অপ্রাপ্তি পর্ব-০২

0
1127

#অপ্রাপ্তি 💔
#ইবনাত_আয়াত
~ পর্ব. ০২

লক খুলতেই যাব তখন’ই কেউ এসে মোবাইল টা কেড়ে নিয়ে নিল। মাথা তুলে তাকাতেই রিশানের মুখশ্রী নজরে এলো। চমকালাম৷ হুট করে ও কবে বের হলো? ভাবনার মাঝেই রিশান প্রকট চিল্লিয়ে বলল, ‘কী সমস্যা তোমার? না বলে এভাবে কারো মোবাইল ধরছো। কমন সেন্স নেই?’

‘আজব! মোবাইল ধরতে কমন সেন্স কেন লাগবে? তাছাড়া আমি স্বামীর ফোন ধরছি এতে কমন সেন্স আর অনুমতি আসছে কোত্থেকে?’

‘উফ কাম অন ইবনাত। এটা তোমার আগের যুগ না বুঝেছো? আর না বলে ফোন ধরবে কখনো।’

‘কেন? কী আছে ফোনে যে না বলে ধরা যাবে না?’

‘শাট আপ ইবনাত। কী আছে মানে? ফোন ধরতে নিষেধ করেছি ধরবে না মানে ধরবে না।’

কিছু বললাম না। যা দেখার তা তো দেখেই ফেলেছি। আর কি দেখব? ও আগে এমন রুড ছিল না। বিয়ের আগে প্রায়ই ওর সামনেই আমি ওর ফোন চেক করতাম। কিন্তু এখন? ধরাই যাচ্ছে না। তাছাড়া ও পাসওয়ার্ডও পাল্টে দিয়েছে। রিশান কিছু না বলে গায়ে হন হন করে নিচে চলে গেল। তার যাওয়ার পরপরই মিহির এলো। আমার পাশে বসে বলল, ‘কী ব্যাপার ভাবী? ভাইয়াকে দেখলাম রেগে চলে যেতে। কিছু কী হয়েছে?’

মাথা নাড়িয়ে বললাম, ‘আরে না তো। কিছুই হয়নি মিহির। ওসব বাদ দাও। তো তোমার কি অবস্থা?’

মিহির ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি ভাবী।’

‘কী?’

‘কী হয়েছে ভাইয়ার সাথে?’

‘ক-কিছুই তো না।’

‘ভাবী! আমি জানি কিছু হয়েছে। ভাইয়া আগে তোমাকে কত কেয়ার করতো৷ আম্মু তোমাকে কিছুই বলতে পারতো না ভাইয়ার জন্য। ভাইয়া তোমার জন্য লড়ে যেত কিন্তু এখন? কয়েকমাস ধরে দেখছি ভাইয়া তোমার সঙ্গে তেমন কথাই বলেনা। কাল দেখেছো? তোমাকে ছোট ভাবী আর আম্মু অপমান করেছিল সে কিছুই বলেনি। নিজের মতই মোবাইল টিপছিল। আগে তোমাকে তার পাশে বসিয়ে খাইয়ে পর্যন্ত দিত। কিন্তু কিছুদিন ধরে তো সে তোমাকে খেতে ডাকছেই না। তুমি খাচ্ছো কি খাচ্ছো না সেটা দেখছেই না। কি হয়েছে? তোমাদের মাঝে কিছু হয়েছে আমি নিশ্চিত। আর নাহয় ভাইয়ার মাঝে।’

চুপ করে রইলাম। মিহির বরাবরই বুদ্ধিমতি, সেল্ফ ডিফেন্ডার, রাগী, জেদি। প্রায় সব গুণই তার মাঝে লক্ষ করি আমি প্রতিদিন। তার সাথে আমার সম্পর্কটা ভাবী ননদের হলেও বন্ধুত্বের টাই বেশি। বয়সে ছোট বড় হলেও ব্যাপারটা বন্ধুত্বের। ভাবনার মাঝে মিহির আওড়াল, ‘কী হয়েছে ভাবী বলছো না কেন?’

থতমত খেয়ে গেলাম, ‘ক-কী বলছো মিহির? আরে কিছুই হয়নি এমনি।’

‘এমনি কী? তুমি কী ভাবছো আমি কিছুই বুঝিনা?’

‘কী বুঝার কথা বলছো?’

‘ভাবী! আমি জানি তোমাদের মাঝে কিছু হয়েছে। প্লীজ বলো কী হয়েছে।’

‘আরে মিহির! কিছু হলে কী আমি তোমাকে জানাতাম না?’

‘তবুও ভাবী। দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছো।’

‘আরে না মিহির অযথা চিন্তা করো না।’

মিহির কিছু বলল না। একটু বসে উঠ চলে গেলো। একটু পর রিশান রুমে প্রবেশ করল। ভ্রু কুঁচকালাম। কাপড় চেঞ্জ করছে। এই অসময়ে অফ ডে তে ও রেডি হচ্ছে কেন? আচমকা মেসেজ টার কথা মনে পড়ল। তাহলে কী তার কাছে যাচ্ছে? বুকটা ধ্ক করে উঠল। তাহলে আমি কি অপরিপূর্ণ রিশানের জন্য? কান্না পাচ্ছে খুব। নাহ্ আমার কান্না পেলে চলবে না। ব্যাপারটা মিটাতে হবে। এর মাশুল রিশানকে দিতেই হবে। অজান্তেই প্রশ্ন করে বসলাম, ‘কোথায় যাচ্ছো রিশান?’

রিশান বিরক্ত হয়ে কপাল কিঞ্চিৎ কুঁচকে বলল, ‘সেটাও বলতে হবে? কত কাজ আছে আমার কত জায়গায় যেতে হয়। তবু মূর্খের মতো প্রশ্ন করছো কেন?’

‘মানে কী? আজ অফ ডে তবু কাজ? একদিনও কী ঘরে বসা যায় না?’

‘কাম অন ইবনাত। এখন আগের যুগের একাউন্টিং চলে না ইউ নো। সো এসব কথাবার্তা বুড়াবুড়ির মুখে মানায় তোমার না।’

কিছু না বলে তার কার্যকলাপ পরীক্ষা করতে থাকি। জানি হাজার বাঁধা দিলেও থামবে না সে। অযথা পেঁচাল পেড়ে তো লাভ নেই। রিশান নিজ কাজে বেরিয়ে পড়ল। আর আমি? শূণ্য দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম তার যাওয়ার পানে। একটু পর নীচ থেকে কিছুর আওয়াজ পেলাম। মা চিল্লাচ্ছেন। অস্পষ্ট স্বরে শুনতে পাচ্ছি তিনি আমাকেই গালিগালাজ করছেন। দ্রুত নীচে নেমে এলাম। সত্যিই তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে চিল্লাচ্ছেন।

‘কী? কাজ কর্ম নেই? সারাদিন রুমের মধ্যে কী? জানি না কী করে বশ করল ছেলেটাকে। এমন অকর্মার ঢেকি’কে কেন বিয়ে করে ঘরে আনল ছেলেটা? নিশ্চয়ই বশ করেছে।’

চোখের কোণে কিছু অশ্রুকণা ভীড় জমতে নিচ্ছিল। আটকালাম কোনমতে। নিজেকে সামলে প্রশ্ন করলাম, ‘কেন ডাকছিলেন মা?’

‘আবার জিজ্ঞেস করে কেন ডাকছিলাম? কত বড় বে-আদব।’

‘মা এভাবে না বলে গালিগালাজ করলে তো হবে না।’

‘এই মেয়ে এই! চুপ একদম। তোর বাপের ঘর না এটা। আমি, নিশাত আর রুমি সেই কখন থেকে বসে আছি। সকালে কী বলেছিলাম মনে নেই?’

‘কী বলেছিলেন?’

‘কত্ত বড় বে-আদব আবার মুখে মুখে প্রশ্ন করছে?’

‘মা আমি জিজ্ঞাস করছি এটাও কী দোষ?’

‘চুপ! যা বলেছি সেটা কর।’

‘কী বলেছেন?’

‘তোকে বলিনি পরোটা বানাতে?’

‘আসলে.. ভুলে গিয়েছিলাম মা। দুঃখিত।’

আরো বলতে নিচ্ছিলেন তার আগেই দ্রুত গতিতে কিচেনে ঢুকে পড়লাম। তার এসব কথা শুনার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। পরোটা বেলে তেলে ছাড়লাম। চোখ বেয়ে অনর্গল পানির ধারা বয়ে চলেছে ঝর্ণার স্রোতের ন্যায়। কি দোষ করেছিলাম আমি? বিয়ের আগেও তো সে বলেছিল আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না। বিয়ের পরেও বলেছে। কিন্তু এখন? সে কী কথা রেখেছে? ভাবনার মাঝেই হঠাৎ হাত টা জ্বলে উঠল। চাঁপা আর্তনাদ করে উঠলাম। হাতে ছ্যাঁকা লেগেছে। তাড়াতাড়ি পানি ছেড়ে দিলাম। প্রায় কিয়ৎক্ষণ হাত টা ডুবিয়ে রাখলাম ঠান্ডা পানির মাঝে। একটু পরেই মায়ের আওয়াজ শুনলাম আবারো, ‘কী নবাবজাদী? আপনার জন্য কী দু’টো চাকর পাঠাবো নাকি? আর কতক্ষণ সময় লাগবে?’

বলতে বলতেই রান্নাঘরে এসে পৌছালেন তিনি। হাত পুড়তে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললেন, ‘আহারে মেয়েটার হাত টা কী বাজেভাবে পুড়ে গেল! দেখেশুনে কাজ করবে না?’

তিনি ধরতে নিলেই বাঁধা দিয়ে বললাম, ‘সমস্যা নেই মা। আমি দেখছি আপনি যান। আর কিছুক্ষণের মাঝেই হয়ে যাবে।’

‘ভালো ভাবে হয় যেন।’

‘জ্বী।’

তিনি চলে গেলে পূণরায় কাজে মনোযোগী হলাম। হাতের জ্বালা যেন কমেই না। ইয়া আল্লাহ্ কি দোষ করেছিলাম জীবনে? যে রিশানের মত এমন ধোঁকাবাজ আর ফ্রড ছেলের সঙ্গে আমার দেখা হলো। তার আগেই কেন আব্বু আমায় অন্য কোথাও বিয়ে দিল না?

‘ভাবী? তোমার নাকি হাত পুড়ে গেছে? কই দেখি দেখি।’

রুমির কথায় ধ্যান ভাঙে। সে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। পাশ ফিরলাম। রুমি বলল, ‘কী ভাবী? দেখি তো কোথায় পুড়েছে?’

‘থাক তুমি যাও নিজ কাজে।’

‘আরে ভাবী দেখিই না।’

রুমি আমার হাত টেনে নিজের কাছে নিল। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল। ন্যাকামো ভাব নিয়ে বলল, ‘আহারে! কীভাবে পুড়ে গেল! দেখি দেখি।’

বিরক্ত হলাম। এসব কোন ধরণের ন্যাকামো আমি তো বুঝলাম না। হঠাৎ… রুমি গরম পরোটা চেঁপে ধরল আমার ক্ষত স্থানে। এবার চাঁপা আর্তনাদ নয়, গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করলাম। আর সাথে তাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিই। এদিকে চিৎকার শুনে মা আর মিহির দৌড়ে এলো। মা রুমিকে নিচে পড়ে থাকতে দেখে তাড়াতাড়ি তার কাছে বসল। রুমি ন্যাকা কান্না জুড়ে দিল, ‘দেখো না মা। শাঁকচুন্নি টা কীভাবে আমায় ফেলে দিল।’

মা হুংকার দিয়ে বললেন, ‘বাপের বাড়ি থেকে এসব’ই শিখে এসেছে। এই ছোটলোকের মেয়ে! তুই কোন সাহসে আমার বউমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিস? দেখ কতখানি ছিলে গেছে?’

এদিকে মিহির এতসবের মাঝে আমার দিকে এগিয়ে এসে চিন্তিত স্বরে বলল, ‘একি ভাবী? তুমি কাঁদছো কেন?’

মিহির আমার চেঁপে ধরা হাত টা তার সামনে নিল। সাথে সাথে মুখ চেঁপে চেঁচিয়ে বলল, ‘ইয়া আল্লাহ্ এটা কী? কীভাবে হলো এসব ভাবী?’

অস্পষ্ট কান্নামিশ্রিত গলায় হেঁচকি তুলে বললাম, ‘প-পু-ড়ে গে-গেছে।’

মিহির চিন্তিত ভাবে ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘পুড়ে গেছে মানে? আর ছোট ভাবীই বা এভাবে পড়ে আছে কেন?’

রুমি তার স্পেশাল ন্যাকি কেঁদে বলল, ‘ভাবী হাত পুড়ে গিয়েছিল। তাই আমি এসেছিলাম তাকে একটু দেখতে। কিন্তু ভাবী কী করল জানো? বলল, মুখপুড়ী তোর জন্য আমার হাত পুড়েছে। এই বলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।’

মা চেঁচিয়ে বললেন, ‘নিম্ন বংশধারী তো এসব’ই করতে পারবে। অন্যের উপর চড়ে বসে খেতে পারবে আর কী পারবে?’

মিহির সন্দিহান চোখে তাকিয়ে রইল। মিহির আমার দিকে তাকিয়ে নিচুস্বরে বলল, ‘চলো ভাবী।’

মা থামিয়ে বললেন, ‘চলো মানে? এই দেখ তোর ভাবীর পা সহ ছিড়ে ফেলেছে মেয়েটার জন্য। আর তুই এই মুখপুড়ীকে বলছিস চলতে?’

মিহির পাত্তা না দিয়ে বলল, ‘ভাবী চলো তো।’

মিহির আমার হাত টেনে রান্নাঘর থেকে সোজা তার রুমে নিয়ে গেল। আমাকে বসিয়ে কিছুক্ষণ ঠান্ডা পানি লাগাল। তারপর টুথপেষ্ট লাগিয়ে দিয়ে বসল। শান্ত স্বরে বলল, ‘বরাবর’ই আমি তোমাকে খুব বিশ্বাস করি ভাবী। শুরু থেকে বলো কী হয়েছে?’

আমি আস্তে আস্তে তাকে সব ব্যক্ত করলাম। মিহির শান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে বলল, ‘আমি জানি তুমি এমন নও। কিন্তু তোমার এমন হওয়া উচিত যেমন টা ছোট ভাবী বলেছে। এভাবে আর কত অত্যাচার সহ্য করবে ওদের? তোমারও তো উচিত প্রতিবাদ করা। দু’বছর ধরে সহ্য করে আসছো এসব। কেন ভাবী? তোমার কী আত্মসম্মান নেই?’

আমি চুপ করে রইলাম। আগে রিশানের জন্য চুপ ছিলাম। এখন কেন চুপ করে আছি? মিহির আবারো বলল, ‘ভাইয়াকেও আমার কেন যেন সন্দেহ হচ্ছে। ও আর আগের মত নেই। কেমন যেন পাল্টে গেছে। তোমাকে তো এখন পাত্তাই দেয় না।’

‘থাক মিহির! এসব আর বলো না। বাদ দাও।’

‘আর কত বাদ দেব ভাবী? আর কত? তুমি এসব সহ্য করতে পারো। কিন্তু আমার এসব সহ্য করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। যদিও এসব আমার উপর হচ্ছে না। কিন্তু আমি ওদের মতো নির্দয় নই। তাই তোমাকে বলছি। তুমি এর প্রতিবাদ করো।’

তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। মেয়েটা সত্যি আমায় খুব ভালোবাসে। কিন্তু.. তারই এমন পরিবারে জন্ম নিতে হলো যা তার পুরোই উল্টো।

.

‘তুমি আসলে কী বলোতো ইবনাত? আজ নাকি তুমি রুমিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করেছো।’

হাসলাম। যাকে বলে তাচ্ছিল্য হাসি। বললাম, ‘ওহ্ আচ্ছা? তা ও যে আমার হাত এমন ঝলসে ফেলেছে তার বেলায়? তার বেলায় কিছুই না তাই না রিশান?’

‘মানে? ও তোমার হাত ঝলসাবে কেন?’

‘কেন সেটা তোমার ভাইয়ের বউকে জিজ্ঞাসা করো গিয়ে। ওর সাফাই গাইতে আমার কাছে এসো না।’

রিশান দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বলল, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করছো ইবনাত।’

‘তো আর কী বলব রিশান? ও আমার হাত ঝলসে দিয়েছে। তার জন্য কিছুই বলবে না। আর আমি সেল্ফ ডিফেন্স করতে তাকে ধাক্কা দিয়েছি এতে তোমার পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে? কেন? তোমার কাছে কী আমি বড় নাকি তোমার ভাইয়ের বউ?’

রিশান হঠাৎ রেগে গেল। হঠাৎ তেড়ে এসে আমার গাল চেঁপে ধরল। এতই জোরে যে আমার গাল, চোখ দু’টোই লাল হয়ে যাচ্ছে। শ্বাস নেওয়া টাও বড্ড দায় হয়ে পড়েছে। রিশান চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, ‘খুব বাড় বেড়েছিস তাই না? খুব উড়ছিস? কার টাকায় খাচ্ছিস তুই? কার পয়সায় এত উড়াউড়ি করছিস? আমারই তো? আর এখন আমার সাথেই বে-আদবী?’

‘হোয়াট ইজ ইট? এসব কী ভাইয়া? কী করছো তুমি? এক্ষুণি ছাড়ো ভাবীকে। ছাড়ো বলছি।’

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কথাটা বলে উঠে মিহির। সাথে সাথে রিশান আমাকে ছেড়ে দিয়ে দু’কদম পিছে সরে গেল। আমি নিচে পড়ে যাই ব্যালেন্স রাখতে না পেরে। সাথে সাথে জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকি। ইতোমধ্যে আখিকোণে অশ্রুকণারা ভীড় করেছে। মিহির দৌড়ে আমার কাছে এলো। আমাকে তুলে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলল, ‘এসব কী? মাইন্ডলেস তুমি? এসব কোন ধরণের নোংরামী? মর্ডান ইয়াং বয় হয়ে বউয়ের গায়ে হাত তুলছো লজ্জা করছে না? এতটা পাষাণ কবে হলে তুমি?’

রিশান কিছু না বলে হন হন করে প্রস্থান করল। মিহির চিন্তিত গলায় বলল, ‘ভাবী তুমি ঠিক আছো? কী হয়েছে হ্যাঁ? ভাইয়া এমন করল কেন? বলো ভাবী!’

আমি থামিয়ে আস্তে করে বললাম, ‘অনেক কিছু মিহির। অন্য কোন সময় হলে বলব।’

মিহির হতাশ হলো। আমাকে এক গ্লাস পানি এনে দিল। আমি পান করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। আজ অনেক ধকল গেছে আমার উপর। জানি না এর অন্ত কী? জানি না এই জীবনের সমাপ্তী কবে হবে। নাকি এখানেই হবে আমার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ। হবে না আমার প্রাপ্তী গুলো। রয়ে যাবে অপ্রাপ্তী।

[চলবে.. ইনশা আল্লাহ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে