আজব প্রেমের কাহিনী part : 21 (last)

0
2426

আজব প্রেমের কাহিনী
part : 21 (last)
writer : Mohona

.

নীলিমা: তাহলে এখন মেরিনের খোজ কোথায় পাবো? কিভাবে পাবো? যেখানে আপনাদের জাদু শক্তিই হার মানলো….
কবির: জানিনা…. কোথায় পাবো আমার অবুঝ মেয়েটাকে?
কনিকা: জানিনা কোথায় আছে…..?
নীড়: দীদা…..
দীদা: হামম….
নীড়: আজকে বাংলা মাসের কতো তারিখ……
দীদা: ২৭ই চৈত্র…..
নীড়: মানে পহেলা বৈশাখ আসতে ৩দিন বাকী…..
প্রনয়: এই সময় তুমি বৈশাখ নিয়ে ভাবছো?
নীড়: হামম…. কারন আমি জানি আমার মেরিন পৃথিবীর বা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের যেখানেই থাক পহেলা বৈশাখে ও ওখানে আসবেই…..
সবাই: কোথায়……
নীড়: মৈনট….. বৈশাখি মেলা…. মিষ্টির দোকানে…..
সবাই:সত্যি…..?
নীড়:হামম। তবে মহারাজ আপনাকে ১টা কাজ করতে হবে….
কবির: কি কাজ….?
নীড়: মেরিনের জাদু শক্তি ফিরিয়ে আনা তথা মেরিনকে আবার পরী করে তোলার উপায় খুজে বের করুন….
কবির: …..

.

৩দিনপর……
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা….. মেরিন মেলায় ঘুরছে….
মেরিন: কি অবাক করা বিষয়….গত বছর এই দিনে অবুঝ আমি পৃথিবীতে এসেছিলাম…. আর আজ…. এই দিনেই তো মেরিন তার নীড়কে পেয়েছিলো…..
আচ্ছা আপনি কে আজকে এখানে আসবেন? না আপনি কেন আসবেন? আপনি তো পারলে আপনার জীবন থেকেই এই তারিখটা বাতিল করে দিবেন…
কিন্তু আপনার মন বোঝা বড় দায়…. যদি চলে আসেন…..
ভেবেই মেরিন ওরনা দিয়ে নিজের মুখটা ঢেকে দিলো। সেই মিষ্টির দোকানের পিছে গেলো…..যেখানে নীড়ের সাথে মেরিনের ১ম দেখা হয়েছিলো……
মেরিন: এই সেই সময়… এই সেই স্থান…. এই সেই আমি। কিন্তু…. নেই শুধু আপনি।

.

মেরিন হাটতে হাটতে মিষ্টির দোকানের সামনের দিকে চলে এলো। আজকে সেই মটু লোকটা না অন্য কেউ মিষ্টি বানাচ্ছে। লোকটার চেহারা দেখা যাচ্ছেনা…. ওদিকে ঘুরে আছে…..
মেরিন: আরে এই লোকটা কে? আগের লোকটা কোথায়? আর কেমন মিষ্টিই বা বানাচ্ছে! ওই বোর্ড ও কি লেখা? চকোলেট রসগোল্লা…. চকোলেট লাড্ডু…. আজব তো…
মেরিন কিনতে গেলো। তখন লোকটা ওর দিকে ঘুরলো। লোকটাকে দেখে মেরিন অবাক হলো। লোকটা যতোই মুখ ভরতি গোফ-দারি, চোখে চশমার আড়ালে নিজেকে লুকাতে চাক না কেন মেরিন ঠিকই তাকে চিনে নিয়েছে । লোকটা নীড়…..
মেরিন মনে মনে: নীড়…. না না আমাকে এখনই এখান থেকে যেতে হবে…..
নীড় মনে মনে: পারবেনা যেতে…. যতোই ২হাত লম্বা ঘোমটা টেনে নিজেকে আরাল করো না কেন… তোমার শরীরের সুবাসই বলে দিচ্ছে যে এটা তুমি…
মেরিন মনে মনে: এখন যদি না বলে চলে যাই তাহলে সন্দেহ করবে।
সন্দেহ….. কি ভেবে সন্দেহ করবে? মেরিনের মুখ তো আর উনি দেখতে চান না…..

.

মেরিন বেরিয়ে যেতে নিলে
নীড় বলল: এইযে আপনে দোকানে ঢুইকে মিষ্টি না নিয়ে চইলে যাচ্ছেন কি জন্য…..
মেরিন:…..
নীড়: মিষ্টি না খেয়ে আপনাকে যেতে দিবোনা….
বলেই নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে দারিয়ে মেরিনের ঘোমটার ভেতরে নিজের মাথা ঢুকিয়ে মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
মেরিন:???

.

একটুপর….
নীড় ওর গালে পানি জাতীয় কিছু অনুভব করলো…. আর মেরিনও একই রকম কিছু অনুভব করলো। আসলে ২জনই কাদছে…. নীড় মেরিনকে ছারলো। মেরিনের ঘোমটা টা নামিয়ে ফেলল। মেরিন আবার ঘোমটার আড়ালে নিজের মুখ লুকালো। নীড় কারনটা বুঝলো।
নীড়: আমিই তো কসমটা দিয়েছিলাম আজকে আমি ফিরিয়ে নিলাম….
মেরিন:…..
নীড়: এখনো মুখ লুকিয়ে রাখবে…..
মেরিন:…..
নীড়: যদি এখনও মুখ আড়াল করে রাখো তাহলে আমার ম…..
মেরিন নীড়ের মুখে হাত রাখলো। এরপর নিজের ঘোমটা খুলে
বলল: অমন কথা আর কখখনো বলবেন না….??..
নীড় মেরিনের হাতে kiss করে
বলল: ok… তাহলে স্যার বাচান আমার কোলে উঠে বুকের ভেতর ঢুকে যাও…….
মেরিন হেসে দিলো। নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো। আর মেরিন নীড়ের বুকের ভেতর ঢুকে গেলো।

.

পরদিন….
সকাল ১১টা…
মেরিন ঘুমিয়ে আছে নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে।
নীড় মেরিনে খাটে শুইয়ে কবিরের কাছে গেলো।
নীড়: মহারাজ….
কবির: তুমি আমাকে বাবা ডাকতে পারো…
নীড়: উহু….
কবির:কেন?
নীড়: কারন আমি তোমাকে জল্লাদ বাপ ডাকতে চাই…..??.
কবির:হাহাহাহা…. পাগল…..
নীড়: এখন বলো তো মেরিনের শক্তি ফেরানোর কি কোনো পথই নেই?
কবির:….
নীড়: বলো…..
কবির: এটা অনেক কষ্টসাধ্য..
নীড়: যেমন…
কবির: যেখানে বাস্তব আর কল্পনা মিলে গেছে সেই জগতে গিয়ে সেখানের ৭জায়গা থেকে ৭ধরনের ৭রঙের ৭টা রত্ন আনতে হবে। সেই ৭রত্নের ৭রঙই পারে মেরিনের জাদুশক্তি ফিরিয়ে আনতে….
কনিকা: সত্যি…. তাহলে যাচ্ছোনা কেন….?
কবির: আমি যেতে পারবোনা…
কনিকা: কি? কেন? তাহলে আমি যাবো….
কবির: তুমি আমি তারা আমরা কেউ যেতে পারবোনা…. ওখানে কেবল….
সবাই: ওখানে কেবল মানুষেরাই যেতে পারে…
নীড়: হ্যা তো আমি যাবো…
কবির: যাবো বললেই তো আর যাওয়া যায়না…. অনেক ভয়ংকর আর risky….
নীড়: সব risk মেনে নিবো…
কবির: risk কেবল তোমার না.. ১৯-২০ হলে তুমি মেরিন ২জনই ধংব্স হয়ে যাবে।
নীড়:….
কবির: আর তাছাড়াও…. মেরিন যে পরী হবে সেই আগের মতোই শক্তি পাবে…. জাদু কখনোই ঠিক হবেনা… উল্টা-পাল্টা হবে….
নীড়: আমি সেই উল্টা-পাল্টা জাদু করতে পারা পরীটাকেই চাই….

.

২দিনপর…..
নীড় সেই বাস্তব-কল্পনা জগতে গেলো…. মেরিন হাজারবার নিষেধ করেছে। তাও নীড় ফেরেনি…..

.

দেড়মাস পর….
এই দেড়মাস ধরে মেরিন সেই জগতের মূল ফটকের সামনেই বসে আছে।
মেরিন: কবে ফিরবেন আপনি….???…
সব আমার জন্য… আর জল্লাদ বাপটাও…. উনাকে বলবে কেন উপায়…. না তিনি তো বলবেই…. সত্যবাদীদের সর্দার …. huh… আহারে আমার জামাইটারে…..
তখনই নীড় বের হয়ে এলো। বেরিয়ে দেখে যে ওর বউ পা ছরিয়ে কান্না করছে। অসম্ভব cute লাগছে…. নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে বসে
বলল: কি হয়েছেরে আমার বউটার….
মেরিন: ওই কে রে…
মেরিন মাথা তুলে দেখে নীড়।
মেরিন: নীড়….
বলেই নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: দারাও তো আগে তোমাকে আগে আবার পরী বানিয়ে নেই… জল্লাদ বাবা…. এই নাও সেই রত্ন গুলো….
কবির সেই রত্ন গুলোর ৭রং দিয়ে মেরিনকে আবার পরী বানিয়ে দিলো।
মেরিন সেই গোলাপী রঙে রেঙে গেলো পা থেকে পর্যন্ত। সেই সাথে ওর wings আর magical stick ও চলে এলো।
নীড় মনে মনে: হায়…. আমার পরী বউ…. ????… কতোবার crush খাওয়াবিরে….
তারা: ১টা জাদু করে দেখা তো….
মেরিন: হামম হামম। অবগশ্যই…

✨??

এখনই এখানে এতততততো এতততততো এতততততো গুলো মিষ্টি চলে আসুক।
ইলি গিলি ফুস।

✨??

সবাই:???।
ঠিক তখনই মিষ্টির বৃষ্টি শুরু হলো। প্রথমে তো ধীরে ধীরেই পরতে লাগলো। কিন্তু একটুপর থেকেই দারুম দুরুম করে ওদের ওপর মিষ্টি পরতে লাগলো…. যেন শিলা বৃষ্টি…..
সবাই: এরই নাম মেরিনের magic …???….
মেরিন:???।

.

২মাসপর….
আজকে নীড় মেরিনের বিয়ের সপ্তাহ শুরু হলো…. নীড় চেয়েছিলো যে ওর আর মেরিনের বিয়েটা সবথেকে ব্যাতিক্রম আর grand হবে। কিন্তু এতোটা special হবে তা ভাবতেও পারেনি….
নীড়-মেরিনের বিয়ের উৎসব পৃথিবী থেকে পরীরাজ্য পর্যন্ত পালিত হচ্ছে। এমনকি বরযাত্রীও পৃথিবী থেকে পরীরাজ্যে যাবে। মেরিনের পরী হওয়ার কথা কেবল চৌধুরী পরিবার জানে। তাই পরীরাজ্যে কেবল চৌধুরী পরিবারই যাবে। আর তাই নীড়-মেরিনের বিয়ের উৎসব double double পালিত হলো।
নীড়-মেরিনের বিয়ের মতো বিয়ে সত্যি কেউ কখনো দেখেনি। সত্যি ওদের প্রেম কাহিনী
#আজব প্রেমের কাহিনী….
নীড়-মেরিনের বিয়ে সম্পুর্ন হলো। শুরু হলো ওদের নতুন জীবন। মেরিনের দুষ্টুমি-জাদু , নীড়ের caring আর ওদের ২জনের ভালোবাসায় সুখে-শান্তিতে কাটতে লাগলো ওদের জাবন।
❤❤❤
.

সমাপ্ত…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে