অনুতপ্ত পর্ব-০৪

0
1171

#অনুতপ্ত ৪র্থ পর্ব
#সাদমান হাসিব

প্ল্যান মাফিক রুবাইয়াকে স্যরি বলে ও ভালো ভালো কথা বলে মন নরম করে আমি বাসা থেকে বের হলাম। রুবাইয়ার কাছে স্যরি বলাতে এবং আমার ভালো ব্যবহার দেখে সে তো অনেক খুশি। ভাবছে আমার আম্মুকে অন্যখানে রেখে এসে আমি সবকিছু ভুলে গেছি, এখন আমি সুখের সংসার করবো। আমি কাল সকালে অফিসের কাজে চিটাগং যাব এটা শুনে আমার জামাকাপড় সবকিছু গুছিয়ে ব্যাগ রেডি করে দিয়েছে রুবাইয়া। আমি বিকালে বাসায় ফিরে দেখি রুবাইয়া তার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলছে। আমার শাশুড়ি রাতে চলে আসবে, ফোনে কথা বলে রুবাইয়া আমাকে জানালো।

আমি বললাম, ঠিক আছে রাতেই নাহয় আম্মু আসুক।

এই শুনো পাশের ফ্ল্যাটের ভাবী একটু যেতে বলেছে সবাই মিলে কি জানি একটা অনুষ্ঠান করবে, এটার জন্য বিকেলে সবার সাথে কথা বলবে। তুমি না আসলে সিরাতকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হতো, তাই চিন্তা করছিলাম সে যে কান্নাকাটি করবে, সবাই একসঙ্গে বসবে তার জন্য কথা বলার প্রবলেম হতে পারে। তুমি যখন এসেছ ভালো করেছো তোমার কাছে সিরাতকে রেখে আমি ভাবীর ফ্ল্যাটে যাই, কি বলো।

মনে মনে বললাম, যাও আমি তো এটাই চাই যেটা সকালে করতে হতো তা এখনই করে ফেলতে পারবো, এটাই মোক্ষম সময়। রুবাইয়া যাবার ৫ মিনিট পর আমি শাকিল ভাইয়ের ফ্ল্যাটের সামনে থেকে ঘুরে আসলাম, দেখলাম মহিলারা বসে আলোচনা করছে। তাই সাথে সাথে ক্ষণ বিলম্ব না করে ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলাম ফ্ল্যাট থেকে।

দারোয়ান আমাকে বললেন, ভাইয়া কোথায় যাচ্ছেন বাচ্চাকে নিয়ে? বেড়াতে যাচ্ছেন, নাকি একা কেন ভাবী যাচ্ছে না।

দারোয়ানকে বললাম, আমি তোমার ভাবীর বাবার বাসায় যাচ্ছি সিরাতকে নিয়ে তোমার ভাবী শাকিল ভাইয়ের ফ্ল্যাটে কি যেন একটা বিষয় নিয়ে মিটিং করছে মহিলারা সবাই। মিটিং শেষ হলে সে চলে আসবে তার বাসায়। দারোয়ান আর কিছু বললেন না, আমি গেইট থেকে বের হয়ে সামনে গেলাম সাথে সাথেই সিএনজি পেয়ে গেলাম। সিএনজি ড্রাইভারকে বললাম সায়েদাবাদ বাস ষ্টেশন নিয়ে যেতে। সিরাত আমার কোলে বসে আব্বু আব্বু করছে, আমার মুখে হাত বুলাচ্ছে সে অনেক খুশি। আমি তাকে বললাম তোমাকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছি, তুমি তোমার আম্মুর জন্য কান্নাকাটি করবেনা, আমি তোমাকে অনেক আদর করবো। সিরাত আমার কথা শুনে হেসে ফেলল, আমার ছেলে আমাকে অনেক ভালোবাসে, বিশ্বাস আছে তাকে আমি রাখতে পারব রুবাইয়াকে ছাড়া। হয়তো একটু কান্নাকাটি করবে সেটা ম্যানেজ করে নিতে পারবো এতটা প্রব্লেম হবেনা। সায়েদাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে ময়মনসিংহের বাসে উঠলাম, আমার বন্ধু ময়মনসিং চাকরি করে আমি তার বাসায় যাচ্ছি। আজিমের সাথে আমার কথা হয়েছে, আমার ছেলের বয়স 14 মাস, আমার বন্ধু আজিমের ছেলের বয়স 18 মাস। সেই হিসেবে ভেবে নিয়েছি তাদের খাবার-দাবার প্রায় একি রকম হবে তাই আজিম ভাইয়ের বউ সিরাতের খেয়াল রাখতে পারবে, আর আমি তো আছি ই।

আমি যখন ময়মনসিংহের বাসে উঠেছি তখন রুবাইয়া কল দিয়েছে, আমি কল কেটে দিচ্ছি, এতক্ষণে বাস ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। রুবাইয়া বারবার আমাকে কল দিচ্ছে, রিসিভ করলাম।

রুবাইয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলছে, বাবু তুমি কোথায় তুমি কি সিরাতকে নিয়ে বাহিরে গেছ? কিন্তু তোমার ব্যাগ ও তো দেখতে পাচ্ছিনা, কোথায় গিয়েছো তুমি আমার ছেলেকে নিয়ে।

আমি সিরাতকে নিয়ে চলে আসছি।

তুমি সিরাতকে নিয়ে চলে যাচ্ছো মানে, কোথায় যাচ্ছ।

কোথায় যাচ্ছি সেটা তোমাকে বলব না, শুধু জেনে রেখো আমার আম্মুর বুক থেকে তুমি আমাকে আলাদা করেছো, তোমার বুক থেকে তোমার ছেলেও আলাদা হলো। এখন বুঝবে সন্তানকে দূরে সরানোর কষ্ট কেমন, কেমন লাগে তোমার।

তোমার সাথে আমার ছেলের তুলনা দিও না, তুমি বড় হয়ে গেছো বিয়ে করেছ এখন তোমার নিজের সংসার আছে। আর আমার ছেলে বয়স মাত্র চৌদ্দ মাস, দুধের একটা বাচ্চা সে কিভাবে আমাকে ছাড়া থাকবে। প্লিজ তুমি তাড়াতাড়ি নিয়ে বাসায় চলে আসো, আমার বাচ্চাকে তুমি কষ্ট দিওনা।

বাচ্চা তোমার একার নয়, আমারও আর আমার ছেলে আমার কাছে কখনো কষ্টে থাকবে না, তোমার চেয়ে বেশি আদরে রাখবো। সে তোমার চিন্তা করতে হবে না, আর কি বললে আমি বড়,, বিয়ে করেছি এখন আমার সংসার হয়েছে। তাই বলে কি আমার মাকে ছেড়ে দেবো, সন্তান বড় হয়ে গেলে মা কি পর হয়ে যায়। আমার মা আমাকে কতটা কষ্ট করে বড় করেছে সেটা তুমি হয়তো জানো, আমার মা চাইলেই অন্য কোথাও বিয়ে করে সংসার করতে পারতো তার আমার মত আরো দু চারটা ছেলে মেয়ে হতো, তখন আমি না থাকলেও সে ছেলেমেয়েগুলো তাকে আদর যত্নে রাখতো। সে শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে সংসার করে নি, আমাকে মানুষ করেছে। মানুষের বাসায় কাজ করে লেখাপড়া করিয়েছে, কখনো নিজে না খেয়ে আমাকে খাইয়েছে, আমি জানি কতটা কষ্ট হয়েছে আমার মায়ের। সেই দিক দিয়ে বিবেচনা করলে তুমি কি কষ্ট করেছ, শুধু দশ মাস পেটে ধরেছো, তোমার আর কোন কষ্ট একা করতে হয়নি। তুমি যতটা রাত জেগেছো সিরাতের জন্য আমিও ততটা রাত জেগেছি। তুমি সিরাতকে একা লালন পালন করো নাই। আমার মা আমাকে একলা মানুষ করেছে কেউ ছিলনা তাকে সাহায্য করার। আমার মায়ের সাথে তোমার এত কিসের হিংসা? সে তোমাকে কিছু বলে না তোমার ধারে’ কাছে আসেনা। শুধু তিনবেলা খাবে আর শুয়ে-বসে ইবাদত করবে এটাও তোমার সহ্য হয়না। রুবাইয়া বলতে পারবে আমার মা তোমার কি করেছে, কি অন্যায় করেছে তোমার সাথে।

তোমার মা তোমার কাছে বেশি, আমাকে তুমি ভালোবাসো না, তাহলে আমাকে বিয়ে করলে কেন? তোমার মায়ের জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে দিতে পারো এটাই আমার জিদ। কেন তুমি আমার স্বামী হয়ে আমাকে ভালোবাসো না, কেন তোমার মনে আমি নেই, কেন মন থেকে আমাকে ভালোবাসো না।

তোমাকে আমি ভালোবাসি, সেটা দেখার চোখ তোমার নেই। তোমাকে ভালো না বাসলে কবে লাথি মেরে ছুঁড়ে ফেলে দিতাম, আমার মায়ের বিষয় তুমি যা যা বল এটা এতদিন সহ্য করতাম না। তোমার মুখ থাপ্পড় দিয়ে বাঁকা করে দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু সেটা আমি করিনি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা মায়া-মহব্বত আছে বলেই। আমি আমার পরিবারের সবাইকে ভালোবাসি, আমি আমার মাকে যেমন ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি আমার সন্তানকে ভালোবাসি। এই বলে এটা না তোমার জন্য আমার মাকে ত্যাগ করে ফেলব। আমার মা যদি বলতো তোমাকে ছেড়ে দিতে আমি তাও দিতাম না, তাকে বুঝাতাম যে আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি তাকে ছাড়া সম্ভব নয়। আমার তোমাদের প্রত্যেকের প্রতি ভালোবাসা আছে সেটা আলাদা আলাদা ভাবে। তুমি সেটা বুঝতে চেষ্টা করো না। আর কি বললে সিরাত দুধের শিশু, মায়ের কাছে সবসময় সন্তান ছোট ই থাকে আমি আমার মায়ের কাছে সেই ছোটটিই আছি যেমনটি শৈশবে ছিলাম। তোমার ছেলে যখন বড় হবে তোমার কাছে ছোট হয়েই থাকবে। এটা ভেবে দেখো যখন তার স্ত্রী আসবে তোমাকে যদি ছেড়ে দিতে বলে, বাসা থেকে বের করে দিতে বলে এটা শুনে তোমার কতটা কষ্ট হবে, তোমার ছেলেকে ছাড়া তুমি থাকবে চলে যাবে তাদেরকে ছেড়ে। বল রুবাইয়া সত্যি উত্তর দেবে।

হ্যাঁ সত্যি বলছি যদি আমার ছেলের বউ আমাকে সহ্য করতে না পারে, তাদের সাথে আমাকে রাখতে না চায় আমি চলে যাবো। আমি বেহায়া হয়ে তোমার মায়ের মতো পড়ে থাকবো না, আমার লজ্জা আছে তোমার মায়ের তো লজ্জা শরম নেই তাই এত কিছুর পরেও বাসা থেকে চলে যেতে চায়না। আর এখন যখন দেখলো তাকে বাসা ছেড়ে যেতে হবে চক্রান্ত করে তোমাকে আর আমার ছেলেকেও সাথে করে নিয়ে গেলো।

সত্যি তুমি ভালো হবে না, কখনো ভালো হবেনা তোমার স্বভাব, তুমি একটা… কি আর বলবো। এখনো তুমি আমার মায়ের বিষয়ে বাজে বাজে কথা বলতেছে, তোমার তো আক্কেল জ্ঞান কিছু নেই। থাকতো যদি এখনও স্যরি বলতে। বলতে আমার মাকে আর সিরাতকে ফিরিয়ে নিয়ে আসো, আমার ভুল হয়েছে। কিন্তু তা না বলে দিব্যি আমার মাকে গালিগালাজ করছো।
ঠিক আছে থাকো তুমি তোমার জিদ হিংসা নিয়ে, আমি তোমার কল ধরবো না তোমার সাথে আর কথা বলবো না। আর না আমাকে তুমি খুঁজে পাবে। আমি অফিস থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে আসছি, এখন থাকো তোমার নিজের মত।

না না তুমি এমন করবেনা, তুমি কথা বলো আমার সাথে, সিরাতকে সাথে নিয়ে ফিরে আসো।

আমি ফোন রেখে দিলাম, আর কথা বলবো না রুবাইয়ার সাথে। সন্ধ্যা 6:30 বাস থেকে নেমে অটোতে উঠলাম অটোওয়ালাকে বললাম গাঙ্গিনাপাড় নিয়ে যেতে। আজিম গাঙ্গিনাপাড় থাকে, তার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে দরজায় নক করছি, ভাবী এসে দরজা খুলে দিল।

আরে বাবু ভাইয়া আসেন আসেন, বসেন এখানে, দেন দেন সিরাতকে আমার কোলে দেন। এতটা পথ এসেছেন সিরাতের মনে হয় গলা শুকিয়ে গেছে, ফিডার খাওয়াতে হবে।

হ্যাঁ অনেকক্ষণ ধরে তো দুধ খায় না, সিরাতকে ভাবীর কোলে দিলাম। আজিম তার ছেলেকে কোলে নিয়ে আমার কাছে বসলো, তার ছেলেকে কোলে নিলাম। আজিম এর ছেলের নাম অনুপম দেখতে আজিমের মতোই হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সিরাতকে খাইয়ে ভাবী ড্রয়িং রুমে আসলো, এখন পর্যন্ত সিরাত তার মায়ের জন্য কান্না করে নি। ভাবী বললেন মনে হচ্ছে ঘুমাবে আমি তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেই, আর আপনার ভাই আমাকে সবকিছু বলেছে। আপনার যতদিন ইচ্ছা আমাদের বাসায় থাকেন, আমি সিরাতকে দেখবো।

অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাবী আপনি অনেক উপকার করলেন।

কি বলেন ভাইয়া, এতে ধন্যবাদ দেওয়ার কি আছে, এটা আমি আমার কর্তব্য মনে করে করছি। আমি চাই আপনার মাকে নিয়ে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে আপনার সংসার যেন সুখের হয়। দেখুন আমিও তো আমার শ্বশুর শাশুড়িকে এখানে নিয়ে আসতে চাই, কিন্তু তারা গ্রাম ছেড়ে আসবে না। আমি কিন্তু প্রতি মাসে মাসে গ্রামের বাড়ি যাই আপনার ভাই যেতে পারেনা অফিসের কাজের জন্য। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে মাসে মাসে যেয়ে দুই তিন দিন থেকে আসি। জানি আমিও একদিন শাশুড়ি হবো, আমার ছেলেও বিয়ে করবে আমি যদি এখন বুঝতে না পারি তখন কান্না করলেও কিছু হবে না। আমি শ্বশুর শাশুড়ির সাথে যেমন করব তেমনটাই ফিরে পাবো, এটা মাথায় থাকে সবসময়। আচ্ছা আমি সিরাতকে ঘুম পাড়িয়ে দেই আপনি হাতমুখ ধুয়ে আসেন ডাইনিং এ খাবার দেওয়া আছে, খেয়ে নেন।

আমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হলাম, ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে আজিমকে বললাম চল বাহিরে থেকে কফি খেয়ে আসি খুব ক্লান্তি লাগছে। সিরাত তো এখন ঘুমাচ্ছে দু তিন ঘণ্টা মধ্যে ঘুম থেকে উঠবেনা। আজিমকে নিয়ে একটা কফিশপে এসে বসলাম, মোবাইল সাইলেন্ট করে রেখেছি রুবাইয়া অনেক কল দিচ্ছে মেসেজ দিচ্ছে মেসেজ গুলো পড়লাম। সে বারবার বলছে আমার ছেলেকে নিয়ে আসো, না হলে আমি মরে যাব বাঁচবোনা আমি। রুবাইয়ার বাবা কল দিচ্ছে আমি কল রিসিভ করলাম।

আসসালামু আলাইকুম আব্বা বলেন কি বলবেন।

তুমি কি পাগলামি করতেছো, বাচ্চাকে নিয়ে কোথায় চলে গেছো, তুমি তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসো।

দুঃখিত আমি আপনার কথা রাখতে পারলাম না, আমি আর বাসায় চলে যাব না। আমার মা আমার সাথে থাকতে পারেনি আপনার মেয়েও তার ছেলেকে নিয়ে থাকতে পারবে না। আমি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই অটল থাকবে।

তোমার মায়ের সাথে ছোট বাচ্চার কি সম্পর্ক, তাকে কেন কষ্ট দিবে।

আমার ছেলের কোন কষ্ট হবে না, সে ভালোই থাকবে সে বিষয়ে আপনাদের চিন্তা করতে হবে না।

তুমি ফিরে আসবেনা, যদি না আসো আমরা থানায় যাব, এতটুকু বাচ্চা মা ছাড়া করলে আইনগতভাবে তোমার কিন্তু শাস্তি হবে।

ঠিক আছে যান থানায়, যা করার করেন, থানায় যেয়ে বলবেন আমার ছেলেকে নিয়ে আমি পালিয়েছি। তখন আমি কি বলবো জানেন কোন আইনে আছে ছেলে বিয়ে করে ফেললে মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে হবে, মাকে ছাড়তে হবে। কোন আইনে লেখা আছে সেটা আমাকে দেখাতে হবে এখন রাখছি আর কল দিবেন না।

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে