অবহেলা সংসার পর্ব-০১

0
3421

#অবহেলা সংসার
#Imran_khan
#সুচনা

জান্নাতুন যে , প্রেগন‍্যান্টে সেটা তার স্বামী জানে না!তবে ওনি জানবে কেমন করে, আজকে সকাল থেকে বমি বমি ভাব হচ্ছে,আবার কোন খাবার মুখে নিতে পারতেছি না,খাবার মুখে দিতেই বমি চলে আসতেছে। ।এগুলো তো একজন মেয়ে গর্ভধারণ হওয়ার লক্ষ‍্যন।আমার বুঝতে বাকি রইলো না,আমার কি হতে চলেছে ।তাবে শিউর হওয়ার জন‍্য বাজার থেকে প্রেগন‍্যান্সির কীট কিনে এনে বাথরুমে গিয়ে চেক করে দেখি আমার ধারনা ঠিক।আমি যে মা হতে চলেছি এটা সত‍্য।আমি প্রেগন‍্যান্ট হওয়ার পরেও খুশি হতে পারতেছি না।কারন আমি যেখানে স্ত্রীর অধিকার পাইনা,স্বামী স্ত্রী হিসাবে মানে না,যদি আমার স্বামী আমার প্রেগন‍্যান্সির বেপারে জানতে পারে তাহলে কখনো আমার বাচ্চাকে পৃথিবীতে আনতে দিবে না। কারন আমি প্রেগন‍্যান্ট হলে ওনার প্রতিরাতের চাহিদা মেটাবে কে?আমি প্রেগন‍্যান্ট হলে আমাকে তো আর ভোগ করতে পারবে না।আমার বিয়ে হওয়া প্রায় দুইটি বছর পার হয়ে গেছে।গরিব ঘরের মেয়ে আমি।বাবা আমার সুখের জন‍্য এক বড়লোক পরিবারে ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছে।ভেবেছিলো বড়লোক ঘরে বিয়ে হয়ে একটু সুখ পাবো কিন্তু আমার স্বামী বাসর রাতে জানিয়ে দিয়েছে আমার মতো গরিব ঘরের মেয়েকে বউ হিসাবে মেনে নিতে পারবে না। বলেছে ওনি আমাকে কখনো স্বামীর অধিকার দিবে না।কিন্তু বাসর রাতে স্ত্রী হিসাবে না মানলেও পরের দিন থেকে শুরু হয় ওনার শারীরিক অত‍্যাচার।প্রতিরাতে আমার শরীল টা কুকুরের মতো ছিরে ছিরে খায়।কখনো আমাকে জিগ্যেসা করে না, আমার কষ্ট হয় কি না?আমার কষ্ট হলেও ওনার কি সমস‍্যা তো ওনার নাই , আছে শুধু ভোগ করা ইচ্ছা?

আমার নাম নূরে জান্নাতুন।আমি একজন গরীব ঘরের সন্তান।আমার বর্তমান বয়স 19।সাধানত গ্রামের মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে থাকে।তেমনি আমার বাবা আমার 17 বছর বয়সে বিয়ে দেয়।অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারনে আমার স্বামী চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনেক যন্ত্রণা সহ‍্য করতে হয় আমার।এখন প্রায় রাত 9:00 টা বাজতে চলেছে।আমার স্বামী আসার সময় হয়েছে।প্রতিদিন এই টাইমে অফিস থেকে বাসায় ফিরে।তাই আমি রুমে না থেকে নিচে এসেছে দেখি এসেছে।ওনাকে দেখে সোজা ওনার সামনে এসে অফিসের বেগটা ওনার থেকে আমি আমার কাছে নিলাম।
ও আপনাদের তো আমার স্বামীর পরিচয় দেওয়া হয় নাই আমার স্বামীর নাম হচ্ছে ঈমান হক।বাবা-মার একমাত্র ছেলে।দেখতে একদশ হিন্দি সিনেমার নায়কদের মতো।মুখটা উজ্জ্বল ফর্সা,মুখে চাপ দাড়ি হাইড 5.8 ফুট হবে,ওজন প্রায় 60,62 হবে।আর ওনার বয়স প্রায় 24,25 হবে।আপাততো এতটুকুই জেনে নেন পরে না হয় আরো পরিচয় পাবেন গল্পে।

আমি রুমে থেকে ফ্রেস হয়ে আসতেছি,তুমি খাবার রেড়ি রাখো।ফ্রেস হয়ে এসে যদি খাবার পাই!

ওকে আপনি ফ্রেস হয়ে আসুন আমি খাবার বাড়তেছি।

ওকে।

ওনি ফ্রেস হতে রুমে চলে গেলেন।আমি অফিসের ব‍েগটা সোফার একসাইটে রেখে খাবার টেবিলে সাজাতে যাচ্ছি।যদি ওনি এসে দেখে খাবার টেবিলে রেডি নেই তাহলে আমাকে আস্ত রাখবে না।এই কথা বললাম কারন ওনি কখনো আমাকে ভালোবাসার নজরে দেখে নাই।একটু ভূল করলেই রাগ দেখাবে।আমি শুধু ভয়ে ভয়ে থাকি কখন ভূল করি আর কখন ঝাড়ি দেয়।সারাদিনে একবারো আমার খবর নিবে না ওনি।শুধু সকালে অফিসে যাওয়ার সময় দুই একটা কথা বলবে আর অফিস থেকে রাতে যখন বাসায় আসবে।সারাদিন খেয়েছি কি না?ওনি এগুলো জিগ্যাসা করবে কেনো কখনো তো স্ত্রী হিসাবে মানেই না।মাঝে মাঝে মনে হয় এই সব ফেলে চলে যাই দুই চোখ যেখানে যায় কিন্তু পরে ভেবে উদাস হই কারন কই যাবো।বাবা বাসায় যাবো ওরার তো ঠিকভাবে তিনবেলা পেটে খাবার দিতে পারে না, আবার আমি নতুন করে আপদ খাড়া হবো।সমাজের লোকেরাও বলবে স্বামী বাড়ি রেখে মুখ পুড়ি বাবার বাড়িতে এসেছে।মা আমাকে বিয়ের সময় বলেছে যে বাঙ্গালী মেয়েদের জীবনে একবারে বিয়ে হয়।স্বামী যতোই খারাপ হোক না কেনো কখনো সংসার ছেড়ে যাবি না।এই ভেবে আজও পড়ে আছি স্বামীর শত অবহেলার সংসারে।

জান্নাতুন খাবার রেডি হয়েছে।

হুম আপনি আসুন খাবার রেডি।(ওনি সিরি দিয়ে নামতে নামতে বলতেছে।)
তারপর ওনি এসে একটা চেয়ারে এসে বসলেন।আর আমি খাবারের প্লেটে খাবার বেড়ে দিচ্ছি আর ওনি খাচ্ছে।একসময় ওনার খাওয়া শেষ হলো।আমাকে একবারো বললো না যে জান্নাতুন তুমি খাবার খেয়েছো কি?

জান্নাতুন তুমি,

হুম বলেন (এবার মনে হয় আমাকে খাবার কথা জিগ‍্যাসা করবে কিন্তু না এবারো বললো না )

তাড়াতাড়ি রুমে আসো।

এবার আর বুঝতে বাকি রইলো না কেনো আমাকে রুমে ডাকতেছে।প্রতিদিনের রুটিন আমাকে রুমে ডাকবেই।আমিও এক হতভাগা নারী কোন প্রতিবাদ করতে পাড়ি না।

কি হলো তাড়াতাড়ি আসো রুমে?

হুম যাচ্ছি আপনি রুমে যান আমি প্লেট গুলো গুছায় রেখে যাচ্ছি।

ওকে একটু তাড়াতাড়ি এসো।

তারপর ওনি চলে গেলেন সোজা ওনার রুমে।আমার এখন তো ভয়ে শেষ কারন রুমে গেলে আমারে ক্ষতি।আবার রুমে না গেলেও কপালে দুঃখ।যদি রুমে যাই প্রথমে বলবে সুয়ে পড়ো তারপর শুরু হবে ওনার শারীরিক অত‍্যাচার।কিন্তু একটা মেয়ে প্রেগন‍‍্যান্ট হওয়ার পরে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারবে না কারন মা -সন্তান দুইজনের সমস‍্যা হবে।তাহলে এখন আমি কি বলে ওনাকে মেনেজ করবো?আজকে না হয় মেনেজ করতে পারবো কিন্তু তারপরের দিন কি হবে,সেদিন তো আর আমাকে ছেড়ে দিবে না?আজকে সত‍্যটা জানাতেই হবে ওনাকে কি কপালে আছে সেটা আল্লাহ্ ভালো জানে?
এগুলো ভাবতেই প্লেটগুলো গুছানো প্রায় শেষ।তাই এখন রুমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি যতো হাটতেছি ততো ভয় বৃদ্ধি হচ্ছে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে।আজকে মনে হয় আমার সন্তানকে বাচাতে পারবো না।পেটে হাত দিয়ে বলতেছি।শেষে রুমের সামনে আসলাম রুমের দরজা আগে থেকে খোলা ছিলো তাই ধীরে ধীরে রুমের ভিতরে যাচ্ছি মাথা নিচ করে।

তোমার আসতে এতো দেড়ি হলো কেনো।তোমাকে না বললাম তাড়াতাড়ি আসতে।

আসলে হয়েছে কি প্লেটগুলো গোছাতে একটু দেড়ি হয়ে গেলো?

ওকে তাড়াতাড়ি বিছানায় এসে সুয়ে পড়ো।

এতোক্ষন ধরে যেটা ভয় পেয়েছিলাম তাই হতে চলতেছে।এখন আমার পেটের সন্তানকে বাঁচাবো কেমন করে।

কি হলো ওখানে দাড়িয়ে আছো কেনো তোমাকে না বললাম সুয়ে পড়তে?

আসলে হয়েছে কি আমি না ?

আজকে কি পিরিয়ড হয়েছে এটাই তো কোন সমস‍্যা নাই আগেও হয়েছে এমন আজকে কোন ব‍্যতিক্রম নয়।তুমি তাড়াতাড়ি এসো তো,

আসলে ইনি কি মানুষ নাকি পশু?এটা সত‍্য যে আমার পিরিয়ডের দিন গুলোও ছেড়ে দেয় নাই আমাকে।ওদিনো আমাকে দিয়ে তার চাহিদা মিটিয়েছে।আমাদের নবীজি (সা:) বলেছে যে,স্ত্রীর পিরিয়ডের সময় স্ত্রীর সাথে মিলন করা হারাম এটা থেকে স্বামীকে বিরত থাকতে বলেছে কিন্তু আমার স্বামী সেটাও মানে না।কতোদিন বাধা দিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয় না শেষে নিজেকে হার মেনে নিয়ে সপে দিতে হয় নিজের শরীলটা।কিন্তু আজকে পিরিয়ড না আমি মা হতে চলেছি,আমি প্রেগন‍্যান্ট এই অবস্হায় ওগুলো কখনো করা যাবে না।আজকে যে করে হোক বাধা দিতে হবে কিন্তু কিভাবে?

বিছানায় কি আসবে নাকি আমি উঠবো?

এখানে আর দাড়িয়ে থাকা যাবে না বেশি রেগে গেলে এর বিপরীত হতেও পারে।তাই ভয়ে ভয়ে বিছানায় গিয়ে বসলাম আর মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকতেছি।বিছানায় বসতেই শুরু হয়ে গেলো ওনার নোংরা ভালোবাসা।নোংরা ভালোবাসা বললেও ভূল হবে কারন ওনার স্ত্রী আমি।বিয়ের পরে স্ত্রী হচ্ছে তার হালাল জিনিস।কিন্তু সব সময় যে করবে ওটা না লিমিটেড থাকতে হবে।বিছানায় বসে প্রথমে ওনি আমার গলায় কিচ করতে শুরু করলো তারপর কিছুক্ষন পরে আমার ঠোঁট দুইটো দকল করে নিলো।পরে দেখতেছি ওনি গতি বৃদ্ধি হচ্ছে ওনার লক্ষ‍্য দেখতেছি অন‍্যদিকে যাচ্ছে শেষে বাধা দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় পাচ্ছি না।
প্লিজ এগুলো আর আমার দাড়ায় হবে না,আমি প্রেগন‍্যান্ট আমি আর ওগুলো করতে পারবো না।(বিছানা থেকে সোজা নেমে দাড়িয়ে এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে দিয়েছি )

তুমি প্রেগন‍্যান্ট মানে কবে থেকে আগে কেনো আমাকে বলো নাই।

আমি আজকেই বুঝতে পেরেছি আমি মা হতে চলেছি।

এটা আমাকে আগে বলবে না আমি কি করতে চলেছিলাম?আমাদের বাচ্চার ক্ষতি হতো না।আমাকে আগে বলবে না যে আমি বাবা হতে চলেছি।

আপনি সত‍্যি খুশি হয়েছেন।

হুম খুশি হবো না আমি বাবা ডাক শুনতে পারবো আর তুমি মা হবে।

এই কথা শুনে আমিও খুশি হলাম।যে তাহলে আমার সন্তানকে পৃথিবীতে জন্ম দিতে পারবো।পেটে হাতদিয়ে ভাবতেছি যে দেখ বাবা তুই পেটে আসাতেই তোর বাবা আমাকে মেনে নিয়েছে, তুই আসাতে তোর খচা বাবা অনেক খুশি হয়েছে।আমি খুশির ঠেলায় সোজা গিয়ে ওনাকে জরিয়ে ধরি।আজকে অনেক খুশি লাগতেছে।আসলেই কি আমার কপালে সুখ জিনিসটা লেখা আছে নাকি এটা ক্ষনিকের সুখ হঠাৎ মনকে প্রশ্ন করলাম।

এদিকে জান্নাতুন এর স্বামী ও কি খুশি হয়েছে জান্নাতুন প্রেগন‍্যান্ট হওয়াতে নাকি খুশি হওয়ার নাটক করতেছে।মুখে এক কথা বলতেছে নাকি মনের ভিতরে লুকিয়ে রেখেছে কিছু কথা। কি হয় পরের পর্বে দেখা যাবে?

#চলবে,,,,??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে