সোনালি জরি পাড়ের মেরুন কালার কাতান শাড়ী বের করলো।
– হুম খুব সুন্দর।
– হ্যা তোমাকে খুব ভালো মানাবে। নাও পরে ফেলো…
– নাহ। আমি শাড়ি ক্যারি করতে পারি না।
– ধুরু পারবা।
– আচ্ছা তোমার ভাইয়া কোথায়??
– গেছে কোথাও??
এত উতলা হতে হবে না।
এসে পড়বে…
– নাহ বাবা পড়বো না।
– শোন না পড়লে ভাইয়া এসে যখন থেরাপি দিবে তখন ভালো লাগবে সেটা…
– মানে কি?? তোমার ভাইয়া আমাকে এটা পড়তে বলেছে??
– জি মহারাণী..
– আচ্ছা পড়বো বাট তুমি একটু হেল্প করিও..
– সে করবো। বাট এতক্ষন পড়বো না পড়বোনা বলে ঢং গুলা কেন করছিলা??
আমি নিচের দিকে তাকাই আছি। কি বলবো ইরাকে কিছুই বুঝতেছিনা…
– হ্যা ভাবী আমারি ভুল হইছে..
আগে যদি ভাইয়ার কথাটা বলতাম তাহলেই হত..
নাও পড়ো।
ইরা একটা সোনালি কালার ম্যাচিং ব্লাউজ বের করে দিলো।
ইরার সাহায্যে শাড়ীটা সুন্দরভাবেই পড়ে নিলাম।
ঠোটে হালকা মেরুন কালার লিপিস্টিক দিলাম।
চোখে চিকন করে কাজল দিলাম।
একটা খোপা করে নিলাম।
ইরা এসে আমার চুলে কতগুলো ফুল গুজে দিলো।
আয়নায় তাকিয়ে দেখি বেশ দেখতে লাগছে।
সাজতে সাজতেই দেখি মা এসেছে রুমে, সাথে গয়নার বক্স।
– কি রে অরিন তোকে তো বেশ মানিয়েছে শাড়িটাতে…
এদিকে আয়..
আমার উনার কাছে গেলাম।
আমার কানে এক জোড়া ঝুমকা, আর গলায় একটা হার, আর হাতে একজোড়া বালা পড়িয়ে দিলো।
– ওহ মা ভাবী । আমার না তোমাকে দেখে মাথা ঘুরিয়ে যাচ্ছে…
আমি ছেলে থাকলে নিশ্চিত প্রেমে পড়ে যেতাম।
বাট ভাইয়ার আজকে কি অবস্থা হবে সেইটাই ভাবছি..
এই ইরাটা না কি যে?? আবুল তাবুল কি সব বলে, যার তার সামনে। পুরা লজ্জায় পড়ে যাই।
– অপস মা কিছু মনে করোনা। ননদ ভাবী ফ্যাক্ট ..
– নাহ কি মনে করবো। আমি তো কিছু শুনিই নাই..
মনে মনে ভাবি যেমন মা, তেমন মেয়ে, তেমন তার ছেলেও। কেউ কারো থেকে কম যায় না।
– আচ্ছা মা অরিন। এইগুলো আজ থেকে তোর, আমার অবশ্য অনেক আগেই দেয়ার কথা ছিলো। সে যাক, যত্ন করে রেখো। কেমন..
– আচ্ছা মা।
-ঠিক আছে তোমরা গুছগাছ করে নাও। সবাই এই আসলো বলে।
আমি রুমের কাপড় চোপড় গুছাচ্ছিলাম।
এমন সময় কলিংবেল বাজছিলো..
কেউ খুলছে না।
তাই আমিই গেলাম।
দরজা খুলেই দেখি ইভান, হাতে কেক এর বক্স মনে হচ্ছে।
আমাকে দেখেই মুচকি একটা হাসি দিলো।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে পরে উল্টো দিকে ঘুরতে নিচ্ছিলাম।
ইভান আমার হাত ধরে ফেলে..
– কোথায় যাও??
দেখ কারা আসছে??
– আমি পিছন ফিরলাম।
আমি যা দেখলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
আমি নিজেকে অনেক কনট্রোল করার চেষ্টা করলাম কিন্তু চোখের জল গড়িয়ে পড়ছেতো পড়ছেই
চলবে।।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে