অনুতপ্ত পর্ব-৭

0
923

#অনুতপ্ত ৭ম পর্ব
#সাদমান হাসিব

সময়ের অববাহিকায় চলতে থাকে মানুষের জীবন এমন করে আমার আর রুবাইয়া সংসার সুখী-সমৃদ্ধ ভাবে চলতে থাকলো। আমার ছেলে সিরাত আজ গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এসএসসি পাস করেছে, অফিসের কাজের চাপে এখনো বাসায় যেতে পারিনি। সিরাত আর রুবাইয়া বারবার কল করছে, কেন এখনো বাসায় যাচ্ছিনা। আমি তাদেরকে বললাম এক ঘণ্টার মধ্যে বাসায় ফিরব সবকিছু গুছিয়ে। যখন বের হবো তখন বিল্ডিং এর নিচতলায় আগুন লাগছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। আমার অফিস পাঁচ তলায়, অফিসের উপরে আরো পাঁচতলা আছে সর্বমোট ১০ তলার বিল্ডিং। নিচে আগুন লাগার কারণে মানুষ দৌড়ে নামছে, আরো অনেক আহত হচ্ছে পুড়ে যাচ্ছে। আমি তিন তলা পর্যন্ত যেয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম জানালা দিয়ে পাশের একটা দুই তলা বিল্ডিং এ লাফ দেবো। তিন তলা থেকে দুই তলা তেমন একটা উচ্চতা নয়, জালানার কাজ সরিয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে আমি লাফ দিলাম। কিন্তু সেই বিল্ডিংয়ে যেতে পারলাম না, মাঝখানের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে গেলাম। তারপর আমার কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরে শুনেছি উদ্ধারকর্মীরা নাকি আমাকে সেখান থেকে হসপিটালে ভর্তি করেছে। এই দুর্ঘটনায় প্রায় একশ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে, দেড়শো জন আহত অবস্থায় হসপিটালে আছে। ফায়ার সার্ভিস বিল্ডিং এর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আনতে সমস্ত বিল্ডিং পুড়ে ছারখার হয়েছে। আমি যদি লাফ না দিতাম হয়তো সেদিন পুড়ে ছারখার হয়ে যেতাম।

রুবাইয়া আমার পাশে বসে আছে, আমার দুই ছেলে আম্মু একটু দূরে বসে কান্না করছে। আমি রুবাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম তোমরা এত চিন্তিত কেন? আমি তো বেঁচে আছি, কেউ কোনো কথা বলে না। ছোট ছেলে সাদাফ এসে বলল, আব্বু তুমি কখনো হাটতে পারবে না তোমার মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে গেছে, বাট তুমি চিন্তা করো না আমরা দুই ভাই আছি আমরা যখন জব করবো তোমার কোন কষ্ট হবে না। তুমি না হয় বাকিটা জীবন শুয়ে বসে কাটিয়ে দিবে। ছোট ছেলের কথা শুনে মাথায় হাত বুলালাম, ভাবছি বেঁচে থাকার কি লাভ হলো, না হয় মরেই যেতাম এই জীবন হুইলচেয়ারে বসে কিভাবে কাটাবো।

হসপিটালে প্রায় তিন মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় আসলাম, চিকিৎসার সমস্ত খরচ সরকার থেকে বহন করা হয়েছে। সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই বলে আমার চাকরির বদলে রুবাইয়াকে চাকরি দেওয়া হলো সরকার থেকে। আমার সেবা যত্ন রান্না সংসারের সমস্ত কাজ আম্মুর উপর পড়লো। রুবাইয়া সকাল নয়টায় অফিসে চলে যায় আসে বিকেল পাঁচটায়। সংসার সামলায় আমার আম্মু, আমার দেখাশোনা ছেলেদের খাবার-দাবার রান্না সবকিছু আম্মুর উপর পড়েছে, সে বয়স্ক মানুষ। রুবাইয়াকে বললাম একজন কাজের মহিলা রাখো, আম্মু বয়স্ক মানুষ। তারপর একজন কাজের মহিলা রাখা হলো কাপড় ধোয়া আর রুম মুছার জন্য, তবুও আম্মুর ধকল অনেকটা কমলো। হুইল চেয়ারে জানালার ধারে বসে বাহিরে দুনিয়া দেখি, নিজের পায়ে হেঁটে কোথাও যাবার ক্ষমতা নেই। আম্মু সংসার সামলাচ্ছে, রুবাইয়া বাহিরে পরিশ্রম করছে, আমি শুয়ে বসে খাচ্ছি।

সিরাত এইচএসসি পাস করার পর আবদার করলো অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাবে, সেখানে লেখাপড়ার খরচ অনেক। আর এদিকে ছোট ছেলে সাদাফ ক্লাস নাইনে পড়ে, রুবাইয়া ছেলের ইচ্ছা পূরণে রাজি হয়ে গেল। আমাকে সে বললো, কষ্ট করে যদি ছেলেদেরকে মানুষ করতে পারি তাহলে দেখবে এই ছেলেরা একদিন আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। আমি আর কিছু বললাম না, আমি আর কি বলব আমার তো কিছু করার ক্ষমতা নেই। সিরাতকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হলো লেখাপড়া করানোর জন্য। সিরাতকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর পর সংসারে কিছুটা অভাব দেখা দিলো। রুবাইয়া আমাকে বললো, কাজের মহিলাকে মাসে 5000 টাকা করে দিতে হয়, এই টাকাটা যদি না দিতে হতো তাহলে সংসারে আরেকটু স্বচ্ছলতা আসতো। ছেলের লেখাপড়ার খরচ কুলিয়ে উঠতে পারতাছিনা, কিন্তু কি করব ছেলের আশা করেছে অস্ট্রেলিয়া লেখাপড়া করবে, এদিকে তো সাদাফের লেখাপড়ার খরচও আছে। তোমার ওষুধপত্র কিনতে হয় মাঝে মাঝে আম্মুর জন্য প্রেশারের ওষুধ কিনতে হয়। রুবাইয়াকে বললাম তুমি কি চাও কাজের মহিলাকে বাদ দিয়ে দিতে? বাদ দিয়ে দিলে তো সমস্ত কাজ আম্মুকে করতে হবে, তার তো বয়স হয়েছে। রান্নাবান্নাটা না হয় করলো, কিন্তু কাপড় ধোয়া ঘর মুছা এগুলো সে করতে পারবে না।

আমাকে অবাক করে দিয়ে রুবাইয়া বললো, কেন পারবে না তার মতো বয়সে মহিলারা দেখো রাস্তাঘাটে মাটি কেটে খাচ্ছে ইটভাটায় কাজ করছে, আর এখানে তোমার মা এই কাজগুলো করতে পারবেন না। তুমি তো সবসময় নিজের মাকে নিয়ে ভাবো, আমি যে কত কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছি আমার প্রতি তোমার কোন মায়া মহাব্বত নেই।

এত বছর পর রুবাইয়ার হিংসাত্মক কথায় আমি নিশ্চুপ হয়ে গেলাম, এখন তো আমার করার কিছু থাকবে না, আমি নিরুপায়। তবুও বললাম কাজের মহিলাকে বাদ দিলে কিন্তু আম্মুর কষ্ট হয়ে যাবে। রুবাইয়া আমার কথা শোনেনি, কাজের মহিলাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। তারপর আম্মুর অবস্থা নাজেহাল সারাদিন কাজ করতে করতে। এখন আম্মুর কোমরে ব্যথা, উঠতে বসতে পারেন না। রুবাইয়াকে বললাম, আম্মুকে ডাক্তার দেখাতে, সে বলে এত টাকা নেই কিভাবে ডাক্তার দেখাব পুরো একটা সংসার চালাতে হয় আমাকে, আমার মাথার উপর অনেক চাপ।

ছেলেকে বিদেশ স্টাডি না করাতে পাঠালে এত খারাপ অবস্থা হতো না সংসারের। তাই বলে কি আমার মায়ের উপর দিয়ে এত ধকল যাবে, আমিতো নিরুপায় কিছু বলতে পারিনা। কিন্তু দিনকে দিন আম্মু অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, আম্মুর চোখ মুখে ক্লান্তির ছাপ।
আমি রুবাইয়াকে আবার বললাম, তুমি বুঝতে চেষ্টা করো আম্মু কিন্তু দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

সে আমাকে বলল কাজের মেয়ে রাখা সম্ভব নয়। সাদাফকে এখন সবচেয়ে ভালো কলেজে ভর্তি করবো, আরও টাকার প্রয়োজন, ছেলেদের তো ভালোভাবে মানুষ করতে হবে।

আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি যখনই এই বাসায় আসে তারা তো কোন কাজ করে না, আমি বুঝতে পারতাছি রুবাইয়া এখন চেঞ্জ হয়ে গেছে, সে নিজে রোজগার করে এতে তার অহংকার বেড়ে গিয়েছে,, আমাকে সে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আম্মু অসুস্থ হয়ে একেবারে বিছানায় পড়ে গেল, এতে রুবাইয়া যেন খুব ক্ষিপ্ত হলো, কেন আম্মু সংসারের কাজ করে না, সারাদিন শুয়ে থাকে। অফিস থেকে এসে সে রান্না করে খাবে এটা মেনে নিতে পারছেন না, আম্মুর সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে কয়েক দিন ধরে।

আমি কিছু বললে আমাকে বলে পঙ্গুত্ব বরণ করে বসে বসে খাবার খাচ্ছো, আবার নিজের মায়ের কথা বলছি বলে শরীরে লাগে। যদি নিজের মায়ের জন্য এতো দরদ লাগে এতো ভালোবাসা থাকে যাও মাকে নিয়ে রোজগার করে খাও, আমি পারবো না এত ভেজাল সামলাতে।

রুবাইয়ার কথায় চোখ দিয়ে টলটল করে পানি পড়ছিল আমার, আমি যখন চাকরি করছি তার সাথে কখনো খারাপ ব্যবহার করিনি এমন করে। আমিতো সংসার ঠিকই চালাচ্ছিলাম ভালোভাবে। আম্মু বিছানা থেকে উঠতে পারেনা কোমরের ব্যথায়, তাকে খাবার-দাবার দিবে কে তার সেবা সুস্থতা করবে কে। আমার ছোট ছেলে সাদাফ মাঝে মাঝে দাদির খোঁজখবর নেয়। অবহেলা অবজ্ঞায় আমার মা দিনদিন ধুঁকে ধুঁকে মরে যাচ্ছে। রুবাইয়া কাজের মহিলা রাখলো, রান্নাবান্না করে চলে যায়, আমাকে খাবার দিয়ে গেলও আমার আম্মুকে খাবার দেয় না, আমি তখন আমার খাবারটা হুইলচেয়ারে বসেই কোনভাবে আম্মুর রুমে যেয়ে আম্মুকে দিয়ে আসি, নিজে না খেয়ে থাকি।

একদিন রুবাইয়া আমাকে বলল, তোমার মা এভাবে বিছানায় পড়ে থাকবে তার সেবা-যত্ন কে করবে, আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কি সিদ্ধান্ত নিয়েছো এটা বলে আমার বুকটা কেঁপে উঠল।

তুমি কি আমার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে চাইবে।

সত্যি তাই, আমি তোমার আম্মুকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসতে চাই, সেখানে মানুষ আছে তারা তার সেবা যত্ন করবে।

কি বলো তুমি এই বয়সে এসে আম্মুকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবে।

না দিয়ে এসে কি করবো বলো, আমি থাকি সারাদিন অফিসে, তোমার আম্মুর খেয়াল কে রাখবে। বিছানা থেকে উঠতে পারেনা, একদিকে তোমার সেবাযত্ন আরেকদিকে তোমার মায়ের সেবাযত্ন আমি এতকিছু করতে পারবো না।

তুমি এটা করতে পারো না রুবাইয়া।

আমি করতে পারি, মনে আছে তোমার মায়ের জন্য সিরাতকে তুমি আমার কাছ থেকে আলাদা করেছিলে। মায়ের প্রতি এতটা ভালোবাসা ছিলো আমাকে ছেড়ে দূরে ছিলে, ছেড়ে দিতে চেয়েছিলে আমাকে। কই এখন যাও মাকে নিয়ে থাকো, এখন তো তোমার ক্ষমতা শেষ, এখন পারবে আমার ছেলেকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে। কম কষ্ট দাওনি আমাকে, তবুও আমি তোমার মাকে নিয়ে একসঙ্গে ছিলাম, এখন সংসারের চাপ সামলাতে সামলাতে আমি হাঁপিয়ে গিয়েছি। আর পারবোনা সবাইকে নিয়ে এভাবে চলতে, আমার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এত টাকা খরচ করতে পারবোনা অন্যদের জন্য।

আমার আর কোন কথা বলার ছিল না, সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে আম্মুকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো। আমার বুকের ভিতর খুব চাপ অনুভব করছিলাম, মনে হচ্ছে আমার কলিজাটা ছিড়ে কেউ বের করে দিচ্ছে। আমি যদি আজ সুস্থ থাকতাম আমার আম্মুকে কেউ কোথাও পাঠাতে পারতো না, আজ আমি নিরুপায় আমার শক্তি সামর্থ্য নেই সেই কারণে রুবাইয়া আজ পুরনো কথা স্মরণ করিয়ে দিল। সে অন্যায় ভাবে আমার মাকে আলাদা করতে চেয়েছিল, আমি শুধু বুঝাতে চেয়েছিলাম সন্তানের কাছ থেকে আমাকে আলাদা করলে, মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে আলাদা করলে কেমন কষ্ট হয়, সেই কষ্টের অনুভূতিটা যেন রুবাইয়া বুঝতে পারে। তারপরে রুবাইয়া ভালো হয়ে গিয়েছিল, এত বছর পর এসে এভাবে সেকথা তুলনা দিবে, পুরনো কথা মনে ধরে রেখেছে হয়তো। সে আম্মুর সাথে এখন আবার খারাপ ব্যবহার করছে, যে কাজ বিশ বছর আগে করতে পারেনি সে কাজটা এখন করে সে জয়ী হতে চাচ্ছে। এখন আমি কোন বাধা দিতে পারবো না সেটা সে জানে, তাই আম্মুকে বৃদ্ধাশ্রম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শুধুমাত্র হিংসা আর জিদের কারণে এমন করছে রুবাইয়া।

আম্মুকে যেদিন বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসলো, যাবার আগে আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কান্না করলো, মুখে হাত বুলিয়ে বলল বাবারে হয়তো তোর সাথে আমার আর দেখা হবে না, আমার যে অবস্থা আমি আর কয়দিন বা বাঁচব। বৌমা চেয়েছিল তুই আর আমি একসঙ্গে না থাকি সেটা এত বছর পরে এসে সত্যি করে দিলো। আমার জন্য চিন্তা করিস না ভালো থাকিস।

রুবাইয়া আম্মুকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসার পর আমার বুকের ভিতর চাপ দিতে শুরু করলো, মনে হয় আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যাবো খুব কষ্ট হচ্ছিল। আজ আমি নিয়তির কাছে পরাজিত, রুবাইয়া জিতে গেল তার জিদের কাছে। আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে, আমার এই কান্না দেখে রুবাইয়া তিস্ককার করে বলে, মায়ের জন্য এত কান্নাকাটি করতে হবে কেন, মনে হয় ছোট বাচ্চা মাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। বুড়ো হয়ে যাচ্ছে তাও মায়ের জন্য এত ন্যাকামো, সহ্য হয় না আর এগুলো আমার।

অতি কষ্টে মানুষের হার্টের ভিতরে প্রব্লেম শুরু হয়, যেদিন থেকে বাবুর মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হলো সেদিন থেকেই বাবুর শরীর খুব অসুস্থ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে অবনতির দিকে যাচ্ছিল,খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। এদিকে রুবাইয়ার খোঁচা দিয়ে বলা কথা শুনে শুনে বাবু আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। মায়ের জন্য কান্নাকাটি দেখে রুবাইয়া এখন বাবুর দিকে খেয়াল রাখেনা, অফিস থেকে এসে খেয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে যায়। তার চিন্তা ছেলেদের কিভাবে ভালোভাবে কাজ করবে, উন্নত জীবন যাপন করতে পারবে, এটাই তার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় সবসময়।

একদিন সকালে বাবুর আর ঘুম ভাঙলো না রুবাইয়া তাকে ডাক দিল কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বুঝতে পারল না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে বাবু। সাদাফ তার বাবাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লো। বাবু মারা যাওয়াতে রুবাইয়ার কোন কিছু যায় আসে না। মারা গিয়েছে ভেজাল শেষ হয়েছে এমন গাছাড়া ভাব। সাদাফ বেরিয়ে পরলো বৃদ্ধাশ্রমের উদ্দেশ্যে তার দাদিকে নিয়ে এসে তার বাবাকে দেখাবে। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে দাদিকে বলল, বাবা খুব অসুস্থ তুমি আমার সাথে আসো। সাদাফের দাদি ঠিকমতো হাঁটতে পারে না, কোনরকমে বাসায় নিয়ে আসলো। যখন দেখতে পারলো তার ছেলে এই দুনিয়ায় নেই বাবুর মা একটা চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারানো। আর কখনো কোনদিন সেই জ্ঞান ফিরবে না, ছেলের সাথে সাথে মায়ের মৃত্যু হল, শেষ হয়ে গেল বাবু ও তার মায়ের অধ্যায়। রুবাইয়ার আর কোন ঝামেলা নেই, তাকে আর কেউ কিছু বলবেনা, স্বাধীন জীবন যাপন পেয়ে গেল।
এখন পারবে ছেলেদের ভবিষ্যৎ ভালোভাবে ঘড়তে। সিরাত বিদেশ থাকায় বাবা আর দাদির মৃত্যুর খবর শুনে আসতে পারলোনা।
বাবার প্রতি আর দাদির প্রতি এমন অবিচার দেখে সাদাফ মায়ের প্রতি খুব অসন্তুষ্ট হলো।

চলবে,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে