অদ্ভুত-তিনি পার্টঃ 02

0
3169

#অদ্ভুত-তিনি
পা্রটঃ02
Megh La

হটাৎ কোন শীতল স্পর্শ আমার পেটে অনুভাব করছি। কিন্তু চোখ দুটো ভারা ঘুম আমি খুলতে পারছি না৷ কিন্তু আমার কেমন পেটে অলতো নায় ভারি স্পর্শ লাগছে। অনেক কষ্টে চোখ খুলতে দেখি তিনি আমার পেটে ঘুমের মধ্যে হাত দিয়েছেন। কিন্তু এত ভারি কেন চোখে ঘুম ভরা আমার, তিনি হাতটা ঘুমের মধ্যেই সরিয়ে নিলেন৷ আর আমি আবারো ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে,
আজানের ধ্বনিতে আমার ঘুম ভাঙলো কি মধুর সে আজান৷ আমি এতো মিষ্টি কন্ঠে আজান কখনো শুনি নাই৷ মন চাইছে শুনতে থাকি। আজান শেষ হয়ে গেল। আমি পাশে ওনাকে দেখতে পায়। কি মায়াবি মুখটা এতো সুন্দর করে বানিছে আল্লাহ তাকে। আমার মোন চাইছে সারাটা জীবন ওনাকে এভাবে দেখে কাটিয়ে দি। কিন্তু এখন নামাজ পরতে হবে। আমি উঠতে পেটে ব্যাথা অনুভব করি৷ কি ব্যাপার ব্যাথা কেন। কষ্ট করে একটু আয়নার সামনে যায়। সারিটা সরাতে পেটে সেই আংশটা হালকা কলো হয়ে আছে সাথে ব্যাথা। এমন কেন হলো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
তার পর এতো না ভেবে বাথরুমে গিয়ে ওজু করে আসতে দেখি উনি উঠে গেছেন,
-তুমি কাল সারা দিন এই সারি টা পরে ছিলে এটা দিয়ে নামাজ হবে না। অন্য কিছু পরো।
-আমিতো কিছু আনি নি।
-আলমারিতে সব আছে তোমার জন্য। পাল্টে গোসল করে নেও।
-আচ্ছা৷
আমি আলমারিটা খুলতে দেখি সব সারি। আমি একটা সারি নিয়ে চলে আসি বাথরুমে। গোসল সেরে নি।
-(এইরে আমিতো সারি পরতে পারি না। কি করলাম আমি এটা৷ কলতো মা পরিয়ে দিয়েছিলো এবার কি হবে। একে পেটে এই ব্যাথা যার কোন মানে নাই. দুই এই সারি না পরতে পারা আমার এখন কান্না পাচ্ছে । এতো জলদি আমার বিয়ে কে দিতে বলেছিলো তাও এই #অদ্ভুত-তিনি র সাথে। আমি কি করবো এখন)
এসব ভাবেতে ভাবতে বাইরে থেকে আমানের কন্ঠ শুনতে পায়,
-এতো ভেবে নিজের ওই পিচ্চি মাথায় জোর দিও না৷ বাইরে আসো পেটিকোট, ব্লইজ পরে গায় টাওয়াল পেচিেয়। আমি পরিয়ে দিচ্ছি।
(অন্তরজামি নাকি যাই হোক এই মুসিবত থেকে বার হতে হবে)
আমি সব কিছু পরে ওনার সমনে আসি৷ উনি হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে৷ কেমন অসস্তি হচ্ছে আমার ( কি লোকরে বাবা বার হতে বলে এখন হা করে তাকিয়ে আছে মেয়ে মানুষ জন্মে দেখেনি কি)
-দেখেছি তোমার মতো সুন্দরী দেখিনি। হালকা বসন্তি কালরের পেটিকোট সাথে সাদা টাওয়াল মায়াবি চোখ। অসম্ভব সুন্দর মুখটা আমিতো প্রেমে পরে যাচ্ছি।
-(ও মা কি বলে, আর মনের কথা কি করে বুঝলো)
-করন তুমি মনে মনে না জোরে জোরে বলেছো।
-সারি পরিয়ে দিন। (এখন না জানে কতো কি বলবে)
ওনার হাতে সারি ধরিয়ে দিয়ে।
-আগে এখানে বসো৷
উনি আমাকে খাটি বসিয়ে টাওয়ালটা পেটের কছ থেকে সরাতে বললেন।
-কেন?
-এত কেনর মানে নাই সরাও।
-না মানে৷
-আমি কি তোমার কাছে অন্য কিছু চেয়েছি ভুলে যেওনা আমি তেমার স্বামী
ওনার কথা শুনে আমি আর কি বলবো খুঁজে না পেয়ে টাওলটা সরিয়ে দি৷
উনি কিছু একটা পরে আমার পেটে ফু দিলেন আমার পেট থেকে সব ব্যাথা গায়েব। কিন্তু প্রশ্ন অনেক, কি করে জানলে আমার পেটে ব্যাথা আর কি করে বা সারলো।
-বেশি ভেবো বা তুমি আয়নায় দেখছিলে তখন আমি দেখে নিয়েছিলাম। আর আমি সব পারি সব জানি৷ এতো ভাব্বে না ছোট মাথাটা কষ্ট পাবে।
এগুলো বলে তিনি আমাকে সারি পরিয়ে দিয়ে বাধরুমে চলে যায়৷ কিন্তু অবাক সারি পরাতে গিয়ে তিনি আমাকে কোন রকম টাচ করেন নি।।
এতো কথায় নামাজের কথা ভুলেই গেছিলাম ওয়াক্ত চলে যাবে তো। আমি নামাজ আদায় করে নি। উনিও বার হয়ে নামাজ পরে নেয়। ।
-শোন নিচে চলো আমি এখানে সব জ। (থেমে গেলেন)
-জী.
-সব জনের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দি।
-(তিনি কথা ঘুরালেন আমার তাই মনে হলো)
-এতো চাপ কেন দেও মাথায়৷ বলেছিনা এই ছোট মাথায় চাপ দিবা না।
ওনার কথা শুনে আমিও আর কথা বাড়ায় নি।
-আচ্ছা আপনার বাসায় কে কে আছে।
– আমার পরিবারে কেউ নাই। এখনে সবাই সার্ভেন্ট। কিন্তু সবাই পরিবারের মতো।
-কেন কেউ নাই আপনার পরিবারে।
-আমি জানি না কেন কেউ নাই তবে ছোট থেকে একজন দাইমা এর কাছে বড়ো হয়েছি কিছু বছর আগেই তিনি মারা যান। পরিবারের কথা কখনো কিছু বলে নি। দাইমা চলে জাবার পর আমি একা৷ এখন তুমি আছো আমার সাথে৷ তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চায়।
আমি তার কথা শুনে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। তিনি বড়ো মায়া নিয়ে কথা গুলো বললেন আমাকে।
-তুমি ওখন থেকে কিছু গয়না পরে নিচে আসো আমি যাচ্ছি।
উনি চলে গেলেন৷
আমি কিছু হালকা গয়না পরে একটু লিপস্টিক নিয়ে। নিচে চলে আসি৷
সবকিছু আধুনিক আসম্ভব সুন্দর। এখানের সবাই শৃঙ্খল। সব সারঁভেন্ট এর এক রকম পোশাক ।
আমি নিচে নামতে , তিনি সাবাইকে ডাক দিয়ে আমার পাশে দাঁড়ালেন,
সাবাই সারি বদ্ধ হয়ে দাড়ালেন,
-এই যে তোমাদের ম্যাম৷ ওর নাম মেঘ।
সবাই আমাকে এক সাথে সালাম দিলো। আমি প্রতি উত্তর দিলাম।
তারা সবাই যে যার কাজে চলে গেলেন।
-তুমি রান্না পারো।
-আসলে না।
-ভয় নেই আমি রান্না করতে বলছি না৷ আমি তোমাকে রান্নার জন্য আনি নাই। রুমে এসো কিছু কথা আাছে।
বদ্ধ মেয়ের মতো ওনার পিছে পিছে রুমে চলে গেলাম।
-কথা গুলো খেয়াল করে শোন। আমার অনুমতি ছাড়া কখনে ছাদে যাবা না৷এক কথায় আমাকে ছাড়া। বাইরে যাবার কথা একদমি ভুলে যাও এখান থেকে বাইরে তুমি যেতে পারবা না৷ এই বাসার চার দেওয়ালের সাথে মানিয়ে নিবার চেষ্টা করো।
আমার ওনার কথা শুনে কান্না পাচ্ছে এ কেমন কথা বাসার চার দেওয়াল থেকে বার না হতে পারলে কেমনে কি। কতো বছর এভাবে থাকা যায় আমিতো পাগল হয়ে যাবো।
-কোন প্রশ্ন করো না কেন এই গুলে বললাম সময় হলে আমি নিজে তোমাকে বাইরে নিয়ে যাবো।
-কিন্তু।
উনি আমার ঠোঁট দুটো বন্ধ করে ধরলেন৷ -আর কোন কথা বলোনা৷
তিনি আমাকে ধরেছেন আলতে করে কিন্তু আমার প্রচুর ব্যাথা হচ্ছে । চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে৷ উনি কিছু একটা পরতে আমার ব্যাথা গায়েব৷
এবার আমি প্রশ্ন না করে না করে পারলাম না।
-আপনার প্রতিটা স্পর্শ আমাকে কষ্ট কেন দিচ্ছে। আবার ঠিক কি করে হয়ে যায়। (কেঁদে)
উনি আমার দিকে মায়া ভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন, উনি আমার অনেক কাছে, তার চোখ দুটো ভিসন মায়াবি। ব্রাউন চোখের মনি দুটো আমি আগে খেয়াল করি নি। ওনার চোখে চোখ পরতে সব কিছু কেমন ভুলে গেলাম।
-সব উত্তর পেয়ে জাবে শুধু একটু ধৈর্য ধরো সমায় আসলে সব বলবো।
তিনি চলে গেলেন আমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছি।
তখনি কেউ ডাক দিলো,
-ম্যাম স্যার খেতে আসতে বলেছে,
আমি চোখ মুছে ঠিক হয়ে, নিচে গেলাম। গিয়ে তো আমি এতো বড়ো অবাক ?

চলবে,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে